নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন বাজেট ট্রাভেলার।

সারাফাত রাজ

পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর স্থান হচ্ছে বান্দরবান আর আমি একজন পরিব্রাজক।

সারাফাত রাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কম খরচে আবার ভারত পর্ব-২২ ( আধিক্য অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত লেহ শহর, কিন্তু বাংলাদেশী হিসাবে আমি সেখানে অনাহুত তবে এক সত্যিকার ভদ্রলোকের অকৃত্রিম ভালোবাসা )

১৭ ই মে, ২০১৬ সকাল ৭:৩৯


আগের পর্ব
পরের পর্ব
অন্য পর্বগুলো
এখানেই জানতে পেলাম এতোক্ষণ ধরে পাশ দিয়ে বয়ে চলা স্রোতধারাটি আসলে নদী নয়, এটি বিখ্যাত সিন্ধু নদ। শিহরিত হলাম। যার থেকে এই উপমহাদেশের নাম হয়েছে হিন্দুস্থান অথবা ইন্ডিয়া আর সনাতন ধর্মীয়রা পরিচিত হয়েছে ইন্ডুস বা হিন্দু নামে সেই বিখ্যাত সিন্ধু নদকে আমি পাশে নিয়ে চলেছি। শরীরে এক অপূর্ব শিহরন বয়ে গেল। খুবই সরু একটা পানির প্রবাহ। কিন্তু সে তার পূর্ণ গাম্ভীর্য বজায় রেখে চলেছে। পৃথিবীর সেরা প্রাচীন একটা সভ্যতার গর্বিত জনক সে।

সন্ধ্যা পার হয়ে রাত নেমেছে। গাড়ি এবার সাপের মতো আঁকাবাঁকা কিন্তু সমতল পথ দিয়ে এগিয়ে চলেছে। ডানপাশে উঁচু পাহাড় আর বামপাশে সিন্ধু নদ। তবে আমার চোখে প্রচন্ড সমস্যা হচ্ছে। বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়িগুলোর হেডলাইটে আমার চোখ ধাধিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমি এখানকার ড্রাইভারদের আইন মানার প্রবণতা দেখে অবাক হয়ে গেলাম। দূর থেকে গাড়িগুলো যখন আসছে তখন সেগুলো তাদের হেডলাইট পূর্ণ শক্তিতে জ্বালিয়ে রেখেছে, অথচ কাছাকাছি আসলেই আলোর পাওয়ার কমিয়ে দিচ্ছে যেন বিপরীতমুখো গাড়ির ড্রাইভারের চোখ ধাধিয়ে না যায়। অথচ বাংলাদেশে সবাই দেখি রাতের বেলায় সবাই পুরোশক্তির হেডলাইট জ্বালিয়ে হাইওয়ে দিয়ে গাড়ি চালায়, এরফলে বিপরীত ড্রাইভার কিছুক্ষণের জন্য অন্ধ হয়ে যায়।

খুবই খিদে লেগেছে। আসলে সারাদিন পেটে সলিড কিছু পড়েনি। সেই কোন সকালবেলা দারচাতে ব্রেড অমলেট খেয়েছিলাম। আর সারাদিন টুকটাক গজা চিবিয়ে শেষ করেছি। অবশ্য এখন গজার কথা ভাবলেই জ্বর চলে আসছে। আসলে এ কয়দিন টুকটুক করে আমি এতো গজা চিবিয়েছি যে এটির প্রতি আমার একটা বিতৃষ্ণা জন্মে গেছে। আমি বোধহয় আর জীবনেও গজা মুখে তুলতে পারবো না। দোষটা আসলে আমারই, দুপুরে প্যাং এ আমার কিছু খেয়ে নেয়া উচিৎ ছিলো। তাহলে আর কোন সমস্যাই হতো না।

ঘন্টাখানেক পর একটা জায়গায় এসে তানজিং আর তার বাবা নেমে গেল। হাত নেড়ে যখন তাদেরকে বিদায় জানালাম, বুঝলাম যে আমরাও গন্তব্যের খুব কাছাকাছি এসে পড়েছি। চারপাশে বেশ লোকালয় আর শহুরে শহুরে ভাব দেখা যাচ্ছে। বৌদ্ধদের বিভিন্ন স্তুপা দেখতে পারছি। আশেপাশে গাড়ির সংখ্যাও বেড়ে গেছে। বেশ এক্সাইটেড অনুভব করছি। মনের মধ্যে খুশির ভাব।


অবশেষে রাত সাড়ে আটটার পর ১৩ ঘন্টা জার্নি শেষে এসে পৌছালাম বহুল আকাঙ্ক্ষার শহর লেহ’তে। এটি সাড়ে এগারো হাজার ফিট উচ্চতার এক শহর। আমি নিজেই বিস্মিত। আমি সত্যিই কখনো কল্পনা করতে পারিনি যে আমি এই প্রাচীন দুর্গম ঐতিহাসিক শহরটিতে আসতে পারবো, বিশেষ করে যেটা বাংলাদেশীদের জন্য খুবই স্পর্শকাতর একটা এলাকা।

