নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর স্থান হচ্ছে বান্দরবান আর আমি একজন পরিব্রাজক।
আগের পর্ব
অন্য পর্বগুলো
২২শে সেপ্টেম্বর’১৫
আমার বরাবরই খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস। সিমলাতেও তার ব্যাতিক্রম হলো না। বাইরে প্রচন্ড ঠান্ডা। আবার কম্বলের তলায় ঢুকে গেলাম। ঘন্টা দেড়েক পর উঠে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। দেখি নিয়নও উঠে পড়েছে। রুমের ভিতরে আমরা কিছুক্ষণ ফটোসেশন করলাম
তারপর লাথি ঘুসি মেরে সেতুকে ঘুম থেকে ওঠানো হলো
ঘুম থেকে উঠেই সে নিয়নকে হুকুম করলো হোটেলের কাউন্টারে গিয়ে গিজার চালিয়ে দেবার কথা বলে আসবার জন্য। আর আমি বের হলাম ওদের গোছগাছ করার ফাকে আশপাশ একটু ঘুরে দেখার জন্য।
বাইরে বের হয়েই চোখ ধাধিয়ে গেল। সকাল সাড়ে আটটা, আশপাশ মেঘাচ্ছন্ন, বেশ ঠান্ডা আর এরই মাঝ দিয়ে দলে দলে সুন্দরী মেয়েরা স্কুলে যাচ্ছে। সুন্দরীদের ইউনিফর্মের ফ্রকের শেষাংশ হাঁটুর উপরে আর তাদের উন্মুক্ত পা থেকে যেন আগুন ঝলসাচ্ছে। শরীরগুলি এতোই সুগঠিত যে প্রতিটি মেয়ের একেকটি পায়ের দিকে তাকিয়ে অনায়াসে দু’ঘন্টা কাটিয়ে দেয়া যায়। স্কুল আওয়ার শুরু হওয়া পর্যন্ত মেয়েদের আনাগোনা চলতেই থাকলো আর আমিও সেসকল দেবীদের পদযুগল দর্শন করিতে লাগিলাম। হায় আফসোস, একটা ছবি তোলার দুঃসাহস সংগ্রহ করে উঠতে পারি নাই!
আশপাশ দেখায় মন দিলাম। সিমলার বাড়ি ঘর দেখতে খুব সুন্দর।
তবে দার্জিলিং বাসীরা যেমন ফুল আর কুকুর ভালোবাসে সিমলাবাসীদের মধ্যে এই ব্যাপারটা একটু কম মনে হলো। কিন্তু দার্জিলিঙের চাইতে সিমলা অনেক গুন বেশী সুন্দর শহর। চারপাশে এতো সবুজ গাছপালা যে চিন্তায় করা যায়না। সিমলাকে পাইন গাছের শহর বললেই যেন বেশী মানায়।
আধা ঘন্টারও বেশি সময় পর হোটেলের রুমে ফিরে দেখি সেতু আর নিয়নের এখনো গোছানো হয়নি। আবার আমি বের হলাম। এবার গেলাম কালীবাড়িতে। সিমলা কালীবাড়ির ভিতরে ছবি তোলা নিষেধ। আমি শুনেছিলাম কালীবাড়িতে খুব কমে ভালো নাস্তা আর খাবার পাওয়া যায়। খুঁজে খুঁজে জলখাবারের রুমটি বের করে নাস্তার অর্ডার দিলাম। ছোট্ট একটা রান্নাঘর যেখানে তিন চারজন দাঁড়িয়ে গল্প করছে। আমার অর্ডার শুনে চুলো জ্বালিয়ে তেল গরম করতে দিল। তারপর খামি করে রাখা ময়দা বেলে লুচি বেলে ভাজতে দিল। আর তারপর গরম প্রেসার কুকার থেকে ডালের তরকারি বেড়ে আমাকে খেতে দিলো। চারটে বড়বড় লুচি আর ছোলার ডালের তরকারি। দাম নিল ২০ রুপি। খেতে খুবই মজাদার।
