নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন বাজেট ট্রাভেলার।

সারাফাত রাজ

পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর স্থান হচ্ছে বান্দরবান আর আমি একজন পরিব্রাজক।

সারাফাত রাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

উত্তর ভারতের হিমালয় (পর্ব - ১, আধিক্য যশোর রোড)

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:০৮


সবগুলো পর্ব
সময়টা ঊনবিংশ শতাব্দির প্রায় মধ্যভাগ। সবেমাত্র রাত্রি দ্বিপ্রহর অতিক্রান্ত হইয়াছে এইরকম মুহূর্তে একখানা দুঃস্বপ্ন দেখিয়া কালীগঞ্জের রানীমা যশোধাদেবীর নিদ্রাভঙ্গ হইলো। অস্থির অবস্থায় তিনি দ্বিতলের কক্ষ ছাড়িয়া সংলগ্ন ঝুল বারান্দায় আসিলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর খাস দাসী কমলা ছুটিয়া আসিলো, হাতের ইশারায় তিনি তাকে ভাগাইয়া দিলেন। ভীত কমলা পুরোপুরি চলিয়া না গিয়া একখানা দরজার আড়ালে দাঁড়াইয়া রানীমাকে অবলোকন করিতে লাগিলো, পূর্বে রাণিমাকে এইরুপে সে আর কখনো দেখে নাই। পূর্ণচন্দ্রের আলোতে চারিপাশ ঝকঝক করিতেছিলো আর মৃদুমন্দ দক্ষিণা বাতাসে রানীমার ধবধবে সাদা থানের আঁচল বাতাসে দুলিতেছিলো। রানীমা যেন কোন কিছুই দেখিতেছেন না। মেঝেতে বিছানো একখানা শীতল পাটিতে তিনি মূর্তিবৎ বসিয়া রহিলেন। যখন শুকতারাকে ম্লান করিয়া সূর্যদেব তাঁর রথ পূব আকাশে চালনা করিলো তখন বুঝি রানীমার ধ্যানভঙ্গ হইলো। নিজেকে তিনি কিছুটা সামলাইয়া লইলেন।


বেলা দশটার দিকে খবর পাইয়া পুত্র কালি পোদ্দার তাঁর মায়ের কাছে ছুটিয়া আসিলো। এতদঞ্চলে মাতৃভক্তিতে সে প্রবাদপ্রতিম। রাত্রি জাগরণের ফলে মায়ের ক্লান্তিময় মুখচ্ছবি তাহার অন্তরকে আন্দোলিত করিয়া তুলিলো। ভগ্নকন্ঠে সে জিজ্ঞাসা করিলো,’মা, কি হয়েছে?’ উত্তরে রানীমা যাহা কহিলেন তার সারমর্ম হইতেছে এইরুপ, একখানা দুঃস্বপ্ন দেখিয়া তাঁর মনটা বিক্ষিপ্ত হইয়াছে আর এই কারনে তিনি গঙ্গাতীর্থে যাইতে মনস্থির করিয়াছেন।


মা যশোধা দেবীর ইচ্ছা পুত্র কালী পোদ্দারের কাছে আদেশ স্বরূপ ছিলো। ঊনিশ শতকের সেই সময়ে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিলো জলপথ। কিন্তু জমিদার কালী পোদ্দার তাঁর মাকে জলপথে তীর্থস্থানে পাঠাতে রাজী ছিলেন না। এজন্য তিনি মায়ের কাছে কয়েকটা বছর সময় চেয়ে নিয়েছিলেন। জলপথ ছাড়া আর একটাই মাত্র উপায় ছিলো তীর্থে যাবার, মধ্যযুগে মোঘল সম্রাট বাবরের বীর সেনানী শের শাহ’র করে যাওয়া অমর কীর্তি, ‘গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড’।


কালী পোদ্দার তাঁর মায়ের তীর্থে যাওয়ার জন্য এই গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোডটিকেই নূতন ভাবে সংস্কার করলেন। সমস্ত খরচ তাঁর জমদারী থেকে বহন করা হলো। নূতন করে রাস্তা তৈরী হলো। সে এক বিরাট কর্মযজ্ঞ। কিন্তু এতো রোদ্দুরে এই রাস্তা ধরে গেলে মায়ের কষ্ট হতে পারে, এই চিন্তায় অস্থির হয়ে গেলেন কালী বাবু। শেষে তিনি কালীগঞ্জ থেকে কলকাতা পর্যন্ত প্রায় ১০০ কিলোমিটার রাস্তার দুধার দিয়ে রোপন করলেন অতি দ্রুত বর্ধনশীল হাজার হাজার রেইনট্রি গাছ।


এক শুভদিনে রানীমা যশোধা দেবী তাঁর পুত্র জমিদার কালী পোদ্দারকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় গঙ্গাস্নান করতে বের হলেন। গাছগুলো ততোদিনে বেশ বড় হয়ে গেছে। নূতন হওয়া এই রাস্তাটার নূতন নামকরণও করা হয়েছে, যশোর রোড।


