নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমরা মানুষ, আমরা মানুষ, তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়

যাযাবর চিল

i agree to disagree...

যাযাবর চিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

রবীন্দ্রনাথ পাঠঃ রবীন্দ্রনাথ এবং শিবাজি

০৩ রা মে, ২০১৭ রাত ১২:২৩


রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক। উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ, ছোট গল্প, গান, নাটকসহ সবক্ষেত্রেই তিনি সোনা ফলিয়েছেন। বাংলা সাহিত্যকে নিয়ে গেছেন বিশ্ব সাহিত্যের দরবারে। তবে শুধুমাত্র সাহিত্যিকই নন, রবীন্দ্রনাথ একজন প্রভাবশালী দার্শনিকও। কয়েকদিন পরেই তার জয়ন্তী। তাই এবার ইতিহাস পাঠ রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে। আজকের পর্ব রবীন্দ্রনাথ এবং শিবাজি।

শিবাজী ভোঁসলে অথবা ছত্রপতি শিবাজী [১৬৩০–১৬৮০], হলেন মারাঠা সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। সে ছিল চরম ব্রাহ্মণবাদী এবং মুসলিম বিদ্বেষী। ঐতিহাসিক স্যুলিভ্যান এই শিবাজী সর্ম্পকে লিখেছেন,
‘শিবাজী ছিলেন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় লুন্ঠক ও হন্তারক দস্যু। আর তিনি যাদের সংগঠিত করেছিলেন সেই মারাঠা জাতি ছিল এমন অপরাধপ্রবণ যে, মুহূর্তের মধ্যে তারা তাঁদের লাঙ্গলের ফলাকে তরবারিতে রুপান্তরিত করে এবং ঘোড়া ধার অথবা চুরি করে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়তো। যেখানেই তারা গিয়েছে সেখানেই কেবল ধ্বংস ও মৃত্যু রেখে এসেছে'
[https://goo.gl/2lQABx]

মিঃ হলওয়েল তাঁর “Interesting History/ Events Holl Well” বইয়ে লিখেছেন, ‘‘সে ভীষণতম ধ্বংসলীলা ও ক্রুরতম হিংসাত্মক কার্যে আনন্দ লাভ করতো”।
মারাঠা লুন্ঠনের প্রত্যক্ষদর্শী গঙ্গারাম বাবু এক কবিতায় লিখেছিলেনঃ
‘‘কারু হাত কাটে, কারু নাক কান,
একি চোটে কারু বধ এ পরাণ।
ভাল ভাল স্ত্রলোক যত ধইরা লইয়া জাএ
আঙ্গুষ্ঠে দড়ি বাঁধি দেয় তার গলা এ।
একজনে ছাড়ে তারে আর জনে ধরে
রমণের ডরে ত্রাহি শব্দ করে।’’

শিবাজির দল বাংলাতেও তাদের ডাকাতির কালো থাবা বাড়িয়ে দেয়। তবে বাংলায় তখন ছিলেন শায়েস্তা খাঁ। তিনি শিবাজির দলকে দমন করে বাংলাকে রক্ষা করেন। শিবাজির দলের বিরুদ্ধে অভিযান শেষে একরাতে শায়েস্তা খাঁ তার শয়নকক্ষে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। বিশ্রামরত নিরস্ত্র শায়েস্তা খাঁ কে কাপুরুষের মতো অতর্কিতে আক্রমণ করল মারাঠা দস্যুসর্দার শিবাজী। শায়েস্তা খাঁ জানালা ভেঙে বেরিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করেন। কিন্তু তার অল্পবয়স্ক পুত্র দুর্ঘটনাবশত ঘরেই থেকে যায়। তার নিষ্পাপ পুত্রকে শিবাজী একা পেয়ে খন্ড- খন্ড- করে কেটে পৈশাচিক ভাবে হত্যা করে। এই ঘটনাটি ঘটে ১৬৬ সালের এপ্রিল মাসে। [চেপে রাখা ইতিহাস, ১৭৯ পৃষ্ঠা]

