নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন বাজেট ট্রাভেলার।

সারাফাত রাজ

পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর স্থান হচ্ছে বান্দরবান আর আমি একজন পরিব্রাজক।

সারাফাত রাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্যা সিটি অফ জয়

১৫ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১:০৭



অন্য পর্বগুলো
আমার মা আমার দেখা সবচাইতে extrovert মানুষ। বেশিরভাগ সময়ই সে এমন এমন কাজ করে থাকে যা আমি কখনোই করার সাহস সঞ্চায় করে উঠতে পারবো না। সবসময়ই অবাক হয়ে ভাবি, ইশ! আমি যদি এই মানুষটার মতো সাহসী হতে পারতাম!

১।
হুট করেই ডিসিশনটা নেয়া হলো। যশোরে ছিলাম, সন্ধ্যার সময় মাকে বললাম, মা চলো কলকাতা থেকে ঘুরে আসি। সঙগে সঙগে মা চিতকার করে বললো, আমার কি মাথা খারাপ হয়েছে যে তোর সাথে বেড়াতে যাবো!!! তোর সাথে গেলে তুই আমাকে হাটায়ে হাটায়ে মেরে ফেলবি! আমার যখন “এটাওটা” যা খাইতে ইচ্ছা করবে তুই তা খাইতে দিবি না! “টুকটাক'” কিছু কিনতে চাইলে তুই চিল্লা-পাল্লা করবি! আমি তোর সাথে যাবো না।


অনেক সাধ্য-সাধনার পর তিনি রাজী হলেন। ফলাফল স্বরুপ পরদিন ভোরবেলা আমরা বেনাপোল বর্ডারে। ইন্ডিয়ান ভিসা প্রাপ্তি এখন বোধহয় বেশ সহজ হয়েছে, কারণ এই ভোর সাড়ে ছটাতেও বিরাট লম্বা লাইন। বাংলাদেশ অংশের কাজ খুব দ্রুতই শেষ হলো। একটা ভালো ব্যাপার হচ্ছে যে বাংলাদেশ অংশে এবার সেরকমভাবে দালালের কোন উতপাত দেখিনি। কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারাও বেশ হেল্পফুল। নো-ম্যান্স ল্যান্ড পা রাখলাম আমি ষষ্ঠবারের মতো, আর মা প্রথমবার।


প্রথমবার বিদেশ ভ্রমনের যে উত্তেজনা থাকে তার ছিটেফোঁটাও মায়ের ভিতরে নেই। তবে তিনি তার স্বভাবমতই অস্থির। আমি বিরাট লম্বা লাইনের শেষে দাঁড়িয়ে আছি আর মা না বাংলাদেশ না ভারত এই জায়গাটাতে ঘুরঘুর করছেন। বর্ডার এলাকা সবসময় আমারে স্নায়ুর উপর প্রচন্ড চাপ তৈরী করে। আমার অতীত অভিজ্ঞতা ভালো না। একবার আমাকে দেড় ঘন্টা আটকে রেখেছিলো। তারপর থেকেই আমার “বর্ডার ফোবিয়া” হয়েছে। অথচ মা নির্বিকার ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নো-ম্যান্স ল্যান্ডের ভিক্ষুকগুলোকে ভিক্ষা দিচ্ছেন, তারা কোন দেশের অধিবাসী সেসব খোজখবর নিচ্ছেন। এই অ-মালিকানার জায়গায় ঘুরঘুর করা একগাদা কুকুর আর ছাগল কিভাবে কোথা থেকে এলো সেগুলো জানার ব্যাপারে তার অপরিসীম কৌতূহল। আমি হতাশ চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছি।


আমার মায়ের শরীরে ইনফেকশন আছে। বেশ ঘনঘন তার ওয়াশরুমে যাবার প্রয়োজন পড়ে। তিনি প্রথমে দায়িত্বরত মহিলা বিজিবি সদস্যের কাছে গেলেন যে ওয়াশরুমে কোথায় জানার জন্য। কিন্তু বিজিবি সদস্যা তার অপরাগতা প্রকাশ করলেন। তখন মা বিএসএফ সদস্যের কাছে গেলেন। বিএসএফ এর ভদ্রলোক খুবই হেল্পফুল। তিনি সঙ্গে সঙ্গে মাকে একজন বেসামরিক কর্মকর্তার কাছে নিয়ে গেলেন। সেই কর্মকর্তা তখন মাকে পাসপোর্ট সহ ইন্ডিয়াতে প্রবেশ করিয়ে দিলেন। মার কাছে তখন কোন মোবাইল নেই এবং আমার কাছে যে মোবাইল আছে তার সিম কোন নেটওয়ার্ক পাচ্ছে না। নো-ম্যান্স ল্যান্ডে আমি লাইনে দাঁড়িয়ে আছি আর মা ইন্ডিয়াতে ঢুকে পড়ছেন। দূর থেকে হাত নেড়ে ইশারায় আমাকে জানালেন যে তিনি কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছেন। আমরা দুজনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলাম।


সাপের মতো একেবেকে লম্বা লাইন ধীরে ধীরে এগোচ্ছে। আমি দুশ্চিন্তায় অস্থির হয়ে গেছি। আধাঘন্টা হয়ে গেছে, অথচ মায়ের দেখা নেই। সেতো কিছুই চিনে না। কোথায় কি করতে হবে তা একেবারেই জানে না। তার যা স্বভাব নিশ্চয় কোন প্যাচালে পড়েছে, এজন্য আর আসতে পারছে না। আইরে আল্লাহ!! বিদেশ বিভুয়ে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে কিভাবে সামাল দেব! সমান তালে আয়াতুল কুরসি পড়ছি। নিজের উপরেই রাগ হচ্ছে, কেন যে মাকে আনলাম! আর যদিও আনলাম তাহলেও কেন নিজের কাছছাড়া করলাম! মনেহলো গলা ছেড়ে কাঁদি। যখন দুশ্চিন্তার একেবারে শেষ সীমায় পৌছে গেছি আর দরদর করে ঘামছি তখন দেখি মা হেলতে-দুলতে ফিরে আসছেন, তার মুখ হাসিহাসি। মাকে দেখে এতো স্বস্তি আমি জীবনেও পাইনি।


দেরী হবার কারণ হিসাবে মা আমাকে যে কৈফিয়ত দিলেন তাতে আমার আক্কেল গুড়ুম। অফিসের ভিতরে ইন্ডিয়ান কাস্টমস কিভাবে ব্যাগ চেক করছে আর দালালরা ১০০ টাকার বিনিময়ে কিভাবে যাত্রীদের লাইনে না দাড় করিয়ে কাস্টমস পার করে দিচ্ছে এতোক্ষন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেইসব মজার দৃশ্য দেখছিলেন। বোঝো অবস্থা!! আমি এদিকে দুশ্চিন্তায় মরি আর মা এইসব “মজার” দৃশ্য দেখে বেড়াচ্ছেন। এই মানুষটার সাথে আমার একয়দিন ঘুরতে হবে!! আমার বুক ফেটে আবারো কান্না আসছে।


সত্যিই ব্যাপারটা অপমানজ্বনক। দালালকে টাকা দিয়ে লাইনে না দাঁড়িয়ে কাস্টমস পার হওয়া। এবং এভাবে পার হচ্ছে শুধুমাত্র বাংলাদেশীরা। কোন ইন্ডিয়ান যাত্রীকে এভাবে পার হতে দেখিনি। তারা সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে ধীরে ধীরে পার হচ্ছে। অসুস্থদের জন্য বিশেষ ব্যাবস্থা আছে, তাদের লাইনে দাড়ানো লাগে না। কিন্তু যেসব মানুষেরা দালালকে টাকা দিয়ে লাইনে না দাঁড়িয়ে দ্রুত যারা পার হচ্ছে তারা সবাই বাংলাদেশী। সব বাংলাদেশী কিন্তু এভাবে পার হচ্ছে না। ইয়াং বাংলাদেশী ছেলেগুলো যারা তারুণ্যে ভরপুর, যাদের শরীরে খুবই সুন্দর দামী ফ্যাশনেবল টিশার্ট-জিন্স, পিঠে দামী ব্যাগ-প্যাক, পায়ে ঝকঝকে জুতো তারাই মূলত দালালদের কাস্টমার। এইসব প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরপুর তরুন বাংলাদেশি ছেলেরা লাইনে না দাঁড়িয়ে আইন ভাঙ্গার ক্ষেত্রে বিশেষ পারঙ্গম। আচ্ছা, দিনদিন কি আমরা আরো অধঃপতনে যাচ্ছি! ভারতীয় যাত্রীরা এই ছেলেগুলোকে দেখিয়ে নিজেদের মধ্যে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করছে। নিজেকে প্রচন্ডভাবে অপমানিত লাগছে।

