নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কি বলা যায়! কিছু কথায় নিজেকে ব্যক্ত করা সম্ভব না আমার পক্ষে। তাই একটা সিরিজে কিছু কিছু করে সবই বলছি।

সামু পাগলা০০৭

আমি অতিআবেগী, আগে ব্যাপারটা লুকানোর চেষ্টা করতাম। এখন আর করিনা।

সামু পাগলা০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কানাডার স্কুলে এক দিন (পর্ব ১৪) - বাংলাদেশীদের বিয়ে ভাবনা নিয়ে বিদেশীদের দৃষ্টিকোন এবং আমার নারী জীবন

১৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:০৪

আগের পর্বে বলেছিলাম ওদের বিয়ে ভাবনা আমাকে কিভাবে এফেক্ট করেছিল। আজকে একটু টেবিলটা ঘুরিয়ে দিচ্ছি। বলছি আমাদের বিয়ে ভাবনা ওদেরকে কিভাবে এফেক্ট করে? আমার স্কুল জীবনে তার কী প্রভাব ছিল? বেশ কিছু টুকরো গল্প দিয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দেব।

আগের পর্বগুলো:
কানাডার স্কুলে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা
কানাডার স্কুলে প্রথম দিন (২য় পর্ব)
কানাডার স্কুলে প্রথম দিন (৩য় পর্ব)
কানাডার স্কুলে প্রথম দিন (চতুর্থ পর্ব)
কানাডার স্কুলে এক দিন (পর্ব ৫)
কানাডার স্কুলে এক দিন (পর্ব ৬) ১৮+
কানাডার স্কুলে এক দিন (পর্ব ৭) আমার ভারতীয়, পাকিস্তানী অভিজ্ঞতা এবং অন্যান্য
কানাডার স্কুলে এক দিন (পর্ব ৮) কিছু ভারতীয় যে কারণে বাংলাদেশকে ছোট করে দেখে
কানাডার স্কুলে এক দিন (পর্ব ৯): কেন প্রবাসি বাংলাদেশি বাচ্চারা কানাডিয়ান/ভারতীয় হয়ে যাচ্ছে
কানাডার স্কুলে এক দিন (পর্ব ১০) সমকামিতা ১৮++
কানাডার স্কুলে এক দিন (পর্ব ১১) - কিশোরিবেলায় কানাডার প্রথম ভালোলাগা - এক গ্রিক দেবতারূপী সুদর্শন কানাডিয়ান ছেলে
কানাডার স্কুলে এক দিন (পর্ব ১২) - বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ বাংলাদেশকে কিভাবে দেখে এবং আমার স্কুল জীবনে তার প্রভাব
কানাডার স্কুলে এক দিন (পর্ব ১৩) - কানাডায় বিয়ে, লিভ টুগেদার, ডিভোর্স এবং কিশোরি আমি (১৮+)

গ্র্যাডুএটিং ইয়ারের ঘটনা বলব আজকে। ঐ ইয়ারের মার্ক ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে ম্যাটার করার কারনে পড়াশোনা নিয়ে কিছুটা প্রেশারে থাকতাম। তবে ততদিনে আমি পুরোপুরি ওয়েল এডজাস্টেড। স্কুলে স্মার্ট কিড হিসেবে বেশ পরিচিত। টিচাররাতো সবসময় প্রশংসা করতেন। সব ক্লাসই ভাল ছিল তবে ইংলিশ ক্লাসটা আমার বেশি ভালো লাগত। আমি ওই ক্লাসে আমার প্রানের ব্রাজিলিয়ান বান্ধবী জে এবং জাপানিজ মেয়ে শের সাথে বসতাম। ওদের সাথে অনেক মজায় ক্লাসটা হত। জে আর আমি অনেক বকবক করতাম যদিও শে চুপচাপ থাকত। শেষের দিকে আমাদের প্রভাবে শেও মনখুলে মিশত। 

একদিন ক্লাসে একটা গল্প পড়ানো হচ্ছে এক কানাডিয়ান পাহাড়ি মাতৃতান্ত্রিক সমাজের। সেখানে এরেন্জ ম্যারেজ হয় এবং ছেলেটাকে ইমপ্রেস করতে হয় মেয়ে এবং মেয়ের মাকে। ছেলে মেয়ের মা একে অপরের সাথে কথা বলে নেন। তারপরে প্রতিদিন শিকার করে মেয়ের বাড়ির সামনে কিছু রেখে আসতে হয় ছেলেটাকে। মেয়ের পরিবারের সবাই জানালা থেকে ছেলেটাকে নজরে রাখে সে সময়। এরকম অনেকদিন যাওয়ার পরে একদিন দরজা খুলে যায় এবং ছেলে দাওয়াত পায় খাওয়ার। ছেলে দাওয়াতে সেজেগুজে যায় মুখ হাসি করে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে। সেখানেও ইমপ্রেস করতে পারলে তবেই বিয়ে। ছেলের মা হাজারটা টিপস দেয় এভাবে কথা বলবে ওভাবে বলবে না। কাহিনী আরো অনেক কিছু ছিল কিন্তু আমাদের টপিকের জন্যে এটুকুই রিলেভেন্ট।

কানাডায় টিচাররা চায় স্টুডেন্টরা প্রতিটি গল্পের সাথে রিলেট করে নিজে বিশ্লেষন করে তারপরে Essay লিখুক। আমাদের দেশে যেমন বই থেকে পড়ে সবাই একই জিনিস লেখে তেমন না। ওখানে নিজের ভাবনা থেকে সবাই নিজের মতো করে লেখে। টিচার রিডিং পড়া শেষে প্রশ্ন শুরু করলেন। একটা প্রশ্ন ছিল আমরা পিতৃতান্ত্রিক সমাজে বাস করি তো এধরনের সমাজ কেমন লাগল? একটা কোকড়া চুলের কানাডিয়ান ছেলে বলল "রিয়ালি? আমি ভেবেছিলাম কানাডা মিউচাল সমাজ।" সবাই আমরা হেসে ফেললাম, মিউচাল সমাজ আবার কি? টিচার বোঝালেন আমাদের সমাজে মেয়েরা বিয়ের আগে বাবার ও বিয়ের পরে স্বামীর পদবী নেয় এবং আরো অনেক উদাহরন দিলেন। ছেলেটা মাথা নাড়ল যদিও চেহারা দেখে বুঝেছিলাম কিছুই বোঝেনি।

এরপরে প্রশ্ন করলেন তোমাদের মধ্যে কে কে মা বাবার পছন্দে বিয়ে করতে চাইবে? তিরিশ জনের ক্লাসে তিনটি কানাডিয়ান মেয়ে এবং আমি হাত তুললাম। হাত তুলেই মনে হল এখন তো কারন জিগ্যেস করবে, কি বলব? অন্যরা হাইপোথেটিকালি উত্তর দেবে কিন্তু আমার জীবনে রিয়ালি হতেও পারে। অন্য মেয়েটা বলল আমার মা আমার বেস্ট বাডি, বন্ধু ডেট সেট আপ করার মতো হবে আমার জন্যে বিষয়টা। আরো সব সুন্দর কারন বলছে অন্যরা। কিন্তু আমার তো সুন্দর কোন কারন নেই। আমার কালচারে একটা সময় পর্যন্ত কাউকে পছন্দ না করতে পারলে বাবা মা প্রেশার দিয়ে বিয়ে করিয়ে দেন। কাউকে পছন্দ করলেও অনেক পরিবার জোর করে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেয়! কিন্তু এসব কথা বললেতো আমার কালচারের রেপুটেশনের বারোটা বেজে যাবে। বাকি তিনটা মেয়েকে জিগ্যেস করে আমার কাছে আসলেন। আমি বললাম আমার মা বাবা আমার খুব ভালো বন্ধু, আমার পছন্দ জানে। তাদের পছন্দ অবশ্যই আমার পছন্দ হবে। আপনারা খেয়াল করেছেন যে ঐ কানাডিয়ান মেয়েটার মতো উত্তর দিয়েছি? আসলেই ওরটাই অন্য ভাষায় বলেছিলাম।

তারপরে সবাইকে নিজেদের টেবিলের মধ্যে আলোচনা করতে দিলেন। জে অবশ্যই লাভ ম্যারেজের জন্যে হাত তুলেছিল। আলোচনায় বলল, "Marriage is all about looove!" লাভ শব্দটা টেনে টেনে সুন্দর করে বলেছিল। এখনো কানে বাজে। বললাম লাভ ম্যারেজেও ডিভোর্স হয়। ও বলল সেটা সমস্যা না আবার নতুন করে ভালবাসা খুজতে হবে। আমি বললাম এটা কন্টিনিউয়াস প্রসেস? একটার পরে একটা আসতেই থাকবে? ও খুব অভিয়াস যেন এটাই নরমাল এমনভাবে বলল "হ্যা"। আমিও বললাম মা বাবাও ভালো ডিসিশন নিতে পারে। বিয়ের পরে ভালো লাগতে পারে। ও বলল কিন্তু ভালো না লাগলে বিয়ে করার মানে কি? আমি খুব ভালো তার্কিক তাই ওর সাথে শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে পেরেছিলাম টিচার সবাইকে থামানোর আগে। শেষে ও মাথা নেড়ে আমার লজিক মানছে বলেছিল। কিন্তু মনে মনে কথাগুলো বাজত ঠিকই। এটা যেন মনে মনে হেরেও হার স্বীকার না করা!

তারপরে সাইন্স ক্লাসে ল্যাবের চক্করে এসব আলোচনা ভুলে গিয়েছি। গগলস নিতে যাব তখন একটা কানাডিয়ান মেয়ে যে আগে কখনো আমার সাথে কথা বলেনি শুধু হাসত চোখে পরলে জিগ্যেস করল, "তোমাদের দেশে কি বাবা মা জোর করে বিয়ে দেয়?" আমি অবাক হয়ে বললাম না না তা কেন হবে? তোমাকে কে বলল? ও বলল, "না এমনি।" মেয়েটা সিটে যাওয়ার পরে ওর বান্ধবী ওকে জিগ্যেস করল আমাকে এটা কেন বলল? মেয়েটা বলল ইংলিশ ক্লাসের ঘটনা। তারপরে দুজনে ইশারায় হাসতে লাগল। ঐ একই ক্লাসে বাকী তিনটা কানাডিয়ান মেয়ের মধ্যে দুইজন ছিল যারা এরেন্জ ম্যারেজ করতে পারে বলেছিল। তো আমার কথায় কেন প্রশ্ন শুরু হল? আমিতো এমন কিছু বলিও নি। কেননা ওরা জানে যে আমাদের দেশে বা এশিয়ানদের মধ্যে না দেখেও অনেক বিয়ে করে এবং এটা হাসির খোরাক ওদের কাছে। এসব নিয়ে অনেক প্রশ্ন করত আমাকে। মাঝেমাঝে ওদের মুখ বিকৃত হয়ে যেত শুনলে যে মানুষ না চিনেই একে অপরকে বিয়ে করে ফেলে? কিন্তু সাথে সাথে মুখে ভদ্র হাসিটা ফিরিয়ে আনত যাতে আমি মাইন্ড না করি। কিন্তু প্রথম এক্সপ্রেশনেই আমার খারাপ লেগে যেত!