শিবাজী যখন তার লুটপাট ও অত্যাচারের অতিষ্ঠ মানুষ সম্রাট আওরঙ্গজেবের কাছে সাহায্য চায়। তখন তিনি ১০ হাজার সেনা নিযে সেনাপতি আফজল খাঁ কে পাঠিয়েছিলেন মারাঠা দস্যুদের দমনের জন্য। খবর পেয়ে শিবাজী বুঝতে পারে সম্মুখ যুদ্ধে পারা সম্ভব নয়। তাই সে ভিন্ন রাস্তা নেয়। সন্ধির প্রস্তাব নিয়ে শিবাজী গেলো আফজল
খাঁর সাথে দেখা করতে। যুদ্ধক্ষেত্রে একটি নিয়ম হচ্ছে, সন্ধি করতে আসলে তাকে সম্মান করতে হবে, তার কোন অনিষ্ট করা যাবে না। সেনাপতি আফজল খাঁ শিবাজীকে সাদর সম্ভাষন জানালো। এ সময় দু’জনে সৌজন্য মোলাকাতও করলো। কিন্তু মারাঠা দস্যু নেতা শিবাজী ছিলো ধোঁকাবাজ। সে আগেই তার পোষাকের নিচে ‘বাঘনখ’ নামক একটি ধারালো অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিলো, মোলাকাতের সময় সে হঠাৎ সেনাপতি আফজল খানের উপর আক্রমণ করে তাকে হত্যা করে।
শিবাজির উপাধি ছিল ‘গো-ব্রাহ্মণ’ প্রতিপালক। গরু রক্ষার নামে সে হাজার হাজার মুসলিমকে হত্যা করেছিলো।[https://goo.gl/HwDE85] ।

তবে আমাদের শিবাজিকে চিনতে কোন ইতিহাসের বই পড়ার দরকার নেই। বাংলাদেশের ৩-৪ বছরের বাচ্চাও শিবাজিকে চেনে। শিবাজি মারা যাবার সারে তিনশত বছর পর আজও বাংলার প্রতিটি ঘরে শিবাজির ভয় দেখিয়ে শিশুদের কান্না থামানো হয় বা ঘুম পারানো হয়। শিবাজির দলকে অভিহিত করা হয় বর্গী বলে।আমাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ছোট বেলায় শোনা সেই ছড়া,
“খোকা ঘুমালো, পাড়া জুরালো
বর্গী এল দেশে
বুলবুলিতে ধান খেয়েছে, খাজনা দিবো কিসে”

সেই শিবাজিকে নিয়ে মহান কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখলেন,
“মারাঠির সাথে আজি, হে বাঙালি, এক কন্ঠে বলো
'জয়তু শিবাজি'।
মারাঠির সাথে আজি, হে বাঙালি, এক সঙ্গে চলো
মহোৎসবে সাজি।
আজি এক সভাতলে ভারতের পশ্চিম-পুরব
দক্ষিণে ও বামে
একত্রে করুক ভোগ একসাথে একটি গৌরব
এক পুণ্য নামে।।
[শিবাজি উৎসব]

#ইতিহাস_পাঠ ৫
#রবীন্দ্রনাথ_পাঠ ১
#KnowYourHistory

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মে, ২০১৭ দুপুর ১:১১

শরতের ছবি বলেছেন: জানা ছিল না । জানানোর জন্য ধন্যবাদ ।

২| ০৩ রা মে, ২০১৭ দুপুর ২:৩৩

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: অজানা এক তথ্য জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ জনাব।

৩| ০৩ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৩:১১

আনু মোল্লাহ বলেছেন: ইতিহাসের পাঠ ভাললাগে। ধন্যবাদ তথ্যগুলো জানানোর জন্য।

৪| ০৪ ঠা মে, ২০১৭ দুপুর ১২:১৭

শ্রাবণধারা বলেছেন: ঠিক একই লেখা দেখি বাংলা উইকিপিডিয়াতেও আছে । অন্যসময় হলে মনে করতাম আপনি উইকিপিডিয়া থেকে কপি করেছেন, কিন্তু আমার ধারণা আপনাদের সংগবদ্ধ দল সব এই ধরণেই ইতিহাসগুলো রচনা করছেন ।

একটা উদাহরণ দেই উইকিপিডিয়ায় শায়েস্তা খা সম্পর্কে বলা হচ্ছে "যালিম, লুটেরা দস্যু কাফিরদের দমন করার ফলে অর্থনৈতিক কর্মকা- নির্ঝঞ্ঝাট হওয়ায় বাংলায় তার শাসনামলে টাকায় আট মণ চাল পাওয়ার কিংবদন্তী রচিত হয়েছে।"

