নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আঁচলের ঘ্রাণে বিমোহিত হতে মনে প্রেম থাকা লাগে। চুলের গন্ধ নিতে দুহাত বাড়িয়ে দেয়া লাগে। হাহাকার থাকা লাগে। দুনিয়া ছারখার হওয়া লাগে। সবাই আত্মা স্পর্শ করতে পারে না।আমার সমস্ত হাহাকার ছারখারে তুমি মিশে আছো।

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার

এক জন নিভৃতচারী

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার › বিস্তারিত পোস্টঃ

তোমরা যারা লন পরো

০৩ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৫

১৯৭১.... উত্তাল ঢাকা.... গোল টেবিল বৈঠক.... উপস্থিত আছে পৃথিবীর অন্যতম সেরা সেনাবাহিনীর উর্ধতন অফিসাররা। মধ্যমণি ঈয়াহিয়া... পূর্ব পাকিস্তানের নাপাক আদমিগুলারে শায়েস্তা করতে হবে... ঘোষণা দিলো মধ্যমণি, "তিরিশ লক্ষ বাঙ্গালিকে হত্যা কর, তখন দেখবে তারা আমাদের হাত চেটে খাবে।"
২৫শে মার্চ....
দেশের অবস্থা ভালো নাহ। রোজগার পাতি তেমন হচ্ছে না রিকশাচালক কাশেমের। সারাদিনে তেমন আয় হয় নি আজ। সন্ধ্যায় বস্তির খুপড়ি ঘরে ফিরে আসলো। এটাই তার স্বর্গ। পাঁচ বছরের ছোট মেয়েটা গলা জড়িয়ে ধরলো কাশেমের। বৌ আর মেয়েরে নিয়ে ডালভাত খেয়ে ঘুম দিলো কাশেম....
নীলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। এলাকায় মেধাবী ভদ্র মেয়ে বলেই পরিচিত। নীলার একটা বোন আছে। ষোল বছর বয়স। আপুর হল দেখতে যাবে। কি আর করা... আদরের বোনটাকে দুইদিনের জন্য হলে এনেছে নীলা। কাল সকালে আবার ওকে গ্রামে রেখে আসবে। অনেক মজা করলো মেয়েটা। কি সুন্দর মায়া ভরা মুখ নিয়ে ঘুমাচ্ছে মেয়েটা। আবার কতদিন দেখা হবে না নীলার সাথে। নীলা ঘুমন্ত ছোট বোনের মুখটা দেখে আর চোখ ফেটে পানি পড়ে....
অন্তর পোলাটা অনেক চঞ্চল। সারাদিন ভার্সিটিতে দৌড়াদৌড়ি করে রুমে এসেই ঘুম। অন্তরের রুমমেট সজল আবার ভীষন শান্ত। সারাদিন বইয়ের মধ্যে ঢুকে থাকে। সবদিক থেকে আলাদা হলেও দুজনেই মেধাবী। অন্তর ঘুমাচ্ছে আর সজল পড়ছে.....
হঠাৎ কাশেমের ঘুম ভেঙে গেল। মাটি যেন কেঁপে উঠছে। বাইরে শোরগোল শোনা যাচ্ছে। উঠে বাইরে গিয়ে দেখলো আকাশে আলোর মিছিল হচ্ছে!!! হঠাৎ দূরে আগুনের শিখা ভেসে উঠলো। একটা কান্নার আওয়াজ... সবাই ছোটাছুটি করছে... হঠাৎ দুইটা জীপ এসে থামলো কাশেমের বস্তির সামনে। গুলির বৃষ্টি শুরু হলো... কান্না নয় এবার হাহাকার শুরু হলো। কাশেম পালাতে ভুলে গেলো... বুলেট এসে লাগলো বুকের বামপাশে!!! অন্ধকার চারিদিকে। মেয়ে মুখটা দেখবে সে। কিন্তু বেয়নেট এসে ঢুকে গেল বুকের হৃদপিন্ড বরাবর। দুইজন সেনা ঢুকে গেল কাশেমের ঘরে। কাশেমের বউ মেয়েকে পাজা করে কাঁপছে... সাচ্চা ইসলামের বীজ বুনতে হবে... বাচ্চা মেয়েটাকে কেড়ে নিয়ে খাটের পাশে আছাড় মারলো পাক আদমি... একটুখানি রক্ত ছিটকে এলো... এবার বউটা.... কান্নার ধ্বনি উঠলো, একটু পড়েই নিরব.... বেরিয়ে আসলো পাকি আদমি.... জীপার লাগাতে মনে নেই.... জীপারের পাশে একটু রক্ত....
ভয়ে কাপছে নীলা আর নীলার ছোট বোন। বাইরে মেয়েদের আহাজারি। দরজায় কড়াঘাত। খুলবে না নীলা। ভেঙে গেল দরজা। চারটা সাচ্চা পাক আদমি। যেন স্বর্গের দুইটা হূর সামনে। জিহ্বা দিয়ে ঠোট চেটে নিলো একজন। ঝাপিয়ে পড়লো দুইজন। আগে ঠিক করা হয়ে গেছে ছোটটার উপর ঝাপিয়ে পড়বে আকমল আর বড়টার উপরে সালমান। তরুণ সেনা আকমল। কচিমালই লাগবে তার... চোখবেয়ে পানি পড়ছে নীলার উপরে এক সেনা। ছোটবোনের চিৎকারে নিজের কথা মনে নেই তার......