একদিন মি: এম এর সাথে কথা হচ্ছে। আগের পর্বের সেই বউপাগল টিচার। তার বউ ফিলিপিনো ছিলেন। বলছিলেন প্রথমবার ওনার মা বাবা দেখে একটু চমকে গিয়েছিলেন যে মেয়ে ফিলিপিনো, কিন্তু কোন বড় সমস্যা হয়নি, তারা সহজেই মেনে নিয়েছেন। আমাকে জিগ্যেস করলেন, "তোমাদের কালচারে কি অন্য জাতি বিয়ে করে? যেমন তুমিই যদি বিদেশী খুব ভালো ছেলেকে পছন্দ কর তোমার মা বাবা কি মেনে নেবে?" আমি বললাম এমন অনেক বাংলাদেশী আছে যারা ভিনদেশী বিয়ে করে খুশি। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশী ছেলে না হলে বিয়ে করব না। অন্যকেউ জিগ্যেস করলে আমি এভাবে বলতাম না হয়তো কিন্তু মি: এম আমার চোখ পড়তে পারতেন। তাকে মিথ্যা বলার মানে হয়না। যুক্তি দিলাম তাই। বললাম এক দেশে যে ভালো ছেলে অন্য দেশে সেই খারাপ। যেমন এক দেশে মদ খেয়েও মানুষ ভালো হতে পারে কিন্তু আমি এলকোহলিকের সাথে সংসার করতে পারবনা। আমি চাই যাকে বিয়ে করি সে যেন বাংলাদেশী কালচার বোঝে, কেননা যে বাংলাদেশী কালচার বোঝেনা সে আমাকে কিছুই বুঝবে না। বাচ্চারা কনফ্লিকটেড হয়ে যাবে দুটো কালচারে। আরো অনেক কিছু বলে গেলাম। উনি সব শুনলেন।

বললেন তা ঠিক আছে কিন্তু জানো, "আমার নাম" হয়ত তোমার ভাবনা একদিন চেন্জ হবে! কানাডায় থাকতে থাকতে একদিন হয়ত এতটা বাংলাদেশী থাকবে না, তখন কি করবে?" এই প্রশ্নটা যে কেমন করে দিল বুকের ভেতরে! এ আবার কি কথা! এতদিনে কিছু চেন্জ হলাম না, আর এখন সিনিয়ার ইয়ারে এসব কি প্রশ্ন? আমি বললাম, "যখন নতুন ছিলাম অনেকে বলত জলদি চেন্জ হয়ে যাব, হইনি। আপনার কথার পরেও হবনা।" উনি হো হো করে হেসে বললেন, "Sassy, ha? Good for you." আমিও ওনার সাথে হেসে ফেললাম।
আসলে প্রথম প্রথম আমাদের এদিককার অনেক মানুষ (প্রবাসি, ভারতীয়, পাকিস্তানি ) বিদ্রুপপূর্ণ গলায় আমাকে বলতেন একদিন ডাল ভাত না মাফিন(কেক), সাবওয়ে স্যান্ডউইচের জন্যে পাগল হয়ে যাব, জিন্স, প্যান্ট পরতে শুরু করব এসব। আমি এসব কথা কখনো পছন্দ করিনি কেননা আমাকে খুব বেশি না জেনে এত আত্মবিশ্বাসের সাথে ভবিষ্যৎবানি করাটা অপমানজনক। আমার বিশ্বাস, ব্যক্তিত্ব এতো ঠুংকো না যে অন্যের প্রভাবে ঢেকে যাবে। যেসব সাউথ এশিয়ান কানাডায় নিজ কালচারকে আর ফলো করেন না তারা মনে করেন সবাই তাদের মতো হয় বা হয়ে যায়।

তাই তাদের কথা অতটা মাথায় তুলিনি কিন্তু মি: এম তো এই টোনে এরকম কথা বলার মানুষ না! এতটা বাংলাদেশী থাকবে না মানে বোঝানো যে এটা ভাল ভাবনা না। কিন্তু উনিই তো সব দেশের স্টুডেন্টের শেখাতেন কানাডিয়ান একসেন্ট কপি না করে নিজের একসেন্টে কথা বলতে। ইংলিশ অনেকভাবে বলা যায় তবে গ্রামার যেন ঠিক থাকে। তিনিই তো আমাকে সবসময় সাহস দিয়েছেন বি ইওরসেল্ফ বলে। তিনি আবার একরম বলেন কি করে? কি করে জানেন? আমার ভিনদেশী বিয়ে করতে না চাওয়ার ব্যাপারটা ওনার ভালো লাগেনি তাই। এর আগে বাংলাদেশী কালচারের যা কিছু শেয়ার করেছি যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য,স্পাইসি খাবার, কালারফুল পোশাক, ফ্যামিলি ভ্যালুস, ক্রিকেট ইত্যাদি মুগ্ধ হয়ে শুনতেন। ওগুলো তো কানাডিয়ান কালচার বিরুদ্ধ না। কিন্তু ভিনদেশী বিয়ে না করার ব্যাপারটা ওরা ভাল চোখে দেখেনা। কানাডিয়ানরা প্রবলভাবে বিশ্বাস করে যে ভালোবাসা জাতের ওপরে না, মন মিললেই হয়। আমিও মানছি ভালোবাসা হলে ভিনদেশী বিয়ে করো আমার কোন সমস্যা নেই। কিন্তু আমি যদি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বাংলাদেশী কোন ছেলে আমার অতি আবেগী মন, ভাবনাচিন্তা বেশি বুঝবে তাতে কার কি?

আরেকদিনের ঘটনা মি: এম বলছেন, "আমার ফিলিপিনো শ্বশুড় শ্বাশুড়ি আমাকে অনেক খাওয়ায়! প্লেট ভরা কিন্তু আরো দেয়।" আমার তখন বাংলাদেশের জামাই আদরের কথা মনে পরে গেল। আরো বললেন, "অনেক বিরক্তি লাগে। আসলে অনুন্নত অনেক দেশ যেখানে খাবারের অভাব সেখানে হয়ত বেশি করে খাবার দিয়ে সম্মান দেখানো হয়।" আমি চমকে গেলাম। আতিথিয়তার একি বিশ্লেষন! আমার গায়ে লাগল যদিও উনি ফিলিপাইনের কথা বলছিলেন আমি রিলেট করতে পারছিলাম। আরো বললেন, "আমার বাচ্চারা ওনাদের ফিলিপিনো একসেন্ট কপি করে হাসাহাসি করে। আমাকে শ্বশুড় শুধু একটাই কথা বলেন, "গুড, গুড।" হাহা।" আমি ওনাকে বললাম আপনি কি তাদেরকে বুঝতে পারেন, অনেক গল্প করতে পারেন? উনি বললেন, "না, তবে মাঝেমাঝে যাই, বউ খুশি হয়।"
আমি বললাম একদম এটাই আমি আপনাকে সেদিন বলেছিলাম। আপনার বউ পাঁচ বছর বয়স থেকে কানাডায় তাই আপনার এডজাস্ট করতে অসুবিধা হয়নি। তিনি যদি রিয়াল ফিলিপিনো হতেন আপনি এডজাস্ট করতে পারতেন না যেমন ওনার মা বাবার সাথে মানাতে পারেননি। আমি চাইনা আমার হাসবেন্ড এবং বাবা মায়ের মধ্যে দূরত্ব থাকুক, বাচ্চারা হাসাহাসি করুক। আর সে নিজেও তো আমাকে বুঝতে পারবেনা। উনি বললেন, "সেদিন যে কথা বলেছিলাম সেটা..." বলে আরো কিছু বলতে যাবেন তখন এক স্টুডেন্ট প্রশ্ন নিয়ে আসল। তাই আর সে বিষয়ে কোন কথা হয়নি পরে। এখনো খুব জানতে ইচ্ছে হয় ওনার লজিক কি হত?

একদিন মি: এমের ক্লাসে ওনার চেয়ারে অন্য একজন বসে আছেন। অনেক লম্বা, ব্রাউন, চশমা পরা প্রচন্ড হাশিখুশি। ঢুকে প্রশ্নের দৃষ্টিতে তাকালে উনি বললেন, "Hi, I am Mr. K. I am your sub today." কানাডায় রেগুলার টিচার ছুটি নিলে সাব আসেন সেদিনের ক্লাসটা করিয়ে দিতে। এই টিচাররা জানেন না কালকে সকালে কোথায় পড়াতে হতে পারে? ফোন আসে যে এই স্কুলে এই টিচারের জায়গায় বসতে হবে। উনি এক পান্জাবি ইন্ডিয়ান কানাডিয়ান ছিলেন যিনি কখনো ইন্ডিয়া যাননি তবে মা বাবা পিউর ইন্ডিয়ান। উনি ভীষন মজার, মিশুকে মানুষ ছিলেন তাই সবাই ওয়েট করে থাকতাম ওনার জন্যে। এভাবে কয়েকবার মি:কে ফাকেফুকে ক্লাস নিয়েছেন এবং অনেক ভালো সম্পর্ক হয়েছে সবার সাথে। বিশেষ করে টিএ হিসেবে আমার সাথে বেশি কথা বলতেন। সাব আসলে টিএর দায়িত্ব আরো বেড়ে যায়। যেমন এটেন্ডেন্স সেদিন আমি নিতাম কেননা উনি একদিনেই সবার নাম নিশ্চই জানতে পারতেন না। আমি চেহারা দেখেই ২০/২৫ জন স্টুডেন্ট আছে কি নেই টিক দিয়ে দিতাম, নাম ডাকতে হতো না যেভাবে রেগুলার টিচার করেন। এছাড়া আরো অনেক টুকিটাকি হেল্প তো আছেই।

একদিন উনি গল্পে গল্পে বললেন, "আমার বউও ইন্ডিয়ান কানাডিয়ান, তিন বছর বয়সে কানাডায় এসেছিল। না না প্ল্যানড ছিলনা। আমি চাইনিজ ডেট করেছি, কানাডিয়ান ডেট করেছি (এভাবে অনেক দেশের মানুষের কথা বলে যাচ্ছিলেন!)। কখনো মাথায় ছিলনা ইন্ডিয়ানই বিয়ে করব। আমার পান্জাবী বন্ধুরা বলতো অন্য দেশের মানুষকে ডেট করা খারাপ। খুব হাসি পেত কথাগুলো শুনে।" তারপরে আমাকে জিগ্যেস করলেন, "আমাদের এদিকে এখনো এসব বিশ্বাস করে। তোমার ফ্যামিলি কি কখনো বিদেশী বিয়ে করতে আপত্তি জানাবে?" আমি মি: এমকে যা বলেছিলাম ওনাকেও তাই বললাম। ফ্যামিলি না আমার নিজেরই ই্চ্ছে করবেনা। উনি বললেন, "ধর তুমি ভার্সিটিতে গেলে, তুমি এত স্মার্ট তুমিত যাবেই।" একটু বলে রাখি আমাদের দেশে অর্থসমস্যা না থাকলে যেমন সবাই ভার্সিটি যাবেই এরকম আশা করা হয় কানাডা তেমন নয়। টিচাররা জানেন অনেক খারাপ/এভারেজ স্টুডেন্টই ভার্সিটি না গিয়ে অন্যকিছু করবে। হাই স্কুল গ্র্যাডুয়েশন অনেকের পড়াশোনার শেষ স্টপ, তাই ওভাবে বলা। যাই হোক উনি বলছিলেন, "ওখানে ফর সে একটা জার্মান ছেলেকে ভালবেসে ফেললে, কি করবে?" আমি বললাম ওরকম কিছু হবে না। উনি বললেন, "তুমি ভার্সিটি যাবেনা?" আমি বললাম মি:কেএএএ সেটা না। বলে দুজনেই হেসে ফেললাম। তারপরে ভার্সিটির এপ্লিকেশন, প্ল্যান এসব নিয়ে কথা উঠে গেল।

বিশ্লেষন: কানাডিয়ানরা আমাদের না জেনে বিয়ে করার ব্যাপারটা স্বাভাবিক নিতে পারেনা সেটা অনেক নরমাল একটা ব্যাপার। আমরাও সাধারনত ওদের লিভ টুগেদারের কালচারকে ভালভাবে দেখিনা। ওরা ভাবে আমরা শুধু ট্র্যাডিশন রক্ষার জন্যে বিয়ে করি, ভালবাসাটা মুখ্য না। ওরা এশিয়ান বাবা মাদের ডোমিনেটিং মনে করে এবং ভাবে তারা সন্তানের ওপরে সবকিছু চাপিয়ে দেয়। আমরা জাতি, ধর্ম এসবকে জরুরি মনে করি বিয়ের ক্ষেত্রে যেটা ওদের কাছে একধরনের রেসিজম। ভালবাসা ব্যাতিত অন্যকোন কারনে হওয়া বিয়ে ওরা মেনে নিতে পারেনা। যাই হোক, এসব অপছন্দ করার পরেও আমার সামনে কখনো খারাপ কিছু বলেনি শুধু হাভেভাবে বুঝতাম। বিষয়টা ভাল না লাগলেও ওরা বিনয়ীভাবে মুখে হাসি ঝুলিয়ে রাখে। কিছু বলেনা অথবা বিনয়ের সাথে প্রশ্ন করে। এটাই শিক্ষনীয়।

