নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অতিথি

০৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৮:৪৮



আজ আমরা ফিরছি। আমরা মানে পুরো ট্যুর পার্টিই। এই মুহুর্তে চলছে আমাদের লাঞ্চ ব্রেক। আমরা ফুড ফিলেজ টাইপ একটা স্টপেজে অবস্থান করছি। নীলা ফ্রেস হতে গেছে। আমার আগেই হয়ে গেছে। টাইম কাভার করার জন্য নীলার জন্য অপেক্ষা না করে আমিই খাবারের ওর্ডার দিয়ে দিয়েছি। কিছুক্ষণ আগে সার্ভও করে দিয়েছে। এখনও শুরু করিনি। নীলার জন্য ওয়েট করছি। এক্ষুনি এসে পড়বে।
নাহ, গতকাল তেমন ইক্সাইটিং কিছু ঘটেনি। গতকালটাও ঘোরাঘুরির ভেতর দিয়ে কেটেছে। হিমছড়ি গিয়েছিলাম। ট্যুর পার্টি জীপে করে নিয়ে যায় আমাদের। আগেরবার দেখা হয়নি। ফিনফিনে পাতলা জমপ্রপাতটা দেখলাম। কিছু ছবি তুললাম। না এবার আর প্রফেশনাল কেউ না, এবার তুললাম মোবাইল ফোনে। কিছু সেলফি, কিছু অন্যকে দিয়ে। ট্যুর গ্রুপের কয়েকজনের সাথে আলাপও হল। কাছে একটা জায়গায় ছিল ছোটখাট একটা শপিং সেন্টার টাইপ। শাল, আদিবাসিদের তৈরি করা কাপড় দিয়ে তৈরি ড্রেস এসব।
নীলা সেখানে শপিং শুরু করে দিল। এবার অবশ্য ট্যুর পার্টির অন্য এক মহিলার সঙ্গে। আমিও ট্যুর পার্টির ভেতরে আলাপ করার মত সঙ্গী পেয়ে গেছি। ফলে এবারের ট্যুরটা কিছুটা আলাদা আলদা থাকা হল। অ্যান্ড দ্যাটস ইট। আমাদের সো কলড হানিমুন ইজ ওভার।
ও, আরেকয়া ঘটনা ঘটে। নীলা গেম মি অ্যা ট্রিট। গতকাল রাতে ও আমাকে খাইয়েছে। আহামরি কোন ঘটনা না, বাট, শি সিমস হ্যাপি। নিজের রোজগার দিয়ে আমার জন্য প্রথম কিছু করা। সর্ট অফ ফেয়ার ওয়েল তু আওয়ার রিলেশানশীপ। হাসিখুশি টাইপ গল্প গুজবও হল। ইন অ্যা নাট শেল, গতকাল বলার মত তেমন কিছু ঘটেনি, এক্সেপ্ট ওয়ান। ট্রিট দেয়ার আগে। সন্ধায়।
হিমছড়ি থেকে ফিরতে ফিরতে সন্ধায় হয়ে গেল। হোটেলরুমে নীলা নিজের ব্যাগ থেকে একটা প্যাকেট বের করে আমাকে দিল।
— তোমার জন্য।
প্যাকেট খুললাম। আদিবাসীদের হ্যান্ডলুমের কাপড়ের তৈরি একটা ফতুয়া। যদিও আমি ফতুয়া পড়ি না, তারপরও ব্যাপারটা জানালাম না। বললাম
— নাইস ওয়ান।
এরপরে থ্যাঙ্কস সহযোগে জিনিসটা নিজের স্যূটকেসে ঢোকাতে যাচ্ছিলাম, এমন সময় নীলা বলল।
— একবারের জন্য হলেও পড়ো।
নীলার দিকে তাকালাম। মনে হচ্ছে কথাটারপেছনে আরেকটা কথা লুকিয়ে আছে। মানে হচ্ছে, বলতে চাইছে, আমাকে ঘৃণা করলেও আমার দেয়া গিফটাকে কর না।
ইন অ্যা সেন্স শি ইজ রাইট। এমন একটা মেয়ে যে জেনে শুনে একটা মানুষের জীবনটা তছনচ করল, তার প্রতি আর যাই হোক ভালবাসা গজানোর কথা না। বাট, লাভ নোজ নো রুলস। নিয়ম মেনে তো আর প্রেম হয় না।
নীলার অনুশোচনার একটা ব্যাবস্থা করা দরকার। এখনই পড়া যায়, বাট সেক্ষেত্রে মনে হবে ওকে আস্বস্ত করার জন্য পড়ছি, মন থেকে না।
‘কি যে বল’ টাইপ উত্তর দিয়ে মেলোড্রামাটিক সিন ক্রিয়েট করার ইচ্ছে নেই। অ্যাভয়েড করলাম। ভেবে রাখলাম ওর সামনেই একদিন পড়ব।
