নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সব চরিত্র কাল্পনিক

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:০৭



— মেয়েটা কে?
— কোন মেয়েটা?
— ন্যাকামো কর না, তখন থেকে মেয়েটাকে স্টেয়ার করে যাচ্ছ।
এক মুহুর্ত ভাবলাম। আরেকবার ট্রাই করব কি না। পরে ক্ষান্ত দিলাম। স্বীকার করে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। ধীরে ধীরে অনার দিকে তাকালাম। কিছুটা অপরাধীর ভঙ্গি করে তথ্যটা দিলাম।
— ও স্মৃতি।
— কোন স্মৃ… ও মাই গড, এই তোমার সেই স্মৃতি?
অনার দিকে আবার তাকালাম। রিয়াকশান বোঝার চেস্টা করছি। বিস্ময়? না ক্রোধ? নাকি ঝড়ের পুর্বাভাস? মনে মনে যখন অ্যানালাইসিস করছি, তখন অনার ঠোটের কোণে হাসির একটা রেখা দেখা গেল। নিশ্চিন্ত ফিল করব কি না ভাবছি এমন সময় অনাই বলল
— সাথের ছেলেটা কে?
সেটা নিয়ে আমিও ভেবেছি, তবে সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। ছেলেটাকে আগে কখনও দেখেছি বলে মনে পড়ছে না। প্রোবাবলি নিউ রিক্রুট। তবে যেভাবে মাথা নিচু করে স্মৃতির পাশে বসে আছে, তাতে মনে হচ্ছে স্বামী। তথ্যটা দেয়ার জন্য মুখ খুলতে যাব এমন সময় স্মৃতিই বলল
— গিয়ে জিজ্ঞেস করবে নাকি?
ভ্রু কুচকে স্মৃতির দিকে তাকালাম। ইয়ার্কি করছে? না পরীক্ষা? অনাও আমার দিকে তাকাল। ভ্রু নাচাল, যার মানে দাড়ায়, ‘ইচ্ছে করছে?’
অনার চেহেরায় কিছু একটা ছিল। মনে হল, ‘হ্যা' বলাটা নিরাপদ। তারপরও রিস্ক নিলাম না। সত্যি বলতে কি, স্মৃতিকে দেখে হার্টের রেট কিছুটা বেড়ে গিয়েছিল। চেহারায়ও সম্ভবতঃ কিছুটা উদ্গ্রীব ভাব এসে গিয়েছিল। ব্যাপারটা অনার দৃষ্টি এড়ানোর কথা না। এখন হাসিমুখে কথা বললেও, কোন এক সময় অনা এই উদ্গ্রীব ভাবের জন্য প্রতিশোধ নেবে। কোন একটা ছুতোয়, ঠিকই তার শ্লেষ ঢালবে। আর আমার মত যেকোন ঘর পোড়া গরু এই অবস্থায় যা করত, আমিও তাই করলাম। ওর প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে টপিক চেঞ্জ করতে চাইলাম। বললাম
— চলো ফেরা যাক।
অনা মিস্টি করে হাসল। বলল
— তুমি চাইলে গিয়ে আলাপ করে আস। আমি কিছু মাইন্ড করব না।
ওর গলার আওয়াজে কিছু একটা ছিল। বুঝলাম, শি মেন্ট ইট। ফলে আমার ভেতরেও ইতস্ততঃ ভাবটা কাটতে শুরু করল। ঠিক অ্যাডভেঞ্চার টাইপ না হলেও কাছাকাছি কিছু একটা অনুভব করলাম। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম, যা হবে দেখা যাবে। স্মৃতির সাথে আলাপটা করি। একবার মুখোমুখি হওয়াটা জরুরী। বেশ কিছু ব্যাপার মিটিয়ে ফেলা দরকার।
অনার দিকে আবার তাকালাম। অনা আমার দিকেই তাকিয়ে আছে। বোধহয় আমার সিদ্ধান্তের জন্যই অপেক্ষা করছে। ধীরে ধীরে উঠে দাড়ালাম। অনার চোখে চোখ রেখে বললাম
— তথাস্তু।