ঘটনা এখানেই শেষ হলে পারতো, কিন্তু কিভাবে যেন হলো না। তীর্থস্থান গঙ্গা দিয়ে ততোদিনে অনেক জল গড়িয়ে গেছে। রানীমা যশোধা দেবী আর তাঁর জমিদার পুত্র কালী পোদ্দার একসময় কালের গর্ভে হারিয়ে গেল। যশোর রোডের দুধারের গাছগুলো বিস্তৃত ডালপালা মেলে আরো বিকশিত হয়ে উঠলো, বহু পথিক এর ছায়ায় বসে প্রান জুড়ায়। কেউ যশোধা আর মাতৃভক্ত পুত্র কালীর কথা মনে রেখেছে কিনা কে জানে! যশোর রোডটাও তো একসময় ভাগাভাগি হয়ে গেল। একভাগ পড়লো পূর্ব পাকিস্তানে আর অন্য অংশটা ভারতে। আর তারপর ১৯৭১ সালে গাছগুলোর বয়স যখন ১২৯ বছর তখন পৃথিবীর ছোট্ট একটা অংশে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এবং ভয়াবহ গনহত্যাগুলোর একটা শুরু হলো।


একপাশে শ্বেতশুভ্র বিশাল হিমালয় আর অন্যপাশে সুনীল জলরাশির বঙ্গোপসাগর। মাঝখানে পলিমাটি দিয়ে গড়ে উঠেছে পৃথিবীর সবচেয়ে উর্বর ভূমি। এখানে নাকি মাটিতে বীজ পড়লেই ফসল হয়ে ওঠে, এখানে নাকি পাখিরা গাছে বসে হাজার রকমের গান গায়, এখানকার জলাশয়ে নাকি শয়ে শয়ে রঙিন ফুল ফোটে, এটি নাকি কবিদের দেশ, চিরকালীন প্রেমের দেশ, এখানকার মানুষেরা কৃষ্ণচক্ষু, তাদের হাসিতে নাকি জাদু আছে, এখানকার মেয়েদের বাহু নাকি রাজহংসীর গলার মতন, সেইসব হাতের ভঙ্গিমা দেখে সাপেরাও মোহিত হয়ে যায়, এখানে নৃত্যরতা নারীরা, অপূর্ব ছন্দ যেন...... সুদূর সাইবেরিয়া থেকে হাঁসেরা নাকি এখানে আসে সাঁতার কাটতে......


সুদূর সাইবেরিয়া থেকে হাঁসেরা যেখানে সাঁতার কাটতে আসে সেইখানকার বাসিন্দারা একসময় নিজেদের প্রাণ বাচানোর তাগিদে ভিনদেশে ছুটে পালানো শুরু করলো। পাকিস্তানি হিংস্র দানবেরা তাদেরকে তাড়া করেছে। অসহায় মানুষগুলো শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে যখন ছুটে চলা শুরু করলো, তখন যে কয়টি পথ তাদের চেনা ছিলো তার মধ্যে একটি ছিলো এই যশোর রোড। একসময় যশোধা আর কালী যে পথ দিয়ে তীর্থে গিয়েছে সেই পথ দিয়ে মানুষ প্রাণ বাঁচাতে চললো। কোথায়? কলকাতায়। ৬৫’র পাক-ভারত যুদ্ধের পর যে পথটা কানা গলি হয়ে পড়েছিলো সেটাই আবার সরগরম হয়ে উঠলো জীবন বাচাতে একরাশ ছুটে চলা মানুষের পায়ের ধূলায়।


কতো মানুষ হেঁটে গেছে এই পথ দিয়ে। শুধু হেঁটে গেছে তাই বা বলি কিভাবে! ৯০ উর্ধ্ব বুড়ো-বুড়িরা তো গড়িয়ে গড়িয়ে গেছে এই পথ দিয়ে। আচ্ছা, পোয়াতি নারীরা নাকি দল বেঁধে যেত? হুম, তাদের গতি ছিলো খুবই মন্থর। আচ্ছা, সদ্য বিয়ানো সন্তানকে নিয়ে নাকি মা হেঁটে গিয়েছে? হুম, মায়ের জরায়ুর সাথে শিশুটির নাভির তখনো নাড়ির সংযোগ ছিলো। সেই অবস্থায় তাকে বুকে জড়িয়ে মা নিজেকে ছেঁচড়ে ছেঁচড়ে টেনে নিয়ে গেছে এই যশোর রোড দিয়ে। আচ্ছা, দেশ স্বাধীনের পর নাকি কোন শিশু আর কোন বুড়ো-বুড়ি নাকি ফেরত আসেনি এই পথ দিয়ে? আসবে কোথা থেকে!! তারা বেঁচে থাকলে তো আসবে! আচ্ছা, এই ঘটনার সাক্ষী ছিলো কেউ? ছিলো তো! পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক মানুষ ছুটে এসেছিলো এই ঘটনার সাক্ষী হতে। সেপ্টেম্বরের একটা দিনে এসেছিলেন প্রথাবিরোধী কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ, তাঁর পথ প্রদর্শক ছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।


অ্যালেন এই বর্বরতার শুধু সাক্ষীই হননি, মানুষের আদালতে জোরালো গলায় তিনি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। রচিত হয়েছিলো মানব ইতিহাসের সবচাইতে করুণতম কবিতাটি, সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড।


