নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দিকভ্রান্ত পথিক

সায়েম মুন

আঙ্গুল-চুষে ওষ্ঠাগত, জীবনের বেহিসেবী, ছিন্নপত্র দোলাচালে, মলিনতর ক্রন্দসী। হিমশীতল হাভাতে, অনাদরে উর্বষী, কাষ্ঠাগত অবিরত, ছন্নছাড়া সন্ন্যাসী।

সায়েম মুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাখি পাঠ

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১৪





এক অরণ্যে পাখি দুটি উড়ে বেড়াতো। হাসতো খেলতো। এক প্রকার সুখেই দিন যাচ্ছিল। অরণ্য মানে পাখি। পাখিসুখ। এই পাখিসুখ অরণ্য দেবীর চোখে সহ্য হচ্ছিল না। একদিন বুদ্ধি করে তাদেরকে বিষাক্ত ফল সেবন করায়। অরণ্য বিদ্যালয় পাঠ থেকে উঠিয়ে দেয় পাখিসুখ নামের অধ্যায়। বিষাক্ত ফল সেবনে অলৌকিকভাবে মেয়ে পাখিটি বেঁচে যায়। পুরুষ পাখিটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। তার সমাধিস্থল ফুঁড়ে বুকের মাঝখান দিয়ে এক বৃক্ষের জন্ম হয়। রোদন বৃক্ষ। এই বৃক্ষের ডালে বসে মেয়ে পাখিটি নিয়মিত ক্রন্দন করে যায়। বিলাপ করে যায়। ক্রন্দনে যে চোখের জল বের হয় তা সারা শরীর গড়িয়ে অরণ্যে ছড়িয়ে যায়। তার শরীর থেকে সমস্ত পাখা ঝড়ে পড়ে। সে হয় কদাকার পাখি। চোখের জল গড়িয়ে পড়ে ঝর্ণায়। পাখির অশ্রু ঝর্ণাজলের সাথে প্রবাহিত হয় সমতলে। দূরে সীমানায়। পাতাল গহবরে। পাতালদেব বহুদিন ঘুমন্ত ছিল। আজ ঝর্ণাজলের অদ্ভূত শব্দে জাগ্রত হয়। ছুটে চলে ঝর্ণার উৎসের কাছে। অরণ্যে।



এই অরণ্যেই বিকাশ ঘটেছিল তার। আকাশ দেবের মেয়ে অরণ্যদেবীর সাথে। সারাদিন ঘুরতো ফিরতো। হেসে খেলে বেড়াতো। আকাশদেবের মেয়ে অরণ্যে দেবীর শৈশবের কথা। পাতাল দেবের পিতা আকাশ দেবের রাজমহলেই ফাই ফরমায়েশ খাটতো। একদিন তার সাথে ঘুরতে আসা পাতালদেবকে দেখে আকাশ দেব। ছোট্ট ফুটফুটে একটা শিশু। একে ছোট মেয়ে অরণ্যদেবীর খেলার সাথী করলে ব্যাপারটা মন্দ হয় না। সেই মোতাবেক নিযুক্ত হয় পাতালদেব। তারা ঘুরে বেড়ায় স্বর্গের বাগানে। সারাদিন প্রজাপতির পিছনে ছুটে। কিংবা ফুলে ফুলে অলির সাথে কথা বলে। তাদের দুজনেকেই রাজদরবারেরই দেবশিশু মনে হয়। আলাদা করার কোন উপায় নেই।



একদিন তারা যুবক যুবতী হয়ে যায়। অরণ্যদেবীকে পাঠানো হয় উক্ত অরণ্যে। সাথে পাতালদেবকে সাহায্যকারী হিসেবে। আকাশদেব লক্ষ্য করে সাহায্যকারী হিসেবে নয় ভিন্নরুপে পাতালদেব আবির্ভূত। পাতালদেব আর অরণ্যদেবী প্রণয় পরিণতির চরম শিখরে উন্নীত হলে আকাশদেব রুষ্ঠ হয়। নিম্নবর্গের মুটের ছেলের সাথে আকাশদেবের মেয়ের প্রণয় মেনে নিতে পারেনা। শাস্তি হিসেবে পাতালদেবকে পাতালের অন্ধকার কুঠিরে প্রেরণ করে। পাতালদেব যদিও নাম। সেই পাতালে কোন কাজ নেই। মেয়েকে কিছুটা খুশী রাখার জন্য পাতালদেব নাম দিয়ে অন্ধকার জগতে প্রেরণ করে। অরণ্য দেবীর খুশী হওয়ার চেয়ে বরং মনক্ষুন্ন হয়। অরণ্যের সব ভালবাসা প্রণয় উপাখ্যানকে বিতারিত করার চেষ্ঠায় সারাদিন রত থাকে। সেই ধ্বংসযজ্ঞের মাঝে পড়ে প্রাণী তথা পাখি সমাজ লন্ডভন্ড হয়।