পরিচয় পর্ব শুরু করা যাক। আমি ইশতিয়াক। পেশায় অ্যাডভোকেট। সুপ্রীম কোর্টে আছি। অনা কে, তা তো বুঝেই গেছেন। আমার স্ত্রী। তবে দ্বিতীয় স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী? সে সম্পর্কে একটু পরে বলছি। আর কিছুটা দুরের গাছতলায় যে যুগল বসে আছে, ওদের মধ্যে নারী চরিত্রটির নাম, স্মৃতি। আমার এক্স। না না, স্ত্রী না, এক্স প্রেমিকা। আপনাদের বোধহয় কনফিউজ করে ফেলছি। এক্স প্রেমিকা বলাতে হয়তো ভাবছেন, স্মৃতির সাথে প্রেম ছিল বাট বিয়ে হয় আমার প্রথম স্ত্রী ইশিতার সাথে। ব্যাপারটা ঠিক তেমন না। ইশিতার সাথে আমার সেটল ম্যারেজ। বাট স্মৃতির সাথে আমার প্রেমটা তারপরে। পরকিয়া প্রেম আর কি।
এনিওয়ে, আমাদের প্রেমের কি পরিণতি হয়েছিল, তা নিয়ে পরে কখনও আলাপ করা যাবে, আপাততঃ আমি ধীরে ধীরে সেই গাছের নীচে বসা স্মৃতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। স্মৃতি ওখানে ঠিক একলা নেই। সঙ্গে একজন পুরুষ সঙ্গী আর কিছু নারী সঙ্গিনী। বেশ হাসিখুশী পরিবেশে গল্প গুজব চলছে।
আমি এগিয়ে যাচ্ছি আর মনে মনে ফন্দি কষছি, কি বলে আলাপ শুরু করা যায়।
স্মৃতির একেবারে কাছে পৌছবার আগেই স্মৃতি আমাকে দেখতে পেল। এক নজর তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিল। আবার গল্পে ফিরে যাওয়ার ভান করল। বাট আই নো, শি ইজ ওয়েটিং। কখন আমি কাছে গিয়ে ওর সাথে আলাপ শুরু করব।
— কেমন আছ?
প্রশ্নটা আমিই করলাম। অপেক্ষা করে আছি, কি রেসপন্স দেখায়। কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থাকল স্মৃতি। এরপরে স্মিত হাসি দিয়ে উত্তর দিল
— ভাল। তুমি?
— এই, চলে যাচ্ছে।
সো, পুরনো সেই অভিমানটা এখন থিতিয়ে গেছে বলেই মনে হল। যাওয়ারই কথা। পাঁচ বছর ইজ কোয়াইট অ্যা লং টাইম। জিজ্ঞেস করলাম
— তোমার কি কোন বই বেরিয়েছে?
মিস্টি একটা হাসি দিল স্মৃতি।
— হ্যা। কবিতার।
— আই সি।
— তোমার?
— নাহ। অনেকদিন কবিতা লেখা হয় না।
হঠাৎ কিছু মনে পড়েছে এমন ভাব করে পাশে বসা ছেলেটির দিকে তাকাল। এরপরে আমার দিকে ফিরে পরিচয় পর্ব শুরু করল
— পরিচয় করিয়ে দিই, ও আদিল।
হ্যান্ড শেকের জন্য হাত বাড়িয়ে দিলাম। নিজের পরিচয় দিলাম
— আমি ইশতিয়াক। অ্যাডভোকেট সুপ্রিম কোর্ট।
ছেলেটা আমার বাড়িয়ে দেয়া হাতটা গ্রহণ করল। ছোট্ট করে শুধু জানাল
— আই নো।
এই ছোট্ট উত্তরের আরও একটা মানে হচ্ছে, আপনাদের পুরনো ইতিহাস আমি জানি। এই মুহুর্ত পর্যন্ত আমার হিসেবে ছিল। এর পরে কি হবে, তা জানি না। সব কিছুই নির্ভর করছে, স্মৃতি কি চাইছে, তার ওপর। তাই কথা না বাড়িয়ে স্মৃতির দিকে তাকিয়ে থাকলাম। অ্যান্ড দেন ইট হ্যাপেন্ড। স্মৃতি বাকীদের সবার দিকে তাকিয়ে বলল
— আমি একটু আসছি।