আচ্ছা, পথ জুড়ে শুধুই কি হাহাকারের স্মৃতি? কই নাতো! বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তো এই পথ দিয়েই দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে এসেছিলেন তাঁর স্বাধীন দেশে। ভাষন দিয়েছিলেন তাঁর মুক্তাঞ্চলে। সেই স্মৃতি তো ভালোবাসার স্বপ্নমাখা, সেই স্মৃতি তো গৌরবের! আচ্ছা, সেই যশোর রোডটা কি এখনো আছে? সেই গাছগুলো? সবগুলো গাছ তো নেই বাপু! কিছু রাক্ষসেরা অনেকগুলো গাছ গিলে খেয়ে ফেলেছে। আর বাকী যেগুলো রয়েছে সেগুলোকে নিয়ে নাকি লুই আই কানের তৈরী আধুনিক পৃথিবীর সবচাইতে সেরা ভবনগুলির একটিতে বাদানুবাদ হয়। কি জানি! সেগুলোও রাক্ষসের পেটে যায় কিনা! আর যশোর রোড! সেটারও তো নাম বদলেছে। সেটা তো এখন বেনাপোল মহাসড়ক!




আগের পর্ব

২০১৬ সালের ১ অক্টোবর বেনাপোল মহাসড়ক দিয়ে ছুটে চলেছি। বাড়ি থেকে বের হয়েছি সকাল আটটার দিকে। কোন ট্যুরে গেলে আমি সবসময়ই দুরাকাত নফল নামায পড়ে বের হই। আমি দেখেছি এর ফলে অনেক বড় বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। একবার ঢাকা থেকে যশোরে আসবার সময় আমি যে বাসে ছিলাম সেটা একসিডেন্ট করেছিলো। বাসের সামনের অংশটুকু পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। আল্লাহর রহমতে সে সময় বেশ জোরে বৃষ্টি হচ্ছিলো বলে আগুন খুব বেশি ব্যাপকতা ছড়াতে পারেনি। হুড়োহুড়ি করে সবাই যখন বাস থেকে নামলো দেখা গেল যে আমিই ওই বাসের একমাত্র সুস্থ যাত্রী ছিলাম, যার কিচ্ছু হয়নি। আর একটা কয়েকমাসের বাচ্চা ছিলো যে খুব অল্পের উপর দিয়ে রেহাই পেয়ে গিয়েছে।


সকালের রোদমাখা আবহাওয়াতে মোটরসাইকেলে করে বর্ডারে যাচ্ছি, কিছুটা শীত শীত লাগছে। বেশ কয়েকদিন ধরেই আমার জ্বর এসেছে এবং কোমরেও ব্যাথ্যা। কিন্তু লুকিয়ে লুকিয়ে ঔষধ খাওয়া আর কোমরে গরম ছ্যাক দেবার কাজ করতে হয়েছে এবং একয়দিন আমি খুব স্বাভাবিক আচরণ করছি যেন বাবা-মা একেবারেই আমার অসুস্থতার বিষয় টের না পান। ঘুণাক্ষরেও যদি তারা টের পান যে আমি অসুস্থ তাহলে কোনমতেই আর ট্যুরে যেতে দেবেন না। শেষ পর্যন্ত আমি সফল হয়েছিলাম। তবে সকালে বাড়ি থেকে বের হবার সময় আমি মাত্র ৯ কেজি ওজনের ব্যাগ-প্যাকটা যখন কিছুতেই পিঠে নিতে পারছিলাম না তখনই আমার মা সবকিছু বুঝে ফেলেছিলেন, কিন্তু আমার মুখের দিকে চেয়ে তিনি আর ট্যুরটাতে বাঁধা দেননি। শেষ পর্যন্ত তিনিই ব্যাগটা কাঁধে তুলে দিয়েছিলেন। তাঁর মুখটা চিন্তিত দেখেছিলাম আমি সেসময়।




আমার বাবা তাঁর মোটরবাইকে করে আমাকে বেনাপোল পর্যন্ত দিতে চলেছেন। আমাদের বাড়ি থেকে বেনাপোল বর্ডার মাত্র ৩৮ কিলোমিটার। রাস্তাটা গতো বছরের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে। মসৃণ পথ, দুপাশে মোটা মোটা গাছ আর বিস্তৃত ধানক্ষেত। আবহাওয়া খুবই চমৎকার। মিষ্টি রোদ আর ছায়া মিলে চমৎকার পরিবেশ।










মাঝে মাঝে ফুলের ক্ষেত দেখতে পাচ্ছি। বাংলাদেশের ফুলের চাহিদার ৭০ ভাগ যোগান দেয় যশোর। গদখালীকে ফুলের রাজধানী বলা হয়। ফুল নিয়ে এখানে এলাহী কর্মকান্ড চলে। সকাল বেলা এতো গোছা গোছা বিভিন্ন রূপ আর রঙের তাজা ফুল দেখা যে কি আনন্দের তা নিজের চোখে না দেখলে বলে বোঝানো যাবে না।