অরণ্য দেব মুক্তির পর ছুটে চলছে তো চলছেই। নয়শত নিরানব্বই দিন পর ঝর্ণার উৎসের সন্নিকটে অরণ্যের কাছে চলে আসে। দূর থেকে অরণ্যদেবী পাতাল দেবকে দেখতে পেয়ে মন ভারী করে থাকার চেষ্ঠা করে। কাছে এসে পাতালদেব অরণ্য দেবীর মনের ঘোমটা আলতো করে সরিয়ে দেয়। অরণ্যদেবীর করুণ অবস্থার কথা চিন্তা করে আকাশদেবের শারীরিক অবস্থা ভাল যাচ্ছিল না। আজ এই মিলনদশা দেখে খুশীতে চঞ্চল হয়ে উঠে। অঝরধারায় কাঁদতে থাকে আকাশদেব। এ কান্না খুশীর কান্না। এই কান্নায় আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নামে। সেই বৃষ্টির ছাটে ধূয়ে মুঝে যায় অরণ্যের পঙ্কিলতা। লুপ্ত প্রায় প্রাণীকূল আবারও জেগে উঠে। অরণ্যদেবীর হাতের ছোঁয়ায় মৃত পাখিটি জাগ্রত হয়ে উঠে। পাখা ঝাপটিয়ে জানান দেয় জীবন আছে। মেয়ে পাখিটির সাথে মিলে সে উড়তে থাকে। উড়ে উড়ে অরণ্যের এ পাশ থেকে ওপাশে ঘুরে বেড়ায়। আবারও প্রণয় হয়। তাদের বংশ বৃদ্ধি হয়। অরণ্য দেবীর নির্দেশে অরণ্য বিদ্যালয়ে আবারও সংযোজিত হয় পাখি পাঠ। সেই থেকে অরণ্যে পাখি অধ্যায় আবশ্যিক বিষয় হিসেবে ধর্তব্য।





ছবিঃ নিজস্ব এ্যালবাম।

মন্তব্য ৩৪ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (৩৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৪২

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
গল্প পড়িনা পড়িনা বলেও অনেক গল্পই পড়া হচ্ছে :)
প্রথম প্লাস, কবি।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৪৪

সায়েম মুন বলেছেন: আজকে নাহলে একটা ছোটখাট গল্পই পড়লেন। /:)
প্রথমে একটা লিখলাম। সেভ করার সময় ডিলিট হয়ে গেল। ওটা ছিল কোবতে টাইপের। এটা হয়ে গেল গল্প টাইপের। বাচ্চাদের গল্প। :P

২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৫৫

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: সুন্দর একটা রুপকথা লিখে ফেলেছেন! :)

আমারও এমনটা হয়! গল্প লিখব না কবিতা লিখব সবসময় ঠিক করতে পারিনা। B:-)

এই লেখাটা কবিতা লিখতে গিয়ে গল্প লিখে ফেলেছিলাম, সময় করে পড়ার আমন্ত্রন রইলো।

Click This Link

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:১৪

সায়েম মুন বলেছেন: আমার এই জিনিসটা কম হয়। আজকে হুট করে হয়ে গেছে।

আপনার লেখাটা সময় করে দেখবো :)

৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০৩

শূন্য পথিক বলেছেন: পোস্টে +

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:১৫

সায়েম মুন বলেছেন: ধন্যবাদ শূন্য পথিক। শুভরাত্রি।

৪| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০৪

রাফা বলেছেন: এক কথায় চমৎকার!আরো লিখুন।

ধন্যবাদ,সা.মুন।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:১৬

সায়েম মুন বলেছেন: ধন্যবাদ রাফা। সব সময় লিখার চেষ্ঠা থাকবে। :)
শুভরাত্রি।

৫| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:২২

ফ্রাস্ট্রেটেড বলেছেন: এইরকম সেইরকম অন্যরকম কন্সেপ্ট ... পাখিপাঠ, অরণ্য, ঝর্ণা এইগুলা শুধু কবিদের মাথা থিকাই আসা সম্ভব।

ভাল লাগলো কবি, রূপকথা, রূপক পুরোটাই। গল্পটার সাইজ আরেকটু বেশি হইলে বোধহয় আরো ভাল হইতো।

শুবরাত্রি।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:২৯

সায়েম মুন বলেছেন: বড় করা যেত। আসলে খুব বেশী সময় দিতে ইচ্ছে করছিল না। ধন্যবাদ ফ্রাস্ট্রেটেড। শুভরাত্রি।

৬| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৪:০১

ফারিয়া বলেছেন: আমার এমন গল্প বেশি ভালো লাগে। কোন বাধ থাকে না এতে, ইচ্ছেমত লিখে যাওয়া যায়! অনেক সুন্দর!