যারা লাভ/এরেন্জ/কমবাইন্ড যেকোন ধরনের বিয়েতে সুখে আছেন তাদেরকে অভিনন্দন জানিয়ে শেষ করলাম। কিন্তু যারা সুখে নেই তাদের নিয়ে কিছু বলতে চাই। আমাদের দেশে মেয়ে প্রেম করলে অন্য ছেলের সাথে জোর করে বিয়ে দেওয়ার একটা রীতি আছে। কি ভয়াবহ অমানবিকতায় তিনটা জীবন নষ্ট হয়ে যায়! মা বাবা সন্তানের পছন্দের মানুষটি খারাপ হলে বিয়ে করা থেকে আটকাতে পারেন সন্তানের মংগল চেয়ে। কিন্তু জোর করে বিয়ে দেওয়া একটা মধ্যযুগীয় বর্বরতা। আমি জন্ম দিয়েছি, মানুষ করেছি এসব বলে জোর করে বিয়ে দেওয়াটা অন্যায়। মা বাবার জন্যে সন্তান দরকার লাগলে প্রানও দিতে পারে কিন্তু জোর করে কাউকে ভালবাসতে পারেনা। এটা যেন বাবা মা বোঝেন। আর সন্তানেরও বোঝা উচিৎ মা বাবা দুনিয়া দেখেছেন, নিজের পছন্দের সংগীটিকে খারাপ বললে আবেগী তর্ক না করে আরেকটু পূনর্বিবেচনা করা উচিৎ।
পসিটিভলি, এখন সেটেলড ম্যারেজে অনেক পরিবার ছেলে মেয়েকে সমানভাবে মতামত দেওয়ার অধিকার দিচ্ছে। আবার পরিবারও ছেলে মেয়ের পছন্দ ভাল হলে লাভ ম্যারেজে সহজেই হ্যা করে দিচ্ছেন। সিচুয়েশন আগের চেয়ে বহুগুন বেটার কিন্তু এখনো অনেক জায়গায় সঠিক কালচারটা পৌছুতে হবে। সকল সংকীর্নমতা দূর করে বাংলাদেশী সমাজ এগিয়ে যাবে সে আশা রাখি। তখন বিদেশীদের ভাবনা আমার গায়ে লাগবে না। কেননা আমি জানব আমার দেশের মানুষ পরিপূর্ন সুন্দর চিন্তাভাবনায় সুখে আছে এবং সেটাই আমার কাছে জরুরি। বিশ্বের ভাবনা গায়ে মাখিনা।

আমার জীবন: জে একদিন বলছিল ও কিরকম ছেলে পছন্দ করে। হ্যান্ডসাম, রোমান্টিক, সৎ, গুড হিউমার, গিটার বাজাবে এরকম আরো অনেককিছু। আমাকে জিগ্যেস করলে অদ্ধুতভাবে আমি কিছু বলতে পারলাম না! আমি যে একটা মানুষ এবং আমারো চাওয়া থাকতে পারে সেটা তখনো জানতাম না। চোখের এক ঝলকে বাংলাদেশে থাকার সময়কার কথা মনে পরে গেল। পাশের বাড়ির সুন্দরী সীমা আপু খুব রোমান্টিক হাসবেন্ড চাইত। কিন্তু মোটা বেতনের গম্ভীর ছেলের সাথে মা বাবা বিয়ে দিয়ে দিল। বিয়ের কতোদিন পর্যন্ত হাসি দেখিনি আপুর মুখে! ছেলেটা সুন্দরী বউ পেয়েছিল মনমতো কিন্তু আপু তো টাকা চায়নি। পরিবার/সমাজকে খুশি করতে আপুকেই কম্প্রোমাইজ করতে হলো সারাজীবনের জন্যে! লাভ ম্যারেজেও বিয়ের পরে অনেক ছেলে পাল্টে যায় এবং মেয়েটা অসহায় হয়ে মা বাবাকে কিছু বলতেও পারেনা। শ্বশুরবাড়িতে অনেক কষ্ট মুখবুজে সহ্য করে বাবা মায়ের সম্মান রক্ষার্থে। সেসব মেয়েদের করুন পরিস্থিতিও কাছ থেকে দেখেছি।
আমাদের মতো মফস্বলের মেয়েরা ভালো হাসবেন্ডের স্বপ্ন পর্যন্ত দেখতে পারেনা। একটু বড় হতেই দাদী, নানী, মা, খালা বলতে শুরু করে রান্না শেখ, ঘরের কাজ শেখ নাহলে বিয়ের পরে শ্বাশুড়ীর বকা খেতে খেতে জীবন চলে যাবে। বাইরে রোদে যেওনা, চেহারা খারাপ হলে আরোই স্বামীর কথা শুনতে হবে। টিভিতে কোন রোমান্টিক দৃশ্য স্বপ্নীল চোখে দেখলে খালা বলতেন, "নিজের জন্যে আবার অতো আশা কইরো না। বাস্তব ওইরকম না। অনেক কম্প্রোমাইজ করা লাগে।" আশেপাশের অনেক মেয়েদের দেখে বুঝতাম তারা অতিরন্জিত করছেন না। সবসময় জেনেছি বা আমাকে জানানো হয়েছে লাভ হোক আর এরেন্জ বিয়ে নামক জিনিসটাতে বেশিরভাগ কম্প্রোমাইজ করতে হবে আমাকেই! আমি যেন নিজেকে তৈরি করি ভাল মেয়ে, রাঁধুনি, বউ হিসেবে এবং কোন আশা না রাখি তার কাছে! দায়িত্ব বোঝানোর সাথে সাথে অধিকারের ব্যাপারে কম্প্রোমাইজ করতে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে ছোট বয়স থেকেই! বাংলাদেশের অনেক পরিবারে এভাবেই মেয়েদেরকে গড়ে তোলা হয়! তুমি মেয়ে তোমাকে বেশি মানিয়ে নিতে হবে, তুমি মেয়ে তোমাকে কম্প্রোমাইজ বেশি করতে হবে এমন আরো অনেককিছু ছোটবেলা থেকেই মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তাই বড় হয়ে সমাজ/কর্মক্ষেত্র/পরিবারে হাজারটা অন্যায়ের প্রতিবাদ অনেক মেয়ে করতে পারেনা। তারা ধরেই নেয় এটাই তো জীবন! নারী জীবন! এ অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে এবং খুব দ্রুতই।
আর দশটা সাধারন মেয়ের মতো হয়ত আমাকেও বিয়ের সময় এরকম বৈষম্যপূর্ন সামাজিক রীতিনীতির মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। নিজের জন্যে কোন আশা, স্বপ্ন রাখি না। কিন্তু স্বপ্ন দেখি আমার মেয়ে হলে তার বিয়ের সময় আসতে আসতে সবকিছু অনেক পাল্টে যাবে! তার দুচোখে সে সুন্দর স্বপ্ন সাজানোর অধিকার এবং সেগুলো বাস্তব হবার সুখ দেখবে! জের মতো ওর স্বপ্নের একটা রংগিন লিস্ট থাকবে, আমার মতো স্বপ্নহীন জগতের হাহাকারময় ব্ল্যাংক পেজ নয়!

বিশেষ কথা: আজকের পর্বে কানাডার কাহিনী বলেছি কিন্তু বাংলাদেশকে নিয়ে বেশি বিশ্লেষন করেছি। আমি বাংলাদেশী কালচারের সবকিছু নিয়ে নেগেটিভ না। নিজ কালচারকে নিয়ে অনেক গর্ব করি; বুকের মধ্যে ধারন করি। জানি কোন কালচারই পারফেক্ট না। কিন্তু আমরা চেষ্টা তো করতে পারি বেটার হবার। সেইজন্যে এই পোষ্টটা এত বাংলাদেশ কেন্দ্রিক। কানাডাতো বাহানা ছিল, আমার আসল চিন্তা বাংলাদেশকে নিয়ে। সেটাই শেয়ার করলাম।
আমি প্রথমদিকে এরেন্জ ম্যারেজে বিশ্বাস হারানোর হিন্ট দিয়েছি। জে আমাকে কিভাবে ইনফ্লুয়েন্স করত তা পর্ব ছয়ে আছে। আমি এখন এভাবে ভাবি না। বুঝি যে এমন অনেক এরেন্জ ম্যারেজ আছে যাতে কাপল প্রচন্ড সুখী, আবার লাভ ম্যারেজই হয়তো ভেংগে যাচ্ছে এন্ড ভাইস ভার্সা। সবকিছুরই ভালো খারাপ থাকে।
এ পর্বে মেয়েদের দুঃখের কথা অনেক বেশি উঠে এসেছে। এ কারনে নয় যে আমি ভাবি ছেলেদের কোন দুঃখ নেই। সমাজের অনেক ভুল ব্যবস্থার শিকার ছেলেরাও। কিন্তু এটা আমার জীবনের গল্প এবং মেয়ে হিসেবে আমার দুঃখগুলোই বেশি প্রকাশ পেয়েছে।
সবাইকে পড়ার জন্যে ধন্যবাদ।

মন্তব্য ৪৭ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (৪৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ৯:৪৩

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: আমি দুটো বিয়ে করবো ভাবছি । একটা দেশে আরেকটা বিদেশে :) :)
লিখাটা ভালো ছিলো :)

১৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ৯:৫২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: সিরিয়াস পোষ্টের প্রথম কমেন্টটা মজা দিয়ে শুরু করার জন্যে ধন্যবাদ। আমার লেখায় কেউ সিরিয়াস হলে আপনার কমেন্ট দেখে হেসে ফেলবে।

পাঠ ও মন্তব্যে ধন্যবাদ।

২| ১৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ৯:৫৬

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অ্যারেন্জ ম্যারেজ একটা ফাউল!
লেখাটা ভাল লেগেছে

১৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:০১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: লেখা ভাল লেগেছে জেনে প্রীত হলাম।

৩| ১৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ৯:৫৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অ্যারেন্জ ম্যারেজ ফাউল একটা জিনিস।
ভাগ্য ভাল থাকলে, ভাল। নয়তো সারাজীবনের জন্য বোঝা টানো

১৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:০২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: যেকোন ধরনের বিয়েতেই বোধহয় ভাগ্য ভালো হওয়া লাগে।

দুবার মন্তব্য করে নিজের মতামত দেবার জন্যে ধন্যবাদ।
অনেক ভালো থাকবেন।

৪| ১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ১:৩৭

বিপ্লব06 বলেছেন: মিস্টার এম এর সাথে একমত! ভদ্রলোক উনার অভিজ্ঞতা থেকে বলছেন।

"টুট টুট টুট টুট " হয়ত তোমার ভাবনা একদিন চেন্জ হবে! কানাডায় থাকতে থাকতে একদিন হয়ত এতটা বাংলাদেশী থাকবে না, তখন কি করবে?" চিন্তাভাবনা চেঞ্জ হবার লাইকলিহুড অনেক বেশি। বাট হোপফুলি ইউ ক্যান রেজিস্ট ইট।

আমি পারসোনালি ফ্যামিলি এরেঞ্জেড বিয়েতে বিশ্বাস করি। একই সাথে পিরিত করে বিয়ে করার বিরুদ্ধেও আমার কোন অভিযোগ নেই। কিন্তু অভিজ্ঞতা থেকে জানি, পরিবারের অমতে পিরিত করে বিয়ে করলে অনেক সাফার করা লাগে।

আমি মনে করি বিয়ে লাইফের একটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এই ক্ষেত্রে আমি আমার প্যারেন্টসদের অভিজ্ঞ মতামতকে অনেক গুরুত্ব দেব। যদি আমার মনে হইতে পারে যে আমি অনেক বড় হইছি, নিজের ডিসিশন নিজেই নিতে পারি, কিন্তু এইটাও সত্য যে এই ব্যাপারগুলাতে যখন ইমোশন ইনভল্ভড হয় তখন আমাদের জাজমেন্ট বেশ ক্লাউডি হয়ে যায়। তাছাড়া আমি আমার বাবা-মার উপর আস্থা রাখি। কিন্তু এর মানে এই না যে আমার মতের বিরুদ্ধে কিছু চাপানো হলে আমি হ্যাঁ বলবো।

কিন্তু বিয়ের মত ব্যাপারগুলাতে প্রায়ই ফ্যামিলি পলিটিক্স (এক আত্মীয়ের আনা সম্পর্কে বিয়ে হইল না কেন, কেন আরেক আত্মীয়ের আনা সম্পর্কে বিয়ে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি...। ) ঢুকে জটিল হয়ে যায়।

আর আপনি মন খারাপ করে ফুল কম্প্রোমাইজের মনোভাভ নিয়ে বসে আছেন কেন? আপনার কাউন্টারপারটও তো সিমিলার কম্প্রোমাইজে উইলিং তাইনা? ফ্যামিলি এরেঞ্জেড বিয়েগুলার টার্গেট হইল বিয়েকে পার্মানেন্ট করা আর সন্তান ভালভাবে লালনপালন করা(যদিও তারা একশ ভাগ সফল না)। এ দুই পক্ষের কম্প্রমাইজিং প্লাস কেয়ারিং মনোভাবটাই বিয়েটাকে সাকসেসফুল করে।