— অনেকদিন পরে ঢাকায় এলে।
— হ্যা, প্রায় পাঁচ বছর পরে।
‘পাঁচ বছর’ কথাটা ইচ্ছে করেই বলল মনে হল। ভেবেছিলাম, সময়ের সাথে সাথে ভুলে গেছে, বাট মনে হচ্ছে আই অ্যাম রং। খুব দ্রুত ভেবে নিলাম, আলোচনা কোনভাবেই ওদিকে গড়াতে দেয়া যাবে না। স্মৃতি যেমন ক্যারেকটার, কোন একটা সিন ক্রিয়েট করা অসম্ভব কিছু না। ওর নতুন প্রকাশিত কবিতার বইয়ে ফিরে যাওয়া যায়। কিছু বলার আগেই স্মৃতি জানতে চাইল
— তোমার খবর?
— চলে যাচ্ছে একরকম।
— মেয়েটা কে?
স্মৃতির দিকে তাকালাম। স্টেয়ার তাহলে আমি একাই করিনি। স্মৃতিও আমাকে দেখেছে। অনাকেও লক্ষ্য করেছে। উত্তর দিতে যাব এমন সময় স্মৃতিই বলল
— বউ? না আমার মত ঝোলানো টাইপ?
সো, টাইম হ্যাড নো ইম্প্যাক্ট। অভিমান, রাগ কোনটাই কমেনি। এই ব্যাপারটার জন্য ঠিক প্রস্তুত ছিলাম না। যেভাবে হাসিমুখে আমার সাথে গল্প করতে এগিয়ে এল, তাতে মনে হয়েছিল, ক্যাজুয়াল টাইপ আলাপ হবে। এখন তা মনে হচ্ছে না। কি করব ভাবছি, এমন সময় স্মৃতি নিজেই বলল
— ভয় নেই। সিন ক্রিয়েট করব না।
ফ্যাসফ্যাসে টাইপ একটা হাসি হাসবার চেস্টা করলাম। বললাম
— এখনও রেগে আছ?
স্মৃতি চোখ তুলে তাকাল। ঠিক আগুন না ঝরলেও, একেবারে ঠান্ডা ছিল না। দ্রুতই নিজেকে সামলে নিল স্মৃতি। মুখে একটা হাসি টেনে জানতে চাইল।
— ইশিতার খবর?
গলার আওয়াজে সততা ছিল। সত্যিই জানতে চাইছে ইশিতা সম্পর্কে। যা জানি, তা জানালাম।
— ভালোই আছে। দেখা হয় মাঝে মাঝে।
— সুপ্রীম কোর্টেই তো আছে।
— হ্যা।
— আর বাচ্চারা?
— মায়ের সাথেই থাকে। মাঝে মাঝে দেখা করতে যাই।
— তোমাকে ক্ষমা করেছে?
— মনে হয় না। মেয়ে তো, একটু সেন্সিটিভ বেশি।
— এখনও নিজেকে নির্দোষ ভাব, না?
— ঠিক নির্দোষ না, তবে ঘটনাটাকে বড় কোন অপরাধও মনে করি না।
— বলতে লজ্জা করল না?
এবার স্মৃতির দিকে তাকালাম। ওর চোখ দিয়ে আগুন বেরোচ্ছে। এতোটা রাগ মানুষ পুষে রাখে কি করে? রাগ তো আমারও হয়েছিল। চোখের সামনে আমার সংসার তছনছ হয়ে গিয়েছিল। ইশিতা ডিভোর্স নিল। মেয়েদুটোকে চিরতরে হারালাম। এখনও ওরা হাসিমুখে আমার সাথে কথা বলে না। তারপরও তো…
'ঝগড়া করব না’ সিদ্ধান্তে আর কতক্ষণ অটল থাকতে পারব জানি না। তবে এটা বুঝতে পারছি ঠিক 'সফট অ্যাপ্রোচ' মুডে আমিও আর নেই। এনাফ ইজ এনাফ। জানতে চাইলাম
— একটা কথা বলব?
—গালি দেবে?
— না, একটা প্রশ্ন করব।
অবাক চোখে কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকাল স্মৃতি, এরপরে খুব শান্ত স্বরে জানতে চাইল
— বল
— তোমার রাগটা ঠিক কোন জায়গায়?
— মানে?
— কি এমন করেছিলাম। মিস্টি মিস্টি কিছু মিথ্যে বলে ফ্লার্ট, এই তো?
— ওটা ফ্লার্ট ছিল?
— মানে? তোমার কি এখনও ধারনা ইট ওয়াজ লাভ?
স্মৃতি কড়া কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু আমার দিকে তাকিয়ে থেমে গেল। সম্ভবতঃ আমার চেহারায় কিছু একটা ছিল। চোখ নামিয়ে জানতে চাইল
— এমনটা কেন করলে আমার সাথে?


