নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কি বলা যায়! কিছু কথায় নিজেকে ব্যক্ত করা সম্ভব না আমার পক্ষে। তাই একটা সিরিজে কিছু কিছু করে সবই বলছি।

সামু পাগলা০০৭

আমি অতিআবেগী, আগে ব্যাপারটা লুকানোর চেষ্টা করতাম। এখন আর করিনা।

সামু পাগলা০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কানাডার স্কুলে একটি ঈদের দিন! প্রবাসের প্রথম ঈদের অভিজ্ঞতা বর্ণন, স্মৃতিচারন! (ঈদ মোবারক সবাইকে!)

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:৪২

ঈদের মতো পবিত্র উৎসবকে সামনে রেখে আমি কানাডায় আমার প্রথম ঈদের অভিজ্ঞতা লিখব।

সাধারনত বাংলাদেশীরা বিদেশে গেলে বড় কোন শহরে নিজেদের জীবন শুরু করে। এতে করে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বেশি হওয়ার পাশাপাশি বড় বড় প্রবাসী কমিউনিটিতে থাকার সৌভাগ্য হয়। কানাডার বড় শহরগুলো বিদেশের মাটিতে এক টুকরো বাংলাদেশ হয়ে যায় কোন উৎসবের গেট টুগেদারে। বাংলাদেশী অনেক পাড়া আছে যেখানে বাংলা সাইনবোর্ড টাঙ্গানো দোকান, রেস্টুরেন্ট, বাজার সব পাওয়া যায়। অন্যদিকে ছোট শহরগুলোতে হয়ত কয়েকটা পরিবার পুরো জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে এবং চেনেও না একে অপরকে ভালো ভাবে। কিন্তু আমার পরিবার ডিসিশান নিয়েছিল ছোট শহরের মানুষের সরলতায় মিশে থাকবে। আমার বাবা মা ছোট শহরেই মানুষ হয়েছিলেন। ছোট শহরের প্রতি তাদের আজন্ম ভালোবাসা থেকেই বাংলাদেশে সবসময় মফস্বলে থেকেছেন। কানাডাতেও তাই করলেন। আমাদের শহরে প্রবাসীর সংখ্যা খুবই কম ছিল। আমি যে স্কুলে পড়তাম সেখানে আমিই একমাত্র বাংলাদেশী স্টুডেন্ট ছিলাম।
অন্য অনেক প্রবাসীর ঈদ গল্পে বাংলাভাষীদের সাথে দাওয়াত, আড্ডা, অনুষ্ঠান সব থাকে। অনেকটা দেশের মতোই। কিন্তু আমার গল্পটা একদম বাংলাদেশী বিহীন ঈদের গল্প হবে। এখন মূল গল্পে চলে যাচ্ছি।

সেবার রোজার ঈদের সময় আমরা গুরুত্বপূর্ণ পারিবারিক কাজে দেশে গিয়েছিলাম এবং স্কুলও বন্ধ ছিল। পুরো রোজার মাস দেশে থেকে ঈদ করে কানাডায় ব্যাক করেছিলাম। বৈদেশে আমার প্রথম ঈদটা তাই কোরবানীর ঈদ ছিল। আমার মনেও ছিলনা ঈদ সত্যি বলতে। দুই দিন আগে মায়ের সাথে কথা বলতে বলতে জানলাম। আসলে পাড়া প্রতিবেশী সব কানাডিয়ান, স্কুলেও কেউ এসব নিয়ে আলোচনা করছে না। একটা কঠিন প্রজেক্টের চাপে বাংলাদেশী পেপার, ব্লগ খুলিনি বেশ কদিন তাই সেভাবে জানতে পারিনি। সবমিলিয়ে মাথা থেকে চলে গিয়েছিল। মা যখন বলল খুব লজ্জা লাগল নিজের ওপরে। অবশ্য জানার পরেও বিশেষ কিছু করার জো ছিলনা। কি আনন্দ করতাম? কার সাথে করতাম?

দেশে হলে মাসখানেক আগে থেকে ঈদ আসছে! ঈদ আসছে! উত্তেজনায় দেশ জুড়ে সাজসাজ রব পরে যেত। বান্ধবীদের সাথে কোন আত্মীয় কি পোশাক দিল তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা। সারারাত দলবেঁধে মেহেদী হাতে দিয়ে গল্প করতে করতে ঘুমানো। সকালে উঠে কার রং সবচেয়ে গাঢ় হয়েছে তা দেখা। কাজিনদের সাথে ঈদের দিন বাজানো হবে এমন গান ঠিক করে জোরে বাজিয়ে প্রতিবেশির সাথে পাল্লা দেওয়া। আগে থেকেই তারাবাতি কিনে রাখা এবং কার ভাগে কয়টা পরবে তার হিসেব করা। কাছের দূরের সকল আত্মীয়ের সাথে দেখা পাওয়া। যেসব কাজিনদের সারা বছর মিস করতাম ঈদের কদিন মনের আনন্দে তাদের সাথে খেলাধূলা করতাম। দিনশেষে কে কত সালামি আদায় করল গোল হয়ে বসে সেই হিসেব করা। আর ঈদ শেষ হলে পরবর্তী ঈদের অপেক্ষা ও স্বপ্ন নিয়ে ঘুমাতে যাওয়া! সবমিলে স্বপ্নের মতোই সুন্দর জীবন আমার।