আপনি মনে হয় এই সিস্টেমে অনিচ্ছাসত্ত্বে এগ্রি করতেছেন। কি দরকার এসবের, আপনার যেসবে ইচ্ছা সেসব করবেন। এই "বৈষম্যমূলক" সমাজের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। আপনি কেন নিজের জন্য আশা, স্বপ্ন রাখেন না? আপনি একজন আধুনি শিক্ষায় শিক্ষিতা নারী, আপনার নিজস্ব চিন্তাচেতনা থাকবে, আপনি যেভাবে ইচ্ছা নিজের লাইফকে গড়তে পারেন। কেউ আপনাকে আটকাতে পারবেনা। আপনার লাইফ কেন "স্বপ্নহীন জগতের হাহাকারময় ব্ল্যাংক পেজ হবে। ফাইট ব্যাক। ডু দ্যা থিংস দ্যাট উইল মেইক ইউ হ্যাপি।

ফাইনালি, লাইফ সবার একান্তই নিজের যে যেইটাকে ভালো মনে করে। আল্টিমেটলি সবাই সুখী হইলেই হইল।

১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ২:০৪

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আমি যখন একটা পর্ব লিখে শেষ করি তখন এডিটিং এর সময় মনে হয় এই ব্লগার এই কমেন্ট করতে পারেন। এই লাইনটাকে কোট করতে পারেন। যারা রেগুলারলি কমেন্ট করেন তাদের ব্যাপারে একটা আচ থাকে। আপনার ব্যাপারে যা যা ভেবেছি আপনি তাই তাই বলেছেন। আমি এখন উত্তর দিই।

কানাডায় ৪ এর ওপরে বছর হয়ে গিয়েছে। কিশোরি থেকে এডাল্ট হয়ে এখন আর কোন চেন্জ হবেনা। এখন আর আপনার "হোপের" দরকার নেই আমি এমনিতেই চেন্জ হবনা। আমার মূল্যবোধ অনেক শক্তিশালী ঝড়ে নড়তে পারে কিন্তু উড়ে কখনো যাবেনা।

না আমি কমপ্রোমাইজের ব্যাপারটা শুধু এরেন্জ ম্যারেজের ব্যাপারে বলিনি। লাভ ম্যারেজেও অনেক কিছু সহ্য করতে হতে পারে। আমার জীবনসংগী কিসে উইলিং কিসে না জানিনা। এখনো দেখা হয়নি তার সাথে।

হ্যা এই প্রশ্নটা অনেকের হবে আমি মেনে কেন নিয়েছি, আশা কেন রাখিনা? কেননা আমি রুখে দাড়ানোর সাহস রাখিনা। আমি খুবই সাধারন মেয়ে যে সমাজের অন্যায় মেনে নেয়। আপনার খুব ঘৃনা হচ্ছে না আমায় এসব শুনে? মনে হচ্ছে মেয়েটা কানাডার মতো দেশে উচ্চশিক্ষা নিয়ে কিসব বলছে?
আমি কেন এরকম, আমাকে ছোটবেলা থেকে কিভাবে এরকম করে তৈরি করা হয়েছে তা লেখায় ছিল। ওরকম ওরিয়েন্টেশনের মেয়েরা আমার মতোই হয়। আমাকে ছোটবেলা থেকে গুড়ো দুধের মতো করে এসব গুলে খাওয়ানো হয়েছে, এখন বললেই চেন্জ হওয়া সম্ভব না।
সমাজ পরিবার অনেক বড় একটা জিনিস। তাদের শিক্ষা মানুষকে খারাপ ভালো করে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার চেয়ে সেই শিক্ষার অনেক বেশি প্রভাব থাকে জীবনে। আমি সমাজ ছাড়াও তো চলতে পারিনা। ফাইট কার সাথে করব? নিজের দাদী, নানী, খালার সাথে? আমার তাদের অনেক ভাবনা ভাল লাগেনা। তারা আপনজন, তাদের সাথে ফাইট করা যায়না। তাতে আমি সুখী হবনা। সমাজের সবাই একটু একটু করে চেন্জ হলে আমার মতো সাধারন, মেয়েরা জন্মানো বন্ধ হয়ে যাবে। আমি সেদিনের অপেক্ষায় আছি।
শুধু নিজের মেয়ে হলে তাকে অন্যভাবে মানুষ করার মতো চিন্তাভাবনা আছে। আমি তা পারব জানি। নিজের দূর্বলতাগুলো ওর মধ্যে থাকতে দেবনা। আর ওর সময়ে আসতে আসতে দুনিয়া মেয়েদের জন্যে অনেক সহজ হয়ে যাবে।

আপনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন বুদ্ধুকুমার? পারেন আপনি? সামাজিক, পারিবারিক দায়বদ্ধতা আটকায় না আপনাকে? বলুন না আটকায় না?

আপনি এটা বুঝেছেন আমি কেমন এবং আমার কেন এমন হওয়া উচিৎ না। কিন্তু আমি কেন এমন সেটা বোঝেন নি হয়ত। কিন্তু পোষ্টের মেইল পয়েন্ট সেটাই ছিল।

আল্টিমেটলি সবাই সুখী হইলেই হইল।
এটাই আসল কথা।

আপনি অনেক মন দিয়ে মন্তব্য করেন। আমি এত যত্ন নিয়ে পোষ্ট লিখি কিনা সন্দেহ। ধন্যবাদ জানিয়ে ছোট করবনা।
ভালো থাকবেন।

৫| ১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ২:৪৫

বিপ্লব06 বলেছেন: নাহ এইখানে ঘৃণার কিচ্ছু নাই। ইনফ্যাক্ট আপনার জন্য আমার রেস্পেক্ট আছে। আপনি এইটাকে আউটরেইজ বলতে পারেন।

আপনার পোস্ট দেখে মনে হইল আপনি কষ্ট করে হইলেো ব্যাপারটা মেনে নিছেন। আপনি মনে করতেছেন সমাজ আপনাকে কম সুযোগ দিচ্ছে, আপনার ইচ্ছাগুলাকে আপনি কন্সাসলি অঙ্কুরেই মেরে ফেলতেছেন। এই ফিলিংটা একটা পেইনফুল একটা ব্যাপার। আরও সমস্যার ব্যাপার হইল এই পেইন চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকে। এইটা ভেতর থেকে একটা মানুষকে খেয়ে ফেলতে পারে। এইটার সাফারিং কাউকে বলে বোঝানোর মত না। আমার আউটরেইজের কারনটা হইল যে আপনি চুপচাপ সাফার করার ডিসিশন নিছেন।

নাহ আমি যা ইচ্ছা তাই করতে পারি না, আমার আব্বা আমাকে অনেক বেশি স্বাধীনতা দিছে, যেইটার প্রতিদান আমি দেই খারাপ কিছু না করে, এমন কিছু না করে যাতে আমার আবার মাথা হেট হয়ে যায়। এই লোকটা আমার জন্য অনেক কষ্ট করছে কোনদিন টু শব্দ করা ছাড়াই, এই লোকটাকে আমি ক্যামনে কষ্ট দিব। কিন্তু এইটাকে আমি আমার উপর বোঝা বা বন্ধন বা চাপানো কিছু মনে করিনা। এইটা আমার একটা রেস্পন্সিবিলিটি এবং আমি তার জন্য কৃতজ্ঞ।

আপনি যদি আপনার রেস্ট্রিকশনগুলাকে র‍্যাসনালাইজ করতে না পারেন, তাইলে আপনিমনে মনে সাফার করতেই থাকবেন। নো ওয়ান ক্যান হেল্প ইউ। (অনেক সিরিয়াস কথা বলে ফেলছি, মাঝে মাঝে আবার সুপার সিরিয়াস হয়য়ে যাই কিনা!!!)

হোপফুলি উপরে যেইগুলা স্পেকিউলেট করছি সেইগুলা আপনার ক্ষেত্রে এপ্লাই করে নাই।

ভালো থাকবেন।

১৭ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৪:৪১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আউটরেজ টাকে ইরেজ করে ফেলুন। ওন্ট ব্রিং এনি গুড ফর এনি অফ আস।

মনে করার ব্যাপার না সমাজের মেয়েদেরকে কম সুবিধা দেওয়া হয় অনেক সময়। বিশেষ করে কৈশরের সময়গুলোতে ছেলেটা একদম বাচ্চাই থাকতে পারে কিন্তু মেয়েটাকে হঠাৎ করে বড় হতে হয়। আমার কোন ইচ্ছা ছিলইনা তো মেরে ফেলার মানে হয়না। আমি অল্পতে খুশি মানুষ। ব্যাস একটু বৃষ্টি, মিষ্টি হাওয়া, কুলফি, সুন্দর গান পাইতো আমি খুশি। ছোট জিনিসের মধ্যেই ডুবে থাকি বড় কোন ভাবনা নেই। আমি চুপচাপ কৈ সাফার করলাম? বললাম তো আপনাদেরকে? তারপরে আউটরেজের শিকারও হলাম।
আমি লেখায় খুব বড় একটা ভুল করে ফেলেছি। আমার মেইন পয়েন্ট আপনিসহ অনেকেই ধরতে পারবেনা। আপনিসহ ব্লগে অনেকে ব্যক্তি আমার প্রতি ভালবাসা থেকে আমাকে বড় বড় উপদেশ দিতে আসবে। কিন্তু সমস্যা তো ব্যাক্তি আমি না সমস্যা আমাদের দেশের হাজার হাজার কিশোরি। নিজের জীবন ব্যবহার করে তাদেরকে হাইলাইট করতে চেয়েছিলাম। বোঝাতে চেয়েছিলাম একটা মেয়েকে ছোটবেলা থেকে এত বাস্তববাদী করে তুললে বড় হয়েও সে আর কোন স্বপ্ন দেখতে পারেনা। ঐ সময়টা অনেক ইমপর্ট্যান্ট এবং ঠিক করে গাইড করতে হয়।
কিন্তু সবাই বাংলাদেশের বিয়ে ধারনা, নারী সমাজের চেয়ে আমার জীবনকে বেশি হাইলাইট করবে। এটা আমারই লেখার দোষ। আমার থ্যার্ড পারসনে লেখা উচিৎ ছিল। আই লস্ট ইট, কমপ্লিটলি লস্ট ইট।

আমিও বোঝা মনে করিনা নিজের জন্যে। পরিবারের জন্যে ছোট বড় কোন খুশি যখন কম্প্রোমাইজ করতে হয় খুশি মনেই করি। কিন্তু চাইনা আমাদের সামনের জেনারেশনকে কোন ধরনের কম্প্রোমাইজ করা লাগুক। ওরা যেন আরো স্বাধীনতা পায়।

অাপনার অনেক গেস ঠিক, আমি সাফার করলে করব, আবারো বলছি আমি ইস্যু না। আমার মতো অনেক মেয়ে ইস্যু। আমাকে নিয়ে আউটরেজ না রেখে সমাজ ব্যবস্থাকে নিয়ে রাখুন যারা আমার মতো মেয়েকে তৈরি করে।

আপনি অনেক জটিলস ক্যারেক্টার। আপনি সুপার ফানি থেকে সুপার সিরিয়াস যেকোন কিছু হতে পারেন। হয়তো আমি এক্ষেত্রে আপনারই মতোন।

বুদ্ধুকুমার আমাকে নাম দেবে বলেছিল, এতোসব সিরিয়াস কথার চক্করে ভুলে গিয়েছে বোধহয়। আবার আসলে একটা নাম দিয়ে যাবেন। মন ভালো করে দেওয়া কোন নাম!

