নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আঁচলের ঘ্রাণে বিমোহিত হতে মনে প্রেম থাকা লাগে। চুলের গন্ধ নিতে দুহাত বাড়িয়ে দেয়া লাগে। হাহাকার থাকা লাগে। দুনিয়া ছারখার হওয়া লাগে। সবাই আত্মা স্পর্শ করতে পারে না।আমার সমস্ত হাহাকার ছারখারে তুমি মিশে আছো।

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার

এক জন নিভৃতচারী

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার › বিস্তারিত পোস্টঃ

যে যাই বলুক ৭ নভেম্বর দিনটি রাজাকারগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ উৎসবের দিন

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৩


যে যাই বলুক ৭ নভেম্বর দিনটি রাজাকারগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ উৎসবের দিন হলেও আসলে এটি ‘মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস’। ক্ষমতালিপ্সু জিয়াউর রহমান খালেদ মোশাররফসহ বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে ব্যাপক রক্তক্ষয়ের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন। অনেক মুক্তিযোদ্ধা কোরবানি হন এই দিনে আর সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান, জেনারেল এরশাদ এবং তাদের গড়া কথিত রাজনৈতিক দলসহ ৭১’র যুদ্ধাপরাধী-মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো এই দিনটিকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি’ দিবস নামে উৎসব পালন করে আসছে। প্রকৃতপক্ষে বিএনপির জন্মদিন এই ৭ নভেম্বর। না বিপ্লব, না সংহতিÑকোনোটার সাথেই এদের কোনো যোগাযোগ ছিলো না। বরং এরা এই দিনটাকে যুদ্ধাপরাধী-মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তির পুনর্জন্ম দিবস বা ‘ভাগাড় থেকে প্রত্যাবর্তন’ দিবস হিসেবে পালন করলে তবুও সত্যের কাছাকাছি যাবে। আর সাধারণ মানুষ! মুক্তিযুদ্ধের সাথে বেইমানি করলো একজন মুক্তিযোদ্ধা, প্রতারিত হলো জনগণ। এই বিষয়গুলো দেখার পর দিনটি জাতীয় প্রতারণা দিবস হিসেবেও পালন করতে পারেন। মূলত ১৯৭২ সাল থেকে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র কায়েমের লক্ষ্যে কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে প্রতিবিপ্লবীরা সংগঠিত হয়। এরা সেনাবাহিনীতেও একটা বিরাট প্রভাব ফেলে। তারপর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকা-, সামরিক শাসন আর ৩ নভেম্বর জেল হত্যা সংগঠিত হয়। অবশেষে ৩ থেকে ৭ নভেম্বর দ্রুত দৃশ্যপট বদলাতে থাকে। কয়েকজন মেজর আর কর্নেলকে নিয়ে খন্দকার মোশতাক দেশে একটা অরাজকতা চালাচ্ছিলো। এই অবস্থার অবসানের লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধারা খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে একটা প্রচেষ্টা নেয়। কিন্তু জেনারেল ওসমানীর মধ্যস্থতায় মোশতাক আহমদ বেঁচে যায়, কিন্তু জেলে নিহত হন চার নেতা। অন্যদিকে ওসমানীর মধ্যস্থতা মেনে নিয়ে জীবনের সবচেয়ে বড় মূল্যটাও পরিশোধ করেন খালেদ মোশাররফ। নেপথ্যের নায়ক ৭৫’র ৭ নভেম্বরে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ভিতর থেকে যে ঘটনা ঘটেছিল তার প্রকৃত নায়ক ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার লে. কর্নেল আবু তাহের (অব বীর উত্তম। তিনিই এ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং তিনিই বন্দিদশা