আলী ভাই খুবই শরমিন্দা হলেন। তিনি চেয়েছিলেন আমাকে তার বাড়িতে নিয়ে ওঠাবেন। এ বিষয় নিয়ে তিনি তার পরিবারের সাথে মোবাইলে লাদাখি ভাষায় কথা বলেছিলেন। লাদাখী ভাষা হলেও মোবাইলে কথা বলার ধরণ আর দুয়েকটা পরিচিত শব্দের কারণে আমি ব্যাপারটি অনুমান করতে পেরেছিলাম। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তার বাড়িতে তিনটে মাত্র ঘর। একটাতে তিনি তার পরিবার নিয়ে থাকেন আর অন্য দুটিতে তার আর দুই ভাই তাদের পরিবার নিয়ে থাকে। যুবক অতিথি নেবার মতো অবস্থা তার বাড়িতে নেই। তবে আমি কিন্তু আলী ভাইয়ের আন্তরিকতায় প্রচন্ড মুগ্ধ হয়ে গেলাম। তিনি যে আমাকে তার বাড়িতে নিতে চেয়েছিলেন তাতেই আমি ধন্য অনুভব করছি। তাকে আমি আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে সত্যিকারের ধন্যবাদ জানিয়েছিলাম।

আলী ভাই লেহ’র মুসলমান কবরস্থানের পাশে গাড়ি দাড় করিয়ে আমাকে গাড়িতে বসিয়ে রেখে আমার জন্য হোটেল খুজতে বের হলেন। আমি গাড়ি থেকে বের হয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে আশেপাশের ঝলমলে দোকানপাট দেখছি। এসময় দেখি দুটো গাধা আমার পাশে এসে দাঁড়ালো। ইয়াল্লা, আমি তো ভাবতাম গাধা তো মনে হয় বেশ বড়সড় কোন প্রাণী। কিন্তু এখন তো দেখি এগুলো আমাদের দেশের রামছাগলের চাইতে একটু বড়।

আধাঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলী ভাই বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে বিফল মনোরথে আমার কাছে ফিরে এলেন। একে রাত হয়ে গেছে তার উপর আমি আবার বাংলাদেশী এজন্য তিনি কোন হোটেলওয়ালাকে আমাকে তাদের হোটেলে রাখতে রাজি করাতে পারেননি। আলী ভাই খুবই বিব্রত। কিন্তু বিব্রত তো হওয়া উচিৎ আমার, কারণ আমিই তো তো তাকে হোটেল খোজার এই ঝামেলায় ফেলেছি।

আলী ভাই এবার গাড়ি ঘুরিয়ে লেহ পোলো গ্রাউন্ডে নিয়ে এলেন। তারপর আমাকে আবার গাড়িতে বসিয়ে রেখে এবার এখানকার হোটেলগুলোতে খোঁজ নিতে গেলেন। এদিকে আমার শরীর তখন বেশ কাহিল হয়ে পড়েছে। সারাদিন জার্নি করেছি। বাইরে খুব শান্ত থাকার চেষ্টা করছি। কিন্তু শরীর এখন খাবার জন্য একটু ভাত আর শোবার জন্য একটা বিছানা চাচ্ছে। গাড়ি থেকে বের হলাম। আশেপাশের পাহাড়ের মাঝখানে এই বিশাল মাঠটাতে দাঁড়িয়ে থাকতে খুবই ভালো লাগছে। অনেক দূরের একটা পাহাড়ে দেখি একটা মন্দিরে ঝলমলে রঙিন আলো জ্বলছে।

এ সময় দেখি বিশাল গদা গদা একগাদা কুকুর ঘেউ ঘেউ করতে করতে নিজেদের মধ্যে মারামারি বাধিয়ে দিলো। কুকুর যে এতো বড়সড় লোমশ আর ভয়ঙ্কর হয় তা আমার জানা ছিলো না। বাপরে! তাড়াহুড়ো করে গাড়ির মধ্যে উঠে বসলাম।

বেশ কিছুক্ষন পর কুত্তা বাহিনী মারামারি করতে করতে অন্যদিকে সরে গেল। আর তারও কিছুক্ষণ পর আলী ভাই ফিরে এলেন। এখানেও তিনি বিফল হয়েছেন। পোলো গ্রাউন্ড এলাকাতেও কোন সুবিধা হলো না। আমি আলি ভাইকে অনুরোধ করলাম যে আমার জন্য তাকে এতো কষ্ট করতে হবে না। আমাকে যেন তিনি লেহ বাস স্ট্যান্ডে নামিয়ে দেন, সেখানে আমি আমার নিজের ব্যাবস্থা করে নিতে পারবো। কিন্তু আলী ভাই আমার কথা একেবারেই শুনলেন না। তিনি আমার জন্য সফল না হওয়া পর্যন্ত আরো চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।

অবশেষে সেখান থেকে গাড়ি ঘুরিয়ে লেহ’র মেইন মার্কেটের কাছে আসা হলো। এখানেও আমাকে রেখে আলী ভাই হোটেল খুঁজতে বের হলেন। গাড়ি থেকে বের হয়ে বাইরে দাড়ালাম। উগ্র সুগন্ধের কারণে ফিরে তাকালাম একটা বিশাল দোকানের দিকে। দেখি সারি সারি কাঁচের বোতল, আর দোকানটাতে বেশ ভিড়। বুঝলাম যে এটা একটা মদের দোকান। তবে বেশ কিছুক্ষণ পর আমার ভুল ভাঙলো। খেয়াল করে তাকিয়ে দেখি এটা একটা ভেষজ ঔষুধের দোকান। যেখানে সারি সারি বোতলগুলোতে মধু আর বিভিন্ন ভেষজ পণ্য সাজিয়ে রাখা। ভুল ভাবার মাশুল হিসাবে হো হো করে হেঁসে উঠলাম।

অবশেষে আলী ভাই সফল হলেন। এই এলাকাতে বাংলাদেশী এই পরিচয় না দিয়ে তিনি আমার জন্য একটা হোটেলের রুম বুক করে এসেছেন। তারপর আমাকে নিয়ে গেলেন সেই হোটেলে। তবে সমস্যা বাধলো নাম এন্ট্রি করার সময়। পাসপোর্ট বের করলে হোটেলের কর্মচারী বাংলাদেশী বোর্ডার রাখতে অসম্মতি জানালো। কিন্তু আমি তো অপারগ। হোটেল কর্মচারীটিকে আমি আর আলী ভাই মিলে অনেক অনুনয় বিনয় করে মন গলিয়ে অবশেষে একটা রাতের জন্য রুমটা পেলাম।

