নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আঁচলের ঘ্রাণে বিমোহিত হতে মনে প্রেম থাকা লাগে। চুলের গন্ধ নিতে দুহাত বাড়িয়ে দেয়া লাগে। হাহাকার থাকা লাগে। দুনিয়া ছারখার হওয়া লাগে। সবাই আত্মা স্পর্শ করতে পারে না।আমার সমস্ত হাহাকার ছারখারে তুমি মিশে আছো।

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার

এক জন নিভৃতচারী

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার › বিস্তারিত পোস্টঃ

লজ্জাহয় বড় লজ্জা হয় যারা এই স্ট্যান্ডের নীচে পাকিস্তানের পতাকা হাতে নিয়ে গালে এঁকে নাচানাচি করেন

০২ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:১৬

আজ থেকে প্রায় পয়তাল্লিশ বছর আগের কথা, সেদিন একটা হায়েনা এক কিশোরীর উপর ঝাপিয়ে পড়েছিল! আঘাতে আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে তুলেছিল কিশোরীর দেহটিকে, তার নগ্ন স্তনের পেছনে অপুষ্ট পর্শুকাগুলো ভেঙ্গে যেতে চাইছিল প্রচণ্ড ভারে, হায়েনার আঁচড়ে দু' পায়ের ফাঁক থেকে গড়িয়ে পড়েছিল চার ফোঁটা রক্ত! কিশোরীটি সেদিন তার খুব অনিচ্ছা সত্ত্বেও গর্ভ ধারণ করতে বাধ্য হয়েছিল সেদিন সেই কিশোরীর চার ফোঁটা রক্ত আর প্রচণ্ড অনিচ্ছা সত্ত্বেও সেই হায়েনার রেখে যাওয়া বীজে ধারণ করা গর্ভের অবাঞ্চিত ফিটাসের কান্নায় স্বরে উচ্চারিত হয়েছিল নতুন একটি দেশের নাম, বাংলাদেশ! না, কিশোরীটি সেদিন কোন পাপকে জন্ম দেয় নি! সে মুক্তি দিয়েছিল, আশ্রয় দিয়েছিল একটি উত্তরাধিকারের সূত্র হারানো সত্তাকে! নিজের সবকিছু বিলিয়ে দিয়ে সে সেদিন চার ফোঁটা রক্ত দিয়ে লিখেছিল একটি নতুন জাতির নাম। আর হ্যাঁ, এটাই ছিল তার সবচেয়ে বড় অপরাধ, ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ! বুড়ো হয়ে গেলেও এখনো বেঁচে আছে হায়েনাটা। লোমশ দেহটা এখন সাদা কাপড়ে ঢেকে রাখে ও। সেদিনের সেই অবাঞ্চিত ফিটাস আজ অনেক বড় হয়েছে, ওর গালে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ী, মাথায় কোঁকরা চুল! পাপহীন না হলেও আজো সে রয়ে গেছে অবাঞ্চিত এই বাংলাদেশ-এ! যদিও সে এখনো জানে না, কী তার দোষ! এদেশের একজন বীর সেনানীর সন্তান সে হতে পারে নি, সে হয়েছে এক 'পতিতা'র সন্তান!! সেদিনের সেই কান্নার মূল্য আমরা আজও দিতে পারিনি! সেদিনের সেই কিশোরীটিকে এখনও 'বীরঙ্গনা' বলে ডাকা হয়, সে 'বীরের অঙ্গন'!! তাঁর সেই চার ফোঁটা রক্তের কথা, অসম্পূর্ণ অমরাতে ধারণ করা ফিটাসের ভার সহ্য করবার কথা আমরা ভুলে গেছি খুব সহজেই! তাঁকে 'পতিতা', 'বেশ্যা', 'নটী', 'অসতী' বলতে একটুও বাঁধে না আমাদের! তাঁর যথার্থ পরিচয় আমরা আজও দিতে পারি নি! ইতিহাসের পাতার কোন জায়গায় সেই কিশোরীটির নাম নেই! আর আমরা... ধিক্কার জানাবার ভাষাও জানা নাই! আর কাকেই বা ধিক্কার জানাবো,ইসলামে দেশপ্রেম বলেও একটা কথা আছে। এসব পাকিস্তানিদের হয়ে কথা বলা মানে নিজের দেশকে অপমান করা। আর বললেন না বাবার দোষ আর ছেলের দোষ, যে ছেলে বাবার দোষের জন্য ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্তের কাছে ক্ষমা না চায়, ক্ষতগ্রস্তের হক আদায় না করে সে ছেলেও সমান দোষে দুষ্ট। আপনার আফ্রিদি কেন, আজ পর্যন্ত তাদের পূর্ব, উত্তর কোন পুরুষ ই ক্ষমা চায় নি চাইবেও না, কারন তারা সে ঘটনাটা হালাল মনে করে। ইসলামের নিয়ম কানুনের দোহায় দিয়ে পাকিদের সাপোর্ট করাটা কতিপয় পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত দেশদ্রোহীর ধান্দা ছাড়া আর কিছুই না।