এবার স্বপ্ন থেকে কানাডার বাস্তবতায় আসি। ঈদের দিন সকালে চোখ খুলেই মায়ের হাতের ঘি দিয়ে রান্না করা পোলাওয়ের সুগন্ধ পেলাম। সেটা দিয়ে ব্রেকফাস্ট করলাম। স্কুলে যাওয়ার আগে মাকে সালাম করলাম। বাবা ঘুমিয়ে ছিল, ঘুমের মধ্যেই সালাম করে স্কুলে দৌড়। জীবনে প্রথমবার ঈদের দিন স্কুল করছি, তাও আবার নরমাল পরিবেশে। কেউ সুন্দর জামা পরে নেই, উৎসবমুখর কোন ভাব নেই। আমার মন আঁকুপাঁকু করছে কাউকে বলার জন্যে যে কি বিশাল এক আনন্দ আজ!
লাইব্রেরীতে গিয়ে আমার ক্লোজ কানাডিয়ান বান্ধবী বি কে পেলাম। বি লম্বা, চিকন চাকন সাদামাটা একটা মেয়ে ছিল। ওর কাছে শেয়ার করলাম আজকে একটা বিশেষ দিন। ঈদের ইতিহাস থেকে শুরু করে সেলিব্রেশন সব বললাম। ও বলল, "ওয়াও, অসাধারন, তুমি খুব মিস করছ না এসব?" আমি অসহায়ের মতো মাথা নাড়লাম। ও আমার হাতে হাত রেখে স্বান্তনা দিল। একটু হালকা লাগল এটা ভেবে যে আমার দুঃখ, সুখ অনুভব করার মতো কিছু মানুষ এখানেও তো আছে! কিন্তু তাতে কি সব বেদনা গায়েব হয়? আরো কিছু হবার ছিল, আর তাই হলো!

আমি ঈদের সেই দিনটির বেশ কিছু আগের ফ্ল্যাশব্যাকে যাচ্ছি। তখন বেশ নতুন। অন্যদের একসেন্ট ভালোই বুঝি, কিন্তু আমার একসেন্ট তখনো কেউ বেশি বোঝে না। এজন্যে বন্ধুহীনই ছিলাম। পড়াশোনার সিস্টেমটা সবে ধরতে শুরু করেছিলাম। তখন থমাস নামের এক ব্যাড বয় এবং তার সাথে আমার শত্রুতা বেঁধে যাবার গল্প বলি।
থমাস ছিল বড়লোক বাবার বিগড়ে যাওয়া সুদর্শন নবাবজাদা। খুব লম্বা, চুল ছোট করে ছাটা, কাটা কাটা চেহারা। তবে আমার কাছে সুদর্শন মনে হতোনা ওর চোখমুখের প্রবল অহংকারী ভাব দেখে। প্রথমবার ওকে খেয়াল করে দেখি যখন ও টিচারের সাথে উদ্ধত আচরণ করছিল। লাভ এট ফার্স্ট সাইট যেমন হয়, তেমন করে আমার হেইট এট ফার্স্ট সাইট হয়ে গেল। মেয়েদের সাথে খুব ফ্লার্ট করে কথা বলত। মাঝেমাঝেই আমার দিতে তাকত। আমার ভিন্ন বেশভুষা ও চুপচাপ থাকাটা ওর কাছে ইন্টারেস্টিং লাগত বোধহয়। একদিন আমার দিকে দুষ্টু হাসি দিয়ে হাত বাড়িয়ে দিল হ্যান্ডশেক করার জন্যে। ওকে পছন্দ হয়না বলে হাত ধরতে ইচ্ছে করছিল না। আমি তাই নিজের হাতটা বাড়িয়ে ওর সাথে না মিলিয়ে, ওর হাতের পাশ দিয়ে কাটিয়ে নিজের কানের কাছ দিয়ে নিয়ে নিলাম। কোনকিছু না ভেবেই এমন একটা দুষ্টুমি করে বসলাম। অন্যসব স্টুডেন্টরা ছোট বিষয়টাতে অসম্ভব এক্সাইটেড হয়ে গেল। ক্লাসের ছেলেগুলো বলল, "ওহো থমাস, শি ক্রাশড ইউ ম্যান!" থমাস আমার মতো নতুন মানুষের এমন দুষ্টুমিতে অবাক হয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে অস্বস্তিভরা হাসিতে অপ্রস্তুত ভাবটা কাটানোর চেষ্টা করতে থাকল। আমি এখনো অবাক হই ভেবে যে এমন কাজ কিভাবে করলাম! এমন দুষ্টুমি করার মতো মানুষ আমি না। আমার উদ্দেশ্য ওকে ছোট করা ছিলও না, আমি ব্যাস কোনভাবে মজার ছলে হাতটা না মেলানোর জন্যে এমন করেছিলাম!
অন্যসবাই ব্যাপারটা ভুলে গিয়েছিল থমাসকে কয়দিন ক্ষেপিয়ে। কিন্তু থমাস ভুলত না। ছোট্ট একটা আকস্মিক মজাকে কেন্দ্র করে নতুন, চুপচাপ, মিইয়ে থাকা মেয়েটি একটা ব্যাড বয়ের ব্যাড লিস্টে পরে গেল!

সেই একই ক্লাসে একদিন সারাহ নামের একটি মেয়ে আসল হুইল চেয়ারে। লম্বাটে ছিমছাম মুখ, চোখে চশমা, হর্সটেইল করে বাধা হালকা ব্রাউন চুল, টিশার্ট প্যান্ট পরত। হুইলচেয়ারটা অনেক আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে পূর্ণ। মেয়েটার শুধু পা না প্রায় পুরো শরীর অবশ মনে হল। মাথাটা শুধু একটু নাড়াতে পারে। একটা ছোট যন্ত্র সেট করা হুইলচেয়ারটায়, সেখানে টাইপ করে করে সব কথা বলে। আমার বয়সী একটা মেয়ের এমন অবস্থা দেখে কতটা খারাপ লেগেছিল তা বলে বোঝানো যাবেনা। মেয়েটা খুব হাসিখুশি ছিল, একটু পরে পরে ঘাড় নাড়িয়ে দাঁত বের করে হাসত। বুকটা ফাঁকা ফাঁকা লাগত তখন। মনে হত কত ছোট বিষয় নিয়ে আমি মন খারাপ করি, আর এই মেয়েটা? চলতে, বলতে পারেনা কিন্তু কী ভীষন প্রানশক্তি!
মেয়েটা কখনো আমাদের ক্লাসে আসত। আবার কখনো স্পেশাল নিডস স্টুডেন্ট মানে ওর মতো যারা কোন দিক দিয়ে স্পেশাল তাদের সাথে ক্লাস করত। দুই ধরণের ক্লাসই ওকে করতে হত। কোন ক্লাস নরমাল বাচ্চাদের সাথে আর কোন ক্লাস স্পেশাল বাচ্চাদের সাথে। ওর সাথে একজন এসিস্ট্যান্ট সবসময় থাকতেন। তিনি ওকে খাইয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে গল্প করা সব করতেন। হুইলচেয়ারটা ও নিজেই সুইচ দিয়ে অপারেট করতে পারত। কিন্তু ও যেন কোথাও ধাক্কা না খায় ভুল স্পিডে সেটা তিনি পিছে পিছে হেঁটে দেখতেন।

