নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যেমন ইচ্ছে লেখার আমার ব্লগের খাতা।

Never argue with idiots. They bring you down to their level and then beat you with experience

সন্দীপন বসু মুন্না

অন্য সবার মতোই জীবনে স্বপ্ন ছিল অনেক। তবে আপাতত বাসা টু অফিস টু ক্লাস টু ঘুম। এক সময়ের স্বপ্ন গল্পকার হওয়া আজ গল্পের মতোই লাগে। বাংলার সাহিত্যাকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা ! ;) ;) তারপরও ভাবি...এই বেশ ভালো আছি... সামু বা অন্যান্য ব্লগ সাইটগুলোতে প্রায়ই ঘোরঘুরি হয়। অনেক কিছুর পরও এই বিলাসিতাটুকু বাদ দিতে পারিনি। তবে শৌখিন ব্লগ লেখালেখি আপাতত বন্ধ। তবুও কাজের খাতিরে লেখাগুলো দিয়ে আপলোড চলছে-চলবে (একই সাথে পাঠকের বিরক্তি উৎপাদনও সম্ভবত!)। ছবিসত্ত্ব: গুগল ও ইন্টারনেটের অন্যান্য ইমেজ সাইটস। যোগাযোগ - ফেইসবুক: https://www.facebook.com/sandipan.Munna ইমেইল: sbasu.munna এট্ gmail.com

সন্দীপন বসু মুন্না › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের সময় সম্পাদকের লেখায় আমার ফেইসবুক স্ট্যাটাস

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩২

মুজিবকন্যাকে সাধুবাদ অ্যাডভোকেট টিপুকে কুর্নিশ



-আবু হাসান শাহরিয়ার





সেই কবে একাত্তর গেছে। সেই কবে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের দিন ১৬ ডিসেম্বর। তারপর ৪২ বছর। বাঙালির ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে আরও একটি সমধর্মী দিন— ২১ জানুয়ারি ২০১৩। এই দিনে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায় ঘোষিত হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। এ-ও বিজয়। আইনি মুক্তিযুদ্ধের বিজয়।



দুই.



রায় ঘোষণার পর বিজয়ের আনন্দে উত্ফুল্ল নতুন প্রজন্মকে দেখে আমার মতো অনেকেরই হয়তো একাত্তরের দিনগুলোর কথা মনে পড়েছে। আরও মনে পড়েছে বিজয়খচিত ১৬ ডিসেম্বরের কথা। ওইদিন কেউ কল্পনাও করেনি, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শত্রু ফের দর্পভরে পা ঠুকবে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের মাটিতে— চোরাপথে রাষ্ট্রক্ষমতায় গিয়ে গাড়িতে ওড়াবে জাতীয় পতাকা। সেদিন যা অকল্পনীয় ছিল, তা-ই ঘটেছে ৭৫-উত্তর বাংলাদেশে। একাত্তরের পরাজিত শক্তির আস্ফাালনে দূষিত হয়েছে বাংলার আকাশ-বাতাস। তাই নতুন বিজয়ের উল্লাসে ভুললে চলবে না, একাত্তরের শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের অনেকেরই বিচার এখনও বাকি। ঘোষিত হয়েছে একটি মাত্র রায়। সে-রায়ও কার্যকর হওয়ার অপেক্ষায়। অতএব সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষত নতুন প্রজন্মকে। কেননা আইনি এ মুক্তিযুদ্ধ তাদেরই স্বপ্নের ফসল। স্বপ্নচূর্ণ করতে একাত্তরের ঘাতককুল আর তাদের উত্তরসূরিরা এখনও দেশে-বিদেশে তত্পর। ভুললে চলবে না, বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায় ঘোষণার দিনটিতেও তারা আস্ফাালন করেছে। তার আগে বিচার-বানচালে দেশজুড়ে নাশকতা, রাজপথে পুলিশপেটানো। মুক্তিযুদ্ধকালে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াও, লুণ্ঠনসহ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে ওদের দ্বারা। সেই স্বভাব ওদের রক্তে মিশে আছে। ওদের উত্তরসূরিদের রক্তেও। ওরা মানে জামায়াত। ওদের উত্তরসূরি মানে ছাত্রশিবির। পরগাছা ওরা। পরের খেয়ে বাঁচে। ১৯৭১-এ বেঁচেছিল পাক হানাদার বাহিনীর খেয়ে। হানাদার বাহিনী বিতাড়িত হওয়ার পর স্বাধীন দেশে নতুন আশ্রয়দাতাদের খুঁজে বের করেছে ওরা। আইনি মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে ধরে রাখতে হলে ওই আশ্রয়দাতাদের সম্পর্কেও সজাগ থাকতে হবে নতুন প্রজন্মকে। আমাদের আশপাশেই আছে ওই আশ্রয়দাতারা। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আছে, রাষ্ট্রযন্ত্রের রন্ধ্রে-রন্ধ্রে আছে, এমনকী আছে মিডিয়াতেও।



