নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আঁচলের ঘ্রাণে বিমোহিত হতে মনে প্রেম থাকা লাগে। চুলের গন্ধ নিতে দুহাত বাড়িয়ে দেয়া লাগে। হাহাকার থাকা লাগে। দুনিয়া ছারখার হওয়া লাগে। সবাই আত্মা স্পর্শ করতে পারে না।আমার সমস্ত হাহাকার ছারখারে তুমি মিশে আছো।

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার

এক জন নিভৃতচারী

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার › বিস্তারিত পোস্টঃ

হুমায়ুন নামা

১৯ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৭

মায়াবতীর জনক নেই আজ কিন্তু মায়া ফেলে গেছে গোটা বাংলা সাহিত্যসাম্রাজ্যে ভালো থাকুন হিমু ভালো থাকুন মায়াবতীর জনক ।


গভীর ঘুমে মগ্ন আমি,,,"অচিনপুর" এর স্বপ্ন দেখছি। অজ্ঞাত ভাবেই খুব সকালে ঘুম ভেঙ্গে গেল,
নিজেকে প্রশ্নবিদ্ধ করলাম...আজ কেন এমন হলো? আত্মউত্তর মিলল না। সকালটা আজ "এলোমেলো", হয়ে আছে।"দখিনা হাওয়া" উত্তরে বইছে।হাতে কলম ধরে লিখতে বসলাম এলোমেলো সকালকে ঘিরে। "বলপয়েন্ট" টা "কাঠপেন্সিল" হয়ে আছে..!
কলমকে প্রশ্নবিদ্ধ করলাম.. হে বিদ্বান তোমার আমিত্ব বের করছো না কেন? কলম কান্না জড়িত কন্ঠে উত্তর দিলো..গল্পের জাদুকর আর নেই। জাদুকর আর নেই। সে আর কখনো আমাকে ছুয়ে যাবে না। আমাকে দিয়ে আর কোন হিমু কিংবা মিসির আলী কিংবা শুভ্র সৃজিবে না। আমি আজ শোকে শান্ত মন্ডিত হয়ে পাথর হয়ে আছি।আমি নিশ্চুপ।খানিক বাদে "রঙপেন্সিল"নিয়ে নানান রঙে প্রাণ প্রতিষ্ঠার অব্যর্থ চেষ্টায় লিপ্ত হলাম....রঙতুলি বেকিয়ে বসল।রঙতুলিকে প্রশ্নবিদ্ধ করলাম.. হে রঙতুলি তোমার "নিষাদ"রঙের মেলা দেখছি না কেন?
রঙতুলি কাদো গলায় উত্তর করলো...রঙের মেলার জাদুকর যে আর নেই।
আমি ব্যথিত।বাহিরে "নীল আকাশে ঝকঝকে রোদ"কালো হয়ে আছে,,"এইরৌদ্র এই ছায়া" মূহুর্ত।।রোদেলা আকাশকে প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম
হে রোদেলা আকাশ,মেঘবর্ণ হয়ে আছো কেন?রোদেলাকাশ কান্না ভেঙ্গে বলল..."হিমু"আর নেই। "এবং হিমু" আর কোনদিন ফিরবে না। নিয়ন আলোতে হাটবে না "ময়ূরাক্ষী"র তীর ঘেষে।আমি শোকাহত।হঠাৎ "বৃষ্টি ও মেঘমালা" র দেখা...ঝুম বৃষ্টিপাত হচ্ছে..
বৃষ্টিকে জিজ্ঞেস করলাম..হে "বৃষ্টিবিলাস" কাঁদছ কেন?কেঁদে কেঁদে বলল:- "আমার আছে জল" তাই কাঁদছি।
