নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আঁচলের ঘ্রাণে বিমোহিত হতে মনে প্রেম থাকা লাগে। চুলের গন্ধ নিতে দুহাত বাড়িয়ে দেয়া লাগে। হাহাকার থাকা লাগে। দুনিয়া ছারখার হওয়া লাগে। সবাই আত্মা স্পর্শ করতে পারে না।আমার সমস্ত হাহাকার ছারখারে তুমি মিশে আছো।

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার

এক জন নিভৃতচারী

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্ষন প্রতিরোধ, অসাধ্য কিছু কি?

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:১৮


ধর্ষন নিয়ে মাঝে মাঝে লিখতে ইচ্ছে করেনা।কি হবে লিখে? পুরুষাঙ্গের জোরে ঠিকই তো পার পেয়ে যায় ধর্ষকের দল।
মাঝে যে দুই চারটা ধরা খায়,তারা পত্রিকার পাতায় তিন চারদিন থেকেই গায়েব। পরের অবস্থা কেউ কোনদিন দেখে না। দেখার দরকার হয়না, পত্রিকার দরকার খবর, টিভির দরকার হট কেক নিউজ।ধর্ষকের শাস্তি ঠিক মতো হলো কিনা, এর চেয়ে বড় হটকেক আছে আশে পাশে।সেগুলো নিয়ে ব্যাস্ত থাকে মিডিয়া।মাঝে মাঝে মনে হয় ধর্ষন নিয়ে লিখে আসলে আমরা ধর্ষিতাদের ব্যাঙ্গ করি।
কেন ধর্ষন হচ্ছে? কেন বাংলাদেশে মেয়েরা এতোটা অনিরাপদ?এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গেলে আসলে দিশেহারা হয়ে যেতে হয়।
এতো কারন, এতো জট, যার মাঝে সত্য লুকিয়ে থাকে কোন এক কালো চাদরের আড়ালে। ফলো আপ একটা পোষ্ট লিখতে বসে,
ঘাঁটতে শুরু করলাম ধর্ষন এর ইতিহাস।অনলাইন মিডিয়ার জন্মের পরে যে সব ধর্ষনের ঘটনা এসেছে সেগুলো নিয়েই পড়ছিলাম।
পড়তে পড়তে মাঝে মাঝে শিউরে উঠেছি,একই রক্ত মাংসের মানূষ এতোটা নৃশংস হতে পারে কিভাবে?বরগুনার একটা ঘটনা দিয়ে শুরু করি। ২০১২ সালের ২রা এপ্রিল নিউজে এসেছিলো এটা।নাম ধাম পরিচয় বাদ দিয়ে সোজা কাহিনী তে চলে যাচ্ছি।একদিন এক মেয়ের মা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ নিয়ে যায়,তার মেয়েকে ধর্ষন করেছে তার এক প্রতিবেশী। এরপর চেয়ারম্যান এবং তার
ডান হাত,সেই ছেলেকে রাতের বেলা ডেকে নিয়ে আসে চেয়ারম্যান এর বাড়িতে। বেধড়ক পেটানো হয় তাকে। এরপর চেয়ারম্যান এর সঙ্গী,সেই মেয়েটিকে একটা আলাদা রুমে নিয়ে গিয়ে তাকে উলঙ্গ করে পরীক্ষা করেন। এরপর মেয়েটিকে ধর্ষন করেন। এরপর যখন
মেয়েটা সাংবাদিক দের সামনে মুখ খোলে,জানা যায়, চেয়ারম্যান এর সঙ্গী তাকে ভয় দেখিয়েছিলো প্রতিবেশী কে রেপ কেস এ
ফাঁসানোর জন্য।এই ঘটনার তেমন কোন ফলো-আপ দেখিনি পরবর্তীতে। একজন ইউনিয়ান পরিষদ চেয়ারম্যান এর নাকের নিচে একটা মেয়েকে কৌশলে ধর্ষন করা হলো, এটা নিয়ে চারেদিকে কোন উত্তাপ দেখিনি। উত্তাপ নেই।এরপর আসি ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর
