নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অতিথি

০১ লা মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৪



থিংস কেপ্ট গোইং। ট্যুর প্ল্যান অনুযায়ী আজকে গিয়েছিলাম মহেশখালী। জাস্ট ফিরলাম। নীলা যথারীতি শাওয়ারে। আমি কিউয়ে। আজ আর গতকালকের ভুল হবে না, আই গেস।
গতকালকের ব্যাপারটাকে বোধহয় ভুল বলা ঠিক হচ্ছে না। ‘সেক্সি' স্টেটমেন্টের পরে সম্পর্কে যে ছেদ পড়বে ভেবেছিলাম, তা পড়েনি। শি টুক ইট ইজিলি। সম্পর্কটায় যে গতি এসেছিল, সেটা কন্টিনিউ করেছে।
আজকের দিনটা বেশ খানিকটা অম্ল মধুর কেটেছে। শুরুটা ভালোই শুরু হয়েছিল। শুরুতে নীলা তার টিপিক্যাল দুষ্টুমিভরা মুডে থাকলেও ব্যাপারটা মাঝে কিছুটা গম্ভীর হয়ে যায়। ‘সেক্সি' স্টেটমেন্ট কোন প্রব্লেম ক্রিয়েট না করলেও প্রব্লেম ক্রিয়েট করল অন্য একটা ব্যাপার। কিছুটা সময়ের জন্য সম্পর্কে কিছুটা আনইজি ভাব চলে আসল।
এনিওয়ে, নীলা বেরিয়েছে। আমি আর কথা না বাড়িয়ে শাওয়ারে ঢুকলাম।