স্মৃতি আর আমাকে জড়িয়ে যে স্ক্যান্ডালটা বছর পাচেক আগে ফেসবুকে বেশ আলোচিত হয়েছিল, তা খুব নতুন কিছু না। একজন বিবাহিত পুরুষের টিপিক্যাল পরকীয়া। স্ক্যান্ডালের গন্ধ মানেই হিট টপিক। হলও তাই। দেখতে দেখতে ব্যাপারটা টক অফ দ্যা ফেসবুক হয়ে গেল।
না হয়ে অবশ্য উপায়ও ছিল না। নারীবাদী অ্যাক্টিভিজিম করে আমি তখন বেশ সেলিব্রিটি। প্রেমের যেসব কবিতা লিখতাম, সেসবগুলোও তখন ‘দারুণ’ 'সুন্দর' টাইপের কমেন্ট পেত। সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল বিশাল এক ফেসবুকীয় অনুসারী বাহিনী। সব মিলিয়ে ফেসবুকে আমার তখন রমরমা অবস্থা। প্রগতিশীল, উদারপন্থী আরও যত ভাল টাইপের বিশেষণ আছে, সবগুলি তখন আমার দখলে। অনুরাগী, শুভাকাঙ্খীর সংখ্যা তখন বেশ ঈর্ষনীয়।
এমনই এক অনুসারী, ভক্তা ছিল স্মৃতি। আমার কবিতা, ব্লগ, স্ট্যাটাস সবকিছুতেই সে মুগ্ধ হত। কয়েকদিন আলাপ পরিচয়ে ওকেও আমার ভাল লেগে যায়। এরপরে…। প্রেম বলুন আর ফ্লার্টিংই বলুন, ঘটনাটা ঘটে। প্রথম দিকে হয়তো কিছুটা প্রেম ছিল। না না, হয়তো না, আই থিঙ্ক শুরুতে ব্যাপারটা দুতরফাই ছিল। ইশিতার সাথে সংসার তখন প্রায় পনের বছর পেরিয়েছে। সো, কিছুটা একঘেয়েমি তো ছিলই। ওদিকে স্মৃতির সঙ্গও মন্দ লাগত না। সো, ডিসাইড করি, লেট ইট গো।
এসব মেয়ে যে ব্যাপারটা বেশি খায়, সেটাই ইউজ করলাম। 'বউয়ের সাথে বনে না’ ‘আমি মানুষ হিসেবে খুব একা’ টাইপ কাদুনি গাইলাম। কাজেও দিল। শুরু হল রোমান্স। অ্যান্ড দেন, এখানে সেখানে ঘুরতে যাওয়া টাইপ এপিসোড শুরু হয়। এরপরে যা হয় আর কি। বছর খানেক প্রেম করার পরে স্মৃতিকেও একঘেয়ে লাগতে লাগল। সো...
সিদ্ধান্ত নিই, সম্পর্কের ইতি টানব। শুরু করি ব্যাকট্র্যাক। প্রথম প্রথম ইগনোর করা শুরু করলাম। ভেবেছিলাম, অভিমান করে একসময় নিজেই সম্পর্কে ছেদ টানবে। তেমনটা হল না। বরং ইশিতাকে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে গল্প শোনাতে শুরু করল। বুঝলাম, কাহিনী যতটা সহজ হবে ভেবেছি, ততোটা সহজ হবে না। তাই একদিন ডেকে, ‘উই আর জাস্ট গুড ফ্রেন্ড’ টাইপ ফর্মুলা ইউজ করি।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নায়িকারা যা করে, আমিও তেমনই কিছু হবে ভেবেছিলাম। সম্পর্কে আর আকর্ষণ নেই দেখে নিজেই সরে দাড়াবে। হয়তো, দিন কয়েক কান্নাকাটি করবে, বাট নিশ্চিতভাবে রণে ভঙ্গ দেবে, এমনই কিছু আশা করেছিলাম। ইশিতা নিজেও ব্যারিস্টার, সো ব্যাপারটা আর এগুলে আই উইল বি ইন প্রব্লেম। এ ব্যাপারটাও আমাকে ভাবাচ্ছিল। মেয়ে দুটোও বড় হচ্ছে। সো আই হ্যাড নো অপশান বাট টু কাম ব্যাক।
আমি যখন ওর ফোন রিসিভ করা বন্ধ করে দিলাম, ওর ম্যাসেজের রিপ্লাইয়ে ‘হু' ‘হা’ কিংবা ইমোকটিন দিয়ে সারতে শুরু করলাম, তখন সম্ভবতঃ ও বুঝে যায়, দ্যা স্টোরি ইজ ওভার। ভেবেছিলাম, ব্যাপারটা আমার জন্য হেল্পফুল হবে। বাকী সব মেয়েদের মত অভিমান নিয়ে ধীরে ধীরে দুরে সরে যাবে, বাট শি ডিড সামথিং এলস। ইশিতাকে সবকিছু জানিয়ে ম্যাসেজ করে।
তেমন লাভ হল না। ইশিতাকে কোনরকমে বুঝিয়ে সুঝিয়ে যখন শান্ত করলাম। অ্যান্ড আই থট, দ্যা স্টোরি ইজ ওভার। বাট আই ওয়াজ রং। স্মৃতি যখন বুঝল, আমি ব্রেক আপ করতে যাচ্ছি আর ইসিতার কাছেই ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তখনই শি গেভ হার ফাইনাল ব্লো। অ্যা মাইটি ব্লো বিলো দ্যা বেল্ট।