এবার আলী ভাইকে বিদায় জানানোর পালা। তার প্রাপ্য বাবদ ৫০০ রুপির একটা নোট দিলাম। তিনি কেমন যেন বিব্রত হয়ে গেলেন। বললেন তার ভাড়া নাকি ১,৫০০রুপি। আমি সকালে কিলং থেকে যখন তার গাড়িতে উঠি তখন তিনি নাকি তাই বলেছিলেন। হবে হয়তো। এবার আমি বিব্রত হয়ে গেলাম। আসলে দোষটা আমারই। কিলং এ আলী ভাই আমাকে বলেছিলেন ওয়ান ফাইভ হান্ড্রেড। মানে ১,৫০০রুপি। আর আমি ভেবেছিলাম একটা পাঁচশো রুপির নোট। অবশ্য তখনই আমার মনে কেমন যেন খটকা লেগেছিল, তাই তো ভাবি এই রাস্তার ভাড়া মাত্র ৫০০ রুপি হয় কিভাবে! যাই হোক নিজের ভুল বুঝতে পেরে আরো একটা এক হাজার রুপির নোট বাড়িয়ে দিলাম আলী ভাইয়ের দিকে।

আমার তো মনে হচ্ছে এই রুটের একজনের ভাড়া হওয়া উচিৎ কমপক্ষে ৩,০০০ রুপি। কারণ এই রুটটা পৃথিবীর সবচাইতে কঠিন দুর্গম আর ভয়ঙ্কর সুন্দর পথের একটা। পৃথিবীর খুব কম সংখ্যক ভাগ্যবানের সুযোগ হয়েছে এই পথে যাওয়ার। আর আমি তাদের মধ্যে একজন, যে আমি কিনা একাই একটা গাড়িতে খুবই আরামদায়ক ভাবে এসেছি। যেখানে ইচ্ছা হয়েছে নেমেছি, এবং আমি বাংলাদেশী হলেও কোথাও কোন সমস্যা বা বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি । সর্বোপরি আলী ভাইয়ের মতো মানুষের সাথে আমার পথ চলা হয়েছে।

তো আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম আলী ভাই পুরো টাকাটাই আমাকে ফিরিয়ে দিলেন। আমি পুরোপুরি হতভম্ব হয়ে গেলাম। তিনি কিছুতেই আমার কাছ থেকে একটা পয়সাও নিতে রাজি হলেন না। বরঞ্চ তার বাড়িতে যে আমাকে অতিথি হিসাবে রাখতে পারলেন না এজন্য বারবার আমার কাছে ক্ষমা চাইলেন। এই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আমি কি করবো একেবারেই বুঝে উঠতে পারছি না। অন্যরকম এক ভালোলাগা আর ভালোবাসায় আক্রান্ত হলাম। ব্যাপারটা আমার জন্য তার প্রতি কঠিন একটা আবেগ তৈরী করে ফেললো।

অথচ মানালি থেকে লেহ পর্যন্ত ট্যাক্সি রিজার্ভ আসলে আলী ভাই কমপক্ষে ২৫,০০০রুপি পেতেন। তারপরও তিনি লেহতে এসে এক ঘন্টার বেশি সময় ধরে আমার জন্য বিভিন্ন জায়গায় হোটেল খুঁজে বেড়িয়েছেন। সেই এক ঘন্টাও তিনি তার গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করেননি। তাহলে সেসময় কতোখানি তেল পুড়েছে। প্রায় সপ্তাহ খানেক তিনি বাড়ি ছাড়া, সন্ধ্যা থেকে তার ওয়াইফ তাকে ফোন দিয়েই যাচ্ছে তবুও তিনি বাড়ি না গিয়ে আমার সাহায্যের জন্য ছুটে বেড়াচ্ছেন। আর অবশেষে একটা ভালো হোটেলে আমাকে উঠিয়ে দিয়ে তারপর বিদায় নিচ্ছেন। তার এ ঋণ আমি কিভাবে শোধ করবো! আলী ভাইয়ের উপর আল্লাহর খাস রহমত বর্ষিত হোক।

তবে আলী ভাই আমাকে একটা বিশেষ অনুরোধ করেছিলেন। কোন পুলিশ অথবা অন্য কোন সংস্থার লোক যদি আমাকে চেক করে অথবা এ সংক্রান্ত যদি কোন নিরাপত্তা তল্লাশির সম্মুক্ষীন হই তবে আমি যেন না বলি যে আমি আলি ভাইয়ের গাড়িতে করে লেহ এসেছি। কারন আলী ভাই একজন কাশ্মিরী মুসলমান, আর আমি একজন বাংলাদেশী মুসলমান, যে ব্যাপারটা এমনিতেই সন্দেহজনক। তার উপর তিনি আমাকে সব জায়গার চেকপোস্টেই ইন্ডিয়ান আর তার আত্মীয় হিসাবে পরিচয় দিয়ে সব চেক পোস্ট পার করে এনেছেন। এই ব্যাপারটা যদি ধরা পড়ে তবে আলী ভাইয়ের খুবই সমস্যা হবে।

