নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আঁচলের ঘ্রাণে বিমোহিত হতে মনে প্রেম থাকা লাগে। চুলের গন্ধ নিতে দুহাত বাড়িয়ে দেয়া লাগে। হাহাকার থাকা লাগে। দুনিয়া ছারখার হওয়া লাগে। সবাই আত্মা স্পর্শ করতে পারে না।আমার সমস্ত হাহাকার ছারখারে তুমি মিশে আছো।

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার

এক জন নিভৃতচারী

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও একটি হালকা কৌতুক

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:১৩

কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডক্টর কামদা প্রসাদ সাহা এবং ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডক্টর শারমিন সুলতানা বলছেন, ২-৫% ময়নাতদন্তে মৃত্যুর নির্দিষ্ট কারণ পাওয়া যায় না।
কথা সত্যি।
তা যেই তনু মারা গেছেন ২০ মার্চ বা তারও আগে, তার ময়নাতদন্ত যদি আজকে করেন, তাইলে ২-৫% ক্যানো, ৯৯% সম্ভাবনা আপনি মৃত্যুর কারণ কিছুই খুঁইজা পাবেন না। যা পাইতে পারেন, তা হইলো আপনার মদ গাঞ্জা ও এল-এস-ডি খাইয়া ফরেনসিক সায়েন্স পাশ করার জাল সার্টিফিকেট।
আমি একজন ফরেনসিক সায়েন্টিস্ট। কিন্তু ফরেনসিক সায়েন্স না পড়লেও শিক্ষিত মানুষজন টিভিতে ক্রাইম সিরিজ দেইখা ও থ্রিলার নভেল পইড়া জানেন, ভ্যাজাইনা এবং (ইজাকুলেশানের প্রমাণ পাওয়া না গেলে) আন্ডারওয়্যার থিকা রক্ত, সিমেন এবং/অথবা থুতুর “সোয়াব” সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ধর্ষণের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সংগ্রহ ও নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও আর্দ্রতায় স্টোর করার কথা। রক্তের টক্সিকলজি রিপোর্টে দেরি হইলে সমস্যা নাই, কিন্তু লাশ কবর দেওয়ার আগেই তা করতে হবে।
ধর্ষণ (বা সম্ভাব্য ধর্ষণ) কেইসে প্রথমেই আপনার সিমেন কনফার্মেটরি টেস্ট করার কথা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রাথমিকভাবে ‘এ্যাসিড ফসফেট’ পরীক্ষার মাধ্যমে এই টেস্ট করা হয়। অত্যন্ত সহজ টেস্ট, একদমই ব্যায়বহুল না, এমনকি বাড়িতে বইসা যেকোনো কাপড়ে প্রোটিন সনাক্ত করার জন্য আপনি এই টেস্ট করতে পারেন। সিমেন অর্থাৎ প্রোটিনের অস্তিত্ব পাওয়া গেলে তখন আপনি রাপিড স্টেইন আইডেন্টিফিকেশানের মাধ্যমে কনফার্মেটরি টেস্ট এবং সেইখানে পসিটিভ রেসাল্ট পাইলে পরবর্তীতে ডি-এন-এ প্রোফাইলিং এর মত ব্যায়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ পরীক্ষায় যাইতে পারেন। তার আগে না।