ওকে পড়াশোনায় হেল্প করার জন্যে টিচার মাঝেমাঝে আমাকে বলতেন। ওর এসিস্ট্যান্টেরই হেল্প করার কথা কিন্তু তিনি যদি কোন বিষয় না জানতেন তবে সহপাঠী হিসেবে আমারই দায়িত্ব। বন্ধুহীন আমি একা বসতাম বলে আমার পাশে চেয়ার সরিয়ে ওকেই বসানো হতো। আমি ওর সাথে মেশার সময় খুব কশাস থাকতাম যেন আমার সহানুভূতি যেন ওর চোখে না পরে যায়! ওর মতো প্রানবন্ত মেয়ে কারও দয়া চায়না আমি তা জানতাম। আর সত্যি বলতে যে মেয়ে এমন অবস্থাতেও একটু পরে পরে দাঁত বের করে হেসে ওঠে তাকে হিংসে হতো। করুণা নয়। ওকে হেল্প করার জন্যে একটি প্রশ্ন ওকে পড়ে শোনাতে ও বোঝাতে হতো। তারপরে ও নিজের যন্ত্রে টাইপ করত উত্তর। উত্তর ভুল হলে বুঝিয়ে দিতে হতো। ও শুনতে এবং বুঝতে পারত। একদিন ওর সাথে কাজ করতে করতে দেখি এক হাতের বাহু দিয়ে তাবিজ ঝুলে পরছে। টিশার্টের হাতার মধ্যেই থাকত কিন্তু সেদিন একটু ঝুলে দেখা যাচ্ছিল। সাথে সাথে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম তুমি মুসলিম? ও বিশাল হাসি দিয়ে টাইপ করল, "হ্যা।" আমি বললাম কোন দেশের? ও লিখল, "আফগানিস্তান!" আমি ওর চেহারা দেখে ধরতে পারিনি কেননা একদম কানাডিয়ানদের মতো চেহারা ছিল। জানলাম ক্লাস ৩ তে মুভ করেছিল। আমাকে জিজ্ঞেস করল কোন দেশের? আমি বললাম বাংলাদেশের, আমিও মুসলিম। ও আবার ঘাড় নাচিয়ে প্রানখুলে হাসল। নিঃশব্দ হাসিও যে এত প্রানবন্ত হয় কে জানত?
ক্লাসটি শেষ হয়ে যাবার পরে ওর সাথে আর তেমন মেশা হয়নি। খুব ভালো বন্ধু হয়ত হতে পারিনি আমরা। ও কথা বলতে পারতনা, আর আমার ইংলিশ সুবিধার ছিলনা। দুজনেই চুপচাপ থাকতাম। আর ও পুরো সময় ক্লাসে থাকত ও না। এসিস্ট্যান্ট টিচারের লেকচার শেষ হলে এবং ও হোমওয়ার্কটা মোটামুটি বুঝে গেলে ওকে নিয়ে চলে যেতেন। সবমিলে বন্ধুত্ব না হলেও এর কাছাকাছি খুব সুন্দর একটি সম্পর্ক ছিল। স্কুলের যেকোন জায়গায় ওকে চোখে পরলে হাসতাম। ও খুব প্রাণবন্ত হাসি ফিরিয়ে দিত। এভাবে বেশ কিছু সময় চলে গিয়েছে।

ফ্ল্যাশব্যাকে যা বলা জরুরি ছিল তা বললাম। এখন ঈদের দিনে চলে আসি। কানাডায় এক বছরের বেশ কম কিছু সময় কেটে গিয়েছিল। সেই সময়ে আমি মোটামুটি এডজাস্ট করা শুরু করেছিলাম স্কুলে। ক্লোজ বন্ধু কম থাকলেও সবার মুখচেনা হয়ে গিয়েছিল। সবাই আমাকে চিনত। সবার কথা আমি বুঝতে পারি, আর সবাই আমার কথা আগের চেয়ে বেটার বোঝে। মোটামুটি কমফরটেবল পরিস্থিতি। পড়াশোনায় বেশ ভালোই করছিলাম। কিছু কিছু ক্লাস খুব স্বস্তির ছিল বেশি বন্ধু থাকায়। আর কিছু কিছু ক্লাস প্রথমদিনের মতোই অস্বস্তিতে ভরা। আমি ভালো মন্দ মিশিয়ে ছিলাম মূলত।

তেমনই এক সময়ের সোশাল স্টাডিস ক্লাসের কথা বলি। সে ক্লাসে আমার কোন বন্ধু ছিলনা, খুব দুষ্টু স্টুডেন্টদের গ্রুপে পরেছিলাম। ওদের বেশিরভাগই স্মোক করত। মেয়েরা উৎকট মেকআপ করে ক্লাসে আসত। কানাডার স্কুলে এসব নরলাম তবে প্রতি ক্লাসে এমন নমুনা কয়েকটাই দেখা যায়। কিন্তু সেই ক্লাসে বেশিরভাগই অদ্ভুত ছিল। টিচারও প্রথমদিকে সামলানোর চেষ্টা করে করে পরে হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। ওদের সাথে দূরত্ব বজায় রাখতাম। আমার কানাডিয়ান কাউন্সিলর একদিন কথায় কথায় আমি সেই ক্লাসে আছি জেনে বলেছিলেন, "তুমি ঐ শাখায়? মাই গড! টিচার আমাকে বলছিলেন ক্লাসটা কেমন!" কম্পিউটারে সাথে সাথে চেক করে বললেন, "অন্য শাখা সব ফুল, এই ক্লাসেই কয়টা মাসের জন্যে একটু এডজাস্ট করে নিও প্লিজ!" আমি হেসে বললাম কোন সমস্যা নেই। আমার না বলতেই ওনার এত চিন্তা খুব ভালো লেগেছিল আমার। আমি এককোণে বসে পড়তাম, আর ওরা পড়াশোনা ছাড়া বাকি যা যা করা যায় সব করত। সেই থমাস ছেলেটাকে দুর্ভাগ্যবশত প্রায়ই নানা ক্লাসে পেতাম। সেই সোশাল স্টাডিস ক্লাসেও ছিল।

