নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কি বলা যায়! কিছু কথায় নিজেকে ব্যক্ত করা সম্ভব না আমার পক্ষে। তাই একটা সিরিজে কিছু কিছু করে সবই বলছি।

সামু পাগলা০০৭

আমি অতিআবেগী, আগে ব্যাপারটা লুকানোর চেষ্টা করতাম। এখন আর করিনা।

সামু পাগলা০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কানাডার স্কুলে একেকটি দিন পর্ব (৭) - টিপিক্যাল বাংলাদেশী আচরণ, জীবনধারণ এবং বৈদেশী চোখে "উইয়ার্ড" স্বদেশ দর্শন!

১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৫

পূর্বের পর্বগুলোর লিংক:

আগের সিরিজ: কানাডার স্কুলে একদিন (এক থেকে বাইশ): পর্ব বাইশ । পর্ব বাইশে অন্য সকল পর্বের লিংক রয়েছে!
আগের পর্ব: কানাডার স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ১) - বাংলাদেশীদের যেসব বিষয় বিদেশীরা অদ্ভুত মনে করে!
কানাডার স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ২) - মফস্বলের কন্যের বৈদেশে শিক্ষাগ্রহন; ঘটন অঘটন এবং আমাদের নিয়ে বৈদেশীদের দর্শন!
কানাডার স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ৩) - মফস্বলের কন্যের বৈদেশ ভ্রমণ; চলন ও বলন, এবং ভিনদেশ নিয়ে বৈদেশীদের দর্শন!
কানাডার স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ৪) - মফস্বলের কন্যের বৈদেশ ভ্রমণ; চলন ও বলন, এবং বৈদেশীদের নানা দর্শন!
কানাডার স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ৫) - ঈদ মোবারক সবাইকে! কিছু পাঠকের প্রশ্নের উত্তরে আজকের পর্ব : কেমন কাটে প্রবাসে ঈদ?
কানাডায় স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ৬): প্রেম পিরিতি: মফস্বল ও বৈদেশে সম্পর্কের ভাঙ্গন গড়ন এবং বৈদেশীদের চিন্তন দর্শণ!

শুরু করার আগে বলি, বাংলাদেশ ও দেশের সংস্কৃতিকে আলাদা করে অনেকেই জানেনা। ইন্ডিয়া, চায়নার মতো এশিয়ান দেশগুলোর ব্যাপারে জানে, এবং সেই স্টেরিওটাইপ নিয়ে বাংলাদেশীদেরও দেখে। যেমন আমরা ওয়েস্টার্ন কালচারকে এক দৃষ্টিতে দেখি। আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক, ইংল্যান্ড সব একই মনে হয় আমাদের কাছে। ছোটবেলার সেই ভাবনার মতো, পৃথিবীতে শুধু দুটো দেশ, ১) বাংলাদেশ; ২) বিদেশ! কানাডিয়ানরাও এশিয়া মানে এশিয়াই ভাবে, বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, জাপান, চায়না আলাদা করে ভাবার সময় অনেকেই পায়না। আমাদের কালচার এবং এশিয়ার অন্যান্য দেশের কালচার সবক্ষেত্রে এক নয়। আমি সেসব বিষয়ে বলব, যেসব ক্ষেত্রে কালচার এক। আমাদের কোন কোন বিষয় ওদের কাছে উইয়ার্ড বা অদ্ভুত সেসব আরকি!

-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

হাতে থাকা ছোট্ট রিমোটটি টিপলাম। খুলল না। আবারো চেষ্টা করলাম, এবং খুলে গেল বিশাল গাড়ির পেছনের দরজাটি। পেছনে পরে থাকা বড় ও ভারী ব্যাগটি হাতে নিলাম। আসার সময়ে বেশ কয়েকবার চেক করলাম গাড়িটি ঠিকভাবে বন্ধ হয়েছে কিনা? তারপরে ব্যাগটি নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আশেপাশে তাকাতে থাকলাম। খুবই সুন্দর নিরিবিলি জায়গায় গ্যারেজটি। পা ভিজে যাচ্ছে শিশিরে। শীত আসি আসি করছে। সবকিছুতে নীরব স্নিগ্ধতা, একটা ভেজা ভাব! মিষ্টি একটা রোদ পরবে কিছুক্ষনেই। যে রোদে অস্বস্তিকর তাপ থাকেনা, কোমল একটি উষ্ণতা থাকে!

আমি তখন প্রথমবার টিএ হলাম স্কুলে E.S.L. ক্লাসে এক জার্মান টিচার এর আন্ডারে। তিনি বয়স্কা, মোটাশোটা, হাশিখুশি মহিলা ছিলেন। একদম ছোট থেকে কানাডায়। নিজের দেশে তেমন যাননি। একটি কারণে তাকে অনেকে পছন্দ করতনা। তিনি অন্যদেশের মানুষেদের মুখের ওপরে তাদের দেশের সমালোচনা করতেন। অন্যান্য বিদেশীরা হয়ত এসব মনে মনে ভাবে, কিন্তু মুখে ভদ্রতার খাতিরে কখনো আনে না। উনি আনেন এবং বেশ জোরেশোরেই আনেন।

ওনার হাতে দিলাম গাড়ির চাবি ও ব্যাগটি। আমাকে তার গাড়ি থেকে ক্লাসের জন্যে লাগবে এমন কিছু জিনিস আনতে দিয়েছিলেন। উনি থ্যাংকস বললেন। তারপরে কম্পিউটারের সামনে বসে ওনার দেওয়া কিছু কাজ করতে যাব তখন তিনি বললেন, "এদিকে এসো। আমরা নানা দেশের কথাবার্তার ধরন নিয়ে কথা বলছিলাম। একটু আগে কেরোলিন আর ভিক্টর নিজেদের ভাষায় কথা বলছিল। আমিতো ভাবলাম ঝগড়া করছে! পরে দেখি শপিং এ যাবার আলোচনা করছে!" এখানে বলে রাখা ভালো ওরা কলম্বিয়ার এবং কলম্বিয়ানরা জোরে কথা বলার জন্যে পরিচিত। তিনি বললেন, "এশিয়ানরাও তো তাই! একবার থাইল্যান্ডে গিয়েছিলাম। ওখানে রেস্টুরেন্ট, বাজারে, রাস্তায় দাড়ালেই মনে হতো কানের আশেপাশে মাছি ভনভন করছে। এত জোরে আর দ্রুত সবাই কথা বলে! কাইন্ডা উইয়ার্ড!" ওনাকে দেখে মনে হলো জোরে কথা বলার চেয়ে বিরক্তিকর কিছু আর নেই। যোগ করলেন, "আচ্ছা ব্যাংলাদেশে কেমন? তুমি তো বেশ সফটস্পোকেন, বাট আই বেট নট অল অফ ইউ আর!" বলে হো হো করে হেসে ফেললেন। আমি কিছু বললাম না। কিছুটা বিরক্তি লাগল। ওনার কথার মধ্যে খোঁটা দেবার প্রবণতা থাকত। অন্যদেশের যেকোনকিছু নিয়ে স্বত:স্ফূর্তভাবে অভিযোগ করতেন। আমরা এশিয়ানরা জোরে কথা বলি আর না বলি, ওনার তাতে কি?