২।
ইন্ডিয়ান লোকাল ট্রেনগুলোতে প্রচন্ড পরিমানে ভীড় থাকে। বনগা থেকে আমরা লোকাল ট্রেনে উঠেছি। ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষন পর ভীড়ের চোটে অবস্থা খারাপ হয়ে গেল। প্রচন্ড চাপাচাপিতে একেবারে ভয়ঙ্কর অবস্থা। গায়ের উপরে লোক উঠে গেছে। এ পর্যন্ত হলেও মানা যেত। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এইসব ট্রেনের ধামসা ধামসা পুরুষগুলো গ্যাক গ্যাক করে চিল্লায়ে চিল্লায়ে গল্প করে। এমন জোরে গল্প করে যেন তারা এক বগি থেকে অন্য বগির লোককে তাদের গল্প জানাতে চায়। এদের সেন্স অব হিউমার বোধহয় কিছুটা নিন্মমানের। খুব সাধারণ ছোটখাটো ব্যাপারগুলো নিয়ে এরা ভ্যাকভ্যাক করে আসে এবং মজার ব্যাপার হচ্ছে একই ব্যাপার তারা চার থেকে পাচবার রিপিট করে আর প্রতিবারই ভ্যাকভ্যাক করে হাসে। মহিলা যাত্রীরা কিন্তু এমন করে না। তারা খুবই শান্তশিষ্ঠ।


এদের এই চিতকার চেচামেচিতে মাথা ধরে যায়। বাপরে! তোরা গল্প করবি আস্তে আস্তে কর। তা না। একটা সময় মনেহলো মা বোধহয় এখনই কারো সাথে মারামারি বাধিয়ে বসবে। তার ভাবভঙ্গি বেশি সুবিধার ঠেকছে না। চোখ বড় বড় করে মার দিকে তাকিয়ে আছি। আমার চাহনিতে হুমকি স্পষ্ট। ট্রেনে ওঠার আগে বারবার তাকে বলে দিয়েছি সে যেন এই দেড়টা ঘন্টা একটু ধৈর্য সহকারে বসে থাকে। কিন্তু মনেহচ্ছে সে আমার কথা মানবে না। যেকোন সময় কেলেঙ্কারি অবস্থা শুরু হয়ে যাবে। মনেমনে আয়াতুল কুরসি পড়ছি।


মার ভাবভঙ্গি দেখে সবচাইতে চিল্লিয়ে গল্প করা যাত্রীটি নিজেকে কিছুটা সামলে নিলেন। তিনি কিছুটা কৈফিয়তের সুরে মাকে বোঝালেন যে দেখুন সারাদিনের প্রচন্ড কর্মব্যাস্ততায় ট্রেন যাত্রার এই গল্প করাটুকুই আমাদের একমাত্র বিনোদন। মা বোধহয় ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন। তিনিও নিজেকে কিছুটা সামলে নিলেন। আমি বিরাট হাফ ছেড়ে বাচলাম।


৩।
আমি আর মা উদ্দেশ্যহীন ভাবে কলকাতা ঘুরে বেড়িয়েছি। নিজেদের মতো করে। আমরা চড়েছি লোকাল ট্রেনে, মেট্রোতে, লোকাল বাসে, ট্রামে, শেয়ার অটোতে, হাতে টানা রিক্সায়। তবে সবচেয়ে বেশি ঘুরেছি হেঁটে। মে মাসের প্রচন্ড গরমে আমরা মাতা-পুত্র দুজনে কলকাতার পথে পথে হেঁটে বেড়িয়েছি। পুরানো কলকাতার ট্রাম রাস্তা, সরু অলিগলি, পুরানো অন্ধকারাচ্ছন বাড়িগুলো, ছোট ছোট মন্দির, পুরানো মসজিদ, কাঁচাবাজার, ফুলের বাজার, গঙ্গার ধার থেকে শুরু করে সাহেব পাড়া পর্যন্ত। এতো আনন্দ আগে কোন কিছুতেই পাইনি। ময়দানের পাশের ট্রাম রাস্তা ধরে আমরা হেঁটে চলেছি। একপাশে খোলা মাঠ আর অন্যপাশে বেশ চওড়া রাস্তা মাঝখানে পুষ্পরাজি শোভিত বৃহৎ বৃক্ষের সারি। এর মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে দুসারি ট্রাম রাস্তা। এত্তো ভালো লাগে জায়গাটা। অনেকক্ষন দাড়িয়েও কোন ট্রামের দেখা পেলাম না। এক ঝালমুড়িওয়ালা বললো যে এই রুটে এখন আর ট্রাম চলে না। কি যে আফসোস লাগলো! আহারে! অনেক কিছুই দিনদিন বদলে যাচ্ছে।


কোথাও কোন যানযট নেই। রাস্তাগুলো ঝকঝকে তকতকে। ফুটপাত দিয়ে আরাম করে হেঁটে যাওয়া যাচ্ছে। মানুষ যেখানে সেখানে প্রস্রাব করছে না। কোন এলাকার রাস্তা খোড়াখুড়ি হচ্ছে না। আইন শৃঙ্খলা মেনে চলার প্রবণতা অনেক বেশি। বিশেষ করে সবাই ট্রাফিক আইন মেনে চলছে। এতো হাটাহাটি করছি অথচ সেভাবে ক্লান্তি অনুভব করছি না, তারমানে এখানকার আবহাওয়া অতোটা দূষিত না। আসলে আমি একদিনের পর্যটক, খারাপ কোন কিছু সেভাবে চোখে পড়েনি। তবে যারা দীর্ঘদিন ধরে এই শহরটাতে থাকেন তারা নিশ্চয় অনেক ভালো-মন্দ বলতে পারবেন।


প্রথম মেট্রোতে ওঠার সময় মা ঠিক বুঝে উঠতে পারেননি। পরে তিনি আমাকে বলেছিলেন ট্রেনটা আসার আগে প্ল্যাটফর্মে একগাদা মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলো। ট্রেনটা এসে থামলে তিনি দেখেন যে প্ল্যাটফর্মে একটা মানুষও দাঁড়িয়ে নেই এবং ফাকা ট্রেনটা একেবারে ভরে গেছে, একটা সীটও খালি নেই। এতোগুলো মানুষ কখন কিভাবে হুড়মুড় করে মেট্রোতে উঠে পড়লো আর বসার জায়গা দখল করলো সেটা তিনি নাকি প্রথমে বুঝতেই পারেননি।


কিন্তু ওই একবারই। কারণ এরপর থেকে যতোবারই আমরা মেট্রোতে চড়তে গিয়েছি ততোবারই দেখেছি মা দৌড়ে আগে উঠে বসার জায়গা দখল করতে পেরেছে আর পাশের যাত্রীর সাথে গল্প শুরু করে দিয়েছে। একবারও আমি মেট্রোতে বসার সিট পাইনি, কিন্তু প্রতিবারই মা বসার জায়গা দখল করতে পেরেছে আর আমার দিকে বিজয়ী প্রতিযোগীর হাসি দিয়েছে।


সাইন্স সিটিতে গিয়েছি এতো সকালে যে তখনো সেটা খোলেনি। মূল চত্বরের বাগানে বসে আছি। কি সুন্দর ফলজ গাছ। হঠাত দেখি মা গাছ থেকে জামরুল পারা শুরু করে দিয়েছে। যতোসব উদ্ভট কাজকর্ম। এখানকার লোকেরা দেখলে কি বলবে তা কে জানে! কপালে যে কি খারাবী আছে! কিছুক্ষন পর দেখি সাইন্স সিটির কর্মচারীরা ছুটে আসছে। এবারে মান-সম্মান সব গেল। ওমা! এই লোকগুলো দেখি কাছে এসে মার সাথে জামরুল পারায় যোগদান করলো। এই বিস্বাদ ফল মানুষ এতো আগ্রহ সহকারে খায় কিভাবে তা আল্লাহই জানে!