ঈদের দিন এমন স্বাভাবিক ভাবে কাটছিল বলে দেশের জন্যে মনটা খুব নরম হয়ে ছিল। একটু পরে পরে দেশের কথা মনে পরে আর আমি ছলছল চোখের পানি চোখে আটকানোর আপ্রাণ চেষ্টা করি। আমাদের স্কুলে বেশ কজন কাউন্সিলর ছিলেন। একজন কাউন্সিলর ছিলেন মধ্যবয়স্ক কানাডিয়ান। মুখে সবসময় হাসি লেগে থাকত। আমার কাউন্সিলর ছিলেন না, তবে আমাকে দেখলে কেমন আছি জিজ্ঞেস করতেন। খুবই আপন ও আন্তরিক ব্যবহার ছিল আমার প্রতি। সেদিন আমার টিচারের সাথে কি নিয়ে কথা বলতে যেন ক্লাসে এসেছিলেন। কথা বলে চলে যাবার সময় আমার দিকে চোখ পরল। এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন, "কেমন আছ? সব ভালো চলছে তো?" এভাবে কথা বলতে বলতে এক সময় জিজ্ঞেস করলেন, "এখনো কি হোম খুব মিস করো?" হোম বলতে বাংলাদেশ বুঝিয়েছিলেন। আমার এমনিই মন খারাপ ছিল, আর কাকতালীয়ভাবে সেদিনই জিজ্ঞেস করলেন। আমি ছলছলে চোখে বললাম হ্যা। আমার বিমর্ষতায় কষ্ট পেয়ে উনি আমার মাথায় কাছে এসে বাবার মতো করে জড়িয়ে ধরলেন এক হাতে আলতো করে। আর বললেন, "ইট উইল গেট বেটার উইথ টাইম, ডোন্ট বি সো আপসেট মাই ডিয়ার!" ব্যাস ক্লাসের সব ছেলেদের নজর এদিকে! সবাই শিষ দিয়ে, হেই হেই করে অবাক হবার মতো শব্দ করে উঠল!

থমাস বলল, "তুমি তো বলেছিলে তোমার কালচারে ছেলেরা জড়িয়ে ধরেনা। ওনাকে তো কিছু বললে না।" আমি এখন কি বলি? কোনদিকে যাই? একজন বাবার বয়সী টিচার আর এই সমবয়সী ছেলেরা কি এক হলো নাকি? টিচারের এত মমতা ভরা আচরণে মানা করি কিভাবে? ওয়েট ওয়েট, থমাস কি করে জানল এটা? অন্য ছেলেরাই বা শব্দ করে উঠল কেন? সব ছেলেরা আমাকে এবং আমার এইসব ব্যাপার এত নোটিশ করে সেদিন প্রথম জানলাম। কবে কোন ছেলেকে জড়িয়ে ধরতে মানা করেছিলাম, সেটা পুরো স্কুলে ছড়িয়ে গিয়েছে! হায়রে! কানাডিয়ানদেরও কথা ছড়িয়ে দেবার স্বভাব আছে! থমাস ভিলেনের মতো হাসিতে বলে উঠল, "গাইজজজ, শি হ্যাজ ডাবল স্ট্যান্ডার্ডস!" এই বাজে কথায় আমি বিরক্ত চোখে তাকালাম এবং কঠোর গলায় বললাম, "তিনি আমার শিক্ষক, এখানে পরিস্থিতি আলাদা!" আর সেই কাউন্সিলর হেসেই কুটিপাটি পুরো পরিস্থিতিতে। থমাস তার বন্ধুদেরকে উস্কে দিচ্ছে, আর মজা নিচ্ছে। চেহারা দেখে মনে হচ্ছে প্রতিশোধ নিতে পেরেছে! অবশ্য সেদিনই শেষ ছিলনা। কোনদিন আমি ভুলে ওকে বিপদে ফেলে দিতাম আর কোনদিন ও জেনেশুনে আমাকে বিব্রত করত। এসব চলতেই থাকত।

সেই ক্লাস শেষ করে আমি লাঞ্চের সময় বাড়ি যাচ্ছিলাম। মন খারাপ করে ভাবছিলাম, কাউকে ঈদ মোবারক পর্যন্ত বলিনি ঈদের দিনে! সকালে বাবা ঘুমাচ্ছিল আর মায়ের সাথে ফরমালি কখনো ঈদ মোবারক বলা হতো না। সালাম করে জড়িয়ে ধরতাম শুধু। দেশে হলে এতক্ষনে ১০০ জনকে উইশ করে ফেলতাম! এসব মনে করতে করতে যাচ্ছি দেখি স্কুল ক্যাফেটেরিয়াতে আমাদের মতোই তবে একটু অন্য কাটের সালোয়ার কামিজ পরে সারাহ মেয়েটা বসে আছে। ওর এসিস্ট্যান্ট ওকে খায়িয়ে দিচ্ছে। ওর ড্রেস দেখে বুঝলাম ঈদের জন্যে। ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরে কানের কাছে বললাম, ঈদ মোবারক, তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে। ও আমার কাছের বান্ধবী ছিলনা, এভাবরে জড়িয়ে ধরা হয়ত ওড ছিল। কিন্তু ও এমনভাবে হাসল যেন এটাই স্বাভাবিক! ও নিজেও অপেক্ষা করছিল কারও কাছে ঈদ মোবারক শোনার জন্যে! কি ভীষন আনন্দের ঝিলিক দেখেছিলাম ওর চোখেমুখে! এখনো চোখে ভেসে ওঠে পরিষ্কার ভাবে!

