নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দিকভ্রান্ত পথিক

সায়েম মুন

আঙ্গুল-চুষে ওষ্ঠাগত, জীবনের বেহিসেবী, ছিন্নপত্র দোলাচালে, মলিনতর ক্রন্দসী। হিমশীতল হাভাতে, অনাদরে উর্বষী, কাষ্ঠাগত অবিরত, ছন্নছাড়া সন্ন্যাসী।

সায়েম মুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্পঃ সন্তাপ

২৮ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৭





ভালমন্দ দোষগুণ মিলিয়ে মানুষ। কোন মানুষের কাজের পরিধিতে যদি ভালর পরিমাণ বেশী ঢুকে যায়, সেই সাথে চারিত্রিক দিক দিয়ে গুণের পরিমাণ বেশী হয় তাকে ভাল মানুষ বলে আখ্যা দেয়া যায়। আমি মানুষ হিসেবে কেমনতর সেটা বিচার বিশ্লেষণের ভার আমার পারিপার্শ্বিকতার উপর। তবে যতটুকু পারি কাজে কামে আচার আচরণে সৎ থাকার চেষ্ঠা করি। তবে ইদানীং কালের একটি ঘটনার কারণে গত কিছুদিন যাবত আমি ফেরারী আসামী। পুলিশ আমার পিছে লেগেছে। ধরতে পারলে হয়ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিবে। কিন্তু আর কতদিন পালিয়ে থাকা যায়। স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরার মধ্যে এক ধরনের অহমিকা কাজ করে। একদম মুক্ত বিহঙ্গের মত পাখনা মেলো যেখানে খুশী। কোথাও বদ্ধ হয়ে থাকলে একটা সংকীর্ণতা জেকে বসে। মনটা তেলাপোকার মত হয়ে যায়। হয় মৃত্যুদূত নয়ত কোন আজব দৈত্য এসে পিসে দেবে এখনি।



আমি বাইরে বেশ জাকালো স্বভাবের। বন্ধু বান্ধবদের সাথে আড্ডায় ইয়ত্তা নেই। ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যয় হয়। তখন বেশ উৎফুল চিত্তে সময় কাটাই। এ ওর গায়ে হাসতে হাসতে ঢলে পড়ি। কেবল ঘরে ফিরলেই আমি মিইয়ে যাই। জগতের যাবতীয় জরা, ক্লিষ্ট, গ্লাণিময় বিষয় বস্তু আমার কাঁধে ভর করে। বেড়ালের মত ঘরের এক কোণায় সিধে যাই। এখন সেই ঘর ছেড়ে আর এক বদ্ধ বাড়িতে।



বাড়িটা অনেক পুরনো। যুদ্ধের সময় কোন এক হিন্দু সম্প্রদায় রেখে চলে গেছে। হয়ত প্রত্যন্ত গ্রাম বলে কেউ আর দখল করেনি। শহর বা ঢাকা শহর হলে এতদিনে হাতিয়ে নিতো ভূমিদস্যুরা। দিব্যি নিজের অথবা নিজের বাপ দাদার বলে চালিয়ে দিতো। এটা ভেঙ্গে বড় কোন অট্টালিকা তুলে কোটি টাকার পসার সাজাতো। যেখানে জীবন্ত মানুষ হটিয়ে দখল করছে বাড়িঘর সেখানে এ জায়গা জমিটা মহামূল্য বস্তু। ভূমি আগ্রাসনের মত মানুষের মনের আগ্রাসনও চলছে দিব্যি। আজকালকার প্রেমিক প্রেমিকাদের হালহকিকত দেখলেই বুঝা যায় কিরকম মহামারি চলছে এই যুগে এসে। আমি ছোট মানুষ। আমার সংসারটা আরও ছোট ছিল। মানুষটা ছোট হলেও এসব অনাচার আমার সহ্য হয় না। মাঝে মাঝে প্রতিবাদ করতে ইচ্ছে করে। আমিও তো প্রেমিক ছিলাম। আমার প্রেম করার জন্য কোন বাড়ি গাড়ী বা দামী কোন বাইকের দরকার হয়নি। আমরা বোধয় প্রকৃতিগতভাবে পরস্পর এগিয়ে এসেছিলাম। আমাদের প্রেমটা বার বছর অর্থাৎ এক যুগ দীর্ঘস্থায়ী ছিল। একটা ঝড় এসে আমাদের দুটি মন দুটি দিকে উড়ে গেছে। সেই দুর্বিপাকে পড়ে আমার বুকে যে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে সেটা কখনো সারাবার মত নয়। যাই হোক ধান ভানতে শিবের গীত বন্ধ করি। আজ আর সেই প্রেমিকার নামটাও বলতে চাই না। একটা চুম্বন। শুধুমাত্র একটা চুম্বনই আমাদের সেই অমর প্রেমের সাক্ষ্যি। এখন জীবন বাঁচানো ফরজ। অতীত এবং ভবিষ্যত নিয়ে কথা বলার সময় নেই। পুরনো প্রেমিকা দূরে যাও। কাছে আসো নিঠুর বাস্তবতা।



