নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমরা মানুষ, আমরা মানুষ, তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়

যাযাবর চিল

i agree to disagree...

যাযাবর চিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ এবং উনার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র

২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:২০



বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রর সাথে আমার সম্পর্ক বহু বছরের। দেশে থাকতে প্রায় নিয়মিতই তাদের লাইব্রেরি, আড্ডাতে যেতাম, বই কিনতাম। দীর্ঘ দিন তাদের সাথে থেকে বুঝেছি, এটা মূলত একটা কুসমান্ড তৈরির কারখানা। ব্যাপারটা খুবই ধীরে হয় ইংরেজিতে যাকে বলে slow poisoning. কেউ যদি দীর্ঘ সময় না বুঝে এর প্রভাবে থেকে সে হয়ে যাবে একটা আস্ত খাশি এবং সেটা বুঝতেও পারবে না। নিজেকে ভাববে বাঘ৷

শুরু করি শ্লোগান দিয়ে, তাদের শ্লোগান হল আলোকিত মানুষ চাই। আলোকিত মানুষ এটা য়ুরোপীয় ধারনা। য়ুরোপীয় রেনেসাঁসের সময় যারা ধর্ম ত্যাগ করেছিলো তারা নিজেদের এনলাইটেন্ড মানুষ বলতো। আবু সায়ীদ সাহেব সেই দর্শন এনে তার অনুবাদ করেছেন আলোকিত মানুষ। খোদ শাহাবাগপন্থী বুদ্ধিজীবী সলিমুল্লাহ খান এটাকে বলেছিলেন "কুৎসিত অনুবাদ"৷

এই সাহিত্য কেন্দ্রের বেশিরভাগ বইতেই পরোক্ষভাবে ধর্ম বিরোধী অথবা গ্রিক বা য়ুরোপীয় নাস্তিকতার গুন-কীর্তন করে কিছু কথা পাবেন। একই অবস্থা তাদের বিভিন্ন কার্যক্রমে। ইসলাম বা মুসলিম দেশের রুপকথা নিয়ে দুই/চারটা বই তারা রেখেছে, সে বইগুলোর সাহিত্য মান একেবারেই সাধারণ। এই বইগুলোর রাখাও সেই মগজ ধোলাইয়ের অংশ। যারা আনক্রিটিকালি (Uncritically) অনুসরণ করবে বা পড়বে, ধীরে ধীরে বিশ্বাসের দিক দিয়ে তারা পুরো, আধা বা সেমি নাস্তিক হয়ে যাবে।

সাহিত্য কেন্দ্র কেন্দ্রীক বুদ্ধিজীবী বা একটিভিস্টরা কোনদিন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কিছু বলে নাই, গুম-ক্রসফায়ারের বিরুদ্ধে কিছু বলে নাই, প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে বলে নাই, কোটা সংস্কার নিয়ে কিছু বলে নাই, ভোট চুরি নিয়ে কিছু বলেন নাই, মধ্যযুগের দাসের চেয়েও পরিশ্রম করা গার্মেন্টেস কর্মীদের নিয়ে কিছু বলে নাই, প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কিছু বলে নাই। বলে তো নাই-ই উল্টো আবু সায়ীদ সাহেব তার ভক্ত সমেত প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে চুটকি করেন।