শেষের ক্লাসটি শেষ করে বাড়িতে এলাম। সব রিলেটিভদের ফোন করে উইশ করলাম। রাতে ঘুমাতে গেলাম।

আমার একটা স্বভাব হচ্ছে, যত দুঃখ আছে তা রাতে অন্ধকার ঘরে একা একা কেঁদে মেটানোর। এমন মন খারাপ করা ঈদের পরে কান্নাকাটি করার পূর্ণ প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু কাঁদতে গিয়ে মেয়েটার হাসিমুখ মনে পরে গেল! লজ্জা লাগল, ওতো আমার মতোই মন খারাপের ঈদ করেছে। তারপরে অন্যান্য সমস্যা। ওতো প্রানখুলে হেসে যাচ্ছে! আমি অনেক কষ্টে কাঁদলাম না সে রাতে, মনে হল কাঁদলে ছোট হয়ে যাব। আমাকে যা দেওয়া হয়েছে তার প্রতি অকৃতজ্ঞতা দেখানো হবে। দেশের নানা স্মৃতি মনে করে চোখ বারবার ছলছল করছিল আর আমি দাঁতে দাঁত চেপে টপকে পরার আগেই মুছে ফেলছিলাম। যেন সেই মেয়েটার সাথে আমার কোন সুখী থাকার প্রতিযোগিতা চলছে। যেন অন্ধকার ঘরে কেউ দুঃখী আমাকে দেখছে বিদ্রুপের চোখে! সারাহর হাসি মুখটার কথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পরলাম নিজেও জানিনা!

বিশেষ কথা: এ পর্বটা লেখার ইচ্ছে ছিলনা। কেননা ঈদ মানেই আনন্দ। আর আমি আনন্দের কিছুই বোধহয় লিখতে পারিনি। কিন্তু কয়েকজন প্রবাসে ঈদ নিয়ে লেখার কথা আগে থেকেই বলছিলেন। তাই লিখেই ফেললাম। জানি এমন ঈদের গল্প হয়তো সুখপাঠ্য হবেনা অনেকের কাছে। তবে মেয়েটির কারণে শিক্ষনীয় হবে অবশ্যই। মেয়েটি আমার মনে ভীষনভাবে দাগ কেটেছিল। আমি শিওর ও আশেপাশের সবার মনেই প্রভাব ফেলত! মেয়েটা যেখানেই আছে ভালো থাকুক, এমনই প্রানশক্তি নিয়ে সবাইকে বাঁচতে শেখাক!


রিপোস্ট:
ঈদ আসছে বিধায় রোজার ঈদে লেখা পর্বটি রিপোস্ট করলাম। রিপোস্ট করার কারণ দুই। প্রথমত কোরবানীর ঈদের দিনটিই বর্ণিত হয়েছে পর্বে। আর কিছু পাঠক চাইবার কারণে আমি রোজার ঈদের সময়েই কানাডায় আমার প্রথম ঈদের দিনটির কথা লিখেছিলাম। যেটি আসলে কোরবানীর ঈদ ছিল। তো ভাবলাম কোরবানীর ঈদ যখন আসলই কেননা রিপোস্ট করে ফেলি? অন্যকোন ঈদের দিন নিয়েও তো লিখতে পারতাম। কেন লিখলাম না? সত্যি বলতে প্রবাসে ঈদ তেমন ঘটনাবহুল হয়না। অন্যদিন গুলোর মতোই কেটে যায় এবং সেভাবেই অভ্যস্ততাও গড়ে ওঠে। সেই প্রথম ঈদটিই বৈদেশের সবচেয়ে ঘটনাবহুল ঈদ ছিল। সাধারণত রিপোস্ট করতে একদমই পছন্দ করিনা। তবে আজকে করলাম। যারা পড়েননি পূর্বে পড়ার সুযোগ পেলেন! :)
দ্বিতীয় কারণ এই বাহানায় সহব্লগারদের ঈদের অগ্রীম শুভেচ্ছা জানিয়ে দিলাম। সবাই অনেক সুন্দর করে ঈদ করুন। আল্লাহ আপনাদের ভাল রাখুন। জীবনের প্রতিটি দিনই ঈদের মতো আনন্দে কাটান। ঈদ মোবারক! :)

মন্তব্য ৫০ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (৫০) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:৫২

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: আপনাকেও ঈদের অগ্রীম শুভেচ্ছা জানিয়ে দিলাম। =p~

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:৫৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হেই! কতদিন পরে আপনাকে আমার ব্লগবাড়িতে পেলাম! ভীষনই খুশি হয়েছি।
আপনাকেও ঈদের অগ্রীম শুভেচ্ছা। আপনজনদের সাথে আনন্দময় ঈদ কাটান! :)

২| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:৫৪

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: এখন, এই পিচকার জন্য কিছু চকলেট হবে?? :P

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:৫৮

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হাহাহা! এই বুড়ো বয়সে একটা পিচ্চির ছবি প্রোফাইল পিকচারে ঝুলিয়ে নিলেই পিচকা হয়ে যাবেন? এত সহজ! এহ! ;) :D

৩| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:০৬

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: সবাই বলে বয়স বাড়ে, আমি বলি কমে রে, আমি বলে কমে...


সত্যি আমি পিচকা।।। কিপটেমি করে দিবেন না তাই। =p~



যাইগা, অভিমান........... B:-/ B:-/

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:২৩

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ইশ! বয়স কমিয়ে রাখেন যেন ঈদে সালামি না দিতে হয় কাউকে। আর আমাকে বলেন কিপটে!? যান যান, আপনার সাথে কথা নাই! X( ;)

৪| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:২৭

সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন:
ঈদ মোবারক

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:২৯

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপনাকেও ঈদ মোবারক জানাই। অনেক সুন্দরভাবে ঈদ পালন করুন।

৫| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:৩৭

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:
এ ঈদে সালামি দেয়না, কেউ বোকা, ধুক্করি খুকুমনি।.... : কিছু হাড়-হাড্ডি দেওয়া যেতে পারে। তবুও নো অভিমান। =p~


০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৪৮

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপনি কোন ঈদ, উৎসবে সালামি বা টাকা খরচ করেন? করেছেন কখনো? কিপটা কোথাকার! :D

হ্যাঁ, নো অভিমান। ঈদের উৎসবে সব মনোমালিন্য ভুলে সবাই এক হয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিক। সেটাই কামনা!