বেনাপোল রোডের সমান্তরাল ভাবে রেলপথ চলে গেছে। এই রেলপথটি কলকাতার সাথে সংযুক্ত। ১৯৪৭ সালে ভাগ হয়ে পাশাপাশি তৈরী হলো দুটো শত্রু দেশ। একে-অপরকে সহ্য করতে না পারলেও দেশ দুটি নিজেদের স্বার্থে একে-অপরের রেলপথ ব্যাবহার করতো। ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত খুলনা থেকে ট্রেনে রাজশাহী যেতে হলে যশোর-বেনাপোল হয়ে ভারতে প্রবেশ করতে হতো। তারপর বনগাঁ দিয়ে রানাঘাট হয়ে দর্শনা ষ্টেশনের মাধ্যমে আবার দেশের ভিতরে ঢুকতো। অনুরূপভাবে কলকাতার লোকেরা দার্জিলিং যেতে চাইলে কলকাতা থেকে দর্শনা ষ্টেশনের মাধ্যমে এপাশের দেশে প্রবেশ করতো।





কিন্তু ৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের পর দেশদুটি অন্যদেশের রেলপথ ব্যাবহার করে যাতায়ত বন্ধ করে দেয়। ফলশ্রুতিতে কলকাতার লোকেরা দার্জিলিং যেতে চাইলে প্রথমে কলকাতা থেকে ব্রডগেজ লাইনে চেপে ফারাক্কা পর্যন্ত যেত। সেখানে স্টীমারে করে নদী পার হয়ে ওপাশ থেকে মিটার গেজের লাইনে উঠে শিলিগুড়ি পর্যন্ত যেত। তারপর সেখান থেকে ন্যারো গেজের ট্রেনে উঠে পৌঁছে যেত ব্রিটিশ সাহেবদের অবকাশকালীন শৈল শহর দার্জিলিং-এ।


আর রেলপথ না থাকার কারণে তো খুলনা থেকে রাজশাহী পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধই হয়ে গেল। পরে অবশ্য যশোর স্টেশন থেকে দর্শনা পর্যন্ত নূতন রেললাইন তৈরী করা হয়েছিলো। দর্শনাতে নূতন একটি স্টেশন তৈরী করতে হলো, নাম দেয়া হলো দর্শনা হল্ট। মজার ব্যাপার হচ্ছে দর্শনা হল্ট স্টেশনে একটাই মাত্র রেল লাইন। অর্থাৎ এই স্টেশনে একবারে মাত্র একটাই ট্রেন দাঁড়াতে পারবে। এই নূতন রেলপথটি তৈরী হবার পর আবার খুলনা-রাজশাহী রুটে সরাসরি ট্রেন যোগাযোগ ব্যাবস্থা চালু হলো।


১৯৬৫ সালের পর যশোর থেকে কলকাতা পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এখন এই রুটে মাঝে মাঝে মালবাহী ট্রেন যাতায়ত করে। আর যশোর থেকে বেনাপোল পর্যন্ত দুটি যাত্রীবাহী ট্রেন দিনে দুবার যাওয়া-আসা করে। শুনেছি খুব শীঘ্রই নাকি খুলনা থেকে যশোর বেনাপোল হয়ে কলকাতা পর্যন্ত সরাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল আবার শুরু হবে।





একসময় কপোতাক্ষ পার হলাম।পৃথিবীর একটি বিখ্যাত নদ এটি। এই নদটার জন্য একসময় মাইকেল সুদূর ফ্রান্সে বসেও উতলা হয়েছিলেন।







বেনাপোল শহরে প্রবেশ মুখে দেখলাম খুব সুন্দর করে নগর তোরণ তৈরী হচ্ছে। শহরের প্রবেশ মুখ থেকে বর্ডার পর্যন্ত রাস্তা এবং এর দুপাশ আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কার্যক্রম এই ছোট্ট শহরটার উত্তরোত্তর শ্রী বৃদ্ধির ঘোষনা দিচ্ছে।





মোটরবাইকে করে একেবারে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত চলে এলাম।





আমার বাবার পরিচিত কিছু লোক আছে এখানে। তাদেরই একজন আমার পাসপোর্ট নিয়ে গেল ট্রাভেল ট্যাক্স জমা আর ইমিগ্রেশনের সিল দেবার জন্য। আমি শুধু আমার ব্যাগটা নিয়ে তাঁর পিছু পিছু কাস্টমস পার হলাম। সবমলে এক মিনিটও লাগলো না। তারপর আন্তর্জাতিক গেটটাতে পুলিশ আমার পাসপোর্ট দেখে জিরো পয়েন্টে যাবার অনুমতি দিলো। বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী তখন সকাল সাড়ে নয়টা অর্থাৎ ইন্ডিয়ান সময় অনুযায়ী সেটা নয়টা।





জিরো পয়েন্টের এই জায়গাটা অন্যরকম। দুপাশে দুটি দেশ, মাঝখানের একচিলতে জায়গাটা কারো না। একপাশে বেশ উঁচু করে গাল্যারি তৈরী করা হয়েছে। ভোর আর সন্ধ্যায় দুদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন আর নামানোর সময় এখানে নাকি দুইদেশের সীমান্তবাহিনীর যৌথ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। দর্শনার্থীরা যেন বসে সেই মহড়া উপভোগ করতে পারে এজন্য এই গ্যালারী তৈরি হয়েছে।





