নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাই সেকেন্ড ম্যারেজ

১৭ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:১৯




— তোমাকে কি পিক আপ করতে আসব?
কথা হচ্ছিল ইশিতার সাথে। গত দুদিন আমার আর নিবেদিতার সম্পর্কে আর তেমন কোন অবনতি হয়নি। আমার অবস্থা যথারীতি বিধ্বস্ত। গতকাল তো আমার চেহারা দেখে মা বলেই ফেললেন, কি হয়েছে? নিবেদিতা অবশ্য অনেকটাই স্বাভাবিক। মায়ের সাথে মিলে আমার সব ফেভারেট রান্না করছে। মাঝে মাঝে জানতে আসছে, আজকে কি খেতে চাই। ওদের বাসায় গতকাল দাওয়াত ছিল, সেখানেও বেশ গল্প গুজব করল সবার সাথে।
টিকেট চেঞ্জ করার পরে শিশিরকে ফোন করে সময় জানিয়েছিলাম। দিন দুয়েক আগে রিমাইন্ড করতে আবার ফোন করেছিলাম। ও জানাল, ওর শরীর খারাপ। এটা সোনার পর স্বাভাবিক ভদ্রতা হচ্ছে, ওকে বারণ করা। সেটাই করলাম। ওকে বললাম, এয়ারপোর্টে আসতে হবে না। আমি ক্যাব নিয়ে চলে আসব।
এরপরের দুদিন তেমন কোন ঘটনা ছাড়াই কাটল। নিবেদিতার সাথে খুব প্রয়োজন ছাড়া কথা বলিনি। নিবেদিতাও দেখলাম আমার সাথে কথা বলতে তেমন কোন আগ্রহ দেখাল না। খানিকটা অভিমানেই নিজের পুরনো লাইফ স্টাইলে ফিরে গেছি। নিজের ছোটখাট কাজ নিজেই করছি। মোবাইল ফোনও নিজে চার্জে দিচ্ছি। টাওয়েলও জায়গামত রাখছি। একসময় ফিল করলাম, একটা সিদ্ধান্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
আজ সকালে এই কদিনের স্মৃতি একবার রোমন্থন করলাম। নিজে নিজেই হাসলাম। আই জাস্ট কান্ট বিলিভ মাই লাক। গত পঁচিশটা দিন, কি সাসপেন্সভরা একটা সময় পার করলাম। নিবেদিতার সাথে বিয়ে। এরপরে হঠাৎই ইশিতার ফিরে আসা। দেন ইশিতাকে নিয়ে সন্দেহ আর গত দুদিন আগে শমিতের এন্ট্রি। হোয়াট অ্যা টুইস্ট অ্যান্ড টার্ন।
সবচেয়ে অবাক করা ফিলিংস হয়েছিল যখন নিবেদিতা জানাল, শমিত আমেরিকা আসছে। মনে হল চোখের সামনে হঠাৎ সবকিছু ঝাপসা হয়ে গেল। নিবেদিতাকে যে এতোটা ভালবেসে ফেলেছি, নিজেই বুঝতে পারিনি। সাথে এটাও বুঝলাম, ইট ইজ টু লেট টু রিয়ালাইজ।
এরপরে তো গত দুদিন আর তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি। আজ সকালে এল ইশিতার ফোন। আর আসলও এমন সময় যখন নিবেদিতা চা নিয়ে এসেছে। ওদিকে ইশিতার গলার আওয়াজ স্পষ্ট বলে দিচ্ছে ও চাইছে আমি যেন হ্যাঁ বলি। সামনে দাঁড়িয়ে নিবেদিতা। হঠাৎ কি হল, দুটো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। নিবেদিতার জীবন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেব আর ইশিতাকে বারণ করব না। কেন করলাম, জানি না। কেবল ইশিতার প্রশ্নের উত্তরে জানালাম
— তোমার যদি খুব অসুবিধা না হয়।
— নাহ। অসুবিধা আর কি। তুমি তো ফিরছ ফ্রাইডে তে। এরপরে তো দুদিন ছুটি আছেই।
—ওকে দেন। দেখা হবে।