আলী ভাই বিদায় নিয়ে চলে গেলেন। শেষবারের মতো আমরা কোলাকুলি আর করমর্দন করলাম। তিনি তার কোন যোগাযোগ নম্বর আমাকে দিলেন না আর আমার কোন যোগাযোগ নম্বরও নিলেন না। আমার মনটা আলী ভাইয়ের জন্য বেশ খারাপ হয়ে গেল। একদিনের পরিচয়ে আমরা সত্যিই খুব আপন হয়ে গিয়েছিলাম। যাই হোক ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ব্যাগ-পত্র টেনে আমার রুমের দিকে রওনা দিলাম।



ঘরে ঢুকে আমিতো পুরোপুরি তাজ্জ্বব। এই জ্বাকজ্বমকপূর্ণ ডাবল বেডের রুমটা আমার! বিশ্বাসই হতে চাইলো না। আমার জীবনে থাকা সবচেয়ে লাক্সারিয়াজ হোটেল এটা। এককথায় বলতে গেলে অসাধারণ। তখনও তো জানতাম না যে হোটেলের চমক তখনো বাকী আছে।



রুমে ব্যাগ রেখে খাবার হোটেল খুঁজতে বের হলাম। পেটের ভিতর তখন আগুন জ্বলছে। আমিতো ভেবেছিলাম লেহ মনে হয় খুব ছোট মফস্বল একটা শহর। কিন্তু বাইরে বেরিয়ে যখন আমি বিভিন্ন রাস্তা আর অলিগলি দিয়ে হাঁটাহাঁটি শুরু করলাম তখন আমার চোখ আরো ধাধিয়ে গেল। দামী দামী কারপেট আর শালের দোকান। বৌদ্ধদের বিভিন্ন এন্টিকের দোকান। আর সবচেয়ে বেশি হচ্ছে বিভিন্ন ট্রাভেল কোম্পানির দোকান। তারা ট্যুরিস্টদেরকে বিভিন্ন দুর্গম আর অস্থির সুন্দর জায়গায় নিয়ে যাবার প্রলোভন দেখাচ্ছে। আর রাস্তায় গাদা গাদা সাদা চামড়ার বিদেশী। আর এই বিদেশীদের মধ্যে অল্পবয়েসি মেয়েদের সংখ্যাই বেশি। এইসব বিদেশী মেয়েরা কেউ কেউ দুজন একসাথে আবার কেউ সম্পূর্ণ একা পিঠে ভারী ব্যাগপ্যাক নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তার মধ্যে অল্পবয়সী মেয়েও যেমন আছে তেমন ষাটোর্ধ বৃদ্ধাও আছে। সবকিছু দেখে শুনে আমার মনে হলো লেহ হচ্ছে ধনীদের শহর, যে নিরাপদ শহরটি সম্পর্কে সারা পৃথিবীর সব ভ্রমণ পিয়াসু মানুষ অবগত হলেও আমরা বাংলাদেশীরা একেবারেই অজ্ঞ।

তবে আমি যা খুজছিলাম সেটাই পেলাম না। বেশ রাতও হয়ে গেছে। আর এই পাহাড়ি শহরটিতে খুব দ্রুত খাবারের দোকান বন্ধ হয়ে যায়। যে কয়টি খোলা আছে সেগুলোর খাবার শেষ, তারা দোকান বন্ধ করার তোড়জোড় করছে। আর বাকী যে কয়টি খোলা আছে সেগুলোতে যাওয়া আমার সাধ্যের বাইরে। সেগুলোতে রঙিন আলো রঙিন পানি আর রঙিলা বিদেশিনী ঝকমক করছে। এই রেস্তোরাগুলোর দিকে হতাশ চোখে তাকাতে তাকাতে আমি আমার হোটেলে ফেরত এলাম। হয়তো আমার মতো দরিদ্রদের খাবারের জন্য কিছু খাবার দোকান তখনও খোলা ছিলো, কিন্তু এই রাতের অচেনা শহরে আমি সেটা খুঁজে পায়নি।

আজকে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। আমার বাড়িতে আজকে হয়তো কুরবানিও হয়েছে। অথচ দেশ থেকে আড়াই হাজার কিলোমিটার দূরে আজ সারাদিন আমাকে প্রায় না খেয়ে থাকতে হয়েছে। আমার কাছে কোন শুকনো খাবার পর্যন্ত নেই। তবুও ব্যাগটা ঘাটা-ঘাটি শুরু করলাম। দেখি এক শিশি মধু আছে। আসলে হয়েছিল কি আমি বরফে বেড়াতে যাবো শুনে আমার যেন ঠান্ডা না লাগে এজন্য আমার বড়খালু আমার ব্যাগে জোর করে এক শিশি মধু ঢুকিয়ে দিয়েছে। নূতন করে অনুভব করলাম যে, আমার সকল আত্মীয় স্বজন আমাকে কি পরিমানে ভালোবাসে। ব্যাপারটা ঠিক রজনীকান্ত সেন এর গানের মতো,”আমি অকৃতী-অধম বলেও তো কিছু কম করে মোরে দাওনি, যা দিয়েছ তারই অযোগ্য ভাবিয়া কেড়েও তো কিছু লওনি।“ আসলে দূরে না গেলে কাছের মানুষের ভালোবাসা টের পাওয়া যায় না। সেই মধু বের করে খাওয়া শুরু করলাম। কি আর করবো! তারপর দু গ্লাস পানি খেয়ে শুয়ে পড়লাম। খিদেয় আমার পেট তখনো চোঁ চোঁ করছে।