জিরোপয়েন্টের এই জায়গাতে বিজিবি আর বিএসএফের সদস্যরা টহল দিচ্ছে। এখান থেকে শেষবারের মতো বাংলাদেশ অংশে তাকালাম। আমার বাবা দেখি উদ্বিগ্ন মুখে বাংলাদেশের গেটটাতে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবারই বাবার দাঁড়িয়ে থাকার ভঙ্গিটা আমার এই মুহূর্তটাকে বিষন্ন করে তোলে । শেষবারের মতো তাঁর দিকে হাত নেড়ে বিদায় জানিয়ে এগিয়ে গেলাম ইন্ডিয়ান অংশের গেটের দিকে।এই গেটে এক কর্মকর্তা আমার পাসপোর্ট চেক করলেন আর তারপর ইন্ডিয়ান ভূখণ্ডে প্রবেশের অনুমতি দিলেন। কাস্টমস অফিসের দিকে এগোলাম, আর আমার সঙ্গী লোকটা সরাসরি ইন্ডিয়ান ভূখণ্ডে ঢুকে গেল।


ইন্ডিয়ান অংশে ঢুকে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা সরু একটা পথ দিয়ে এগিয়ে যেতে হয় ইন্ডিয়ান কাস্টমস অফিসের দিকে। আজকে একেবারেই ভীড় নেই। খুবই ফাঁকা পরিবেশ। আমি সবসময়ই দেখেছি যে শনিবারদিন বর্ডারে দুদেশের যাত্রী সংখ্যা একেবারেই কম থাকে।


ইমিগ্রেশন অফিস সবসময়েই আমার স্নায়ুর উপর বাড়তি চাপ ফেলে। আমি জানি এটা কিছুই না, অথচ কেমন যেন মানসিক অস্থিরতায় ভুগি আমি। আর এবারের ব্যাপারটা আরো বেশি অস্বস্তিকর আমার কাছে। কারণ গতবারে বাংলাদেশ কাস্টমস পুরো দেড়টা ঘণ্টা জুড়ে আমাকে আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলো। অবশ্য সেবার আমার কিছু দোষ আর ভুলত্রুটি ছিলো। আমি কিছু চালাকি করেছিলাম, যার খেসারত দিতে হয়েছিলো আমাকে। বাপরে! সেদিনের কথা ভাবলে এখনো আমার জ্বর চলে আসে। সেই ঘটনার পর আমার মনে হয়েছিলো যে আর জীবনেও দেশের বাইরে যাবো না। কারণ বাইরে যেতে হলেই কাস্টমস পার হতে হবে। কিন্তু হিমালয় আমাকে প্রচণ্ডভাবে টেনেছে। তাঁর আহ্বান আমি অগ্রাহ্য করতে পারিনি। তবে হিমালয়কে ছাপিয়ে এখন বর্ডার পার হবার এই মুহূর্তটাতে গতোবারের হয়রানি হবার ঘটনার কথাই বেশি করে মনে পড়ছে। আর আরো তটস্থ হয়ে উঠছি আমি।


যাই হোক আয়াতুল কুরসি পড়তে পড়তে ইন্ডিয়ান কাস্টমসে ঢুকে পড়লাম। একদম ফাঁকা, কোন যাত্রীই নেই। একজন সুদর্শন কাস্টমস আমার ব্যাগ চেক করতে এগিয়ে এলো। জিজ্ঞাসা করলো এতো বড় ব্যাগ কেন। বললাম যে শীতের অংশটাতে যাবো এজন্য একগাদা শীতের পোষাক। সে আর তখন আমার ব্যাগটা চেক না করে চোখের ইশারায় অন্য একজন সৈনিকের পিছনে চলে যেতে বললো।


আমি এই সৈনিকটার পিছু পিছু চললাম। সৈনিকটা একটা আলাদা ঘরের এক কোনে আমাকে নিয়ে গিয়ে প্রথমে আমার পাসপোর্টটা চেক করলো। তারপর আমাকে বললো যে আমার মানিব্যাগটা খুলে দেখাতে। আমি মানিব্যাগ বের করে তাঁর সামনে মেলে ধরা মাত্রই সে আমার মানিব্যাগ থেকে একটা ৫০০ টাকার নোট ছো মেরে তুলে নিয়ে গটগট করে সেই ঘর থেকে বের হয়ে গেল। ঘটনার আকস্মিকতায় একেবারে হতভম্ব হয়ে গেলাম আমি।

মন্তব্য ৩৬ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৩৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৫

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: একপাশে শ্বেতশুভ্র বিশাল হিমালয় আর অন্যপাশে সুনীল জলরাশির বঙ্গোপসাগর। মাঝখানে পলিমাটি দিয়ে গড়ে উঠেছে পৃথিবীর সবচেয়ে উর্বর ভূমি। এখানে নাকি মাটিতে বীজ পড়লেই ফসল হয়ে ওঠে, এখানে নাকি পাখিরা গাছে বসে হাজার রকমের গান গায়, এখানকার জলাশয়ে নাকি শয়ে শয়ে রঙিন ফুল ফোটে, এটি নাকি কবিদের দেশ, চিরকালীন প্রেমের দেশ, এখানকার মানুষেরা কৃষ্ণচক্ষু, তাদের হাসিতে নাকি জাদু আছে, এখানকার মেয়েদের বাহু নাকি রাজহংসীর গলার মতন, সেইসব হাতের ভঙ্গিমা দেখে সাপেরাও মোহিত হয়ে যায়, এখানে নৃত্যরতা নারীরা, অপূর্ব ছন্দ যেন...... সুদূর সাইবেরিয়া থেকে হাঁসেরা নাকি এখানে আসে সাঁতার কাটতে......
...........এটুকু তো এক অসাধারণ কাব্য, পুরোটা পড়িনি, বাকীটা পরে পড়ে মন্তব্য করবো।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:০৬