বাড়ীটা দোতলা। প্রায় ভগ্নস্তুপ। নিচে তিনটে ঘর আছে। একটাতে একটা চৌকি আছে। সম্ভবত এলাকার লোকজন গরমের সময় এখানে এসে বসে। পুবে-পশ্চিমে জানালা আছে, একদম উন্মুক্ত। কোন দরজা বা আড়ালের বালাই নেই। দিনে চর্তুদিক দেখা যায়। রাত হলে কিছুটা অন্ধকার গ্রাস করে। বিল্ডিং লাগোয়া বিশালাকার বাঁশঝাড়ের কারণে অন্ধকার কিছুটা বেশী হয়। মেইন রাস্তা বাড়ি থেকে প্রায় একশ কদম দূরে। তাই রাত হলে এদিকটায় কেউ আসে না। বাড়িটা নিয়ে এলাকায় অনেক কল্পকাহিনী বিদ্যমান। কলেজ বন্ধু রাশেদের হাত ধরে এই বাড়ির খোঁজ পাই। সেই মূলত সাহায্য করেছে এই বাড়িতে থাকার জন্য। দিনের বেলা অন্য কোথাও ঘুরে বেরালেও রাতের বেলা চৌকিটাতে গা এলিয়ে শুয়ে থাকি। ঘুমতো আসেই না। উল্টো রাজ্যের সব চিন্তা আমার কাঁধে ভর করে। বাড়ির উত্তর দিকের যে ঘরটা আছে তার প্রাচীর ঘেঁষে একটা বটগাছ। মূলত এই বটগাছটাকে নিয়েই যতসব কল্পকাহিনীর ডালপালা প্রসারিত। গ্রামের ছেলে তাই এসব কল্পকাহিনীকে তেমন একটা পাত্তা দেইনি।



আজকে আমার পালানোর সপ্তম দিন। এই সাতটা দিন জীবনের সবচেয়ে নিঠুরতম দিন। ছিলাম উন্মুক্ত আকাশের বিহঙ্গ। এখন খাঁচায় বন্দী ঘুঘু। ভাল লাগছে না আর এই অস্থিরতা। একটা মোমবাতি জ্বালিয়ে শুয়ে পড়েছিলাম। ঘুম আসছে না। মোমবাতি প্রায় শেষের দিকে। শেষের কয়েক দিন রাশেদের কাছে ছিলাম। রাশেদও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাই বললাম, দোস্ত আমাকে কোন পরিত্যক্ত জায়গায় রেখে আয়। যেখানে রাতের বেলা কেউ যায় না। সে প্রথমে রাজী না হলেও। পড়ে আমতা আমতা করে রাজী হয়। সেদিন দিনের বেলা জায়গাটা দেখে গিয়েছি। সন্ধ্যার পর এখানে এসেছি। রাশেদ চলে যাওয়ার আগে জায়গাটার অলৌকিক কান্ডকীর্তি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে গেছে। সেটাই এখন মাথার মধ্যে ঘুরঘুর করছে। ঘুম কিছুতেই আসছে না।



একটু পর কি মনে করে দোতলার ছাদে উঠে এলাম। বটগাছটা ঝুকে আছে ছাদের বুকে। পূর্বতন গল্পগুলো এলোমেলো করে দেয় শরীর মন। তারপরও সাহস করে সামনে অগ্রসর হই। দুটো চেয়ার মুখোমুখি করে বসানো। আজ দিনের বেলা একবার এদিকে এসেছিলাম। তখন চেয়ার দুটি দেখিনি। ভয়ের রেশ আরও বেড়ে গেল। প্রতিটি রোমকূপ জানান দিচ্ছে ভৌতিক বার্তা। আর একটু অগ্রসর হয়ে সাহস করে একটা চেয়ারে বসে পড়লাম। বসার পর কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেলাম যেন। এখন সেই আগের ভৌতিক অনুভূতি আমার মধ্যে নেই।