আশার কথা এই যে, এ ব্যাপারে নতুন প্রজন্ম সতর্ক। বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায় ঘোষিত হওয়ার দিন এ সতর্কতার স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিফলন ঘটেছে ব্লগ, ফেসবুক, টুইটার নামের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয়। ছোট্ট একটি উদাহরণ দিই। তরুণ লেখক-সংবাদকর্মী সন্দীপন বসু তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন—



বাচ্চু রাজাকারকে চিনি সেই ছোটবেলা থেকে।



আমার শৈশবের সেই কুয়াশামাখা ভোর আর মায়াময় বিকেলগুলোয় স্যারের বাসায় পড়তে গেলেই এনটিভি আর এটিএন বাংলায় দাড়িতে মেহেদি লাগানো এই লোকটিকে দেখতাম। লোকটি ধর্মবিষয়ক কথা বলত; ধর্মশিক্ষা দিত। একদিন আমার সেই প্রাইভেট শিক্ষক এই নূরানি চেহারার (!) লোকটিকে উদ্ধৃত করে আমাকে দোজখের সহস গুণ তেজি আগুনের বিষয়ে ধারণা দিলেন। সেই সঙ্গে জানালেন, কাফেররা অনন্তকাল জ্বলবে এই আগুনে। তখনও আমার অনেক কিছু বোঝার বয়স হয়নি; অথবা বুঝতে শিখিনি। অনেক ভয় পেয়েছিলাম সেইদিন।



আমার স্পষ্ট মনে আছে, বাড়িতে এসে কাঁদতে-কাঁদতে বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম— বাপি, আমি কেন ‘কাফের’? আগুনে পুড়তে হবে কেন আমাকে? এর উত্তরে বাপি সেই ছোট্ট আমাকে অনেক কথা বলেছিলেন। অনেক কিছু জেনেছিলাম, বুঝেছিলাম সেইদিন। ধর্ম ও ধর্মান্ধতা বিষয়ে সেটাই আমার প্রথম পাঠ। সে কথা না হয় আজ থাক।



এই বিজয়ের দিনে শুধু একটা দাবি জানাই। যারা সব জেনেও একাত্তরের এই খুনি-ধর্ষককে প্রমোট করেছিল, সেই চ্যানেলগুলোর কি কোনও দায়বদ্ধতা ছিল না? নাকি তারা ভাবেইনি, আমার মতো কিশোর আর শিশুদের কথা, যারা বেড়ে উঠেছে এই ধর্মান্ধতার যুগে।



যারা আমার শৈশবের স্মৃতি দূষিত করেছে, বাচ্চু রাজাকারের সেইসব মিডিয়া প্রমোটরের বিচার চাই।



তিন.