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই, পৃথিবীতে যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিলো তখন এর অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোতে খুব ভালো ভালো সাহিত্য রচনা হতো। এখনো বোধহয় হয়, আমি ঠিক জানি না। তো সোভিয়েতের সাহিত্যগুলো বিভিন্নভাষায় অনুবাদের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হতো। অনুবাদিত হওয়া বিভিন্ন ভাষার মধ্যে বাংলা ছিলো একটি।

আমি যখন স্কুলে পড়ি তখন যশোর পাবলিক লাইব্রেরির সদস্য ছিলাম। ১৮৫১ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়া এই লাইব্রেরিতে সোভিয়েতের অনুবাদ হওয়া বিভিন্ন গল্পের বই ছিলো। সেখানেই এক ইউক্রাইন লেখকের বাংলাদেশের প্রকৃতি সম্পর্কে লেখার অনুবাদ পড়েছিলাম। বাংলাদেশ সম্পর্কে তিনি যা বলেছিলেন তাঁর ভাবানুবাদ ছিলো অনেকটা এরকম।

২| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৬

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: তবে যশোর রোডের ইতিহাস পড়ে সত্যিই আমি চমৎকৃত

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:১৩

সারাফাত রাজ বলেছেন: যশোর রোডের ইতিহাস খুবই মর্মস্পর্শী, আমার পক্ষে সেটা তুলে ধরা একেবারেই সম্ভব না।

ভাই, আপনি খুবই ভালো লেখেন। আশা করি কোন একসময় যশোর রোড নিয়ে আপনার কোন গবেষনাধর্মী লেখা পাবো, যেখানে যশোর রোড নিয়ে বিস্তারিত তথ্য থাকবে।

৩| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৪৯

আমি গাডডুর বাপ বলেছেন: অয়াও কে লিখলেন ভাই। পড়তে পড়তে মনে হল কোন অসম্ভব মানবিক একজন লেখক এর লেখা পড়লাম।

আপনার লেখার হাত দিনে দিনে ভাল হচ্ছে।
এত দিন মনে করতাম আপনি হয়ত শুধু ভ্রমন কাহিনী ভাল লেখেন। কিন্তু এই লেখাটার প্রথম অংশ টুকু পড়ে মনে হল আমাদের পরবর্তী একজন হুমায়ুন আহমেদ পেতে যাচ্ছি।

আমার মনে হয় আপনার লেখালেখিটা সিরিয়াস ভাবে নিয়া উচিত। আপনার প্রতিভা সম্পর্কে আপনি নিজে জানেন না।

সবশেষে আপনার লেখাটার প্রশংসা করার মত শব্দ আমার জানা নাই।

ভাল থাকবেন পরবর্তী লেখাটা তাড়াতাড়ি দেবার চেষ্টা করবেন।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:১৯

সারাফাত রাজ বলেছেন: আমি একজন বোকা-সোকা মানুষ, আর আপনি আমাকে নিয়ে সবসময়েই ঠাট্টা করেন। :-/

৪| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২৬

তাওহিদ হিমু বলেছেন: টাকা নিল কেন?? এটার মানে কী?? পরের পর্ব ঠিক এখান থেকেই শুরু করবেন, আশা করি। শুরুতে যশোর রোড ও ১৯৭১ এর কথাটি খুব ভাল লাগল।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২১

সারাফাত রাজ বলেছেন: কি কারনে যে টাকা নিলো তা তো সেই লোকটাই ভালো বলতে পারবে। তবে টাকাটা যে সে একাই মেরে দিলো তা না। বিভিন্ন ভাগে ভাগাভাগি হয়ে এই টাকা বিভিন্ন ব্যাক্তিরা ভাগাভাগি করে নেবে।

পরের পর্ব অন্য জায়গা থেকে শুরু করলে হয় না? :P


আশাকরি প্রতিটি পর্বেই সাথে থাকবেন।

৫| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৪৭

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আমার এতকিছু জানা ছিল না। আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। লেখা কিন্তু বেশ জমে উঠেছে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
আর হ্যা আমাদের বাড়ির সামনে দিয়ে গেলেন অথচ কোন ট্যাক্স দিয়ে গেলেন না।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৭

সারাফাত রাজ বলেছেন: আপনাকে তো জরিমানা করা উচিৎ। আপনার বাড়ির সামনে দিয়ে গেলাম অথচ কিছু খাওয়ালেন না!! X(

ভাই, লেখা জমে উঠে কি শুধু বরফ হয়ে উঠছে? নাকি চকলেটি আইসক্রীম? ;)

৬| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ভ্রমনের সাথে সমৃদ্ধ ইতিহাস!