মাসের একটা ঘটনাতে। বরিশালের এক খৃষ্টান মেয়ে বিয়ের পরে স্বামীর যৌতুকের চাপে পড়ে। স্বামী তাকে নিয়মিত মারধোর করতো, এরপর একদিন তাকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। অসহায় সে মেয়ে মা-বাবার কাছে ফেরত আসে। এ সময় স্থানীয় এক যুবক এ অবস্থার সুযোগ নেয়, এরপর তাকে চাকরীর প্রস্তাব দিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসে। একটা বাড়িতে তাকে ১৩ দিন আটকে রেখে ধর্ষন করে সেই যুবক। এরপর পাশের ফ্লাটের এক মহিলার সহযোগীতায় মেয়েটি সেখান থেকে পালিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে। এরপর মামলা করতে গেলে সেই ছেলে তার প্রভাব খাটিয়ে, প্রাননাশের হুমকী দেয়। এরপর মেয়েটা পালিয়ে গিয়ে মামলা করে। কিন্তু স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আমাদের হাতে এখনো নির্দেশ আসে নাই। তাই আমরা কিছু করতে পারছি না। পূর্নিমা রানী শীলের ঘটনার কথা আশা করি কেউ ভূলে যাননি। অসহায় মা বলেছিলো, বাবারা, আমার মেয়েটা ছোট তোমরা একজন একজন করে এসো, মরে যাবে। কতোটা অসহায় হলে,
কতোটা কষ্টে একজন মায়ের মুখ থেকে এরকম একটা বাক্য বের হতে পারে,ভাবতে গেলে বুকটা কেঁপে ওঠে। পরের দিন যখন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি মেয়ে এবং তার মাকে সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত করে, তখনকার দৃশ্য মনে হয় আমাদের
দেখা হৃদয়বিদারক দৃশ্যের লিষ্টে অনেক উপরে থাকবে। একজন অসহায় মায়ের কান্না, একজন অসহায় বাবার মাথা নিচু করে থাকা, একজন ধর্ষিতার বুক ফাটা চিৎকার, কারো কানে যায়না।কারো কানে যায়না।একটা লাইন মনে আছে, এক ইসলামিক ছাত্রনেতা বলেছিলো, এতো মালাউনের মেয়ে।লাইন টা আমার মরার আগ পর্যন্ত মনে থাকবে, এতো মালাউনের মেয়ে।মনে থাকবে আমার।
চলে যাই কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার একটা ঘটনায়। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের ঘটনা এটা। স্থানীয় এক মেয়েকে প্রায় ছয় মাস বাসায়
আটকে রেখে ধর্ষন করে ৫৫ বছর বয়সী এক লোক। মেয়েকে হুমকী দেয় যে সে যদি কাউকে বলে তাহলে তার গলা কেটে ফেলবে। মেয়েটা চুপ করে ছিলো অনেক দিন। এরপর এক পর্যায়ে সে অন্তসত্তা হয়ে পড়ে। তখন দূর্দিনের বন্ধু হয়ে এগিয়ে আসে এক
ইউপি মেম্বার,গোপনে মিমাংসা করতে বসা হয়। কিন্তু সময় মতো গ্রামবাসী টের পেয়ে তাদের ধরে ফেলে। ধর্ষক সম্পর্কে চমকে দেওয়া একটা তথ্য হলো সে এই মেয়ের বোনকে প্রায় ১২ বছর আগে ধর্ষন করেছিলো একই ভাবে। এরপর মেয়ে অন্তস্বত্তা হয়ে পড়লে হয়ে পড়লে স্থানীয়রা মিলে জোর করে সেই মেয়ের সাথে ১২ বছর আগে বিয়ে দেয়। এরপর সন্তান প্রসবের সময় মেয়েটি নবজাত সন্তান সহ
মারা যায়। ঠিক ১২ বছর পরেই তারই বোনকে ধর্ষন করে সে সমাজের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো, আমার পুরুষাঙ্গ আছে,
আমার যা ইচ্ছে আমি করবো। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি,পুলিশের সেই একই বক্তব্য, আমাদের কাছে সুস্পষ্ট কোন অভিযোগ আসলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।এরপরের ঘটনার জন্য আমাদের যেতে হবে রাজশাহীর পুঠিয়াতে। এক বিধবা মহিলা বিয়ে করলেন স্থানীয় ৩৫ বছর বয়স্ক এক মেয়েকে। তখন সেই মহিলার একটি মেয়ে ছিলো প্রথম স্বামীর। মেয়েকে রেখে যান নানীর কাছে। এরপর বিয়ের পরেই নতুন স্বামী মহিলাকে অত্যাচার করতে শুরু করেন, মেয়েকে স্বামীর হাতে তুলে দিতে বলে। এক পর্যায়ে সেই