ফোনটা রাখলাম। নিবেদিতার হাত থেকে চায়ের কাপটা নিলাম। হঠাৎ ফিল করলাম, নিজেকে বেশ শান্ত লাগছে। নিবেদিতার দিকে তাকিয়ে স্মিত একটা হাসিও দিলাম। চায়ে চুমুক দিয়ে জানালাম ‘সুন্দর হয়েছে’। নিবেদিতা ঠাণ্ডা চোখে আমার দিকে একবার তাকাল। এরপরে ড্রেসিং টেবিলের টুলটা টেনে আমার সামনে বসল।মন বলছে, এখন কিছু একটা হবে। তেমন কিছু হল না। ঠোঁটে একটা স্মিত হাসি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকল। আমি কিছুক্ষণ চায়ে চুমুক দিলাম। এখনও কিছু বলছে না দেখে একসময় আমিই বললাম
— কিছু বলবে?
নিবেদিতা মাথা নেড়ে জানাল, না। অবাক হলাম। কিছু যদি না ই বলে তবে হঠাৎ বসল কেন? জানতে চাইলাম
-- দেন?
— তুমি বলবে।
— মানে?
— মানে তোমার চোখ বলছে, আমাকে তুমি আমাকে তিনটে কথা বলতে চাও।
এবার আমি একটা বাঁকা হাসি দিলাম। জানতে চাইলাম
— তাই? তা কি বলব সেটা বলছে না?
— সেটাও বলছে, বাট আই ওয়ান্ট টু হিয়ার ইট ফ্রম ইউ।
বেশ কিছুক্ষণ ওর দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম। এরপরে বললাম
— তেমন কিছু বলার নেই। জাস্ট, এটাই, যে তোমাদের জীবন থেকে আমি সরে যাব।
— গুড। নেক্সট?
— নেক্সট মানে?
— পরের কথাটা।
— আর কিছু বলার নেই।
— তোমার চোখ তো তা বলছে না।
এবার হেসে ফেললাম। বললাম
— তা কি বলছে আমার চোখ।
আমার তখন চা খাওয়া শেষ। আমার হাত থেকে চায়ের কাপটা নিল। এরপরে স্মিত হেসে ও উঠে দাঁড়াল। এরপরে ফিরে যেতে লাগল।
— বললে না, কি বলছে আমার চোখ?
স্মিত হেসে উত্তর দিল
— না, ওটা তোমাকে নিজের মুখেই বলতে হবে। এনিওয়ে, বাবা বললেন আটটায় যেহেতু রিপোর্টিং, বাসা থেকে বেরোতে হবে ছটায়। অ্যান্ড দ্যাট মিনস,, কথাটা বলার জন্য তোমার হাতে আর মাত্র নয় ঘণ্টা আছে। অ্যান্ড ইয়োর টাইম স্টার্টস নাও।
বলে রহস্য মাখানো একটা হাসি দিয়ে নিবেদিতা চলে গেল। দিস ইজ নিবেদিতা। আমার কথা না বলা, আমার অভিমান, সবটাও ও লক্ষ্য করেছে। হয়তো কিছুটা এঞ্জয়ও করেছে। আর শমিতের কারণে নেয়া আমার সিদ্ধান্তটা বুঝে নিতে ওর সময় লাগেনি। বাট সেটা শুনে ও হাসল কেন? ও কি সেটাই চায়?
একটু পরে ব্রেকফাস্টের টেবিলে ডাক পড়বে। নিয়ম মাফিক তখন থেকেই মা কান্নাকাটি শুরু করবে। আমার দুই বোনও ফ্যামিলিসহ আসবে। ছোট ভাই তো এবাসাতেই থাকে। সবার মন খারাপ শুরু হবে। মায়ের মত কাঁদবে না, বাট ‘ভাইটা তো সুখে আছে’ এই ভেবে নিজেদের সান্ত্বনা দেবে। এবার যোগ হচ্ছে নতুন একজন সদস্য, নিবেদিতা। ওর কেমন লাগবে?
ডাইনিং রুমে চিৎকার চেঁচামেচি শোনা যাচ্ছে। দুই বোন, তাঁদের আণ্ডা বাচ্চাসহ এসে গেছে মনে হচ্ছে। আমি উঠে পড়লাম। লক্ষ্য করলাম, ফিলিং ফ্রেস। এই দুদিন মনটা যেমন অশান্ত হয়ে ছিল, তেমনটা এখন আর নেই। হাসিমুখেই ডাইনিং টেবিলে বসলাম। সবার সাথে হেসে হেসেই কথা বললাম। দুএকবার আড়চোখে নিবেদিতার দিকে তাকালাম। ওর তেমন ভ্রুক্ষেপ নাই। ওর সব মনোযোগ মাকে হেল্প করায়।