এতো দারুন ব্যপার হল :)

ধন্যবাদ ও অপেক্ষায় ----

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৯

সারাফাত রাজ বলেছেন: সমৃদ্ধ ইতিহাস!! বাপরে ! সে তো বিরাট কর্মযজ্ঞ। ভাই, এটা শুধুই একজন সাধারণ মানুষের ভ্রমণ কাহিনী।

আশাকরি সবগুলো পর্বেই আপনার সরব উপস্থিতি পাবো। :)

৭| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:০৭

শেখ মাসুদুর রহমান বলেছেন: যশোর রোড ও বাংলাদেশ নিয়ে লেখা কথাকলি পড়ে পুরোই মুগ্ধ। আরো মুগ্ধ হব এই আশাতে রইলাম।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৬

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই, বাংলাদেশ অংশের বর্ণনা একজন রাশিয়ান লেখকের থেকে নেয়া। তাঁর লেখার অনুবাদটা আমি কিছুটা আমার মতো করে সাজিয়ে নিয়েছি। আর মৌসুমী ভৌমিকের "যশোর রোড' গানটা শুনলে সেই সময়কার যশোর রোডের অনেক চিত্র দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।



পরের পর্ব লিখবো, তবে মুগ্ধ করতে পারবো কিনা জানিনা। তবে আশা করবো সবগুলো পর্বেই সাথে থাকবেন। :)

৮| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০০

অশ্রুত প্রহর বলেছেন: ভ্রমণ বিলাস,
দারুন লাগল ইতিহাস !! :)

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০২

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাইয়া, বিলাস নাই শুধুই ভ্রমণ। B-)

ইতিহাস লেখিনাই, ভ্রমণ কাহিনী লিখতেছি। :D

ভালো থাকবেন ভাই, শুভকামনা জানবেন। :)

৯| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১২

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: ঘুণাক্ষরেও যদি তারা টের পান যে আমি অসুস্থ তাহলে কোনমতেই আর ট্যুরে যেতে দেবেন না।......আমি মনে করি ট্যুরে যাওয়ার আগে অসুস্থতাকে লুকানো মোটেও উচিৎ হয়নি, একজন অসুস্থ হলে পুরো টিমেরই বিপদ হয়ে দাঁড়ায়, আর সেটা যদি বিদেশ হয়তো বিপদ হয় দ্বিগুণ।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৪

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই, আমি একাই গেছিলাম। আমার সাথে পরিচিত আর কেউ ছিলো না।
ওখানে গিয়ে আমি বেশ অসুস্থ হয়ে গেছিলাম। একদিন তো জ্বরের ঘোরে অজ্ঞান পর্যন্ত হয়ে গেছিলাম। একটা ইজরাইলি গ্রুপ আমাকে সাহায্য করেছিলো।

বাড়ি এসে এই কথা অবশ্য কাউকে বলিনি, যদি পরবর্তীতে আর যেতে না দেয় এই ভয়ে। ;)

১০| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৭

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: তবে আমি মনে করিনা এমনটা করা আপনার ঠিক হয়েছে।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:০৭

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই, বিপদে পড়লে মনেহয় যে আর এরকম কখনো করবো না। কিন্তু বিপদ থেকে উদ্ধার পেলে আবার সবকিছু ভুলে যাই। তবে আস্তে আস্তে এই বদ অভ্যাস গুলো ছাড়ার চেষ্টা করতেছি।

১১| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৬

ক্লে ডল বলেছেন: ইতিহাস, ভ্রমণ, ছবি মিলিয়ে দারুণ সমৃদ্ধ পোষ্ট! আপনার বর্ণনাভঙ্গী খুব ভাল লাগল।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:০৯

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই। আরো কতোগুলো পর্ব লেখার আগ্রহ আছে। আশা করি সবগুলোতেই আপনাকে পাশে পাবো। :)

১২| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৫৬

বাকি বিল্লাহ বলেছেন: ভাই আপনার পোস্ট আমি আগে পড়েছি কিনা মনে নেই.। কিন্তু নিঃসন্দেহে বলা যায় আপনার লেখনি চমৎকার . পরের পর্বটা দ্রুত দিবেন প্লিজ । শুভ কামনা।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৩৫

সারাফাত রাজ বলেছেন: :D আপনি আমার লেখা আগে পড়েছেন এবং মন্তব্যও করেছেন।
লেখা ভালো লাগার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আশাকরি পরের পর্বগুলোতেও আপনি থাকবেন।

১৩| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:২৮

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: তারপর আমাকে বললো যে আমার মানিব্যাগটা খুলে দেখাতে। আমি মানিব্যাগ বের করে তাঁর সামনে মেলে ধরা মাত্রই সে আমার মানিব্যাগ থেকে একটা ৫০০ টাকার নোট ছো মেরে তুলে নিয়ে গটগট করে সেই ঘর থেকে বের হয়ে গেল।.....দক্ষ সৈনিকই বটে :D

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:১২

সারাফাত রাজ বলেছেন: হা হা হা হা
ভাই, ডাকাত

১৪| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৪১

পদ্মপুকুর বলেছেন: ছবিগুলো খুব ভালো লাগলো। বেনাপোল রোডের এই গাছগুলো দেখলেই মনে একটা শান্তির ভাব চলে আসে। আগে আরো অনেক বেশি গাছ ছিল। এইট নাইনে থাকার সময়ে কোন এক গ্রীষ্মের উদাসী দুপুরে ক্লাসে বসে বসে দেখতাম ঝিকরগাছা বাজারের বিশাল গাছগুলো কাটছে...... সেই গাছ কাটার ব্যথা এখন টের পাই।
অথচ পেট্রাপোল থেকে ওপাড়ে বহুদুর পর্যন্ত গাছগুলো রয়ে গেছে সেই আগের মতই।

আমরা শালা গাছ কাটতে খুব ওস্তাদ! একটা অ্যাড ছিল না: কাটো গাছ-খাও মাছ....