এই ব্যাপারটা আমি ইন্ডিয়ার সব জায়গায় দেখেছি, বিশেষ করে ঠান্ডা দিককার অঞ্চলে আর ভেজ রেষ্ট্ররেন্টগুলোতে। কেউ যদি কোন খাবারের অর্ডার দেয় তবে তৎক্ষণাৎ তার সামনে সেই খাবারটা রান্না করে গরম গরম হাজির করে। ইন্ডিয়ান খাবারের স্বাদ বাংলাদেশের মতো অতো ভালো না হলেও খাবারের মান খুব ভালো। আমার মনে হয় বাংলাদেশের মতো এতো ভেজাল ইন্ডিয়ান খাবারে ঢোকেনি। এখানকার কোন খাবার খেয়ে আমাকে কখনো পেটের সমস্যায় ভুগতে হয়নি।
নাস্তা শেষে আবার ফেরত এলাম হোটেলে। তখনো নিয়ন আর সেতুর ফটসেশন শেষ হয়নি। হোটেলের রুমের মধ্যে নিজেদের মুখের এতো সেলফি তুলে এরা কি মজা পায় তা কে জানে! তাড়া দিয়ে ওদেরকে বের করলাম। কোনরকমে বাইরে বের হয়ে আবার এরা সেলফি তোলা শুরু করলো।
সিমলার কোন কোন রাস্তায় বিশেষ করে কালীবাড়ির আশেপাশে গাদা গাদা বানর নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিছুক্ষণ ওদের কসরত দেখলাম। তারপর আরো সামনে এগিয়ে গেলাম। এসময় সেতুর আন্টি আর তার ছেলের সাথে দেখা হলো। এই ছেলেটাই নিয়নের রুপের ‘বিশেষ’ ফ্যান। তারা সিমলা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ তাদের সাথে ছবি তোলা হলো। ট্রেনের হর্ন শুনে তারা তড়াতাড়ি স্টেশনের দিকে হাটা দিলেন।
সেতুদের রুপি শেষ হয়ে গেছে। এইবার তারা ডলার ভাঙানোর জন্য এ ব্যাংক সে ব্যাংক ঘোরাঘুরি শুরু করলো। কিছুক্ষণ তাদের সাথে ছিলাম। শেষ পর্যন্ত বিরক্ত হয়ে তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমার মতো ঘোরা শুরু করলাম। ঘন্টা দেড়েক সিমলা ম্যাল, রীজ, স্ক্যান্ডাল পয়েন্ট এইসব জায়গাগুলি ঘুরে দেখলাম।
জায়গাগুলি সত্যিই খুব সুন্দর। সিমলা খুব পরিচ্ছন্ন একটা শহর। এই শহরে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলাতো দূরে থাকুক কেউ যদি কোথাও থুতুও ফেলে তবে সঙ্গে সঙ্গে তাকে জরিমানা দিতে হয়।
এখানকার পুলিশগুলো খুব স্মার্ট। বিশেষ করে চোখা চোখা সৌন্দর্যের মহিলা পুলিশগুলোর দিকে হা করে তাকিয়ে থাকতে হয়। সিমলা শহরে পর্যটকদের বসার জন্য সবজায়গাতেই সুদৃশ্য বেঞ্চ পাতা আছে। তাছাড়া কিছুদূর পরপরই পানি খাবার জায়গা। তবে সবথেকে ভালো ব্যাবস্থা টয়লেটের। কিছুদূর পরপর পরিচ্ছন্ন টয়লেট যেখানে প্রসাব করতে পয়সা লাগে না, তবে বড়টার জন্য নামমাত্র মূল্য দিতে হয়।
১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪২
