নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যেমন ইচ্ছে লেখার আমার ব্লগের খাতা।

Never argue with idiots. They bring you down to their level and then beat you with experience

সন্দীপন বসু মুন্না

অন্য সবার মতোই জীবনে স্বপ্ন ছিল অনেক। তবে আপাতত বাসা টু অফিস টু ক্লাস টু ঘুম। এক সময়ের স্বপ্ন গল্পকার হওয়া আজ গল্পের মতোই লাগে। বাংলার সাহিত্যাকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা ! ;) ;) তারপরও ভাবি...এই বেশ ভালো আছি... সামু বা অন্যান্য ব্লগ সাইটগুলোতে প্রায়ই ঘোরঘুরি হয়। অনেক কিছুর পরও এই বিলাসিতাটুকু বাদ দিতে পারিনি। তবে শৌখিন ব্লগ লেখালেখি আপাতত বন্ধ। তবুও কাজের খাতিরে লেখাগুলো দিয়ে আপলোড চলছে-চলবে (একই সাথে পাঠকের বিরক্তি উৎপাদনও সম্ভবত!)। ছবিসত্ত্ব: গুগল ও ইন্টারনেটের অন্যান্য ইমেজ সাইটস। যোগাযোগ - ফেইসবুক: https://www.facebook.com/sandipan.Munna ইমেইল: sbasu.munna এট্ gmail.com

সন্দীপন বসু মুন্না › বিস্তারিত পোস্টঃ

আহ্ মরি বাংলা ভাষা

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:১৩





ঘটনাটা আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে শোনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল রেইড হচ্ছে। প্রতি ছাত্রের আইডেন্টিটি কার্ড পরীক্ষা করছে পুলিশ। হঠাৎ এক ছাত্রের আইডি কার্ড পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ছাত্রটিকে জিজ্ঞেস করা হল ‘কোন সাবজেক্টে পড়?’ ছাত্রটি জবাব দিল ‘জিওগ্রাফি’। তখন পুলিশ অফিসার রেগে ধমক দিলেন,‘পুলিশের সঙ্গেও মিথ্যা বলা হচ্ছে না? কার্ডে লেখা ভুগোল আর বলছ জিওগ্রাফি !’ এরপর সিপাহীদের নির্দেশ দিলেন ‘পেটাও শালারে’। এরপর পুলিশদল ঢুকল আরও একটি রুমে। রুমে অবস্থানরত ছাত্রটিকে বলল ‘কোন ক্লাসে পড়?’ ছাত্রটি জানাল সে এমবিএ -তে পড়ে।পুলিশ অফিসারটি এবারও রেগে গেল। ‘সব শালাই দেখছি মিথ্যে বলা শিখে গেছে। এম এ আর বি এ কি কখনো একসাথে শেখা যায়?’ বলেই আবার নির্দেশ দিলেন সহকারীদের ‘পেটাও শালারে’। অপরদিকে একজন বহিরাগতকে ধরে পুলিস জানতে চাইল, ‘কোন ক্লাসে পড়?’ সে জবাব দিল আমি ইন্জিনিয়ারিং পড়ি। পুলিশ তো আর জানে না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্জিনিয়ারিং পড়া যায় কিনা? তাই বহিরাগতের কথায় সন্তুষ্ট হয়ে তাকে ছেড়ে দিল। যে দেশের মহান দেশসেবকদের এই অবস্থা সেই দেশে তো অন্যদের কথা বাদই দেওয়া যায়।

ব্রিটিশ শাসনামলে বাঙ্গালীদের একটা বড় অংশের ইংরেজির প্রতি বাড়তি আকর্ষণ জেগেছিল। তখন তাদের এই মেকি আচরণকে ডাকা হত ইংরেজিয়ানা নামে। তারপর ব্রিটিশ বিতাড়িত হয়ে এল পাকিস্থান। এরাও বাঙ্গালির মায়ের ভাষার দাবিকে অগ্রাহ্য করে উর্দুকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইল। বাঙ্গালীদের মধ্যে অনেকেই আবার তখন তাদেরকে সাধুবাদ জানিয়েছিল।এদের কথা কবি আবদুল হাকিম বলে গেছেন,- ‘যে জন বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গবানী / সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।’