সাইন্স সিটির দরজা খোলার সাথে সাথে আমরা দৌড়ে গিয়ে ঢুকে পড়েছি। এখানে সুন্দর একটা জায়গা আছে, নাম সাইন্স পার্ক। সাইন্স পার্কে নানারকম খেলার সরঞ্জাম আছে। খুবই মজাদার একটা জায়গা। আমরা দুজনেই দৌড়ে গিয়ে ওখানকার দোলনায় চড়েছি। আর সাথে সাথেই ধপাস!! হি হি। দুজনেই হেসে গড়াগড়ি, কারোরই ব্যাথা লাগেনি। আমাদের দোলনা থেকে পড়ে যাওয়া কেউ দেখলো কি দেখলো না এসব ছোট-খাটো ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামিয়ে আমরা কখনোই আমাদের মজা নষ্ট করি না।


মিরর হাউজের মধ্যে একটা গোলক ধাধা আছে। এই জিনিসটা মাকে বাচ্চাদের মতো খুশি করে তুলেছিলো। কতোবার যে সে এই গোলকধাঁধার মধ্যে দিয়ে যাওয়া-আসা করেছে আর আনন্দে হো হো করে হেসে উঠেছে। শুধু তাই না। এইদিনে একটা খ্রীষ্টান মিশনারি থেকে কতোগুলো অনাথ প্রতিবন্দী বাচ্চাকে সাইন্স সিটি পরিদর্শনে আনা হয়েছিলো। এইসব বাচ্চাগুলোর বেশিরভাগই হয়তো চোখে দেখে না অথবা একা চলাফেরা করতে অক্ষম কিংবা বুদ্ধি প্রতিবন্দী। মা অনেকগুলো বাচ্চাকে হাত ধরে এই মিরর হাউজ ঘুরিয়ে দেখিয়েছে। মায়ের সাথে বাচ্চাগুলোও সে কি খুশি। যেসব বাচ্চারা চোখে দেখতে পায়না তারা হাত দিয়ে দিয়ে সবকিছু অনুভব করছে। বেশিরভাগ সময় তারা মার কাছে অনেককিছুর বিবরণ জিজ্ঞাসা করছে ইংরেজি অথবা হিন্দিতে। মা নিজের মতো করে বাংলায় এগুলোর বর্ণনা দিচ্ছে, বাচ্চাগুলো তা শুনে হেসে কুটিকুটি। সত্যি কথা বলতে কি নির্মল পবিত্র ভালোলাগার মুহূর্তগুলোতে ভাষা কোন বাঁধা হয়ে দাড়াতে পারে না।


মায়ের মধ্যে ন্যাকামি ব্যাপারটা একেবারেই নেই। 'পারবো না' এই কথাটি আমি তার মুখ থেকে কখনোই শুনিনি। আমরা পুরোটা ট্যুরে একবারও ট্যাক্সিতে উঠিনি। লোকাল বাস, ট্রেন, ট্রাম অথবা মেট্রোতে চড়েছি। বাংলাদেশ থেকে যারা কলকাতা বেড়াতে যায় তাদের অধিকাংশই ট্যাক্সি ছাড়া চলতেই পারে না। অথচ মা খুব সাবলীল ভাবেই দৌড়ে লোকাল বাস অথবা ট্রামে চড়েছে। মাঝ রাস্তায় বাস থামিয়ে কন্ট্রাকটারের কাছে শুনেছে যে এই বাসটা আমাদের গন্তব্যপথে যাবে কিনা।

একবার একটা রিক্সা দেখে মায়ের খুবই পছন্দ হলো। কেমন যেন পালকি ধরনের রিক্সা। সাথে সাথে রিক্সা থামিয়ে তাতে উঠে বসে মা আমাকে বললো তাড়াতাড়ি সুন্দর করে একটা ছবি তুলে দে। দুহাতে ব্যাগ, কিভাবে ছবি তুলি!


জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে গিয়েছি। প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে মা কিছুটা আবেগ-আপ্লুত হয়ে গেলেন। সর্বশ্রেষ্ঠ বাংলা সাহিত্যিকের বাড়িতে আমরা দাঁড়িয়ে আছি এই ব্যাপারটা তাকে প্রচন্ড পরিমানে রোমাঞ্চিত করেছে। তখন তাকে দেখিয়ে দিলাম যে এই এলাকার কেউই বাংলায় কথা বলছে না, এমনকি এই বাড়ির গেটের সামনে যে কতোগুলো পিচ্চি ক্রিকেট খেলছে তারাও হিন্দিতে উল্লাস করছে। হা কপাল!! দুনিয়ার সবচাইতে শ্রেষ্ঠ বাংলা সাহিত্যিক মানুষটার পাড়ার লোকেরাই বাংলা পারে না!


বরাবরের মতো এবারো আমার ভাগ্য খারাপ। আমি বোধহয় এই নিয়ে চতুর্থবারের মতো রবীন্দ্রনাথের বাড়িতে এলাম। কিন্তু কখনোই আমি এই বাড়ির অন্দরমহলে ঢুকতে পারিনি। ২৫ শে বৈশাখ উপলক্ষ্যে বাড়ির সংস্কার চলতেছে। এজন্য ভিতরে যাওয়া নিষেধ। শুধু রবীন্দ্রনাথের গাড়ির গ্যারেজ পর্যন্ত যেতে পারলাম। মা দেখি ততোক্ষণে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তার সাথে বসে বকবক শুরু করে দিয়েছেন। এবং সেই বকবকটা মোটামুটি তর্ক। আমরা সুদূর বাংলাদেশ থেকে এসেও কেন রবীন্দ্রনাথের বাড়ির ভেতরে যেতে পারবো না! কর্মকর্তা মার সাথে তর্কে মোটামুটি হেরেই গিয়েছিলেন। কারণ শুধুমাত্র আমরা মাতা-পুত্র দুজনে ঠাকুর দালান পর্যন্ত যাবার অনুমতি পেয়েছিলাম।


সন্ধ্যার পর আমরা হাওড়া ব্রীজে দাঁড়িয়ে থেকেছি। প্রচন্ড বাতাস, নীচে বিপুলা নদী, দূরে আলোয় রঙ্গীন বিদ্যাসাগর সেতু, আর পাশ দিয়ে ছুটে চলা ব্যাস্ত মানুষের স্রোত। অসাধারণ অনুভূতি। সময়গুলো কোথা দিয়ে যে উড়ে যাচ্ছিলো আমরা একেবারেই টের পাইনি।


তবে মাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছিলো হাওড়া স্টেশন। ছুটে চলা প্রতিটি মানুষকে ঘিরেই যেন গল্প আছে। আমি আর মা মুগ্ধ চোখে এই গল্পগুলো দেখছিলাম। এতো এতো মানুষ তবুও সবকিছু যেন সুশৃঙ্খল। সবাই ধারাবাহিকভাবে যাচ্ছে। প্রতি মিনিটেই কয়েকটা করে ট্রেন আসছে আর যাচ্ছে। লোকাল ট্রেনগুলোতে প্রচন্ড ভীড়। এই লোকাল ট্রেনগুলোই কলকাতাকে বাচিয়ে রেখেছে তার উপর চাপ সৃষ্টি না করে। প্রতিদিন ৩০ লক্ষেরও বেশি মানুষ লোকাল ট্রেনে করে কলকাতা যাতায়াত করে। এই পরিমান মানুষ যদি প্রতিদিন যাওয়া-আসা না করে কলকাতা শহরেই বসবাস করতো তাহলে শহরটার উপর কি বিপুল পরিমানে চাপ পড়তো! বিভিন্ন রকমের লোকাল ট্রেন আছে কলকাতায়। সুপার লোকাল, গ্যালোপিং লোকাল, সাধারণ লোকাল, সার্কুলার রেল, মাতৃভূমি স্পেশাল ইত্যাদি। ভাড়াও খুব কম। ২০০ কিমি পর্যন্ত ভাড়া ৪৫ রুপি।