আলোকিত করার নামে তারা তাদের অনুসারীদের মধ্যে একটা নোংরা অহমিকা বা এক ধরনের বর্ণবাদী ভাব তৈরি, আমরা বই পড়ি আমরা তাদের থেকে ভাল। জনগন, প্রবাসী শ্রমিক এরা হীন, নিচ। তাই জনগণের কোন সমস্যাই তাদের তাড়িত করে না। যদি আগামী একশ বছর এই কেন্দ্র এভাবে থাকে এই একশ বছরেও এই কেন্দ্রের কোন একটিভিস্ট মানুষের সমস্যা নিয়ে একটা কথা বলবে না।
এই বর্ণবাদী মনোভবটা আবু সায়ীদ সাহেবের মধ্যে আক্ষরিক অর্থেই আছে। যারা তার আলোচনায় অংশ নিয়েছেন তারা জানেন তিনি নিজের শরীরে পর্টুগিজ রক্ত আছে বলে বিভিন্ন সময় বলেন। তার অতি প্রচারিত সংগঠন এবং বাঙালিত বইতে বাঙালি জাতীর খর্বাকৃতি নিয়ে বিদ্রুপ করেছেন। তবে হ্যাঁ, তিনি very deep water fish, জনসম্মুখে কম আসেন। একটা জাতীয় দৈনিকে শাড়ি মেয়েদের সবচেয়ে যৌন আবেদন পূর্ণ পোশাক, শাড়ি পরলে মেয়েদের দেহের আকৃতি কেমন হয় জাতীয় কথা বলে একবার ধরা খেয়ে আসা আরো বন্ধ করেছেন।

তবে গনমাধ্যম যাদের স্যার বানিয়েছে তারা যে আদতে ষাড় সেটা প্রকাশ হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরো হবে।।
আজ উনার জন্মদিন৷।

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১২:২৬

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: উনি সহ আরো কয়েকজন মিল্লা, শিক্ষাব্যবস্থায় কি সৃজনশীল ধ্বংশযজ্ঞ চালাইছেন, সেইটা এই দেশের আধাপাকা বুদ্ধিজীবিরা এখোনো আবিস্কার করতে পারেননাই। স্যাড।

২| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১২:৩১

কামাল১৮ বলেছেন: সলিমুল্লা খান তার নখের যুগ্গিও না।সে মৌলবাদীদের বুদ্ধিজীবী।

৩| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১২:৫৭

আল ইফরান বলেছেন: আপনার পোস্টে প্রতিবাদ জানানোর জন্য লগিন করলাম।
আমার নিজের বই পড়ার হাতেখড়ি হয়েছিল ছোটবেলায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির বদৌলতে।
আর এই কেন্দ্র মানুষের সমস্যা নিয়ে কথা বলার জন্য তৈরি হয় নি, হয়েছে মানুষকে বই পড়া শেখানোর জন্য।
আর ইউরোপিয়ান রেনেসা আন্দোলন নিয়ে আপনার আরো পড়াশুনার প্রয়োজন আছে। সলিমুল্লাহ সাহেবের অনেক কথাই নিতান্তই বিদ্বেষপ্রসূত, উনি পারলে নিজে এইরকম একটা সোস্যাল মুভমেন্ট মবিলাইজ করে দেখাক।
টকশো আর বিলাসবহুল এসি কামরায় মুরিদ/চামচা পরিবেস্টিত হয়ে অনেক লম্বা লম্বা বুলি ছড়ানো যায়।
স্রেফ ঘৃণাজীবি না হয়ে, গঠনমুলক সমালোচনা করুন।

৪| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ ভোর ৬:৪৭

অগ্নিঝরা আগন্তুক বলেছেন: ধর্মকে একপাশে রেখে চিন্তা করতে শিখুন. আপনি তো লাইব্রেরী থেকে ধর্ম কে প্রাধান্য দিয়ে ফেলছেন. এই দেশে লাইব্রেরির সংখ্যা যথেষ্ঠ কম. আবু সায়ীদের মত ব্যক্তিত্ত কে এভাবে ছোট করার আগে চিন্তা করুন কি বলছেন.

৫| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৭:৫০

মেহবুবা বলেছেন: বুঝেছি আপনার কথা, আবদুল্লা আবু সাঈদ স্যার ভাল নন। তবে আপনি কি কয়েকজন মানুষের তালিকা দেবেন যারা আপনার কাছে এ দেশে সাধারন মানুষের মন এবং মননশীলতায় গ্রহনযোগ্য কোন ভূমিকা রেখেছেন।
বাসে করে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র যে বিভিন্ন জায়গায় বই নিয়ে অনেক ছেলে মেয়ের বই পড়বার অভ্যাস ধরে রেখেছে থবা গড়তে সাহায্য করেছে সেটা কি আর কেউ করেছে?