মহিলা অতিষ্ট হয়ে মেয়ের নানীকে বলে।নানী মেয়েকে অনেক দিন থেকেই নানা ধরনের বাজে ইঙ্গিত দিতো, অনেক কিছু বোঝানোর চেষ্টা করতো। এরপর একদিন সৎ বাবার বাসায় গেলে তাকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে ধর্ষন করে তার সৎ বাবা। এরপর মেয়ে গর্ভবতী হলে তার মায়ের টনক নড়ে, এরপর পুলিশ ধর্ষক সৎ বাবা এবং নানীকে গ্রেপ্তার করে। প্রথম কোন কেসে পুলিশ অ্যাকশনে ছিলো।
২০১২ সালের আরেকটা ঘটনার দিকে আলোকপাত করি। চতুর্থ শ্রেণীতে পরে একটা মেয়ে, বাচ্চা মেয়ে।একদিন শারীরিক শিক্ষা ক্লাসের পড় তাকে ডেকে নিয়ে যায় তার শিক্ষক। স্কুল ভবনের ছাদের নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষন করে। এরপর মেয়েটি চিৎকার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়। মেয়েটি প্রায় উলঙ্গ অবস্থায় দৌড়াতে দৌড়াতে বাসায় গিয়ে বাবা মাকে জানায়। ধর্ষক শিক্ষক ততোক্ষনে পলাতক। বাবা-মা স্কুল কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন, এরপর প্রধান শিক্ষকের কাছে, সেখান থেকে যায় শিক্ষা অফিসার এর কাছে। সব্বাই একটা আশ্বাস বানী দিয়ে যায়, হবে হবে, বিচার হবে। শেষ পর্যন্ত হয়নি।রক্ষক যদি ভক্ষক হয় ,তাহলে সেখানে যাবো কার কাছে আমরা?
বাংলাদেশের কোন এক থানার এক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাহায্য করার কথা বলে ধর্ষন করার অভিযোগ উঠেছে। এক মহিলা আইনী সহায়তা নিতে আসলে তাকে মুরগী এবং মাছ ঘুষ দিতে বলে সেই কর্মকর্তা। এরপর সেই মহিলাকে বলে কষ্ট করে সেগুলো একটু
কেটে দিতে। মহিলা কাটতে বাসার ভেতরে গেলে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষন
করে সেই কর্মকর্তা। এরপর তাকে ছেড়ে দিলে মহিলা বাহিরে থাকা অনেকের কাছে কেঁদে সেই কথা ফাঁস করে দেন। সেই
কর্মকর্তা সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন।কিন্তু যা রটে তার কিছুতো বটে।এতো গুলো ঘটনা কেন লিখলাম? ঘটনা গুলোর মধ্যে কি কমন কিছু চোখে পড়ে? কর্তৃপক্ষের উদাসিনতা কিংবা ক্ষমতাবানের কাছে বিক্রি হয়ে যাওয়া, জোর যায় মুল্লুক তার টাইপের মানসিকতা, যৌতুক সব কিছুই আছে এখানে। কেন?প্রশ্ন করাটা সহজ, উত্তর খুঁজতে গেলে হয়তো কোন জবাব পাওয়া যাবে না, কারন বাংলাদেশে কোন প্রশ্নের জবাব পাওয়ার জন্য ক্ষমতা থাকতে হয়। যার ক্ষমতা আছেম তার প্রশ্নের জবাব আছে, প্রশ্ন তৈরীর অধিকার ও আছে।
এই লেখার পেছনে কয়েকটা কারন চলে আসে সামনে। অনেক ধর্ম পালনকারী মনে করেন এগুলো ধর্মের অনুশাসন না মানার ফল। অনেক বুদ্ধিজীবি মনে করে বৈদেশিক সাংস্কৃতির প্রবেশের ফল। কেউ কেউ এক ধাপ বাড়িয়ে দোষ চাপান ইন্টারনেট এর ওপরে।
কেউবা সোজা দোষ চাপিয়ে দেন মেয়ের ঘাড়েই। মেয়ের চাল চলন ভালো না, মেয়ের পোষাক খারাপ।একটা কথা কেউ বলেনা, বাংলাদেশের ধর্ষনের পেছনে দোষ চাপাতে হলে শতকরা ৮০% দোষ কর্তৃপক্ষের উপরেও চাপানো যায়। তাদের উদাসিনতা,
