নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমরা মানুষ, আমরা মানুষ, তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়

যাযাবর চিল

i agree to disagree...

যাযাবর চিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুক রিভিউঃ দেশে বিদেশে

২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:১২



লেখকঃ সৈয়দ মুজতবা আলী
প্রকাশকঃ বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র
আকারঃ ২৩২ পৃষ্ঠা।
দামঃ ১৮০ টাকা। [আমি ৪০% কমিশন চলাকালীন সময়ে কিনেছিলাম]। এখন ২৪০।


প্রথমে বইয়ের বাইন্ডিং। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র ভাল কাগজে চমৎকার বাঁধাই করেছে। ধরা বেশ সুবিধাজনক। ভেতরে একটি ফিতাও দেওয়া। পড়ার পরে সেটা ঠিক রাখতে কোন সমস্যা হয় না।


ভাষার দিক দিয়ে বইটি অসাধারণ। জটিল ব্যাক্যের আধিক্য নেই। অপ্রয়োজনীয় ইংরেজি শব্দের ব্যবহার একদম নেই। সুখপাঠ্য কাহিনী। তবে বইটি প্রায় ৮০ বছর আগে লেখা হয়েছে। আমাদের বর্তমান প্রচলিত বাংলার চেয়ে কিছুটা আলাদা তবে তাতে রস গ্রহনে খুব বেশি সমস্যা হবে না।


এটি এখন পর্যন্ত আমার পড়া সবচেয়ে অসাধারণ ভ্রমন কাহিনী। কাহিনী শুরু এবং শেষের স্থানও বেশ অভিনব। বইটি শুরু হয়েছে একটা ট্রেন স্টেশন থেকে এবং শেষ হয় বিমান বন্দরে। লেখক কর্মসূত্রে কাবুল যান। ট্রেনে করে কোলকাতা থেকে কাবুল যাওয়ার ঘটনা, তার সাথে দেখা হওয়া বিভিন্ন ব্যক্তি, এলাকা, এলাকার ইতিহাস, রীতি-আচার, উপকথা, ঘটনা খুবই চমৎকার রসাত্বকভাবে বর্ণনা করে গেছেন। কিছু চরিত্র মনে দাগ কেটে যাবে। লেখকের জাদুকরি কলমে আব্দুর রহমান, আহমদ আলী, দোস্ত মুহাম্মাদ, মৌলানা আপনার সামনে জীবন্ত চরিত্র উঠেছে। এদের ভুলতে অনেক সময় লাগবে। অনুভব করতে পারবেন আবদুর রহমানের সারল্য, কাবুলের পাহাড়, বরফ, বাজার আর রাজনৈতিক ডামাডোলর সময়কে।


সমালোচনাঃ
এক প্রসঙ্গে লেখক এই পঙক্তি উল্লেখ করেছেন,
“বাঙাল বলিয়া করিও না হেলা
আমি ঢাকার বাঙাল নহি গো” -[৬৭ পৃষ্ঠা]


লেখকরে জন্মস্থান এবং পিতার বাড়ি সিলেট। তবে তিনি বড় হয়েছেন কোলকাতায়। পড়াশোনা করেছেন শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের কাছে। তিনি সেই সময়ে কোলকাতার সাহিত্যিকদের পূর্ব বাংলার প্রতি যে সাম্প্রদায়িকতা এবং সংকীর্ণতা ছিল তার বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসতে পারেননি [সে সময়ে সিলেটকে বিবেচনা করা হত আসামের অংশ]।


“ মা মেরি ও যিশুর যে গল্প বললে সে হল বাইবেলি কিচ্ছা। মুসলমান-শাস্ত্রে আছে, বিবি মরিয়ম খেজুরগাছের তলায় ইসা-মসিহকে প্রসব করেছিলেন।
বিবেকবুদ্ধি- সে কী কথা! ডিসেম্বরের শীতে মা মেরি গাছ তলায়?
বেয়াড়া মন- কেন বাপু, তোমার বাইবেলেই তো রয়েছে, প্রভু জন্মগ্রহন করলে পর দেবদূতরা সেই সুসামাচার মাঠের মাঝখানে গিয়ে রাখাল-ছেলেদের জানালেন।গয়লার ছেলে যদি শীতের রাতে মাঠে কাটাতে পারে, তবে ছুতারের বউই পারবে না কেন। শুনি? তার ওপর গর্ভযন্ত্রণা-সর্বাঙ্গে তখন গলগল করে ঘাম ছোটে!!
ধর্ম নিয়ে তর্কাতর্কি আমি আদপেই পছন্দ করিনে। দু-জনকে দুই ধমক দিয়ে চোখ বন্ধ করলুম ” -[৪৯ পৃষ্ঠা]