কানাডিয়ানরা সবকিছু শান্তভাবে, ও বিনয়ের সাথে করতে পছন্দ করে। স্কুল হলে দুটো টিচার একে অপরের সাথে কথা বললে কানের কাছে মুখ নিয়ে ইশারায় আস্তে আস্তে বলতেন! আমি কাউন্সিলর বা টিচারের সাথে কোন কাজে তাদের অফিস রুমে গেলে একটা জিনিস খেয়াল করতাম। দরজাটা এত আস্তে বন্ধ করতেন মনে হতো একটু শব্দ হলে ভূমিকম্প হবে। আর কথা বলতেন এত মিহি সুরে যেন টেবিলে রাখা ফটো ফ্রেম/ডেকোরেশিন পিস ভেংঙ্গে পরবে একটু জোরে কথা বললেই! রাস্তা ঘাটে যতোই জ্যাম থাকুক আমাদের দেশের মতো প্যাঁ পুঁ শোনা যায় না। সবকিছুই নিরিবিলি। আমাদের কথা বলার পদ্ধতি এবং ভঙ্গিমা এজন্যে অনেক পশ্চিমি রুড মনে করে থাকেন। যদিও বিনয়ের দায়ে সেভাবে কিছু বলেন না। কিন্তু হাবেভাবে বোঝা যায়।

তখন সেমিস্টার ফাইনাল এসে কড়া নাড়ছে। এক মাস পরেই ফাইনাল। আমি খুব গুছিয়ে পড়াশোনা করতাম। ফাইনালের এক সপ্তাহ আগেই সব প্রস্তুতি শেষ করে রাখতাম। খুব রিল্যাক্সড রাখতাম নিজেকে পরীক্ষার আগে। লাস্ট মিনিটে পড়ে যারা পাস করে তাদের জন্যে আমার ভীষন সম্মান সবসময় ছিল, আছে। কেননা আমার পক্ষে তা কোনকালেই সম্ভব না। প্রায় বেশিরভাগ ক্লাসেই এসাইনেমন্ট সব শেষ করিয়ে রিভিউ করাচ্ছে। সময়টা একদিক দিয়ে খুব ব্যস্ত আবার একদিক দিয়ে খুব ফ্রি। পরীক্ষা আসছে আসছে ভাবনায় সবার মধ্যেই একটি চাঞ্চল্য দেখা যাচ্ছে। সবাই সিরিয়াসলি পড়ছে লাইব্রেরী ও স্কুলের নানা জায়গায় গোল হয়ে বসে। ফাঁকিবাজ ছাত্রদের হাতে অনেকদিন পরে বই নামক জিনিসটি দেখলাম এবং তারা এটিকে খুলতে জানে দেখে খুবই অবাক হলাম! হাহা। কিন্তু ব্যস্ততা কমও একদিক দিয়ে। কেননা সব এসাইনমেন্ট সাবমিট শেষ। কদিন পড়ে পড়ে টিচারদের অমক ডেটে ল্যাব, টেস্ট, এসাইনমেন্ট এসব শুনতে হচ্ছে না। জাস্ট নিজের মতো করে জানা জিনিসগুলো আবার জানা।

এরই মধ্যে E.S.L. ক্লাস টিচার মিসেস ডি আমাদের বললেন, "জানি তোমাদের পরীক্ষা এগিয়ে আসছে। এজন্যে এখন ট্রিপের আয়োজন করতে চাইনি, পরে মনে হলো ফাইনালের পরে ছুটি পরে যাবে। আর তোমরা এমেইজিং ট্যুরটা মিস করবে। আর একদিনই তো!" বলে উজ্জ্বলভাবে হাসলেন!

বাড়িতে এসে মা কে ফর্ম দিলাম যাতে সাইন করতে হবে যে স্টাডি ট্যুরে পাঠাতে রাজি। মা বলল, "কয়েক মাস আগেই তো ঠান্ডায় ট্যুরে গিয়ে জ্বর বাঁধিয়েছিলি। ফাইনালের আগে আগে আর শীতে পাঠাব না। ফাইনালে ভালো মার্ক জরুরি!" আমি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লাম। পরেরদিন লাঞ্চ আওয়ারে মিসেস ডি কে বলতে গেলাম যে আমি যাচ্ছিনা। গিয়ে দেখি কিছু কোরিয়ান, জাপানিজ স্টুডেন্ট অলরেডি একই আর্জি নিয়ে দাড়িয়ে! আমিও ওদের সাথে দাড়ালাম। উনি বললেন, "লুক, স্টাডি ইজ নট এভরিথিং, এসব অভিজ্ঞতাও জরুরি।" বাকি ছেলে মেয়েরা তবুও মাথা নাড়ল যে যাবে না। আমিও তাই করতে চাচ্ছিলাম কিন্তু বেয়াদবী হবে কিনা ভেবে চুপ থাকলাম। উনি হতাশ হয়ে বললেন, "তোমাদের কালচার একটু অন্যরকম। আমরা সবসময় নতুন কিছু ট্রাই করতে পছন্দ করি। শোন মজার ঘটনা, একবার অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে একটি খাবার খাই, খুবই বাজে লেগেছিল প্রথমে। কিন্তু কবার মুখে নিয়ে খুবই টেস্টি লাগল, এডিক্টেড হয়ে গেলাম খাবারটিতে! কিন্তু চাইনিজরা অস্ট্রেলিায় গেলে প্রথমে চায়না টাউন খুঁজবে চাইনিজ ফুডের জন্যে। ইন্ডিয়ান, ব্যাংলাদেশীরা নিজ দেশী রেস্টুরেন্ট! ইটস উইয়ার্ড টু লিভ ইন আ কান্ট্রি এন্ড নট এক্সপেরিয়েন্স ইট!" ব্যাংলাদেশী বলার সময়ে আমার দিকে তাকালেন। আমি মনে মনে ভাবছি তোমাদের তেল মশলা ছাড়া খাবার ট্রাই করতে বয়েই গেছে! হাহা। তিনি মাথা নাড়তে নাড়তে বললেন, "এটা ঠিক না! কানাডিয়ান স্টুডেন্টরা লাফাতে শুরু করত এ সময়ে এমন একটা ট্যুর পেলে। তোমরা অনেক লাকি!" অসন্তুষ্ট হয়েছেন বুঝতে পারছিলাম। ভাবলাম যাই, একদিনই তো! কিন্তু বেশি স্নোফলের কারণে ট্যুরটা নিজেই ক্যান্সেল হলো!

প্রথম প্রথম কানাডিয়ানদের এই জোর করাটা বিরক্তি লাগত। সব টিচার এমন ছিলেন না, কিন্তু অনেকেই আমাদের এশিয়ান স্টুডেন্টদের পেছনে লেগে থাকতেন। তাদের মনে বদ্ধমূল ধারণা আমরা জীবনকে এনজয় করতে জানিনা। তাদের কাজ আমাদেরকে শেখানো। তাদের কাছে, "ট্রাই সামথিং নিউ!" শুনতে শুনতে কান পেকে যেত। ক্লাব, স্পোর্ট, ট্যুরে ধরেবেঁধে পাঠাতে চাইতেন। বাড়িতে বাবা মা তো এশিয়ানই, তারা একরকম চাইতেন। ঝকঝকে রিপোর্ট কার্ড হলেই তারা খুশি, আর কিছু না। আর স্কুলের টিচারেরা অন্যরকম। মার্ক কম হলেও আমরা যেন হাসিখুশি থাকি তাই চাইতেন তারা। দুটোতে ভালোই স্যান্ডউইচড হতাম আমরা। আমরা বলতে আমিই শুধু না, চাইনিজ, কোরিয়ান, জাপানিজ কালচার তো আমাদের চেয়েও স্ট্রিক্ট মনে হতো!