তাদের সময়মতো অ্যাকশন না নেওয়া এ জন্য অনেকাংশে দায়ী। যদি ধর্ষকদের ধরে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া যায়, তাহলে এর পরিমান কিছুটা হলেও কমবে।কমতে বাধ্য।ধর্মকে নিয়ে অনেকেই অনেক বেশি ত্যানা প্যাঁচান, এই বিষয়ে কিছু না বললেই নয়। ধর্মে অনেক
কথা বলা হয়েছে। ইসলাম ধর্মের খুঁটি হলো কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত। হজ্ব করার সামর্থ্য/বয়স/সময় অনেকের নেই, যাকাত দেওয়ার পরিস্থিতি অনেকের আসেনাই। এই দুইটা সাইডে রাখলাম।যারা ধর্মকে নিয়ে এতো বকবক করেন,তাদের কাছে প্রশ্ন? নামাজ কয় ওয়াক্ত পড়েন? মসজিদে যান কয় বার দিনে?রোজা কয়টা করেন মাসে?পুরুষাঙ্গের আগা কাটা থাকলে আর সূরা ফাতিহা জানলেই মুসলিম হলে ধর্ম গ্রন্থের কি দরকার?ইসলামে আরো হাজারটা বিধি নিষেধ আছে,কয়টা পালন করেন? চান্স পাইলেই চলে আসে একটা বাক্য, পর্দা করলে, ইসলাম মানলে এমন হইতো না। ওয়েল, এই প্রসঙ্গে বলা যায়, বোরখা পড়ে ধর্ষন হয়েছে, এমন রেকর্ড নিতান্তই কম না। সিমেন্টেক ( নরটন অ্যান্টিভাইরাস এর
প্রস্তুতকারী প্রতিষ্টান ) এর একটা প্রতিবেদন এ দেখেছিলাম, পৃথিবীতে পর্ন ভিডিও আপলোড এবং ডাউনলোড এর ক্ষেত্রে প্রথম ১০ এ
পাকিস্তান আছে, প্রথম পঞ্চাশে আছে সৌদি আরব। দুইটাই খাঁটি মুসলিম দেশ, অন্তত তাদের আইন তাই বলে। সিমেন্টেক এর
প্রতিবেদনে ভরসা করা যায়, কারন আজ পর্যন্ত তাদের কোন প্রতিবেদনই খুব বেশি ১৯-২০ হয়নাই। তাহলে এই দুই দেশ
সম্পর্কে আপনার মতামত কি? তাদের তো ইসলামীক আইন অনেক কড়া, সহিহ শরীয়াহ আইন, তাহলে সেখানে পর্ন এর এতো ছড়াছড়ি কিভাবে আসে?প্রশ্নটা থেকে যায়।ধর্মকে ছোট করছি না আমি, ধর্মকে অপমান ও করছি না, স্রেফ বলছি, ধর্ষকের অপরাধ ঢাকার জন্য ধর্মকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করা বন্ধ করুন। ধর্ষন নিয়ে কেউ কিছু বললেই আপনারা ধর্ম নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। অথচ ইসলাম ধর্মে ধর্ষনের ব্যাপারে বেশ কড়া কিছু আইন রয়েছে, যার মধ্যে সম্ভবত পুরুষাঙ্গ কর্তন ও রয়েছে। ( আমি এইটার ব্যাপারে শিওর না, যে সব রেফারেন্স পেয়েছি, খুব গোলমেলে, তাই সম্ভবত বললাম )। স্রেফ ধর্মকে ব্যবহার না করে ধর্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিন,অথবা ব্যবস্থা নিতে সাহায্য করুন।সংস্কৃতি নিয়ে অনেকের ব্যাপক চুলকানী আছে। তারা ক্রমগত দোষ সংস্কৃতিকে দিয়ে থাকেন।
পশ্চিমা সংস্কৃতি নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথার শেষ নেই। পশ্চিমা দেশ গুলো সম্পর্কে তাদের ধারনা অনেকটা এরকম যে,সেখানে রাস্তা ঘাটে পোলাপাইন ন্যাংটা হয়ে ঘোরে, সেক্স করে।কতোটা সত্যি, কতোটা মিথ্যা,সে নিয়ে তর্কে যাবো না, চোখ কান থাকলে নিজেই দেখতে পাবেন। প্রশ্ন হলো,পশ্চিমা দেশের মানুষ অনেক কর্মঠ, তাদের সংস্কৃতিতেও সেটার ছাপ পড়ে,আপনারা সেইটা নিয়ে কথা বলেন না কেন?কে কোনটা গ্রহন করবে, সেটা মানূষের ওপর। যদি কেউ খারাপ টা গ্রহন করে,তাহলে ধরে নিতে হবে সে সেই পরিবেশ এ বড় হয়েছে যেখানে খারাপটাই সামনে এসেছে। ভালো টা গ্রহন করলে ঠিক উল্টোটা।