আমি আর মা বিশাল এই হাওড়া স্টেশন ঘুরে ঘুরে দেখেছি। পুরো ২৩ টা প্ল্যাটফর্ম। কালকা মেল দাঁড়িয়ে আছে ৯ নম্বর প্ল্যাটফর্মে, এটাতে উঠলাম কিছুক্ষণের জন্য। আমার খুব প্রিয় একটা ট্রেন। ১৫১ বছর ধরে ট্রেনটা চলছে। এই উপমহাদেশের প্রথম আন্তনগর ট্রেন এটি। ট্রেনটাতে উঠে মনে হচ্ছিলো যে আর না নেমে এটাতে করেই সিমলায় চলে যাই। মাও একই মনোভাব ব্যাক্ত করলো।


হাওড়া স্টেশনের একপাশে বিরাট কর্মযজ্ঞ হচ্ছে। মেট্রো ট্রেনের লাইন পরিবর্ধিত হচ্ছে। নগর পরিবহন ব্যাবস্থার অংশ হিসাবে কলকাতার মূল শহর থেকে এই হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত মেট্রো রেলের সম্প্রসারণের কাজ চলছে। লাইনটা যাবে গঙ্গা নদীর নীচ দিয়ে। অর্থাৎ কলকাতা থেকে মেট্রো ট্রেনে চেপে গঙ্গা নদীর নীচ দিয়ে টানেলের মধ্যে দিয়ে হাওড়া স্টেশনে আসা যাবে। বুকে কেমন চিনচিন ব্যাথা অনুভব হলো। ঢাকাতেও মেট্রো রেলের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু সেই কনস্ট্রাকসনের কাজ কি যথেষ্ট মনোযোগ সহকারে হবে! আরেকটা মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভারের মতো মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টিকারী কিছু হবে নাতো!


সারাদিন ঘোরাফিরা করে বেশ রাতেই হোটেলে ফিরে এলাম। আর তখনই মনেপড়লো যে আমরা কোন সিম কিনিনি এবং বাবাকে ফোনে জানানো হয়নি যে আমরা ঠিকঠাক আছি।কাছাকাছি কোন আইএসডি দোকান নেই যে সেখান থেকে ফোন করা যাবে। হোটেলের আশেপাশের অনেকগুলো মোবাইলের দোকান ঘুরলাম, কিন্তু সেরকম কোন সুবিধা করতে পারলাম না। শেষমেষ আবার হোটেলেই ফিরে এলাম।


হোটেলে ফেরত আসার পর মা একটা রুমের দরজা ধাক্কা দিলেন। রুম থেকে একজোড়া বয়স্ক দম্পতি বের হয়ে আসলে মা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলো যে তারা বাংলাদেশ থেকে এসেছে কিনা। তারা হ্যা বলায় মা বললো যে আমাদের একটু বাংলাদেশে ফোন করা দরকার। তাদের ফোনটা আমরা ব্যাবহার করতে পারি কিনা। তারা সানন্দেই তাদের ফোনটা এগিয়ে দিলেন।


আমি অবাক হয়ে ভাবছি কোন অপরিচিত লোকের কাছ থেকে এভাবে ফোন নিয়ে কোথাও কল করার সাহস আমার কি জীবনেও হতো!!


৪।
রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা বাজে এসময় আমরা ট্রেন থেকে নেমেছি। স্টেশন থেকে আমাদের হোটেলে বাসে যেতে ছয় মিনিট মতো লাগে। কিন্তু এতো রাতে আর কোন বাস নেই। শুধু বাস কেন আর কোন বাহনই নেই হোটেলে যাবার মতো। বেশখানিকক্ষণ যাবত দাঁড়িয়ে আছি। অনেকক্ষণ পর রাস্তা দিয়ে একটা প্রাইভেট কার যাচ্ছিলো। মা হাত তুলতেই সঙ্গে সঙ্গে গাড়িটা থেমে গেল। মা ড্রাইভারকে আমাদের হোটেল পর্যন্ত পৌছে দেবার অনুরোধ জানিয়ে বললো যে এজন্য কতো দিতে হবে। ড্রাইভার তখন মিষ্টি হেসে জানালো যে সে আমাদেরকে অবশ্যই নামিয়ে দেবে আর এজন্য তাকে কোন টাকা দিতে হবে না। আমরা তখন তার গাড়িতে উঠে পড়লাম। ড্রাইভার তখন করলো কি, আরো তিনজন মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলো তাদেরকে ডাকলো। তারপর সেই তিনজনেক বললো যে চলুন আপনাদেরকেও পৌছে দিয়ে আসি। মজার ব্যাপার হচ্ছে বাকী তিনজন মানুষও বাংলাদেশী। আমরা একই এলাকার হোটেলে উঠেছি।


ড্রাইভার ভদ্রলোক যেটা করলেন সেটা হচ্ছে কোন সুস্থ এবং নিরাপদ শহরের একটি খুব বড় বৈশিষ্ঠ্য। তিনি কতোগুলো বিপদগ্রস্থ মানুষকে সহায়তা করেছেন। তিনি আমাদের হোটেল পর্যন্ত লিফট দিলেন এবং আমাদেরকে নামিয়ে দিয়ে খুব সুন্দর করে হেসে বিদায় সম্ভাষণ জানালেন। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা।


আচ্ছা, ঢাকা শহরে কি কখনো এরকম সাহায্য পাওয়া সম্ভব?
হুম, সম্ভব। কারণ আমি একবার পেয়েছি।


৫।
যে হোটেলটাতে উঠেছিলাম তাতে ছোট্ট একচিলতে ছাদ আছে। রাত ১২ টার পরে আমি আর মা সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতাম। ছাদ থেকে উকি মেরে দেখতাম নীচে রাস্তায় একজন মহিলা তার বাড়ির সামনে দেয়া দোকানে কাজ করে চলেছে। সে যেভাবে পরিশ্রম করে আমি আর মা মুগ্ধ হয়ে তাই দেখতাম। হোটেলের একপাশে হাইওয়ে , হুশহাশ করে গাড়ি ছুটে চলেছে। একটা বিরাট বিলবোর্ডের ঝকঝকে আলো চারপাশ রঙ্গিন করে তুলেছে। মা আর আমি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প করতাম। মা দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াতেন। অদ্ভুত এই আলোতে মাকে আরো সুন্দর দেখাতো। সবকিছু কেমন যেন স্বপ্নাচ্ছন্ন মনে হতো। এই স্মৃতিটুকুই সঞ্চিত ভালোবাসা।


৬।
তিন দিনের ট্যুর শেষে আমার মা প্রচন্ড পরিমানে সাম্প্রদায়িক একটা কথা বলেছেন। কথাটা সাম্প্রাদায়িক হলেও প্রচন্ড পরিমানে সত্য। মা আমাকে বলেছিলেন, “যে কাজটা মুসলমানদেরর শহর ঢাকার করা উচিত অথচ সেখানে নেই কিন্তু সেটা হিন্দুদের শহর কলকাতায় আছে”। খাবার পানি নিয়ে মা একথা বলেছিলেন। কলকাতার পথে পথে কিছুদূর পরপরই খাবার জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যাবস্থা আছে। ঠান্ডা পানি আর নর্মাল পানি দুটোই। মে মাসের প্রচন্ড গরমে আমরা কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় হেঁটে বেড়িয়েছি, প্রচন্ড তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়ছিলাম। অথচ খাবার পানির জন্য আমাদের একেবারেই হা-হুতাশ করতে হয়নি।


শুধু খাবার পানিই না। কলকাতায় কিছুদূর পরপরই পাবলিক টয়লেট। আগেই বলেছি যে আমার মায়ের শরীরে ইনফেকশন আছে, কিছুক্ষণ পরপরই তাকে ওয়াশরুমে যেতে হয়। একজন নারী নির্ভয়ে পাবলিক টয়লেটে যেতে পারছে এটা সেই শহরের নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধির বড় একটা লক্ষণ। ঢাকা শহর এইরকম কোন বৈশিষ্ঠ্য থেকে যোজন যোজন পিছিয়ে আছে। আহারে!! প্রিয় ঢাকা শহর!!