সন্দীপনের স্ট্যাটাসটি পড়তে গিয়ে অন্য একটি দিনের কথা মনে পড়ে গেছে। ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ। স্বাধীনতার ২১তম বার্ষিকী। জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গঠিত গণ-আদালত প্রতীকি বিচারে যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের ফাঁসির রায় ঘোষণা করেছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। ওই রায় শোনার জন্য ২১ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে জাতিকে। তারপর আরও ২১ বছর গেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায়টি শুনতে। এ রায়ের সঙ্গে বাঙালির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন জড়িত। একাত্তরের লাখো শহীদের রক্তে লেখা কবিতার পাণ্ডুলিপি এই রায়। অগণন কন্যা-জায়া-জননীর সম্ভ্রম-হারানোর বেদনায় রচিত জলছবি এই রায়। আমাদের সামান্য অসতর্কতায় রায়টি কার্যকর হওয়াও ২১ বছর পিছিয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু।



এখানেই জাহানারা ইমামের নেতৃত্বাধীন গণ-আদালত প্রাসঙ্গিক দুটি ঘটনার উল্লেখ করা দরকার। এক. আওয়ামী লীগ তখন সংসদে বিরোধী দল। শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয় নেত্রী। হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের সব সংসদ সদস্য গণস্বাক্ষরপত্রে সই করে গণ আদালতকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। দুই. বিএনপি তখন সরকারে। খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী। জাহানারা ইমামসহ গণ-আদালতের সংগঠকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করেছিল বিএনপি সরকার।



আইনি মুক্তিযুদ্ধের ফসল ঘরে তুলতে হলে নতুন প্রজন্মকে এ দুটি ঘটনার কথা মনে রাখতে হবে। সে এক বিভীষিকাময় সময় গেছে আমাদের জাতীয় জীবনে। ‘স্বাধীনতা তুমি’ ও ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’র কবি শামসুর রাহমানকে তখন ব্যথিত কলমে লিখতে হয়েছিল— ‘মুক্তিযুদ্ধ হায় বৃথা যায়’।



চার.



বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায় ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন— ‘এ রায়ে বাংলাদেশের নবযাত্রার শুরু হল।’ মহার্ঘ্য কথা। এ কথার পর, এমনকী নির্বাচনি ফায়দা হাসিল করতেও, যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতের সঙ্গে শলা-পরামর্শ করার অধিকার থাকল না আওয়ামী লীগের, যা দলটি একদা করেছে। ভোট-রাজনীতির বিবেচনায় এটা হয়তো সামান্য একটি ঘটনা; কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ওইটুকু করলেও নতুন প্রজন্ম ক্ষমা করবে না। তবে, এ তর্ক উজিয়েই মুজিবকন্যা ও তার দল আওয়ামী লীগকে অকৃপণ অভিনন্দন জানাতে হয় এই জন্য যে, এ সরকারের সময়ই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে।



তখন বিএনপি? তখন বিএনপি এক কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি। জামায়াতের সঙ্গে জোট বেঁধে পাঁচবছর রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল দলটি। এখনও সেই জোটে চিড় ধরেনি। বরং বন্ধন আরও দৃঢ় হয়েছে। তাই এ জোটের সভা-সমাবেশে প্রদর্শিত হয় যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে বর্ণাঢ্য পোস্টার-ফেস্টুন। এ জোটের মঞ্চ থেকে উচ্চারিত হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালবিরোধী কথাবার্তা। এমনকী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও ডায়াসে দাঁড়িয়ে জামায়াতের ওয়েব-অ্যালবামের ছবি প্রদর্শন করেন। যুদ্ধাপরাধের বিচার বানচালে গত বছর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে হরতালের ছদ্মাবরণে জামায়াত-শিবির দেশজুড়ে যে-নাশকতা চালিয়েছিল, তাকেও ‘নৈতিক সমর্থন’ দিয়েছে বিএনপি। সব দেখেশুনে একথাই মনে হয়, গাছ-বিএনপিকে গ্রাস করেছে পরগাছা-জামায়াত। অনেক দেরি করে ফেলেছে বিএনপি। নতুন প্রজন্ম থেকে দলটি এখন অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। নতুন ওই প্রজন্মই বাংলাদেশ। তাদের এড়িয়ে রাজনীতিতে টিকে থাকা নৈব নৈবচ। এখনও এই সত্য অনুধাবন না করলে বিএনপি নামের দলটির জন্য অপেক্ষা করছে মুসলিম লীগের পরিণতি। সত্তরের নির্বাচনে মুসলিম লিগকে এ দেশের মানুষ আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করেছিল। বাঙালির ইতিহাসে সে-ও ছিল এক নবজাগরণকাল। ১৯৯২ সালে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বাধীন গণ-আদালতের সংগঠকদের বিরুদ্ধে যেভাবে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করেছিল বিএনপি, আবারও ক্ষমতায় গেলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক-আইনজীবীদের বিরুদ্ধেও একইরকম মামলা দায়ের করবে কি না, নতুন প্রজন্ম এ প্রশ্নেরও জবাব আশা করে দলটির কাছে।