এদেশের সন্তানরা একসময় ভাষার জন্য জীবন দিয়েছেন অথচ আমরা অনেকেই কথায় কথায় বিদেশী ভাষা ব্যাবহার করে তথাকথিত আধুনিক হতে চাই। এ অধুনিকতাও ও যে ঠিকমত হয় তা কিন্তু নয়, এখানেও থেকে যায় সমস্যা । ওই যে গোড়ায় গলদ থাকলে যা হয় আরকি। একবার এক ইংরেজিবোদ্ধা বড় ভাই আমাকে উপদেশ দিয়েছিলেন, ‘এই তোমার প্রোনাউনক্রিয়েশন(pronounciation) ওরং (Wrong) হচ্ছে,শুদ্ধ করে পড়।’ আমার এই বড় ভাইতো তবু স্বঘোষিত ইংরেজিবোদ্ধা কিন্তু দেশে অনেক সুপ্রতিষ্ঠিত ইংরেজিবোদ্ধা আছেন যারা কোন বিষয়ের উদাহরণ টানতে গিয়ে হরহামেশাই suppose ; ধরো কিংবা Example স্বরুপ উদাহরণ; টাইপের বানী ব্যাবহার ফেলবেন। বাংলা কবিতায় সনেটের প্রবর্তক মধুকবি মাইকেল মধুসুধন ও চেয়েছিলেন ইংরেজ হতে। প্রথম অবস্থায তিনি বাঙলা ও বাঙ্গালিকে অবজ্ঞা করে ইংরেজিতে কাব্য লেখা শুরু করেন।পরে ইংরেজি ভাষায় মনের ব্যাকুলতা প্রকাশ করতে না পেরে ফিরে আসেন বাংলায়। লেখেন ‘হে বঙ্গ ভান্ডারে তব বিবিধ রতন’..নিজেকে পরিচয় দেন যশোরের বাঙ্গাল বলে। বাংলা সাহিত্যেও আরেক খ্যাতিমান লেখক বঙ্কিমচন্দ্রও প্রথম উপন্যাস লিখেছিলেন ইংরেজীতে, পরে মনের ক্ষুধা মেটাতে বাংলায় লিখতে শুরু করেন। এই বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনা করে গেছেন নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ, শরৎচন্দ্র, মানিক, তারাশঙ্করের মত সাহিত্য দিকপাল। আজ বাংলা যেখানে বিশ্বে অন্যতম ভাষা হিসেবে স্বীকৃত সেখানে বাংলা নিয়ে কেন আমাদের এই হীনমন্যতা? আজ আমাদের নবীন প্রজন্ম , যারা তথাকথিত ইয়ো কিংবা ডিজুস জেনারেশন কালচারের মোহে অন্ধ তারা কি আসলেই জানে কোন দিকে ছুটছে তারা? দোষকি আমাদের বাংলা মা ও ভাষার নাকি অন্য কোথাও? বন্ধু বউ নিয়ে মমতাজের বাড়ির সামনে দিয়ে গেলে তার বুক যেমন একেবারে ফাইট্টা যায়, আর আমাদের বুকটাও ফাইট্টা যায় যখন দেখি এদেশের কোন সন্তান বাংলায় কথা বলতে পারে না। বলতে পারে না বললে হয়তো ভুল বলা হবে, কারণ তারা বলার চেষ্টা করে না। বাংলায় কথা বললে যদি মান ইজ্জতে ঘাটতি দেখা দেয়!

যখন কেউ জোর করে ইংরেজি বলতে চায, তখন তার জন্য খুব মায়া হয়, আহা বেচারা নিজেকে জাতে উঠানোর জন্য কত বড় রিস্কটাই না নিল। আবার কারো কারো ইংরেজি উচ্চারণ শুনলে তো মুখে পাথরচাপা দিয়েও হাসি আটকে রাখা যায় না। যার নিজের মাতৃভাষা শুদ্ধভাবে চর্চার এতটুকু আগ্রহ নেই তার কাছে বিদেশী ভাষার শুদ্ধ উচ্চারণ আশা করা নেহায়েই অন্যায় এটা নিশ্চয়ই সবাই বুঝবেন।