আমাদের দেশের অভিভাবকদের ও অনেক দোষ আছে। তারা কখনোই সন্তানদের সাথে যৌনতা নিয়ে খোলাখুলি ভাবে কথা বলেন না। ধমক-ধামক মার পিট করেই তাদের দিন শেষ হয়না। যারা সন্তানদের অনেক ভালোবাসেন, তাদের মধ্যে অনেকেই এসব নিয়ে আলোচনা করেন না, তারা মনে করেন এসব নিয়ে আলোচনা করলে সন্তান খারাপ হয়ে যাবে। আমাদের মানূষের ব্রেন এমন,যে আমরা নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আকর্ষন বোধ করি বেশি। সেটা যদি আমাদের সামনে খোলা না থাকে, তাহলে সবার ইচ্ছে থাকে সেটা একবার খুলে দেখতে। অজানার স্বাদ সবাই নিতে চায়। এখন যদি আপনার সন্তান এর যৌনতার বিষয়ে ধারনা পরিষ্কার হতো,তাহলে সে জানতো আসলে এটা কি এবং এর খারাপ দিক কি এবং এটার সীমারেখে কি !আজকালকার ছেলে মেয়েরা এসব জানে,শোনে, বোঝে বন্ধুদের কাছ থেকে, ইভেন আমার নিজের কথা বললেও আমি তাই বলবো।বন্ধুদের কাছে এসব প্রথমে শোনে, এরপর সেটা থেকে আসে পর্নোগ্রাফি, ব্যানড সেক্সুয়াল কনটেন্ট, পর্ন বুক বা চটি। এসব দেখে তারা শুধু খারাপ দিকটাই শেখে।তাদের কাছে মনে হয় এই নিষিদ্ধ জগতের স্বাদ তাকে পেতেই হবে। বিয়ে পর্যন্ত
অপেক্ষা করাটা অনেকের কাছে অনেক লং টাইম মনে হয়। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের পতিতালয় গুলোতে সবচেয়ে বেশি যায় স্কুল এবং কলেজ এর ছাত্ররা। যদি বাবা-মার কাছ থেকে ভালোবাসার মাঝে, অন্তত নরম ভাবে এসব শিক্ষা পেতো,তাহলে হয়তো তাদের ধৈর্য্য আরেকটু বাড়তো।পর্নোগ্রাফির জন্য ইন্টারনেট এর ওপর দোষ চাপানোর আগে একবার মনে হয় অভিভাবক এর দিক থেকে যৌন
শিক্ষা পাওয়ার কথা ভাবা উচিৎ। কারন ইন্টারনেট কে ঠেকানো সম্ভব নয়। প্রযুক্তিকে ঠেকিয়ে কোন জাতি উন্নত হতে পারে না। ফলে একে উন্মুক্ত রাখতে হবে। তাই পর্নোগ্রাফির জন্য চীন সরকারের মতো আলাদা সফটয়্যার প্রকল্প হাতে না নিয়ে অভিভাবকরা যদি এগিয়ে আসেন,এই সমস্যার অনেকটাই সলভ করা সম্ভব।সাম্প্রতিক কালে ঘটে যাওয়া ধর্ষন এর কথা আমি ইচ্ছে করেই আলোচনার
বাহিরে রেখেছি। কারন এগুলো সম্পর্কে কমবেশি সবাই জানেন।আমি এর প্রতিরোধ এর দিকে আসতে চাচ্ছি।ধর্ষিতাদের কথা বার বার বলে তাদের অপমান করতে চাই না,উপরে কয়েকটা ঘটনা লিখে কয়েকজনের কাছে দোষী হয়েছে এরই মধ্যে।এখন যা লিখবো, অনেকেই আমার কল্লা ফেলে দেওয়ার জণ্য খাড়া হয়ে যেতে পারেন। আরেকটা বিষয় নিয়ে সকলেই চিৎকার করে, ছেলে মেয়ের
অবাধ মেলামেশা। একটা সহজ ষ্ট্যাটিক্টিক্স এ যাই, আজ পর্যন্ত যতোজন ধর্ষক এর খোঁজ পাওয়া গেছে তাদের কয়জন বয়েজ স্কুলে পড়তো আর কয়জন কম্বাইন্ড স্কুলে পড়তো? খোঁজ নিয়ে দেখেন একটু।আমি এই লেখাটা লেখার আগে এটা নিয়ে পড়তে গিয়ে প্রায় ধর্ষন নিয়ে ২০০ টা ব্লগ পোষ্ট / নিউজ পড়লাম।ধর্ষকদের বেশিরভাগ কোন না কোন বয়েজ স্কুলের/ অশিক্ষিত নাহলে অল্প বয়সেই