বুদ্ধুকুমার অনেক অনেক ভাল থাকুক।

১৭ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৪:৫১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ওহ বলতে ভুলে গিয়েছিলাম খালুআব্বার প্রতি আমার অনেক সম্মান থাকল। তিনি অনেক সুন্দর করে আপনাকে মানুষ করেছেন। শুধু যদি একটু বুদ্ধির দিকটা দেখতেন ;) । আপনি বুদ্ধু হলেও মানুষ ভালো, সবসময় এরকম থাকবেন।

৬| ১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ২:৫৩

লাল পিপড়ে বলেছেন: "স্বপ্নহীন জগতের হাহাকারময় ব্ল্যাংক পেজ হব................... একদম নয় ।!!! একটা সুন্দর সপ্নীল জীবন হবে সেই কামনা করছি

পাগলা র লেখায় একটা রিদম আছে , সাথে একধরনের সহজ সরলতাও । সেটার কারন কিন্তু কিশোরী থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক হবার সময় টা জে , শে র সাথে পার করার জন্য হলেও হতে পারে :) । পরিবেশ আমাদের উপর প্রভাব ফেলে , বদলে দেয় এটাই সত্যি । তবে অবশ্যই সেটা কে কি ধরনের হবে সেটা নির্ভর করে প্রতিটা মানুষের শেকড়ের ভিত এর উপর । কেউ বদলে যায় ভিন্ন মানুষ হয়ে টাইট জিন্স সাবওয়ে স্যান্ডউইচ হাতে হাই হ্যালো পর্যন্ত ,আবার কেউ বা তার ভাবনা চিন্তায় বোধ উপলব্ধি তে , নিজের ভিতরের মানুষ টাকে জানতে পারে , সুন্দর করে অকপটে প্রকাশ করতে শেখে । বদলে যাওয়াতে দোষ নেই তবে অবশ্যই বুঝে তোতা পাখি হয়ে নয় ।

শুভকামনা
( আগের কমেন্ট এ টাইপো আছে , মুছে দিলে খুশি হবো )

১৭ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৪:৪৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপনার সুন্দর কামনার জন্যে ধন্যবাদ।

হ্যা আপনি অনেকাংশে ঠিক। আমার বান্ধবীরাও খুব সরল, ভাল মানুষ গোছের ছিল। তাদের সাথে থেকে বেটার মানুষ হতে পেরেছি নিঃসন্দেহে।

বদলে যাওয়াতে দোষ নেই তবে অবশ্যই বুঝে তোতা পাখি হয়ে নয় ।
অসাধারন একটা কথা। অনেক ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটা কথা বলার জন্যে।

আপনাকে সুন্দর কমেন্টের জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
শুভকামনা আপনাকেও।

৭| ১৭ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:১০

শুভ_ঢাকা বলেছেন: খুউব ভাল। আমি আপনের লিখার একজান মু্গ্দ্‌ পাঠক। :)

১৭ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:২৪

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ এমন করে অনুপ্রেরনা দেবার জন্যে। যাই লিখি আপনি পড়েন এটা আসলেই অনেক ভাল লাগে।
সবসময় সব পোষ্টে লাইক, কমেন্টের সাথে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

ভাল থাকবেন অনেক।

৮| ১৭ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:৩৭

নিওফাইট নিটোল বলেছেন: জীবনে মনমতো সঙ্গী পাওয়াটা বোধহয় মনমতো ক্যারিয়ারের চেয়েও কিঞ্চিৎ গুরুত্বপূর্ণ......ক্যারিয়ার যেমন ঘরকে স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে দেয়, তেমনি ঘরই কিন্তু ক্যারিয়ারটাকে নির্বিঘ্ন রাখে B-)

অামি প্রচুর মুভি দেখি, কিন্তু সিনেমাটিক ভালোবাসায় বিশ্বাস ওই কারণে ভিতরে জন্মায়নি, অাসলে অামার মতো চির অভাগাদের জন্য কপালে কিছু একটা জুটবে সেই অাশা করাই বেটার.....অদৃষ্টই নাকি সর্বোত্তম অাশা!!
বাঙালির সমাজে মেয়েদের দৃশ্যমান বাধ্যবাধকতা অনস্বীকার্য- কেননা অামার উচ্চশিক্ষিত মায়ের ক্ষেত্রেও কিছুটা অাঁচ লেগেছিল- তবে মায়ের পায়ের মাটি শক্ত ছিল তাঁর শিক্ষা, পারিবারিক মূল্যবোধ! চাপিয়ে দেয়া চুলার হাঁড়ির পাশাপাশি, বইটাও যদি বালিকার এক হাত দখল করে রাখে- তাহলেই পরিনত নারী অদম্য হয়ে ওঠে- silly শোনাতে পারে , কিন্তু এটাই প্রথম সত্য!!

সমাজের অাগের অবস্থার জন্য পুরুষের পাশাপাশি মেয়েরাও কিছুটা দায়ী ছিল.....যখনি মেয়েরা নিজেরাই কিছুটা বিরোধ করতে জানল সমাজ ভ্রু কুঁচকালেও সেই বিরোধই শক্তি হয়ে গেল.....লজিকটা কি নারী-পুরুষ সবার জীবনেই লড়াই করার একমাত্র অন্তর্নিহিত রহস্য না? :``>>

মি: এম-কে যে বললেন ভীনদেশীকে কখনো মন চুরি করতে দেবেন না, কথাটা কি অাদৌ সত্যি? অামরা সবাই নিজেদের সামনে কাঁচের দেয়াল তুলে রাখি যাতে ফিল্টার করে নিজ কমিউনিটির কাউকে দেখতে পারি- ওতেই অামাদের স্বাচ্ছন্দ্য বেশি!
হুম........বিশুদ্ধতা,ধর্ম,সমাজ- ইত্যাদি মানতে গিয়ে অযাচিত এই ত্যাগটুকু অামাদের করতেই হয়, কিন্তু তার মানে এই না অাপনার "বিশ্বাস,মূল্যবোধ সর্বদা অনেক শক্তিশালী- ঠুনকো না", ভবিষ্যত ভেবেই অামরা সচেতনভাবেই এটা করি /:)

মাফিন অার স্যান্ডউইচের ভক্ত কিন্তু অামিও- পেটে খুব সহ্য হয় না দেখে মুখে লাগাম দিয়ে রাখি.......কানাডার স্কুল যখন মাঝে মাঝে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন তবে খাবারের অভিজ্ঞতা বয়ান করুন এবার.....ঘরে-বাইরে কীভাবে সামলেছেন সেসব?

লেখার জন্য ধইন্যা......অার নচিকেতার অন্য প্রেমের গান- টা থেকে ইতি টানি-
সংকীর্ণ মনের মানুষ যারা, তারাইতো ভালবাসে বারবার,
যার মন বড় যত দেখে ভাল অবিরত, তারাইতো ভালবাসে বারবার


************
ঐ ইয়ারের মার্ক ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে ম্যাটার করার কারনে -< হওয়া/হওয়াটা

"অামার নাম" কথাটা বাদ দিন......ছদ্মনাম ধরুন না! যেমন রবীন্দ্রনাথ ধরেছিলেন "সানী লিওন" (মানে ভানু সিংহ : ভানু= sun- )

১৭ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৩

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: না না সিলি শোনাবে কেন খুব সুন্দর কথা। অনেকক্ষেত্রে সত্যি না এটাই দুঃখের। আমাদের সমাজে এমন অনেক শিক্ষিত মেয়ে আছেন যারা অনেক বৈষম্য, অত্যাচারের বিরুদ্ধে কিছু বলেন না। তারা ধরেই নেন মেয়ে হয়ে এসবের সাথে মানিয়ে নিতে হবে। আবার অনেক মেয়েই প্রতিবাদ করে। ডিপেন্ড করে।

না আমি মন চুরি করতে দেব না বলিনি। এটা হবেনা বলেছি। আমার দেওয়া না দেওয়ার মধ্যে না। আমি প্রতিদিন এতো দেশের এতো ছেলের সাথে মিশি, কাজ করি কিন্তু কখনো সত্যিই মনে হয়নি এই ছেলেটাকে বিয়ে করা যায়। কালচারাল গ্যাপ এতোটা যে এরকম ভাবনা মনে ন্যাচারালি আসেনি। এরকম না যে এসেছে আমি সমাজের ভয়ে বালিচাপা দিয়েছি। ব্যাস সত্যিই বলেছি আসেইনি। ইন্টেলেকচুয়ালিটি লেভেলের তীব্র তারতম্য, প্রতিটি আবেগ নিজের ভাষায় প্রকাশ করতে না পারার অপারগতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কারনে বিদেশী ছেলেদের নিয়ে এরকম কিছু কখনোই মনে হয়নি। এটা একদমই ন্যাচারাল। কোন চেষ্টা চরিত্র করতে হয়নি। তবে যারা ভিনদেশী বিয়ে করেন তাদের সাথে কোন বিরোধ নেই। যার নয়নে যারে লাগে ভাল!

আপনার বাকিসব সাজেশন মনে থাকবে। এধরনের বিনয়ী সমালোচক পাঠকদের কোটি কোটি সালাম। এমনই সুন্দর সুন্দর মন্তব্যে পাশে থাকবেন।

হাহা এটা কি বললেন? হাসতে হাসতে শেষ আমি। সকালটা হাসিয়ে শুরু করার জন্যে ধন্যবাদ।

আপনার দেয়া গানে এই গানটার কথা মনে পরল। নচিকেতার একটা প্রিয় গান দিয়ে বিদায় নিচ্ছি। view this link

৯| ১৭ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:৩৯

নিওফাইট নিটোল বলেছেন: ভানু= sun-

১৭ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৪

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হুম। :)

১০| ১৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:১৪

শুভ_ঢাকা বলেছেন: “হয়ত তোমার ভাবনা একদিন চেন্জ হবে! কানাডায় থাকতে থাকতে একদিন হয়ত এতটা বাংলাদেশী থাকবে না, তখন কি করবে?

আপনি হয়তো আপনার স্ত্রং দিতিরমিনেশন অথবা ঔইল পাওয়ার এর জন্য, নিজে তথাকথিত কানাডিয়ানদের মতন হবেন না। অন্য বাংলাদেশি ছেলেমেয়েদের কি অবস্হা, যারা অনেক ছোটবেলায় এসেছে।

১৭ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৫

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: পর্ব নয়ে এটা নিয়ে লিখেছি যে প্রবাসি বাচ্চাদের কি অবস্থা। পড়ে নিলে আপনার প্রশ্নের উত্তর পাবেন।
ধন্যবাদ অনেক। শুভকামনা।

১১| ১৭ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৭

শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনার টিচারের (মিস্টার এম) জন্য অনেক অনেক শ্রদ্ধা , তিনি চমৎকার মানুষ আর তার চিন্তা ভাবনা অনেক পরিণত। তার শশুর বাড়ির ঘটনা বেশ ভাল লাগলো ।

এ পর্বে আপনার বাংলাদেশি বিয়ে সংস্কৃতি নিয়ে ভাবনা এবং যুক্তিগুলো ঠিক পরিষ্কার এবং শক্তিশালী নয়, কিছুটা গায়ের বা মুখের জোড় খাটানো টাইপ। খুব সংক্ষেপে বলি - আসলে জোড় করে বা বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে বাংগালী হবার চেষ্টা না করে আমরা যা সেটা বিকাশের সাধনা করতে হবে । আমাদের সামষ্টিক অন্তরসত্ত্বার প্রকাশ আমাদের সংস্কৃতি । সংস্কৃতি নিয়ে আলাদা করে গর্ব করার কিছু নেই, সব সংস্কৃতিই সেরা ।

আর "আমি এমনিতেই চেন্জ হবনা" একথাটা কেমন হয়ে গেল তাই না । সৃজনশীল, শিক্ষিত মানুষ মাত্রই পরিবর্তন, রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যায় ।

শুভকামনা ।

১৭ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৯

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: সমালোচনা করার জন্যে ধন্যবাদ। সবসময় এপ্রিশিয়েট করি।
হ্যা মি এমের মতো মানুষ হয়না। আমি ভালো লিখতে পারিনা তাই ঠিকভাবে বোঝাতে পারিনি হয়তো যে উনি কি ভীষন চমৎকার মানুষ ছিলেন!

