নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অন্য সবার মতোই জীবনে স্বপ্ন ছিল অনেক। তবে আপাতত বাসা টু অফিস টু ক্লাস টু ঘুম। এক সময়ের স্বপ্ন গল্পকার হওয়া আজ গল্পের মতোই লাগে। বাংলার সাহিত্যাকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা ! ;) ;) তারপরও ভাবি...এই বেশ ভালো আছি... সামু বা অন্যান্য ব্লগ সাইটগুলোতে প্রায়ই ঘোরঘুরি হয়। অনেক কিছুর পরও এই বিলাসিতাটুকু বাদ দিতে পারিনি। তবে শৌখিন ব্লগ লেখালেখি আপাতত বন্ধ। তবুও কাজের খাতিরে লেখাগুলো দিয়ে আপলোড চলছে-চলবে (একই সাথে পাঠকের বিরক্তি উৎপাদনও সম্ভবত!)। ছবিসত্ত্ব: গুগল ও ইন্টারনেটের অন্যান্য ইমেজ সাইটস। যোগাযোগ - ফেইসবুক: https://www.facebook.com/sandipan.Munna ইমেইল: sbasu.munna এট্ gmail.com
আপনার শোবার ঘরের দরজা কি স্মার্টফোন, ল্যাপটপ বা ট্যাবলেটের জন্য খোলা? রাতে বিছানায় শুয়ে-বসে ফেসবুক, টুইটারের জগতে আপনার আনাগোনা না করলেই কি চলেই না?
যদি দু'টি প্রশ্নের উত্তরই 'হ্যাঁ' হয়, তা হলে প্রযুক্তিপ্রিয় বা সময়ের সঙ্গে তাল মেলানো মানুষ হিসেবে নিজের কাঁধ নিজে চাপড়ানোর আগে দু'বার ভাবুন। প্রযুক্তির তালে তাল মেলাতে গিয়ে জীবনের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন না তো?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিও এইচ ও) ও ইংল্যান্ডের বিখ্যাত জরিপ সংস্থা আরপিও যুক্তরাজ্যের ১৫,০০০ মানুষের উপর একটি সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, প্রযুক্তির কোপে তাদের যৌনজীবনে ছন্দপতন ঘটছে।
দু'টি বিশ্বখ্যাত সংস্থার করা এই সমীক্ষার রিপোর্ট দেখে লন্ডন ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক ক্যাথ মার্সার বলেছেন, 'বর্তমান প্রতিযোগিতার বাজারে সাধারণ মানুষ এমনিতেই মানসিক চাপে থাকেন। চাকরি, রোজগার.. সব মিলিয়ে চিন্তার শেষ নেই। মন সায় না-দিলে শরীর কাজ করবে কী ভাবে?'
কিন্তু পরিস্থিতি যে আরও ঘোরালো করে তুলেছে এই মানুষই ! সমীক্ষাটি সামনে রেখে মার্সারের তাত্পর্যপূর্ণ মন্তব্য, 'আধুনিক প্রযুক্তিকে আমরাই টেনে বিছানায় আনছি। ল্যাপটপ, ট্যাবলেট খুললেই ফেসবুক, টুইটারের জগত। মানসিক চাপ কাটাতে যৌনসঙ্গীর কোনও বিকল্প নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমরা প্রযুক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করছি।'
আপনার বিছানায় প্রযুক্তির অনুপ্রবেশের ফল কী? দেখা যাচ্ছে, প্রায় এক দশক আগেও যেখানে গড় ব্রিটেনবাসী মাসে অন্তত ছ'বার যৌনসংসর্গ করতেন, এখন গড়ে পাঁচবারও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের রাস্তায় হাঁটেন না। ২০১০ থেকে ২০১২-র মধ্যে চালানো সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পুরুষদের ক্ষেত্রে এই গড় ৪.৯, মহিলাদের ক্ষেত্রে ৪.৮। অথচ আগের সমীক্ষাগুলিতে উভয় ক্ষেত্রেই গড় ছিল ৬-এর উপর।
দুশ্চিন্তার শেষ এখানেই নয়৷ কেননা, প্রযুক্তি নির্ভরতার এই প্রবণতায় ছড়াচ্ছে সামাজিক ব্যাধিও। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ১৬ থেকে ৪৪ বছরের যুগলরা অনলাইন পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়ছেন। রগরগে নীলছবিই তাদের কাছে যৌনমিলনের বিকল্প। অধ্যাপক মার্সার বলছেন, 'এ-ও বেডরুমে প্রযুক্তির অবাধ প্রবেশের ফল৷'
স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি যৌনসম্পর্কে মানুষের আগ্রহ কমছে? উত্তর, হ্যাঁ। মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে সমীক্ষায় অনেকে স্বীকার করেছেন, শারীরিক সম্পর্কের আকর্ষণ ক্রমেই তাদের কাছে ফিকে হচ্ছে।
যদিও যাদের উপর সমীক্ষা চালানো হয়েছে, তাদের অতীত কিন্তু বেশ 'রঙিন'ই ছিল। দেখা গিয়েছে, ৪৪ বছরের নীচে মহিলারা গড়ে ৭.৭ জনের সঙ্গে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করেছেন। আর একই বয়সের পুরুষরা? তাদের ক্ষেত্রে গড় ১১.৭! আবার সমীক্ষাতেই দেখা গিয়েছে, প্রতারক সঙ্গীকে সহ্য করতে পারেন না অধিকাংশ মানুষ।
জানা গিয়েছে আরেকটি আশ্চর্যজনক তথ্য। সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ নিয়ে তেমন আপত্তি নেই এদের কারোই। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বেড়েছে। ১৯৯০ সালে যেখানে ১.৮ শতাংশ মহিলা সমলিঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতেন, সর্বশেষ সমীক্ষায় সেটাই দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮ শতাংশে। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই হার কমবেশি সাড়ে তিন শতাংশেই দাঁড়িয়ে।
প্রযুক্তির ইতিবাচক দিক হল, বর্তমান জীবনধারায় কেউই আর 'একা' নন। ফেসবুক, টুইটারের মতো সঙ্গী আছে যে! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যৌনজীবনের ক্ষেত্রে এই ইতিবাচক দিকই মুল খলনায়ক। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অনেকেই 'একা' থাকতে পছন্দ করেন।
তার মানে এই নয় যে, যৌনতার প্রতি তাদের কোনও আকর্ষণ নেই। কেননা, ইন্টারনেটের মাধ্যমে যৌনতার স্বাদ তাদের অনেকেই নেন। কিন্তু যৌনসঙ্গীর প্রতি তীব্র আপত্তি৷ এর ফলে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগও কমছে।
কমছে সংসার পাতার প্রবণতাও৷ সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সন্তানধারণের ক্ষেত্রে কিন্তু রীতিমতো হিসেব কষেই সকলে এগোচ্ছেন। ছ'টির মধ্যে প্রতি পাঁচটি ক্ষেত্রেই পরিকল্পিত ভাবে গর্ভধারণ হয়েছে।
সমীক্ষাটি যুক্তরাজ্যে চালানো হলেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্যান্য উন্নত বা উন্নয়নশীল দেশে ফলাফলে খুব বেশি হেরফের হওয়ার সম্ভাবনা কম। কেননা, উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশে প্রযুক্তির অগ্রগতি কমবেশি একই। আর্থ-সামাজিক মাপকাঠিতেও বিশাল ফারাক নেই।
তথ্যসুত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও বিবিসি অনলাইন
©somewhere in net ltd.