শিক্ষার পাট চুকিয়েছে। আমি আমার অর্ধেকের বেশি জীবন পড়েছি বয়েজ স্কুলে,শেষের দিকে কম্বাইন্ড এবং কলেজ ছিলো কম্বাইন্ড। যখন বয়েজ স্কুল ছেড়ে আসলাম কম্বাইন্ড স্কুলে, তখন মেয়েদের সাথে মেলা মেশার ব্যাপারে জড়তা কাজ করলো। যখন সেটা কেটে গেলো, তখন মেয়েদের সাথে মিশতে কোন সমস্যা হয়নি। তখন আড্ডা ঠাট্টা, মারামারি সবই চলতো,কিন্তু কোনদিন বান্ধবীদের নিয়ে খারাপ কিছু মাথায় আসেনি, কারন সেই পরিবেশ টা তেমন ছিলো না।অবাধ মেলামেশা বলতে আপনি কি বোঝাচ্ছেন,সেটাই প্রথম আলোচনার বিষয়।একটা ছেলে আর মেয়ের ওপেন সেক্সকে আপনি অবাধ মেলামেশা বলছেন?সেক্ষেত্রে আমি আপনার সাথে একমত।
আপনি কি একটা ছেলে আর মেয়ের হাত ধরে হাঁটাকে অবাধ মেলামেশা বলছেন?তাহলে দুঃখিত, একমত হতে পারলাম না।
একটা মেয়ের প্রতি একটা ছেলের অনুভূতি,কিংবা একটা ছেলের প্রতি একটা মেয়ের অনুভূতি, এগুলো জৈবিক বিষয়, এগুলো সৃষ্টির
শুরু থেকেই আছে। একে ভালোবাসা, প্রেম বলে। একে আপনি আইন করে, বকা দিয়ে,গালি দিয়ে, মারধোর করে আটকাতে যাবেন? ফল হবে উলটো, কারন আগেই বলেছি, নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আমাদের আকর্ষন বেশি। আপনার সন্তান কোথায় যাচ্ছে, কার
সাথে মিশছে সেটার খোঁজ রাখুন। সময় নাই বলে অজুহাত দিয়ে লাভ নেই, সময় বের করুন। যদি খারাপ কারো সাথে মেলামেশা করে,
তাকে বোঝান, কেন সে খারাপ,কি কি কারনে তাকে এড়িয়ে চলতে হবে,তার সাথে থাকলে কি কি ধরনের ক্ষতি হতে পারে, সেই ক্ষতির
জীবনে কি প্রভাব ফেলবে সেটা তাকে ভালো ভাবে বোঝান,প্রমান সহ বোঝান, সে বুঝবে।বাবা মা হিসাবে এটা আপনাদের কর্তব্য।
এরপর দেখুন, সে একটা মেয়ের সাথে রিকশায় হাত ধরে বসে আছে, কিন্তু সে সেটাকে ক্ষতিকর কোন কিছুতে পরিনত করবে না, কারন আপনি তাকে বুঝিয়েছেন কোনটার খারাপ দিক কি।বাবার শিক্ষা দেয়া একটা জিনিস আমার আজও মনে আছে,উনি আমাকে খেলনা গাড়ি এনে দিয়ে বলতেন ভাঙ্গো, তার অনুমতি নিয়ে ভাঙ্গতাম, এর দেখতাম ভেতরে কি আছে। এরপর থেকে খেলনা জিনিস ভাংচুর করার প্রতি আগ্রহ কমে যায়, কারন আমি অলরেডি জানি এর ভেতরে কি আছে,সেটা বুঝি না, কিন্তু জানি। এটা তখন নিষিদ্ধ নয়,আমাকে অনুমতি দেওয়া হয়েছিলো।এসব ধাপ ধর্ষনকে অনেক কমিয়ে দেবে কারন শৈশবের/ কৈশরের যে বীজ থেকে এই ধরনের বিকৃত
চেতনা মানূষের মনে আসে, সেখানেই যদি আপনি আঘাত করতে পারেন,সেটাকে যদি আপনি সুন্দর করে ভালোবাসার সাথে ঢেকে দিতে পারেন, ঠিক করে ফেলতে পারেন, তাহলে ধর্ষন কমে যাবে কারন ধর্ষন করবে কে?আইন-সমাজ কে কিছুই বলার নেই। কারন এরা সব সময় হাতের পুতুল কারো না কারো।টাকা নয়তো ক্ষমতা। মাঝে মাঝে কিছু সচেতন মানূষ হাত তোলেন, প্রতিবাদ করেন,একটা সময় ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।তাকে সহযোগীতা করার মানুষের বড় অভাব।যারা মানসিকতা আসলেই বিকৃত, তাদেরবলার কিছু নাই। এদের জন্য আইন আরো বেশি কঠোর করা উচিৎ।জেলে ঢোকানোর আগেই কয়েকটা বাড়ি দিয়ে দিলে সব ঠান্ডা হয়ে যাবে। অমানবিক কথা বলছি?ধর্ষিতা মেয়েটার চোখের পানি দেখেছেন? এরপর নিজেই বললেন কোনটা মানবিক, কোনটা অমানবিক?
[কারো অপছন্দ হলে কিছুই করার নেই,আমি শুধু আমার দৃষ্টি ভঙ্গীটা তুলে ধরলাম ]