না কিছু আবেগ থেকে নিজের কালচারের প্রতি বেশি গর্ব আসেই। আমার তো আসেই। এটা কখনো ভাবতে পারিনা এ পৃথিবীতে হাজারটা কালচার আছে, বাংলাদেশী কালচারও আরেকটা। এটা আমার কাছে সবচেয়ে স্পেশাল। তবে অন্যসব দেশের মানুষের কালচার নিয়ে করা আবেগকেও আমি সম্মান করি। নিজেকে সম্মান করি বলে অন্যকেও সম্মান করতে পারি।

না আমি গায়ের জোরে কিছু খাটাতে চাইনি। কলমের জোড়ে কিছু বোঝাতে চেয়েছিলাম। বোঝাতে পারিনি সেটা আমার ব্যর্থতা লেখিকা হিসেবে কিন্তু মানুষ আমার ইন্টেনশনে কোন ত্রুটি ছিলনা। জোর করে খাটানোর প্রচেষ্টা ছিল না। নিজের জীবনে যা দেখেছি তাই বলেছি।

উনি চেন্জ হওয়া মনে কানাডিয়ান হওয়াটাকে বোঝাতে চেয়েছিলেন। মানুষ আমি চেন্জ হব। আরো বেশি ম্যাচিউর হব বয়সের সাথে সাথে, আবেগের ওপরে কন্ট্রোল আসবে। কিন্তু কানাডিয়ানদের মতো পোশাক আশাক, খাওয়া দাওয়া আমি করতে পারবনা। করাটা খারাপ এজন্যে না, আমার ন্যাচারালি আসেনা এজন্যে। তো এখানে ''চেন্জ'' শব্দটার অন্য তাৎপর্য আছে।

একটা কিশোরি মেয়েটা হাজারটা ঝড় সামলে নিজের কালচারকে একা একা একটা স্কুলে বন্ধুহীন নিঃসংগ অবস্থায় খুটির মতো অনেক মমতায় আগলে রাখে। সেই ঝড়টা পার হওয়ার পরে তাকে যখন বলা হয় তুমি আবার সেই ঝড়ে পরবে তখন তার মধ্যে কি যায় সেটা দূর্বল লেখিকা হিসেবে আপনাকে আমি আবারো বোঝাতে পারবনা। মাফ করবেন আমায়।

অনেক সুন্দর মন্তব্যে ধন্যবাদ এবং ক্ষমাপ্রার্থী যে আমার লেখার একটা লাইনও আপনাকে বোঝাতে পারিনি আমি।

অনেক অনেক শুভকামনা।

১২| ১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:১৫

র‍্যাশ বলেছেন: লেখাটা বেশ কিছু পয়েন্ট আছে । অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যায় , সংক্ষেপে নিজের কিছু মত প্রকাশ করছি --

খেয়াল করলে দেখবেন যে বাংলার বাপেরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মেয়ের প্রেমিককে পছন্দ করে না এমনকি সেই প্রেমিক যদি সমাজের প্রচলিত মানদন্ডে যোগ্যতা সম্পন্ন হয় তবুও। সব বাবাই চায় বিয়ের মধ্য দিয়ে তার মেয়ের জন্য সামাজিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা , এই চাওয়ার মধ্যে দোষের কিছু নেই । কিন্ত যখন তার মেয়ের প্রেমিক যেহেতু সমাজের প্রচলিত মানদন্ডে যোগ্যতা সম্পন্ন , সে তার প্রেমিকার জন্য সামাজিক নিরাপত্তার দিতে পারবে বলেই ধরে নেয়া যায় কিন্ত তবুও কেন এই জাতীয় সম্পর্কের পিছনে মেয়েটির পরিবারের অমত লক্ষ্য করা যায়? একচুয়ালি এই জাতীয় কেস থেকেই নারীর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি কিছুটা ভাল ভাবে বুঝা যায়। একজন বাবা হয়তো তার মেয়েকে অনেক স্নেহ করেন কিন্ত সেই মেয়েও তার কাছে একজন নারী। অর্থাৎ সামগ্রিক ভাবে তার দৃষ্টিভঙ্গীও আসলে একজন নারীর প্রতি একজন পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি। মেয়ের প্রতি পিতৃ স্নেহও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তার এই পুরুষতান্ত্রীক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করে না। এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে তিনি তার নিজের পছন্দ মেয়ের উপর চাপিয়ে দিতে চান। এমনকি মেয়ে উচ্চ শিক্ষিত হলেও জীবন সংগী নির্বাচনে তার মত তার কাছে গুরুত্ব পায় না।

শিক্ষা ও সামাজিক সচেতনতা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা ও সামাজিক সচেতনতাকে ব্যবহার করে নারীদের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জন করতে হবে ( যা আমাদের দেশের অধিকাংশ উচ্চ শিক্ষিত নারীই করে না)। একজন নারী যখন অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হবে তখন তার এই অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতাই তার জন্য অন্য সব সামাজিক নিরাপত্তার বেষ্টনি তৈরি করবে। অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার এই অবলম্বনটুকুকে কেন্দ্র করে সে তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা অর্জনের দক্ষতা অর্জন করবে। সর্বোপরি এই স্বাধীনতাকে ব্যবহার করে সে তার নিজের জীবনকে নিজের মত করে গুছিয়ে নিতে পারবে। আর একটা বলা দরকার। আমাদের কালচারে এখনো ভালবাসা ও এর প্রচার প্রসারকে প্রথা বিরোধী দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়। ইউটিউবে খুজলে প্রেমিক যুগলকে কান ধরে উঠ বস করানোর অনেক ভিডিও খুঁজে পাবেন। বিশেষ করে ভ্যালেন্টাইন্স ডের কাছাকাছি সময়ে এই প্রবণতা বাড়ে। তারুন্যের ধর্মই প্রথা বিরোধীতা। এই প্রথা বিরোধীতাকে রিপ্রেজেন্ট করার কারণেই দেখবেন একালের তরুণদের মধ্যে ভ্যালেন্টাইন্স ডের আবেদন অন্য সব দিবস/ উৎসবের তুলনায় কিছুটা বেশি। আমাদের সমাজ বিয়েকে শুধু যৌন সম্পর্কের সামাজিক স্বীকৃতি হিসেবে দেখে না , দেখে একজন নারীর জন্য অর্থনৈতিক সামাজিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা হিসেবেও। প্রেম ভালবাসাকে প্রথাবিরোধী দৃষ্টি কোন থেকে দেখা এবং মেয়েদের জন্য বিয়ে ভিন্ন অন্য কোন অর্থনৈতিক-সামাজিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তার অভাবের কারণে এখানে অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ টিকে না থাকার আপাতত কোন কারণ নেই। ইনফ্যাক্ট অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ টিকে থাকা বা না থাকা অনেকাংশেই নারীর ক্ষমতায়নের উপর নির্ভরশীল।

১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:৪৮

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ সময় ব্যায় করে আমার পোষ্টে মতামত দেবার জন্যে। আমি আপনার কিছু কথা নিজের মতো করে বলছি।
এমনকি মেয়ে উচ্চ শিক্ষিত হলেও জীবন সংগী নির্বাচনে তার মত তার কাছে গুরুত্ব পায় না।

সেটাই আমি বলছি। উ্চ্চ শিক্ষাও নারী স্বাধীনতা দিতে পারছেনা। কেননা অনেক বাবা মা মেয়েদেরকে ডাক্তার বানান যাতে একটা ডাক্তার ছেলের সাথে বিয়ে দিতে পারেন!!! কত মহৎ একটা পেশা কিন্তু মেয়েটার পড়ার কারন ভালো হাসবেন্ড পাওয়া! কত মেয়ে যে স্বামীর হাতে মারধোর খেয়েও কিছু করতে পারেনা! শিক্ষা তাকে মুক্তি দিতে পারছেনা কেননা সমাজ পরিবার অনেক বড় একটা জিনিস। তাদের শিক্ষা মানুষকে খারাপ ভালো করে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার চেয়ে সেই শিক্ষার অনেক বেশি প্রভাব থাকে জীবনে। একেকটা পরিবার থেকে সমাজ চেন্জ হলেই নারী স্বাধীনতার মুখ দেখবে। সেটা পুরুষদেরও জীবন অনেক সহজ করে দেবে।

মেয়েদের জন্য বিয়ে ভিন্ন অন্য কোন অর্থনৈতিক-সামাজিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তার অভাবের কারণে এখানে অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ টিকে না থাকার আপাতত কোন কারণ নেই।
অসাধারন একটা কথা। আমাদের দেশে অনেক বিয়েই টিকছে কিন্তু সমাজের কারনে টিকছে। ভালোবাসার কারনে না। অনেক এরেন্জ ম্যারেজে ভালোবাসা হচ্ছেও। কিন্তু অনেকগুলোতে স্বামী স্ত্রী সমাজ/পরিবারের ভয়ে বিয়ে টিকিয়ে রাখছেন মুখ বুজে। দিনের পর দিন কষ্ট পাচ্ছেন।

সব সমস্যা কাটিয়ে আমরা সুখের নিবাশ গড়ব সে আশায়...।
আপনাকে আবারো অসংখ্য ধন্যবাদ এত এত সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্যে। শুভকামনা থাকল।

১৩| ১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:১৯

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:


আপনার যুক্তিগুলো স্বদেশ ও নিজ সমাজের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাকে প্রকাশ করে। ভালো লেগেছে। নিজের সংস্কৃতি হলো নিজের অস্তিত্ব। অস্তিত্বকে বিকিয়ে দিলে আর কি থাকে।

১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:৫১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: এটা আসলেই অনেক সুন্দর একটা কথা। আমি আপনার কথাটা মনেপ্রানে বিশ্বাস করে এতদিন লালন করে এসেছি এবং সামনেও করব।
ধন্যবাদ এবং শুভকামনা আপনাকে।

১৪| ১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪৬

সম্রাট৯০ বলেছেন: আপনার পোস্ট গতকালই অফলাইন থেকে পড়েছি, অনেক সুন্দর কিছু বিষয় উঠে এসেছে যা আমাদেের জীবনের সাথে খুব করে জড়িত, আপনার ভাবনার প্রতি আমার পূর্ন সমর্থণ আছে, জীবন সুখ এসব গুলোকে আপনি যেভাবে দেখেছেন ভাবেন বস্তুত এটাই সুখ এটাই জীবন।

সুখ বিষয়টা হলো আপেক্ষিক,একেকজনের কাছে একেক রকম, যে যেটাকে সুখ মনে করে সেটাই সুখ, এখানে উন্নত দেশে অনুন্নত দেশে, আধুনিকতা কিংবা সেকেলে এসব কোন বিবেচ্য বিষয়না, কেউ দুধ বিক্রি কেরে মদ খেয়ে মাতলামি করে সুখ পায় হাসতে হাসতে বাসায় ফিরে, আবার কেউ মদ বিক্রি করে দুধ নিয়ে বাসায় আসে, এখানে দুজনের কাছে সুখ দুইভাবে ধরা দিয়েছে,ওদের কাছে সমাজ সময় বিষয়না, বিষয় হলো ভালো থাকা।

আমাদের কাছে ভালোবাসা মানে সঙ্গি মানুষটার আষ্ঠেপৃষ্ঠে লেগে থাকা কথায় কথায় আবদারি আবেদনে সাড়া দেয়া তার সব সময় সব অবস্থায় সদয় হওয়া, প্রতি নিঃশ্বাসে বলতে হয় আই লাভইউ তবুও যেন মণ ভরেনা। কিন্তু আমার আম্মুর কাছে জানতে চাইলাম আম্মু তোমাদের ভালোবাসা কি, আব্বুতো দেখি প্রায় খেচ খেচ করে, এটা ওটা নিয়ে লেগেই আছে, আম্মু বলে ওসব কিছুনা,সেগুলোর প্রতি আমার নজর নেই,তোর আব্বু যখন বুঝতে পারে আমি কোন কিছু নিয়ে মারাত্মক টেনসানে আছি, তখন আমার হাতের উপর হাত রেখে হালকা একটা চাপ দিয়ে মুখে হাসি আর ইশারায় যা বলে সেটাই আমার নজরে আসে সেইটুকু ভালোবাসা দিয়ে আমার বছর জীবন পার হয়ে যায়, আর এভাবেই আমরা আছি বাবা আজ এতটা বছর কোন কষ্ট নেই সুখ ছাড়া।

এইভাবে আরো হাজার ব্যখ্যা বিশ্লেষন আছে বিয়ে ভালোবাসা সুখ সঙ্গী নিয়ে, সেসব নিয়ে আরো কথা বলে যাবো এখানে

ভালো থাকবেন :)

১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ১১:০৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপনার আব্বু আম্মুর যে বিষয়টা বললেন একদম মিলে যায় আমার বাবা মায়ের সাথে। সারাক্ষন টম এন্ড জেরির মতো একে অপরের পিছনে লেগে আছে। কিন্তু একজনের একটু জ্বর হলেও আরেকজনের চোখে কালি পরে যায়। বিশটা বছরে যতোবার ঝগড়া করেছেন সেই তুলনায় মুখে ভালবাসা কমই প্রকাশ করেছেন। কিন্তু কাজে কতবার যে একে অপরকে আই লাভ ইউ বলেছেন তার ইয়াত্তা নেই।

তবে আপনি প্রথমে যে আল্লাদগুলোর কথা বললেন সেগুলোও ভালোবাসা। একটু বেশি ভালোবাসা প্রকাশ, রোমান্টিকতায় কোন ক্ষতিতো হওয়ার কথা না। সব কাপলের ভালোবাসার নিজস্ব একটা রং থাকে। কারও খুনসুটির, কারও বন্ধুত্বের আর কারও বা সিম্পলি রোমান্টিক।

আমার ভাবনার সাথে সহমত প্রকাশের জন্যে ধন্যবাদ।
প্রায় প্রতি পোষ্টেই আপনি কমেন্ট করেন, উৎসাহ দেন, আমি কৃতজ্ঞ।
অনেক অনেক ভালো থাকবেন।