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১২

সায়েম মুন বলেছেন: বাধাহীন লেখার জন্য অগাধ ভাবতে হয়। অনেক সময় কলমের উপর ছেড়ে দিলেও বেশ এগোয়। ধন্যবাদ ফারিয়া। শুভকামনা।

৭| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:০০

মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: পাখি গপ ভালা পাইলাম

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১৬

সায়েম মুন বলেছেন: ধন্যবাদ মাসুম। শুভদুপুর।

৮| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: রুপকথা ভালো লাগলো। তবে কিছু একটার অভাব বোধ করলাম। যেমন ধরেন, কিছু সংলাপ থাকলে আরো ভালো লাগতো।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:২২

সায়েম মুন বলেছেন: এইটা লিখতে গিয়া কোন সঙলাপই মাথায় আসলো না। আবসোস। থ্যাঙ্কু।

৯| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৩৯

সোমহেপি বলেছেন: ভালো লাগা।ভিন্ন ভাবনা বিকশিত হোক।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪৯

সায়েম মুন বলেছেন: বিকশিত হতে চায় না। তবু চেষ্ঠা চলছে। ধন্যবাদ প্রতিদিন হ্যাপী। :)

১০| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪৯

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:০১

সায়েম মুন বলেছেন: আরও কিছুটা সুন্দর হতে পারতো। আপনার হাতে হলে গল্পটা ভিন্নমাত্রা পেতে পারতো। আবসোস। আমি সেরকম পারিনা। একদিনে ম্যারাথন পোস্ট পড়ায় আপনাকে রাশি রাশি অভিনন্দন। :D

১১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩৭

রাতুল_শাহ বলেছেন: চমৎকার লাগলো ভাই।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০২

সায়েম মুন বলেছেন: ধন্যবাদ রাতুল। শুভকামনা অনেক।

১২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫৪

ভিয়েনাস বলেছেন: গল্প যখন বানালেনই একটু বড় করে বানালে কি হতো :P

যাইহোক আপনার কাছে ভিন্নরকম একটু অন্যরকম গল্প পেয়ে ভালো লাগলো :)

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০৩

সায়েম মুন বলেছেন: তা ঠিক। কিন্তু ধৈর্য্য তো কুলালো না। আবসোস। ধৈর্য্যের ব্যাপারে ইদানীং খুব বেশী উদাসীন হয়ে যাচ্ছি।

১৩| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৫০

সোনালী ডানার চিল বলেছেন:
চমৎকার একটি গল্প পড়া হলো।

মনে হয়েছিল Hans Christian Andersen এর কোন লেখা পড়ছি।
তবে আপনি গল্পটাকে আর একটু বিস্তৃর্ণ করতে পারতেন!!

শুভকামনা...................

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:১২

সায়েম মুন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ সোনালী ডানা! বড় করার ইচ্ছে আছে। সময় পেলে অবশ্যই করবো। শুভকামনা।

১৪| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:১৩

নক্ষত্রচারী বলেছেন: পাখিপাঠ পাঠ কইরা ভালোই লাগলো, তবে তাড়াতাড়ি শেষ হইয়া গেল !

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:১৪

সায়েম মুন বলেছেন: ছোট পরিসরে একটা গল্প। এর ভাবনাও ছিলনা আগে। পাখি নিয়ে লিখতে গিয়ে গল্পটা চলে এসেছে। সময় করে বিস্তৃত করার ইচ্ছে আছে। ভাল থাকুন নক্ষত্রচারী।

১৫| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:০২

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: moja pelam kobi....apnar lekha golpo gulu o kobitar motoi money hoi

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৫৪

সায়েম মুন বলেছেন: ধন্যবাদ কবি। আশা রাখি দিনকাল ভাল যাচ্ছে। শুভকামনা থাকলো।

১৬| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৯

অদৃশ্য বলেছেন:




খুব ভালো লাগলো আমার....

__________________


প্রতিশোধ নিতে ওরা যাত্রা শুরু করেছে, আবার শুরুর


শুভকামনা...

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১১

সায়েম মুন বলেছেন: ধন্যবাদ কবি। শুভসন্ধ্যা।

১৭| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:০৬

যাযাবর৮১ বলেছেন:





গণদাবি একটাই

আবার জেগেছে তারুণ্যের প্রজন্ম
দ্বিধা ভেদ ভুলে জাগরণের জন্ম,
কবে কে দেখেছে এই বাংলার বাঘ
শাবাশ জনতা ঐ জেগেছে শাহবাগ।

আলোকিত প্রাণ প্রজন্ম চত্বরে
বিকশিত গান খুঁজছে সত্তারে,
আর নয় ভুল, মুক্তির স্লোগান
ধূম্র ধূসরে ফাগুনের জয়গান।

ঘৃণায় আক্রোশে জানায় যে ধিক্কারে
গণদাবি আজ প্রদৃপ্ত হুঙ্কারে,
জেগেছে জনতা, বিচার এবার চাই
ফাঁসি, ফাঁসি, ফাঁসি, গণদাবি একটাই।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৪১

সায়েম মুন বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। এখনকার দাবী একটাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.