৬| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৭:৫৫

সাসুম বলেছেন: আরিফ আজাদ দের উত্তরসূরী হিসেবে জাতি ও দেশ আপনাকে মনে রাখবে হাজার বছর ধরে।

এক্মাত্র আরিফ আজাদ রাই আসল লেখক। বাকি সব ধইঞ্চা/

আর আবু সায়ীদ সাহেব তো আসলেই একটা বাজে লোক, বাচ্চা ছেলেমেয়ে দের কে বই পড়া শিখিয়েছে। তাদের কে জ্ঞানের দিকে ঠেলে দিতে চেয়েছে। এসব না করে, ১৪০০ বছর পেছনে ঠেলে দেয়া শিক্ষা বা মাদ্রাসায় পাঠালেই হত বাচ্চাগুলাকে। প্রচুর জ্ঞান নিয়ে ফিরে আসত

সাঈদ সাবের ফাসি চেয়ে পোস্ট আসেনাই এখনো, এটাই উনার জীবদ্দশায় প্রাপ্তি।

বিঃদ্রঃ সলিমুল্লাহ খাসি খান, পি-নাপাকির মত হুট করে বাংগু মোসলমান সমাজের চোখের মনি হয়ে উঠেছে। বিষয় টা ইন্টারেস্টিং।

৭| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:৩৩

আমি রানা বলেছেন: আপনার মতে কয়েকজন আলোকিত মানুষের নাম কনদেহি। তাদের কে নিয়া গুগল করমু, তাদের মহান কর্ম পইড়া মনেরে শান্তি দিমু।

৮| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:০৪

শাহ আজিজ বলেছেন: আবদুল্লাহ আবু সাইদ নানা ভূষণে ভূষিত হতে পারেন কিন্তু এই যে বই পড়ার অভ্যাসটা গড়ে দেওয়া এই দেশে এটা তার একক অবদান । সবারই কিছুনা কিছু এজেনডা থাকে , তেমনি সাইদ স্যারেরও আছে এবং তা অন্যায় কিছু নয় । ৭৬ সালে গিয়ে দেখলাম বাংলামটরের গলিতে তিনটি টিনের চালা নিয়ে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র । আজকে সেই জায়গার উল্টো দিকে দশ তালা দালানে তার সম্পদ । চুরি চামারি করে নয় স্রেফ সজ্জনদের বাড়িয়ে দেওয়া হাতের সাহায্যে জেলা শহরে পর্যন্ত বই ভর্তি বাস পৌঁছে গেছে , পাঠক সেই কিশোরেরা । সেল সেন্টারে ২০০৮/৯ জমিয়ে আড্ডা মেরেছি । দালানে গিয়ে স্যার হারিয়ে গেছেন । এই কর্পোরেট বডির ধরনটা আমার ভাল লাগেনি । ওই দালানে গিয়ে স্যারকে খুজে পাওয়া মুশকিল , সেল সেন্টার ভাল ছিল ।

আর মাত্র একটি লোককে দেখান যে সারাটা জীবন একটা কিশোর যুব কল্যাণমুখী সংঘ গড়তে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন ।

৯| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:৩১

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: আপনার মতো অসংখ্য আবর্জনার ভিড়ে টিমটিম করে জ্বলছে যে কয়জন আলোকিত বাঙালি, আবু সাইয়িদ স্যার তাদের মধ্যে একজন। আপনি নাম করতে পারবেন এরকম আরো কয়েকজনের ?