যখন বিছানাতে শরীর এলিয়ে দিলাম, তখন হঠাৎ করে দেখি আমার মনটা খুবই বিষন্ন হয়ে আছে। সারাদিন যাত্রাপথে মনটা অন্যদিকে ব্যাস্ত ছিলো বলে টের পাইনি, কিন্তু এখন এই দরজা বন্ধ করা একটা কক্ষের একাকীত্বে আমি যেন সুদূরে চলে গেলাম। নিজের পরিচয়ের থেকে আড়াই হাজার কিলোমিটারে দূরে এই দুর্গম অঞ্চলে কেন আমি এলাম! এর চাইতে বছরের এই বিশেষ দিনটা নিজের বাবা মায়ের সাথে কাটানো বেশি ভালো ছিলোনা! তারা নিশ্চয় আমার পথ পানে চেয়ে আছে। আমি তাদের একমাত্র সন্তান, আমাকে ঘিরেই তাদের যতো স্বপ্ন। অথচ গত তিন-চারদিন যাবত আমি আমার বাবা-মায়ের সাথে ফোনেও কথা বলিনি। আর লাদাখ অঞ্চল থেকে বিদেশের কোথাও ফোন করা যায়না, অর্থাৎ আরো বেশ কিছুদিন আমি আমার বাবা-মায়ের কন্ঠস্বর শুনতে পারবো না। নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছে। যদিও সারাদিনের ওই ভয়ঙ্কর পথ চলায় শরীর খুবই ক্লান্ত, আর এখন এতো নরম আর আরামদায়ক বিছানায় শুয়ে আছি আমি। আবহাওয়াও খুবই চমৎকার ঠাণ্ডা, শরীরে একটা উষ্ণ কম্বল জড়িয়ে আছি তারপরও ঘুমাতে পারছি না। মনটা খুবই ভারাক্রান্ত হয়ে আছে। মনে হচ্ছে এই মুহূর্তেই যদি বাড়ি চলে যেতে পারতাম!




অন্য প্রসঙ্গঃ অনেকেই আমার কাছে ব্লগে আর ইনবক্সে একটা বিষয়ে কৌতুহল প্রকাশ করেছেন। সেটা হচ্ছে মানালি থেকে লাদাখ যাবার এই দুর্গম পথে আমি কেন অসুস্থ হইনি! B:-) যেন আমার অসুস্থ না হওয়াটা আমার অপরাধ! #:-S হা হা! :-P

আমি কার্যকারণটাতে পুরোপুরি নিশ্চিত না তবে অনুমান করতে পারি। এবং আমার অনুমিত ধারণাটি আমি কিন্তু উল্লেখ করে দিয়েছি। আপনারা যারা সত্যিকার ভাবে জানতে আগ্রহী তারা আমার মানালি থেকে রওনা দিয়ে লেহ পৌছানো পর্যন্ত পর্বগুলো একটু খেয়াল করে পড়লেই তথ্যটা জানতে পারবেন। ;)

মন্তব্য ৪১ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৪১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই মে, ২০১৬ সকাল ৮:০৮

আহলান বলেছেন: চমৎকার

১৭ ই মে, ২০১৬ সকাল ৮:৪৩

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

২| ১৭ ই মে, ২০১৬ সকাল ৯:১৩

আততায়ী আলতাইয়ার বলেছেন: বাংলাদেশীরা সেখানে অনাহুত কেন? ভাই

১৭ ই মে, ২০১৬ সকাল ৯:১৪

সারাফাত রাজ বলেছেন: আমি সেটা জানি না ভাইয়া। তবে আমি শুনেছি ভারতের অনেক জায়গাতেই নাকি বাংলাদেশীরা অনাহুতো।

৩| ১৭ ই মে, ২০১৬ সকাল ৯:৪০

কৌশিক মোদক বলেছেন: উফ বাঁচলাম অপেক্ষা অপেক্ষা, শেষ অবধি লে পৌঁছলে, এত সুন্দর লেখ, মনে হচ্ছে তুমি মুখে গল্প বলছ। আমি অ ক্লান্ত হচ্চি আমার অ মন খারাপ হচ্ছে , খিদেতে পেত চুঁইচুঁই করছে, এবার লে থেকে কোথায় চললে, স মেরিরি, না প্যাঙ্গা সো নাকি নুব্রা, তাড়াতাড়ি জানাও, ভাল থাকো ভালো লেখ।

১৭ ই মে, ২০১৬ সকাল ১০:০১

সারাফাত রাজ বলেছেন: হা হা হা

আচ্ছা ধরো, লেহ থেকে পরদিন সকালে বাই এয়ার আমি বাংলাদেশে চলে এলাম। তাহলে ব্যাপারটা কেমন দাঁড়াবে!!! :-P

৪| ১৭ ই মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৪

যমুনার চোরাবালি বলেছেন:


দারুন এবং দারুন। আপনার লিখা যতই পড়ছি ততোই মুগ্ধ হচ্ছি। আপনার সততা আপনার লিখাটিকে আমার কাছে আরও বেশি আকর্ষনীয় করে তুলেছে। এই পর্বটাতে ছবির ব্যাপার খুবই কম ছিল। ভাবছিলাম যে ছবি খাদকরা আবার নাজানি নাখোশ হয়ে যায়। আশা থাকবে এভাবেই ডিটেইল লিখবেন। ছবি আরও কয়েকটা যোগ হলে খারাপ লাগতোনা। তবে আপনার নিখিত বর্ণনার সাথে ছবি মানানসই। রাতের বেলার ষবি আর কতি দেবেন। একটি ভ্রমণ কাহিনীর মজাটাই হলো এর ডিটেইলে। সংক্ষেপে লিখে গেলে অনেক প্রশ্ন মনের মাঝে জমা থেকে যায় সেই সাথে আকর্ষণও হারায়। অথচ চলার পথের কোন এক ছোট্ট ঘটনাই আপনার ভ্রমণ কাহিনীকে আরও আকর্ষনীয় করে তুলতে পারে। পাঠকের ভালোলাগা আরও বাড়তে পারে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যাপারৌলোকে অনেকেই এড়িয়ে যায় অথবা ভুলে যায়। অথচ পাঠকরা তা জানবার জন্য নিজের/অাপনার অজান্তেই বসে থাকে।

