নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অতিথি (১৯ তম পর্ব)

২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ৮:৪৭

১৯

অ্যাট লাস্ট, অল কনফিউশানস আর গন। মনের ভেতর যে সন্দেহটা উঁকি ঝুকি দিচ্ছিল, কিছুক্ষণ আগে সেটাও বিদেয় হয়েছে। আমাদেরকে পৌছে দিয়ে সোহেল জানাল
— সরি, আমি আর থাকতে পারছি না। আমাকে এক্ষুনি ফিরতে হবে। আসলে কালকে সকাল সকাল একটা কাজে বেরোতে হবে।
সঙ্গে সঙ্গে বুকের ওপর থেকে বিশাল একটা ভার নেমে গেল। সোহেলের অন্য কোথাও থাকতে যাওয়া মিনস, নীলা ইজ নট স্টেইং উইথ সোহেল। সম্ভবতঃ আমাকে পিক করতে যেতে হেল্প করার জন্য সোহেলকে ডেকেছিল নীলা। দে আর ইন টাচ, বাট নট কাপল।
বাসাটার দিকে তাকালাম। এটাই তাহলে নীলার একার অ্যাপার্টমেন্ট? এটার ঠিকানাই ও মেইলে দিয়েছিল? ভাড়া? না নিজের? জানি না, তবে বেশ সুন্দর। ছোট্ট একটা দুরুমের বাসা। একটা বেডরুম আরেকটা ড্রইং কাম ডাইনিং।
সো? দ্যা স্টোরী ইজ ইন মাই ফেভার নাও। এখন যা জানা দরকার, তা হচ্ছে নীলা কি চায়। একাকী থাকা? না আমার কাছে ফিরে আসা? একাকী থাকতে চাইলে? তারপরও ট্রাই করব। আর যদি… সেক্ষেত্রে প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কথাটা ওর মুখ দিয়ে বের করা। দারুণ ডেলিকেট একটা সিচুয়েশান। আর তাই ব্যাপারটা বেশ বুঝে শুনে ডিল করতে হবে।
আই গেস, নিজের মুখে ও কথাটা বলবে না। বড়জোর কিছু ক্লু দেবে। আমাকে সেটা দ্রুত ধরে ফেলেতে হবে। অ্যান্ড ডু অ্যাকরডিংলি।
— মেক ইয়োরসেলফ কমফর্টেবল।
আমাকে বেডরুমে বসিয়ে নিজে বাইরের ঘরের দিকে যেতে যেতে কথাটা বলল নীলা। নিজের অজান্তেই হেসে ফেললাম। ‘কমফর্টেবল' বলতে কি বোঝাতে চাইল? চাইলে বিছানায় শুতে পারি? না কেবল ড্রেস চেঞ্জ করে বাসার ড্রেস পড়া পর্যন্ত?
রাতে থাকব কোথায়? আমাদের দাম্পত্য জীবনের তৃতীয় পর্ব শুরু হতে যাচ্ছে? যদিও বুক দুরুদুরু করছে। অবশ্য নিজেকে কড়া করে সাবধান করে দিয়েছি। ওয়ান রং স্টেপ ক্যান রুইন এভ্রিথিং। সো বি কেয়ারফুল।
ঘরের চারদিকে তাকালাম। কেমন চেনা চেনা লাগছে। ঘরের আনাচে কানাচে নীলা ছড়িয়ে আছে। ও যখন আমার সাথে ছিল, সব কিছু যেমন করে গুছিয়ে রাখত, ঘরটা তারই জেরক্স কপি। বেডসাইড টেবিলের দিকে তাকিয়ে হার্টবিট বেড়ে গেল। আমার বাহুর ভেতর দিয়ে নিজের বাহু ঢুকিয়ে সেই পিচ্চিকে পোজ দিয়েছিল। টিপিক্যাল হানিমুন কাপল স্টাইল ছবিটা ওখানে।
পুরোটা না হলেও আমি এখন অনেকটাই কনভিনসড যে ও ফিরে যেতে চায়। বাট…'আমার ভাবনা' ইজ নট এনি প্রুফ। আই নীড ডেফিনিট প্রুফ অ্যাবাউট হার উইল।
‘কমফর্টেবল' হওয়ার জন্য, বাথরুমে ঢুকলাম। উদ্দেশ্য বাইরের কাপড় চেঞ্জ করে বাসার ড্রেস পড়া। যদিও নিজের কাপড় নিয়েই ঢুকেছিলাম, বাট ঢুকে আবিষ্কার করলাম, ব্যাপারটা জরুরী ছিল না। ওখানে আমার একসেট কাপড় রাখা আছে।