যালিম, লুটেরা আবার বলা হচ্ছে "কাফির" । অতএব বোঝা যাচ্ছে এই সব ইতিহাস কারা লিখছে ।

তবে আপনারা মনে হয় ঠিক জায়গায় হাত দিয়েছেন । বাংলাদেশে আপনাদের জংগি আন্দোলন কে সফল করতে গেলে বাঙ্গালী সংস্কৃতির যে মূল তাকে মিথ্যা দিয়ে অপবাদ দিয়ে বিনষ্ট করতে হবে । রবীন্দ্রনাথ বাঙ্গালী সংস্কৃতির অন্যতম প্রাণপুরুষ - অতএব তাকে উৎপাটন করতে হবে, তাহলে তালেবানি বা আই-এস রাষ্ট্রের দিকে দ্রত এগিয়ে যাওয়া যাবে ।

অতএব রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে আরও বেশি বেশি অপবাদ ইতিহাস রচনা করুন । রবীন্দ্রনাথে দেবতুল্য পিতা কতগুলো বেশ্যালয়ের মালিক ছিলেন - এরকম ইতিহাস ঘরে ঘরে ছরিয়ে না দিতে পারলে বাঙ্গালী মুসলমানদেরকে তালেবানি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে না ।

০৪ ঠা মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৭

যাযাবর চিল বলেছেন: এভাবে হবে না। পয়েন্টে আসেন। শিবাজি কে ছিল? এবং মহান কবি রবীন্দ্রনাথ শিবাজি কে নিয়ে কি লিখেছিলো?

৫| ০৪ ঠা মে, ২০১৭ দুপুর ১২:১৯

শ্রাবণধারা বলেছেন: view this link

উইকিপিডিয়ার লিংক - যেগুলো আপনারাই লিখছেন ..।

০৪ ঠা মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৯

যাযাবর চিল বলেছেন: “মারাঠির সাথে আজি, হে বাঙালি, এক কন্ঠে বলো
'জয়তু শিবাজি'।
মারাঠির সাথে আজি, হে বাঙালি, এক সঙ্গে চলো
মহোৎসবে সাজি।
আজি এক সভাতলে ভারতের পশ্চিম-পুরব
দক্ষিণে ও বামে
একত্রে করুক ভোগ একসাথে একটি গৌরব
এক পুণ্য নামে।।
- এই কথা মহান কবি রবীন্দ্রনাথ বাবুই লিখেছেন। আমি উকিপিডিয়াত থেকে নিয়েছি। আপনি কি বলতে চান উইকিপিডিয়ায় অন্যকেউ লিখে বাবু রবীন্দ্রনাথের নাম দিয়েছে?

৬| ০৪ ঠা মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৮

টারজান০০০০৭ বলেছেন: রবীন্দ্রনাথ ঠিকই করিয়াছেন। তিনি জাতীয়তাবাদী ছিলেন। নিজ সম্প্রদায়ের ডাকাতকেও বীর বানাইয়াছেন ! আমরা মুসলমানরাই উদার , অসাম্প্রদায়িক প্রমান করিতে গিয়া দুই সম্প্রদায়ের কাছেই মারা খাই ! যেমন নজরুল খাইয়াছিলেন !
@শ্রাবণধারা ! একটা সত্যওতো জীবনে বুক ফুলাইয়া স্বীকার করিতে পারিলেন না ! কোনোকালেই আত্মসমালোচনা করিতে পারিলেন না ! এইখানেই মুসলমানের কৃতিত্ব।নিজের গোয়া মারিতে মুসলমান খুবই পারদর্শী ! নামধারী মুসলমান পাঁঠাগুলোতো আরেক কাঠি বাড়া !

