নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অতিথি

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৩০



দুপুরের খাওয়া সেরে হোটেলে যখন ফিরলাম তখন বিকেল চারটে। চাবি নিতে গিয়ে রিসেপশান থেকে জানতে পারলাম, ট্যুর পার্টির বাকী সবাই দুপুরের খাওয়া শেষে শপিংয়ে গেছে। ও, এটাই তাহলে তখন প্ল্যানিং হচ্ছিল? আরও জানা গেল, ট্যুর পার্টির আজকে আর তেমন কোন প্ল্যানিং নেই। নীলার দিকে প্রশ্নবোধক দৃস্টিতে তাকালাম, ‘যাবে শপিংয়ে?’ মাথা দুদিকে নেড়ে ‘না' সুচক উত্তর দিল।
শুনে ভাল লাগল, না খারাপ, বুঝতে পারলাম না। শপিংয়ে গেলে আজ কিছু কিনে দিতে পারতাম। নীলাকে নিয়ে আসলে সেভাবে কখনও শপিংয়ে যাওয়া হয়নি। আজকে বেরোতে পারলে কিছু একটা ফেয়ারওয়েল গিফট কিনে দিতে পারতাম। তবে বিকেলটা একসঙ্গে থাকব, এটা ভেবে খারাপ লাগছে না।
রুমে ঢুকতে ঢুকতে নীলা জানাল
— রাতেও বাইরে খাব।
মাথা কাত করে সম্মতি জানালাম। এই হোটেলটাও নেহাত মন্দ না, খাবারও খারাপ হওয়ার কথা না। তারপরও বাইরে খেতে চাওয়ার কারণ ঠিক বুঝলাম না। তবে অসম্মতিও জানালাম না। বিছানায় বসতে বসতে বললাম
— শপিংয়ে গেলে পারতে।
— ছেলেটা সন্ধায় আসবে।
— কোন ছেলেটা?
— পিচ্চি ফটোগ্রাফারটা।
নীলার দিকে এবার তাকালাম। এখনও বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে। বিছানায় হেলান দিয়ে বসল। টিভির রিমোটটা হাতে নিল। অন করে নিজের পছন্দের চ্যানেল দিল। নীলার দিকে সম্ভবতঃ একটু বেশিক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম। ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম নীলার প্রশ্নে
— কিছু বলবে?
‘না' উত্তরটা মুখে প্রায় এসেই গিয়েছিল। অনেক কষ্টে নিজেকে থামালাম। অন্য সময় হলে হয়তো এড়িয়ে যেতাম। এখন কেন যেন এড়াতে মন চাইল না। কৌতুহল হঠাৎ করেই যেন লাগাম ছাড়া হয়ে গেল।
— একটা কথা জিজ্ঞেস করব ভাবছিলাম।
— এনিথিং এম্ব্যারাসিং?
— ঠিক এম্ব্যারাসিং না। আসলে…
নীলা আড় চোখে আমার দিকে তাকাল। ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি।
— অতো ভেবো না, বলে ফেল।
নীলার দিকে তাকালাম। ঠোঁটের কোণে হাসি। সমস্যা পড়ে গেছি আমি। প্রশ্নটা যে এভাবে আচমকা করতে হবে ভাবিনি। একটু সময় পেলে গুছিয়ে নিতে পারতাম। বাট এখন আর সে সুযোগ নেই। তারপরও শুরু করলাম
— ঠিক প্রশ্ন না… আই মিন…
এমন সময় দরজায় নক হল। নীলা পুরো মনযোগ নিয়ে আমার কথা শুনতে ব্যস্ত ছিল। এমন সময় বাঁধা পেয়ে ওর ভ্রু কুঁচকে গেল। দরজার দিকে তাকাল। আমিও তাকালাম দরজার দিকে। তারপরে দরজার দিকে এগোতে গেলাম, কিন্তু নীলা থামিয়ে দিল।
— আমি দেখছি।
এরপরে ও বিছানা ছেড়ে উঠে দরজার দিকে এগিয়ে গেল। দরজা খুলে একটাই কথা বলল
— আয়।
এরপরে ধীরে ধীরে নিজের পার্সের দিকে এগিয়ে গেল। ওর পেছন পেছন আসল সেই পিচ্চি ফটোগ্রাফার। দরজার ভেতরে ঢুকেই আমাকে সালাম দিল।
পার্স থেকে টাকা বের করে নীলা ছেলেটার হাতে দিল। টাকাটা নিয়ে ছেলেটা চলে গেলে নীলা দরজা লাগিয়ে ছবিগুলো নিয়ে বিছানায় ফিরে আসল। ভাবলাম এখনই বোধহয় ছবিগুলো দেখা শুরু করবে। কিংবা আমাকে দেখাবে। কিন্তু, তেমন কিছু ও করল না। ছবিগুলো বালিশের পাশে রেখে আমার দিকে ঘুরে বসল।
— সো? হোয়াট ডিড ইউ মিন?
কথাটা জিজ্ঞেস করবার জন্য প্রয়োজনীয় শব্দ আমি তখনও খুঁজে পাইনি। তারপরও শুরু করলাম
— আসলে বিয়ের পরে এতোটা প্রাঞ্জল তোমাকে কখনও দেখিনি, তাই… আই মিন…
নীলার চোখে দুষ্টুমির হাসি।
— হেল্প করব?
অবাক হয়ে তাকালাম ওর দিকে।
— মানে?
— মানে প্রশ্নটা করতে তোমাকে হেল্প করব?
এবার আমিও হেসে ফেললাম। চোখে কিছুটা দুষ্টুমি নিয়ে জানতে চাইলাম
— প্রশ্ন করতে মনে হয় না আর হেল্প লাগবে। আই থিং ইউ আন্ডারস্টুড ইট। উত্তর দেয়াটা… আই মিন… ইফ ইউ উইশ… আই মিন… ঠিক ম্যান্ডেটরি না…