থেকে জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করেছিলেন; সেই সঙ্গে জিয়াকে ক্ষমতায়ও বসিয়েছিলেন সিপাহী-জনতার স্বার্থরক্ষা করার শর্তে। সিপাহী বিদ্রোহের শুরু এবং জিয়ার মুক্তি রাত ১২টায় সুবেদার মেজর আনিসুল হকের ইঙ্গিতে শুরু হয় সিপাহী বিদ্রোহ। ১২টা থেকেই তাহেরের বিপ্লবী গণবাহিনীর সদস্যরা এবং বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত সিপাহীরা জিয়াকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যে জিয়ার বাসার চারপাশে সমবেত হতে লাগল। জিয়াকে মুক্ত করতে আসা কয়েকটি ইউনিটের মধ্যে মেজর মহিউদ্দীন (আর্টিলারি, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ফাঁসির দ-প্রাপ্ত আসামী) ও সুবেদার মেজর আনিসের নেতৃত্বে টু ফিল্ডের কতিপয় সৈন্য সর্বপ্রথম জিয়ার বাসভবনে পৌঁছায়। অবস্থা বেগতিক বুঝে জিয়াকে পাহারারত ফার্স্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের এক প্লাটুন সৈনিক শুন্যে গুলি ছুড়তে ছুড়তে উল্টো দিক দিয়ে পালিয়ে যায়। গেট খোলার মতো সেখানে উপস্থিত কেউ না থাকায় সৈন্যরা গেট ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ‘জিয়াউর রহমান জিন্দাবাদ, সিপাহী সিপাহী ভাই ভাই’ স্লোগান দিয়ে বেশ কিছু সৈনিক জিয়ার বাসায় ঢুকে পড়ে। তারা জিয়াউর রহমানকে তাদের সাথে নিয়ে যেতে পীড়াপীড়ি শুরু করেন। এক পর্যায়ে মেজর মহীউদ্দীন বলেন, ‘স্যার আমরা আপনাকে নিতে এসেছি, আপনি আসুন’ প্রতিউত্তরে জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমি রিটায়ার্ড করেছি। আমি কিছুর মধ্যে নাই। আমি কোথাও যাব না। আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।’ মেজর মহীউদ্দীন আবার বলেন, ‘আমরা আপনাকে নিয়েই যাব। আমরা আপনাকে আবার চিফ বানাতে চাই। দোহাই আল্লাহর আপনি আসুন।’ এভাবেই জেনারেল জিয়াকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করা হয়। তাহেরের জিয়া দর্শন ও আবদার এদিকে জিয়ার মুক্তির খবরে তাহের পুরো অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব দাবি করলেন এবং পুরস্কারস্বরূপ রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হতে জিয়ার সাথে জিদ ধরলেন। লে. ক. আব্দুল হামিদ লিখেন, ‘জিয়াকে মুক্ত করার কিছুক্ষণ পরেই তাহের টু-ফিল্ড রেজিমন্টে ছুটে আসে। তখন রাত প্রায় ২-৩০ মিনিট। ওই সময় জিয়ার কক্ষে গুটিকয় অফিসার কর্নেল আমিনুল হক, মেজর মহীউদ্দীন, মেজর জুবায়ের সিদ্দীক, মেজর মুনীর, সুবেদার মেজর আনিস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। জিয়া ও তাহের উভয়ে একে অপরকে আলিঙ্গন করলেন। জিয়া বললেন, তাহের তোমাকে ধন্যবাদ, আমাকে বাঁচিয়েছো। তাহের বলল, আপনার সাথে আমার জরুরি কথা আছে। এদিকে আসুন প্লিজ, তাহের তাকে নিয়ে কক্ষের একটি নিভৃত কোনে গেল। বহুক্ষণ ধরে তাদের মধ্যে কথাবার্তা চলতে থাকল। একসময় তাদের মধ্যে বেশ উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় শুরু হল। এক ফাঁকে জিয়া বারান্দায় এসে সুবেদার মেজর আনিসকে কানে কানে বললেন, আনিস ওকে কোনোভাবে সরিয়ে দিন এখান থেকে। সাবধান বহু পলিটিক্স আছে। তাহের জিয়াকে টু-ফিল্ড থেকে বের করে রেডিও স্টেশনে নিয়ে যেতে চাইছিল। জিয়া যেতে রাজি হননি সঙ্গত কারণেই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.