৬| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৩১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: রি-পোস্ট করে ভালোই করেছ। আমার আগেও পড়া ছিল। তারপরেও আবার সেই ব্যাড বয় থমাস, সারাহ নামের আফগান মেয়েটি এবং পিতৃসম কানাডিয়ান টিচার ভদ্রলোকের ঘটনাগুলো পড়ে একাকিত্বের সাথে তোমার দৃঢ় লড়াইয়ের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও সম্মান আরও বেড়ে গেল। ওয়েল ডান ম্যাডাম।

কোন এক দার্শনিক ( এই মুহূর্তে নাম মনে পড়ছে না ) বলেছেন, যখন কেউ সততার সাথে তার লক্ষ্যে অটল থেকে নিরলসভাবে এগিয়ে যায়, তখন ঈশ্বরসহ সারা বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড তার সাহায্যে এগিয়ে আসে।

এগিয়ে যাও ম্যাডাম। আমরা সবাই আছি তোমার পাশে।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৫২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হেনাভাই আপনার মন্তব্যটি শুধু ব্লগিং এ নয়, জীবনেও সামনের পথ চলায় আমাকে ভীষনই অনুপ্রাণিত করেছে। আমি আসলেই ভাষায় প্রকাশ করতে পারবনা আমার ভালোলাগা। মন্তব্য পড়ে মনে হলো, আপনার হাত আমার মাথার ওপরে আছে! এটা অনেক অসাধারণ একটা অনুভূতি। আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানবেন।

আপনার সুখ ও সুস্থতাই কাম্য!

৭| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:১১

প্রামানিক বলেছেন: পড়ে অনেক কিছু জানা হলো। ধন্যবাদ

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৪

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: কিছু জানাতে পেরে আনন্দিত বোধ করছি।

পাঠ ও মন্তব্যে আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
শুভকামনা নিরন্তর!

৮| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৩৩

ধ্রুবক আলো বলেছেন: ঈদ মোবারক।
শুনলাম এই ঈদে উটের মাংসের বারবিকিউ করবেন!?

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ঈদ মোবারক আপনাকেও!

তাই শুনেছেন? কার কাছে শুনেছেন? আপনারই মতো কোন ফাজিল এসে আপনাকে বলে গিয়েছে নিশ্চই? ;) :D

৯| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৪৮

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

এমা... টমাসের সাথে ঘটনাগুলো না একদম সিনেমাটিক হয়ে গেলো!!! :P

সকল অবস্থায় সকল সীমাবদ্ধতায় কানাডার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটি সুন্দর বাংলাদেশকে আপনি প্রতিনিধিত্ব করেছেন, এই হলো এসম্পর্কিত আপনার যাবতিয় পোস্টগুলো পড়ে আমার অভিমত। আমার মনে হয় অধিকাংশ বাঙালি শিক্ষার্থীকে এ ভারটুকু বহন করতে হয়, যা অত্যন্ত গর্বের।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ঈদ মোবারক!

পড়তে কেমন লেগেছে জানি না। তবে বাস্তবে সিনেমাটিক একদমই ছিলনা। সিনেমায় সব কত রোমান্টিক, রঙিন থাকে থাকে! আর বাস্তব সাদাকালো! ;)

হ্যাঁ ঠিক, দায়িত্বের সাথে গৌরবও আসে! দেশে ভালো করলে যে আনন্দ হয়, বিদেশে তারচেয়ে ডাবল হয়ে যায়। আবার খারাপ করার দুশ্চিন্তাও বেশি! প্রথম ভার্সিটিতে গিয়ে, এক টিচার বলেছিলেন, কোন দেশ থেকে? বললাম বাংলাদেশ। উনি বলেছিলেন, নাইস! বাংলাদেশের স্টুডেন্টরা স্মার্ট হয়! খুবই আনন্দ লেগেছিল আর ভয়ও! আমি যদি ভালো করতে না পারি? হাহা।

যাই হোক, পাঠ ও সুন্দর মন্তব্যে অনেক কৃতজ্ঞতা।
ভীষন ভালো থাকুন।

১০| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৪

জাহিদ অনিক বলেছেন: অগ্রিম ইদ মোবারাক ! B-)

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৩

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: জংলী! তোমাকেও ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা! ধুর, ইদ ভালো লাগে না, আমার ঈদই ভালো! :)
ভালো থেকো!

১১| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:১৫

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: আবার পড়লাম। অগ্রিম ঈদের শুভেচ্ছা, আপু। :)

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৫

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আরেহ ভাইয়ু! অনেক খুশি হলাম দেখে।

আবারো পড়েছ? বাহ! থ্যাংকস আ লট মাই সুইট ভাইয়ু! :)

ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা তোমাকেও, অনেক সুন্দরভাবে ঈদ পালন করো।
ভালো থেকো।

১২| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:২৭

নিওফাইট নিটোল বলেছেন: দুনিয়া বড়ই সৌন্দর্য - উৎসব বড়ই মাধুর্য........স্থান-কাল ভেদে একটু রঙ হারায়-বদলায় অারকি!

টাইটেল দেখে ভিরমি খেয়ে ফেলছি- কী যন্ত্রণা, সিরিজের মধ্যে অাবার সিরিজ কেন? একে তো নতুন টাইটেল অামার কাছে অাজ অবধি অাগেরটার সতীন সমতুল্য, এটা অাবার না জানি কী!! .......তবে কফির সাথে বহুদিন পর ভিরমি খেলাম......স্বাদই অদ্ভুত =p~

অগ্রিম ঈদ মোবারক :-B

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১০

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: মাস্টারসাহেব! ভালো আছেন আশা করি।

হুমম, তবে যাই বলেন আমাদের দেশের উৎসবের ব্যাপারই আলাদা! সবকিছুই রঙিন হয়ে যায়! আমরা মাতামাতি একটু বেশি করি। যেকোন উৎসবই এক মাস ধরে উদযাপন করি। আমাদের দেশের মানুষের উৎসবপ্রিয়তা আমি অনেক এনজয় করি! পশ্চিমে ততটা না! আমার চোখে অন্তত পরেনি।

সতীন? হাহা। একেক মানুষের একেক ভাবনা। আমার কাছে একটি ভুল ছিল, একেকটি ঠিক। একটি অপূর্ণ ছিল, একেকটি পূর্ণ! যাই হোক, এক বিষয় নিয়ে বারবার বলতে ভালো লাগে না।

ঈদের অগ্রিম আন্তরিক শুভেচ্ছা রইল। আনন্দময় ঈদ উদযাপন করুন আপনজনদের সাথে!
ভীষন ভালো থাকুন।

১৩| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:১৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এখানে বা ওখানে
জীবনে যে কোন ক্ষনে
ঈদ হয় ঈদ
যদি মনে রয় প্রীত!