সত্যিই আমাদের রক্ত দিয়ে কেনা বাংলা ভাষাটা শুদ্ধভাবে চর্চার প্রতি আজ কারও যেন এতটুকু আগ্রহ নেই।ভাষা ব্যাবহারের নিয়ম কানুন বিধি ব্যাবস্থা থাকলেও তার সঠিক প্রয়োগের ব্যাপারে কারো নেই কোন সচেতনতা। আমাদের বাংলা অভিধান থাকলেও এটা মেনে চলছে কয়জন? প্রমান চাইলে হাতের কাছের কোন জাতীয় দৈনিকের পাতা উল্টিয়ে দেখুন। প্রত্যেকটি পত্রিকার আছে নিজস্ব বানানরীতি আবার একই বানান বিভিন্ন পত্রিকা করছে বিভিন্নভাবে - ফেব্রুয়ারি/ফেব্রুয়ারী, ঈদুল আযহা/ঈদুল আজহা...তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর।এসবের কারণে শুদ্ধ ভাষা চর্চা নিয়ে বিভ্রান্তি বাড়ছে বই কমছে না।



ভাষার বিষয়ে কবি সাহিত্যিকদের বাদ দিয়ে এবার রাজনৈতিক অঙ্গনে তাকাই । এখানেও ভাষা নিয়ে চলছে ধুন্ধুমার কান্ড। আমাদের দেশের এক রাজনীতিবিদ নাকি ইংল্যান্ড সফর শেষে বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তার অভিজ্ঞতা বর্ননা করেছিলেন এভাবে, ‘ব্রিটিশরা খুবই মেধাবী জাতি, শিক্ষাদীক্ষায় তারা এত আগায়া গেছে যে তাদের দেশে পাঁচ বছরের বাচ্চাটাও অনর্গল ইংরেজী বলে। তবে আমি যে জিনিসটা দেইখ্যা সবচাইতে খুশি হইছি; গর্বে বুকটা ফুইলা উঠছে, তারা সবকিছু ইংরেজীতে করলেও আজানটা দেয় বাংলায়।’ আরেক বিখ্যাত রাজনীতিবিদের একটা গল্প শুনছিলাম অনেক আগে। সেবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিখ্যাত আইনজীবি ডঃ কামাল হোসাইন। তখন আলোচ্য রাজনীতিবিদ ডঃ কামাল হোসেনের সমালোচনা করে এক জনসভায় বলেছিলেন, ‘উনি এতবড় একজন ডাক্তার অথচ তার নির্বাচনী এলাকার কোন রোগীকে উনি কোনদিন দেখেননি, কোন রোগী কি বলতে পারবে কামাল হোসেন কাউকে কোনদিন প্রেসক্রিপশন দিয়েছেন? তাহলে তিনি ভোট চান কোন অধিকারে?’

এসব পড়ে বোদ্ধারা হয়তো বলবেন এসব নিতান্তই বিদেশী ভাষা সম্পর্কে অজ্ঞানতার ফল। তবে ভাষা সম্পর্কে অর্ধজ্ঞানসম্পন্ন মানুষ যে আরও হাস্যকর তার প্রমান আমাদের প্রাক্তন সরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সাহেব । এ দেশের মানুষ আর কিছু না হোক তার বিখ্যাত বাবরীয় ভাষার জন্য তাকে যুগযুগ মনে রাখবে।একটা বাক্যে দশটা শব্দ থাকলে তিনি আটটা বলতেন ইংরেজীতে আর বাকি দুইটা বাংলায়। সেই বাংলায়ও আবার থাকত ইংরেজীর অনবদ্য ছোঁয়া। ‘We are looking for শত্রুস’ , ‘This is noyhing but bogus চিঠি’...ইত্যাদি বাক্যমালায় সমৃদ্ধ হয়েছে তার বাবরীয় ভাষা। বিদেশী ভাষা ব্যাবহারে অনবদ্য কেরামতির জন্য আমাদের আরেক রাজনীতিবিদ ভুতপূর্ব ক্রিয়ামন্ত্রী ফজলুর রহমান পটল সাহেবের কথাও আমাদের মনে রাখতে হবে। আহা ,কি ভাষণটাই না দিয়েছিলেন তিনি জাতীয় ক্রিকেট দলের উদ্দেশ্যে, তাও একেবারে নির্ভেজাল উর্দুতে। কত বছর আগে পাকিস্থানি নেতা জিন্নাহ্ সাহেবের দেওয়া এই ভাষণ হুবুহু মনে রাখার জন্য তিনি জাতির কাছ থেকে একটা প্রশংসাবানীই হয়তো আশা করেছিলেন। কিন্তু হায় এ অজ্ঞান জাতি জ্ঞানীদের কদর বুঝলো না...।