এই অংশটা ইসলাম নিয়ে পাঠকের মনে একটা বড় ধরনের খটকা ঢুকিয়ে দেবে। এবং সেটাই যোক্তিক। ফিলিস্তিনে ডিসেম্বরের বরফ পরা রাতে বাইরে বাচ্চা জন্ম! আবার মেষ পালক বালকেরা! ফিলিস্তিনে এরা কখনো শীতের রাতে বাইরে থাকে না বা থাকার কারনও নেই।


তবে আমি এই অংশ পড়ে বেশ অবাক হয়েছি কারন লেখক তুলনামূলক ধর্মতত্বের উপর পড়াশোনা করেছেন অথচ এটাই জানেন না যে ইসলাম বা বাইবেল কোনটিই বলে না জিসাস ক্রাইস্টের জন্ম ২৫ ডিসেম্বর। জিসাস ক্রাইস্ট জন্মের ৩৩৬ বছর পর প্রথম উনার জন্ম ২৫ ডিসেম্বর হিসেবে পালন করা হয়। এটা মূলত প্যাগান রোমানদের সাটুরলানিয়া উৎসব। খৃষ্টান ধর্ম গ্রহণ করে তারা তাদের উৎসবগুলোকে নতুন নাম দিয়ে খৃষ্টান ধর্মের উৎসব বানায়। এরও কয়েক বছর পরে পোপ জুলিয়াস ২৫ ডিসেম্বরকে জিসাস ক্রাইস্টের জন্ম তারিখ বলে ঘোষণা করে। ইসলামি স্কুল অব থট গুলোর মতে ঈসা মসিহ আঃ এর জন্ম গরমের দিনে, শীতে না।


[[[
মদ রুটি ফুরিয়ে যাবে।
প্রিয়ার কালো চোখটি ঘোলাটে হয়ে যাবে।
কিন্তু বই খানা অন্তত যৌবনা।
-ওমর খৈয়াম
বই পড়ুন!

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:২৮

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: হা হা।
শেষ পর্যন্ত এটাও শুনতে হলো- তিনি সেই সময়ে কোলকাতার সাহিত্যিকদের পূর্ব বাংলার প্রতি যে সাম্প্রদায়িকতা এবং সংকীর্ণতা ছিল তার বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসতে পারেননি


তার পুরো রচনা সমগ্র আমার পড়া। একবারও একথা মনে হয়নি

২২ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:৫২

যাযাবর চিল বলেছেন: রাখাল সাহেব, এই লাইন দুইটা একটু ব্যাখ্যা করলে এই যাযাবরের একটু উপকার হতো। ।

২| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:৪০

শেয়াল বলেছেন: ফাঁকিবাজি রিভিউ মুনে হুতাছে

৩| ২২ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:২৯

শিখণ্ডী বলেছেন: আপনারা বর্তমান পশ্চিম বাংলা সম্পর্কে কী ভাবেন?

২২ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:৫৫

যাযাবর চিল বলেছেন: পরিষ্কার ধারনা নেই। তবে অন্য এলাকার মানুষের তুলনায় কম সাম্প্রদায়িক এটা নিশ্চত।

৪| ২২ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১:০১

শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন: সৈয়দ মুজতবা আলী'র পরিচয় জানুন উনার ইসলাম ধর্মজ্ঞান সম্পর্কে ম্নতব্য করার আগে। উনি শেষ রাসূল(সাঃ)-এর বংশধর, এটা মনে রেখে ওনার সমালোচনায় হাত দিবেন। উনার মর্যাদা আমার-আপনার উপরে।

২২ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:৫৪

যাযাবর চিল বলেছেন: টিউশন সাহেব ইসলামে বংশ পরিচয় মূল্যহীন। মর্যাদা কার কোন জায়গা আমি জানি না। তার ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট।

৫| ২২ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ২:৪৭

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: আমার কাছে তার বই আছে পড়েছি, এটা পড়া হয়নি।

৬| ২২ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৪

ধ্রুবক আলো বলেছেন: পড়া হয়নি, বইটা পড়তে হবে
রিভিউয়ের জন্য ধন্যবাদ।

৭| ২০ শে জুন, ২০১৭ রাত ১:০৪

ইমরান আশফাক বলেছেন: ভ্রমন কাহিনীর মাধ্যমে একটা দেশের সংস্কৃতি, চাল-চলন, আর্থিক অবস্থা কিভাবে উঠে আসে তার একটি অনবদ্য নিদর্শন এই বইটা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.