১০| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:৪৭

সোনালি কাবিন বলেছেন: স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: আপনার মতো অসংখ্য আবর্জনার ভিড়ে টিমটিম করে জ্বলছে যে কয়জন আলোকিত বাঙালি, আবু সাইয়িদ স্যার তাদের মধ্যে একজন। আপনি নাম করতে পারবেন এরকম আরো কয়েকজনের ?

১১| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:৪৯

মাসউদুর রহমান রাজন বলেছেন: এই পোস্ট সম্পূর্ন ধর্মীয় মৌলবাদী মানসিকতা থেকে লেখা। লেখকের একদেশদর্শী ও মৌলবাদি বিবেচনাবোধের পরিচয় পাওয়া ‍যায় এখানে।
স্বামী বিশু্দ্ধানন্দের সাথে একমত। এই লেখাটি একটি আবর্জনা ছাড়া আর কিছু না।

১২| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:৩১

আনোয়ার রেজা বলেছেন: আপনার যদি কাউকে ভাও না লাগে তাকে এড়িয়ে চলুন কিন্তু অজাথা কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকুন। মানুষের যত টুকু ভাল সেটা নিন খারাপটা ফেলে দিন। এভাবে একজন আরেকজনের পিছনে লাগা বন্ধ করুন।

১৩| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে ধর্মকে পেছনে রাখতে হবে।

১৪| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:১৯

নতুন বলেছেন: বুঝতে পারছি তিনি মোকসেদুল মুমিম আর প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ পড়তে বলেনাই দেখে আপনার খারাপ লেগেছে।

দেশের বর্তমানের অবস্থা কাটিয়ে উঠতে সত্যিকারের আলোকিত মানুষ দরকার।

১৫| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৫৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আমি স্যারের কয়েকটি বক্তৃতা শুনেছি। অসম্ভব সুন্দর বক্তৃতা দেন। ওনাকে নিয়ে এরকম পোস্ট খুবই দুঃখজনক...

১৬| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৭

আমারে স্যার ডাকবা বলেছেন: এই লেখায় তার প্রতি আপনার আক্রোশ উগড়ে দিয়েছেন। তিনি কি বলেছেন তা নিয়ে অভিযোগের চেয়ে তিনি কি কি বলেন নাই তা নিয়েই আপনার অভিযোগ বেশি। এই লেখা নিয়ে একটা কথাই বলতে পারি, "বাল্পোষ্ট"

১৭| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: যাযাবর চিল,




আপনার নিক প্রোফা্ইলে এই যে বলেছেন - "তোমরা মানুষ, আমরা মানুষ, তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়" এর সাথে যোগ করে বলতে হবে - "আপনার মগজেও তফাৎ আছে"
আপনি যে ছাগলের শিরদাঁড়াওয়ালা প্রানী তা পরিষ্কার করেছেন। কাঠাল পাতা খেতে পারলেই যাদের মোক্ষ লাভ হয়।

সহ ব্লগার নতুন যে বলেছেন: বুঝতে পারছি তিনি মোকসেদুল মুমিম আর প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ পড়তে বলেনাই দেখে আপনার খারাপ লেগেছে।
এর সাথে সহমত।

১৮| ২৭ শে জুলাই, ২০২১ রাত ২:৩৫

সোহানী বলেছেন: সাসুম এর লিখার সূত্র ধরে আপনার পোস্ট পড়া নতুবা আবর্জনা পোস্ট আমি পড়ি না। এখন দেখি এ পোস্ট শুধু আবর্জনাই না একেবারে ময়লার ভাগাড়। উপরেই আপনাকে বিশ্লেষন করেছে তাই আর বেশী কিছু বল্লাম না। শুধু বলবো এধরনের মানসিকতা থেকে যতদিন বেড়িয়ে আসতে না পারবেন ততদিন দেশ মমিনুল এর মতো লোকের সংখ্যা বেড়েই চলবে।