সজল একটু বারান্দায় গিছিলো.... হঠাৎ দূরে কেমন একটা বোমা পড়ার মত আওয়াজ হল। তাদের বিল্ডিংকেঁপে উঠলো। কয়েকটা জিপের আওয়াজ। বুটের মেলানো শব্দ, ছপছপছপ.... অন্তরকে জাগাতে হবে। হামলা করেছে আর্মিরা। মেরে ফেলবে এখনি। হঠাৎ দশ বারোটা গুলি লাগলো সজলের পিঠে... পড়ে গেল মেঝেই... চশমাটা ভেঙে গেল....
মায়ের মুখটা খুব মনে পড়ছে সজলের... মায়ের হাতের আলুভর্তা কি স্বর্গে পাওয়া যায়??? স্বর্গে কি ছোট বোন সকালে ঘুম থেকে ডেকে দেয়??? স্বর্গে কি বাবা পাওয়া যায়??? আমার তন্বীর হাসিটা কি দেখা যাবে স্বর্গে......
বস্তির খুঁপড়ি ঘরের মুখে একটা লাশ পড়ে আছে...খাটের পাশে একতাল মাংসপিন্ড.... খাটের উপরে এক নারী... স্তনটা কেঁটে নেওয়া হয়েছে.... বুকে রক্ত... শেষ পর্যায়ে মনে হয় বেয়নেট গেথে দিছিলো....
হলের রুমটাতে মেঝেতে এক ষোড়শী বালিকা পড়ে আছে.... মুখ থেকে মাংস কাঁটা.... যৌনদ্বারে একটা পর্দার স্টান্ড ঢোকানো.... পাশে লাল রক্ত.... সুন্দর নকশা আঁকা যাবে রক্ত দিয়ে...খাটের উপরে একটা যুবতী। কোন পোশাক নেই গায়ে! স্তন দুটো নেই.... মুখে রক্ত... শেষ সময়ে বেয়নেট দিয়ে যৌনাঙ্গটা ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে....
২০১৬.....
এক আপু মার্কেটে। পছন্দের পাকি লন কিনবে....
ভাইয়া লন আছে?
—আছে। কোনটা???
পাকিস্তানিটা।
—হুম। এইতো।
কি সুন্দর নকশা। একদম মনের মত।
—আপু, এই নকশাতে কি কি দেখছেন???
কেন!!!! চুমকি আর সূতোর অসাধারণ কারুকাজ।
—আমি তো অন্য কিছু দেখি আপু।
আর কি!!!
— এই যে সুতো গুলো দেখছেন। এগুলো ৭১এ আমার মায়েদের গায়ের বস্ত্র থেকে খুলো নেওয়া। তাদের বিবস্ত্র করে এই সুতোগুলো এখানে দেওয়া....
মানে কি!!!
— এই যে চুমকিগুলো দেখছেন এটা আমার মায়ের স্তন আর মাংসপিন্ডে তৈরি। এই যে নকশাগুলো ঠিক এমনই নকশা তৈরি হয়েছিলো আমার মায়ের যৌনাঙ্গে বেয়নেটের খোঁচায়। দেখুন। ভাল করে দেখুন... চোখ বন্ধ করে ফিরে যান পিছনে.... রক্তাক্ত হাতের ছাপ... ষোড়শীর চিৎকার... যুবতীর কান্না, মায়ের বীভৎস লাশ... একতাল মাংসপিন্ড.... এবার দেখুন লনটা।কি দেখতে পাচ্ছেন, এগুলোই তো???
নীরব অশ্রু। তাকাবে না সে লনের দিকে। কি বীভৎস নকশা। ষোড়শীর রক্ত... মায়ের ক্ষতবিক্ষত স্তন... বেয়নেটে খোচানো যুবতীর লজ্জাস্থান!!! তাকাবে না সে... ধরবে না ঐ রক্ত মাখা লন.... বমি পাচ্ছে তার... জোরে কাঁদতে ইচ্ছা করছে..


মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:১৯

আরাফআহনাফ বলেছেন: +++++

২| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৫৭

নেফার সেটি বলেছেন: এটা কার লেখা?

১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:১৩

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: লেখাটা আগে ছিল আমার কাছে,জানতাম না আসলে কার লিখা,এখন জেনেছি ক্রেডিট দিয়ে দিয়েছি,ভুল মার্জনিয়

৩| ১৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৫৩

নেফার সেটি বলেছেন: ঠিক আছে ভাইয়া। আসলে ক্রেডিট না দিলে যখন আমি এই লেখাটা অন্য জায়গায় লিখতাম তখন অনেকে আপনার ব্লগের রেফারেন্স টেনে আনতো। যার ফলে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হত। ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.