এরপরে সব ভাই বোন মিলে জম্পেশ আড্ডা হল। একসময় লক্ষ্য করলাম, আমি ঠিক ওদের ভেতরে নেই। মাথায় শুধু ঘুরছে, নিবেদিতা আমার চোখে কি দেখতে পেয়েছে, সেই প্রশ্ন। একসময় ‘আমি একটু আসছি’ বলে নিজের রুমে ফিরে আসলাম। যথারীতি আমার প্রিয় জায়গা ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। রোদের তেজ নেহাত কম না, তারপরও রুমে গেলাম না। সিগারেট ধরালাম। এমন সময় ফিল করলাম নিবেদিতাও রুমে এসেছে। আমার পেছন থেকেই জানতে চাইল
— উঠে এলে যে? সবাই জানতে চাইছে কি ব্যাপার। চল।
ওর দিকে না তাকিয়েই বললাম
— পাজল সলভ করছি।
যদিও ফিরে তাকালাম না, তারপরও জানি, ওর ঠোঁটের কোণে একটা দুষ্টুমির হাসি দেখা দিয়েছে। ধীরে ধীরে ব্যালকনিতে এসে দাঁড়াল। চোখের ওপর হাত দিয়ে রোদ আটকিয়ে বলল— কি এই রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছ। ভেতরে চল।
নির্বিকারভাবে সিগারেট টানতে টানতে বললাম
— এখানে আমার ব্রেন ভাল খোলে।
— তা অনেকক্ষণ তো আছ, খুলেছে?
— আই থিঙ্ক, খুলেছে।
ধীরে ধীরে ওর দিকে তাকালাম। ঠোঁটের কোণে সেই দুষ্টুমির হাসি। ভ্রু নাচিয়ে জানতে চাইল
— সো? তোমার খুলে যাওয়া ব্রেন থেকে পাজলের কি সলিউশান বের করল?
রাস্তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। সেদিক থেকে নিবেদিতার দিকে ফিরে তাকালাম। ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি নিয়ে কেটে কেটে উচ্চারণ করলাম
— দ্যা সলিউশান অফ দ্যা পাজল ইজ, আমার চোখ নেক্সট যে কথাটা তোমাকে বলছে, তা হচ্ছে, আই লাভ ইউ।
নিবেদিতার সারা মুখ জুড়ে একটা ঝলমলে হাসি ছড়িয়ে গেল। এতোটা সুন্দর ওকে কখনও লাগেনি। চোখে খানিকটা লজ্জা নিয়েই আমার দিকে তাকাল। এরপরে মাথা ঝুঁকিয়ে সম্মতি জানিয়ে বলল
-- গ্রেট।
এরপরে আমার হাত থেকে সিগারেটটা নিল। ঠোঁটে লাগিয়ে একরাশ ধোঁয়া টানল। এরপরে ওপরের দিকে মুখ করে ধোঁয়া ছাড়ল। আলতো করে ঘাড় বাঁকিয়ে আমার দিকে তাকাল। টিপিক্যাল মাস্টারনির মত পরীক্ষা নেয়ার ঢঙে জানতে চাইল
— অ্যান্ড দ্যা থার্ড ওয়ান?

চলবে

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:৪৮

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: দ্যা সলিউশান অফ দ্যা পাজল ইজ, আমার চোখ নেক্সট যে কথাটা তোমাকে বলছে, তা হচ্ছে, আই লাভ ইউ।
আওওও, সো সুইট! এই দুজন দুজনকে ভালোবাসে! কিন্তু দুজনের পাস্টের অপশনগুলো মনকে স্থির হতে দিচ্ছেনা। দেখা যাক তৃতীয় কথাটি কি হয়?

অপেক্ষায় পরের পর্বের.......

১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:৪০

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

২| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:৩৩

রুহুল আমিন খান বলেছেন: waiting................

১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:৪১

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: এসে গেছে পরের পর্ব

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.