রেগে যাচ্ছো কেন বলো না কি হয়েছে তোমার.?বৃষ্টি চিৎকার দিয়ে বলল "রুপা"আর নেই। রুপা আর হাটবে না ছাদের কার্নিশ ধরে। রুপা নীল শাড়ি পড়ে আর"অপেক্ষা" করবে না হলুদ পান্জাবী ওয়ালা হিমুর জন্যে।আমি অশ্রুসিক্ত।বৃষ্টিশেষে মিষ্টিহেসে বৃক্ষের সঙ্গদিলাম.."বৃক্ষকথা"বলছে না..হেলে দুলে খেলছে না বৃক্ষকে করুণ কন্ঠে শুধিলাম..হে বৃক্ষ,,কথা বলছো না কেন? কি হয়েছে তোমার?
বৃক্ষ বলল:- আমার প্রেমিক আর নেই। সে আর কখনো আসবে না,,, আমাকে ছুয়ে যাবে না। আমার গন্ধ শুকবে না। আমাকে মায়ার জালে জড়াবে না,,,তাই আমি আজ বাকরুদ্ধ। বাকপ্রতিবন্ধি।আমি নিস্তব্ধ।"শ্রাবন মেঘের দিন" ছুটে গেলাম "গৌরিপুর জংশন" "বাদল দিনের দ্বিতীয় কদম ফুল" দেখতে যাবো। এগিয়ে দেখি "কোথাও কেউ নেই"জংশনকে জিজ্ঞেস করলাম... তোমার ব্যস্ত বেলার সাথীরা কোথায়?
বলল:- "সবাই গেছে বনে" বললাম:- কেন?বলল:- রহস্যের "দেয়াল" "মিসির আলি" আর নেই।আমি পথহারা পথিক
হতভম্ব হয়ে দিক বেদিক তাকাই,,,বিশ্বাসের আলো এখনো জ্বলছে না আমার মনে। সন্দেহান হয়ে আত্মপশ্ন করি সত্যিই কি গল্পের জাদুকর কি আর নেই? না না,,,,অবিশ্বাস্য।"যদিও সন্ধা" ছুটছি হাওর পানে। "জ্বল জোছনা" দেখার আকুল প্রত্যয়ে। শুনবো"জোছনা ও জননীর গল্প" বিরাট গাতক, মতি মিয়ার গান।কিন্তু বিদ্ধংশী চাঁদে কোন আলোর মেলা নেই। চাঁদকে প্রশ্নের বেড়া জালে আটকে দিলাম হে চাঁদ তোমার জোছনা কোথায়?চাঁদ বলল:-"চাঁদনি পসরে কে আমায় স্মরণ করে,কে আইসা দাঁড়াইছে গো আমার দুয়ারে"।বললাম:- আমি "শুভ্র" "দারুচিনি দ্বীপ" থেকে এসেছি। কি হয়েছে তোমার? তোমার আলোর কনা কই?বললো:- জোছনা বিলাসী প্রবাদ পুরুষ আর নেই। তাই আমার কোন দিপ্ত আলো নেই। আমি আজ কিরন বিহীন চন্দ্র।ক্লান্তিপূর্ণ "অয়োময়"পথ পাড়ি দিয়ে,,সারাদিনের শোকের "শ্যামল ছায়া"য় নিজেকে জড়ায়ে প্রকৃতির কান্নার আহাজারি আমাকে জড়িয়ে নিলো।*গল্পের জাদুকর আর নেই। *বাংলার প্রবাদ পুরুষ আর নেই। *নন্দিত কথাসাহিত্যিক আর নেই।*হিমুর স্রষ্টা আর নেই।*মিসির আলীর স্রষ্টা আর নেই। *রুপার স্রষ্টা আর নেই।
বিশ্বাসের ছিটেফোঁটা ও হচ্ছে না আমার।
কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি গল্পের জাদুকর,কথার নন্দন শিল্পী আর নেই।ক্রন্দন জড়িত কাপা কাপা কন্ঠে লেখকের অভিলাষী ইচ্ছায় তাল মিলিয়ে আমিও গাইতে শুরু করলাম"ও কারিগর, দয়ার সাগর,ওগো দয়াময় চান্নি পসর রাইতে যেন আমার মরন হয়"।