আপনি আমার আগের জবাবে লিখেছিলেন যে লিখা বড় হলে পড়বার ধৈর্য্য থাকবে কিনা আমার? সত্য বলতে কি আপনি আপনার লিখার মাধ্যমেই আমার ধৈর্য ধারণে সহায়তা করে চলেছেন আপনার অজান্তেই। যা কিনা এমন যে এভাবে আপনি কয়েকটা পর্ব একসাথে লিখলেও আমার ধৈর্য্যহারাহবার সম্ভাবনা মনে হয়না থাকবে। এমনিতেই আমি ভ্রমণ কাহিনি খুবই পছন্দ করি। এডভেঞ্চার আমার খুবই প্রিয় বিষয়।

আর মনে হচ্ছে আমি আপনার এই দীর্ঘ্য ভ্রমণে সারিরিকভাবে তুলনামূলক বেশি ভালো থাকবার বিষয়টা ধরে ফেলেছি। আমারও মনে আপনার ধারনাটা ঠিক। আমি নিজেও বাড়ি যাবার সময় এবং বাড়ি থেকে আসবার সময় এই টেকনিকটা ব্যাবহার করি। এবং এটা বেশ কার্যকর। যদিও কিছুটা কষ্ট হয় তারপরও বিষয়টা আমার মতো মাথা ঘুরানো বা বমিটিংওয়ালা পাবলিকের জন্য খুবই কার্যকর। কি ঠিক ধরেছিনা ??

পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
শুভেচ্ছা।

২০ শে মে, ২০১৬ রাত ৮:২০

সারাফাত রাজ বলেছেন: অসাধারণ মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি আমার লেখাগুলোর প্রতি আপনার সবসময়ই এইরকম মুগ্ধতা থাকবে।

একটা বিষয় বুঝতে পারিনি,"আপনার সততা আপনার লিখাটিকে আমার কাছে আরও বেশি আকর্ষনীয় করে তুলেছে" বলতে আপনি কি বুঝিয়েছেন?

এই পর্বে ছবির ব্যাপারটা কম ছিলো কারণ আমার ক্যামেরায় একেবারেই চার্জ ছিলোনা, এজন্য কোন ছবিই তুলতে পারিনি। তবে ওই দিনের সব স্মৃতিই আমার মানস পটে জমা হয়ে আছে। আমি চোখ বন্ধ করলেই ওই দিনটাতে চলে যেতে পারি।

আমি নিজে কোন ভ্রমণ কাহিনী যেভাবে পড়তে চাই, ঠিক সেভাবেই আমার নিজের ভ্রমণ কাহিনী লেখার চেষ্টা করছি। অনেকেই আমার এই সিরিজটা পছন্দ করছেন এটা আমার কাছে একটা বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। যারা আমার লেখা পছন্দ করেছেন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আর যারা পছন্দ করেননি তাদেরকেও ধন্যবাদ, কারণ তারা কষ্ট করে অন্তত আমার লেখাটা তো পড়েছেন।

আপনি আমার লেখা মনোযোগ সহকারে পড়েছেন, তার চেয়েও বড় ব্যাপার ধৈর্য সহকারে বেশ বড় একটা মন্তব্য করেছেন এজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনাকে অধ্যাবসায়ী করে তুলতে পেরেছি বলে ভালোলাগা অনুভব করছি।

সবশেষে একটা কৌতূহল প্রকাশ করছি। আপনি যে বিষটা ধরে ফেলেছেন সেটা জানার ব্যাপারে আমি খুবই উৎসাহী। বিশেষ করে যে কার্যকরী টেকনিকটা আপনি নিজেই এপ্ল্যাই করেন সেটা জানার জন্য আমি খুবই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছি, অবশ্য যদি জানাতে আপনার কোন সমস্যা না থাকে।

আপনার মন্তব্যের জবাব দিতে দেরী হবার কারণে আমি দুঃখিত। যে মন্তব্যগুলো আমার বিশেষভাবে ভালো লাগে সেগুলোর উত্তর আমি কিছুটা পরেই দিই। তাইবলে সবসময়ই এটা করিনা।

ভালো থাকবেন সারাক্ষণ।

৫| ১৭ ই মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৭

যমুনার চোরাবালি বলেছেন:

বানান ভুল গুলো ইচ্ছাকৃত নয়। ঠিককরে পড়ে নিবেন।

১৭ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:২৪

সারাফাত রাজ বলেছেন: হা হা হা =p~
কোন সমস্যা নাই। এবারের মতো মাফ করা গেল। তবে এর পরের বার থেকে জরিমানা করা হবে। B-))

৬| ১৭ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:১৮

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: রোমাঞ্চকর লাগল।

১৭ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:২৬

সারাফাত রাজ বলেছেন: আমার নিজের কাছেও এখন রোমাঞ্চকর লাগে। ভয়ও লাগে। এই দুর্গম পথে আমি একা ছিলাম, যদি কোন সমস্যা হতো তাহলে কিভাবে সামলাতে পারতাম। বাপরে!!
তবে সবই আল্লাহর রহমত। :>

৭| ১৭ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৩

শাকিল১৫৪৫ বলেছেন: জাক অবশেষে গজা শেষ হল ।

১৭ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:২৮

সারাফাত রাজ বলেছেন: আমি ওই দিনের পর থেকে এখনো পর্যন্ত আর একটা গজাও মুখে তুলতে পারিনি। মনে হয় আর জীবনেও পারবো না। :||

৮| ১৭ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৪

আমি গাডডুর বাপ বলেছেন: pls brother tell what is fitness secret. is it eating lot of sweets (GOJA).
pls confirm

১৭ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:২৯

সারাফাত রাজ বলেছেন: গজা!!!! B:-)
হা হা হা =p~
নারে ভাই, অন্য কিছু। B-))

৯| ১৮ ই মে, ২০১৬ সকাল ১০:৫৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অসাধারন এক ভ্রমন কাহিনী ...