সারাফাত রাজ বলেছেন: ধন্যবাদ। সিমলা সত্যিই খুব পরিচ্ছন্ন আর সুন্দর শহর। কিন্তু ঢাকা আমাদের প্রিয় শহর। আর এ শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব আমাদের উপরও কিছুটা বর্তায়। ঢাকাকে যতোই খারাপ বলি এ শহর থেকে কিছুদিন দূরে থাকলে কেমন্ যেন টান অনুভূত হয়। কেমন যেন হাঁসফাঁস আর দমবন্ধ লাগে, মনে হয় ঢাকা যেন দড়ি দিয়ে টানছে। আমার তো মনে হয় আমি যদি এক মাস ঢাকার বাইরে থাকি তাহলে বোধহয় মরেই যাবো।
২| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১৫
টেকনিসিয়ান বলেছেন: সুন্দরীদের ইউনিফর্মের ফ্রকের শেষাংশ হাঁটুর উপরে আর তাদের উন্মুক্ত পা থেকে যেন আগুন ঝলসাচ্ছে। ........... OMG লেখক কি দুষ্ট
১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০১
সারাফাত রাজ বলেছেন: হা হা হা ভালোই বলেছেন
৩| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০৯
চাষাভুষার কাব্য বলেছেন:
আপাতত চোখ বন্ধ করে এটা দেখুন, আর কল্পনার সাথে মিলিয়ে নিন!! ইউনিফর্ম পরিহিত ছেলেমেয়রা শিমলার সৌন্দর্যের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫০
সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই আমিতো সব মেয়েদের শর্ট ফ্রক পড়া অবস্থায় দেখেছিলাম, আপনার ছবিতে মেয়েরা তো ফুলপ্যান্ট পড়ে আছে
৪| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৮
তুষার কাব্য বলেছেন: উত্তারাঞ্চল আর হিমাচলের বাড়ি গুলো আসলেই অসাধারণ দেখতে ।বিশেষ করে রাতের আকাশে দূর থেকে মনে হয় যেন পাহাড়ের উপর তারারা খেলা করছে । আপনারা তো মাত্রই ঘুরে আসলেন দেখছি । আরও ছবি চাই ।
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:২৯
সারাফাত রাজ বলেছেন: সিমলা শহরটা যেহেতু উঁচুতে এজন্য রাতেরবেলা আশেপাশের এলাকাগুলোর রঙ-বেরঙের আলো দেখলে মনে হয় ছায়াপথ থেকে দূরের নক্ষত্র পূঞ্জ দেখছি। এক কথায় অসাধারণ!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আশা করি পরবর্তীতে আরো ছবি দিতে পারবো।
৫| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৬
রাজীব বলেছেন: বোকা মানুষ খুব সুন্দর একটি সিরিজ চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু ওনার লেখাগুলো মজা নিয়ে পড়তে পারছি না।
কারন আমার এলার্জি ও এ্যাজমা আছে। ঠান্ডা জায়গার ছবি বা বরফ দেখলেও মনে হয় শীত লাগে, আর লাগে দুঃখ, নিজে সেসব সুন্দর জায়গায় যেতে পারি না বলে।
আপনার পোস্টগুলোও ধীরে ধীরে শীতল হয়ে যাচ্ছে। যাক তারপরও ছোট ছোট ফ্রক যদি কিছুটা সাহশ দেয়। যেই শীতে মেয়েরাও পা খোলা রাখতে পারে সেটি আর কিসের শীত?