আসলে, যে ব্যাপারটা কখনও ভাবিনি, তা হচ্ছে, শি ক্যান হিট ব্যাক। আর এখানেই আমি সবচেয়ে বড় ভুলটা করি। ঠিক যখন ভাবতে শুরু করেছিলাম, স্মৃতি ইজ গন ফ্রম মাই লাইফ, ঠিক তখনই বিশাল এক আবেগ তাড়িত স্ট্যাটাস দিয়ে, আমাদের ম্যাসেজবক্সের ইন্টেমেট আলাপ ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। অ্যান্ড দাস শি নক মি ডাউন।
যেহেতু এভ্রিথিং ইজ ফেয়ার ইন ওয়ার, তাই বলা যায়, শি ওয়াজ নট রং। অনেস্টলি স্পীকিং, এই বিলো দ্যা বেল্ট অ্যাটাক নিয়ে আমি নালিশও করছি না। যা বলতে চাইছি, তা হচ্ছে ও যে এভাবে ফেসবুকে আমাদের ইন্টিমেট আলাপ প্রকাশ করে দেবে, দ্যাট ওয়াজ বিয়ান্ড মাই ওয়াল্ড ইমাজিনেশান। আমাকে আঘাত করতে গিয়ে ও যে নিজের ওপর এতোটা আঘাত টেনে নেবে, একবারের জন্য ব্যাপারটা মাথায় আসেনি। সো ব্যাপারটার জন্য প্রিপেয়ার্ড ছিলাম না।

তিল তিল করে গড়ে ওঠা আমার এতোদিনের ইমেজ মুহুর্তে মধ্যে ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়। দারুন জ্বালাময়ী নারীবাদী স্ট্যাটাস দিয়ে যে নারী দরদী ইমেজ গড়ে তুলেছিলাম, তা এক লহমায় ভন্ডামিতে পরিণত হয়ে গেল। কারো আর বুঝতে বাকী রইল না, মুখে নীতিবাক্য আউড়ালেও, অ্যাজ অ্যা পারসন, আই অ্যাম অ্যা চিটার।
এরপরে কাহিনী আর ট্র্যাকে আসেনি। ইনফ্যাক্ট ইশিতাকে বোঝানোর চেস্টা আর করিনি। কিছুদিনের ভেতরেই ও ডিভর্স ফাইল করে। মেয়েদের নিয়ে আলাদা হয়ে যায়। মেয়েদের সামনে দাড়াবার মুখও আমার ছিল না। কি করব ভেবে না পেয়ে নিজেকে অনেকটা ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। অ্যান্ড হেয়ার আই অ্যাম নাও। অনার সাথে দ্বিতীয় বিবাহ।