তেমনই এক সময়ে আমাদের ম্যাথ ক্লাসে ফাইনালের আগে স্টুডেন্টরা কত পেল সেটা একটা কাগজে প্রিন্ট করে ক্লাস দেওয়ালে টাঙ্গিয়ে দেওয়া হলো। সেই ক্লাসে ছিল একটা ছেলে নাম কোডি! খুবই বাচ্চা টাইপ ছেলে ছিল চেহারা ও আচরণে। চশমা পড়া, সাদামাটা চেহারা। ভীষনই দুষ্টু। টিচারদের সাথেও বন্ধুর মতো! ও সেদিন আমাকে মার্ক জিজ্ঞেস করল। বললাম। আমার পেছনেই বসা চাইনিজ ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করল, সেও বলল। আমাদের মার্ক শোনার পরে বলল, "কুললল! তোমরা ফাইনাল না দিলেও পাশ করে যাবে!" আমি মুচকি হাসলাম। আর চাইনিজ ছেলেটা বেশ ভাবমার্কা হাসি দিল।
আর কোডির মাথায় মনে হয় কিছু দুষ্টুমি বুদ্ধি এলো। ও আমাদের ম্যাথ টিচার মিসেস: হলকে বলল, "এশিয়ান কিডস আর স্মার্টার দ্যান আস! তারা সবসময় বেস্ট মার্ক পায়। দিজ ইজ নট ফেয়ার!" টিচার বললেন, "সব জাতির নিজের নিজের প্রায়োরিটি থাকে। ওরা পড়াশোনাকে অনেক সিরিয়াসলি নেয়। কিন্তু আমরা কানাডিয়ানরাও কম না! আমরা জীবনকে এনজয় করি। উই আর নোন টু লিভ আওয়ার লাইফ টু ফুলেস্ট!" কোডি টিচারের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে আমাদের শুনিয়ে শুনিয়ে বলল, "তার মানে এশিয়ানরা স্মার্টার, আর আমরা মোর ফান?" আমি প্রতিবাদ করলাম, "নাআআ, আমরাও ফান!" ও তখন খিলখিল করে হেসে বলল, "তুমি বলতে চাচ্ছ মিসেস হল ভুল বলছেন?!" আমি ওর দিকে না তাকিয়ে টিচারকে বললাম, "মিসেস হল আমরাও জীবনকে এনজয় করতে পারি!" উনি হাসতে হাসতে বললেন, "আচ্ছা, এশিয়ানরা স্মার্ট, ফান দুটোই, আমরা কানাডিয়ানরা শুধু ফান, ওকে? হ্যাপি নাও?" আমি বললাম, "না, আপনারাও দুটোই!" সবাই হেসে ফেললাম তারপরে!

যতোই আমরা দুটোই দুটোই বলি, আসলেই সব জাতির আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে। কানাডিয়ানদের পুরো ভাবভঙ্গিতে একটা কুল এপ্রোচ থাকে। এখানে স্কুলে শিক্ষার্থীদের রোল নাম্বার থাকেনা। সেই প্রথম হবার কোন টেনশন কারোর মধ্যেই কাজ করেনা। বড় হয়েও কর্মক্ষেত্রে কাউকে পায়ের তলায় পিষে এগোনোর প্রবণতা থাকেনা। সবাই সবাইকে সাহায্য করে। প্রতি উইকেন্ডে দূরে কোথাও বেড়িয়ে আসে। টাকা জমানোর প্রবণতা কম, যা থাকে খরচ করে আজটাকে এনজয় করে। আমরা বাংলাদেশীরা কেমন তা তো আর বলতে হবেনা। এর উল্টোটা। ওরা খুবই উইয়ার্ড মনে করে আমাদের সবকিছুতে সেইফ থাকার প্রবণতাকে! নতুন খাবার হোক বা নতুন কোন ব্যাবসা/ক্যারিয়ার আমরা সচরাচর রিস্ক নিতে চাইনা!

মজার ব্যাপার হচ্ছে প্রথম প্রথম আমার কাছে মনে হতো ওরা এমন কেন? কিন্তু অনেকদিন থাকার পরে মনে হতো, আমরা এমন কেন? ওদের মতো সহজ সরলও তো হতে পারত আমাদের জীবনের প্রতিটি স্তর। কেন আমরা সবাই এত আলাদা? এক দুনিয়ার ভেতরে কেন এত দুনিয়া? আমার ব্রাজিলিয়ান বান্ধবী জের মনেও একই সব প্রশ্ন আসত।

সিনিয়ার ইয়ারে তখন আমি, পুরোন হয়ে গিয়েছি। পুরোপুরি এডজাস্টেড। মি: এম এর টি.এ. ছিলাম। জেও সেই ক্লাসে ছিল এবং একবার মি: এমকে মিষ্টি করে প্রশংসার সুরে জিজ্ঞেস করেছিল, "তোমরা কানাডিয়ানরা এত বিনয়ী কি করে? এত বেশি সফ্ট কি করে?" আমার মনের প্রশ্নটাই ও করল এবং আমিও মাথা নাড়লাম কি করে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি আমাকে ক্লাসের দেয়ালে টাঙ্গানো বিশাল ওয়ার্ল্ড ম্যাপটার কাছে নিয়ে গেলেন। ওখানে ইন্ডিয়া এবং চায়না খুঁজলেন। বাংলাদেশও খুঁজতে লাগলেন। ইন্ডিয়ার কাছেই থাকার কথা বিড়বিড় করতে করতে। আমার চোখে পরে গেল, আর দেখিয়ে দিলাম, মাই বাংলাদেশ বলে। জে ব্রাজিল দেখালো। যাই হোক, উনি চায়না ও ইন্ডিয়ার পপুলেশন বললেন। বাংলাদেশেরটা জিজ্ঞেস করলেন এবং জেনে অন্য যেকোন বিদেশীর মতো চোখ কপালে তুললেন। ম্যাপে দেখালেন, "এত ছোট ভূমিতে এত মানুষ। কিন্তু কানাডার এত বড় ভূমিতেও ততটা মানুষ নেই! বিশ্বের একটা বড় অংশই এক প্রান্তে! আর বাকি অংশ খালি! বিশ্বে জনসংখ্যা ওয়েল ডিস্ট্রিবিউটেড না। একদিকে রিসোর্চ পর্যাপ্ত নয়, অন্যদিকে সবকিছু প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি!" ম্যাপ থেকে চোখ সরিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে বললনে, "পথে চলতে গেলে হয়ত তোমরা সবসময় একে অপরের সাথে ধাক্কা খাও। ট্রেইনে, বাসে, চাকরিতে সবখানে নিজের জায়গা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে করে নিতে হয়! ভীরে নোটিশড হতে তো জোরে কথা বলতেই হয়! আমাদের দেশে তা নয়! কোন ভীড়, ধাক্কাধাক্কি, প্রতিযোগিতা নেই, এজন্যেই মানুষজন ঠান্ডা মেজাজের ও বিনয়ী!" উনি নিজের ডেস্কে হেঁটে আসতে আসতে বললেন, "প্রতি দেশের সংস্কৃতি এমনভাবে গঠিত যাতে তারা বেস্ট ওয়েতে সারভাইব করতে পারে। ইটস অল এবাউট সার্ভাইবাল! কিন্তু সবমিলে প্রতি জাতিরই নিজস্বতা আছে, অসাধারণ সব বৈশিষ্ট্য আছে। সেজন্যেই তো পৃথিবী এত রঙ্গিন, ও সুন্দর!" আমি মাথা নাড়তে নাড়তে তন্ময় হয়ে ওনার গোছানো কথা শুনছিলাম যা ততোটা গুছিয়ে লেখার সাধ্য আমার নেই!