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৪
সারাফাত রাজ বলেছেন: বোকা মানুষ নমস্য ব্যাক্তি, আমি তার কর্ম-কান্ডের ফ্যান।
রাজীব ভাই, এর পরের কয়েকটা পর্ব পর থেকে বরফ শুরু। আপনি এলার্জির ঔষধ আর শীত তাড়ানোর গরম জামা নিয়ে বসেন। অবশ্য আপনি চাইলে আমি আপনার জন্য কাশ্মীরি শালের ব্যাবস্থা করতে পারি
মেয়েদের তো বরাবরই শীত কম আমি জানুয়ারির প্রচন্ড ঠাণ্ডাতেও ঢাকার মেয়েদের স্লীভলেস পরতে দেখেছি
তবে একটা সত্যিকথা ভাই, ইন্ডিয়ান মেয়েরা অনেক খোলামেলা হলেও বাংলাদেশের মেয়েরা অনেক অনেক বেশি সুন্দর
৬| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৮
নতুন বাঙ্গাল বলেছেন: ভাই আপনি এত অল্প খরচে একা একা ভারত দেখে বেড়াচ্ছেন , পরের বার সংগী হতে চাই। আপত্তি নেই আশা করি।
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৮
সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই আমি খুব বোরিং মানুষ। আপনি যদি আমার সঙ্গী হতে চান তবে নিজ দায়িত্বে হবেন। হা হা হা
৭| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০২
রাজীব বলেছেন: তবে একটা সত্যিকথা ভাই, ইন্ডিয়ান মেয়েরা অনেক খোলামেলা হলেও বাংলাদেশের মেয়েরা অনেক অনেক বেশি সুন্দর :
খোলামেলার মধ্যে সুন্দর্য নেই। শালিনতাই সৌন্দর্য।
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৩২
সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই খোলামেলা বা ঢাকাঢাকির ব্যাপার না আমার কাছে বাংলাদেশী ললনারা অনেক আকর্ষণীয়
৮| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:১০
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: সিমলা ম্যালে বিকেল এবং সন্ধ্যা কাটানোটা উপভোগ্য। আপনারা কি 'কুফরি'-'ফাগু' গিয়েছিলেন?
এই পোস্টটা কেমন যেন হুট করে শেষ হয়ে গেল। আরও বিস্তারিত লেখা চাই।
ভালো থাকুন সবসময়, শুভকামনা রইল।
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৩৬
সারাফাত রাজ বলেছেন: মানালির চেয়ে সিমলা ম্যাল অনেক সুন্দর। আবার যেতে হবে
আমি কুফরি-ফাগু যাইনি। যাবার ইচ্ছাও ছিল না।
পরের পর্ব বেশ বড় করে দিয়েছি, দেখতে পারেন।
ভালো থাকবেন।
৯| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪২
কানা আজম বলেছেন: স্মৃতিচারণ করলাম। আপনার চোখে আমার দেখা জায়গাগুলোর বিস্তৃত বর্ণনা পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছে। কারণ আমি শুধু দেখেই এসেছিলাম, কিছু শিখিনি বা জানিনি। আর আপনার বেজায় সাহস।
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৪
সারাফাত রাজ বলেছেন: শুধু নিজে স্মৃতিচারণ করলেই হবে, আমাদের একটু জানান কি কি মনে পড়লো।
আমিও শুধু দেখতেই গেছি, কিছু জানতে বা শিখতে যায়নি।সত্যিই খুব প্রাণ ভরে দেখেছি। আমি খুবই সন্তুষ্ট।
আর আমার সম্পর্কে আপনার বিশেষণে আমি খুবই লজ্জিত্ব।
১০| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৩
নিদাঘ প্রসুন বলেছেন: আপনার সাথে যোগাযোগ করতে চাই , ফেসবুক আইডি পেতে পারি কি আপনার?
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৩০
সারাফাত রাজ বলেছেন: আমার ফেসবুক আইডি Sarafat Raj. আপনি একটা ম্যাসেজও পাঠাবেন।
১১| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:২৪
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আপনার সাথে সাথে আমারও ঘোরা হয়ে যাচ্ছে
১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:১২
সারাফাত রাজ বলেছেন: এই যে সহযাত্রী ভাই, এতো ঘুরলেন আমার সাথে কিন্তু খরচ তো শেয়ার করলেন না
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩
ঢাকাবাসী বলেছেন: ছবি আর বর্ণনা খুব সুন্দর। সিমলা ঘুরে এলুম মনে হল। হ্যাঁ আমরা বড়ই নোংরা জাতি, দুনিয়াতে সবচাইতে নিকৃস্ট নোংরা অসভ্য। এসব বোঝা যায় বিদেশ ভ্রমন করলেই। আর পৃথিবীতে সবচাইতে নোংরা অবাসযোগ্য শহর তো ঢাকা সবাই জানে!