মাঝে মাঝে ডায়েরীতে লেখার অভ্যেস ছিল। এখন ডায়েরী নেই। মুঠোফোনে লিখতে ইচ্ছে করছে:



মুখোমুখি দুটি চেয়ার। আবছা অন্ধকার। সন্ধ্যার পর লালচে চাঁদ পাঠে বসেছে। একটু একটু করে জোছনা প্রসারিত হচ্ছে। এই মূহুর্তে চেয়ারে একজন বসে থাকার কথা। সে আজ আসেনি। অনতিদূরে ছাদের দেয়াল ঘেঁষে একটা বটগাছ। কয়েকটা বাদুর বটফল খেতে ব্যস্ত। চাঁদটা এতক্ষণে সান্ধ্যকালীন তপস্যা শেষে চলা শুরু করেছে। হঠাৎ একটা কালো মেঘের সাথে দেখা। তাই চুপসে গিয়ে সংকীর্ণ পথে পৃথিবীর দিকে করুণ চোখে তাকিয়ে। এখন মৃদু আলোটা ঝাপসা হয়ে গেছে। একটা ঝাপসা অবয়ব চোখের সীমানার কিছুটা বাইরে দোদুল্যমান।

এ পর্যন্ত লিখেছি...

এই সময় চারিদিক কাঁপিয়ে একটা হাসির রোল পড়ে গেল। এরকম হাসি জীবনে কখনো শুনিনি। হাসিটা ফুরিয়ে যেতে যেতে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিধ্বনি সৃষ্টি করলো। সেটা শেষ হলো আমার কাঁধের কাছে এসে।

'তুমি ভালই লিখতে পারো' এই বলে মেয়েলী কন্ঠটা আমার দু'কানে ফিসফিস করতে থাকে।

'কি লিখতে পারোনা?' তার কন্ঠে ধমকের সুর।

হ্যা লিখতে পারি। তবে বহুদিন হয় লিখি না। আমার ডায়েরী অযত্নে পড়ে আছে।

সেটা তোমার ভুল। কন্ঠটা আরও বাজখাই হয়ে কানে বাজে।

আমি! আমি!

'হ্যা তোমার ভুল। তুমি ভাল মানুষ সেটা যেমন তোমার গুণ। তেমনি তুমি অনেক দিন পালিয়ে বেড়াচ্ছো সেটা তোমার ভুলেই।' কন্ঠটা আস্তে আস্তে মোলায়েমের দিকে যায়।



এতক্ষণে নিজেকে সম্বরণ করি। কেন জানি মনে হয় এই মূহুর্তে তার সাথে খোলামেলা আলাপ করা জরুরী। সে আমার সম্পর্কে অনেক কিছু জেনে গেছে। তার সাথে বিস্তারিত আলাপ করলে বাকীটা খোলাসা হয়ে যাবে। তারপর সে আমার ঘাড় মটকাক। মরার আগে অন্তত আমার ভুলভ্রান্তিটুকু জেনে যাবো।



আচ্ছা তোমার সম্পর্কে যে সব কল্পকথা শুনি সেটা কি সত্যি? কিছুটা ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম।

কিরকম কল্পকথা। একটু আইডিয়া দাও তো।

এই যেমন এই এলাকায় তোমাকে নিয়ে একটা গল্প প্রচলিত আছে।

না তো আমি সেই গল্পটা সম্পর্কে জানি না! তার চোখে মুখে বিস্ময়।

কিন্তু তুমি আমার সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য জেনে গেছো। সেটা কেমন করে সম্ভব হলো?