— শুরু করনি?
নীলা এসে গেছে। নিজের প্লেটে পরাটা নিতে নিতে উত্তর দিলাম
— তোমার জন্য ওয়েট করছিলাম
— দ্যাট সাউন্ডস লাইক অ্যা হাউজওয়াইফ।
ঠোঁটে দুস্টুমির হাসি। নারী পুরুষ টাইপ ডিবেট করবার ইচ্ছে নাই। অ্যাভয়েড করলাম। খাবার মুখে দিলাম। নীলা আবার কথা বলল
— থ্যাঙ্কস।
কি ব্যাপারে থ্যাঙ্কস প্রশ্নটা চোখে নিয়ে নীলার দিকে তাকালাম। নীলা আমার পড়নের ফতুয়ার দিকে ইশারা করল। ইচ্ছে করেই আজকে পোশাকটা পড়েছি। একথারও উত্তর হয়না। স্মিত একটা হাসি দিলাম।
— মুড অফ?
নাহ, আমার নীরবতা ডিফ্রেন্ট মিনিং ক্রিয়েট করছে। নীলার সাথে গল্প করতে ইচ্ছে করছে না, এমন না। বাট এসব সিলি ব্যাপার নিয়ে না। টপিক চেঞ্জ করা দরকার।
— কেমন লাগল?
— কি?
— পুরো ট্যুর?
— বেশ ভাল। থ্যাঙ্কস।
নাহ, এসব ফর্মালিটি অ্যাভয়েড করতে চাইছি, কিন্তু হচ্ছে না। আর কি টপিকে আলাপ করা যায়? হঠাৎ নীলা নিজেই টপিক চেঞ্জ করল
— সোহেল আগামীকাল ফিরছে।
— ফোন করেছিল?
— না, ম্যাসেজ করেছে। ফোনটা সুইচড অফ রেখেছিলাম। এইমাত্র খুলে দেখলাম ম্যাসেজটা।
হঠাৎ করেই আলাপে চটুল ভাব সরে গেল। পরিবেশ খানিকটা ভারী হয়ে এল। আমার তরফ থেকে কোন সমস্যা যে হবে না, তা নীলা জানে। তারপরও আমি যে কোন বাধা দিব না, তথ্যটা জানাতে ইচ্ছে করছে। বললাম
— আমার এক ফ্রেন্ড আছে। ল’ইয়ার। ডিভোর্সের ব্যাপারে ওর সাথে প্রিলিমিনারি আলাপ করেছি। উইল নট বি মাচ প্রব্লেম।
কথাটা বলে নীলার দিকে তাকালাম। নীলা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হল কিছুটা কস্ট পেয়েছে। কি আশা করছিল? 'কস্ট পাচ্ছি' টাইপ কিছু জানাব। নট এগেইন। সেদিনের ব্যাপারটা ছিল অ্যাক্সিডেন্ট।
বাট পরিবেশ কেমন ভারী হয়ে উঠল। হালকা করার মত কোন উপায়ও খুঁজে পাচ্ছি না। হেল্প করল নীলার ফোন। হঠাৎ বেজে উঠল। টেবিলের ওপর রাখা ফোনটার দিকে নজর চলে গেল। স্ক্রিনে ভেসে উঠল কলারের নামটা। সোহেল।
নীলা ফোনটা রিসিভ করল। ইউজুয়ালি সোহেলের ফোন আসলে নীলা ফোন নিয়ে দুরে সরে যায়। একা কথা বলে। আজ তেমন কিছু করল না। ফোনটা রিসিভ করে আমার সামনেই কথা বলতে লাগল।
আমি চুপচাপ খেয়ে যেতে লাগলাম। না চাইলেও শুনতে হচ্ছে। ওদিক থেকে প্রশ্ন সম্ভবতঃ ছিল, ‘কি ব্যাপার ফোন বন্ধ কেন?’ উত্তরে নীলা কক্সবাজার ট্যুরে এসেছে জানাল। ফোন সুইচড অফ রাখার ব্যাপারটাও জানাল। এরপরে ওপার থেকে কি বলল জানি না, নীলা ফোন কেটে দিল। এবার নীলার দিকে তাকালাম। নীলা ঠোঁটে দুস্টুমির হাসি। খাওয়ায় মন দিল। ইউজুয়ালি ওদের আলাপ নিয়ে আমি কিছু জানতে চাই না, বাট ব্যাপারটা কেমন খটমটে লাগছে। জানতে চাইলাম
— এনি প্রব্লেম?
নীলা মাথা নেড়ে না সুচক উত্তর দিল। উত্তর দিতে চাইছে না, আই থিঙ্ক। আমিও খাওয়ায় মনযোগ দিলাম। এমন সময় নীলা হঠাৎ বলে উঠল।
— জানতে চাইছিল, কেন এসেছি।