মনকথা: আমরা বাংলাদেশীরা কথায় কথায় নিজেদেরকে নিয়ে অনেক অভিযোগ করি। আমরা অলস, লোভী, দূর্নীতিবাজ এই সেই। প্রবাসীর বৈঠক বা দেশীয় চায়ের দোকান সবখানে একটি কথা অনেক শুনি, দেশটার কিছু হবেনা। সবই খারাপ! নিজেদেরকে যদি এতটাই ছোট মনে করি তবে বিশ্ব আমাদেরকে নিয়ে কি ভাববে? নানা দেশ আমাদেরকে সম্মান করেনা কেননা আমরা নিজেদেরকে সম্মান করিনা অনেকসময়। একজন বাংলাদেশীকে অন্য বাংলাদেশীর সম্মান বজায় রাখতে হবে। একটা ভুল অপারেশনে মানুষ মরল, ব্যাস দেশের সব ডাক্তার কশাাই! একটা বিল্ডিং ধসে পরল, সব ইঞ্জিনিয়ার ঘুষখোর! পুলিশেরা সৎ না, শিক্ষকেরা কর্তব্যপরায়ন না। ইত্যাদি ইত্যাদি হাজারো অভিযোগ! সব বাংলাদেশী খারাপ! সবাই!
না! অনেকেই আছেন যারা ভালো কাজও করছেন। রাতের পর রাত জেগে রোগীর সেবা করছেন, ব্রিজ বানাচ্ছেন, বিনামূল্যে ছাত্র পড়াচ্ছেন, উৎসবে পরিবারের থেকে দূরে থেকে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন। আমাদের ভালো গুণগুলো আমাদের অর্জিত, এবং খারাপ দোষগুলো পরস্থিতির শিকার হয়ে আমাদের মধ্যে বিদ্যমান। এতে লজ্জাবোধের কিছুই নেই। আমরা এই পৃথিবীর প্রথম আর শেষ জাতি না যারা পারফেক্ট না। বরং আমরা অন্যসব জাতির মতো ইনপারফেক্ট! আমাদের মধ্যে এমন অনেক ভালো গুণও আছে যা অন্য জাতির মধ্যে দেখা যায়না। আমি বলছিনা যে নিজেদের নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভুগে দোষত্রুটি গুলো এড়িয়ে যেতে। তবে অতিরিক্ত হতাশ না হয়ে, একটি সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখতে হবে! নিজেদেকে নিয়ে লজ্জা বোধ না করে গর্বের সাথে আরো উন্নত জাতিতে পরিণত হতে হবে। মনে রাখতে হবে, ভালো মন্দ সবকিছু মিলে আমরা একটি দেশ! হাজার স্বপ্নের বাংলাদেশ!

শেষ কথা: পশ্চিমিদের আমরা যতটা উদ্ভট মনে করি ওরাও কিন্তু তাই মনে করে আমাদের। নিজ চোখে ওদের সংস্কৃতি দেখা যতটা আনন্দের, ওদের চোখে নিজ সংস্কৃতি দেখাটা তার চেয়েও অনেক মজার। বিদেশীদের এমন হাজারো স্টেরিওটাইপ ও দর্শন রয়েছে আমাদের নিয়ে। সেসব নিয়ে দেখা হবে অন্য কোন পর্বে......

মন্তব্য ৩৯ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৩৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫০

শ্রোডিঙ্গার বলেছেন: হাঃ হাঃ পড়তে পড়তে মজা পাচ্ছিলাম।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৫

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ভীষন আনন্দিত হলাম পড়ে মজা পেয়েছেন জেনে।

পাঠ ও মন্তব্যে ধন্যবাদ।
শুভকামনা!

২| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৫৮

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: ভালো লাগলো, অনেক কিছু জানতে পারলাম।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:০৪

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ভালো লাগায় অনুপ্রাণিত হলাম। ধন্যবাদ সেজন্যে।
অনেক অনেক ভালো থাকুন।

৩| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৩৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: কিন্তু অনেকদিন থাকার পরে মনে হতো, আমরা এমন কেন? ওদের মতো সহজ সরলও তো হতে পারত আমাদের জীবনের প্রতিটি স্তর। কেন আমরা সবাই এত আলাদা? এক দুনিয়ার ভেতরে কেন এত দুনিয়া?

উত্তর আছে নিচের কথাগুলোতে।

"প্রতি দেশের সংস্কৃতি এমনভাবে গঠিত যাতে তারা বেস্ট ওয়েতে সারভাইব করতে পারে। ইটস অল এবাউট সার্ভাইবাল! কিন্তু সবমিলে প্রতি জাতিরই নিজস্বতা আছে, অসাধারণ সব বৈশিষ্ট্য আছে। সেজন্যেই তো পৃথিবী এত রঙ্গিন, ও সুন্দর!"

ধন্যবাদ সামু পাগলা০০৭।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:২১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হেনাভাই! পোস্টে পেয়ে অনেক খুশি হলাম।

জ্বি সেটাই, আমার মনে যতো প্রশ্ন ছিল, সবকিছুর উত্তর অনেক সুন্দরভাবে শিক্ষকেরা সবসময় দিয়ে দিতেন। দে আর বেস্ট!

কষ্ট করে পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
সুস্থ ও সুখী থাকুন সবসময়।

৪| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৫৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাড়িতে বাবা মা তো এশিয়ানই, তারা একরকম চাইতেন। ঝকঝকে রিপোর্ট কার্ড হলেই তারা খুশি, আর কিছু না। আর স্কুলের টিচারেরা অন্যরকম। মার্ক কম হলেও আমরা যেন হাসিখুশি থাকি তাই চাইতেন তারা। দুটোতে ভালোই স্যান্ডউইচড হতাম আমরা .

আহারে,..

উনি নিজের ডেস্কে হেঁটে আসতে আসতে বললেন, "প্রতি দেশের সংস্কৃতি এমনভাবে গঠিত যাতে তারা বেস্ট ওয়েতে সারভাইব করতে পারে। ইটস অল এবাউট সার্ভাইবাল!
যাকে হয়তো দূরদর্শীতায় একটা সুন্দর শেপে রাখা যেত; আমাদের দেশে তা বোঝার মানুষগুলো ক্ষমতার বলয় থেকে বহুদূরে! ফলে রেনডম সিলেকশনে যা প্রকাশীত হচ্ছে তাতেই গড়ে উঠছে দেশৈর ইমেজ!
কান্ট্রি ব্রাডিং কনসেপ্টটাই এখনো যারা বোঝার তারা বুঝেই ওঠেনি!!

আর সখির পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি- অসাম :)

"অনেকেই আছেন যারা ভালো কাজও করছেন। রাতের পর রাত জেগে রোগীর সেবা করছেন, ব্রিজ বানাচ্ছেন, বিনামূল্যে ছাত্র পড়াচ্ছেন, উৎসবে পরিবারের থেকে দূরে থেকে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন। আমাদের ভালো গুণগুলো আমাদের অর্জিত, এবং খারাপ দোষগুলো পরস্থিতির শিকার হয়ে আমাদের মধ্যে বিদ্যমান। এতে লজ্জাবোধের কিছুই নেই। আমরা এই পৃথিবীর প্রথম আর শেষ জাতি না যারা পারফেক্ট না। বরং আমরা অন্যসব জাতির মতো ইনপারফেক্ট! আমাদের মধ্যে এমন অনেক ভালো গুণও আছে যা অন্য জাতির মধ্যে দেখা যায়না। আমি বলছিনা যে নিজেদের নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভুগে দোষত্রুটি গুলো এড়িয়ে যেতে। তবে অতিরিক্ত হতাশ না হয়ে, একটি সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখতে হবে! নিজেদেকে নিয়ে লজ্জা বোধ না করে গর্বের সাথে আরো উন্নত জাতিতে পরিণত হতে হবে। মনে রাখতে হবে, ভালো মন্দ সবকিছু মিলে আমরা একটি দেশ! হাজার স্বপ্নের বাংলাদেশ!"

শতভাগ সহমত।

এখন এই চেতনাটা আমজনতার মাঝে ছড়িয়ে দিতে যে মিডিয়াস্ত্র প্রয়োগ সবচে সহজতর প্রভাবক ছিল- তা নিয়ন্ত্রিত হয় লোভি লোকদের হাতে, পূজির নেগেটিভ চর্চাকারীরা হয়ে উঠেছে মিডিয়া মোঘল! ফলে জাতীয় সংস্কৃতি উন্নয়নের দায়টাই চেতনা থেকে বিলুপ্ত! তাইরে নাইরে না টাইপ যখন যা তখন তা সংস্কৃতি নিত্য তুলে ধরছে জনতার চোখের সামনে! যার অবশ্যম্ভাবী বিষক্রিয়ায় নেগেটিভ চেতনারই বিকাশ ঘটছে অজানিতেই।
ছোট থেকে বড় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো একই কাতারে! ফলে শেখার জায়গাটা খভুই সংকুচিত হয়ে আসছে। যদিনা কোন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা এসে বদলে না দেয়!!!