আহা শেষ হয়ে গেল কেনু ;) এমনই লাগছিল শেষে :)

+++++++++++++++++

২০ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪০

সারাফাত রাজ বলেছেন: হা হা B-))

যে জিনিসটার শুরু আছে তার শেষও আছে। :-P

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। B-)

১০| ১৮ ই মে, ২০১৬ সকাল ১১:২৬

রুবাইয়াত শোভন বলেছেন: পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ভাই বেশি দিন অপেক্ষায় রাইখেন না.।.।

২০ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৩

সারাফাত রাজ বলেছেন: আবার পরের পর্বও চান!!! B:-)

হা হা হা B-))

এবার মনেহয় একটু দেরী হবে। আমার একদমই টাইপ করতে ইচ্ছে করে না। তারপরও চেষ্টা করবো কতো তাড়াতাড়ি দেয়া যায়।

১১| ১৮ ই মে, ২০১৬ দুপুর ১:৩৮

আমি গাডডুর বাপ বলেছেন: আপনার শরীর ভালো থাকার কারন টা বলেন খুব tension আছি । আমি অনেক ভেবে বের করতে পারি নাই

২০ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৫

সারাফাত রাজ বলেছেন: বেশী tension করলে শেষকালে আপনি নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। অতএব নো tension ;)

১২| ১৮ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৪

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন:






চমৎকার ভ্রমন কাহিনী। সময় নিয়ে পড়ে খুব মজা পেলাম।





ভালো থাকুন নিরন্তর।

২০ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৭

সারাফাত রাজ বলেছেন: ধৈর্য সহকারে আমার লেখা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আপনিও ভালো থাকবেন সবসময়। :>

১৩| ২১ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৯

জরুরি_কথা বলেছেন: আপনার ভ্রমণ কাহিনী খুবই সুলিখিত । আসছে ২১ শে বইমেলায় ছাপালে পাঠকরা লুফে নিবে মনে হয় ।

২১ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৪

সারাফাত রাজ বলেছেন: মন ভালো করে দেয়া একটা মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। B-)

আমার মনে হয় যে জিনিস ফ্রী পাওয়া যায়, তা কেউ পয়সা খরচ করে কিনবে না। :>

অসাধারণ মন্তব্যকারী, ভালো থাকবেন সবসময়। :>

১৪| ২৪ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১:০৩

অদৃশ্য বলেছেন:



আমিতো ভাবলাম যে আপনার এখানে এসেই পরের পর্বটা পেয়ে যাব... আহ্‌, তা আর হলোনা... দারুন লিখছেন আপনি... আপনার লিখাগুলো নিয়মিত পড়ছি... দারুন প্রকাশ আপনার... চালিয়ে যান...

পাঠককে মূল্যায়ন করবেন... লিখার ব্যাপারে মোটেও অবহেলা করবেননা...
শুভকামনা...

২৫ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৫০

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। :)

পরের পর্বটা মনে হয় আগামী মাসেই পাবেন। আশা করি সবসময়ই সঙ্গে থাকবেন।

লিখি তো ভ্রমণ কাহিনী, তার আবার সাহিত্যমূল্য :-<

যাই হোক, ভালো থাকবেন সবসময়।

১৫| ২৫ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১:৪৪

কৌশিক মোদক বলেছেন: ২৭/০৫/২০১৬ তে আবার গ্যাংটক যাচ্ছি এই নিয়ে, ৭ বার হয়ে গেল, ঘুরে আসি কথা হবে।

২৬ শে মে, ২০১৬ রাত ৮:৫৪

সারাফাত রাজ বলেছেন: তুমি তো আমাকে হিংসিত করে তুলেছ। :(
হা হা। ;)
যাই হোক, ভালো ভাবে ঘুরে এসো। এবার কিন্তু ছবির ব্যাপারে ভুল করোনা। :-P

১৬| ২৫ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৭

অদৃশ্য বলেছেন:



আগামী মাসে !! কি বলেন... এটা সহ্যের বাইরে... একটি পর্বের মাঝে এতো গ্যাপ !!
আশাকরি সামনে থেকে আরও কম সময়ের মাঝে পোষ্ট করবেন...
শুভকামনা...

২৬ শে মে, ২০১৬ রাত ৮:৫৮

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাইরে টাইপ করা খুব কষ্টের। :||
অবশ্য একটা কাজ করা যেতে পারে। :#)
আমি মুখে বলি আপনি একটু কষ্ট করে টাইপ করে দেবেন!! :-B
=p~ =p~ =p~ =p~

১৭| ৩০ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৮

যমুনার চোরাবালি বলেছেন: রাজ ভাই, লগইন ও পাসওয়ার্ড সংক্রান্ত জটিলতায় আমি এই ক'দিন আপনার ব্লগে আসতে পারলেও কোন প্রকার মন্তব্য করতে পারিনি। সামুর সহায়তার হাত খুবই দ্রুত আমার কাছে পৌছেছে। এবং আমি লগইন ও মন্ত করতে পারছি। সামু দীর্ঘজীবি হোক।

