নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমরা মানুষ, আমরা মানুষ, তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়

যাযাবর চিল

i agree to disagree...

যাযাবর চিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফুড ইন্ডাস্টিজ: সভ্যতার অন্ধকারতম একটা দিক

০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৫:৪১



আমার মনে হয় যদি আমাদের উপর আসমানি গজব নেমে আসে তার একটা কারন হবে এই ফুড ইন্ডাস্টিজ। জার্মানিতে আমি একটা রেস্টুরেন্টে সপ্তাহে ২/৩ দিন কাজ করতাম। কাজ তেমন কঠিন কিছু না। ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে ওভেন করে সামনে দেওয়া। মাঝে মাঝে খাবার বানানো। অনেক খাবার নষ্ট হতে দেখেছি। বানানোর সময়, তৈরি করার সময় এবং যারা খাবার খেতে আসে তারা তো করেই৷
এরপর একটা চেইন কফি শপে কাজ করলাম কিছুদিন। এখানে অবস্থা আরো ভয়াবহ। প্রতিদিনই ৫০/৬০ ইউরোর খাবার নষ্ট হয়,মাঝে মাঝেই সেটা ১২০/১৩০ ইউরো ছাড়িয়ে যায়।
আর আছে পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রি। পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিতে দুই ধরণের মুরগীর প্রজনন করা হয়। ডিমের জন্য লেয়ার মুরগী, আর মাংসের জন্য ব্রয়লার। ব্রয়লার মুরগী ছয়-সাত সপ্তাহের মধ্যে আকারে বেশ বড় হয়ে যায়। মাংশ হয় প্রচুর। আর লেয়ার মুরগীর আকারে বড় না হলেও অনেক বেশি ডিম দেয়। তবে ডিম তো দেয় শুধু মুরগী। মোরগগুলোর কী হয়? মেরে ফেলা হয়। জন্মের প্রথম দিনই ওদের মেরে ফেলা হয়। কারণ মোরগ লাভজনক না।
আর তাই প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে এক দিন বয়েসী ৭০০ কোটি বাচ্চা মোরগ হত্যা করা হয়। হ্যাঁ, ৭০০ কোটি। ৭ বিলিয়ন। ৪/৫ টা পদ্ধতিতে বাচ্চা মোরগগুলো মারা হয়। সবগুলোই বেশ ভয়ংকর এবং ক্রুর।
এক— বড় প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে ফেলে দেওয়া হয়। এতে শ্বাস বন্ধ হয়ে মরে যায়।
দুই— ইলেট্রিক শক দিয়ে।
তিন— গ্যাস চেম্বারে।
চার— ম্যাসেরেইশান। এটা হল সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি৷ একটা বিশালাকৃতির ব্লেন্ডারের মধ্যে জীবন্ত বাচ্চা মোরগগুলোকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ব্লেডে কেটে বাচ্চা মোরগগুলোকে ছাতু হয়ে যায়৷ একে বলা হয় Chick Culling বা Male Chick Culling।
জাতিসংঘের হিসাবে প্রায় ১.৩ বিলিয়ন টন খাবার নষ্ট হয় প্রতি বছর যা মোট উৎপাদনের প্রায় তিনভাগের একভাগ।
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে পৃথিবীতে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ৮২১ মিলিয়ন।
এই নষ্ট হওয়া খাবার দিয়ে ৮২১ মিলিয়ন মানুষ না শুধু এর চেয়েও প্রায় তিনগুন মানুষকে খাওয়ানো সম্ভব। মানে পুরো দুনিয়া থেকে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যাকে অদৃশ্য করে ফেলা সম্ভব শুধুমাত্র যদি আমরা খাবার একটু কম অপচয় করি...