-"হিমুরা পৃথিবীর সকল ভ্রু-কুচকানো উপেক্ষা করতেপারে।"
রাত বারোটা।হলুদ পাঞ্জাবি পরে নিজের ডেরা থেকে বেরিয়েএসেছে হিমু শিয়াল। রুপবতী কন্যা শিয়াল রুপার বাসায় আজ তার দাওয়াত। এই দাওয়াত রুপা দিয়েছিলো তিন বছর আগে। বাংলা পঞ্জিকা মিলিয়ে দিন-তারিখ ঠিক করে দাওয়াত।কারণ,আজ কোন সাধারণ রাত নয়। আজ পূর্নিমা।এই পূর্নিমাটাও সাধারণ পূর্ণিমা নয়, আজকের এই পূর্ণিমাতেই একদিন ঘর ছেড়ে বেরিয়েছিলেন সিদ্ধার্থ। আজ বেরিয়েছে হিমু শিয়াল।আকাশ মেঘলা।চাদের কোন দেখা নেই। মাঝে মাঝে দু একটা জোনাক পোকা জ্বলতে জ্বলতে নিভে
যাচ্ছে। বাবার উপদেশ মনে পড়ল হিমু শেয়ালের।উপদেশ এ লেখা ছিলো,'জোনাক পোকার দিকে তাকালে দেখিতে পাইবে সে ক্ষণকাল জ্বলিয়া ওঠে এবং নিভিয়া যায়। কিন্তু মহাপুরুষ জ্বলা ও নেভার বাইরের এক সত্তা। তুমি কখনো জ্বলিবেও না,নিভিবেও না।'জোনাক পোকা দেখতে দেখতে হিমু শিয়াল কখন যে আঙ্গুর গাছের নিচে এসে হাজির হয়েছে,বুঝতেও পারেনি। গাছের উপর থোকা থোকা আঙ্গুর ঝুলে আছে।হিমু শেয়াল ভাবলো,রুপার জন্য কতগুলি আঙ্গুর নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। আগে মানুষ মৃত্যু পথযাত্রীদের দেখতে আঙ্গুর নিয়ে যেতো।বাড়িতে আঙ্গুর দেখে মনে হত,এই বাড়িতে কেও মারা গেছে বা মারা যাবে। আঙ্গুর নিয়ে রুপার সামনে গেলেই রুপা ভ্রু কুচকে তাকাবে।তাকাক তো কি!হিমু শেয়াল গাছ ধরে ঝাকালো কয়েকবার।তার মনে হচ্ছে যেকোন সময়ই আঙ্গুরের থোকাটা পড়ে যাবে। কিন্তু না,অনেকক্ষন চেস্টার পরেও আঙ্গুর পড়লো না। গোল থলথলে চাঁদ আকাশে।হিমু শেয়াল চাদের দিকে তাকিয়ে বাবার উপদেশের কথা আবার মনে করলো। কোন কিছুতেই জ্বলা বা নেভা যাবে না। সে আঙ্গুরের থোকার দিকে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষন। আঙ্গুর ফল টক। আর যখন আঙ্গুর ফলের পাওাই গেলো না,তখন রুপার বাসায় দাওয়াত খেতে গিয়েই বা লাভ কি? রুপা হয়তো বেলকোনিতে দারিয়ে আছে...রুপাকে কি সে একবার বলে আসবে যে আঙ্গুর ফল টক? হিমু শেয়াল দ্বিধান্বিত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বনের ভেতর। তার হলুদ পাঞ্জাবি আর ধুসর লেজ ভেসে যাচ্ছে গৃহত্যাগী জোছনায়।


-ব্যাবহার করা কপালের টিপ'টার আঠা নষ্ট হলেও মেয়েরা সেটা যত্ন করে রেখে দেয়,একজোড়া কানের দুলের একটা নষ্ট হলেও অন্যটা ফেলে না। পুরাতন শাড়ীটা,ভাঙ্গা চুরিটা কাজে লাগবেনা জেনেও তুলে রাখে, কারণ হলো মায়া...! এইজন্য মেয়েরা মায়াবতী,আর মায়াবতী'র কোন পুরুষবাচক শব্দ নেই।

