নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অন্য সবার মতোই জীবনে স্বপ্ন ছিল অনেক। তবে আপাতত বাসা টু অফিস টু ক্লাস টু ঘুম। এক সময়ের স্বপ্ন গল্পকার হওয়া আজ গল্পের মতোই লাগে। বাংলার সাহিত্যাকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা ! ;) ;) তারপরও ভাবি...এই বেশ ভালো আছি... সামু বা অন্যান্য ব্লগ সাইটগুলোতে প্রায়ই ঘোরঘুরি হয়। অনেক কিছুর পরও এই বিলাসিতাটুকু বাদ দিতে পারিনি। তবে শৌখিন ব্লগ লেখালেখি আপাতত বন্ধ। তবুও কাজের খাতিরে লেখাগুলো দিয়ে আপলোড চলছে-চলবে (একই সাথে পাঠকের বিরক্তি উৎপাদনও সম্ভবত!)। ছবিসত্ত্ব: গুগল ও ইন্টারনেটের অন্যান্য ইমেজ সাইটস। যোগাযোগ - ফেইসবুক: https://www.facebook.com/sandipan.Munna ইমেইল: sbasu.munna এট্ gmail.com
( নেলসন ম্যান্ডেলা কে নিয়ে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার লেখা)
বিশ্বের অনেক মানুষের মতোই নেলসন ম্যান্ডেলার কথা আমি জেনেছি দূর থেকে, যখন তিনি দীর্ঘ ২৭টি বছর রোবেন দ্বীপে বন্দী ছিলেন। আমাদের অনেকের কাছে তিনি শুধু তখন একজন ব্যক্তি নন, তিনি এর চেয়েও বেশি কিছু—তিনি আমাদের কাছে পরিণত হয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা তথা গোটা বিশ্বের সাম্য, ন্যায়বিচার এবং সব সংগ্রামের এক প্রতীকে। তার এই প্রতীক ও দীপ্ত মশাল হয়ে ওঠার পেছনে আত্মত্যাগ এতটাই মহৎ, যা দুনিয়াজুড়ে সব মানুষের কাছে আহ্বান আর তাগিদ হয়ে কাজ করেছে মানবতার অগ্রগতির জন্য সম্ভব সবকিছু করার।
খুব বিনীতভাবে বলতে চাই, আমিও সেইসময়কার ওই আহ্বানে সাড়াদানকারীদের একজন। কলেজে পড়ার সময়ই মূলত প্রথম রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছিলাম, যোগ দিয়েছিলাম দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদ অবসানের আন্দোলনে। একজন তরুণ হিসেবে সে সময় আমি যেসব ব্যক্তিগত বাধার মুখোমুখি হয়েছি, তার কোনোটাই আফ্রিকায় প্রতিদিন বর্ণবাদী আচরণের শিকার হওয়া সেই সব মানুষের অভিজ্ঞতার তুলনায় কিছুই না। আমি ম্যান্ডেলার সেই সাহসিকতার কথা কল্পনা করতে পারি, যার কারণে তাকে বরণ করে নিতে হয়েছে দীর্ঘ কারাবাস। একইসঙ্গে তার ওই নজির আমাকে সজাগ করেছে বৃহত্তর এই জগৎকে এবং জীবনে যা কিছু ন্যায়সংগত, তার পক্ষে দাঁড়ানোর।
তার পছন্দের কথা থেকেই বলি- ম্যান্ডেলা খুব স্পষ্ট করেই বলেছেন, এই পৃথিবীকে যে রকম দেখছ, তোমাকে সেটাই মেনে নিতে হবে, এমন কোনো কথা নেই; আমাদের কাজ হবে, আমরা যে রকম পৃথিবী চাই, যে পৃথিবী আমাদের পছন্দ, তা খুঁজে নেওয়া।
বিগত বছরগুলোয় আমি গভীর এক শ্রদ্ধা ও বিনয় নিয়ে নেলসন ম্যান্ডেলাকে লক্ষ করে গেছি, অনুপ্রাণিত হয়েছি নতুন আশায়, ন্যায়বিচার ও সাম্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তার জীবনের শত কষ্ট আর আত্মত্যাগে! এই আত্মত্যাগ কিন্তু বৃথা নয়, তার এই সংগ্রাম অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে কোটি মানুষকে। সত্যিকার অর্থেই, তার জীবন আমাদের সরাসরি দাঁড় করিয়ে দেয় এই জগৎ, আমাদের জীবনকে প্রায় নিঃশেষ করা সব নৈরাশ্যবাদিতা ও আশাহীনতার বিরুদ্ধে।
কারাবন্দী থেকে তিনি যখন একজন এখন এক মুক্ত মানুষে পরিণত হয়েছিলেন; এক স্বাধীন ব্যক্তি, যিনি একই সঙ্গে পরিণত হয়েছেন প্রবল আবেগময় একটি জাতির ঐক্যে ও সম্মিলনের কণ্ঠস্বরে। একজন দলীয় নেতা থেকে তিনি হয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি এবং গণতন্ত্র ও উন্নয়নকে নিয়ে গেছেন অনেক দূর। আনুষ্ঠানিক কার্যালয় ছেড়ে এসেও ম্যান্ডেলা নিরন্তর কাজ করে গেছেন মানুষের সাম্য, সুযোগ ও মর্যাদা সমুন্নত রাখায়। তিনি নিজ দেশের পরিবর্তনের জন্য, এই বিশ্বের জন্য, এত কিছু করেছেন যে তাকে বাদ দিয়ে গত কয়েক যুগের পৃথিবীর ইতিহাস কল্পনা করাই কঠিন।