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১১

চাঁদগাজী বলেছেন:



ভয়ংকর খারাপ কাজ করছে মানুষ

২| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩৩

ভুয়া মফিজ বলেছেন: ছোটবেলায় টেবিলে খেতে বসলে প্লেট থেকে একটা ভাত পড়ে গেলেও আব্বা সেটা তুলে নিয়ে খেতে বলতেন, সেইসাথে খাবারের অপচয় যে কতোটা খারাপ কাজ, সেটাও ব্যাখ্যা করতেন। বিষয়টা মাথায় এমনভাবে গেথে গিয়েছে যে, আজও, এই বয়সকালেও তাই করি।

এখানে টেসকোর যেই স্টোরে আমি শপিং করি, তার গ্রোসারী ম্যানেজার একদিন কথায় কথায় বলছিল, প্রতিদিন তারা এক লরী খাবার স্টোর থেকে ফেলে দেয়। একটা নমুনা দেখালো, সুইটকর্ণের একটা ক্যান, যার একটা কোনা একটু থেতলে গিয়েছে, সেটাও ওয়েস্ট, কারন এই ক্যান কেউ কিনবে না। কিছু কিছু তারা মুল্যহ্রাসে দেয়, তবে পরিমান খুব কম!!! এই হলো একটা স্টোরের অবস্থা। সারা বৃটেনে এমন হাজারো স্টোর আছে। আর সারা পৃথিবীতে? কি বলবেন??

৩| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: ভয়াবহ বিবরণ!
শিরোনামটা যথাযথ হয়েছে। প্রথম বাক্যটির সাথে একমত!
পোস্টে প্লাস। + +

৪| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১০

ফুয়াদের বাপ বলেছেন: ভয়াবহ তথ্য জানলাম। পুঁজিবাদী সমাজ ব্যাবস্থা অন্যতম দায়ী যেখানে মানবিকতার চাইতে লভ্যাংশ পরিগনিত হয়।

৫| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৪

হাবিব বলেছেন: বাংলাদেশে প্রতিটি বাড়িতেও প্রচুর খাবার নষ্ট করা হয়। অথচ দরজায় ভিক্ষুক আসলে তাড়িয়ে দেয় কিছু না দিয়েই।

৬| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৪

শাহ আজিজ বলেছেন: ছোট বাচ্চা মুরগির ব্লেনড দিয়ে বারগারের চপ আর সসেজ বানানো হয় দেখেছি ডকুতে । ব্যাপারটা কি সত্যি ?

৭| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ রাত ৯:৪৪

সাগর শরীফ বলেছেন: ভয়ানক তথ্য দিলেন ভাই।

৮| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: পৃথিবীর সব দেশেই এরকম অপচয় হয়। আমাদের মতো দরিদ্র দেশেও হয়।

৯| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:২০

নূর আলম হিরণ বলেছেন: খাবার অপচয় এক ধরনের অপরাধই বটে!

১০| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ ভোর ৬:৩৬

কলাবাগান১ বলেছেন: আইন তৈরী হয়েছে এটা বন্ধ করার। জার্মানি আর ফ্রান্স ২০২২ সাল থেকে এই chick culling বন্ধ করার ঘোষনা দিয়েছে...আমেরিকা যদিও ২০২০ সালে বন্ধ করার কথা দিয়েছিল, এখনও বন্ধ হয় নাই...কিন্তু বিজ্ঞান অনেক এগিয়েছে এটা সমাধান বের করার জন্য। বিশেষ করে Israel Scientists রা CRISPR Technology দিয়ে ডিমের মাঝে মেয়ে/ছেলে embryo ডিটেক্ট করার টেকনোলজি ব্যবহার করছেন
Israel Egg male/Female Technology
ধন্যবাদ এমন একটা বিষয় কে সামনে আনার জন্য। আগামিকাল আমার ক্লাশে পড়ানোর টপিক হল Genetics of Sex Determination. এই বিষয়টাকে সামনে আনব ছাত্র/ছাত্রী দের সচেনতার জন্য। একটা এসাইনমেন্ট আর পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরী করা যাবে ইসরাইল এর টেকনোলজির মেক্যানিজম নিয়ে। এখানেই সামুর উপযোগিতা...শিক্ষায় অবদান।

১১| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৭:০২

নাহল তরকারি বলেছেন: আহারে! পুরুষ মুরগী যদি আমারে দিতো। আমি বড় করে খাইতাম।

১২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৩

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: খাবার নষ্ট করা ধনীদের জন্য মনে হয় একটা ট্রেন্ড।

১৩| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ রাত ৯:০১

রাকু হাসান বলেছেন:

সত্যিই ভয়ানক তথ্য দিলেন । অনেক ধন্যবাদ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.