নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমরা মানুষ, আমরা মানুষ, তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়

যাযাবর চিল

i agree to disagree...

যাযাবর চিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

শহীদ মিনার নাকি অর্ঘ্য বেদী!? কোনটা যোক্তিক ?

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৬



শহীদঃ
অক্সফোর্ড অভিধান [অনলাইন সংস্করণ] অনুসারে, "শহীদ অর্থ a Muslim martyr। এটি আরবি থেকে উর্দু হয়ে ইংরেজি ভাষায় প্রবেশ করেছে। বাংলা ভাষায়ও শহীদ শব্দটি একই ভাবে এসেছে।
কলিন্স অভিধান [অন লাইন সংস্করণ] অনুসারে,
1.(in Islam) a deceased person who has lived a life in accordance with the will of Allah
2. (in Islam) a martyr to the Islamic faith
এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকাতে বলা হয়েছে শহীদ একটা ইসলামিক পদমর্যাদা। শহীদ শব্দটার অর্থ সাক্ষ্য প্রদানকারীর মৃত্যু।

মিনারঃ
অক্সফোর্ড অভিধান [অনলাইন সংস্করণ] অনুসারে, মিনার হল একটি সরু উঁচু ইমারত, যা সাধারণত মসজিদের ঝুল-বারান্দা সমেত একটি অংশ যেখান থেকে মুয়াজ্জিন মুসলিমদের নামাজের জন্য আহবান করে।
[a slender tower, typically part of a mosque, with a balcony from which a muezzin calls Muslims to prayer.]
এই শব্দটি সপ্তদশ শতকে ইংরেজি ভাষায় প্রবেশ করেছে ফরাসি অথবা স্পেনীয় ভাষা থেকে। ফরাসি ভাষা ইতালীয় ভাষা থেকে শব্দটি গ্রহন করে। ইতালীয় ভাষা আবার শব্দটি আত্নীকরন করেছে তুর্কি ভাষা থেকে আর তুর্কি ভাষা মিনার শব্দটি এসেছে আরবি ভাষা থেকে। বাংলায় মিনার শব্দটি এসেছে ফার্সি অথবা তুর্কি ভাষা থেকে।

এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা [অন লাইন সংস্করণ] অনুসারে মিনারের সজ্ঞা, "মিনার হল ইসলাম ধর্মীয় স্থাপত্য, একটি উঁচু ইমারত যেখান থেকে মুয়াজ্জিন বিশ্বাসীদের দিনে পাঁচবার নামাজের জন্য আহবান করে"।
Minaret, (Arabic: “beacon”) in Islamic religious architecture, the tower from which the faithful are called to prayer five times each day by a muezzin, or crier.

শহীদ এবং মিনার দুইটিই একদম বিশুদ্ধ ইসলাম ধর্মীয় শব্দ। তবে সেখানে যা করা হয় তার সাথে ইসলাম ধর্মের দূরতম সম্পর্ক নেই বরং উল্টো।
প্রথমত এই ইট, বালু, সুরকি নির্মিত এই ইমারতের নাম মিনার হল কিভাবে সেটা একটা প্রশ্ন। মিনারের আকৃতি, সজ্ঞা বা প্রকৃতির সাথে দূরতম মিলও নেই এই স্থাপনার। পৃথিবীতে অনেক বিখ্যাত মিনার আছে যেমন কুতুব মিনার, ফিরোজ মিনার, চার মিনার, কালান মিনার, করদোভা মিনার, মাদিয়ান মিনার ইত্যাদি ইত্যাদি। গুগলে খুঁজলে সবগুলোর ছবি পাবেন একসাথে। সব মিনার দেখতে একই রকম। কিন্তু ব্যতিক্রম এটা।

তবে মসজিদের মিনারের সাথে মিল নেই দেখে হতাশ হবেন না। মিল অন্য বস্তুর সাথে আছে। সনাতন ধর্মালম্বীদের দুর্গা দেবির সাথে এই স্থাপনার আকৃতিগত এবং প্রকৃতিগত (conceptual) দুইটিরই চমৎকার সাদৃশ্য আছে।
যেমনঃ
একঃ আকৃতি
দূর্গা মূর্তিতে দুর্গা হল মা, তার এক পাশে থাকে দুই ছেলে গণেষ ও কার্তিক অন্যপাশে থাকে দুই মেয়ে সরস্বতী ও লক্ষ্মীর। মোট মূর্তির সংখ্যা পাঁচ। শহীদ মিনারেও কাঠামোগুলোর সংখ্যা পাঁচ। “স্নেহময়ী আনত মস্তক মাতার প্রতীক হিসেবে মধ্যস্থলে সুউচ্চ কাঠামো, এবং দুই পাশে সন্তানের প্রতীক স্বরূপ হ্রস্বতর দুটি করে কাঠামো [সূত্রঃ বাংলাপিডিয়া]।

দুইঃ বেদী বা বেদীমূল
দেবদেবীর মূর্তি যে উঁচু স্থানে স্থাপন করা হয় সে স্থানকে বলা হয় বেদী, শহীদ মিনারের পদমূলকেও বলা হয় বেদী। অভিধান অনুসারে বেদী শব্দটির অর্থ ‘হিন্দুদের যজ্ঞ বা পূজার জন্য প্রস্তুত উচ্চভূমি। হিন্দুরা দেবদেবীর প্রতিমা বা মূর্তির বেদীমূলকে পবিত্র মনে করা হয়, তাই সেখানে যেতে হয় নগ্নপদে। শহীদ মিনারের বেদীমূলকেও পবিত্র মনে করা হয়। সে কারণেই শহীদ মিনারের বেদীমূলে ফুল দেয়ার জন্য নগ্নপদে যেতে হয়।
এখানে উল্লেখ্য আপনি মিনারে জুতা, স্যান্ডেল বা চপ্পল সবই পরেই উঠতে পারবেন যদি সেটা পরিস্কার থাকে।