আজাদ বয়েজ ক্লাব নামে একটা ক্লাব ছিল। তার প্রতিষ্ঠাতার নাম ছিল মুশতাক আহমেদ। আর্থিক অনটন থাকার পরেও ক্লাব টা দাঁড় করিয়েছিলেন, প্রচন্ড ক্রিকেট প্রেমী মানুষ
আজ আপনারা ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম দেখে খুব লাফান। এই ক্লাবেই উইকেট কিপার কাম ওপেনার ব্যাটসম্যান ছিলেন সেইরকম আক্রমাণাত্মক একজন। উনার নাম আব্দুল হালিম চৌধুরী জুয়েল। শুধু আজাদ বয়েজ ক্লাবেই না, মোহামেডান আর ইস্ট পাকিস্তান প্রোভেনশিয়াল দলের হয়েও খেলতেন এই ডানহাতি স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান
২৫ মার্চ রাতে গণহত্যায় নিহত হন মুশতাক। উনার লাশ সনাক্ত করেন জুয়েল ২৭ মার্চ। ৩১ শে মে যুদ্ধ করার আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান চুপি চুপি, রুমী , আজাদ এঁদের সঙ্গে। যাবার আগে মা কে ফ্রেমে বাঁধানো নিজের ছবি দিয়ে বলে ছিলেন ‘আমি যখন থাকব না, এই ছবিটাতে তুমি আমাকে দেখতে পাবে ।’
২ নাম্বার সেক্টরে প্রশিক্ষণ নিয়ে "ক্র্যাকপ্লাটুন" গ্রুপ নাম নিয়ে ঢাকায় আসে এই গ্রুপ। এক গেরিলা অপারেশন শেষে নৌপথে ফেরার পথে পাকিদের অতর্কিত আক্রমণে প্রাণে বাঁচলেও তিনটা আঙ্গুল জখম হয় মারাত্মকভাবে।
২৯ আগস্ট বড় মগবাজারে এক বাসায় বিশ্রাম নেওয়ার সময়ে রাজাকার বাহিনীর সহায়তায় জুয়েল ধরা পড়েন, পাকি হানাদাররা তার জখম আঙ্গুল নিয়ে রীতিমত ছেলে খেলায় মেতে উঠে, জোরে মোচড়ায়ে।
রুমীর মত তাঁকেও আর খুঁজে পাওয়া যায় নি। ধারণা করা হয় ৩১ আগস্ট রাতেই রুমী, সুরকার আলতাফ মাহমুদ সহ তাঁকে মেরে ফেলা হয়
আজকের মীরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দুইটা স্ট্যান্ডের নাম "শহীদ মুশতাক" স্ট্যান্ড ও "শহীদ জুয়েল" স্ট্যান্ড। হ্যাঁ , ইনাদের নামেই
লজ্জাহয় বড় লজ্জা হয় যারা এই স্ট্যান্ডের নীচে পাকিস্তানের পতাকা হাতে নিয়ে গালে এঁকে নাচানাচি করেন

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৩২

রানার ব্লগ বলেছেন: লজ্জাহয় বড় লজ্জা হয় যারা এই স্ট্যান্ডের নীচে পাকিস্তানের পতাকা হাতে নিয়ে গালে এঁকে নাচানাচি করে

স্টিক ইট !!!

২| ০২ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৭

আমার চট্টগ্রাম বলেছেন: পাকিদের দিকে তাকাতেও ঘৃণা হয়, পাকিদের সাথে কোনো ধরনের সমযোগতা নয়, এদের সবকিছুই বর্জন করুন, বাংলাদেশ আজ তাই সবল হাতে তাদের গণধোলাই দিয়ে বিজয়ের মাসের শুভেচ্ছা জানাবে বলে আমার বিশ্বাস, সুন্দর লেখার জন্নি আপনাকে অভিনন্দন, যেখানে থাকবেন ভাল থাকবেন এই দোয়া।

৩| ০২ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:১৯

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:০১

মহা সমন্বয় বলেছেন: পাকিস্তানকে পিডায়া দেশ ছাড়া করা হইল =p~
https://www.youtube.com/watch?v=iVe48GDxOFk

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.