নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অতিথি

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৫০



সময় এখন রাত আটটা। নীলা শাওয়ার নিচ্ছে। যদিও নীলার একটু বাতিক আছে, অতিরিক্ত শাওয়ার নেয়ার, তবে আজকেরটা কারণে। গায়ে রাজ্যের ধুলো। ও বেরোলে আমিও ঢুকবো। অপেক্ষা করে আছি, কখন ও বেরোয়।
যা বলছিলাম, নীলার শাওয়ার প্রীতি। একটু কোথাও বাইরে গেলেই, ফিরে এসে শাওয়ার। মাঝে মাঝে বিরক্ত লাগলেও কখনও কিছু বলিনি। আসলে সেভাবে কখনো তো ওর ওপর অধিকার ফিল করিনি, তাই বলিনি। আসলে ওর অনেক ব্যাপারই বিরক্তিকর লাগতো। এই যেমন সাজগোজ একটু বেশিক্ষণ ধরেই করত। মাঝে মাঝে তো মনে হত… এনিওয়ে, ভদ্রতা আমাকে অনেক ব্যাপারে আটকে রেখেছিল। ভাবছি, এখন থেকে বলব। স্পেসালি গতকালকের সেই ‘স্টেয়ার' না করার ব্যাপারটা বলার পর থেকে।
সম্পর্কটার ভেতরে কোথায় যেন একটা স্নিগ্ধতা চলে এসেছে। একটা মিস্টি ভাব। যে কয়টা দিন একসঙ্গে আছি, অতিথি হিসেবে না থেকে পরিবারের সদস্যের মত থাকা, আরকি। আমিও কেমন রিলাক্স ফিল করতে শুরু করেছি। আগে যেমন কিছু বলার ক্ষেত্রে দুবার ভাবতাম, ‘বলা ঠিক হবে কি না’ কিংবা ‘কি ভাববে নীলা’-- সেই ব্যাপারটা চলে গেল।
একটা ব্যাপার স্পস্ট, কোন কথা মনে গজালেই মেয়েরা সেটা ধরে ফেলে। সো মুখে বলি আর না বলি, দে নো হোয়াট ইজ ইন মাই মাইন্ড। আড় চোখে তাকানো, লুকিয়ে লুকিয়ে দেখা, সব কিছুই এরা বুঝতেই পারে।

এনিওয়ে, গল্পে ফিরি। ট্যুর পার্টির সিডিউল অনুযায়ী আজ সেন্ট মার্টিন গিয়েছিলাম। হোল ডে ট্রিপ। সকালে বাসে করে টেকনাফ যাওয়া, এরপরে জাহাজে করে সেন্ট মার্টিন। ওখানে ঘন্টা দুয়েক ঘোরাঘুরি অ্যান্ড লাঞ্চ। দেন রিটার্ন।
এইমাত্র ফিরলাম। জার্নিটা খারাপ লাগেনি। কলেজ লাইফে যখন গিয়েছিলাম, তখন এই জার্নিটা এতোটা গোছানো ছিল না। টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন জার্নিটা সেবার করেছিলাম ট্রলারে। এবার গেলাম জাহাজে। সেন্ট মার্টিনেও দেখলাম অনেক ভাল ভাল হোটেল হয়েছে। খাবার আর রাতে থাকবার ব্যাবস্থাও আছে। সেসময় ছিল না। মনে আছে রাতে থাকবার ব্যাবস্থা নেই বলে মাত্র একঘন্টা ঘুরেই ফিরে এসেছিলাম। কারণ বিকেল চারটার পরে আর কোন ট্রলার ছিল না।
এবার অবশ্য ফিরে আসলাম কারণ প্যাকেজে নাইট হল্ট ছিল না। একবার ভেবেছিলাম, নিজেরাই হোটেল ভাড়া করে থেকে যাই, পরে প্ল্যানটা বাদ দিতে হল। হোটেল ফাঁকা নেই। তাছাড়া, নীলারও দেখলাম তেমন ইচ্ছে নেই। সো ব্যাক টু হোটেল।
আজকে আরও একটা ব্যাপার হয়েছে। আমরা কেমন ফ্রেন্ড হয়ে গেছি। আজকের সারাদিনের গল্পটা ছিল অন্য লেভেলের। নীলাও মন খুলে নিজের জীবনের কথা বলতে লাগল। কোন কোন ছেলে তার পেছনে পেছনে ঘুরত। কে কে প্রোপোজ করেছিল। কাকে কেন রিজেক্ট করেছিল, এসব। গল্প আমিও করলাম। স্কুল জীবন, কলেজ জীবন, বন্ধু বান্ধব… টিপিক্যাল অযথা সব গল্প। তবে ভাল লাগছিল। আমার কোন গল্প শুনে যখন নীলা হাসছিল, মনে হচ্ছিল আরও একটা হাসির গল্প বলি। ও আরেকটু হাসুক। একবার আমার চাহনি দেখে ‘কি ব্যাপার?’ টাইপ ভ্রুকুটি করছিল। আমিও চোখ না নামিয়েই বললাম, ‘চোখ ফেরাতে পারছি না’।