১৯| ২৭ শে জুলাই, ২০২১ ভোর ৫:২৮

ঈশ্বরকণা বলেছেন: আহমেদ জি এস, সোহানী
আপনারা ব্লগের দুজন অনেক সিনিয়র ও চৌকষ লেখক কিন্তু আপনাদের মন্তব্যে খুব অবাক হলাম । এই লেখার লেখক যেভাবে কথাগুলো বলেছেন সেটার সাথে অনেকেই একমত হবেন না সেটা ঠিক । কিন্তু আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ আর তার বিশ্ব সাহিত্যকেন্দ্র নিয়ে সমালোচনা করলেই সেটা তার প্রতি ঘৃণা বা মৌলবাদী হবে আপনাদের সেই মন্তব্য কিন্তু অনেক বেশি আবেগের। আরেকটা কথা আব্দুল্লাহ আবু সাঈদকে কি আপনারা ব্যক্তিগতভাবে খুব কাছে থেকে দেখেছেন? বা চেনেন ? আমি তাকে খুব কাছ থেকে ছাত্র হিসেবে দু'বছর দেখেছি । আমি পান্না কায়সার, শামীম আজাদ এদেরকেও টিচার হিসেবে দেখেছি ক্লাস থেকেই। আব্দুল্লাহ আবু সাঈদকে নিয়ে ব্লগে যারা লিখছেন/মন্তব্য করছেন তাদের অনেকের চেয়ে মানুষ আর শিক্ষক হিসেবে তাকে মূল্যায়ন করার সুযোগ আমার বেশি আছে বলেই আমি বলে মনে করি। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই আমি নিশ্চিত করেই জানি আর দেখেছি আবদুল্লাহ আবু সাঈদের সব সময়ই অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল এখনো হয়তো আছে (সেগুলো বেশি বলছি না।আমার কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে নেতিবাচক খুব বেশি কিছু বলা আমার কমফোর্ট জোনের বাইরে )। এখন আরেকটা কথা বলি, বাংলাদেশ সরকারের একদম শীর্ষস্থানীয় একজন ব্যুরোক্রাটকে আমি ছোট থেকেই চিনি।উনিও আব্দুল্লাহ আবু সাঈদের ছাত্র ছিলেন। উনি কখনোই শিক্ষক হিসেবে আব্দুল্লাহ আবু সাঈদের প্রশংসা করেননি আমাদের কাছে বরং তার সমালোচনাগুলো আব্দুল্লাহ আবু সাঈদের খ্যাতির ওপর চাঁদের কলংকের মতো কোনো হালকা না গভীর গারো দীর্ঘ দাগের মতো ।আমি উনার একযুগ পরে আব্দুল্লাহ আবু সাঈদের ছাত্র ছিলাম কলেজে। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই আমি বলি ওই ব্যুরোক্রাট ভদ্রলোক আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ সম্পর্কে যে সমালোচনাগুলো করতেন আমি একযুগ পরে তার ছাত্র হয়েও সেই একই সমালোচনা সত্যি সেটাই দেখেছি। তাকে দেবতা ভাবার কোনো কারণ নেই।