জ্ঞান অর্জনের জন্য চীন দেশে যেতে বাধা নাই একথা সত্য। তবু আমরা একবারের জন্য হলেও চীন না গিয়ে জাপানের ইংরেজি না জানা প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনে আসি। জাপান সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন; বিমান বন্দরে স্বাগত জানাতে গিয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ক্লিনটনকে ‘How are you?’ বলতে গিযে বলে ফেলেছিলেন ‘Who are you?’ ক্লিনটন প্রথমে একটু অপ্রস্তুত হলেও দ্রুত নিজেকে সামলে নিয়ে উত্তর দিয়েছিলেন ‘I am the husband of Hilary’।



দেশে এখন অনেক নব্য ভাষাবিদের দল আবির্ভুত হয়েছে। এরা নিজেদের ইচ্ছেমত যথেচ্ছা বানান ও উচ্চারণকে বিকৃত করে চলছে। দেশের একজন প্রথিতযশা কবি ও গীতিকার (নাম কইলাম না, মনে আঘাত পেতে পারেন) যার ফেসবুক এবং বিভিন্ন ইয়াহু গ্র“প এ নানা কর্মকান্ড আছে, লক্ষ্য করলাম তার লেখায় ‘ঃ’ ,‘ং’ ,‘্য’ ইত্যাদি কিছু বর্নমালা ও চিহ্ন ব্যাবহার করেন না।একদিন ফেসবুকে তাকে পেয়ে রেফারেন্সসহ তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম তিনি ইচ্ছে করে এসব বর্জন করেছেন নাকি ছাপার ভুল? তিনি জানালেন এটা তিনি ইচ্ছে করেই করেছেন , পাঠক পড়ার সময় বুঝে নেবে। সাথে তিনি আরও যোগ করলেন, বাংলা ভাষায় নাকি অনেক প্রায় সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দ আছে। এগুলোর ব্যাপারে আমাদের আরও অনেক ছাড় দিতে হবে। লেখকের যুক্তি মেনে আমি তাকে একটা শব্দ বাংলায় লিখে পাঠিয়েছিলাম, ‘আসেন আমরা দুর্নীতিবাজদের ধইরা “মাড়ী” ’। লেখক আমাকে পরামর্শৃ দিয়েছিলেন – ‘ভাষা ও বানান একই অবস্থানে থাকে না। এইসবের ব্যাপারে ক্রিটিক্যালি না ভেবে বোঝার চেষ্টা করতে। কিছু ছোটখাট সমস্যা তো থাকবেই।’এইসব বলে তিনি টেক কেয়ার দিয়ে চলে গেলেন। তাকে বলার সুযোগ পেলাম না ‘মারি’-–র কাছাকাছি বেশ কয়েকটা শব্দ আছে যেমন- মারি (প্রহার করি), মাড়ি (দাঁতের মাড়ি), মাড়ী (মড়ক লাগা)। সবাই জানে ভাষা যুগের সাথে বদলে যায় কিন্তু তাই বলে ভাষার পরিমার্জনার নামে অর্থের পার্থক্যগুলোকে গুলিয়ে ফেলতে পারি না।



২১ ফেব্রুয়ারি এলে আমরা মহা ধুমধামের সাথে ভাষা দিবস পালন করি অথচ সেই শ্রদ্ধাতেও মিশে থাকে ভেজাল। কিভাবে? যারা শহরে ভাষা দিবস দেখে অভ্যস্ত তারা ব্যাপারটা ভালো উপলব্দি করতে পারবেন না। গ্রামে শহীদ দিবসের অনুষ্ঠান মানেই ভাষাদিবস উপলক্ষে আনা মাইকে হিন্দি-ইংরেজি গান লাগিযে পোলাপাইনের ঝাঁকানাকা নাচ। সে এক অভুতপূর্ব দৃশ্য...ভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আনা মাইকে গান বাজছে..‘দিল ডিংডংডিং বোলে..’ আর পোলাপাইন নাচছে দল বেঁধে। আহা মাতৃভাষা প্রেম। গ্রামে ভাষা দিবস পালনের এই দৃশ্য দেখলে মনের দুঃখে আপনারও তাদের মত নাচতে ইচ্ছা করবে। আসলে এখন ব্যাপারটা এমন দাঁড়িয়েছে যে মাতৃভাষা দিবস পালন না করলে কেমন যেন দেখায় তাই কোনমতে দিবসটা পালন করা আর কি?