তারুণ্যে লিখেছিল একজনা (পুরােনা ঢাকার এক আত্মীয়া)

ঈদ ও ঈদ নেহী
জিসমে তেরি প্রীত নেহী
প্রীত ও প্রীত নেহী
জিসমে তু কারীব নেহী :)

সেই খুশি খুশি নয়
যে খুশিতে প্রেম নেই,
সেই প্রেম নয়
যে প্রেমে তুমি কাছে নেই।

প্রতিটি ঈদ এলেই ছন্দটা মনে পড়ে। মানুষ যদিও হারিয়ে গেছে। :)

দেশে বা প্রবাসে ঈদ তখনই হয়, যখন প্রিয় মানুষটি কাছে থাকে। :)

ঈদ মোবারক :)
প্রিয় মানুষের সান্নিধ্যে ঈদ হোক আনন্দময়।


০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৩

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ওহো সখা! তারুণ্যের স্মৃতিময় লেখা এখনো সামলে রেখেছেন মনে? ভালো ভালো! ;)

সত্যিই সুন্দর কথাগুলো, আর সঠিকও! কথাগুলো আমার মনেও অনেকদিন ঘুরঘুর করবে!

অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যে এবং সুন্দর কথাগুলো শেয়ারে।
আপনাকেও ঈদ মোবারক জানাই। অনেক আনন্দ করে কাটান ঈদসহ জীবনের প্রতিটি দিন!

১৪| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৫৫

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: আপনি কোন ঈদ, উৎসবে সালামি বা টাকা খরচ করেন? করেছেন কখনো? কিপটা কোথাকার!




আমি বাবা-মায়ের একমাত্র ছোট সন্তান। এখন বুঝেন কি হতে পারে.... :P আর কিপটার অপবাদ দিবেন না। বাউন্ডুলে পোলাপান গুলো কখনো কিপটে হয়না।। :P

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩০

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: বুঝতে পারছি, কিপটামিটা জন্মগতভাবেই অধিকার ছিল আপনার! ;) কিন্তু মনে মনে এতগুলো গার্লফ্রেন্ডু মেইনটেইন করেন, তাদের জন্যে তো কিপটামির অভ্যাসটা ছাড়তে হবে। নইলে সব কল্পনাই থেকে যাবে, বাস্তবিক রূপ কখনোই নেবে না! ;) :D

১৫| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩৯

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: ঠিক কথাই বলিয়াছেন!!! আমি অতীব মুগ্ধ!!! =p~





০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ভোর ৪:০৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপনার অতীব মুগ্ধতায় আমি অতীব আনন্দিত! :)

হাহাহা! ইহা আপনি কি দিলেন! ফানি, রিয়েলি ফানি! আর সত্যিও হয়ত! বোঝা যাচ্ছে আপনার বাস্তব অভিজ্ঞতার শিক্ষাই ছবিটিতে প্রতিফলিত! ;)

দেশে ঈদ পরেই গেল। আবারো জানাই ঈদ মোবারক! :)

১৬| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:০৩

ধ্রুবক আলো বলেছেন: লেখক বলেছেন: ঈদ মোবারক আপনাকেও!

তাই শুনেছেন? কার কাছে শুনেছেন? আপনারই মতো কোন ফাজিল এসে আপনাকে বলে গিয়েছে নিশ্চই? ;) :D
আমি কিন্তু নিরেট একজন শান্ত শিষ্ট ভদ্র মানুষ :)

বার্বিকিউএর কথাটা শুধু ফান করে বলেছি। আপনি কি রাগ করেছেন!?

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:১১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপনাকে একটা কথা আমি বারবার বলতে যেয়ে ভুলে যাই। খেয়াল করেছেন কখনো, আপনার আর আমার দুজনেরই প্রোফাইল পিকচার মাশরাফি ভাইয়ের!? আই জাস্ট লাভ মাশরাফি ভাই! আপনিও নিশ্চই! অবশ্য পুরো বাংলাদেশই ওনাকে ভালোবাসে!

যাই হোক, আপনার মন্তব্যে আসি।

নিরেট একজন শান্ত শিষ্ট ভদ্র মানুষ
এহ! আপনাকে কম দিন দেখছি? আপনি কি আমি ভালোই জানি! হাহা, জাস্ট কিডিং! তবে একটু বেশিই প্রশংসা করে ফেললেন নিজের! ;)

ধুর পাগল ছেলে! আমি এইটুকু ব্যাপারে রাগব কেন? আপনি ফান করতে পারলে আমি পারিনা? পারি পারি, আপনার চেয়ে বেশিই পারি। আমি আবার একজন অশান্ত, দুষ্টু, চঞ্চল মানুষ! হাহাহা।

জোকস আসাইড, ঈদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। আশা করি অনেক সুন্দর একটি দিন কাটাবেন।
শুভকামনা!