ক্যালিফোর্নিয়ায় কলেজছাত্র থাকা অবস্থায়ই আমি রাজনীতিতে প্রথম পা রেখেছিলাম, যুক্ত হয়েছিলাম রাজনীতি-আন্দোলনের সঙ্গে, আর এরও দুই দশক পর আমি এসে দাঁড়াই রোবেন দ্বীপে ম্যান্ডেলার এক সময়কার এই কারাকক্ষে। আমি তখন সদ্য নির্বাচিত এক মার্কিন সিনেটর। কক্ষটিকে অনেক আগেই রূপান্তর করা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী অসংখ্য মানুষের স্মৃতি জাদুঘরে। মনে পড়ে, সেই কারাকক্ষে দাঁড়িয়ে নিজেকে আমি পেছনের সেই দিনগুলোতে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম, এখানে প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলা ৪৬৬/৬৪ নম্বর কয়েদি—যখন তার সংগ্রাম সফল হবে কি না, একেবারেই নিশ্চিত নয়। ম্যান্ডেলাকে আমি কল্পনা করার চেষ্টা করলাম: ইতিহাস বদলে দেওয়া এক কিংবদন্তির বীর তিনি—ম্যান্ডেলা নামের এক মানুষ, পরিবর্তনের জন্য যার বিপুল আত্মত্যাগ।
মানুষ ম্যান্ডেলাকে বোঝার জন্য 'কনভারসেশন উইথ মাইসেলফ' গ্রন্থটি একটি অসাধারণ কাজ। এই বই আমাদের জন্য তার ব্যক্তিগত চিঠিপত্র, ভাষণ, সাক্ষাৎকার, বহু দশকের পুরোনো নানা দলিল-দস্তাবেজ সন্নিবেশ করে ম্যান্ডেলার যাপিত জীবনকে যাচাই করার সুযোগ করে দিয়েছে। দিনপঞ্জির আদলে কারাগারে অতিবাহিত তার সেই নিরানন্দ মামুলি দিনের বিবরণ থেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এর সব উঠে এসেছে এ বইয়ে। এখানে তাকে পাই একজন পণ্ডিত ও রাজনীতিক হিসেবে, একজন সংসারী মানুষ ও বন্ধু হিসেবে; দেখি একজন দূরদর্শী ও বিচক্ষণ নেতা হিসেবে। ম্যান্ডেলা তার লিখিত আত্মজীবনীর নাম দিয়েছিলেন 'লং ওয়াক টু ফ্রিডম'। আর এ গ্রন্থটি তার সেই অভিযাত্রার ভিন্ন পদক্ষেপগুলোকে এবং ভিন্নতর পথপরিক্রমাকে নতুনভাবে আবিষ্কারে সুযোগ করে দিয়েছে। সেই বইয়ে ম্যান্ডেলা অকপটে স্বীকার করেছেন তার দোষ এবং ভুলগুলোকে।
আমাদের সামনে ফুটিয়ে তোলা তার এই পূর্ণাঙ্গ প্রতিকৃতি থেকে নেলসন ম্যান্ডেলাই আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি কোনো দেবতা নন বরং পরিপূর্ণ একজন মানুষ। আমাদের সবার মতো তারও ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে, খামতি আছে। কিন্তু তার এসব ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকেই আমাদের প্রত্যেকের খুঁজে নেওয়া উচিত অনুপ্রেরণা।
আমরা জানি, প্রতিনিয়তই আমাদের সবাইকে ছোটবড় নানা বাধার মুখে পড়তে হয়—এর কিছু ব্যক্তিগত কিছু রাজনৈতিক। এ ছাড়া জীবনের বিভিন্ন সময়ে মুখোমুখি হওয়া ভয়ভীতি-সন্দেহ কিংবা ফলাফল অনিশ্চিত জেনেও যে কাজ করে যাওয়া কিংবা অন্যদের ক্ষমা করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা—এসব প্রতিকূলতাই জয় করা সম্ভব, যদি আমরা নিজেদের প্রতি সৎ থাকি। (সংক্ষেপিত)
( নেলসন ম্যান্ডেলার অসুস্থাবস্থায় প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার লেখা এ নিবন্ধটি হোয়াইট হাউসের নিয়মিত জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল। )
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:২৮
সন্দীপন বসু মুন্না বলেছেন: সত্য।
২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:২৬
মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: কিংবদন্তী এই নেতার প্রতি রইলো শ্রদ্ধা এবং স্যালুট
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:২৯
সন্দীপন বসু মুন্না বলেছেন: স্যালুট
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৪১
খেয়া ঘাট বলেছেন: তিনি আমাদের কাছে পরিণত হয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা তথা গোটা বিশ্বের সাম্য, ন্যায়বিচার এবং সব সংগ্রামের এক প্রতীকে।