তিনঃ আলপনা
লক্ষ্মীপূজার সময় আলপনা আঁকা হয়। শহীদ মিনারের পদমূলে যাবার পথেও আলপনা আঁকা হয়। আলপনা অর্থ ‘মেঝে, দেয়াল, সিঁড়ি প্রভৃতিতে অঙ্কিত হিন্দুদের মঙ্গলসূচক চিত্রবিশেষ’। [সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান, বাংলা একাডেমী]

চারঃ সম্মান জানানো এবং তার দর্শন
হিন্দুসহ প্রায় সব প্রতিমা পূজারীদের দর্শন হল, দেবতা পূজারীদের নাগালের ভেতর নেই, তাই তার প্রতিমার মাধ্যমে তাকে পূজা দেওয়া হয়। শহীদ মিনারের বেলায়ও এ রকম বিশ্বাস করা হয় যে, শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে সম্মান দেখানোর মাধ্যমে ভাষা যুদ্ধে নিহত শহীদদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়।

সব দিক বিবেচনা করে ইট, বালু, সুরিকি নির্মিত এই স্থাপনাকে “শহীদ মিনার” বলা নিশ্চত ভাবে ‘misnomer’ অর্থ শব্দের ভুল প্রয়োগ। এর নাম হওয়া উচিত “অর্ঘ্য বেদী” বা এই জাতীয় কিছু।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫২

চাঁদগাজী বলেছেন:


ইসলাম ধর্মের জন্য ৫২ সালে কেহ প্রাণ দেননি; আপনি বরং বদরের যুদ্ধের দিন পালন করেন, সেটা আপনাকে প্রশান্তি দেবে।

২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:০০

এম ডি মুসা বলেছেন: একুশ শুভেচ্ছা ।।

৩| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:১০

শাহ আজিজ বলেছেন: সাথে খন্দক যুদ্ধ সহি হবে ।

৪| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:১৭

কলাবাগান১ বলেছেন: ধর্মান্ধদের চোখের বিষ বাংগালীর উদযাপনা কি সেটা ১লা বৈশাখ আর ২১শে ফেব্রয়ারী....

৫| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০৪

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: সমর্থন।< ইসলামী সংস্কৃতির প্রতি কারো শ্রদ্ধা নেই , শুধু খেয়াল অপপ্রয়োগে। আপনার এই ব্যাখ্যা ধর্মী লেখার জন্য ধন্যবাদ <

৬| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২৯

দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: সহমত। এখন যা করা হচ্ছে তা শ্রদ্ধার চেয়ে বেশী পূজা যদিও এখানে মন্ত্র পাঠ করা হয় না। আর মুসলিম দেশ হিসেবে শহীদ শব্দটা দিয়ে ভালো আবেগ তৈরী করা যায়।
@কলাবাগান - ১লা বৈশাখ আর ২১শে ফেব্রুয়ারী এবং আরো অনেক দিবসে অন্য ধর্মের আচার গুলোর সাদৃশ্য দূর করলেই এই সমস্যার সমাধান হবে।

৭| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৫০

শেখ মফিজ বলেছেন: নিজেকে বাঙালী ভাবুন, দৃষ্টি আরো উদার করুন, তখনই দেশ সংস্কৃতি আপন মনে হবে ।

৮| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: চাঁদগাজী বলেছেন:
ইসলাম ধর্মের জন্য ৫২ সালে কেহ প্রাণ দেননি; আপনি বরং বদরের যুদ্ধের দিন পালন করেন, সেটা আপনাকে প্রশান্তি দেবে।


সহমত।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৫০

যাযাবর চিল বলেছেন: সেই লাইগাই তো, মুসলমানি শব্দ থাকবে কেন!?

৯| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:২২

নীল আকাশ বলেছেন: আমাদের সংস্কৃতিই হচ্ছে জগাখিচুরি। আর নাস্তিক রা আছে এটার মধ্যে বাম হাত ঢুকানোতে । সুক্ষ্ ভাবে এরা মুসলিম দের মাঝে অন্য ধর্মের এসব সংস্কৃতি আর ধর্মীয় অংশ প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে। লক্ষ্য একটাই যাতে আপনি ভালো মুসলিম হয়ে বেড়ে উঠতে না পারেন। এখন যদি এসব নিয়ে আপনি কথা বলেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই রাজাকার উপাধি দেয়া হবে। এদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে আপনার ইমান কে দুর্বল করে দেয়া যা তারা বিগত কয়েক দশক ভালো ভাবেই করে এসেছে। রাষ্ট্রীয় ভাবেও এদের কে সমর্থন দেয়া হয়েছে এবং হবে। মনে রাখবেন অন্য ধর্মের কোনো কিছু পালন করার ব্যাপারে ইসলামে কঠোর নিষেধ আছে । সমাজিক ভাবে যদিও নাও পারে অন্তত ব্যক্তিগত ভাবে মেনে চলবেন। মনে রাখবেন, দিন শেষে সবাই কে মৃত্য বরন করতে হবে আর আপনার কৃতকর্মের জবাব আপনাকেই দিতে হবে । সব শেষে এত সুন্দর একটা বিষয় চমৎকারে ভাবে তুলে ধরার জন্য আপনাকে অবশ্যই ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.