নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আঁচলের ঘ্রাণে বিমোহিত হতে মনে প্রেম থাকা লাগে। চুলের গন্ধ নিতে দুহাত বাড়িয়ে দেয়া লাগে। হাহাকার থাকা লাগে। দুনিয়া ছারখার হওয়া লাগে। সবাই আত্মা স্পর্শ করতে পারে না।আমার সমস্ত হাহাকার ছারখারে তুমি মিশে আছো।

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার

এক জন নিভৃতচারী

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধন্যি বাংলাদশের অভাগা ধন্যরাম!

২৮ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:৩১

ধন্যচন্দ্র রায়, ডাক নাম ধন্যরাম দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার বিরলি গ্রামের মৃত নন্দি চন্দ্র রায়ের ১৬ বছরের একমাত্র সন্তান।

হতদরিদ্র ধন্যরামের ক্ষেতে প্রভাশালী শাহাজানের গরু ঢুকে ক্ষেত নস্ট করে। ধন্যরামের মা পারনি বালা গরুটাকে আটকে রাখে। খবর শুনে শাহজানের দলবল এসে হামলা চালায় পারনি বালার ওপর।
ক্ষমতাবানরা পারনি বালার শ্লিলতাহানির চেষ্টা করে। এ সময় কিশোর ধন্যরাম মাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে। ক্ষমতাবান খুনিরা ধন্যরামকে তুলে নিয়ে যায়। পাশের একটি ভুট্টাক্ষেতে নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।
খুনিরা শুধু খুন করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা ভয়ংকর পৈশাচিক আনন্দ উপভোগ করেছে ধন্যরামের অন্ডকোষ থেতলে দিয়ে। এ ঘটনা ২ জুন বিকেলের। প্রভাবশালীরা যখন হত্যা করে, সন্ত্রাসী করে তখন তার যেমন কোন বিচার হয় না, এমন কি বিচারের জন্য মামলা পর্যন্ত হয় না-এ ঘটনায়ও ঠিক তাই হয়েছে। থানা মামলা নেই নি। এখন পর্যন্ত ধন্যরামের সুরতহালের কোন প্রতিবেদন পাওয়া যায় নি। তবে ডাক্তাররা বলেছেন, ধন্যরাম গাস্টিকের ট্যাবলেট খেয়ে মারা গেছে। উপরুন্ত প্রভাবশালীদের চাপে ধন্যরামের পরিবারকে বাধ্য করা হয়েছে অপমৃত্যার একটি ডায়রি করাতে


ধন্যরামকে যারা খুন করেছে
ধন্যরামের খুনের এ ঘটনায় কাহারোল উপজেলার তারাপুর গ্রামের ৬ ব্যক্তি যুক্ত। এরা হলেন তারাপুর গ্রামের শাহজাহান, আবুল কালাম, জব্বার, আবুল বাশার, তাজুল ইসলাম ও আনু। শাহজাহান এর আগে তারাপুর গ্রামের শামসুল ও কাদেরের মাকে হত্যারা অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত। শাহজাহানের এক ভাই আবুল হোসেন কয়েক মাস আগে জেএমবির সঙ্গে যুক্ত থাকায় আটক হন। এই পাশবিক হত্যাকাণ্ডটি ধামাচাপা দিতে প্রভাব বিস্তার করছে কাহারোল উপজেলার ৪ নম্বর তাড়গাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম। সম্পর্কে এই ইউপি চেয়ারম্যান খুনি শাহজাহানের চাচা শ্বশুর। এই প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যানের কারণেই থানা মামলা নেয়নি। ধন্যরামের পরিবারকে খুনের পরের দিন ৩ জুন বাধ্য করা হয়েছে থানায় অপমৃত্যুর জিডি করতে।
পুলিশের বক্তব্য আরো চমৎকার
এ ঘটনায় লাশের আলামত নিতে আসেন কাহারোল থানার এসআই সুরত চন্দ্র রায়। তিনি প্রতিবেদনে লাশের গায়ে আঘাত নেই এমন প্রতিবেদন দেন। এ বিষয়ে একটি অনলাইন পোর্টালকে তিনি বলেন, আসলে আমাকে যা বলা হয়েছে তাই লিখতে হয়েছে। ধন্যরামের লাশ এর তদন্তে যাই সেখানে চেয়ারম্যান ৪নং ইউনিয়নের সাইফুল ইসলাম বলে যে ধন্যরাম নাকি গ্যাসের ট্যাবলেট খেয়ে মারা গেছে। তিনি আরও বলেন যে, আমাকে যেভাবে উপরের কর্তারা নির্দেশ দেয় সেইভাবে লিখতে হয়েছে।
আর থানার ওসি মুনসুর আলী বলেছেন, আসলে আমরা এখনো নিশ্চিত নই যে আসলে সে কিভাবে মারা গেছে। কারণ পোস্টমর্টাম এখনো হাতে পাইনি। তিনি আরো বলেন, ধন্যরামকে যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল সেখানকার ডাক্তারের সাথে আমার কথা হয়। ধন্যরামের ডেথ সার্টিফিকেটে কোন তথ্য লেখা ছিল না যে তাকে কিভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়ে ডাক্তাররা কোন জবাব দিতে পারেনি।