ফিল করলাম, হার্ট বিট আরেক দফা বাড়ল। আই থিঙ্ক আই অ্যাম স্মেলিং হার উইল নাও। শি ওয়ান্টস টু গিভ অ্যানাদার ট্রাই। অ্যান্ড আই থিঙ্ক দিস টাইম উই উইল বি কাপল। অ্যা জিনুইন কাপল।
নীলার ইচ্ছেকেই সম্মান করলাম। সঙ্গে নিয়ে আসা নিজের পোষাক রেখে দিয়ে নীলার সাজানো পোষাকটাই পড়লাম। বেরিয়ে এসে দেখি নীলা আমার ব্যাগ গুছিয়ে ফেলেছে। বাথরুমের ঢোকার আগে আমি আমার লাগেজ খুলে নিজের পোষাক বের করেছিলাম। এবং যথারীতি ব্যাগ খোলা রেখে গিয়েছিলাম। এসে দেখলাম আমার লাগেজগুলো গুছিয়ে ওয়ালের পাশে সারি করে রাখা। নিজের অগোছালো স্বভাবের জন্য সরি বলব কি না ভাবছি, এমন সময় নীলাই বলল
— খাবে এসো।
— বাট আমি তো…
— দ্যাটস ইয়োর ফল্ট। তোমার জন্য রান্না করেছি, সো আবার খেতে হবে।
ওর এই জোর করাটা বেশ এঞ্জয় করলাম। নীলার রান্নার হাত বেশ ভাল। তার চেয়েও বড় কথা, নীলা আমার জন্য রেধেছে। এনকারেজিং সাইন। আর ও যখন চাইছে আমি খাই, আই স্যুড অনার দ্যাট। সো…
টেবিলে বসতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম আইটেম নেহাত কম না। আই থিঙ্ক শর্ট নোটিশে এসব তৈরি হয়নি। প্ল্যান বেশ আগেই করেছে। বাট কি প্ল্যান? ডিড শি এক্সপেক্ট, আমি নিজে আসব? নাকি… আমার টেবিলের দিকে তাকানো দেখে সম্ভবতঃ নীলা গেস করল ব্যাপারটা। ব্যাখ্যা আসল
— তুমি নিজে আসবে না আমি জানতাম। ঠিক করে রেখেছিলাম আমিই তোমাকে আনতে যাব। সবার মাঝ থেকে তোমাকে আনতে চাইনি। তোমাদের বাকীদের ফ্লাইট যেহেতু বারোটায়, তাই ভেবেছিলাম বাই টেন যদি তোমাকে পিক আপ করতে যাই, তখন তোমাকে একা পাব। বাট… তুমি যে টিকিটের দিকে তাকাওনি, এটা আমার চিন্তায় আসেনি।
নীলার চোখে ঠিক ‘সরি' ভাব না, কেমন একটা ব্যাখ্যা দেয়া টাইপ চাহনি। বলতে চাইছে, দোষ মুলতঃ আমার, বাট তোমারও একটু সতর্ক হওয়া উচিৎ ছিল। এই আর কি। যদিও এসব ব্যাখ্যা আমার জন্য খুব জরুরী না। তারপরও, যখন বলছে, আমার উচিৎ আলাপে অংশ নেয়া। বললাম
— সকাল থেকে মন বলছিল, তোমার সাথে দেখা হবে।
নীলা ভাত বেড়ে দিতে দিতে বলল
— আর সেজন্যই আজ দুপুরে মেইলটা ডিলিট করে দিয়েছিলে।
হঠাৎ করেই মুখটা রক্তশূণ্য হয়ে গেল। কি ব্যাখ্যা দিব, মেইল ডিলিট করার? দ্রুত ভাবতে চেষ্টা করলাম। পারছি না। অনেস্ট কনফেশানে করব? বলব, আমি পণ করেছিলাম, তোমার বাসায় আসব না? চালাকী করা রিস্কি হবে। সিদ্ধান্ত নিলাম আলাপচারিতা যদি আরেকটু এগোয়, ব্যাপারটা স্বীকার করে নেব, তবে একটু ব্যাখ্যা সহকারে। কোন কথা বলার আগে আই হ্যাভ টু কিপ ইন মাইন্ড, আমার মেইল নিয়ে আমি কি করেছি, সবই ওর জানা।
মেইল ডিলিটের ব্যাখ্যা দিতে যাব, এমন সময় নীলা তরকারীর দিকে ইঙ্গিত করে বলল