এখন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র সম্পর্কে বলি। এটা একটা আপাতঃ সাকসেসফুল প্রজেক্ট সেটা নিয়ে আর্গুমেন্ট করার কোনো মানে নেই। এটা সীমাবদ্ধভাবে অবশ্যই সাকসেসফুল। কিন্তু সেটা বলার পরেও একটা জিনিস আমার মনে হয়েছে সব সময়ই সেটা হলো বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের মধ্যে দিয়ে উনি যেটা করতে চেয়েছিলেন সেটা অনেক বেশি ইফেক্টিভ হতে পারতো উনি যদি উনার পরিচয় কাজে লাগিয়ে আমাদের প্রাইমারি, মিডিল আর হাইস্কুল, কলেজগুলোকে ভিত্তি করে পড়ার অভ্যেস বানাবার উদ্যোগ নিতেন। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের মূল লাভটা পেয়েছে শহর বা মফস্বলের ছেলে মেয়েরা যে সব জায়গায় যাতায়াতের সুযোগ সুবিধা ভালো (আর যারা বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সুফল পেয়েছে তারাই কি আলোকিত মানুষ হতে পেরেছে ? ব্লগের দিকে, আপনাদের প্রিয় একজন ব্লগারের চরম নোংরা ভাষা ব্যবহারের তাকিয়ে বুকে হাত দিয়ে বলুন প্লিজ !)। কিন্তু বাংলাদেশের গহীন গ্রামগুলোর ছেলে মেয়েদের কাছে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সাফল্য পুরোপুরি কখনই পৌছেনি বলেই আমার ধাৰণা । সেটা সামাজিক অর্থনৈতিক কারণেই সম্ভব না সেটা নিশ্চই আপনারাও বুঝতে পারেন ।উনি যখন বিশ্ব্য সাহিত্য কেন্দ্র করেছেন সে সময়ে মানে সত্তুরের মাঝামাঝি সময়ে অন্য কোনো ধরণের বিনোদনের ব্যবস্থা ছিলোনা বলেই আমাদের বেশির ভাগ স্কুল কলেজগুলোতেই লাইব্রেরি ছিল (এখন সেটা আছে কি না বা এমপিওভুক্ত ও বেসরকারি স্কুলে লাইব্রেরি করার শর্ত সরকারি ভাবে আছে কি না আমি জানি না ) সেগুলোকে ভিত্তিতে করে উনি যদি এই বই পড়ার অভ্যেস করার আন্দোলনটা শুরু করতেন তাহলে এটা অনেক বেশি কার্যকর হতো। এখন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের অফুরন্ত বাজেট, যোগাযোগ, মিডিয়া প্রচার আর জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের কারণে (জেলা/উপজেলা পর্যায়ের সরকারি প্রশাসন বেশির ভাগ সময় জড়িত) স্থানীয় পর্যায়ে স্কুল কলেজগুলোর টিপটিপ জ্বলে থানা লাইব্রেরিগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে বা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবার পথে । বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রকে আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ স্কুলের লাইব্রেরি রাখার ধারণার একটা কাউন্টার পার্ট হিসেবে তৈরী করে ফেলেছেন ইচ্ছেয় হোক বা অনিচ্ছায় হোক । এতে গহীন গ্রামের ছেলে মেয়েদের জন্য বই পড়ার অভ্যেস তৈরী করা বা সেই অভ্যেস বাড়ানোর একটা শূন্যতা অনেক দিন ধরেই হয়ে আসছে বলে আমার ধাৰণা ।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এডিশনাল লাইব্রেরিয়ান ড. মোহাঃ আজিজুর রহমান "গ্রন্থাগারের তথ্য সেবার বর্তমান অবস্থা ও উন্নয়নে ভবিষ্যৎ করণীয়" শিরোনামে আমাদের দেশের স্কুল পর্যায়ে লাইব্রেরির অবস্থা নিয়ে একটা সুন্দর প্রবন্ধ লিখেছেন দু’বছর আগে । সেখানে উনি বলেছেন,"------ ২০১০ সালে সরকারী অধ্যাদেশের মাধ্যমে মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে ১৮৭৭৫টি বিদ্যালয়ে গ্রন্থাগারিকের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। পরবর্তীতে এই পদে গ্রন্থাগারিক নিয়োগ বাধ্যতামূলক করেছে সরকার।" কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপারটা হলো ওই একই প্রবন্ধে ড. মোহাঃ আজিজুর রহমান বলেছেন " বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো ২০১৯ এর বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বর্তমানে ৫৯৯টি সরকারী স্কুল, ১৫৫৮৭ বেসরকারী স্কুল রয়েছে। অধিকাংশ সরকারী মাধ্যমিক স্কুলে গ্রন্থাগার নেই বললেই চলে।" https://www.dainikshiksha.com-এর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে 'ক্লাস রুটিনে লাইব্রেরি ঘণ্টা চালু না করলে শাস্তি 'নিবন্ধে বলা হচ্ছে "মাধ্যমিক স্কুলের ক্লাস রুটিনে লাইব্রেরি ঘণ্টা অন্তর্ভুক্ত করে তা কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। চলতি ২০১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করা হলে প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।--- শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও সাধারণ জ্ঞান অর্জনে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকে দুই বছর আগে প্রস্তাব দেওয়া হয় শ্রেণিকক্ষে সাধারণ বিষয় যেমন পড়ানো হয়, তেমনি করে লাইব্রেরিতে পড়াশুনা করার জন্য ক্লাস রুটিনে লাইব্রেরি ঘণ্টা অন্তর্ভুক্ত করার।ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল— নির্দিষ্ট সময়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসের বইয়ের বাইরে অন্যান্য বই পড়বে, বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও আবৃত্তিতে অংশ নেবে, দেয়াল পত্রিকা বানানো শিখবে এবং বইপড়া নিয়ে আলোচনায় অংশ নেবে।" আশ্চর্য ব্যাপার না ? দুবছর আগে মানে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ২০১৬ সালে ব্যাপারটার গুরুত্ব অনুভব করেছে স্কুলের ছেলে মেয়েদের জন্য লাইব্রেরি টাইমের প্রতিষ্ঠার ৩৮ বছর পর মাশাল্লাহ ! প্রায় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র উদ্যেশ্যগুলোই পূরণ করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব ! স্কুলের ছেলে মেয়েদের যদি বই পড়ার অভ্যাসই না গড়ে উঠে তাহলেতো বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র লক্ষ্য পূরণের কোনো আশা নেই ! তাই বলছিলাম আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র করে বই পড়ার অভ্যেস তৈরী করার যে পরিকল্পনা করেছিলেন ১৯৭৮ সালে সেটা না করে নিজের সে সময়কার খ্যাতি পরিচয় কাজে লাগিয়ে দেশের স্কুল কলেজগুলোর লাইব্রেরিগুলোকে ব্যবহার করে এই কাজটা করার দূরদর্শিতা দেখতে পারলে দেশের ছেলে মেয়েদের জন্য সেটা আরো সফল ও ইতিবাচক ফল রাখতে পারতো । দেশি বিদেশী সহযোগিতা নিয়ে যেভাবে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র উনি ফাইন্যান্স করছেন সেভাবে বাজেট ইস্যুগুলো মেটানোর পরিকল্পনা করতে পারলে সেই পরিকল্পনা সফল না হবার কোনো কারণও ছিল না বলে আমার ধারণা । বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র যতটা উনার নিজের আন্তর্জাতিক পরিচয় বাড়িয়েছে সে তুলনায় তার সামগ্রিক প্রাপ্তিটা (দেশের স্কুল কলেজগুলোর ছোট খাটো লাইব্রেরিগুলোও এখন আর কার্যকর নেই সেটা যদি ধরি) খুব বেশি সেটা বলাটা সহজ না কিন্তু ।