৩৮ কিমি দুরে মানে কি? যশোর? না পুলেরহাট?

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৪

সারাফাত রাজ বলেছেন: বাহ!! আপনিও এই গাছগুলোর পরশ পেয়েছেন!! :)

বাংলাদেশ অংশে গাছের সংখ্যা অনেক কম, অথচ ভারতের অংশে ওরা সযত্নে গাছগুলোকে সংরক্ষন করে চলেছে। ওরা গাছ মাঝখানে রেখে দুপাশ দিয়ে রাস্তা চওড়া করেছে। আমি শুনেছি বাংলাদেশ অংশে নাকি গাছ কেটে রাস্তা চওড়া করা হবে। যদি সত্যিই এমনটি করা হয়ে থেকে তবে ব্যাপারটা হবে খুবই দুঃখজ্বনক।

৩৮ কিলোমিটার মানে যশোর, আরো একজ্যাক্টলি বললে চুয়াডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ড।

১৫| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:০২

জাহাঙ্গীর হোসেন সজল বলেছেন: খুবই সুন্দর লেখা। আমি মুগ্ধ হয়ছি আপনার লেখায়।

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৫

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। :)
আশাকরি পরের পর্বগুলোতেও আপনাকে পাশে পাবো।

১৬| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:০৪

অদৃশ্য বলেছেন:



অনন্য সাধারণ... তৃপ্তি পেয়েছি লিখাটি পড়ে... আপনার ভ্রমণ কাহিনীর চমৎকারিত্ব নিয়ে বলতে গেলে নতুন নতুন শব্দ খুঁজতে হবে আমাকে... সত্যই সুন্দর, অনেক সুন্দর প্রকাশ...

আপনার আমার প্রতিটি পদক্ষেপের নীচে আসলে চাপা পড়ে আছে অগণিত সময়ের ইতিহাস... আমরা কতোটুকুই বা জানি আর জানতে চাই... কিন্তু কেউ যখন সেটা মাটি খুঁড়ে বের করে আনে তখন আমরা তা আগ্রহ নিয়ে পড়ি, দেখি, ভাবি... ক'জন তা করতে পারে বা চায় সেটাই প্রশ্ন... আপনার যশোর রোড নিয়ে বর্ননা করা ঘটনাগুলো সত্যই হৃদয়স্পর্শী... একটি ভ্রমণ কাহিনীতে যশোর রোড নিয়ে এমন বিস্তারিত লিখা সম্ভবত আমি এই প্রথম পড়লাম... আর তা পাঠ করে মুগ্ধ হয়েছি...

শুরুটাতো চমৎকার হলো... আশা থাকবে সামনের পর্বগুলোও এমন বা এর থেকেও সুন্দরভাবে আমাদের উপহার দেবেন...

রাজের জন্য
শুভকামনা...

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:৪২

সারাফাত রাজ বলেছেন: অদৃশ্য মানব,


কবি তো শব্দ নিয়ে খেলা করবে... নূতন শব্দ সৃষ্টি করবে...

আপনার শুভকামনায় সিক্ত আমি, ভালোবাসা জানবেন...

১৭| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩০

জুন বলেছেন: খুব সুন্দর ইতিহাস আর বর্ননা দিয়েছেন যশোর রোড নিয়ে সরাফত রাজ । মনে হলো বহুবার দেখা সেই পথ আবার দেখে নেই আপনার ছবিতে । আর বেনাপোলের ভারতের কাষ্টমস সম্পর্কে আমার ধারনা এত খারাপ এত খারাপ যে বলার নয় । সাধারন মানুষকে কি পরিমান হয়রানী করে তারা তা নিয়ে লিখতে গেলে মহাভারত হয়ে যাবে ।
যাক আপনার চোখে হিমালয় দেখার অপেক্ষায় ।
+

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৩৬

সারাফাত রাজ বলেছেন: আপু, আমি তো আরো সবসময় আফসোস করি যে,

ইশ!! আপনার মতো যদি লিখতে পারতাম!!


আপনার সবগুলো লেখা যে কি পরিমান সুখপাঠ্য তা বলার অবকাশ নেই। আপনি আগের চেয়ে লেখার হার কমিয়ে দিয়েছেন। সবসময়ই আপনার লেখাগুলো পড়ার অপেক্ষায় থাকি।

১৮| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫১

পদ্মপুকুর বলেছেন: পুরাতন চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের কাছেই, ডায়মন্ড প্রেসের পাশে, পুরাতন কসবায় আমার নানার বাড়ি। আমার এক মামা ওই এলাকার কমশিনার... আরো বেশি ঘাটলে দেখা যাবে আপনি হয়ত আমাদের আত্মীয়ই ;)

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:০২

সারাফাত রাজ বলেছেন: তাহলে আপনি-আমি বোধহয় আত্মীয়ই হই। শুধুমাত্র মুস্তা চাচাকে ভোট দেবার জন্যই আমি একবার যশোরে গেছিলাম। মক্তব স্কুলের পাশের বাড়িটা আমাদের।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.