বেশ কিছু সময় নীলা আমার দিকে তাকিয়ে থাকল। আমিও নীলার দিকে তাকালাম। বোঝার চেস্টা করলাম, প্রশ্নটা করে কোন সমস্যা তৈরি করলাম কি না। মনে হচ্ছে না। নীলার চোখে দুষ্টুমির হাসি। মনে হচ্ছে উত্তর দেবে। মনে মনে গুছিয়ে নিচ্ছে।
— সো প্রশ্নটা হচ্ছে, হঠাৎ করে আমি এতো হাসিখুশি কেন? এই তো?
— নট রিয়েলি… বাট...অনেকটা সেরকম।
— আই ডোন্ট থিঙ্ক সো।
— মানে?
— তোমার আসল প্রশ্নটা হচ্ছে, যে মানুষটাকে দুদিন বাদে ছেড়ে চলে যাচ্ছি, তার সাথে হঠাৎ করে এতো ঘনিষ্ঠ বিহেভ কেন করছি।
— ঠিক তা না… আসলে… ফর দ্যা লাস্ট ফিউ ডেজ, ইউ আর অ্যা কমপ্লিট নিউ নীলা। হোয়ায়?
— প্রশ্নটা শুধু তোমার মনে না, আমার মনেও এসেছিল।
নীলার দিকে তাকালাম। পরিস্থিতি হঠাৎ করে কেমন যেন একটু গম্ভীর হয়ে উঠল। আমি নিজেও খানিকটা কনফিউসড ফিল করলাম। এই প্রশ্নটা করা কি আদৌ জরুরী ছিল? নীলা বলে চলল
— আই থিঙ্ক এভ্রিথিং চেঞ্জড দ্যা মোমেন্ট ইউ সেড, ইউ লাভ মি।
বেশ বড়সড় ধাক্কা খেলাম। কথাটার মানে বোঝার চেষ্টা করলাম। গল্পে কি নতুন কোন মোড় দেখা দিচ্ছে? নীলা কি সেকেন্ড থট দিচ্ছে? তেমনটা হলে তো টিপিক্যাল বাংলা সিনেমা হয়ে যাবে। হলে মন্দ হত না। তবে আমার ধারণা তেমন কিছু না। নীলার দিকে তাকালাম। ওর চেহারা বলছে, কাহিনি অন্য কিছু।
কাহিনীটা কি, তা জিজ্ঞেস করা জরুরী না। আমার ধারণা নীলা নিজেই সেটা বলবে। অপেক্ষা করে থাকলাম।
নীলা কোলের ওপর রাখা হাতের নখগুলোর দিকে তাকিয়ে ছিল। ধীরে ধীরে চোখ তুলল।
— কারণটা বলছি, বাট রিকোয়েস্ট। কথাটা এখনই শুনবা, আর এখনই ভুলে যাবা।
নীলার চোখে কিছুটা দুষ্টুমি। আমি নিজেও খানিকটা রোমাঞ্চ অনুভব করলাম। বললাম
— বেশ। ভুলে যাব
নীলা এবার আমার দিকে তাকাল। চোখে চোখ রেখে বলতে শুরু করল
— আসলে সেদিন যখন তুমি ‘আই লাভ ইউ’ বললে, সেদিন আমার একই সাথে ভালোও লেগেছিল, আবার খারাপও লেগেছিল।
কিছু না বলে নীলার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। নীলা বলে চলল
— ভাল লেগেছিল কেন জান?
— না।
— এনি গেস?
ভাববার চেস্টার করলাম। কোন কারণ মাথায় আসছে না। নীলা আমার প্রেমে পড়েছে, এমনটা বিশ্বাস করা সম্ভব না। আবার অন্য কোন কারণও খুঁজে পাচ্ছি না। মাথা দুদিকে নেড়ে বোঝালাম, কোন গেস নেই। নীলা স্মিত হাসল। এরপরে বলতে শুরু করল
— আসলে দ্যা ওয়ে উই লিভড… মানে যেভাবে আমাদের সো কলড সংসার চলেছে… দ্যাট ওয়াজ কোয়ায়েট ইনসাল্টিং টু মি।
এবার বেশ অবাক হলাম। জ্ঞাতসারে কখনও কোন মিসবিহেভ তো কখনও করিনি। তারপরও নীলা ফেল্ট ইনসাল্টেড?
— আমি কি কখনও মিসবিহেভ করেছি?
নীলা সজোরে মাথা নাড়াল।
— আমি আসলে বোধহয় বোঝাতে পারছি না।
অবাক হয়ে নীলার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। মিসবিহেভ করার কথা নীলা বোঝাতে চায়নি, এব্যাপারে আমিও সিওর, বাট হোয়ায় দেন শি ফেল্ট ইনসাল্টেড?
— আসলে ব্যাপারটা একটু মেয়েলি। তারপরও বোঝাবার চেষ্টা করছি। তার আগে বল, আমি দেখতে কেমন?
ভ্রু কুচকে গেল। এ আবার কেমন প্রশ্ন? নীলা নোজ দ্যাট শি ইজ গুড লুকিং। তারপরও উত্তর দিলাম
— আই থিঙ্ক ইউ আর কোয়ায়েট গুড লুকিং।
— দেন?
— দেন মানে?
— প্রত্যেক সুন্দরী মেয়েরই একটা ইগো থাকে। পুরুষের মুগ্ধ দৃষ্টি আমরা যেমন এঞ্জয় করি। তেমনি মুগ্ধতা না পেলে ইনসাল্টেডও ফিল করি।
— আই সি।
— ইয়া। একজন সুন্দরী মেয়ে যতটা স্টেয়ার ডিজার্ভ করে, তুমি আমার দিকে ততোটা তাকাওনি।
ব্যাপারটা এবার খানিকটা বুঝতে পারলাম। আমাদের সম্পর্ক হয়তো হবে না, কিন্তু নীলা চাইছিল, আমি ওর প্রেমে পড়ি।সুন্দরী নারীর ইগো স্যাটিসফাই করা আর কি? আর আমি যখন জানিয়ে দিলাম, প্রেমে পড়েছি… শি ডিড এঞ্জয় ইট।
— তুমি কিন্তু কথা দিয়েছো, কথাটা ভুলে যাবে।