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:২০

বিজন রয় বলেছেন: কোন কালে সম্ভব না। যতদিন মানুষ আছে।

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৫৯

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: কি সম্ভব না?

২| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৬

ইকবাল হোসাইন সুমন বলেছেন: ভাল পর্যবেক্ষণ

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৫৯

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৩

আমিই মিসির আলী বলেছেন: ধর্ষনের পরই ধর্ষন সম্পর্কে জানা যায়।
ঘটনা তারপর নানা শাখা বিস্তার করে।
এত শাখায় যাওয়ার কি দর্কার!

ধর্ষক ধরা খাওয়ার সাথে সাথে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এমন কঠিন শাস্তি দিতে হবে যেন ভবিষ্যতে আর কোন ধর্ষক তৈরি হতে না পারে।
অন্যথায় এসব ধর্ষন বন্ধ হবে না।

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:০২

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: আপনার সাথে শাস্তি প্রদানের বিষয়ে একমত,আবার এটাও ঠিক আমাদের গোড়া থেকে তা প্রতিরোধ করতে হবে।সমস্যা না জানলে সমাধান সম্ভব নয়

৪| ৩১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:২৬

চিন্তক মাস্টারদা বলেছেন: আমার মনে হয় না ভাই, এই ধর্ষণগুলীর বিচার ৪৫ বছরের ভেতর হবে!
যেখানে ৭১ এর ধর্ষণের বিচার হচ্ছে ৪৫ বছর পর, সেখানে এই বিচারগুলা মনে হয় না আমার ধর্ষিতা বোন দেখে যেতে পারবে!

৩১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ২:১২

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: আপনার মত আমারও হতাশা আছে তবে প্রতিবাদ করতে হবে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ,ইয়াসমীন হত্যার কথা নিশ্চই ভালে জান নি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.