নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অন্য সবার মতোই জীবনে স্বপ্ন ছিল অনেক। তবে আপাতত বাসা টু অফিস টু ক্লাস টু ঘুম। এক সময়ের স্বপ্ন গল্পকার হওয়া আজ গল্পের মতোই লাগে। বাংলার সাহিত্যাকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা ! ;) ;) তারপরও ভাবি...এই বেশ ভালো আছি... সামু বা অন্যান্য ব্লগ সাইটগুলোতে প্রায়ই ঘোরঘুরি হয়। অনেক কিছুর পরও এই বিলাসিতাটুকু বাদ দিতে পারিনি। তবে শৌখিন ব্লগ লেখালেখি আপাতত বন্ধ। তবুও কাজের খাতিরে লেখাগুলো দিয়ে আপলোড চলছে-চলবে (একই সাথে পাঠকের বিরক্তি উৎপাদনও সম্ভবত!)। ছবিসত্ত্ব: গুগল ও ইন্টারনেটের অন্যান্য ইমেজ সাইটস। যোগাযোগ - ফেইসবুক: https://www.facebook.com/sandipan.Munna ইমেইল: sbasu.munna এট্ gmail.com
‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার ক্ষেত্রের সবচেয়ে বিপজ্জনক এরাই’- সপ্তাহদুয়েক আগে ব্রাডলি ম্যানিং আর তারই মতো কয়েকজন মার্কিন তরুণ সম্পর্কে গণমাধ্যমে এ মত স্বয়ং প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার। এবার সেই বিপজ্জনক তালিকায় যোগ হল আরও একটা নাম- গুগল, ইয়াহুর মত ই-মেইল সেবা এবং ফেসবুক, টুইটারের মত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফাঁসকারী এডওয়ার্ড স্নোডেন।
ব্র্যাডলি ম্যানিং, আরন সোয়ার্ত্রজ আর এডওয়ার্ড স্নোডেন; সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বড় অপরাধী এরা। প্রত্যেকেরই বয়স ৩০-এর কম। ঝকঝকে চেহারার ৩ তরুণ। ৩ জনেই কম্পিউটার বিষয়ে অভিজ্ঞ এবং মার্কিন প্রশাসনের পক্ষে সবচেয়ে অস্বস্তিকর তথ্য, ৩ জনই নাকি আদর্শবাদী! আর বিবেকের ডাকে সাড়া দেওয়া এই আদর্শবাদী মার্কিন তরুণরাই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় আতঙ্কের নাম।
তথ্যফাঁস বলতেই মার্কিন প্রতিরা দপ্তরের চোখের সামনে পর পর কয়েকটি মুখ ভেসে ওঠে- অ্যালড্রিচ এমস, রবার্ট হেনসেন এবং জন অ্যান্থনি ওয়াকার। কিন্তু এদের সবারই বিশ্বাসঘাতকতার একটা কারণ খুঁজে পেয়েছিন মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ। অর্থের বিনিময়ে দেশের গোপন তথ্য রাশিয়ার (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের) কাছে বেচে দিয়েছিলেন আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে নিন্দিত ৩ গুপ্তচর। তাই ধরা পড়ার পর ৩ জনকেই দণ্ডিত করতে কোনও অসুবিধাই হয়নি মার্কিন প্রশাসনের।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দেশের গোপন তথ্য ফাঁস ও বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাসে প্রথম বিখ্যাত নামটি মার্কিন নেভাল কমিউনিকেশন অফিসার জন এন্থনি ওয়াকারের। ১৯৬৭ থেকে ১৯৮৪, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে সোভিয়েত রাশিয়ার কাছে মার্কিন পরমাণু সাবমেরিনের অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য পাচার করেছিলেন তিনি।
ওয়াকার ধরা পড়ার পর জানা যায় মার্কিন গোয়েন্দা বাহিনীতেই রয়েছে আরো সোভিয়েত গুপ্তচর। এর ফলে অনেক সাবধান হয় মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগ। ফাঁদ পাতে দু-মুখো সাপদের ধরার।
আর এই ফাঁদেই ১৯৯৪ সালে ধরা পড়েন অ্যালড্রিচ এমস । জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের এই গোয়েন্দা ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৪ সালে ধরা পড়া পর্যন্ত ৯ বছর ধরে মার্কিন প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত অজস্র তথ্য বিপুল অর্থের বিনিময়ে রাশিয়ার কাছে বিক্রি করেছেন। ধরিয়ে দিয়েছেন আমেরিকার অনেক গুপ্তচরকেও।
এরপর ২০০১ সালে ফাঁস হয় মার্কিন ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতক রবার্ট হেনসেনের কীর্তি। প্রতিরা দপ্তরের এই লাইব্রেরিয়ান ১৯৭৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ২২ বছর ধরে ১৪ লাখ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে দেশের প্রতিরা-সংক্রান্ত বহু গোপন তথ্য-উপাত্ত রাশিয়ার হাতে তুলে দিয়েছিলেন। মার্কিন বিচারে এই তিনজনকেই শোনানো হয়েছিল যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ।
কিন্তু বর্তমান সময়ের এই ৩ তরুণ? এদের গল্প সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারও থেকে নেননি এক পয়সাও। কোন দেশ থেকে নেননি কোন গোপন সুবিধা। নিজের অপরাধ গোপন করার চেষ্টাও করেননি। যা করেছেন তাকে অপরাধ বলেই মনে করেন না তারা। তাই মার্কিন প্রশাসন যখন কপালের ঘাম মুছতে ব্যস্ত তখন ইন্টারনেট দুনিয়া তাদের দিয়েছে নায়কের সম্মান।
আসলে বর্তমানে মার্কিন প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ তরুণ প্রজন্মের বিবেক। রাষ্ট্রের প্রতি দ্বিধাহীন আনুগত্য নয়, বিবেকের কাছে পরিষ্কার থাকাই এ প্রজন্মের সবচেয়ে বড় অপরাধ। তাই সেনাবিভাগের সামান্য কর্মী ব্র্যাডলি ম্যানিং পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন সেনাদের বর্বরতার তথ্য ফাঁস করে দেন ভয় না পেয়ে। ডিজিটাল লাইব্রেরি থেকে রাষ্ট্রীয় কুকীর্তির গোপন তথ্য ডাউনলোড করে ছড়িয়ে দেন আরন সোয়ার্ত্রজ। ই-মেইল আর ইন্টারনেটের মাধ্যমে সব দেশের ওপর মার্কিন নজরদারির কথা রটিয়ে দেন এডওয়ার্ড স্নোডেন। অর্থ নয়, এই ৩ তরুণই চেয়েছেন শুধু মার্কিনিরা নন, সারা দুনিয়ার মানুষ যাতে যোগ্য মর্যাদা পায়। আর এটিই তাদের অপরাধ।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:৩৪
তামা বলেছেন: ভাল লাগল