৭।
এখনো পর্যন্ত আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ ট্যুর ছিলো এটি।(যদিও একবার পুলিশের হাতে ধরা খেয়েছিলাম এবং মা আমাকে ছাড়িয়ে এনেছিলো :#) )। মা এই প্রথমবার ভারতে গেল, অথচ ভারতের অনেক বিষয় আমি তার কাছ থেকেই শিখলাম। আমার দেখা সর্বশ্রেষ্ঠ ট্রাভেলার হচ্ছে আমার মা। সৌন্দর্য দেখা এবং অনুভব করার মতো বিশেষ ক্ষমতা তার মধ্যে আছে, যে ক্ষমতাটা আমরা অন্যান্য মানুষেরা দিনদিন হারিয়ে ফেলেছি।

অন্য পর্বগুলো

মন্তব্য ৫৭ টি রেটিং +১৬/-০

মন্তব্য (৫৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১:১২

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: অনেক দিন পরে লিখলেন অবশেষে!

১৫ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১:২১

সারাফাত রাজ বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যে অনেক ধন্যবাদ।
কেমন আছেন আপনি?

খাওয়ানোর কথাটা মনে আছে তো? ;)

২| ১৫ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১:৩২

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আপনার মায়ের সাথে আপনার ভ্রমনের বিষয়টা খুব ভাল লেগেছে। ভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ অথচ আমরা তাদের থেকে কত পিছিয়ে এটা ভাবলেই খারাপ লাগে। সুন্দর একটি পোষ্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ সারাফাত ভাই।

১৫ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৩

সারাফাত রাজ বলেছেন: পিছিয়ে আছি কি? কি জানি! হয়তো বা কোন দিক দিয়ে এগিয়েও আছি।

মনোযোগ সহকারে লেখাটা পাঠ করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।

৩| ১৫ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১:৩৫

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ভুলিনি ভাই। বাস্তবতার সাথে যুদ্ধে ব্যাস্ত। যশোরে থাকলে হত।একদিন সময় করে আসেন গোপালগন্জে।

১৫ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪১

সারাফাত রাজ বলেছেন: হা হা
আপনি যশোরে অথবা ঢাকাতে আসলে জানাবেন।

আন্তরিকতা জানবেন সবসময়।

৪| ১৫ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৩

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: খুব সুন্দর লেখা কিন্তু প্রথমটাই পড়েছি
িএত বড় পড়ার সময় ই পাবো না হয়তো :(

১৫ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৮

সারাফাত রাজ বলেছেন: তবু যে চোখ বুলিয়েছেন এজন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা। আশা করি সময় নিয়ে কোন একটা সময় পড়বেন।
ভালো থাকবেন আপু।

৫| ১৫ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৭

রাতু০১ বলেছেন: ধন্যবাদ সারাফাত ভাই
শুভকামনা।

১৫ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৮

সারাফাত রাজ বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাই।
শুভকামনা জানবেন নিরন্তর।

৬| ১৫ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৫:০৮

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: অচেনা পথে অজানাকে দেখতে দেখতে উদ্দেশ্যহীন হাটা সত্যিই অনেক রোমাঞ্চকর।

১৫ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪০

সারাফাত রাজ বলেছেন: জ্বী ভাই। আর সাথে যদি একজন প্রিয় মানুষ থাকে তবে তো সোনায় সোহাগা। :)

আপনার ক্যামেরার চোখে বাংলার নবাবদের শহর দেখলাম। প্রচন্ড তৃপ্ত হয়েছি।

৭| ১৫ ই মে, ২০১৭ রাত ৮:২১

আহমেদ জী এস বলেছেন: সারাফাত রাজ ,





ঝরঝরে, ঝকঝকে, তকতকে একটি লেখা ।
যে আপনাকে কলকাতা ঘুরিয়ে এনে অনেক অভিজ্ঞতাবান করে তুললেন তাকে সশ্রদ্ধ সালাম । মা হো তো এ্যায়সি.........।

দুঃখ হয়, আমরা কতো যোজন যোজন পিছিয়ে আছি, এটা জেনে ।

১৫ ই মে, ২০১৭ রাত ৮:৫৪

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই, আপনার লেখাগুলো চিত্তাকর্ষক এবং একই সাথে কোন কিছু ভাববার খোরাক যোগায়।

লেখাটা হয়তো আপনার ভালো লেগেছে, সেজন্য কৃতজ্ঞতা।

সাধারণ একটা কৃষ্ণচূড়া গাছের দিকে তাকিয়ে পুরো বিকেলটা যে মুগ্ধভাবে কাটানো যায় এটা আমার মা আমাকে শিখিয়েছে। সবাই বলে আমার মা নাকি একটু অন্যরকম। আমি আমার এই 'অন্যরককম' মাকে নিয়েই প্রচন্ড সুখী।

ভালো থাকবেন সবসময়। :)

৮| ১৫ ই মে, ২০১৭ রাত ১০:৩০

আহমেদ জী এস বলেছেন: সারাফাত রাজ ,



প্রতিমন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ ।

তবে " হয়তো " নয় , আসলেই লেখাটি ভালো লেগেছে । লাইক দিয়ে তা জানিয়েওছি ।
সবাই কেন, লেখা পড়ে আমারও মনে হলো আসলেই আপনার মা "অন্যরকম " ।
এমন মায়ের সুপুত্র হয়ে থাকুন চিরকাল ।

১৫ ই মে, ২০১৭ রাত ১০:৩৪

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই, অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ।
দোয়া করবেন সবসময়।
ভালোবাসা জানবেন।
:)

৯| ১৬ ই মে, ২০১৭ রাত ৩:২৮

সৌমিক আহমেদ খান বলেছেন: পড়ে ভাললাগসে

১৬ ই মে, ২০১৭ সকাল ৯:৩৪

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সৌমিক ভাই। :)

১০| ১৬ ই মে, ২০১৭ ভোর ৬:২৭

টরপিড বলেছেন: সাবলিল বর্ননা, আমাদের দেশের সাথে তুলনা কিংবা লিখাটির আরো সবকিছু ছাড়িয়ে আমার কাছে ভালো লেগেছে অন্য কারনে। পুরো লিখা পড়ার সময়টাতেই আমি ভাবছিলাম আমার আম্মার কথা। আপনার জায়গায় আমি, আর আপনার মা'র জায়গায় আমার আম্মা থাকলে, আপনার বর্ণিত ঘটনাগুলোয় আমার ভূমিকা কেমন হতো কিংবা আম্মার ভূমিকা কেমন হতো। ভাবছিলাম, কলকাতায় না যেতে পারলেও এবার দেশে গিয়ে আব্বা-আম্মাকে নিয়ে কোথায় কোথায় ঘুরতে যাব। উঠে এসেছি নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে, যেখানে ঘুরতে যাওয়াটা বাহুল্য, সেজন্য কখনোই প্রয়োজন ছাড়া সেরকম ঘুরাঘুরি করা হয়নি। খুব স্বপ্ন দেখি, আব্বা-আম্মাকে নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরব এবার গিয়ে। আপনার, আপনার মা - দুইজনের জন্যেই অনেক অনেক শুভকামনা। দোয়া করবেন, আমার স্বপ্ন যেন পূরণ হয়।

১৬ ই মে, ২০১৭ সকাল ১০:৫৩

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই, আপনি কোথায় থাকেন?