আই থিং সেদিন কি হল, সেটা একটু বলে ফেলি। আসলে সেদিন তেমন কোন রিয়াকশানই দেখায়নি। স্মিত হেসে উত্তর দিয়েছিল
— ভেজা চুলে সব মেয়েকেই সেক্সি দেখায়।
নীলার দিকে তাকালাম। ব্যাপারটা হালকা করার চেস্টা করছে না। শি মেন্ট ইট। মুহুর্তে ভয়টা চলে গেল। ‘থাঙ্কস’ টাইপ কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলাম এমন সময় নীলা আবার বলল
— তবে…
— তবে?
— এধরনের ওয়ার্ড ইউজ করলে ওয়াইফরা ভাবে মিস্টার হাজব্যান্ড অন্য কিছু মিন করছে
নীলার দিকে তাকালাম। অভিযোগ? মনে হচ্ছে না। ঠোঁটের কোনে সেই ট্রেডমার্ক হাসি। বুঝলাম, কথাটা মিন করছে না, সিম্পল ফ্রেন্ডলি ডিসকাশানই মনে হচ্ছে। তারপরও ব্যাখ্যা দিলাম
— আই ডিডন’ট মিন এনিথিং।
নীলা স্মিত হাসল। সাহস দেয়ার ভঙ্গিতে বলল।
— আমাকে কি এতো বোকা মনে হয়?
নতুন এই নীলার জন্য ভাললাগা মুহুর্তে মুহুর্তে বাড়ছে। রিয়েলি ব্যাড লাক এমন একটা মেয়েকে পেয়েও হারাচ্ছি। দ্রুত নিজেকে সামলে নিলাম। উত্তর একটা দেয়া দরকার। বললাম
— ঠিক বোকা ভাবিনি, সেফ সাইডে থাকা আর কি।
— নো নিড। সবসময় এতো মাপজোক করে কথা বলাটা বন্ধ করলে বরং খুশী হব।
সম্মতি সুচক মাথা নেড়ে বললাম
— জো হুকুম।
নীলা হেসে ফেলল। এঞ্জয়ড ইট। তারপরও ভ্রু নাচালাম, ইশারায় জিজ্ঞেস করলাম, ‘হাসছো কেন?'
হেসেই উত্তর দিল
— দ্যাটস লাইক রিয়েল হাজব্যান্ড।
আজকের দিনের শুরুটা ভালই কাটল। কিছু দুষ্টুমি, কিছু খুনসুটি। ট্যুর পার্টির প্ল্যান অনুযায়ী আজকে মহেশখালী যাওয়ার কথা। সকাল সকাল ঘাটে পৌছে গেলাম। সিদ্ধান্ত হল, যাওয়া-আসা হবে স্পীড বোটে।
আমরা পুরো ট্যুর পার্টি দুটো স্পীড বোট নিলাম। বোটের ধারে হেলান দিয়ে দাঁড়ালাম। স্পীড বোট চলতে শুরু করলে দুলে উঠল। টাল সামলাতে নীলা আমার হাত জাপটে ধরল। দুষ্টুমির হাসি হেসে ওর দিকে তাকালাম। নীলাও হাসল। স্পীড বোট চলতে শুরু করলে বাতাসে নীলার চুল এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল। মাঝে মাঝে হাত দিয়ে ঠিক করবার চেস্টা করছিল। পুরো ব্যাপারটা দেখতে ভাল লাগছিল। হয়তো বেশীক্ষণ তাকিয়েছিলাম। ব্যাপারটা নীলার চোখ এড়ানোর কথা না।
সম্বিত ফিরল যখন নীলা কানে কানে জানাল,
— এভাবে তাকিয়ে থাকলে সবাই তোমাকে হ্যাংলা হাসব্যান্ড ভাববে।
স্মিত হাসলাম। মেনে নিলাম। বড় একটা নিঃশ্বাস টেনে অন্য দিকে চোখ ফেরালাম। চোখে পড়ল বড় বড় ঢেউ আর অন্যান্য নৌকা। এরপরে অন্যদিকে তাকালাম। পানি আর পাড়ের গাছগুলো। বাই টার্ন এগুলোর দিকেই তাকাতে লাগলাম। এমন সময় নীলা আবার জানাল
— একেবারে না তাকালে ভাববে, আমাদের ভেতর ঝগড়া চলছে।
নীলার চোখে দুষ্টুমির হাসি। সম্ভবতঃ ‘তারচেয়ে বরং আমাকেই দেখ’ টাইপ কিছুটা প্রশ্রয় ছিল সেই দৃষ্টিতে। হেসে ফেললাম। শ্রাগ করলাম। এরপর নীলার কানের কাছে মুখ নিয়ে বললাম
— ইন দ্যাট কেস, আই প্রেফার হ্যাংলা হাসব্যান্ড।
নীলা আড়চোখে তাকাল। স্মিত হাসি দিল শুধু, কিছু বলল না। ইশারায় বাকীদের দেখাল। দেখলাম। বাকী সদস্যদের দিকে তাকালাম। সবার সাথেই বার কয়েক 'হাই হ্যালো' হয়েছে। এদের মধ্যে দুটো কাপল আছে। একজন পুরো ফ্যামিলিসহ। তবে কেউই আমাদের সেভাবে লক্ষ্য করছে বলে মনে হল না।
নীলার দিকে আবার তাকালাম। চোখ নাচিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘কি ব্যাপার?’ ইশারায় কাপলদের দেখালাম। ওরা নিজেদের ভেতর গল্প করছে। হাজব্যান্ড মশাই বেশ উৎসাহ নিয়ে সবকিছু দেখাচ্ছে। নীলা সেদিকে একবার তাকিয়ে আমার কানে কানে বলল
— দিজ ইজ কলড হানিমুন কাপল।
দেখতে দেখতে একসময় মহেশখালী পৌঁছে গেলাম। ওখানে গিয়ে গাইড মশাই তাঁর কাজ শুরু করে দিলেন। এখানে কি কি দেখার আছে অ্যান্ড অল দ্যাট। একেকজন একেক জিনিস দেখতে আগ্রহী। সো, ডিশিসান হল, নিজের ইচ্ছেমত সবাই ঘুরবে। ফেরার সময় নির্দিষ্ট করা হল। সবাইকে তার আগে পৌঁছে যেতে হবে।
দুজন মিলে ঘুরলাম। আদিবাসীদের হ্যান্ডলুমের বেশ কিছু দোকান আছে। সেখান থেকে নীলা নিজের জন্য একটা শাল কিনল। ওকে নিয়ে শপিংয়ের সুযোগ আর হবে কি না, জানি না। তাই বললাম
— আরেকটা কেনো।
নীলা আড় চোখে তাকাল। আমার কথাটা বোঝার চেষ্টা করল। এরপরে বলল