— তুলে দেব? না নিজে নেবে?
কথাটা শুরু করেছিল তরকারীর দিকে তাকিয়ে বাট শেষ হল আমার মুখের দিকে তাকিয়ে। ফলাফল হল, আমার ভীত চেহারার দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলল। বলল
— কুল ডাউন ম্যান। আই ডিডন’ট মাইন্ড। বরং আমার কাছে ইম্পর্ট্যান্ট ছিল ডিলিট করবার আগে দুবছর তুমি মেইলটা রেখে দিয়েছিলে। ইনফ্যাক্ট আমার মেইলটা আলাদা একটা ফোল্ডারে রেখে দেয়াটা খুব ভাল লেগেছিল। আমাকে দারুণ হেল্প করেছিল
— কি ব্যাপারে?
নীলা স্নিগ্ধ এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকাল। সেই দৃষ্টিতে ছিল একরাশ আশ্বাস। এরপরে স্মিত একটা হাসি দিয়ে মুখে শুধু বলল
— এখন মন দিয়ে খাও।
ব্যাপারটায় আমিও সায় দিলাম। খেতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম, ক্ষিদে বেশ ভালোই পেয়েছে। যদিও চুপচাপ খাচ্ছি, মাথা কিন্তু চুপচাপ নেই। ঝড়ের বেগে প্রশ্ন ঘুরছে। নীলা কখন ওর মন চেঞ্জ করল। ঢাকায় থাকতে? না এখানে এসে?
এমন সময় প্রশ্নটা মাথায় আসল। সোহেলের সাথে কি ব্রেক আপ হয়েছে? না আদৌ…।
— তুমি কিন্তু খাচ্ছ না।
নিজেকে কষে একটা চড় মারতে ইচ্ছে করছে। এখনই ভাবতে হবে? একটু পরে তো জিজ্ঞেস করাই যাবে। ফ্যাকাশে একটা হাসি দিয়ে বললাম
— আসলে মনকে কন্ট্রোল করতে পারছি না।
নীলা স্মিত হাসল। এরপরে বলল
— বেশ। বল, কি জানতে চাও।
নীলার দিকে তাকালাম। বেশ সমস্যায় ফেলে দিয়েছে আমাকে। তাই তো? কি জানতে চাই? সোহেলের সাথে বিয়ে হয়েছে কিনা? একা আছ কেন? কিংবা আমার সম্পর্কে এখনও খোঁজ খবর রাখে কেন? আই মিন প্রথম কোন প্রশ্নটা করতে চাই? আমাকে বাকরুদ্ধ দেখে হেল্প করতে এগিয়ে আসল নীলা। জানতে চাইল
— তোমার সাথে ফিরে যেতে চাই কি না?
প্রশ্নটা শুনেই উত্তর পেয়ে গেলাম। সো, এটার উত্তর আর দরকার নেই। বললাম
— নট রিয়েলি। আই থিঙ্ক, আই নো দ্যা অ্যান্সার। আমি আসলে জানতে চাই… আই মিন…হোয়েন ডিড ইউ…
— চেঞ্জ মাই মাইন্ড?
দেন সামথিং হ্যাপেন্ড। হঠাৎ করে অস্বস্তি গায়েব হয়ে গেল। নীলার সহমর্মী হয়ে উঠলাম। যে হেজিটেশান কাজ করছিল, তা সরে গেল। বুঝলাম, নীলার নিজেরও অনেক কিছু বলার আছে। ওকে একটু হেল্প করা দরকার। বললাম
— ওয়াজ ইট ইন ঢাকা?
নীলা আড় চোখে আমার দিকে তাকাল। এরপরে চোখ নামিয়ে নিল। অ্যান্ড আই গট দ্যা অ্যানসার। নিজের অজান্তেই পরের প্রশ্নটা করে ফেললাম
— ডিড ইউ এক্সপেক্ট মি টু স্টপ ইউ দ্যাট ডে?
নীলা ম্লান একটা হাসি দিল। এরপরে চোখ তুলে তাকাল আমার দিকে। এবার চোখে দুষ্টুমির হাসি ফুটে উঠল।
— শুনতে বাংলা সিনেমার মত লাগলেও, কথাটা সত্যি। আসলেই এক্সপেক্ট করছিলাম, তুমি সেদিনের মত আমার হাত চেপে ধরে বলবে…। বাই দ্যা ওয়ে, সেদিন থামতে বললে না কেন?