আজকে বইমেলায় না আসলে স্মৃতির সাথে হয়তো দেখাও হত না। স্মৃতি সম্পর্কে যে একেবারে খোঁজ খবর রাখিনি, তা বলব না। শেষ যে খবর পেয়েছিলাম, তা হচ্ছে, একটা স্কলারশীপ পেয়ে ও জাপান চলে যায়। ওখানেই ছিল বলে জানতাম। আজ দেখা হওয়াতে বুঝতে পারলাম, ও ফিরে এসেছে।
আদিল কে, জানতে চাওয়ার সুযোগ হয়নি। আমাদের আলাপচারিতা ঠিক এপথে এগোবে, ভাবিনি। তবে যা হল, খারাপ হয়নি। এতো অনায়াসে ওকে সত্যটা বলতে পারলাম দেখে নিজেই অবাক হচ্ছি। সব কথা শুনে ‘আজ আসি’ বলে হঠাৎ করেই স্মৃতি উঠে যায়। এখন কি করছে, কোথায় থাকে, এসব জানবার সুযোগ পাইনি। আমিও ধীরে ধীরে অনার কাছে ফিরে আসি।
— কি হল?
ম্লান হেসে উত্তর দিলাম
— কিছু না।
— তোমার চেহারা তো তা বলছে না
— তাই?
— গালি দিল?
— নাহ।
— তাহলে?
— ঐ একই গল্প, কেন ওর সাথে এমন করলাম।
— কি বললে?
— সত্যি কথাটা বললাম।
— কি?
— বললাম, তোমার তো অভিযোগ ছিল, কেন আমি মিথ্যে বলেছি। এখন বল, সত্য বললে কি হত? তুমি আমার সাথে প্রেম করতে? যদি বলতাম, একটু স্বাদ চেঞ্জ করতে তোমার সাথে সময় কাটাতে চাই, তুমি কি করতে? রাজি হতে? তাই মিথ্যে বলেছিলাম। অ্যাজ সিমপ্ল অ্যাজ দ্যাট। প্রতিটা সম্পর্কেই এমন কিছু ভন্ডামি থাকে।
— শুনে কি বলল?
— কিছু না।
— একটা কথা বলব?
— কি?
— স্মৃতি কিন্তু একটা কাজের কাজ করেছে।
— মানে?
— মানে, এরপরে তুমি বা তোমাদের মত যারা আছে, তারা হিসেব করে চলবে। অ্যাট লিস্ট সেলিব্রিটিগুলো।
— মানে?
— মানে, এখন থেকে ফ্লার্ট করতে গেলে দুইবার ভাববা। অন্য কোন মেয়েকে রোমান্টিক কিছু লিখতে গেলে তিনবার চিন্তা করবা, লেখাগুলোর স্ক্রিনশট ফেসবুকে আসলে তোমাদের ইমেজের কি হবে।
— আর স্মৃতি যে সবার কাছে ছোট হল?
— সো হোয়াট? রিভেঞ্জ তো নিল। তোমার জীবন তো ছাড়খাড় করে দিল। তোমাকে শাস্তি তো দিতে পারল। সেটাই ওর পাওয়া।
— ইউ থিঙ্ক শি ডিডন’ট ডু এনিথিং রং?
— নো। বাট তোমার আনপানিশড যাওয়াটা উড হ্যাভ বিন মোর রং।

শেষ

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:১৬

শামচুল হক বলেছেন: সুন্দর কাহিনী। ধন্যবাদ

২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৫৪

সোহানী বলেছেন: বুঝলাম সত্য কথন নিয়ে আসলেন এবার............... চমৎকার +++++++++

৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:৪৪

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: কাহিনীর বুনুনটা বেশ ভাল।

৪| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: একটুও কাল্পনিক নয়।

৫| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৪৬

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: গল্পটি চমৎকার লিখনশৈলীতে রচনা হয়েছে। চমৎকার ঢং, সেটিংও সুন্দর ছিলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.