নিপিড়িতরা এভাবেই খুন হয়
ধন্যরাম একজন হিন্দু ধর্মালম্বি ঘরের কিশোর ছিলো। তার চেয়ে বড় পরিচয় ধন্যরাম হতদরিদ্র ঘরের কিশোর ছিলো। ক্ষমতাবান ঘরের কিশোররাও খুন হন, তবে তা নিয়ে সারা দেশে হইচই হয়, বিচার হয়। এমন কী মধ্যবিত্ত ঘরের কেউ যদি অন্যায়ের শিকার হন তাহলেও তার বিচার হয়। দেখুন না সর্বশেষ বনানীর রেইনট্রি হোটেলের ধর্ষনের বিষয়টি। বাংলাদেশের অন্যতম ক্ষমতাবান পরিবারকেও বাধ্য হতে হলে বিচারের মুখোমুখি হবার। আর ধন্যরামের ঘটনাটি মেইনস্ট্রিম মিডিয়াতেই আসেনি। দিনাজপুরে সব পত্রিকা, অনলাইন, টিভির প্রতিনিধিরা আছেন। কিন্তু কোন মিডিয়াতে এ খবরটি ছাপা হয়নি। এর অর্থ হলো দরিদ্র মানুষের জন্য কোন মিডিয়া নেই। এই মিডিয়া সেই খবরই বিক্রি করে যাতে তার বিজনেস আছে। ধন্যরাম এই মিডিয়ার জন্য এখনো কোন সেলেবেল প্রডাক্ট নয়।
তবে এটি সত্য, এরকম একটি চরম নৈরাজ্যকর সমাজে ‘ছোটলোকের মধ্যে ছোটলোকগুলো’ বেশি নিপিড়নের শিকার হয়। অর্থাৎ দরিদ্র মানুষের মধ্যে হিন্দু দরিদ্র মানুষ বেশি নিপিড়নের শিকার হন। কিন্তু হিন্দু পরিচয় তাকে মুক্তি দিবে না, বরং মানুষ পরিচয় তাকে লড়তে হবে।
ধন্যরামের হত্যার ঘটনায়, খুনের ঘটনায় কোন শহরে মধ্যবিত্ত সেক্স নেই। এটি সাদামাটা আর দশটা গরবি মানুষ যেমন সমাজ থেকে নাই হয়ে যায় এ খুনটা সেরকমই। শুধু ধন্যরামের মা পারিন বালার বুকের ভেতরটি নক্ষত্র হয়ে জ্বলবে।
তবে আপনাদের থেকে ফারাক রেখে গেছে ধন্যরাম। ধন্যরাম লড়ে মরেছে। পশুদের হাত থেকে মাকে রক্ষা করতে পেরেছে। মায়ের অপমান রুখতে ধন্যরাম প্রাণ দিয়েছে। পুরাকালে সিতার বস্ত্রহরণ হয়েছিলো। সেকালে সিতার সাথে ভগবান ছিলেন। এ কালে মায়ের বস্ত্রহরণ হয়, ধন্যরাম এগিয়ে এসে রক্ষা করেন দশ মাস দশদিন গর্ভের ঋণ শোধ করেন। প্রাণ দেয় ধন্যরাম। ধন্যরাম আমাদের ধন্যি ছেলে।
এই সরকারের আমলে কত সংখ্যালঘু অত্যাচারের শিকার হয়েছেন, কতজন আদিবাসীর ঘর পুড়েছে, উচ্ছেদ হয়েছেন কিম্বা এই সরকারের দুনীতি কোন কিছুই নিয়েই আমরা কথা বলছি না। আমরা কথা বলতে চাই এই মূহুর্তে শুধু ধন্যরামের জন্য। পারনি বালার জন্য। রাষ্ট্র একটু মানবকি হও এই স্লোগানও দিচ্ছি না। শুধু বলছি, ধন্যরামের এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করুন এ দয়াবান রাষ্ট্র নায়ক। জঘন্য এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেন।
দরকার ঘটনাটিকে ভাইরাল করা। যদি সম্ভব হয় নিজের ওয়ালে কপি করেন। কপি করলে বেশি মানুষের কাছে পৌছে যাবে।

ঘটনাটি নিয়ে দৈনিক কালের কন্ঠ গত ৪ জুন ছোট একটা রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। তবে সেটি মোটেও যথেষ্ট নয়।


(আরিফুজ্জামান তুহিন থেকে এবং কালের কন্ঠ
কাছ হতে গৃহীত)

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:৪৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


মনে হচ্ছে, ঘটনা সত্য; তবে, কালের কন্ঠ সঠিক মিডিয়া নয়! দরিদ্র ও সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে স্বয়ং প্রেসিডেন্ট অনেক পদক্ষেপ নিতে পারেন; উনার বেতন ও বেনেফিটের তুলনায় কোন অবদান নেই জাতির জন্য।

২৮ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১১:০০

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: রাষ্ট্র যদি এগিয়ে না আসে কারো পক্ষে কিছু করা সম্ভব না

২| ২৮ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৬

মক্ষীরাজা বলেছেন: ভাইয়ুমণিতা!!!!!!!!!

বাহ!!!!!!!!

মুগ্ধ মুগ্ধ মুগ্ধ!!!!!!!!

ঠিক পরীর দেশের রাজণ্যদের লেখা !!!!!!!!

উলে জাদুরে। উম্মা :>

৩| ২৮ শে জুন, ২০১৭ রাত ৮:০২

আহমেদ জী এস বলেছেন: সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার ,




ধন্যরামরা চীরকালই অভাগা । আর বাংলাদেশ ধন্যি নয় , এদেশটা হলো লজ্বাহীন ।

০১ লা জুলাই, ২০১৭ ভোর ৫:২৫

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: কষ্ট এটাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.