মুগ্ধতায় বরাবরেরই মতোই এত বেশি মুগ্ধতা এলো দুটো কথা বেশিই লিখে ফেললাম সখির ভরসায় ;)
যতই পড়ি আর মনে হয় - আহা আমাদের শিক্ষানীতি যদি এমন হতো! কি ফাটাফাটি স্কলার সব বেরিয়ে আসত
সুজলা সুফলা সোনার বাংলা থেকে! :)

নিরন্তর শুভকামনা অন্তহীন। :)



১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৩৯

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: সখা! ভালো আছেন আশা করি।

আর সখির পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি- অসাম
ধন্যবাদ সখা। তবে ওটা আমার পসিটিভ দৃষ্টিভঙ্গির চেয়েও বেশি হয়ত ক্ষোভ! আমি নানা দেশের মানুষের সাথে ওঠাবসা করি। অনেকেরই দেশের সার্বিক অবস্থা বাংলাদেশের চেয়ে অনেকগুণ পিছিয়ে। কিন্তু তারা এত বেশি গর্ববোধ করে নিজ জাতি কে নিয়ে, এত স্বপ্ন দেখে নিজ দেশকে নিয়ে যে অবাক হই। আমার দেশ কি দোষ করল? আমরা তো অনেকের চেয়ে উঁচু হয়েও সেভাবে গর্ব বোধ করিনা।

সকল পেশার সব মানুষকেই খারাপ মনে করি। সবকিছু নিয়ে অনেক বেশি স্ট্রেসড থাকি। বিদেশী সংস্কৃতি বিশ্বের সব দেশকেই কাবু করে ফেলেছে কিন্তু হীনমন্নতা আমাদের সবচেয়ে বেশি! জানি না কেন! একবার ভারতের পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ বলেছিলেন, "আমরা বাংঙালিরা যত না গরীব তার চেয়েও বেশি নিজেদের গরীব ভাবতে ভালোবাসি।" আমাদের বাংলাদেশী বাংঙালিদের জন্যেও তা সত্যি। চায়ের দোকানে বা ফেইসবুকে সরকার, মিডিয়া, ডাক্তার, শিক্ষক সবার নিন্দা করতে আমাদের ভালো লাগে। নিজ সচেতনতায় এই প্রাকটিস থেকে সরে আসতে হবে। দ্রুতই!

মুগ্ধতায় বরাবরেরই মতোই এত বেশি মুগ্ধতা এলো দুটো কথা বেশিই লিখে ফেললাম সখির ভরসায় ;)
সখি অনেক খুশি হলো! সময় করে এত বড় মন্তব্যে ভীষন ভীষন অনুপ্রাণিত করেছেন।

সখার জন্যেও অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
ভীষন সুখে থাকুন। ভীষন সুখে!

৫| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:১৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

এ পর্বগুলোতে আমার মনযোগ থাকে সর্বোচ্চ। লেখার সাথে নিজের সমাজের তুলনামূলক বিশ্লেষণ, এটি হলো আপনার লেখার বোনাস পয়েন্ট। তুলনা করলে নিজেদের সমাজের ভালো মন্দ বের হয়ে আসে।

আপনার ইএসএল টিচার সুন্দর বিশ্লেষণ করেছেন। প্রত্যেক দেশই সে দেশের ভৌগলিক ও সামাজিক পরিস্থিতির সাথে মানানসই হয়ে থাকতে যা করা দরকার, যেভাবে থাকা দরকার এবং যেভাবে বেড়ে ওঠে দরকার সেভাবে করে। পরিবেশই বৈচিত্রের কারণ।

বিদেশে গেলে আমাদের ছেলেমেয়েরা একদম গুডি বয়/গার্ল হয়ে যাবার নানাবিধ কারণের মধ্যে একটি হলো, তাদের শিক্ষার জন্য পরিবারের ঐকান্তিক অবদান - ঠিক একটি উদ্দেশ্যে তারা স্বদেশ ছেড়েছে। অতএব কীভাবে পড়াশুনায় অমনোযোগী হয়!

কিন্তু দেশে সেরকমের ডানপেঠে ছেলেমেয়ে আছে, বেশ জোড়ালোভাবেই আছে, যারা পড়াশুনাটাকেই জীবনের উদ্দেশ্য মনে করে না। বরং শৈশবকে উপভোগ করে। শহরের চেয়ে গ্রামে এটি বেশি। এখন অবশ্য সবখানেই কমে যাচ্ছে।


পর্বটি নিয়মিত হোক, এ আশা করছি। শুভেচ্ছা জানবেন :)

১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৪৫

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: এ পর্বে আপনাকে পেয়ে অনেক ভালো লাগল।

আপনি ভীষনই জরুরি একটি পয়েন্ট তুলে ধরেছেন। দেশ ছাড়ার পরে কেমন যেন একটা ম্যাচিউরিটি চলে আসে। ছেলেমানুষিগুলো বাক্সবন্দি হয়। সেটা পরিবারের কারণে, আবার দেশের কারণেও! আমারই যেমন মনে হতো ভুল কোন কথা বা কাজে দেশের রেপুটেশন যেন খারাপ না হয়। পুরো স্কুলে আমিই একমাত্র বাংলাদেশী, আমি যা করব তাই বাংলাদেশকে তুলে ধরবে!
দেশের একটা ছেলে বা মেয়ের সেই চিন্তা থাকেনা। তারা ডানা মেলে দেয়, উড়তে থাকে নিজের মতো করে।

তবে উল্টোটাও হয়, দেশে পরিবার সমাজের ভয়ে অনেক ডিসিপ্লিনড থাকে, এবং বিদেশে গার্ডিয়ান না থাকার কারণে অনৈতিক কিছুতে জড়িয়ে পরে।

আসলে শুধু পরিস্থিতিই মানুষকে ভালো খারাপ করে না, যেকোন পরিস্থিতিকে বিবেচনার ধরণই ভালো খারাপ নির্ধারণ করে।

পাঠ ও অসাধারণ মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা।
শুভকামনা রইল!

৬| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:০৬

প্রামানিক বলেছেন: কিন্তু অনেকদিন থাকার পরে মনে হতো, আমরা এমন কেন? ওদের মতো সহজ সরলও তো হতে পারত আমাদের জীবনের প্রতিটি স্তর। কেন আমরা সবাই এত আলাদা? এক দুনিয়ার ভেতরে কেন এত দুনিয়া?

উত্তর আছে নিচের কথাগুলোতে।

"প্রতি দেশের সংস্কৃতি এমনভাবে গঠিত যাতে তারা বেস্ট ওয়েতে সারভাইব করতে পারে। ইটস অল এবাউট সার্ভাইবাল! কিন্তু সবমিলে প্রতি জাতিরই নিজস্বতা আছে, অসাধারণ সব বৈশিষ্ট্য আছে। সেজন্যেই তো পৃথিবী এত রঙ্গিন, ও সুন্দর!"


হেনা ভাইয়ের সাথে সহমত।

১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:০০

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপনাকে পোস্টে পেয়ে খুশি হলাম প্রামানিক ভাই।

হুমম!

শুভেচ্ছা অশেষ!