এই লেখার লেখকের একটা কথা কিন্তু সত্যি । দেশে ইসলাম প্রধান ধর্ম । ৯০ ভাগ মানুষের ধর্ম । দেশের সংস্কৃতির ওপর ইসলামের প্রভাব অনেক ।কিন্তু বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র প্রতিযোগিতার জন্য যে বইগুলো ছেলে মেয়েদের দেয় সেখানে ইসলামিক দর্শন বা ইসলামিক ইতিহাস খুব বেশি পেট্রোনাইজ করে সেটা বোধ হয় সত্যি না । আমাদের কলেজের সময়েই মনে হয় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র প্রথম বড় আকারের বই পড়া প্রতিযোগিতা শুরু করে ছাত্রদের দিয়ে । আমি তখন থেকেই ব্যাপারটা লক্ষ্য করেছি । আমি উনার ক্লাসেও দেখেছি উনি অনেক কথা বলেছেন শিল্প সাহিত্য নিয়ে কিন্তু ইসলামের ইতিহাস দর্শন নিয়ে কিছু কখনো বলেছেন সেটা মনে করতে পারছি না । তাই তার সম্পর্কে দেশের বেশিরভাগ মানুষের ধর্ম , প্রাকটিসের ব্যাপারে পৃষ্ঠপোষকতার অভাবের কথা বলে সেটা হয়তো অনেক মিথ্যে না ।