১৭| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:০৪

অ্যাপল ফ্যানবয় বলেছেন: ঈদের শুভেচ্ছা রইল । আপনার দিনটি ভালো কাটুক এই কামনা করি । চমৎকার রিপোস্ট ।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৭

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: অনেক পরে উত্তর দিচ্ছি! নানা কারণে এতদিন ব্লগে আসা হয়নি। সরি ফর দ্যাট।

ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা অফুরান! :)

১৮| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:১২

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: সামু পাগলা কেমন আছেন? জানতে চাইছিনা ঈদ কেমন কাটল।আমার ঈদ মোটামুটি ভালই কেটেছে। তবে ভিশন ভাল নয়। ওই আর কি তেমন বড় কোন বিষয় নয়।আপনিই তো বলেছেন,অনেক সময় ছোট-খাটো বিষয়েও মন খারাপ থাকে।
লেখাটি পড়লাম তবে এক টানা কোন লেখা না পড়লে মন ভরে না।অনেক দিন পরে অফিস খুলল তাই কাজের ফাকে ফাকে লেখাটি পড়তে হল।
পড়ে অনেক ভাল লাগল। আপনার জীবন দর্শন খুব প্রখর। যে কোন ঘটনা থেকে আপনি অনেক কিছুই শিখতে পারেন।যা বেশির ভাগ মানুষই পারে না।
আমি আপনার লেখা পড়ে কম বেশি অনেক কিছু শিখেছি।আমার কাছে মনে হয় যে মানুষের জীবন দর্শন যত বেশি ভাল সে জীবনটাকে অনেক বেশি উপভোগ করতে পারে।
সারাহ নামের মেয়েটির কথা শেয়ার করার জন্য আরও একবার আপনাকে ধন্যবাদ।আমরা অনেক সময় অতি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মন খারাপ করি অথচ যা আমাদের জন্য একদম উচিৎ নয়।
লেখাটি আমার পড়া ছিল না। আবারও শেয়ার করলেন বলে পড়তে পারলাম।
একটু ব্যস্ত আছি আজ। অনেক কথা বলার ইচ্ছে থাকলেও বলতে পারলাম না। ভিশন ভাল থাকুন।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:০১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আমি ভালো আছি।

বাব্বাহ এত প্রশংসা! আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানবেন।

নতুন কিছু জানাতে পারলেই লেখাগুলোকে সার্থক বোধ করব।

সারাহ আসলেই অনুপ্রেরণার আরেক নাম। হুইলচেয়ারে বসে থাকা, অবশ শরীরের ওকে যখন প্রাণখুলে হাসতে দেখতাম নিজের দুঃখ কষ্টগুলোকে এত তুচ্ছ মনে হতো যে বলার নয়! ও যেখানেই থাকুক, অনেক ভালো থাকুক।

দেরীতে প্রতিউত্তর করায় আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।
শুভেচ্ছা।

১৯| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৭

বিপ্লব06 বলেছেন: লেখাটা আগের পড়া ছিল। পড়ে কনফিউজড হচ্ছিলাম। ডিসক্লেইমারটা না থাকলে কনফিউজড হয়েই থাকা লাগত। উপরেই কোথাও রিপোস্ট শব্দটা লেখে দিতে পারতেন।

এইবার (গঠনমূলক) সমালোচনা করে গেলাম। বরাবরের মতই শুভকামনা!!!

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:০৭

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: জ্বি একদম ঠিক বলেছেন। লেখার শিরোনামে বা শুরুতে রিপোস্ট শব্দটি লেখা উচিৎ ছিল। আসলে আমি লেখার শেষে মনের কিছু কথা শেয়ার করতে পছন্দ করি। ভেবেছিলাম সেই সময়েই রিপোস্ট, এর কারণ সবকিছু নিয়ে ডিটেইলে বলে দেব। ব্যাস হয়ে যাবে! কিন্তু আমার প্রথমেও বলা উচিৎ ছিল। তাহলে কেউ কনফিউজড হতেন না। মানছি নিজের ভুল। আপনি জিতলেন, আমি হারলাম! :)

এত দেরীতে প্রতিমন্তব্য করার জন্যে দুঃখিত।
শুভকামনা রইল।

২০| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৭

শামচুল হক বলেছেন: অনেক কিছু জানা হলো।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:০৮

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: নতুন কিছু জানাতে পারলেই পোস্ট সার্থক মনে হয়। ধন্যবাদ আপনাকে পাঠে।
শুভেচ্ছা অজস্র।

২১| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:২১

আটলান্টিক বলেছেন: নতুন বছরের শুভেচ্ছা, শুভ নববর্ষ

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:২৪

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপনাকেও নতুন বছরের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। যা কিছু শুভ তার সব ছুঁয়ে থাকুক আপনাকে।

২২| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: নতুন ইংরেজী বছরের শুভেচ্ছা রইল ।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৪২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপনাকে বিশেষ দিনে আমার ব্লগবাড়িতে দেখে অনেক আনন্দিত হলাম।

আপনাকেও নতুন বছরের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। অনেক সুখ ও শান্তিতে কাটুক আপনার নতুন বছরটি!

২৩| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:১৪

জাহিদ অনিক বলেছেন:

হ্যালো কানাডার স্কুল ?? কেমন আছো ?

০১ লা মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হেই অনিক! কেমন আছো?

হাহাহা কানাডার স্কুল! আর তুমি কি? তুমি হচ্ছো কবিতার পাঠশালা! ;)

আছি মোটামুটি ভালোই।

অনেক দেরী হয়ে গেল প্রতিমন্তব্য করতে। নানা ঝামেলায় ব্লগ থেকে দূরে ছিলাম। সরি!
খোঁজ নিতে এসেছ দেখে অনেক ভালো লাগল।

ভালো থেকো।

২৪| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৬

আমি তুমি আমরা বলেছেন: ভাল লেগছে ঈদের স্মৃতিচারণ।

০১ লা মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ভালো লাগায় অনুপ্রাণিত হলাম। ধন্যবাদ।

অনেক দেরীতে প্রতিমন্তব্য করছি। নানা ঝামেলায় ব্লগ থেকে দূরে ছিলাম তো তাই। সরি ফর দ্যাট!

শুভেচ্ছা জানবেন।

২৫| ২৩ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৮

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: কী সামু পাগলা?
এতদিন কোন খবর নাই কেন????

জবাব তোমায় দিতেই হবে???

০১ লা মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৭

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আমার মা অনেক অসুস্থ ছিল তাই সময় করে ব্লগে আসতে পারিনি।

প্রতিমন্তব্যে দেরী হয়ে গেল বহুদিন ব্লগে না আসার কারণে। সরি।
শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.