নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যদি পারতাম দুঃখগুলো নিলামে বিক্রি করে দিতাম

শাহজাহান সাঈফ

একাকিত্ব হলো জীবনের সাধনা লাভের উত্কৃষ্ট উপায়। উর্দু বা হিন্দুতে একাকিত্বকে বলা হয় তানহা। একাকিত্ব মানুষের জীবনে পূর্ণতা দেয়। পৃথিবীর তাবত্ বিখ্যাত ও মহান ব্যক্তি তাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ একাকিত্বে কাটিয়েছেন। কখনো ইচ্ছা করে আবার কখনো বা বাধ্য হয়ে। তারা কেউবা গেছেন নির্জন পাহাড়ের কোনো গুহায়, অথবা গভীর জঙ্গলে।

শাহজাহান সাঈফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

“সালিশ মানি কিন্তু তালগাছ নিয়ে কোন কথা হবে না, কারণ তালগাছ আমার” টাইপের সংলাপ যেনো না হয়

০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ ভোর ৪:৪২


উচ্চ ফলনশীল রসালো একটি তালগাছ নিয়ে দুই প্রতিবেশির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দেন দরবার চলতেছে। কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়। যখন যার দখলে থাকে, সেই এই তালগাছের পুরো সুবিধা ভোগ করে থাকে। এই তালগাছের তাল এতই রসালো আর সুস্বাধু যে, যখন যার দখলে থাকে সে আর কখনো এই তালগাছের দখদারিত্ব ছাড়তে চায় না। প্রয়োজনে জীবন দিতে রাজি কিন্তু তালগাছের দখলদারিত্ব ছাড়তে রাজি নয় এমন অবস্থা। অথচ প্রতিবেশি অন্যান্যরাও এই তালগাছের কিছুটা সুবিধাভোগি, কিছুটা দাবিদার। তবে বড় দুই প্রতিবেশিই এই তালগাছের সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগ করে থাকে। তাই সময়ে অসময়ে এই তালগাছ নিয়ে প্রতিবেশি বড় দুই পক্ষ বাকযুদ্ধে লিপ্ত থাকে। বিশেষ করে যখন এই তালগাছের ফল দেওনের সময় হয়, তখন পুরো পরিস্থিতি আরো প্রকট আকার ধারণ করে। এলাকার সাধারণ জনগণের মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করে। বিশেষ করে যারা এই তালগাছের সরাসরি সুবিধাভোগী নয় তাদের মনেই সবচেয়ে বেশি আতংক বিরাজ করে।অথচ এলাকার জনগণ চায়, দুর্বল সবল সকল ক্ষমতাবানরাই মিলেমিশে এই তালগাছের তাল ভোগ করুক, যাতে কোন বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয়, এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা যাতে বজায় থাকে। কিন্তু বড় দুই প্রতিবেশির একপক্ষ কিছুটা জনসমর্থন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই তালগাছের ফল একাই ভোগ করে আসছেন। প্রতিবেশি অন্য পক্ষকে এই তালগাছের সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন। বিরোধী পক্ষ কিছুতেই এটা মেনে নিতে পারছেন না। তারাও মরিয়া এই তালগাছের দখল নিতে। ছোট ছোট অন্যান্য পক্ষেরও বছর জুড়ে নজর থাকে এই তালগাছের দিকে। তারাও চায় এই তালগাছের সুবিধা ভোগ করতে। তাই ফল আসার আগে আগেই এই তালগাছ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে, টক অব দ্যা টাউন হয়।

অথচ নিয়ম ছিল, তালগাছের ফলন শেষ হবার পর নির্ধারিত সময়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বর্তমান ভোগ দখলকারীরা তালগাছ বুঝিয়ে দেবেন। তারপর এলাকার জনগণ স্বতস্ফূর্তভাবে সিদ্ধান্ত নিবে বা দিবে তালগাছের পরবর্তী ফলন কোন পক্ষ বা পক্ষদ্বয় ভোগ দখল করবেন। এটাই ছিল শান্তিপূর্ণ নিয়ম । কিন্তু মাঝখানে এক কর্তৃপক্ষদ্বয় ক্ষমতা পেয়ে জোর করে তারা হয়ে গেল তালগাছের মালিক। কর্তৃপক্ষের এই অতিরিক্ত খামখেয়ালিপনা আর বাড়াবাড়ির কারণে বড় দুই প্রতিবেশির অনেক মানসম্মান বিসর্জন দিতে হয়েছে সেই সময়। কর্তৃপক্ষের এহেন আচরণ কিছুতে মেনে নিতে পারেনি তারা তখন। তাই সবল দূর্বল সকল পক্ষই কিছুটা মনোক্ষুণ ছিল সেই কর্তৃপক্ষদ্বয়ের প্রতি। হয়তো মনে মনে সবাই ভাবছিল, দাড়াও কর্তৃপক্ষ একবার যদি তালগাছটা দখলে নিতে পারি, তাহলে তুমি কর্তৃপক্ষের অস্থিত্বই বিপন্ন করে ফেলব। হয়েছেও তাই। পরবর্তীতে বহু ত্যাগের বিনিময়ে তালগাছ যখন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রতিবেশি একপক্ষের কাছে গেল, তখন তারা কর্তৃপক্ষের উপর চরম ক্ষেপে গিয়ে দিল একেবারে কর্তৃপক্ষ প্রথা বাতিল করেই। কর্তৃপক্ষ হয়ে গেল নিজেরাই। কারণ মধ্যস্বত্ত্বভোগী কর্তৃপক্ষের প্রতি আর কোন বিশ্বাস নাই।