আশা করি দেশে ফেরত আসার পর আপনি আপনার বাবা-মাকে নিয়ে খুব ভালো কোথাও অবশ্যই ঘুরতে যেতে পারবেন। হয়তো কক্সবাজার অথবা বান্দরবান কিংবা দু'জায়গাতেই।

দোয়া করি, আপনার শুভ সংকল্প যেন অবশ্যই পূরণ হয়।

লিখতে গিয়েছিলাম ভ্রমণ কাহিনী, কিন্তু লেখা শেষে দেখলাম পুরোটা জুড়েই মায়ের কথা উঠে এসেছে। এটা অবচেতনভাবেই উঠে এসেছে।

অপেক্ষায় থাকলাম, আপনার বাবা-মাকে নিয়ে আপনার ভ্রমণ কাহিনী শোনার জন্য।

ভালো থাকবেন। শুভকামনা জানবেন সবসময়। আপনার বাবা-মায়ের জন্য ভালোবাসা।

১১| ১৬ ই মে, ২০১৭ সকাল ৯:২১

নতুন নকিব বলেছেন:



//সাদা মনের মানুষ বলেছেন: অচেনা পথে অজানাকে দেখতে দেখতে উদ্দেশ্যহীন হাটা সত্যিই অনেক রোমাঞ্চকর।//

-সঠিক।
লেখার পরতে পরতে ভ্রমনের অনবদ্য মজা লুকিয়ে।

সারাফাত রাজ ভাই,
আপনাকে আরও পেতে চাই। আগের মত। আপনি তো বিখ্যাত পর্যটক। আমার প্রিয়। থেমে গেলেন কি অনেকটা? ভ্রমনের সময়ে না থাকলেও পরে এসে যখন বৃত্তান্তগুলো ছবিসহ আমাদের সামনে তুলে ধরেন, মনে হয় আপনার সাথে আমরাও ছিলাম। এভাবেই আপনার সাথে আমাদের আত্মীয়তা।

ভাল থাকুন অহর্নিশ।

১৬ ই মে, ২০১৭ সকাল ১১:২০

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।

সাদা মনের মানুষ ভাই নিজেই একজন বড় পর্যটক।

নকিব ভাই, আমি মোটেও বিখ্যাত পর্যটক না। তবে আপনার প্রিয় হওয়াটা একই সাথে আমার জন্য গর্বের এবং সৌভাগ্যের।

ভাই, অনেক অনেক ভালোবাসা জানবেন।

১২| ১৬ ই মে, ২০১৭ সকাল ১০:২২

আলোরিকা বলেছেন: মাতা-পুত্রের ভ্রমণ কাহিনি পড়ে অভিভূত । বিশেষ করে মা চরিত্রটি অবাক করেছে । এরকম প্রাণ - প্রাচুর্য মানুষ খুব কমই দেখা যায় । আপনাদের জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা :)

১৬ ই মে, ২০১৭ সকাল ১১:২৫

সারাফাত রাজ বলেছেন: আলোরিকা, আপনাকে অভিভূত করতে পেরেছি এটা আমার সৌভাগ্য।

আমার মা সত্যিই প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরা একজন মানুষ। তিনি যেখানেই যান, আমার মনেহয় তার চারপাশ ঝলমল করছে। কিছু কিছু মানুষ আছে না যাদের দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়, আমার মা তেমন একজন।

শুভকামনা জানবেন। ভালো থাকবেন সবসময়।

১৩| ১৬ ই মে, ২০১৭ সকাল ১১:০৭

মানবী বলেছেন: আপনার মা একজন চমৎকার মানুষ!! আপনি নিঃসন্দেহে ভাগ্যবান।

মা ছেলের সুন্দর সম্পর্কটি একই সাথে ঈর্ষনীয় আর দৃষ্টান্তমূলক।
ধন্যবাদ সারাফাত রাজ।

১৬ ই মে, ২০১৭ সকাল ১১:৩৫

সারাফাত রাজ বলেছেন: সত্যিই আমার মা চমৎকার একজন মানুষ এবং আল্লাহর রহমতে নিঃসন্দেহে আমি পৃথিবীর সেরা ভাগ্যবানদের একজন।

খুব ছোটবেলায় আমার অন্য বন্ধুদের মা যখন তাদের সন্তানদের পড়াশোনা নিয়ে ব্যাস্ত থাকতো আমার মা তখন আমাকে নিয়ে কৃষ্ণচূড়া গাছের নীচে দাড়িয়ে থাকতেন। একটা গাছেরও যে এতো সৌন্দর্য থাকতে পারে আমার মা আমাকে তাই শিখিয়েছেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে পড়াশোনাতে আমি বরাবরই দুর্বল, কিন্তু আমার মা কখনোই এসব ব্যাপারে আমার কাছে উচ্চাশা করেননি।

মানবী, ভালোবাসা জানবেন।

১৪| ১৬ ই মে, ২০১৭ সকাল ১১:১৫

তাওহিদ হিমু বলেছেন: হাহাহা,,, আন্টির সাথে ত বেশ মজার ট্যুর হলো! আন্টি আসলেই সাহসী। যাহোক। অবশেষে পড়তে পেলাম আপনার ভ্রমণব্লগ। পড়ে শান্তি শান্তি লাগছে। :)

১৬ ই মে, ২০১৭ সকাল ১১:৫১

সারাফাত রাজ বলেছেন: অবশেষে মানে কি? আমি কি আর লিখি না!!

আসলেই মজার ট্যুর হলো।

আপনি আছেন কেমন?

১৫| ১৬ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৩

মোঃ হাসনাত আল-আমিন বলেছেন: ভাল লাগল ভাই। আপনার লেখা পড়তে পড়তে নিজের মায়ের কথা মনে পড়ে গেল। অনেক মিস করি মাকে।

১৬ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:৪৭

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই। :)
আপনার এবং আপনার মায়ের জন্য শুভকামনা।
ভালো থাকবেন সবসময়।

১৬| ১৬ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:০২

মো: মনজুর মোর্শেদ সাগর বলেছেন: ভাল হয় নাই

১৬ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:৫০

সারাফাত রাজ বলেছেন: ক্লাসে তোর যন্ত্রনায় অস্থির হয়ে থাকি, আবার এখানেও জ্বালাতে আইছিস!! X((



নূতন ব্লগারকে স্বাগতম। আশাকরি গঠনমূলক সমালোচনা পাবো। ;)

১৭| ১৬ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:৫৩

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: খুব সুন্দর লেখা

১৬ ই মে, ২০১৭ রাত ১০:২৭

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই। আপনার লেখাগুলোও সুখপাঠ্য।
ভালো থাকবেন।

১৮| ১৬ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:৫৪

শেখ মাসুদুর রহমান বলেছেন: ভাই কেমন আছেন? আপনার লেখার কথা নতুন করে কি বলবো। আবার কলকাতা যেতে ইচ্ছা হচ্ছে। সেটা যদি আপনার সাথে হত সোনায় সোহাগা হয়ে যেত। আমার হাটতে কোনো সমস্যা নেয়। :)

১৭ ই মে, ২০১৭ সকাল ১০:০১

সারাফাত রাজ বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ, আমি ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?
লেখা ভালো লাগার জন্য অনেক ধন্যবাদ। হয়তো কোন একসময় আপনার সাথে বেড়াতে যাওয়া হবে।
ভালো থাকবেন সবসময়।

১৯| ১৬ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৩:১৯

নতুন নকিব বলেছেন:



সাদা মনের মানুষ, মানে কামাল ভাই তো আরেক মহান পর্যটক। তার সৌজন্যে আমরা অনেক অদেখাকে দেখেছি। অনেক অজানাকে জেনেছি। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা অশেষ।

প্রতিমন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা।

১৭ ই মে, ২০১৭ সকাল ১০:০৫

সারাফাত রাজ বলেছেন: নকিব ভাই, আপনার নামটা পড়লেই মনে হচ্ছে যে আপনার কাছ থেকে একটা গান শুনি। হয়তো কোন একসময় সেরকম কোন সৌভাগ্য হতেও পারে।

ভালোলাগা জানবেন। ভালো থাকবেন সবসময়।

২০| ১৬ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫১

সুমন কর বলেছেন: আপনাদের (মা-ছেলের) কথা আর কাহিনী পড়ে খুব ভালো লাগল। আপনার লেখার হাত খুব ভালো।