-বাবাদের শার্টগুলো বেশির ভাগ সময় মা-দের শাড়ি থেকে দামী হয় না, বাবাদের ওয়ারড্রপ ভর্তি শার্ট প্যান্ট থাকে না, বাবাদের জুতা চলে বছরের পর বছর ,মোবাইলটা একেবারে নষ্ট না হলে বদলান না, ঘড়িটা বৃদ্ধ হয় তবুও হাতেই থাকে। একা খেতে হলে সব চেয়ে সস্তা হোটেল খোঁজে, একা কোথাও গেলে বাসে চড়ে। রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সঞ্চয় করে।অথচ স্ত্রী সন্তান কে সাধ্যের সব চেয়ে দামী জিনিসগুলো কিনে দেয়। বাবারা একান্ত বাধ্য না হলে কখনো না বলে না। নিজের জন্য সব চেয়ে কৃপণ বাবাটা তার স্ত্রী সন্তানের জন্য সব
চেয়ে বেশি বেহিসাবী। বেশির ভাগ বাবাই ভালবাসি শব্দটা বলতে জানেন না, করতে জানে। তারা আজীবন তাদের ভাগের বিলাসিতার ভাগ দিয়ে স্ত্রী সন্তান কে ভালবেসে যায়।পৃথিবীরতে অসংখ্য খারাপ পুরুষ আছে , অসংখ্য খারাপ জন্মদাতাও আছে কিন্তু একটাও খারাপ বাবা নেই ।

-মেয়েরা সহজে প্রেমে পড়ে না। তাদের পটাইতে হয়। তাদের ভাইয়া হইতে হয়। দিন রাত দুই বেলা মধু মধু কথা বলতে হয়। সাতদিনে একদিন ঘুরতে নিয়ে যেতে হয়। চড় থাপ্পড় খাইতে হয়। পিছে পিছে ঘুরতে হয়। রোমান্টিক লুলামি করতে হয়। কবিতা শুনাইতে হয়। গান গাইতে হয়। গাইতে না পারলে ঢং করতে হয়। তারপর গিয়ে প্রেম হয়।
মেয়েটা যখন প্রেমে পড়তে শুরু করে তখন ছেলেটার চলে সেলিব্রেসন। মেয়েটা হল তার প্রাইজ। তার এতদিনের পরিশ্রমের ফসল। কিন্তু মেয়েটা ভুলে যায় ছেলেরা তাদের প্রাইজ সেলফে সাজিয়ে রাখতেই বেশি ভালবাসে। তাতে যদি সময়ের আবর্তে ধূলো জমে যায় তাতে ছেলেটার থোড়াই কিছু যায় আসে।
ভালবাসা জোর করে অর্জন করার জিনিস না। ভালবাসা হবে কাট ফাটা রোদ্রের মত। যে রোদ্রে ভিজে ছেলেটার চশমার কাঁচ ঝাঁপসা হয়ে যাবে। আর অচেনা মেয়েটা অযথাই ব্যাগ থেকে টিস্যু বের করে দিয়ে সারাজীবনের জন্য আপন হয়ে যাবে।

-কোজাগরি পূর্ণিমায় চরাচর ভেসে যায় ভেসে যায় না-ডোবার চেষ্টা আমিও তো ডুবে যাই খড়কুটো যাই পাই তাই ধরে ভেসে থাকা শেষটা
স্মৃতি কিছু হাতড়াই না চেয়েও কিছু পাই ভুলে থাকি, তবু থাকে রেশটা কোজাগরি পূর্ণিমায় সাদা মেঘ ভেসে যায় আমিও তো ভেসে যাই
জলে ডুবি তড়পাই এত জল,তবু নাই মেটে না তো আকণ্ঠ তেষ্টা।কোজাগরি পূর্ণিমায় কে যে কাকে খুঁজে পায় কেন কাকে কে হারায়
থাকে না তো তার কোনো লেশটা।কোজাগরি পূর্ণিমায় চারদিক উছলায় ভেসে যায় অর্ন্তদেশটা।

-কোন মেয়ের কপালের টিপ,হাতের চুড়ি,চোখের কাজলের মায়ায় কখনো মোহিত হইয়ো না।এগুলো তো সাময়িক!মানচিত্র দেখে কখনো মানুষ বিচার করা যায় না।কারণ অন্তরের কোন মানচিত্র থাকে না।

সহায়তা করেছেন-হুয়ায়ুন আহমেদ ফ্যানপেজ ও
মিনহাজুল ইসলাম

মন্তব্য ০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.