আমাদের মধ্যে একুশের যে মূল চেতনা তা কিন্তু আমরা লালন করতে পারিনি। আমরা বিসিএস এর প্রিলির জন্য সালাম কোন গ্রামে জন্মগ্রহন করেছিলেন সেইটা পড়ি, মুখস্থ করি কিন্তু ভাষার মুল চেতনাকে আমরা অন্তরে ধারণ করি না। মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য ও এর আনুষ্ঠানিকতার বাইরের ভাষা নিয়ে আমাদের কোন তাগিদই নেই। তাই আমাদের সন্তানরাও ভাষা দিবসকে ফুর্তি-আনন্দের দিন ধরে নিয়ে হিন্দি গান বাজিয়ে ধুমধাড়াক্কা নাচে।

অংক পরীআর রেজাল্ট দিচ্ছে। একছাত্র ২১ পেয়েও বেশ খুশি ক্লাসে ‘ভি’ চিহ্ন টিহ্ন দেখিয়ে একাকার। শিক্ষক তার এই আচরণ দেখে রেগে বললেন, এই ছেলে তুমি অংকে ২১ পেয়েছ তারপরও কোন লজ্জা নেই? তোমার তো এখন লজ্জায় মাথা নিচু করে থাকার কথা। বেয়াদব কোথাকার ! বেশ স্বাভাবিক গলায় ছাত্রটি উত্তর দিল -‘২১ পেয়েছি বলেই তো মাথা নিচু করতে পারছি না স্যার। একুশ মানেই তো মাথা নত না করা।’

একুশের দোহাই দিযে যেমন ধান্দাবাজ ছাত্রটি নিজের পিঠ বাঁচাতে চাইছে, তেমনি এবছরও ২১ শে ফেব্রুয়ারির দিন দামী দামী বক্তৃতা দিয়ে অনেকে তাদের পিঠ বাঁচাতে চাইবেন। যারা অন্তরে আজো উর্দু ভাষার জয়গান করেন। আজো মনে মনে বলেন,‘ কেন যে দেশটা ভাগ হল? কেন যে মাতৃভাষা উর্দু হলনা ! ’ তবে আমার কেন জানি মাঝেমধ্যেই অন্তরের অন্তস্থল থেকে সেইসব পাবলিকদের মোবারকবাদ জানাতে ইচ্ছে করে। মনে হয় বুঝি তারা সঠিক পথেই আছেন। আসলেই এ দেশের ভাষা বাংলা না হয়ে উর্দু হবার দরকার ছিল। কারণ বাংলা ভাষার প্রতি আমাদের যা কদর!!

কী এটুকু শুনেই মুখ কালো হয়ে গেছে ? আমাকে রাজাকারের বাচ্চা ছাগু মনে হচ্ছে? ঠিক আছে জনাব আমি না হয় ছাগুই। কিন্তু আপনি তো মহান দেশপ্রেমিক-ভাষাপ্রেমিক।বাংলা ভাষা আপনার শোনিতে শোনিতে প্রবাহমান। আপনি জীবন দিতে পারেন ভাষার জন্য। যে ভাষার জন্য আপনার এত টান তখনতো আপনাকে বাংলা ভাষা বিষয়ক একটা প্রশ্ন করতেই পারি। এর উপরেই প্রমান হয়ে যাবে আপনার ভাষাপ্রেম। আপনি কি রেডি?

আচ্ছা বলুন তো আজ বাংলা মাসের কত তারিখ?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:১০

আমিই মিসিরআলি বলেছেন: ৯-ই ফাল্গুন

২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:২০

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: একুশ আমার মায়ের মুখের
১ম শেখা অ,আ,ক,১,২ বুলি
শহীদ স্মৃতি স্মরণে
শ্রদ্ধাঞ্জলি / শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেবনা ।
রাখব এ সোনার বর্ণমালা হৃদয়ে জ্বালি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.