৭| ০৫ ই মে, ২০১৭ রাত ১:৪৪

অর্ক বলেছেন: মুম্বাইয়ের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ছত্রপতি শিবাজি'র নামে যেমন, ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস (CST) ও ছত্রপতি শিবাজি এয়ারপোর্ট। শিবাজিকে পূজা করেন মারাঠিরা। তাদের প্রাণ পুরুষ শিবাজি। এটা একটা সম্পূর্ণ ভিন্ন সময়ের ইতিহাস। তখন তরবারি দিয়ে রাজত্ব চলতো। সেসময়ের যারা রাজা বাদশা ছিলেন, তারা সবাই কমবেশি অত্যাচারী ছিলেন। মুঘল শাসকদের অনেকেই ভয়াবহরকম নৃসংশ ছিলেন। মুঘল শাসকদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন শিবাজি। স্বাভাবিকভাবেই হিন্দুদের কাছে তিনি বীর।

০৫ ই মে, ২০১৭ সকাল ১১:৫৫

যাযাবর চিল বলেছেন: ঠিক যেমন হিটলার, হালাকু খাঁ, বা আইসিস নেতা অনেকের কাছে বীর।

৮| ০৫ ই মে, ২০১৭ রাত ১:৫০

অর্ক বলেছেন: এই ধরণের লেখার জন্য আমার, আপনার আমাদের ব্যাপক পড়াশোনা, মানে রীতিমতো গবেষণা করা দরকার। মারাঠিদের লেখা ইতিহাসে দেখবেন শিবাজি আরেকভাবে চিত্রিত হয়েছেন। আবারও বলছি এটা একটা ভিন্ন সময়ের ইতিহাস। যেসময় তরবারি দিয়ে রাজ্য শাসন করতেন রাজা বাদশাগণ। তাদের সবার-ই হাত রক্তে রঞ্জিত। তারপরও এদের অনেককেই আমরা বীর বলি।

০৫ ই মে, ২০১৭ সকাল ১১:৫৬

যাযাবর চিল বলেছেন: মানে বর্গিরা ভাল ছিল আপনি এটা বলতে চান?

৯| ০৫ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৬

অর্ক বলেছেন: https://youtu.be/L0KRrUuWdrg
এই শিবাজিকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতা লিখেছেন। বর্গিরা ভাল ছিল বলছি না। ভিডিওটি দেখলে বুঝবেন শিবাজি একজন একজন বীর যোদ্ধা হবার পাশাপাশি অনেক মানবিক গুণাবলিরর অধিকারী ছিলেন। তুলনামূলক অনেক উদার ও অসাম্প্রদায়িক ছিলেন। আফজাল খাঁ'র সাথে সংঘর্ষ এখানে আরেকভাবে এসেছে।
আপনার বোঝা উচিৎ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কখনই কোনও কুখ্যাত লোকের জয়গান গাইবেন না তাঁর কবিতায়।

১০| ০৫ ই মে, ২০১৭ রাত ৯:৪৫

হাফিজ রাহমান বলেছেন: তবু তাকে নিয়ে কি মাতামাতি ! তবে শিবাজি প্রেমিক রবি ঠাকুরকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা যেতে পারে; কবি রবিঠাকুরকে নয়। শুনেছি বঙ্গ ভঙ্গের বিরুদ্ধে তিনি আমার সোনার বাংলা লিখেছিলেন। যদি তথ্য সত্য হয় তবে ফল কি দাঁড়ায় ? বাংলাদেশ নামের স্বতন্ত্র্য অঞ্চলের পরিচয় ফুটে না উঠুক। ভারতের সাথে মিলে একাকার হয়ে থাক। বেঁচে থাকলে তিনি পাকিস্তান সৃষ্টির বিপক্ষেই অবস্থান করতেন। ফলে তিনি বাংলাদেশ নামের একটি স্বতন্ত্র্য স্বাধীন রাষ্ট্রের বিপক্ষেই থাকতেন !?? তবে তাঁর সাহিত্যের প্রশংসা তো করতেই হয়। তাঁর কাক্য-কবিতার গুণ-গান তো গাইতেই হয়।

১১| ০৫ ই মে, ২০১৭ রাত ১০:০০

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: তথ্য নির্ভর পোস্ট । ধর্ম নিয়ে গোড়ামি পরিত্যাজ্য । সে যেই করুক । কবি রবিঠাকুর অনবদ্য । বঙ্গভঙ্গের বিপক্ষে গিয়ে তিনি এদেশের ক্ষতি করেছেন । আসাম বাংলাদেশের অংশ থাকলে আমাদের দেশটা আরও বড় ও সমৃদ্ধশালি থাকতো ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.