+।

১৭ ই মে, ২০১৭ সকাল ১০:৩৯

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই অনেক ধন্যবাদ।
প্লাসের জন্য অতিরিক্ত থ্যাঙ্কস। B-)



আশকরি সবসময়ই আপনাকে পাশে পাবো। ভালো থাকবেন নিরন্তর। :)

২১| ১৬ ই মে, ২০১৭ রাত ৮:১৭

শাহিন-৯৯ বলেছেন: কথাটা সাম্প্রাদায়িক হলেও প্রচন্ড পরিমানে সত্য। মা আমাকে বলেছিলেন, “যে কাজটা মুসলমানদেরর শহর ঢাকার করা উচিত অথচ সেখানে নেই কিন্তু সেটা হিন্দুদের শহর কলকাতায় আছে”। আপনার মা খুবই চৎকার একটা কথা বলেছেন, সারা পৃথিবীতে এই একই অবস্থা যা মুসলিমদের করার কথা ছিল, তা আজ অন্যরা করছে আর মুসলিমরা মরছে নিজের মধ্যে মারা-মারি করে।

১৭ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩২

সারাফাত রাজ বলেছেন: শাহিন ভাই, ব্যাপারটা দুঃখজ্বনক হলেও সত্যি।

কিন্তু একটা শহরের নাগরিক হিসাবে তো সেই শহরের কর্তাব্যাক্তিদের কাছে আমাদের নূন্যতম চাহিদা আছে। অথচ সেইসব গণ্যমান্যরা আমাদের ব্যাপারে একেবারেই নির্বিকার।

ভালো থাকবেন ভাই।

২২| ১৭ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৩

নতুন নকিব বলেছেন:



এ অধমের কথা মনে হলে কেন যে আপনার এরকম একটি ইচ্ছে হয়, বুঝতেছি না। অনেক অনেক অভিনন্দন আপনার সুন্দর ইচ্ছের প্রতি।

যাহোক, এক সময় এগুলোর প্রতি ঝোঁক ছিল। একটি ইসলামী সঙ্গীতের লিঙ্ক দিয়ে দিলাম। সময় পেলে অবশ্যই দেখে নিবেন। আশা করি, ভাল লাগবে।

Salli Ala Muhammadin

আল্লাহ পাক আমাকে আপনাকেসহ আমাদের সকলকে তাঁর নির্দেশ অনুসরন করে প্রিয়তম রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দেখানো পথে আমাদের চলা-বলা আর প্রতিটি নি:শ্বাস-প্রশ্বাস কবুল করুন। আমীন।

ভাল থাকবেন অহর্নিশ।

১৭ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৬

সারাফাত রাজ বলেছেন: আপনার দেয়া গানটা শুনলাম। অনেক ধন্যবাদ।

আল্লাহ পাক আমাকে আপনাকেসহ আমাদের সকলকে তাঁর নির্দেশ অনুসরন করে প্রিয়তম রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দেখানো পথে আমাদের চলা-বলা আর প্রতিটি নি:শ্বাস-প্রশ্বাস কবুল করুন। আমীন।

অনেক ধন্যবাদ ভাই। আশাকরি সবসময়েই আপনাকে পাশে পাবো। আল্লাহ আপনাকে ভালো রাখুন।


:)

২৩| ১৭ ই মে, ২০১৭ রাত ৯:০০

নীল-দর্পণ বলেছেন: সুন্দর সাবলিল বর্ণনা। মনে হচ্ছিল যেনো আমি সাথে আছি আপনাদের মা-ছেলের সাথে। :)

১৮ ই মে, ২০১৭ সকাল ১০:১৯

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপু। :)

এবার থেকে আমাদের মা-ছেলের সাথে মানস ভ্রমণ করলে কিন্তু খরচের ভাগও দিতে হবে। ;)

ভালো থাকবেন সবসময়। :)

২৪| ১৮ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৩০

নতুন নকিব বলেছেন:


আল্লাহ পাক আপনার দোআ কবুল করুন।

অবশ্যই যতদিন সামুতে আছি, মিলেমিশে থাকার চেষ্টাই থাকবে।

আমার ব্লগ কুটিরে আপনার পদচারনা হলে ধন্য হব।

ভাল থাকুন প্রিয় ভাই।

১৯ শে মে, ২০১৭ সকাল ১১:২৭

সারাফাত রাজ বলেছেন: B-)
ভাই, পদচারনা নয়, একেবারে অবগাহন করেছি।
আশাকরি আপনি এরো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখালেখি করবেন।

আপনার প্রতি শুভকামনা।

২৫| ১৮ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৩

আমি ইহতিব বলেছেন: সিটি অফ জয় এ মা ছেলের আনন্দের ভ্রমণ কাহিনী পড়ে খুব ভালো লাগলো।
কলকাতা যাওয়ার প্রবল ইচ্ছে হচ্ছে রানু ও ভানু বইটি পড়ার পর থেকে। আপনার এই সাবলীল লেখা ও বিভিন্ন জায়গার বর্নণা সেই ইচ্ছেকে আরো জোরদার করে তুললো। জানিনা কবে সে ইচ্ছে পূরণ হবে।

১৯ শে মে, ২০১৭ সকাল ১১:৪৮

সারাফাত রাজ বলেছেন: ইহতিবকে অনেক ধন্যবাদ। :)

কিন্তু ইহতিব আমাকে প্রচুর কৌতূহলী করে তুলেছে। "রানু ও ভানু" ব্যাপারটি সম্পর্কে আমার অজ্ঞতা প্রকাশ করছি, একই সাথে তাদেরকে জানতে চাচ্ছি।

আশাকরি আপনার ইচ্ছাও খুব দ্রুত পূরণ হবে।

ভালো থাকবেন ইহতিব।

১৯ শে মে, ২০১৭ সকাল ১১:৫০

সারাফাত রাজ বলেছেন: সরি, আমি আপনার নাম ধরে সম্বোধন করেছি। আসলে আপনার নামটা এমন যে নাম ধরে ডাকার লোভ সামলাতে পারলাম না।
সরি আপু। আশাকরি ব্যাপারটা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবেন।

২৬| ২০ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:২২

আমি ইহতিব বলেছেন: পিডিএফে বই পড়া আমার ভালো লাগেনা, তবুও আপনার জন্য পিডিএফের লিংক দিলাম।

Ranu O Vanu

নাম ধরে ডাকাতে কিছু মনে করিনি, আমি এত সেন্সিটিভ না ভাই :) আমার এই নামটা আমারও খুব প্রিয়। আমার অরিজিনাল নামের উল্টো করেই এই নিক নেম নেয়া তাই (Bithi - Ihtib)

আপনার আরও ভ্রমণ কাহিনী পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।

২৩ শে মে, ২০১৭ সকাল ৮:৪৮

সারাফাত রাজ বলেছেন: আপু, আপনি যে লিঙ্কটা দিয়েছেন এটা তো হীরার খনি। :#)
অনেক অনেক অনেক থ্যাঙ্কু আপু। :)

আপনার নামকরণের পদ্ধতিটা বেশ মজাদার। B-)


আমার ব্লগপাতা প্রায় পুরোটায় ভ্রমন কাহিনীতে ভরা। আপনি আগ্রহী থাকলে সেগুলোও পড়তে পারেন। :D

শুভকামনা জানবেন।

২৭| ২১ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:৫১

আমি গাডডুর বাপ বলেছেন: অনেক দেরি করে কমেন্ট করছি বলে দুঃখিত। দেরি করার কারন টা আপনি জানেন।

আমি আগে প্রচুর বই পড়তাম কিন্তু এখন সময় এর অভাবে তেমন পড়া হয় না। তবে এখনও নানা ব্লগে ভ্রমন কাহিনী প্রচুর পড়া হয়।

মা ছেলের ভ্রমন এমন ব্লগ এটাই প্রথম পড়লাম।

আপনার প্রথম কথাটায় একমত হতে পারলাম না। আপনিও যথেষ্ট Extrovert মানুষ। যে একা একা অচেনা একটি দেশে কয়েকবার ঘুরে আসতে পারে তাও আবার দেশটির সবচেয়ে দুর্গম জায়গা গুলুতে সেই সাথে সে দেশটির প্রধানতম ভাষা জানেনা। তারপরও সে ঘুরে বেড়ায় তো সে কি কম Extrovert .