পরিস্থিতি সহজ হয়ে উঠতে শুরু করল। এখন অনেক প্রশ্নই করতে পারব। কেন মাইন্ড চেঞ্জ হল, সোহেলকে কি বলল, সোহেল কি রিয়াকট করল।
অ্যান্ড দেন? ইয়েস, দ্যা স্টোরি টুক অ্যানাদার টার্ন। দ্যা মোমেন্ট আই স্টার্টেড টু থিঙ্ক, 'কিসসা খতম’, তখনই ফোনটা বেজে উঠল। কলারের জায়গায় যে শব্দটা উঠেছিল, তা আনএক্সপেক্টেড। সেটা দেখে প্রথমে ভয় পেলেও পরে অবাক হলাম। আজকে হচ্ছেটা কি? আজকের দিনটাই বোধহয় নির্ধারিত ছিল অবাক হওয়ার জন্য।
সারা দিন এতোগুলো অবাক করা ঘটনার পরে ভেবেছিলাম আজকে আমার অবাক হওয়ার কোটা শেষ, অ্যান্ড দেয়ার আই ওয়াজ রং। দিনের শেষ অবাক করা ঘটনা আসতে তখনও বাকী ছিল। সো হেয়ার ইট কামস।
কলারের জায়গায় মাকে দেখে হতবাক হয়ে একবার নীলা আর একবার ফোনের দিকে তাকালাম। আমার অবাক হওয়া দেখে নীলাও ঘাবড়ে গেল, জানতে চাইল
— কে?
ভুতগ্রস্থের মত উত্তর দিলাম
— মা।
নীলা হেসে ফেলল। বলল
— তো? ফোন করতে পারে না? বয়স্ক মানুষ ফোন করা মানেই কি কোন খারাপ খবর? এমন তো হতে পারে কবে ফিরছ, কেমন আছ এসব জানতে ফোন করেছেন। পিক ইট আপ।
মন বলছে , কাহিনী এত সহজ না। দারুণ ইমার্জেন্সি ছাড়া মায়ের ফোন করার কথা না। স্পেশালি যখন আমি দেশের বাইরে।
এনিওয়ে, উত্তর না দিয়ে কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা রিসিভ করলাম। অ্যান্ড দেয়ার ওয়েটেড দ্যা বিগেস্ট সারপ্রাইজ অফ মাই লাইফ।
আমার ফ্যাকাশে মুখটা নীলাও ফ্যাকাশে লক্ষ্য করল। বুঝল, ভয়ঙ্কর কিছু একটা হয়েছে। ধীরে ধীরে ওর হাতটা আমার হাতের ওপর রাখল। মমতা ভরা কন্ঠে জানতে চাইল
— এনিথিং রং?
— ইয়েস।
— কি হয়েছে?
— মা জেসমিনের সাথে আমার এনগেজমেন্ট সেরে ফেলেছেন। আজকে আংটি পড়িয়ে এসেছেন।


চলবে

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ৮:৫২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: বাহ!! বেশ গোছানো লেখা। ভাল লেগেছে, সানী ভাই।

২| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ৮:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: প্রথম প্রথম লেখায় মজা পাই নাই।
এখন কিন্তু ভালো লাগতে শুরু করেছে।

৩| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ৯:২২

পবন সরকার বলেছেন: ভালো লাগল। ধন্যবাদ

৪| ২৫ শে মে, ২০১৮ রাত ১:৩৩

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: কি হবে এর পব গল্পই বলে দিতে পারবে। চমক অার চমক। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

৫| ২৫ শে মে, ২০১৮ ভোর ৪:২৪

সোহানী বলেছেন: হুম....... কাহিনীর লেজ বেড়েই চলছে..............হাহাহাহাহাা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.