না, ঐ একটা ব্যাপার নিয়ে তেমন কোন সন্দেহ নেই। নীলা ইজ নট গোইং টু রিকনসিডার হার ডিসিশান। ও সোহেলের সাথে আমেরিকা যাচ্ছেই। যদিও গত দুদিনের ব্যাবহারে কিছুক্ষণের জন্য মনে হয়েছিল, আমার সেই ‘আই লাভ ইউ’ বলা, চেঞ্জড হার। বাট সেটা ভেঙ্গে গেছে। গতকাল কিছুটা, আর আজ পুরোটাই ভেঙ্গেছে। সোহেল ওর মন জুড়ে আছে। শি লাভস হিম ভেরি মাচ।
ব্যাপারটা বোঝার পরে যতটা খারাপ লাগবে ভেবেছিলাম, ততোটা লাগল না। নীলা সুখী হতে যাচ্ছে, এটা ভেবে খারাপ লাগছে না। বাট ডেফিনিটলি মিস হার। কিন্তু কোন নীলাকে? এতোদিন যে নীলাকে চিনতাম, সেই নীলাকে? না নতুন নীলাকে?
আমাদের এই ছাড়া ছাড়া সংসার ব্যাপারটাকে মিস করব ভেবেছিলাম। এই অন্যের ব্যাপারে নাক না গলানো টাইপ সম্পর্কটা বেশ ভাল একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং মনে হয়েছিল। মনে মনে ভেবেছিলাম, আবার যখন বিয়ে করব, তখন এমন টাইপের একটা সংসার ক্রিয়েট করবারই চেস্টা করব। নিজের মত থাকব, আর ওকেও ওর মত থাকতে দিব।
বাট নাও আই অ্যাম কনফিউজড। হঠাৎ পাল্টে যাওয়া এই নীলাকে অনেক অনেক বেশি ভাল লাগছে। সকালে টেকনাফ যাওয়ার বাসে ব্রেকফার্স্ট শেয়ার করা থেকে শুরু করে দুপুরে লাঞ্চের সময় খাবার সার্ভ করা, সব কিছুই ভাল লেগেছে। হঠাৎ করেই সম্পর্কটা কেমন স্বপ্নের মত লাগছে।
এতোদিন মোটামুটি সিওর ছিলাম, ওকে ভুলতে কিছুটা সময় লাগবে হয়তো, তবে পেরে যাব। আর আজকে? ওকে আদৌ ভুলতে পারব কি না, বুঝতে পারছি না। এই ফ্রেন্ডশিপটা না হলেই কি ভাল হত? জানি না। তবে এই নীলার সঙ্গ দারুণভাবে এঞ্জয় করছি। নীলাও করছে, আই থিঙ্ক।
নীলা বেরোল। নতুন একটা শাড়ি পড়েছে। চুল ভেজা। টাওয়েল জড়ানো। রুমে ঢুকেই আমার দিকে তাকাল
— তুমিও সেরে নাও।
সম্মতিসূচক মাথা নাড়লাম। নীলাকে বেশ ফ্রেস দেখাচ্ছে। একটু সুন্দরও কি লাগছে? জানি না। আসলে নীলাকে নতুন ভাবে দেখতে শুরু করার পর থেকে নীলার সবকিছুই ভাল লাগছে। নিজেকে সামলানো দরকার। দ্রুত ওর দিক থেকে চোখ সরালাম। ওর ভাষায় ওকে ‘ইনসাল্ট করলাম’।
স্যুটকেসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম, তার আগেই নীলা এগিয়ে গেল। আমার পোষাক বের করে দিল। ভালই লাগল। ব্যাপারটা যেন বুঝতে না পারে তাই দ্রুত ওর হাত থেকে পোষাকটা নিয়ে বাথরুমের দিকে এগোলাম। নীলা ব্যাপারটা লক্ষ্য করল কি না জানি না। তবে আমার জানবার ইচ্ছা মাথা চাড়া দিতে লাগল। হয়তো ওকে আরেকবার দেখতে ইচ্ছে করছিল। বাথরুমের দরজার কাছে পৌঁছে এমনিই তাকাচ্ছি ভাব করে পেছনে ফিরলাম।
নীলা ওয়াজ ওয়েটিং ফর দ্যাট। নীলার দিকে তাকাতেই ভ্রু কুটি করল।
— আরও কিছুক্ষণ দেখবে? বললে দাঁড়াতে পারি।
কথাটা আই থিঙ্ক আমাকে লজ্জা দেয়ার জন্যই বলল। অন্য সময় হলে লজ্জা পেতাম। বাট আজকে পেলাম না। একটা দুস্টুমি বুদ্ধি মাথায় খেলল। স্মিত হেসে বললাম
— একটু দাঁড়াও। দেখে এখনও মন ভরে নি।
নীলা দুস্টুমির হাসি দিল। মাথা থেকে টাওয়েলটা সরিয়ে চুল মুছতে লাগল। আমি দরজায় দাঁড়িয়ে সেটা দেখতে লাগলাম। নীলা তেমন কিছু বলল না। ঠোঁটের হাসিটা লেগে থাকল। একবার ভাবলাম, ও যেতে বললে, তারপর যাব। কিন্তু ও কিছু বলছে না। হয়তও আমার পরীক্ষা নিচ্ছে।
নাহ। আই থিঙ্ক নাও আই স্যুড মুভ। বাথরুমের স্লাইডিং ডোরটা ঠেললাম। ঢুকতে গেলাম এমন সময় পেছন থেকে শুনতে পেলাম।