আমার লেখার শেষে আপনাদের মন্তব্যের ব্যাপারে একটা আরো কথা। সেটা হলো আপনারা দুজনেই আরো একজন ব্লগারের এই বিষয় নিয়ে লেখায় মন্তব্য করেছেন । এই লেখকের লেখার বিষয়ে আপনাদের রিজার্ভেশন যতটা দেখলাম সেটা কিন্তু আরেকজন লেখকের লেখা সম্পর্কে দেখলাম না । কিন্তু আমার মনে হয়েছে এই লেখকের লেখা পড়ে তাও আর্গুমেন্ট করতে ইচ্ছে করবে এই লেখক ঠিক না বেঠিক বলছেন সে সম্পর্কে । কিন্তু আপনাদের রেফারেন্স দেওয়া অন্য ব্লগারের ভাষা চরম আপত্তিজনক। সেই নোংরা ও আপত্তিজনক ভাষার একটা লেখা পড়াও প্যাথিটিক। আপনার সে সম্পর্কে একেবারেই নীরব দেখে খুবই আশ্চর্য হয়েছি । বিশেষ করে ঋদ্ধ ব্লগার আহমেদ জিএস তার স্বভাববিরুদ্ধ যে আক্রমণাত্মক মোড ব্যবহার করেছেন এই লেখা সম্পর্কে তার মন্তব্যে সে তুলনায় অন্য ব্লগারের ইসলাম ধর্ম বিরুদ্ধ নোংরা ভাষা সম্পর্কে কোনো কথাই বলেন নি। মনে হচ্ছে ইসলাম নিয়ে নোংরা কথা বললে মনে হয় কোনো ক্ষতি নেই ! শুধু আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ ইসলামের পৃষ্ঠপোষকতা করেননি বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের মধ্যে দিয়ে সেটা বললেই বুঝি সমস্যা ! সোহানি, কালকেই আপনি একজন সিনিয়র ব্লগারের প্লেনে মদ খাওয়ার ব্যাপারটা যে বিরক্তিকর সেটা বলেছেন তার লেখায় মন্তব্যে । সেটা ব্লগের কোনো নারী ব্লগারতো নয়ই এমনকি আমাদের বেশিরভাগ ছেলে ব্লগারও বলবে না (আমি এই বয়োজ্যেষ্ঠের ব্লগে মন্তব্য করি না তার আপত্তিকর সাবজেক্ট নির্বাচন আর ভাষার জন্য ) । সেজন্য আপনি আমার বিবেচনায় ব্লগের ইতিহাসেরই সেরা প্রথম দুই তিনজন নারী ব্লগারদের মধ্যেই থাকবেন । সব নারী ব্লগারের লেখা সম্পর্কে জানলে আমি জানি আপনাকে নিশ্চিত ভাবেই প্রথমে রাখা যেত কাৰণ আপনার মতো অন্য কারো না হবার সম্ভাবনা বেশি । তাই আপনি যেই সমালোচনা করেছেন এখানে সেটা আপনি করতেই পারেন কোনো অসুবিধে নেই কিন্তু অন্য ব্লগারের ইসলাম সম্পর্কিত চৰম আপত্তিকর ভাষা সম্পর্কে কিছু বলা এড়িয়ে গেছেন দেখে একটু অবাক হয়েছি ! যাহোক ভালো থাকুন সবাই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.