পাঁচ.



আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু প্রাসঙ্গিক কিছু কথা না বললে এ লেখা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। ট্রাইব্যুনাল গঠিত হওয়ার ২ কী ৩ দিন পর অ্যাডভোকেট টিপুর একটি সাক্ষাত্কার নিয়েছিলাম তার রাজশাহীর বাড়িতে বসে। ২৮ মার্চ ২০১০-এর কথা। অ্যাডভোকেট টিপু সেদিন একাত্তরের যুদ্ধারপরাধ ও নবগঠিত ট্রাইব্যুনাল নিয়ে খোলামেলা অনেক কথা বলেছিলেন। এই বিচারকে ‘আইনি মুক্তিযুদ্ধ’ নাম দিয়ে এর ভবিতব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে দার্ঢ্যের সঙ্গে বলেছিলেন—



আশার কথা এই যে, ইতিহাস-বিকৃতির সব অপচেষ্টাকে নস্যাত্ করে দিয়ে তরুণ প্রজন্ম ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়। যদিও দেশ স্বাধীন হওয়ার ৩৯ বছর পর, তবু এ বড় আনন্দের কথা, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের আমরা বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যাচ্ছি। শুধু দাঁড় করানোই নয়, অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারেও আমরা প্রত্যয়ী। একাত্তরে যেমন ওরা আমাদের কাছে পরাজিত হয়েছিল, এবারও হবে। আমার সঙ্গে আরও যারা আইনজীবী প্যানেলে আছেন, প্রত্যেকেই যোগ্য। তাদের দেশপ্রেমও পরীক্ষিত। অতএব বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।



অ্যাডভোকেট টিপু ও তার সহযোদ্ধাদের কুর্নিশ জানাই। শুভ ও সত্যের নিরিখেই বিজয়ের ব্যাপারে তিনি ‘সুনিশ্চিত’ ছিলেন। আমাকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বায়ান্নো থেকে একাত্তরের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটেরও সুন্দর একটি ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। জাহানারা ইমামের নেতৃত্বাধীন গণ-আদালতের সংগঠকদের স্মরণ করেছিলেন গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে। আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন তরুণ প্রজন্মের ব্যাপারে। ওই কথাগুলোও উদ্ধার করা যাক—



জাহানারা ইমাম, কর্নেল নুরুজ্জামান, শাহরিয়ার কবির ছাড়াও আরও যারা ওই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, সেদিনের গণআদালতে উপস্থিত থেকে অথবা দূর থেকে যারা সমর্থন জানিয়েছেন সে প্রতীকি বিচারকে, সবারই স্বপ্নের ফসল এই ট্রাইব্যুনাল। কী প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েই না সেদিন মানুষকে সংগঠিত করা হয়েছিল। তখন সব কিছুই ছিল প্রতিকূলে।...