১৫| ১৮ ই জুন, ২০১৬ রাত ৩:১২

লা-তাহ্‌যান বলেছেন: অনেক বিষয় তুলে ধরেছেন। অল্প কথায় মন্তব্য কঠিন। তবে ৪নম্বর মন্তব্যের উত্তরটা খুবই ভাল লেগেছে। ওটা নিয়েই বলি।
বলেছেন, "কেননা আমি রুখে দাড়ানোর সাহস রাখিনা। আমি খুবই সাধারন মেয়ে যে সমাজের অন্যায় মেনে নেয়।"
কিন্তু আমি মনে করি অবশ্যই রুখে দাঁড়ানোর সাহস রাখেন এবং অন্যায় মেনে নেন না। তবে আপনি জানেন রুখে দাড়িয়ে, অন্যায় মেনে না নিয়ে আপনি ভাল থাকবেন না। তাই সেটা করেন না। আর এর কারণ সেই ছোটবেলা থেকে সমাজ পরিবারের গন্ডি আমাদের চরিত্র, ব্যক্তিত্ব,বৈশিষ্ট্য সে ভাবেই গড়ে তুলেছে।এখন এতটাই বদ্ধমূল হয়ে গেছে যে তাতেই আমরা ভাল থাকি।

"স্বপ্নহীন জগতের হাহাকারময় ব্ল্যাংক পেজ " হা হা হা। না পেজে কিছু না কিছু ত আছে। আগের একটা পর্ব পড়েছিলাম। ওখানেই ত লিখলেন মি. এম এর মত হ্যাসবেন্ড উইশ করেন। :)
তবে আমি মনে করি এই সমাজের মেয়েদের ইচ্ছা গুলো তার নিজের কাছেই সমাজ নির্ধারিত ন্যায় নৈতিকতার নিকট এতটাই গৌণ যে সেগুলোকে তারা আর ইচ্ছাই মনে করেনা।
জীবন সংগী বাছাইয়ের মত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিজে নিতে ভয় পায়।আবার অভিভাবকের মতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দ্বায়িত্ত্বও পালন করে।

যায় হোক আপনার ভাবনা ভাল লেগেছে এবং অনেকটাই মিলে যায় আমার সাথে।

১৮ ই জুন, ২০১৬ রাত ৩:৪৪

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: অসাধারন কথা বলেছেন। একদম ১০০% ঠিক বিশ্লেষন করেছেন। ছোটবেলা থেকে যে সমাজ আমাকে গড়েছে তার খারাপগুলোর প্রতিও একটা মায়া জন্মে গিয়েছে। তাই উঠে দাড়িয়ে হয়ত চেন্জ করতে ইচ্ছে করেনা। কিন্তু এও জানি সমাজ এভাবে চলতে থাকলে আমার মতো আগামী প্রজন্মও আমারই মতো খারাপ একটা সিস্টেমকে ভালবাসতে শুরু করে দেবে। তাই এভাবে লিখি। আপনি একদম ঠিক ধরেছেন আমাকে।

না ওটা এমন স্বপ্ন যা পূরন হওয়ার না। আমি লিখেছিলাম যে "আমি জানি মি: এমের চেয়ে ভাল হাসবেন্ড সম্ভব না।" আসলে আমি এটাও জানতাম ওনার মতো ভালও আমার জীবনে সম্ভব না। কিন্তু আত্নবিশ্বাস নিয়ে স্বপ্ন দেখতে কেমন লাগে এটা আমি জানিনা। সেই পেজটা ব্ল্যাংক।

সমাজ নির্ধারিত ন্যায় নৈতিকতার নিকট এতটাই গৌণ যে সেগুলোকে তারা আর ইচ্ছাই মনে করেনা।
হুম সত্যি সহমত।

অনেক ধন্যবাদ সহমত পোষনে। ভীষন সুন্দর একটা কমেন্ট করেছেন। যারা এ পোষ্ট পড়বেন আপনার কমেন্ট মিস করবেন না আশা করি। কমেন্টটা এতোটাই সুন্দর!

অনেক ভালো থাকুন। শুভকামনা।

১৬| ১৮ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:৩৯

র‍্যাশ বলেছেন: কেননা অনেক বাবা মা মেয়েদেরকে ডাক্তার বানান যাতে একটা ডাক্তার ছেলের সাথে বিয়ে দিতে পারেন
এটা সত্য যে আমাদের সমাজে প্রচলিত বিয়ের বাজারে শিক্ষিত মেয়েদের কদর বেশি, বাবা মা প্রচলিত মানদণ্ডে যোগ্য ছেলেদের সঙ্গে মেয়েদের বিয়ে দিতে তাদের শিক্ষিত করে তোলার চেষ্টা করেন। কিন্ত ডাক্তার ছেলের সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য মেয়েদের ডাক্তার বানান এই পর্যবেক্ষণ সম্ভবত সঠিক নয়। আমাদের দেশে মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে মেয়েগুলো পড়তে আসে তাদের বাবা মা তাদের সন্তানের কীর্তিতে যথেষ্টই গর্ব বোধ করেন। বিয়ের বাজারের উপযোগী মেয়ের তৈরির চেষ্টা মূলত উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত প্রযোজ্য।

আপনি বলছেন যে উ্চ্চ শিক্ষাও নারী স্বাধীনতা দিতে পারছেনা। এর কারণ আসল লুকিয়ে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় । আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা রেজাল্ট কেন্দ্রীক। এখানে মুক্ত চিন্তা বা জ্ঞানের প্রসারকে উৎসাহিত করা হয় না। ফলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় উচ্চ শিক্ষিত মেয়েরাও নিজের মত বা যুক্তি প্রকাশের দক্ষতা অর্জন করে না। নিজের উপর চাপিয়ে দেওয়া কোন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার জন্য যে ব্যক্তিত্ববোধ প্রয়োজন সেই ব্যক্তিত্বও তাদের মধ্যে গড়ে উঠে না। এই কারনেই বলছি অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সমাজ ও রাষ্ট্রের মূল চাবিকাঠি হচ্ছে অর্থ। এই অর্থনৈতিক নিরাপত্তার উপর ভিত্তি করেই একজন নারী সমাজে মাথা উঁচু করে টিকে থাকার মত ব্যক্তিত্ব অর্জন করতে পারবে। পারিবারিক শিক্ষা বা মুল্যবোধ গুরুত্বপূর্ণ কিন্ত এই মুল্যবোধগুলো স্বতঃসিদ্ধ নয়। প্রতিটি মানুষের উচিত নিজের যুক্তি , বিবেক , বাস্তবতাবোধের আয়নায় এই মুল্যবোধগুলোকে বিচার করে নেয়া। পরিবার বললেই মানতে হবে এমন ভাবনা ভয়ংকর। আর নানা সমস্যার মধ্যেও আরেঞ্জ ম্যারেজ টিকছে কারণ মানুষের একটা প্রধান ধর্মই হল সমঝোতা । প্রতিটা মানুষ কমবেশি সমঝোতা প্রবণ। প্রচলিত বাস্তবতায় মেয়েদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি।

১৮ ই জুন, ২০১৬ রাত ৯:২২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: না অনেক পরিবারে মেয়েদেরকে শিক্ষিত এজন্যেই করা হয়। আমার মায়ের দূর সম্পর্কের মামীর কথাই বলি। তার মেয়ে ইনজিনিয়ারিং পড়ছে। তিনি আলাপে বললেন বিয়ের পরে চাকরি করে টাকা কামাবে সে আশায় তো পড়াচ্ছি না। মেয়ে যখন একসময় ঘরে বসতেই হবে। কিন্তু আজকাল ইনজিনিয়ার পাত্ররা আবার পাত্রী ইনজিনিয়ার না হলে বিয়ে করতে চায় না। তাই পড়াচ্ছি। যুগ অনেক পাল্টে গেছে। আজকাল মেয়েদের সবই জানতে হয়।
একদম লাইন বাই লাইন এই কথাগুলোই বলছিলেন। আমি লাস্টবার দেশে ব্রেকে গিয়েছিলাম তখন ওনার এসব কথা শুনেছিলাম। তবে আপনি যা বলেছেন তাও ঠিক। অনেক অনেক ব্যতিক্রমধর্মী মা বাবা আছেন। আমি অনেক বাবা মা বলেছি সব বলিনি।

আপনার পরের পয়েন্টের সাথে সহমত।

আবারো সুন্দর, পরিষ্কাত মতামত ও মন্তব্য প্রদানে ধন্যবাদ।

১৭| ১৮ ই জুন, ২০১৬ রাত ১১:২৭

জসিম বলেছেন:
পড়ছিলাম আপনার কানাডার দিনগুলি. কোথায় যে মন্তব্য করবো সেটা নিয়েই ভাবছিলাম. আপনার এই লেখার কথাই যদি ধরি তাহলে আসলে বিষয় অনেকগুলো. অনেকগুলো বিষয় নিয়ে এক জায়গায় বলেছেন. তবে, এটা ঠিক আপনি এখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আপনার নিজের অবস্থানের কথাটা ভালো করে বলার চেষ্টা করেছেন. আর সেটা আরো বেশি উঠে আসছে আপনার পরবর্তী মন্তব্যে. এই দিক বিবেচনায় লেখা ঠিকই আছে বলা যায়.
দেশের সংস্কৃতি, আচার ব্যবহার আমাদের সবার মাঝেই অনেক গভীরভাবে গেঁথে থাকে, এটা দেশের বাইরে গেলেও. আর যদি অনেক দিন ধরে থাকা হয় তারপরও সেখানে মৗেলিক পরিবর্তন সাধারণত হয় না. বিশেষ করে কেউ যখন শৈশবকাল অতিক্রম করার পর বিদেশে যায়. শৈশবের সময়টাতে যে পর্যন্ত আমাদের পারিপাশ্বিকতায় আমরা বেড়ে উঠি তাতে অনেক কিছুই আমাদের জ্ঞান, চিন্তা, ধ্যান ধারণার সাথে একাত্ম হয়ে যায়. এটাও বলা দরকার যে, স্কুলের সময় কালেও যদি কেউ দেশের বাইরে পরিবারের সাথে চলে আসে তার ক্ষেত্রেও শতভাগ সেই নতুন দেশের সাথে সবকিছু মেলানো সম্ভব না. আমি নিজে অনেক পরিবারকে এমন দেখেছি. এসব কারণে আমার মনে হয়, বিদেশে এসে আমরা অনেকে যারা এডজাস্ট করা এবং নতুন সংস্কৃতির সাথে মানিয়ে নিয়ে সেখানকার সংস্কৃতির সাথেও একাত্ম হয়ে উঠার ব্যাপারটা চিন্তা করি সেখানে বড় ধরনের ফাঁক থেকে যায়. চাই, আবার চাই না এভাবে কিছু দ্বন্ধ তো আছেই. আমার মনে হয়েছে, আপনার ক্ষেত্রে এগুলো বেশ বড় প্রভাবক হিসেবেই কাজ করেছে বা করছে.
নিজের দু:খ আর নানা বিষয়গুলাে আসলেই ভালো ভাবে তুলে ধরেছেন. তবে, আমি ভাবছি আপনি নিজে এক ধরনের আত্মসমর্পণ করার দিকেই মনোযোগী ছিলেন. আপনাকে দিয়ে এটা হবে না বা ওটা সম্ভব না এমন অনেক কিছুতে নিজেকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে আপনি এক রকম 'না' বিষয়ক অবস্থানে দৃঢ় আছেন. আমি নিজে যতটুকু দেখি বা দেখছি দেশের বাইরে তাতে মনে হয়েছে এটা খুবই স্বাভাবিক যে অনেক কিছুর ক্ষেত্রে আমাদের মতামত, ভালো-মন্দ লাগা, বিশ্বাস, আগ্রহ এমসন আরো অনে´ক কিছু- এগুলো পরিবর্তিত হওয়াটাই স্বাভাবিক. আপনার হতাশ দৃষ্টিভঙ্গি যে আপনার জন্য এই জীবনে ভাবনাগুলো সত্য হবেনা. আপনার ছেলে মেয়ের জন্য হলেও হয়তো হবে. এরকম হতাশা বাস্তব হলেও নিজের ক্ষেত্রে এগুুলো ছাড়িয়ে যাওয়ায় আপনার আগ্রহ দৃশ্যমান হয়, বা আপনি মনে করেন সম্ভবই না.
বিয়ের ক্ষেত্রে আপনার ভাবনাটা অবশ্য আমার মনে হয়েছে যুক্তিসংগত. আমি নিজেও মনে করি আমার জন্য একটা বিদেশী মেয়েকে বিয়ে করা কঠিন. কঠিন এজন্য নয় যে, বিয়ে করা , করত চাওয়া, এগুলো. এখানে বিষয় হচ্ছে সেই সুন্দরী মেয়েটা বিদেশী, সুন্দরী এরকম আরো অনেক যোগ্যতায় ভরে থাকলেও তার সাথে আপনার ভাব আদান প্রদানের সমস্যাটা কখনোই সমাধান করা সম্ভব না. হু হা করলেই যদি ছোট ছোট অনুভূতিগুলো না বুঝানো যায় তাহলে ভালোবাসাটা বেড়ে থাকবে কোথায়. এখন অনেকে বলতে পারেন- দুজন দুজনকে ভালোবাসলে ভাষার বিষয়টা তেমন গুরুত্বপূর্ণ না. কিন্তু এটা গুরুত্বপূর্ণ না হলেও আপনার মন, ভাবনা এগুলো যদি আরেকজনকে বুঝাতেই না পারেন তাহলে এক সময় সেখানে ভালোবাসার আত্মবিশ্বাসটুকু কমে যায়. আমি ব্যক্তিগতভাবে তাই মনে করি. আমার এক বন্ধুর বিদেশী গার্লফেন্ড ছিলো কয়েক বছর. দুজনে বিয়ে করবে এমন সিদ্ধান্তও ছিলো. পরে বন্ধুটি ভেবে দেখেছে মনের ছোট ছোট অনুভূতিগুলো তার সেই বান্ধবীর সাথে শেয়ার করা যায় না. বাংলায় ছোট শব্দ বা উচ্চারণ বা পংক্তিটুকু বলে যে শান্তি পাওয়া যায় তা ইংরেজি, ফিনিশ ভাষায় বুঝানো সম্ভব না. বউ কৈ- এই ছোট কথায়ও (এমন আরো অনেক কিছু ) যে হাজার ভালোবাসা লুকানো এটা তো ইংরেজি বা ফিনিশ ভাষা দিয়ে তারে বুঝানো কঠিন. সে কিছুদিন পর দেশে গিয়েই বিয়ে করবে. যাই হোক, আমি বলছিনা যারা বিদেশে এসে বিয়ে করেন, করছেন বা করবেন এটা
ঠিক নয়. যারা করছেন এটা তাদের নিজের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত. আমার নিজের ব্যক্তিগত মতও হলো ভালোবাসায় ছোট অনুভূতি, ভাষার এক হওয়া, আর একে অপরকে বুঝা অনেক গুরুত্বপূর্ণ.
অনেক কথা বললাম. আসলে আরো অনেক কিছু বলতে চাইছিলাম. পরে এক সময় বলবো. আপাতত এটুকু থাক.
তবে একটা কথা বলাই দরকার 'আমার নাম' বাদ দিলেই লেখাটা পড়তে আরো ভালো লাগবে, আর নয়তো বার বার চোখ আটকে যায়, গতিরোধ হবার মতো. একটা নাম দিতেও পারেন!
ভালো থাকুন.
অনেক অনেক শুভকামনা.