এখন কথা হলো সততা নিয়ে যেটা আপনি বুঝতে পারেননি তা আমি আপনাকে আপাতত এখন বুঝাতে যাচ্ছিনা। আপনি যেভাবে লিখছেন সেভাবে লিখে যান। আর যে টেকনিকটা আপনি ধরতে পারেননি সেটাও আমি আপনাকে বলতে যাচ্ছিনা কারন আপনি বহুবার বলেছেন যে আপনি জানাবেন অথচ কিনা শেষে এসে আপনি বললেন যে ভেতরে লিখা আছে খুঁজে নিন!! আমরা ধরতএ পারিনি বলেইতো আপনাকে জানাতে বলেছিলাম আর আপনি কিনা হেঁয়ালি করলেন। তাহলে আমরা কেন হেঁয়ালি করতে পারবোনা বলুন। তাই উপহার স্বরুপ এই হেঁয়ালিখানা আপনার এখানে রেখে গেলাম।

পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি। বেশি দেরি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু।
শুভেচ্ছা।

৩০ শে মে, ২০১৬ রাত ৮:১৫

সারাফাত রাজ বলেছেন: এজন্যই বলি যে আপনার দেখা নাই কেন! এই একই সমস্যায় আমিও পড়েছি। সামুতে মনেহয় কোন সমস্যা হয়েছে। যাই হোক সকল সমস্যা সমাধান করে সামু আরো প্রানবন্ত হোক।

আপনার হেয়ালিখানা আমার কাছে উপভোগ্য হলো। ;)
কিছু রহস্য থাকুক না!! ভ্রমণ কাহিনীর মাঝে কিছুটা রহস্য থাকলে সেটা মনেহয় আরেকটু জমাট বেঁধে ওঠে!! হা হা :-P
তবে আপনি চাইলে আমি রহস্য খোলসা করে দিতে পারি। আপনি আমার ফেসবুকের ইনবক্সে বার্তা পাঠাতে পারেন।

পরের পর্বের কাজ এখনো অনেক বাকী আছে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে আমার পরীক্ষা। আমি এখনো সিলেবাস পাইনি, পড়াশোনা করা তো দূরে থাকুক। আমার সহপাঠীরা সবসময় আমাকে হেল্প করলেও এবার তারা দলগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এবার আমাকে সম্পূর্ণভাবে বয়কট করবে। খুবই প্রেসারে আছি, আমি যে কোন ব্রাঞ্চে পড়ি তাই এখনো জানি না। সেদিন এক স্যার আমাকে ব্রাঞ্চের নাম জিজ্ঞাসা করেছে, আমি বলতে পারিনি। কী অপমানের মধ্যে পড়েছি! কয়েকদিন আমি ভুল করে অন্য একটা ডিপার্টমেন্টের সাথেও ক্লাস করেছি। তাইলে বোঝেন আমার অবস্থা!! এখন পরীক্ষা দেব কি করে তাই নিয়ে চিন্তায় আছি। এবার নির্ঘাত ফেল!! আর তারপর বাড়ি থেকে বের করে দেবে। তখন আর কোন পর্বই পাবেন না।
আমার জন্য দোয়া কইরেন ভাই।

১৮| ৩১ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৪

যমুনার চোরাবালি বলেছেন:



হেঁয়ালি মেঁয়ালি আপাতত না হয় থাকুক। আপনি বরং পরীক্ষার প্রিপারেশন নিন ঠিকঠাক। দ্রুত গ্রুপ ঠিক করে ফেলুন। প্রয়োজনে বন্ধুদের গাহাতপা টিপেও দিন। আশাকরবো ভালোভাবেই আপনি আপনার পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পারবেন। দোয়া থাকলো।
শুভকামনা।

০২ রা জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৮

সারাফাত রাজ বলেছেন: শুভকামনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। :)
আপনার জন্য লেহ শহরের একটা ছবি

১৯| ০২ রা জুন, ২০১৬ সকাল ১১:১৯

আমি গাডডুর বাপ বলেছেন: আমি মনে হয় আপনার ফিট থাকার কারন টা বের করতে পেরেছি। আপনি একবারে কম খাবার খেয়ে থেকেছেন এটার জন্য আপনার বমি ভাব হইনি এবং মাথা ঘুরেনি। আমার বের করাটা ঠিক কিনা জানাবেন। আর এই ফিট থাকার কারন টা আমার জানা বেশি দরকার কারন আমার খুব ইছহা আপনার রুট টা ফলো করে একটা ট্যুর দেবার ।

সবশেষে একটা অনুরধ। দয়া করে লেখাটা শেষ করবেন। কারন অতীতে দেখেছি অনেকে অর্ধেক লেখে পরে বাকিটা আর শেষ করেনা। আর আমি ফেসবুক এ আপনার অনুসারী ।

আশা করি ভাল থাকবেন, ভাল করে পরীক্ষা দেবেন আর আমদের জন্য লেখাটা তাড়াতাড়ি শেষ করবেন।

০৩ রা জুন, ২০১৬ সকাল ৯:১৩

সারাফাত রাজ বলেছেন: হয়নি। আমার মনে হয় আরেকটু মনোযোগ সহকারে খুজলেই পাবেন। আসলে বিষয়টা এতো সাধারণভাবে উপস্থাপিত হয়েছে যে সকলেরই চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে।

কবে যাচ্ছেন? শুভকামনা রইলো। তবে আসার সময় আমার জন্য অবশ্যই উপহার আনবেন। B-))

লেখা শেষ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবো। দেখা যাক কতোদূর যায়।

২০| ২৭ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৩১

কাজী মারুফ ইকবাল বলেছেন: ভাইয়া এই পর্বের শেষে খরচ সম্পর্কে কোন কিছুতো লিখলেননা।
খরচটা দিলে খুবি উপকৃত হতাম।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৫৬

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাইয়া, আলাদা করে খরচটা লেখা হয়নি, লেখাটার ভিতরেই দেয়া আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.