এবারও তার ব্যতিক্রম নয়, কারণ সামনেই এই তালগাছের ফল দেওনের সময় আসতেছে। এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিরাও এই তালগাছ নিয়ে চিন্তিত। তারাও চিন্তা করছেন কিভাবে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানে আসা যায়। কিভাবে এই তালগাছের সমস্যা সমাধা করা যায়। প্রতিবেশি অন্যান্যরা যেহেতু শক্তিতে দুর্বল, তালগাছ একা দখল করা কখনো তাদের পক্ষে সম্ভব নয়, বিরোধীপক্ষেরও বর্তমান যে অবস্থা, তারাও একা দখল নিতে পারবে না। তাই তারা চিন্তা করল, বর্তমান দখলদারদের হটিয়ে তালগাছের দখলদারিত্ব নিতে হলে আমাদের জোটবদ্ধ হতে হবে। জোটবদ্ধ হওয়া ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই।কারণ বর্তমান ভোগদখলকারী প্রতিবেশী কিছুতেই তালগাছের দখলদারিত্ব ছাড়তে চাইবে না। কারণ তারা নিজেরাই এখন কর্তৃপক্ষ। নিজেরা কর্তৃপক্ষ হলে দখলদারিত্ব ছিনিয়ে আনা যে কতটা কষ্ট সাধ্য সেটা গত ফলনের সময়ই টের পেয়েছে বিরোধিপক্ষ, সাথে কিছু বুঝেছে জনগণও।

তাই জনগণের আশা আকাঙ্কা একটা শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই তালগাছের দখলদারিত্ব যেকোন একপক্ষদ্বয়ের কাছে যাক। বা থাক।
যেহেতু সর্বসম্মতিক্রমে একটা সালিশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে, জনগণ আশা করে একটি শান্তিপূর্ণ ফলপ্রসু আলোচনা হবে। কিন্তু ভাবসাব দেখে মনে হচ্ছে, “সালিশ মানি, কিন্তু তালগাছ নিয়ে কোন আলোচনা হবে না, কারণ তালগাছ আমার” টাইপের একটা কিছু হবে। যদি তাই হয়, তাহলে জনগণের ভাগ্যে যেই লাউ সেই কদু।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ ভোর ৪:৫৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


অযথা অনেক কষ্ট করেছেন!

০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৩৮

শাহজাহান সাঈফ বলেছেন: কষ্ট বুঝার জন্য ধন্যবাদ।

২| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ ভোর ৫:১৫

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: তালগাছের বর্তমান মালিক যদি স্বেচ্ছায় দাবী থেকে সরে না আসে বা প্রাকৃতিক ভাবে আর দাবীদার না থাকে অথবা কোন লাঠিয়াল বাহিনী যদি ছিনিয়ে নেয় তার কাছ থেকে তাহলেই সম্ভব যোগ্য দাবীদারের কাছে তালগাছ ফেরত যাওয়া...

০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪০

শাহজাহান সাঈফ বলেছেন: তালগাছটা যেহেতু জনগণের, জনগণই সিদ্ধান্ত নিক, পরবর্তী ফলনটা কার দখলে যাবে।

৩| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:৪৫

আবু তালেব শেখ বলেছেন: জোর যার মুল্লুক তার। কথায় হলনা গায়ের জোর দেখাও, তালগাছ আপনা আপনি দখলে আসবে। তুমি মাছ ধরবে কিন্তু পানি স্পর্শ করবে না? সেটা হয় না।

০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪১

শাহজাহান সাঈফ বলেছেন: এটা তো সব সময় সবার বেলায়ই প্রযোজ্য ছিল। এখনও আছে।

৪| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: তাল গাছ সকলের।

০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪২

শাহজাহান সাঈফ বলেছেন: সকলের কিন্তু ভোগ দখল করে মুষ্টিমোয় কিছু মানুষে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.