৭| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:৪১

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: প্রায় কাছাকাছি আচারগুলি আমিও শিখেছি এই দেশে এসে!! দেশে থাকতে "আর দশজন যেভাবে চলেছে", ব্যতিক্রম ছিলাম না আমিও।। তাহলে কি বলা যায় না , সব আচর-ব্যাবহারই নির্ভর করে কালচার আর সমাজ ব্যাবস্থার উপর?? আমার তো মনে হয়, করে।।

১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:০২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হ্যাঁ নিশ্চই আচার ব্যবহার সমাজ ও সংস্কৃতি নির্ধারণ করে এবং সমাজ ও সংস্কৃতিকে নির্ধারণ করে সেই দেশের আরো নানা ফ্যাক্টর! জনসংখ্যা, অর্থনীতি থেকে শুরু করে নানা কিছু!

পাঠ ও সুন্দর মন্তব্যে ধন্যবাদ।
শুভকামনা!

৮| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:৪৫

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: প্রতিবারের মতো চমৎকার লিখন শৈলীতে পাঠকের কাছে যে ম্যাসেজটি দিচ্ছেন তা অপূর্ব দুই ভিন্নধারার সংস্কৃতির মুখ্য বিষয় গুলোই যে দর্শণগত তা নয় গৌন বিষয়গুলোও আপনার বিশ্লেষনে স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর।

১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৩:৫৫

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: সুজন ভাই! ভীষনই সুন্দর একটি মন্তব্যে অনেক অনুপ্রাণিত করলেন।
আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।
ভীষন ভীষন ভালো থাকুন।

৯| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:০৮

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: খুব আবেগ নিয়ে লেখেন আপনি তা আপনার প্রতিটি লেখা (কানডার স্কুলে একেকদিন) পড়েই বোঝা যায়।
মন দিয়ে পড়লে আপনার লেখার গভীরে ঢুকলে চোখটা মাঝে মাঝে ছল ছল করেই উঠে। দূর দেশে থেকে নিজ দেশকে যে খুব মিস করেন তা আর বলতে।
আমি খুব আবেগ প্রবন মানুষ। তবে একান্তই থাকলেই সেই আবেগ খুব সহজেই মন ছুয়ে যায়।
কারও সামনে থাকলে অত আবেগ আসে না। একা একা একাকিত্তে থাকলেই আবেগ বেশি আসে। হাহা।
আমাদের দেশের মানুষের খারাপ দিকটা সত্যি অনেক বেড়ে গেছে। খারাপটাকেই মানুষ এখন সহজেই মেনে নিচ্ছে সমাজের রিতি হিসেবে।
যেমন এখন সবাই মনে করে টাকা ছাড়া সরকারি চাকরি করা অসম্ভব। আমার এক ভাইয়া ভালই মেধাবী ছিলেন। তবে কখনই সরকারি চাকুরিতে আবেদন করেননি। তিনার ধারনা ছিল টাকা ছাড়া তিনার চাকরি হবে না। টাকা ছাড়া সরকারি চাকরি হচ্ছে এমন লোক এখন এ দেশে হয়তো একটিও খুজে পাওয়া যাবে না। অনেক সময় টাকা দিয়েও চাকরি হচ্ছে না। দল পাওয়ারে না থাকার কারনে।
এমন অনেক উদাহরন দিলে দেওয়া যাবে। অনেক সময় নিজের ভাল হওয়ার ইচ্ছে থাকলেও সমাজের কারনে আমরা ভাল হতে পারিনা।
প্রচলিত সমাজ আমাদের ভাল হতে দেয়না। এ দেশে ভাল কিছুর চেয়ে খারাপের দিকটাই বেশি। সমাজের প্রতিটি রন্ধে রন্ধে এতটাই খারাপ ঢুকে গেছে যে তা থেকে বেরিয়ে আসতে কত বছর লাগবে তা বিধাতা ছাড়া কেউ বলতে পারবেনা। তবে এটা ঠিক সবার আগে আমাদের নিজেকে ভাল হতে হবে। নিজের কাছের মানুষদের ভালর দিকে আনতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা মনটাকে বড় করতে হবে।বুকের ভেতরে যদি আমার আকাশটাকে ধারন করতে পারি তবে এই সমাজ খুব তাড়াতাড়ি একটি সুন্দর সমাজে পরিনত হবে।
ধন্যবাদ সামু পাগলা আপনার এত সুন্দর একটি লেখার জন্য। আপনার এমন একটি লেখার জন্য আপনি ট্রিট পেতেই পারেন।
যদি কোনদিন সুযোগ হয় তবে ট্রিটটা গ্রহন করার অনুরোধ রইল।

১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:০৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: প্রথমেই কৃতজ্ঞতা জানাই এমন সুন্দর আন্তরিক মন্তব্যে। মন ছুঁয়ে গেল কথাগুলো।

লেখার আবেগ কারো মন ছুঁয়ে গেলেই লেখনীর সার্থকতা! ভীষনই অনুপ্রাণিত হলাম আপনার মন্তব্যে। সত্যিই!

জ্বি এসবই হচ্ছে জনসংখ্যার আধিক্য ও প্রতিযোগিতার কারণে। এর জন্য জাতিগতভাবে আমরা খারাপ, আমাদের সমাজ, পরিবার পচে গিয়েছে, আগে অনেক বেটার ছিলাম এসব ভেবে লাভ নেই। আমি অনেক পুরোন সিনেমা, নাটক দেখি, সেখানকার চরিত্রগুলোও এসব কথাই বলে। আজকাল টাকা ছাড়া চাকরি হয় না, দেশটার কিছু হবেনা এই সেই। ৩০ বছর আগের মুভির জাতিগত হতাশার সাথে আজকের অমিল পাই না একটুও। আসলে আমরা দারিদ্র, অধিক জনসংখ্যা, দূর্যোগ সবকিছুর সাথে সেই প্রথম থেকেই লড়াই করে আসছি। নাথিং নিউ এবাউট ইট। এসবে হতাশ না হয়ে এতদিন লড়াই করে বাঁচার গৌরবও থাকা উচিৎ। আর প্রতিকূলতার মাঝেও সৎ হওয়া কঠিন, তবে যদি আমরা সেটা করতে পারি, তবে বিশ্বের সেরা জাতি ও দেশ হবো সবদিক দিয়ে!

ও! সো সুইট! অবশ্যই, ইট উইল বি মাই প্লেজার! মনে থাকল ট্রিটের কথা, সুযোগ পেলেই আপনাকে জানাব। হাহা।

আবারো ধন্যবাদ এত সুন্দর করে মনের আবেগ দিয়ে মন্তব্যটি করায়।
ভীষন ভীষন ভালো থাকুন।

১০| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৩১

জাহিদ অনিক বলেছেন: আমি খুব গুছিয়ে পড়াশোনা করতাম। ফাইনালের এক সপ্তাহ আগেই সব প্রস্তুতি শেষ করে রাখতাম। - কত ভাল স্টুডেন্ট। আঁতেল কোথাকার ! X(

১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:১২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: এই ছ্যামড়া এসেই ঝগড়া শুরু করে দিল! আমি আঁতেল না, তুমি ফাঁকিবাজ ফেলু! সবসময় এক্সট্রা দু চোখ লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায় বিদ্যানের মতো! কিন্তু পড়াশোনার না টিভি দেখার কারণে তোমার এই হাল, সেটা সবাই জানে।

আমাকে রাগের ইমো দাও? কত্ত সাহস! দাড়াও! X( X( X( X( X( X(

হাহা, তোমার দুষ্টুমির বদলে অনেক দুষ্টুমি করে ফেললাম।
ভালো থেকো।

১১| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:০০

উদাস মাঝি বলেছেন: ইয়েস!!
পড়ে ফালাইছি...যা বড় পোস্ট আছিল... :-0
তয় দারুন লিখসেন,ভাল্লাগসে আমার । :)

আপা আমার এডা প্রশ্ন আছিল, আমাগো স্কুলের মতন কানাডা স্কুলেও
কি সকাল সকাল পিটি করায় ? ;)

১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:১৫

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ওহ! কংগ্রাট্স এত বড় লেখা পাঠের প্রাপ্তিতে! হাহাহা।

জ্বি না ওখানে এমন কিছু নেই। যেয়েই ক্লাসে বসে যেতে হয়!