ঢাকা ও কলকাতার মধ্যে যে পার্থক্য আপনি তুলে ধরেছেন তা খুবই সত্যি কথা আসলেই আমাদের এই প্রিয় শহর কে আমরা একটি নারীর জন্য ভ্রমন উপযোগী করে তুলতে পারিনি।

এবার কিছু অভিযোগ করি আপনার বিরুদ্ধে আপনার লেখার কনটিনিওটি নষ্ট হচ্ছে। আপনি প্রথমে ভারত নিয়ে একটা সিরিজ লিখলেন সেটা ধুম করে লাদাখ নিয়ে শেষ করে দিলেন। তারপর উত্তর ভারত নিয়ে নতুন একটা সিরিজ শুরু করে আর এগুলেন না। ব্যাপারটা কি???

২৩ শে মে, ২০১৭ সকাল ১০:১৩

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক দেরী করে কমেন্ট করেছেন, আপনার দেরীর কারণটা জানি। পুরো বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিকোন থেকে দেখা হলো। ;)

আপনি তো জানেন, আপনার কমেন্ট পাবার জন্য আমি কি পরিমান অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকি। মনেহয় যেন আপনার পদধূলি ছাড়া আমার কোন লেখা একেবারেই পূর্ণতা পায় না। আপনার প্রতিটা মন্তব্য একেবারে শিল্পের পর্যায়ে পৌছে গেছে। (যদিও এই মন্তব্যটি একেবারেই দায়সারা এবং প্রায় অখাদ্য পর্যায়ের X( )

আপনার অভিযোগের কৈফিয়তটা দিই।
আপনি হয়তো জানেন, আমার তোলা ছবিগুলো হারিয়ে ফেলেছি। সেগুলো উদ্ধার করা এখনো আমার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এই কারণেই উত্তর ভারতের হিমালয়টা কন্টিনিউ করতে পারছি না। আর লাদাখ সিরিজ!! বাপরে!! পুরো ১ বছর ধরে লিখেছি। মোট ৩০ টা পর্ব। ১৯ দিনে করা একটা ট্যুর কাহিনী হিসাবে দু'বছর টেনে বেড়ানোর কোন মানে হয় না। আমার কাছে মনেহয় কোন ভ্রমণ শেষ করার ১ মাসের মধ্যে গল্প করার সাবজেক্ট হিসাবে সেটি তার গ্রহণযোগ্যতা হারায়। সেখানে আমি পুরো এক বছর ধরে ভ্রমণ কাহিনী টেনে বেড়িয়েছি। বিরক্ত হয়ে কেউ যে আমাকে মারধোর দেয়নি সেটা আল্লাহর রহমত।
সবকিছু মিলিয়ে আমি মোটামুটি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে যতোদুর সম্ভব কোন সিরিজ লেখা এভোয়েড করার চেষ্টা করবো। (আর্থিক প্রণোদনা পেলে ভিন্ন কথা :#) )।


আমি কিন্তু জানি যে আপনি প্রচুর পরিমানে বই পড়েন। এখনো পর্যন্ত আমি এমন কিছু দেখিনি যেটা আমি পড়েছি অথচ আপনি পড়েননি। এতো ব্যাস্ততার মাঝেও যে কিভাবে পড়েন এটা আমার কাছে অবাক করা বিষয়।

মা-ছেলের ভ্রমণ ব্লগ এই প্রথম পড়লেন!! তাহলে তো বোধহয় আমার দ্বারা নূতন কিছু সংযোজিত হলো । B-)


ভাই, আমি খুবই ইট্রোভাট মানুষ। অপরিচিত কারো সাথে আমি একেবারেই সহজ হতে পারিনা। টুকটাক লেখালেখির সুবাদে বেশ কয়েকজন আমার সাথে যোগাযোগ করেছিলো, তারা সামনাসামনি আমাকে দেখে প্রচন্ড পরিমানে হতাশ। ব্যাপারটা আমাকেও দিনদিন বিব্রত করে চলেছে। ভাই আমি খুবই সাধারণ। এতোটাই সাধারণ যে অপ্রয়োজনীয়তায় খাতায় আমাকে লিপিবদ্ধ করতে পারেন। নিজের নির্দিষ্ট গণ্ডির মাঝেই আমার পদচারণা। আসলে আমি এতো পরিমানে আমার মায়ের আয়ত্ত্বে বড় হয়েছি যে দুনিয়ার অনেক সাধারণ ও স্বাভাবিক কর্মকান্ড করাও আমার পক্ষে প্রচুর পরিমানে কঠিন। বটবৃক্ষের ছায়াতে অন্য কোন গাছ তার শাখা মেলতে পারে না।

ভারতে আমি বেশ কয়েকবার বেড়াতে গেছি। একা ভ্রমণটা আমাকে যথেষ্ট পরিমানে স্বাচ্ছন্দ্য দেয়। অন্তত আমার ভ্রমণসঙ্গী যে আমাকে ভ্রমনকালীন সময়ে কোন সমালোচনা করছে না বা আমাকে বিব্রত করার কেউ নেই এই ব্যাপারটাই আমাকে প্রচন্ড পরিমানে স্বস্তি দেয়।
আর ভাষার কথা বলছেন!
দুনিয়াতে বোধহয় ভ্রমণের জন্য ভাষা খুব বেশি বাঁধা হয়ে দাড়াতে পারে না। আর আমি মনেকরি ট্রাভেলারদের নিজস্ব কোন ভাষা আছে। (আমি নিজেকে একজন ট্রাভেলার হিসাবে দাবী করার দুঃসাহস দেখাচ্ছি ;) )।

আমি সবসময়েই চেষ্টা করি আমার লেখাগুলোর মাঝে ছোটছোট কিছু তথ্য দিতে। কিছুটা মনোযোগ দিয় যারা পড়ে তারা হয়তো সেই তথ্যগুলো অনুভব করতে পারে। ঢাকা ও কলকাতার যে পার্থক্য আমি বলার চেষ্টা করেছি সেগুলি ঢাকাকে হেয় করার জন্য নয়। আমি চাই দুনিয়াতে আমার এই প্রিয় শহর ঢাকা দুনিয়ার সেরা শহরগুলোর একটা হয়ে উঠুক। আর এজন্য দরকার অল্প কয়েকজন কর্তিত্ববান মানুষের সদিচ্ছা। শুধু নারী কেন, একজন সাধারণ পুরুষের জন্য ভ্রমণ উপযোগী করে কি আমরা আমাদের শহরকে গড়তে পেরেছি? ধরুন কেউ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকার অফিসে গেল তার বন্ধুর সাথে দেখা করার জন্য। তাহলে এই দুজন বন্ধু অফিস ছাড়া আর কোথায় বসবে কিছুক্ষণ কথা বলার জন্য? সবসময় অফিসেই ভিজিটরদের সাথে দেখা করা সম্ভব হয় না। তাহলে নিশ্চয় কোন রেষ্ট্রুরেন্টে? সেটা কি সবসময়েই সম্ভব? কারো তো ইচ্ছা হতে পারে যে এখানে কোন একটা সবুজ পার্ক থাকলে সেখানে দু'বন্ধু মিলে কিছুক্ষণ নিরিবিলি কথা বলতে পারতো। মতিঝিলে কি সেরকম কোন জায়গা আছে? বা অন্য কোন বাণিজ্যিক এলাকাতে?

অনেক বকবক করে ফেলেছি। ভালো থাকবেন ভাই। আমি আমার প্রতিটি লেখাতে আপনার উপস্থিতি গভীরভাবে অনুভব করি।

২৮| ২৭ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১১:২০

বর্ষন হোমস বলেছেন:
চমৎকার বর্ণনা

২৮ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৮:৪৬

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই।

আপনি সামুতে একটা বিশাল কর্মযজ্ঞের ধারা প্রচলিত রেখেছেন, এজন্য আপনাকে স্পেশাল থ্যাঙ্কু। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.