১৮ ই জুন, ২০১৬ রাত ১১:৪০

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: কষ্ট করে এতো বড় মন্তব্য করে মতামত দেবার জন্যে ধন্যবাদ। সবকিছু নিয়ে মতামত দিলাম না তবে একটা ব্যাপার নিয়ে বলি,

বাংলায় ছোট শব্দ বা উচ্চারণ বা পংক্তিটুকু বলে যে শান্তি পাওয়া যায় তা ইংরেজি, ফিনিশ ভাষায় বুঝানো সম্ভব না.

এটা আমি প্রচন্ডভাবে অনুভব করি। আশেপাশে এত সুদর্শন সব বিদেশি ছেলেদের সাথে মেশার পরেও প্রেম অনুভব হয়না। ইন্টেলেকচুয়ালিটি লেভেলের তীব্র তারতম্য, প্রতিটি আবেগ নিজের ভাষায় প্রকাশ করতে না পারার অপারগতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কারনে বিদেশী ছেলেদের নিয়ে এরকম কিছু কখনোই মনে হয়নি। আমি তাই এ ব্যাপারটা পুরোপুরি বুঝি।

আমার নামটা না ব্যবহার করে কোন কিছুই বলব না এখন থেকে। ব্যস আমাকে বলছে সেটা বলব। নিজেকে ভুল নাম দিতে চাইনা আর আসল নাম দেবার প্রশ্নই আসেনা।

আপনার ভাবনাচিন্তা, মতামত, মন্তব্য কি ভীষন সুন্দর করে লিখেছেন! ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবনা।

আপনাকেও প্রচুর শুভকামনা।

১৮| ২০ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১:১০

র‍্যাশ বলেছেন: আপনার উদাহরণ মেনে নিলাম। কিন্ত এখানেও একটা ভাবনার ব্যাপার আছে। এই উদ্ভট ভাবনাচিন্তা লালন করছে কে ? "দূর সম্পর্কের মামী" অর্থাৎ তিনিও একজন নারী। তিনি যে পরিবেশে বা সমাজ ব্যবস্থায় বেড়ে উঠেছেন সেই সমাজ ব্যবস্থায় সম্মুখীন হওয়া নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে তার মানসিকতা গড়ে উঠেছে। তার মুল্যবোধগুলোও গড়ে উঠেছে সেই সমাজ ব্যবস্থা থেকে। তিনি তার দৃষ্টিকোণ থেকে নারী সত্তাটিকে বিচার করেন, নারীদের জন্য ভাল মন্দের সংজ্ঞা নির্ধারণ করেন। সমাজে এই জাতীয় নারীর সংখ্যা কম নয়। ঢাকা শহরে কর্মজীবি সিঙ্গেল নারীদের বাসা ভাড়া পেতে অনেক অসুবিধা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় বাড়িওয়ালার চেয়ে বাড়িওয়ালার স্ত্রীর কাছ থেকে প্রধান আপত্তিটা আসে। এখানেও সেই একই ব্যাপার খাটে। বাড়িওয়ালার গৃহিণী স্ত্রী কর্মজীবী নারীদের পছন্দ করেন না কারণ তার মুল্যবোধ নারীদের ঘরের বাইরে কাজ করাটাকে সমর্থন করে না।
সামগ্রিক ভাবে নারীর আর্থ সামাজিক অবস্থানের উন্নয়ন ঘটলে এই জাতীয় প্রবণতার অবসান ঘটবে।

"ইঞ্জিনিয়ার পাত্ররা আবার পাত্রী ইঞ্জিনিয়ার না হলে বিয়ে করতে চায় না" - প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন আমার বন্ধু বান্ধবীদের কেউই এই জাতীয় হাস্যকর ভাবনা ভাবতো বলে মনে পড়ছে না। ইনফ্যাক্ট এই জাতীয় ভাবনা সংশ্লিষ্ট নারীদের জন্য চরম অবমাননাকর। সম্ভব হলে সেই ভদ্র মহিলার ভুল ভাঙ্গানোর চেষ্টা কইরেন। ভাল থাকবেন। বিদায় ।

২০ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৩

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আমার লেখায়েও তো তাই ছিল। মা, খালারাই মেয়েদেরকে শিখাচ্ছেন মেয়ে হয়ে যখন জন্মেছ যখন মাথা নিচু করে কম্প্রোমাইজ করে চলবে। কেননা তারা একটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজে থেকে এমন ভাবেই ভাবতে শিখেছেন তাদের পূর্বসুরিদের কাছে থাকে।

ম্যারেজ মিডিয়ায় তো বলতেও হবেনা আপনাকে। ওরা ডাক্তারের জন্যে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারের জন্যে ইঞ্জিনিয়ার এটা জানেই। এটা খুব নরমাল ডালভাত একটা ডিমান্ড সেটেলড ম্যারেজের ক্ষেত্রে।
ভার্সিটিতে কেউ এসব ভাবেনা। তারা ভালবাসা, মন মানসিকতা মিললে খুশি। কিন্তু তারাই যখন পরে বিয়ে করতে যান সমাজ, পরিবারের ইনফ্লুয়েন্সের এমন করেই ভাবেন।
নারে ভাই সম্ভব না ভুল ভাঙ্গানো, আমাকে বেয়াদব আক্ষা দেওয়া হবে। তাছাড়া আসলে লাভের লাভ কিছুই হবেনা। ওনাদের চেন্জ করা যাবেনা, শুধু সামনের প্রজন্মকে নিয়ে আশা রাখি।

আপনি অনেক সুন্দর সব কমেন্ট করেছেন বারবার। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভকামনা।

১৯| ২১ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:২৩

মোহাম্মদ আলী অপু বলেছেন: অনেক ভালো লিখেছেন।
এক নিঃশ্বাসে সব গুলা পোস্ট পড়ে ফেললাম।
পর্ব ৭/৮/৯ পড়তে পারিনি, কোথাও প্রবলেম আছে।

অনেক কিছু জানলাম/শিখলাম।
ধন্যবাদ

২১ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:২৮

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: Click This Link
http://www.somewhereinblog.net/blog/samupagla007/30132934
http://www.somewhereinblog.net/blog/samupagla007/30133949

আপনাকে লিংকগুলো দিলাম। জানানোর জন্যে ধন্যবাদ, আমি দেখছি কি সমস্যা।

আর প্রতিটি পর্ব পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
শুভকামনা।

২০| ২২ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০২

ছাসা ডোনার বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি কাজের ফাঁকে আপনার সব গুলো পোস্ট( ৭,৮, ৯ ছাড়া) পড়লাম।আসলে আপনার অনেক ধৈর্য, অনেক সুন্দর করে যেকোন ঘটনার বর্ননা করতে পারেন। আপনে কানাডায় কত বছর? আপনি মুখে বললেও আপনার আচারে আমি অনেক পরিবর্তন দেখছি। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। আপনার ছেলে মেয়েরা কানডি্যানদের কালচারে বেড়ে উঠলে বাংলাদেশি কালচার ওদের কাছে অদ্ভুত মনে হবে। আপনি ভাল থাকবেন, আপনার সব আশা আকাংখা পুরন হোক।

২২ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৪

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: এই পর্বের লিংকে কিছু সমস্যা আছে। আপনি এই পর্বের লিংকগুলোতে ক্লিক করলে পড়তে পারবেন ৭/৮/৯।
http://www.somewhereinblog.net/blog/samupagla007/30140905

চারের ওপর হবে।

আপনি মুখে বললেও আপনার আচারে আমি অনেক পরিবর্তন দেখছি।
ব্যাপারটা একটু ডিটেইলে বলুন, জানতে চাচ্ছি। কি পরিবর্তন, কেন মনে হল এসব আরকি। আপনার কথায় হয়ত নিজেকে আরেকটু বেশি বুঝব আমি!

আপনিও ভাল থাকবেন।

২১| ২২ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৮

ছাসা ডোনার বলেছেন: আমি খারাপ কোন অর্থে বলিনি। এই মনে করেন কানাডায় প্রথম যখন দেখেছেন ছেলেমেয়েদের রাস্তায় হাত ধরে চালাফেরা করতে আপনার কাছে খারাপ লাগত, কিন্তু এখন আর নিশ্চয় ওরকম লাগে না।লিভ টোগেদার প্রথমে আপনার কাছে ঘৃনার জিনিস হলেও এখন ব্যপারটাকে স্বাভাবিকই মনে করেন। যাইহোক সব সময় নিজের কাছে যেটা ভাল লাগে সেটাই করা স্রেয় । আপনি বাংলাদেশের একজন খাঁটি মানুষ। ধন্যবাদ আপনাকে

২২ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৮

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: না না আমিও খারাপ অর্থে নিইনি ব্যাস নিজের পরিবর্তনগুলো জানতে চেয়েছিলাম।
জ্বি আপনি ঠিক, নিজের ভাবনা, জীবনদর্শন চেন্জ না হলেও অন্যের কালচার দেখে কাঁপাকাঁপি হয়না আগের মতো।

আমি সব পর্বের লিংক ঠিক করে দিয়েছি। পড়তে অসুবিধা হওয়ার কথা না। হলে অবশ্যই জানাবেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।

২২| ২৩ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:১১

গাজী বুরহান বলেছেন: ভালো লাগেনি B:-)

২৩ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৫

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ভাল না লাগার পরেও কমেন্ট করে জানিয়েছেন সেজন্যে ধন্যবাদ। পরে যেন ভাল লাগার মতো কিছু লিখতে পারি সে আশায় থাকলাম।
অনেক অনেক ভাল থাকুন।

২৩| ১১ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:২৭

পবন সরকার বলেছেন: ভালো লাগল বিশ্লেষণ।

১১ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৫৪

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ আবারো আপনাকে পাঠ ও মন্তব্যে।

শুভকামনা রাশি রাশি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.