মেয়েদের ভ্যাজাইনায় ইজাকুলেশানের পর ‘নন-মোটাইল’ স্পার্ম সাত দিন পর্যন্ত টিকা থাকতে পারে। ভ্যাজাইনার এ্যাসিডিক পরিবেশের কারণে ‘মোটাইল’ স্পার্ম মাত্র চার থিকা ছয় ঘন্টা বাঁইচা থাকে ভ্যাজাইনাল ক্যানালে। তবে ‘নন-মোটাইল’ স্পার্ম দিয়াও ধর্ষক সনাক্তকরণ সম্ভব। মানে যদি আপনার ইচ্ছা থাকে, তাইলেই। এমনকি পুরুষের ভ্যাসেকটমি করা থাকলে বা বাইরে ইজাকুলেশান হইলে বা ইজাকুলেশান না হইলে ও কনডম ব্যাবহার হইলেও ফ্লুরোসেন্স ইন সিটু হাইব্রিডাইজেশান (ফিশ)-এর মাধ্যমে ভ্যাজাইনাতে পুরুষের ‘এপিথেলিয়াল সেল’ ধর্ষণের তিন সপ্তাহ পরেও সনাক্ত করা সম্ভব, মানে সরকার যদি বিশেষ কাউরে বাঁচাইতে না চান আরকি।
তনুর প্রথম ময়নাতদন্ত হয় ২০ মার্চ কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এই সময় ময়নাতদন্ত ও লাশের পোস্টমর্টেমে বেশ কিছু অসঙ্গতি ছিলো বইলা তদন্তকারী সংস্থা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পক্ষ থিকা জানানো হয়। পুলিশ লাশের গায়ের জখম থিকা ডি-এন-এ নমুনা ও লাশ থিকা অন্যান্য এভিডেন্স সংগ্রহে প্রক্রিয়াগত ভুল করায় কেইস এরপর ২৫ মার্চ ডিবিতে নিয়া যাওয়া হয়। এবং দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত শুরু হয় ৩০ মার্চ, লাশ কবর থিকা তোলার পরে।
এখন আমার প্রশ্ন হইতেছেঃ
১। ২০ মার্চ লাশ পাওয়ার সাথে সাথে কুমিল্লা মেডিক্যাল যেই পোস্টমর্টেম করে, তাতে যদি স্পার্মের (বা রক্তের ও থুতুর) অস্তিত্ব পাওয়া না যায় তাইলে দ্বিতীয়বার কবর থিকা লাশ তোলার দরকার কী? কার জন্য নাটক সাজাইতেছেন সরকার?
২। লাশে যদি স্পার্মের অস্তিত্ব পাওয়া যায় এবং তা সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হয়, তাইলে সংরক্ষিত সেই স্যাম্পল থিকাই ডি-এন-এ প্রোফাইলিং সম্ভব। লাশ ক্যানো দ্বিতীয়বার তোলা হইলো?
৩। প্রথমবার যদি প্রক্রিয়াগত ভুল হয়, তাইলে তা সংশোধণ করার জন্য ১০ দিন সময় নেওয়া হইলো কী কারণে, যেইখানে আপনি জানেন, ১০ দিন পরে লাশের শরীরে আপনি কোনো ডি-এন-এ এভিডেন্স পাবেন না?
৪। ভিকটিমের হাতে পায়ে জখমের দাগ প্রাথমিক পোস্টমর্টেমেই চোখে ধরা পড়ার কথা। প্রাথমিক পোস্টমর্টেমে দাগের উল্লেখ আসে নাই, প্রোটিনের উল্লেখ আসে নাই, স্পার্ম সেল পাওয়া যায় নাই, এপিথেলিয়াল সেল পাওয়া যায় নাই, তো পাওয়াটা গেছে কী? ধর্ষণের কেইস, আপনি আসল জিনিস বাদ দিয়া করতেছেন টক্সিকলজি টেস্ট। এরপর রক্তে ‘বিষ’ পাওয়া যায় নাই তাই ‘হাওয়া’ খাইয়া তনু মারা গেছেন এমন রিপোর্ট লিখা লাশ কবর দিয়া দেওয়ার অনুমতি দিলেন। বাহ! আপনি কোন্‌ কলেজ থিকা পাশ করছেন ভাইজান? সরকার আপনার মামা চাচা কী লাগে গো?