আপনার ভালো লাগা অনুপ্রাণিত করল ভীষনভাবে।
ধৈর্য্য ধরে পাঠ ও মন্তব্য করায় কৃতজ্ঞতা।
শুভেচ্ছা অজস্র!

১২| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:০০

জাহিদ অনিক বলেছেন: আমি ফাঁকিবাজ ও ফেলু সেইটা বুঝতে এতদিন লাগে!তোমার মাথায়ও ঘিলু নাই বোঝা গেলল.

আমার চার চোখ কিভাবে জন্মালো সে কথা থাক।
আর যেভাবেই হোক টিভি দেখে না। আমি টিভি-টুভি দেখ না। সময় হয় না, টিভিও হয় না।
গত ১২ বছর হইল টিভি থেকে ডিটাচড!
তোমার অনুমান দু:খজনক ও হতাশাজনক। এই জন্যি তুমি আঁতেল। এক নম্বর আঁতেল!


২০ শে আগস্ট, ২০১৭ ভোর ৪:৫৩

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ইশ! তুমি যে ফাঁকিবাজ ও ফেলু তাতো কয়েক সেকেন্ড কথায় বা প্রোফাইল পিকচার দেখলেই বোঝা যায়। চেহারায় লেখা আছে বড় বড় করে। এতদিন বলিনি মানে এতদিন বুঝিনি সেটা তোমাকে কে বলল? তোমার তো মাথাই নেই! ফাজিল ছ্যামড়া!

গত ১২ বছর হইল টিভি থেকে ডিটাচড!
এতদিন টিভি দেখো না? তুমি তো বনমানব, সভ্য শহর ছেড়ে বনে গিয়ে থাকো! তখন ল্যাপটপ/কম্পিউটার থেকেও বছরের পর বছর ডিটাচড হয়ে যাবে। গাছের পাতায় মজা করে কবিতা লিখে বেড়াবে। হাহাহা হিহিহি!

তাই? আর তুমি কি? তুমি হচ্ছ এক নাম্বার ফাঁকিবাজ, ফেলু, বনমানব! ;) :D

১৩| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:২৬

জাহিদ অনিক বলেছেন: বনমানব হ্যাঁ বনমানব তো কি ! কি হয়েছে ? বনমানব বলে কি মানব না? নিশ্চয়ই। মানব তো বটেই আমি মহামনব।

বনমানব, মানবের আদি দশা। আদি প্রজাতি। এট লিস্ট সো সাম রেসপেক্ট টু ইউয়র অরিজিনাল স্পিসিস। B-) :-B

কাকে কি বলছি! আঁতেলদের মাথায় এসব ঢুকবে না। B-) ;)

২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৩৮

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: না ফেলু, বনমানব মানব না। ওটা হচ্ছে জংলি জানোয়ার যারা মানুষের মতো দেখতে হয় শুধু। আচার আচরণ না।

মানুষ সভ্য হয়ে আজকের এ পর্যায়ে এসেছে। মানবতাসম্পন্ন হয়েছে। তাই তোমার মতো বনমানবের জায়গা তো সভ্য জগতে হবে না। ফেলু যাও, নিজের লেজসমেত বনে ফিরে যাও। ;) :D

১৪| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৪৫

জাহিদ অনিক বলেছেন:

খেয়েপরে নেই কাজ
নেই কোন লাজ।
এই আমি চললুম,
লেজ নিয়ে দেখলুম,
নাহি দাম,
নাহি কোন কাম।
তাই দিয়েছি ফেলে আপন পুচ্ছ,
আমি জানি সভ্যতা আমি ছাড়া তুচ্ছ ।
নেই লেজ, নেই কোন পুচ্ছ,
আঁতেল তুমি, এইবার বুঝছ ?

২১ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:০৫

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হাহা হিহি! কি লিখেছ এসব? এই ফেলু, এই, তুমি তো বড্ড ফাজিল ছোকরা!

১৫| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:১৮

নিওফাইট নিটোল বলেছেন: ম্যায় কুছ দিন কে লিয়ে গায়েব কেয়া হুয়া, অাপনে তো লেখন কা বাঢ় লাগা দি বেহেনজী #:-S

এমন না যে নতুন পর্বটা দেখিনি- সময়মত দেখেওছিলাম, পড়েওছিলাম......কিন্তু এই অলস অামারও "কমেন্ট ব্লক"-এ ধরেছিল :`> ......তিনটা লেখাই পড়ে ফেলেছিলাম, কিন্তু কমেন্টাইতে ইচ্ছা করতেছিল না অারকি.......মনও বসতেছিল না পুরো লেখায় কেন জানি!!

ফাঁকিবাজ ছাত্রদের হাতে অনেকদিন পরে বই নামক জিনিসটি দেখলাম এবং তারা এটিকে খুলতে জানে দেখে খুবই অবাক হলাম!
ভাগ্যিস অবাক হয়ে জ্ঞান হারান নাই.......কী অবাক করা বিষয় তাই না? ফাঁকিবাজিতে সিরিয়াস পোলাপানেরা বই নিয়ে কেমনে এত্তগুলা সিরিয়াস হয়! অামি বুঝি অাঁতেলদের কষ্ট......অামি অাবার কিছু অাঁতেল অবশ্য দেখেছিলাম ভার্সিটি লাইফে যারা কিনা "ব্রিলিয়ান্ট ফাঁকিবাজ"-দের ভয় পেত, মানে ফাঁকিও যেমন সিনসিয়ারলি দিত, তেমনি মোটের ওপর ৭০% মার্কস তোলার মত পড়াও পড়তে পারত এক রাতে......তো অাঁতেলরা জ্বলে যেত রীতিমত এই অদ্ভুত জাদুকরি ফাঁকিবাজি রেজাল্টে B-)) .......(বিটিডাব্লিউ- অামি কিন্তু অাপনাকে অাঁতেল বলি নাই- অামরাতো জানিই অাপনি সামান্য "পড়ুয়া" ছিলেন =p~ )

তাদের মনে বদ্ধমূল ধারণা আমরা জীবনকে এনজয় করতে জানিনা........আমরা বলতে আমিই শুধু না, চাইনিজ, কোরিয়ান, জাপানিজ কালচার তো আমাদের চেয়েও স্ট্রিক্ট মনে হতো!
বিষয়টা অাসলেই অামাকেও অনেক ভাবিয়েছে একটা সময়......দুই-চারটা মুভীতেো এমন বাস্তবতার চিত্রায়ণ দেখেছি অাগেও......অামাদের এশিয়ান কালচার অামাদের কাজ-পাগল করে তোলে, যতটা না নিজের ইচ্ছায় ততটাই অন্যের চাপে.....অাম্রিকাপ্রবাসী ভার্সিটির ছাত্রদের লেখায়ও পড়েছি যে, ইন্ডিয়ান প্রফেসররা অার কী এমন অানপ্রফেশনাল, চাইনিজ-কোরিয়ানরা তাদেরও বাপ!......মানে ইউরোপ-অাম্রিকান প্রফেসররা হাইলি প্রফেশনাল নাকি- ধরাবাঁধা কাজের সময়ে কাজ, অার উইকেন্ডে শুধুই ছুটি- নো কাজ......কাজের চাপে তো সবকিছুরই ব্যতিক্রম হয়, ইভেন তাঁরাওতো কাজ-পাগল হয়-ই, কিন্তু তারা এসব বিষয়ে চাইল্ডিশ বিহেইভ করে না নাকি.........অার বাকি যাদের উল্লেখ করলাম, তারা পারলে উইকেন্ডেও ল্যাবে অাটকে রাখে- কোন নির্দিষ্ট টাইম লিমিট নেই উইকডেতেও........কাজ অার কাজ.......দেশে অাসার ছুটি চাইলে এমনভাবে তাকায় যেন তাঁদের কিডনি ভিক্ষা চাওয়া হচ্ছে!! অারো অনেক কথা- সবই এভারেজ পরিস্থিতি অারকি এবং পরের লেখা থেকে অামার জ্ঞাত অারকি.......কিন্তু অাসলেই ভাববার বিষয় যদিও পৃথিবী তাতেও সুন্দর ও রঙ্গীন......অামাদের এই সার্ভাইবাল কৌশলটা অামার মনে হয় কনজেনিটাল, হয়তোবা তারও বেশি.......জন্মগতভাবেই সহজাত :D