— সত্যিই সুন্দর লাগছে? না গতকালকের কথার আফটার ইফেক্ট?
ঘুরে নীলার দিকে তাকালাম। কি বলব একবার ভাবলাম। গতকালকের কথার ইফেক্ট যে একেবারে নেই, তা তো না। এর আগেও সুন্দর লেগেছিল, বাট এভাবে তাকাইনি। নিজেকে কন্ট্রোল করেছি। আজ করিনি, এই যা। কিন্তু কথাটা কিভাবে বলব, ঠিক করতে পারছি না। উত্তর দেয়ার আগে নীলাই বলল।
— হোয়াটএভার, থ্যাঙ্কস।
হঠাৎ করে মুখে ভাষা ফিরে পেলাম। নীলার দিকে তাকিয়ে বললাম
— সুন্দর তোমাকে আগেও লাগতো, বাট সেভাবে তাকাইনি… আই থিঙ্ক… কিছুটা অভিমানে, কিছুটা সম্পর্ক তৈরি না করার ইচ্ছে থেকে। বাট…
— বাট?
— বাট ইট ওয়াজ অফ নো ইউজ। লাভ হল কৈ? ঠিকই তো তোমার প্রেমে পড়ে গেলাম। তাই ভাবছি, যা ফিল করছি, যা ইচ্ছে করছে… আই মিন… তেমন অবজেকশনেবল কিছু না হলে… লেট ইট হ্যাপেন।
নীলার ঠোঁটে দুস্টুমির হাসি ফিরে আসল। টাওয়েল দিয়ে চুল মুছছিল। সেটা থামাল। হাত সামনে এগিয়ে বাথরুমের দিকে ইশারা করল। স্মিত হেসে সম্মতি জানালাম। কিছু একটা বলতে গিয়েও বলল না।
বাট আই ডিড দ্যা আনথিঙ্কেবল। আনথিঙ্কেবল ইন দ্যা সেন্স, এধরনের শব্দ নীলার সামনে আগে উচ্চারণ করিনি। কেন করলাম, জানি না। কিছু মিন করে বলেছি কি না, বিলিভ মি, আই ডোন্ট নো। ইট জাস্ট কেম আউট। ভেজা চুলের নীলার দিকে তাকিয়ে বলে ফেললাম
— ইউ আর লুকিং সেক্সি।

চলবে

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৩০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাহ! বেশতো

ছোট হলেও অনেক গভীরতা যেন ছুঁয়ে গেল!
ভাবনার অনুভবের - -

+++

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:০০

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৪৭

নোয়াখাইল্ল্যা বলেছেন: ভাই পর্ব একটু বড় করেন।কিংবা প্রতিদিন দেন।এখন আরো সুন্দর হচ্ছে!আপনি উত্তর দেন না কেন?

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:০১

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: নতুন লেখক, ভুল ত্রুটি একটু ক্ষমাশীল দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ

৩| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:২৬

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: পড়লাম...

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৩৬

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৬

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৪৭

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: খুব ভাল লাগল এই পর্বটি। পরের পর্বের অপেক্ষায়।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:১৩

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: আসোছে

৬| ০১ লা মে, ২০১৮ ভোর ৬:১৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: সুন্দর।

০১ লা মে, ২০১৮ দুপুর ১২:১৭

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

৭| ০১ লা মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৫

এজাজ ফারিয়া বলেছেন: লেখার গভীরতাটা ভালো লাগলো :)

০১ লা মে, ২০১৮ বিকাল ৪:২৩

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.