নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আঁচলের ঘ্রাণে বিমোহিত হতে মনে প্রেম থাকা লাগে। চুলের গন্ধ নিতে দুহাত বাড়িয়ে দেয়া লাগে। হাহাকার থাকা লাগে। দুনিয়া ছারখার হওয়া লাগে। সবাই আত্মা স্পর্শ করতে পারে না।আমার সমস্ত হাহাকার ছারখারে তুমি মিশে আছো।

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার

এক জন নিভৃতচারী

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার › বিস্তারিত পোস্টঃ

এমন বন্ধুত্ব কি আমরা চাই?

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪০


রাস্তাঘাটে, অলিতে কিংবা গলিতে অথবা শপিং মলের সিঁড়িতে কিংবা স্কুলের গেটে দাঁড়িয়ে অনেকেই অপরিচিত মেয়েদের দৈহিক গঠন নিয়ে অনেক বাজে মন্তব্য করে থাকেন। এইসব মন্তব্য করে তারা কি মজা পান তা একমাত্র তারাই ভালো বলতে পারবেন। তাদের মধ্যে অনেকের ধারণা এমন মন্তব্য শুনে অনেক মেয়েই খুশি হয় কিংবা মনে মনে গর্ববোধ করে এই ভেবে যে ছেলেরা তাকে প্রশংসার বন্যায় ভাসিয়েছে। কিন্তু আসলেই কি তাই হয়???
আচ্ছা সে কথায় পরে আসছি। একটু অন্যদিকে যাই। আমি সচরাচর নারী নিয়ে কিছু লিখার সময় কখনো মা বোন টেনে আনি না, কারন এটা আমার কাছে অযাচিত, অহেতুক বা মূর্খতামি মনে হয়। কেননা অন্যকিছু দিয়ে বুঝাতে না পেরে মানুষের সবচেয়ে উইক পয়েন্ট নিয়ে টানাটানি করাটা অশোভনীয়। কিন্তু আজ আমি সেটা করছি। যদি কিছু হয় আর কি!!!
ধরুন আপনি কোন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে বন্ধুদের সাথে নিয়ে মেয়েদেরকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করছেন। এমন সময় একটা মেয়েকে দেখে বলে উঠলেন,”ওয়াও, মাইয়াডার *&ঁ%৳#৳ ব্লা ব্লা। যখন আপনার গলার স্বর শুনে মেয়েটি পেছন ফিরে তাকালো আর তখনই দেখলেন সে আপনার বড়বোন/ছোটবোন। তখন কি হবে আপনার? তখন কি আপনি ভাববেন যে আপনি আপনার বড়বোন বা ছোটবোনকে গর্ববোধ করার মতো উপলক্ষ এনে দিয়েছেন???
যে বড়বোন আপনাকে ছোটবেলা থেকে আদর স্নেহ দিয়ে বড় করলো, যখন আপনি খেতে পারতেন না তখন খাইয়ে দিতো, আপনাকে ঘুম পাড়িয়ে দিতো, আপনি ভার্সিটিতে কিংবা কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সময় আপনার হাতে নিজের জমানো টাকা থেকে কিছু টাকা হাতে দিতো সেই বড়বোন আপনার এই মন্তব্য শুনে কতটা গর্বিত হবে সেটা ভাবতে পারেন????
কিংবা আপনার যে ছোটবোন স্কুলে যাওয়ার সময় আপনার কাছে এটা ওটা আবদার করতো, কিংবা যাকে নিরাপদ আশ্রয় মনে করতো, সে কি আপনার এমন প্রশংসা শুনে গর্বিত হবে???
আপনার বড় বা ছোটবোন কতটুকু গর্বিত হয়েছে সেটা তখন বুঝবেন যখন আপনি বাসায় আসার সাথে সাথে আপনার বোন খুশি হয়ে দরজা খুলবে না, আপনার খাবার কেউ আপনার সামনে এনে দিবে না, খেতে বসলে যার ডাকে আপনি খেতে আসতেন সে খেতে ডাকবে না, কিংবা খাওয়ার সময় যে আপনার সাথে মাছের মাথা কিংবা ডিমের বড় ছোট হওয়া নিয়ে ঝগড়া করতো সে যখন চুপচাপ খেয়ে আপনার সামনে থেকে তাড়াতাড়ি আড়াল হতে চাইবে তখন বুঝবেন সে কতটা গর্বিত হয়েছিলো।