না! অনেকেই আছেন যারা ভালো কাজও করছেন
হুম অবশ্যই অাছে........অামার বাপেও ছিল- তার নেশা অার চাকরি দু'টোই মিলে গিয়েছিল.......তাকে দেখে কখনো অালাদা করে মনে হয় নাই সে সরকারি চাকরী করে, মনে হইত কাজটাই তার জীবন......যদিও বাপের কাজ-পরিশ্রম-স্বীকৃতি এনজয় করতাম সবসময়ই, গর্বও হয় সেজন্য, কিন্তু সবখানে অাসলে চতুরদেরই শেষ বিজয় লেখা থাকে- লজ্জাবোধটা সেকারণেই অাসে সবার, সাথে অকল্পনীয় তীব্র ঘৃণা!!!.......বোধকরি, সেজন্যই অামি ওমুখো হইনি- অামি একটু বোকাসোকা অার "অামি বুই পাই" :P

ব্লক কাটলে নিয়মিত কমেন্টাব.......রৌদ্রভেজা কিশোরীর রক্তিম গালে ফোটা সৌন্দর্যের শুভেচ্ছা :``>>

২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:২২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: জানতাম পড়েছেন, দেখাও দেবেন, জলদি বা দেরীতে! অপেক্ষা ফুরালো!

"ব্রিলিয়ান্ট ফাঁকিবাজ"-দের ভয় পেত, মানে ফাঁকিও যেমন সিনসিয়ারলি দিত, তেমনি মোটের ওপর ৭০% মার্কস তোলার মত পড়াও পড়তে পারত এক রাতে......তো অাঁতেলরা জ্বলে যেত রীতিমত এই অদ্ভুত জাদুকরি ফাঁকিবাজি রেজাল্টে B-)) .......(বিটিডাব্লিউ- অামি কিন্তু অাপনাকে অাঁতেল বলি নাই- অামরাতো জানিই অাপনি সামান্য "পড়ুয়া" ছিলেন =p~
হাহা! হায়রে ফাজিল! আমি আঁতেল নাআআ! আমি কখনোই হিংসায় জ্বলিনি ফাঁকিবাজ ব্রিলিয়ান্টদের দেখে। আমি পুরো বছর পড়ে যা পেতাম ওরা এক সপ্তাহের মধ্যে তার চেয়ে মাত্র ২৫/৩০% কম কেন পাচ্ছে এটা মনে হতো না। মনে হতো, এত ব্রেইন! আরেকটু যদি খাটত কোথায় না যেত! দুঃখিত বোধ করতাম তাদের জন্যে। সেটা হাই স্কুলের ব্যাপার। এখন অবশ্য এভাবে ভাবিনা। যে যা করে, সে তাই পায়। সেটুকু নিয়েই তাকে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। লাইফ ইজ নট ফেয়ার ফর শিওর, বাট ইটস নট এজ আনফেয়ার এজ উই থিংক!

অারো অনেক কথা- সবই এভারেজ পরিস্থিতি অারকি এবং পরের লেখা থেকে অামার জ্ঞাত অারকি.......কিন্তু অাসলেই ভাববার বিষয় যদিও পৃথিবী তাতেও সুন্দর ও রঙ্গীন......অামাদের এই সার্ভাইবাল কৌশলটা অামার মনে হয় কনজেনিটাল, হয়তোবা তারও বেশি.......জন্মগতভাবেই সহজাত :D
হুম সহমত পোষন করছি। স্টেরিওটাইপ মেজোরিটিকে দেখে বানানো হয়। তবে সব মানুষই নিজের মতো। এভাবে বলা যায় না যে সব বাংলাদেশী এমন হবে বা সব কানাডিয়ান এমন হবে। তবে মানুষ নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে তৈরি করে ফেলে নানা স্টেরিওটাইপ!

আপনার বাবার প্রতি অনেক সম্মান রইল। আসলেই গর্ব করার মতো।
আমার নিজের বাবার ও একই কাহিনী।
জোর যার মুল্লুক তার, এই যে দুনিয়ার নিয়ম! :(

ব্লক কাটলে নিয়মিত কমেন্টাব.......রৌদ্রভেজা কিশোরীর রক্তিম গালে ফোটা সৌন্দর্যের শুভেচ্ছা :``<<

যেসব লেখা পড়েছেন, সবগুলোতে আপনার কমেন্ট চাই। জলদিই ব্লক কাটুক, নইলে কমেন্ট ব্লক কাটানোর কৌশল নিয়ে আবার পোস্ট লিখতে হবে আমাকে। হাহা।
হায়! কি ডায়ালগ! কিশোরি আমি শুনলে তো শেষই হয়ে যেতাম। হাহাহা।

পাঠ ও বরাবরের মতো মারাত্মক সুন্দর মন্তব্যে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
শুভেচ্ছা অজস্র!

১৬| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:০৬

মোঃ জাহিদুল ইসলাম (জিহাদ) বলেছেন: ধন্যবাদ সুন্দর পোষ্টের জন।।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:২৩

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যে আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।

১৭| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:০১

অ্যাপল ফ্যানবয় বলেছেন: অসাধারণ পোস্টের জন্য ধন্যবাদ দেয়া ছাড়া আর কিচ্ছু বলার নেই ।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৩৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: অনেক অনুপ্রাণিত হলাম। ধন্যবাদ।
শুভকামনা রাশি রাশি!

১৮| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৪৯

একাকী পর্যটক বলেছেন: অসাধারণ লেখা । প্রতিটা পর্বই সুখ পাঠ্য ।কত কিছু যে জানা যায় আর কত কিছু যে জানিনা দুটোই আপনার লেখা পড়লে উপলব্ধী করতে পাড়ি । লিখতে থাকুন । কানাডা ভ্রমণ হোক আপনার সঙ্গে ....

৩০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৫৮

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: অনেকক ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্যে আমি ভীষন অনুপ্রাণিত হলাম। মন্তব্যে মনে হলো প্রতি পর্বেই সাথে থেকেছেন। আমার ভ্রমণ সাথী হবার জন্যে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই আপনাকে।

শুভেচ্ছা নিরন্তর!

১৯| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:৫৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: কিছু মনে করবেন না, রিপিটেশন হচ্ছে আগের পর্বগুলোর সাথে। নতুন আঙ্গিক আনুন লেখায়।

৩১ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: না না মনে করার কিছুই নেই। আমি তো বরং খুশি হলাম যে আপনি ফলো করেছেন অনেকগুলো পর্ব এবং মতামত জানিয়েছেন। আসলে সেই একই আমি, একই স্কুল, এজন্যে হয়ত মনে হতে পারে রিপিটেশন। তবে প্রতিদিনের কাহিনীগুলো ভিন্ন। আচ্ছা দেখি কি করা যায়?

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে পাঠ ও মন্তব্যে।
শুভেচ্ছা অজস্র!

২০| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:১৪

অ্যাপল ফ্যানবয় বলেছেন: My E-Mail,



[email protected]

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.