৫। ক্রাইম সিন ক্যানো প্রটেক্ট করা হয় নাই? এলাকার ২,২০০ ফিট এলাকা এখনো অরক্ষিত ক্যানো? আপনি সিন প্রটেক্ট করবেন না, শেয়ালের কাছে মুরগী বর্গা দিয়া, সিনে গরু ঘোড়া আর্মি, বি-ডি-আর, ডি-বি, র’, মোসাদ, সি-আই-এ চড়তে দিয়া বলবেন, এভিডেন্স পান নাই, তা তো হবে না, নাকি?
৬। পোস্টমর্টেম একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক ডিপার্টমেন্ট যদি এত অযোগ্যই হন, তাইলে তাদের এই চাকরিতে রাখা হইছে ক্যানো? তারা নিজেরাই বা ক্যানো ইস্তফা দিতেছেন না? উন্নত দেশগুলিতে দ্বিতীয় পোস্টমর্টেম তখনই করা হয়, যখন কেইসের সায়েন্টেফিক অফিসারদের বা করোনারদের ভিকটিমের মৃত্যুর কারণ নিয়া একাধিক পরষ্পরবিরোধী বক্তব্য থাকে।
৭। তনুর গোসল করাইয়া কবর দেওয়া লাশের দ্বিতীয় পোস্টমর্টেমে আপনি ট্রেইস এভিডেন্স কিছু পাবেন না এইটা পাগলেও বোঝেন। প্রক্রিয়াগত ভুল শোধরানোর জায়গা ‘১০ দিন পর’ দ্বিতীয় পোস্টমর্টেম না। এখন ‘ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায় নি’ মন্তব্য কার জন্য করতেছেন? জনগণ আপনার মত ঘাস (এবং গাঞ্জা অর্থেও) খায় ভাবেন? আপনি কি আদৌ জানেন, শরীরে সেমিনাল কন্সটিটিউয়েন্টস পাওয়ার অর্থ সোজাসাপ্টা ধর্ষণ, সেই বিষয়ে সন্দেহ নাই, কিন্তু না পাওয়ার অর্থ ধর্ষণ ঘটে নাই, তা না? জানেন নাকি?
তনুর বাবা মায়ের জন্য শুভকামনা থাকলো। তনু সহ ভবিষ্যতে আরো যারা ধর্ষিত হবেন, তাদের ও তাদের পরিবারের সবার জন্য শুভকামনা থাকলো। অসৎ প্রশাসনের দেশেও আপনি বাঁইচা থাকতে পারেন, অসৎ সরকারের ছায়াতেও আপনি টিকা থাকতে পারবেন, কিন্তু যেই দেশের ডাক্তাররা অসৎ, যেই দেশের বিজ্ঞানীরা অসৎ, সেই দেশে আপনি বাঁচতে পারবেন না। বাঁচার অবশ্য আপনার দরকারটাই বা কী? সরকার এবং সরকারের আর্মি বাঁইচা থাক, উনারা একলাই বাংলাদেশের সম্পত্তি ভাগ কইরা নিক, সুন্দরবন কাইটা হাডুডু খেলুক, চলেন, আমি আপনি লাফ দিয়া বুড়িগঙ্গায় কী বঙ্গোপসাগরে ডুইবা মরি। চলেন।
লেখাঃ "নাদিয়া ইসলাম" -ফরেনসিক সায়েন্টিস্ট।

এটা যদি সত্য হয় ভবিষ্যৎ এ শুনবেন এমনটা-
সানি লিওন, মিয়া খলিফা, জুলিয়া এ্যান,অড্রি বিটোনি,সোপিয়া ডি,প্রভা এরা সবাই ভার্জিন।
(তথ্যসূত্রে: ফরেনসিক বিভাগ, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ।)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:১৪

আব্দুল্লাহ তুহিন বলেছেন: শিরোনামটা এক্কেবারে বাঁধিয়ে রাখার মত,,, ভালো লিখেছেন!!

২| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:২৫

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: এখন চলছে নাটকের দৃশ্যের পর দৃশ্য।। সমাপ্তির শেষের আশায় আছি।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.