আচ্ছা যান, বোনের কথা বাদ দিলাম। ধরে নিন এটা সেই মেয়ে যাকে আপনি ভালবাসেন। তখন কি হবে যদি দেখে তার বিশেষ একজন তাকে নিয়ে বিশেষ প্রশংসা করেছে তাও আবার তার বন্ধুদের সামনে!!!
আপনার এহেন প্রশংসা শুনে ১০ জনের মেয়ের মধ্যে ৯ জন মেয়ে খুশি হতে পারে, বাসায় গিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে আবেদনময়ী ভেবে বান্ধবীদের সামনে বড় গলায় নিজেকে জাহির করতে পারে, কিন্তু ওই একজন যে আপনার প্রশংসাকে প্রশংসা মনে না করে অপমান মনে করবে সে বাসায় এসে বালিশে মুখ লুকিয়ে কিংবা বাথরুমের আয়নার সামনে দাড়িয়ে কাঁদবে আর সৃষ্টিকর্তার কাছে জবাব চাইবে তাকে এমন করে কেন পাঠানো হলো যার কারনে তাকে অপমানিত হতে হচ্ছে??? আর তার এই জবাব চাওয়াটাই অন্যদের প্রশংসার চেয়ে এতোটাই শক্তিশালী হবে যা মৃত্যুর পরে আপনাকে পদে পদে জবাবদিহিতার সামনে দাড় করিয়ে দিবে। তখন আপনার মন্তব্যকে প্রশংসা মনে করা মেয়েরা আপনার নামে প্রশংসা করবে না। কারন তারা সেটার সুযোগও পাবে না।
বলছি না আমার এই আজাইরা কথা পড়ে প্রতিজ্ঞা করুন যে আমি আর এমন করবো না। শুধু এটাই বলছি,“একবার উপলব্ধি করুন। কারো লিখা পড়ে নিজেকে পরিবর্তন করা যায় না, নিজের উপলব্ধিই নিজেকে পরিবর্তন করে।”
যে বন্ধু আজকে আপনার সাথে বসে অন্য মেয়েকে নিয়ে এমন মন্তব্য করতে পারে, সে আপনার অনুপস্থিতিতে আপনার বোন কিংবা প্রেয়সীকে নিয়ে কি মন্তব্য করতে পারে একবার ভাবুন।
শ্রদ্ধা সবার জন্য, শুধু বোন বলে তাকে শ্রদ্ধা করবেন আর অন্য মেয়ে আপনার বোন নয় বলে তাকে মন্তব্য করবেন আবার আপনার বোনকে অন্য কোন ছেলে এমন প্রশংসা করেছে বলে তাকে তেড়ে মারতে যাবেন, ব্যাপারটা কেমন হয়ে যায় না??
আর যেসব মেয়েরা রাস্তাঘাটে ছেলেদের এমন প্রশংসা শুনে আনন্দিত হন আপনারা পতিতালয়ে না গিয়ে ভদ্র সেজে রাস্তাঘাটে কি করেন???
অন্যকিছু কথা,
বন্ধু সে নয় যে আপনার মুখে সিগারেট তুলে দেয়,
বন্ধু সে যে আপনার মুখ থেকে সিগারেট কেড়ে নিয়ে বলে “দোস্ত, এটা খাইস না।”
বন্ধু সে নয় যে আপনাকে মেয়েদের দেখিয়ে বলে “দোস্ত, দেখ পুরাই মাল”,
বন্ধু সে যে আপনাকে বলে,“দোস্ত, মেয়েটা কিউট আছে। তোর সাথে ভালো মানাবে।”
বন্ধুদের সাথে আড্ডায় বসে এইসব করে “এটা হয়” বলে এড়িয়ে যাওয়াটা খুব সহজ। কিন্তু উপরে বলা এমন ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর “এটা হয়” বলে চালিয়ে নেওয়াটা সহজ নয়।
বন্ধুর জন্য জীবন দিতে পারার মতো বন্ধুর অভাব নেই, কিন্তু সৎ পরামর্শ দেওয়া বন্ধুর প্রচন্ড অভাব।
আপনার সাথে সিগারেট শেয়ার করে আপনার দেহে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুর জন্ম দিয়ে সেই আপনাকেই বাঁচানোর জন্য রক্ত দেওয়ার মতো বন্ধু কি আসলেই বন্ধু??? আপনার সাথে যে সিগারেট শেয়ার করেছিলো সে কি আপনার রোগটা শেয়ার করতে পারবে??
উত্তরটা নিজেই ভেবে নিন!
আমরা বাস্তবিক বা প্রকৃতির স্বাভাবিকতা সহ্য করতে পারি না।
বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষন অনুভব এটা স্বাভাবিক, কিন্তু সেই আকর্ষনকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করাটাই অস্বাভাবিক।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.