চলবে

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৫২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:


সুন্দর কাহিনী। তবে আগের পর্বগুলো না পড়ায় বুঝতে একটু ঝামেলা হয়েছে। সময় সুযোগে আগের পর্বগুলো পড়বো। শুভ কামনা আপনার জন্য।

০১ লা মে, ২০১৮ দুপুর ১২:২০

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: নীলা মেয়েটা প্রয়োজন ছাড়াই ভাব নিচ্ছে।

০১ লা মে, ২০১৮ দুপুর ১২:২০

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: তাই?

৩| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৩

মাহের ইসলাম বলেছেন: লেখায় হালকা হলেও সাসপেন্স থাকায় বেশি ভালো লেগেছে।

০১ লা মে, ২০১৮ দুপুর ১২:২১

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৩৯

হাসনাত সিদ্দিকী মুরাদ বলেছেন: পরের পর্ব কবে দিবেন ভাই???

০১ লা মে, ২০১৮ দুপুর ১২:২১

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: দিয়েছি

৫| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:২৩

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: পরের পর্ব এই জননে পাবতো ভাই গল্পের এই পর্বের অপেক্ষায় থেকেতো কমড়ে ব্যাথা হয়ে গেছে। যাইহোক বরাবরই আপনার লেখা এন্জয় করি। ভাল থাকবেন সময় করে লিখে ফেলেন পরের পর্ব। অপেক্ষায়।

০১ লা মে, ২০১৮ দুপুর ১২:২৩

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: কোমড় ব্যাথা কমল?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.