ঝট করে নীলার দিকে তাকালাম। নাহ, যা ভেবেছিলাম, তা না। ঠোঁটে রহস্যময় একটা হাসি। বুঝলাম, এনিয়ে কোন মনমালিন্য হয়নি। হি টুক ইট ইজিলি। নাইস আন্ডারস্ট্যান্ডিং। কিছু একটা বলা উচিৎ। বললাম
— কি বললে?
— বললাম কই? দেখলেই তো ফোনটা কেটে দিলাম।
ঠোঁটে এখনও সেই হাসি। একটু বেশি সময় ধরেই হাসছে। মনে হচ্ছে, শি ইজ আস্কিং মি টু আস্ক। ও চাইছে, ওর এই হাসির কারন জানতে চাই। যদিও ব্যাপারটা ওদের পার্সোনাল, তারপরও… আই মিন পুরো ট্যুর ব্যাপারটার সাথে যেহেতু আমি ইনভল্ভড, তাই কথাটা জিজ্ঞেস করে ফেললাম।
— উত্তর দিলে কি উত্তর দিতে?
— বলতাম হানিমুনে এসেছিলাম।
নীলা দুস্টুমির মুডে আছে। বাট প্রশ্নের উত্তরটা আমার জানতে ইচ্ছে করছে। প্রশ্নটা অবশ্যে আগে মাথায় আসেনি, এখনই এলো। বললাম
— আই ডিডন’ট মিন দ্যাট। আই মিন… ইউ কুড হ্যাভ অ্যাভয়েড ইট। আই মিন…
থেমে গেলাম। নীলা আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে। কি ভাবছে? ওদের ভেতর ফাটল ধরেছে, এমন কিছু ভাবছি আমি? ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করে বোঝানো দরকার। এমন কিছু মিন করছি না। আবার কথা বলতে যাব এমন সময় নীলাই বলে উঠল
— গেস ইট।
নীলার চোখে দুস্টুমি। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম নীলার দিকে। নীলা ভ্রু নাচিয়ে জানাতে চাইল, উত্তর খুঁজে পেয়েছি কি না। হঠাৎ ব্যাপারটা পরিস্কার হয়ে গেল। আমি নিজেও হেসে ফেললাম।
— গট ইট?
মাথা ঝুকিয়ে সম্মতি জানালাম।
— তোমার মত সুন্দরী বউকে ফেলে রেখে একা কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়াটা ওয়াজ অ্যান ইনসাল্ট
— ভেরি মাচ ইনসাল্টিং। হাও ডেয়ার ইউ টুক অ্যা ডিসিশান লাইক দ্যাট। তোমার আসল বউ হলে মেরে তোমার মাথা ফাটায়া দিতাম।
নীলার দিকে তাকালাম। মুখ ভরা ঝলমলে হাসি। সেদিকে তাকিয়ে মনে মনে শুধু বললাম, আই উইশ।

চলবে

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:১২

রাজীব নুর বলেছেন: সোহেল কেন ফোন দিল? আর ফোন ধরার দরকারই বা কি?

পাশে নীলার মতো একটা মেয়ে থাকএল আর কি লাগে!!

০৬ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:০৩

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ০৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:২৪

সোহানী বলেছেন: এতো সাধু পুরুষ কাম হাজবেন্ড হতে পারে???? যাই হোক গল্পে অন্তত পেলাম ............হাহাহাহাহাহাহ

চলুক, সবগুলোই পড়েছি।

০৬ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:০২

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ০৫ ই মে, ২০১৮ দুপুর ২:০৩

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: চমৎকার পর্বের ইন্ডিংএ পরের পর্বের কামনা ছাড়া আর কি বা থাকতে পারে।

০৬ ই মে, ২০১৮ সকাল ৮:৪১

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.