— শাল আমার অনেকগুলো আছে। এটা কিনলাম জাস্ট শ্যুভেনির হিসেবে
— আরেকটা কেনো, আমাদের দাম্পত্য জীবনের স্যুভেনির হিসেবে।
কথাটা যদিও আমি কিছু মিন করে বলিনি, বাট বলার পরে বুঝলাম, কথাটায় কোথায় যেন একটা শ্লেষ মিশে আছে। ‘তুমি আমাকে ডিচ করলেও আমি ভদ্রলোকের মতোই আচরণ করছি।’ টাইপ একটা ব্যাপার।
নীলা আর কিছু বলল না। আরেকটা শাল পছন্দ করল। আমার দিকে না তাকিয়েই বলল
— এটা
পরিবেশ কিছুটা ভারী হয়ে যাওয়ায় আমিও আর কথা বাড়ালাম না। দাম জিজ্ঞেস করে চুপচাপ টাকাটা দিয়ে দিলাম। এরপরে জানতে চাইলাম
— এবার?
নীলা ততোক্ষণে নিজেকে সামলে নিয়েছে। মুখে হাসি টেনে বলল
— বৌদ্ধ মন্দিরে দিকে যাই?
— না
— তাহলে?
— আগে তোমার হাসি খুঁজতে যাব।
নীলার ঠোঁটে দুষ্টুমীর হাসি ফিরে আসল।
— আই ডিড’ট মাইন্ড। আসলেই তো…
— পাওয়া গেছে। এবার চল।
দুজনে এগিয়ে গেলাম। হাটতে হাটতে নীলা হঠাৎ বলল
— তুমি খুব ভাল হাজব্যান্ড হবে।
— ইফ অ্যাট অল।
— কেন, বিয়ে করবে না?
— সিদ্ধান্ত নিইনি এখনও।
নীলার দিকে তাকালাম। আমার দিকে না তাকিয়েই বলল।
— আই নো, হোয়াট আই ডিড ইজ রং… বাট আই হ্যাড নো অপশান…
প্রথম যখন বিয়ে করে, তখন এই অপরাধবোধ ওর ভেতরে ছিল না। শি ওয়াজ ক্লিয়ার ইন হার মাইন্ড… কার কি ক্ষতি হল, আই ডোন্ট কেয়ার, আমার জীবন আগে। ব্যাপারটা সম্ভবতঃ ইদানিং গজিয়েছে। স্পেশালি যেখন দেখল মানুষ হিসেবে আমি খুব একটা খারাপ না। তবে টপিকটার একটা প্রোপার এন্ডিং হওয়া দরকার। নয়তো ব্যাপারটা ওকে সারাজীবন বিরক্ত করবে। বললাম
— ডোন্ট ওরি। একটা ব্যাবস্থা হবে।
স্মিত হাসি দিল। হাটতে হাঁটতেই বলল
— একটা রিকোয়েস্ট করব?
অ্যাভয়েড করতে চাইলাম। বললাম
— আই থিঙ্ক আই নো।
— কি জান?
— এই… তুমি কি বলবে?
কিছুটা অবাক হবার ভান করল। এরপরে বলল
— তাই? তা শুনি, আমি কি বলব?
নীলার দিকে তাকালাম। দুষ্টুমি? না সিরিয়াস? মনে হল বোথ। যদিও আলাপটা টানতে ইচ্ছে করছে না, তারপরও এই উত্তরটা দিতে হবে।
আমরা পাশাপাশি হাটছি। মাঝে মাঝে নীলা চোখ তুলে আমার দিকে তাকাচ্ছে। উত্তরটা ওর দিকে তাকিয়ে বলা জরুরী। অপেক্ষা করে আছি, কখন আবার তাকায় আমার দিকে। উত্তর দিচ্ছি না দেখে নীলা আমার দিকে তাকাল। সুযোগটা নিলাম। বললাম
— নট সিওর। বাট আই থিঙ্ক, 'সরি' টাইপ কিছু। অর, 'তুমি আমাকে ছেড়ে যাওয়ার পরে, আমার কি করা উচিৎ' টাইপ কোন উপদেশ। রাইট?
নীলা বড় করে একটা নিঃশ্বাস ফেলল।
— অ্যান্ড, তুমি চাইছো না, এমন কিছু বলি।
— ইয়েস। আমি চাইছি না। আমি চাই তুমি মাথায় একটা ব্যাপার গেঁথে নাও, যে আই ক্যান হ্যান্ডল মাইসেলফ। আমাকে নিয়ে মনে কোন গিল্টে রেখো না। থিঙ্ক ইট অ্যাজ ইফ ইট ওয়াজ অ্যান অ্যাক্সিডেন্ট।
নীলা আড়চোখে তাকাল। ঠোটে ম্লান একটা হাসি। ওকে মুডে আনা দরকার। বললাম
— আরে বাবা, চিয়ার আপ। এঞ্জয় করতে এসেছো, এঞ্জয় কর।
সম্মতি জানাল। এরপরে কি মনে করে আবার আমার দিকে তাকাল। চোখে একরাশ থ্যাঙ্কস। বলল
— তোমাকে ভুলতে কস্ট হবে মনে হচ্ছে।
কথাটা ও মন থেকেই বলছে। অবিশ্বাস করবার কিছু নেই। তারপরও বললাম
— তাই?
সম্মতিসুচক মাথা নাড়ল। এরপরে হঠাৎ মুখ তুলে আমার দিকে তাকাল। কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে গেল। এরপরে চোখ নামিয়ে নিল। অস্ফুটে জানতে চাইল
— তোমার?

চলবে

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মে, ২০১৮ বিকাল ৫:১৫

নোয়াখাইল্ল্যা বলেছেন: ভাল লাগসে। শেষ দেখার অপেক্ষায় থাকলাম.।

০২ রা মে, ২০১৮ রাত ৯:৪০

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ০১ লা মে, ২০১৮ রাত ১০:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল লেখা। সহজ সরল ভাবেই লিখে যাচ্ছেন।

০২ রা মে, ২০১৮ রাত ৯:৪০

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ০৩ রা মে, ২০১৮ বিকাল ৩:০৬

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: পরের পর্বের অপেক্ষায়।

০৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৮:৪৯

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: অপেক্ষা শেষ। ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.