বায়ান্নোর ভাষা-আন্দোলন যেমন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের, বিরানব্বইয়ের গণআদালতও তেমনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গঠিত আজকের ট্রাইব্যুনালের বীজতলা। তুমি তোমার মতো করে বললে; আমি আমার মতো করে বিষয়টির ব্যাখ্যা দিই। ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে মুক্তি পেলেও পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটি আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। এটা, পাকিস্তান হওয়ার পর-পরই, আমরা বাঙালিরা বুঝে গেলাম। বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা সেটা বুঝিয়েও দিলাম পাঞ্জাবি শাসকদের। কিন্তু মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে আমাদের অনেক বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। পাকিস্তানের ৫৬% মানুষ হয়েও বাঙালিরা শোষিত হয়েছে পশ্চিম পাকিস্তানিদের কাছে। আমাদের পাট বিক্রির টাকায় ওদের ওখানে শিল্প-কল-কারখানা স্থাপিত হয়েছে। সরকারি চাকরির উচ্চপদগুলো ওরাই দখল করে রেখেছিল। সামরিক বাহিনীর সিংহভাগও ছিল ওদের দখলে। ৬৫’র পাক-ভারত যুদ্ধে পূর্ব-পাকিস্তানকে অরক্ষিত রাখা হয়েছিল। তখন বাঙালি খুব ভালোভাবেই অনুবাধন করল, পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটিতে তারা পরাধীন। আর এই ‘বুঝতে পারা’র কারণে বাঙালির অধিকার আদায়ের আন্দোলন বেগবান হল। ছেষট্টিতে বাঙালি জাতিসত্তার পুনর্জাগরণ ঘটল। তার হাত ধরেই এল ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলন। আইয়ুব খানের পতন, সত্তরের নির্বাচন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ তারই ধারাবাহিকতা। বাঙালি জাতির উদ্ধারকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বায়ান্নোর স্বপ্নই ফলবান হয়ে মুক্তিযুদ্ধে রূপ নেয় একাত্তরে। একইভাবে বিরানব্বইয়ের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষারই বাস্তবায়ন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গঠিত আজকের ট্রাইব্যুনাল, তুমি যাকে বলছ আইনি মুক্তিযুদ্ধ।



পাদটীকা :



এটা জলের মতো পরিষ্কার যে, আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় না-এলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সুদূরপরাহতই থাকত। উল্টো, কেউ বিচার চাইলে হয়তো তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হত রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা। আর এ-ও অস্বীকার করা যাবে না যে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যে-রায় দিয়েছেন ও দেবেন, তা কার্যকর করার ক্ষেত্রেও আওয়ামী লীগের বিকল্প কোনও রাজনৈতিক দল এখনও দৃশ্যমান নয়। দলটির ভালো-মন্দ দুইই আছে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। বরং অস্বাভাবিক এই যে, দলটির মন্দে সুশীল পাখিরা যত চেঁচামেচি করেন, ভালোয় তার সিকিভাগ প্রশংসাও উঠে আসে না মুখে। দলকানারা অবশ্য অনেক স্তুতিই করেন; কিন্তু স্তুতি ছাড়া দলের সমালোচনা করতে জানেন না বলে মানুষ তাদের বিশ্বাস করে না। আমি কোনও রাজনৈতিক দল করি না। আমার দলের নাম মানুষ। যা কিছু মানুষের কল্যাণে, তার পক্ষে আমার অবস্থান। সেই অবস্থান থেকেই উপলব্ধি করি যে, বিষয় যদি হয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগই জাতির বড় ভরসা; আর শেখ হাসিনাই তার রক্ষাকবচ। মুজিবকন্যাকে সাধুবাদ।





লেখাটির লিংক : মুজিবকন্যাকে সাধুবাদ অ্যাডভোকেট টিপুকে কুর্নিশ



আমার ফেইসবুক লিংক : Sandipan Basu

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.