'আমার জানার পরিধি খুব সীমিত। যারা এই বটগাছ থেকে একশ কদমের মধ্যে থাকে কেবল তাদের সম্পর্কে ইচ্ছে করলে আমি জানতে পারি। তুমি তাড়াতাড়ি আমার গল্পটা বলো।'



সে তার সম্পর্কে গল্প শোনার জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। বিনিময়ে যদি আমার এই ছুটে চলার অবসান হয় তো মন্দ কি। আর জীবন যদি এখানেই যায় তো প্রকৃত সত্যটা উৎঘাটন হয়ে তারপর না হয় যাক।



আমি শুরু করলাম...

এই এলাকায় একটা গল্প প্রচলিত আছে। এই মনসাপুর গ্রামে নাকি এক সুন্দরী মহিলা ছিল। সে পেশায় শিক্ষকতা করতো। শিক্ষকতা করলেও সে এলাকায় বিভিন্ন বেহায়াপনা কাজ করে বেড়াতো। সে বিবাহিত হলেও তার সাথে স্কুলের সব পুরুষ শিক্ষকের অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। সেই সাথে গ্রামের সব শিক্ষিত যুবক সম্প্রদায়ের সাথে ফষ্টিনষ্টি করে বেড়াতো।



এই পর্যন্ত বলার পর একটা বড় দীর্ঘশ্বাস নিলাম। সে দেখি চুপচাপ অধীর আগ্রহে বাকীটা শোনার জন্য অপর পাশের চেয়ারে বসে আছে। তার চেহারায় অদ্ভূত লাবণ্য ফুটে উঠেছে। আমার দেখা যেকোন সুন্দরীকে সৌন্দর্যগুণে এক নিমিষেই হারাতে পারবে। গল্পটা এ পর্যন্ত শুনে তার চোখ উদগ্রীব হয়ে আছে। আমি আমতা আমতা করলেও তার চোখের ইশারায় বাকীটুকু বলতে বাধ্য হলাম।



একবার কয়েক যুবক অতি উত্তেজিত হয়ে পড়লে ঐ শিক্ষিকাকে পাটখেতে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে। পরের দিন ঐ মহিলাকে পাটখেতের পাশে একটা বটগাছে ঝুলে মরতে দেখা যায়। এরপর ঐ মহিলা ভূত হয়ে গ্রামের যত যুবক আছে তাদের ঘাড় মটকানো শুরু করে।



এই পর্যন্ত শোনার পর সে উদভ্রান্ত হয়ে পড়ে। আরও কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে জানতে চায়, আচ্ছা তারপর সেই মহিলার স্বামী সম্পর্কে কিছু জাননা।



তেমন কিছু জানি না। শুধু শুনেছি সেই লোক এখানকার এক কলেজে শিক্ষক ছিল। এই ঘটনার পর পাগল হয়ে এলাকা ছেড়ে চলে গেছে।



'হুম সেটা বিশ বছর আগের ঘটনা।' এই বলে সে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। সেই দীর্ঘশ্বাসে যেন চারিদিক শীতল হয়ে যায়। বলা শুরু করে, মানুষের ইতিহাস সব সময় সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ হয় না। ইতিহাসের মধ্যে বিরাট কোন ভুল মানুষ সচেতনভাবে বা কখনো সখনো অবচেতন মনে ঢুকিয়ে ফেলে। আমি এখন সেই পার্থিবতার উর্ধ্বে। তাই ওসব লোকগল্প আমাকে সেরকম ব্যথিত করবে না। তবু এখনকার এই প্রজন্ম যাতে মিথ্যের মধ্যে না থাকে সেজন্য তোমাকে ছোট্ট একটা কাজ করতে হবে। বলো সেটা পারবে?।'

আমি আমতা আমতা করতে করতে বললাম, পারবো।

শোনো তোমার মধ্যে অনেকটা দ্বিধা কাজ করছে। সেই সাথে তোমার মন সন্দেহপ্রবণ। তুমি পারবে কিনা আমি চিন্তিত।

তার এই অকাট সত্যের কাছে আমি লজ্জিত হয়ে পড়লাম।

সে বলা শুরু করলো, লোকজন যে ধরণের ঘৃণা নিয়ে আমার গল্প বলে তাতে করে আমার নামটাও তারা মনে রাখেনি। মনে রাখার প্রয়োজনও বোধ করেনি।

এতক্ষণে মনে পড়লো সেই সত্যটা। আমি সেই নামটাও শুনিনি। এমনকি সেই ঘর পালানো পাগল স্বামীটিরও না।

তুমি বলো দেখি আমি কিছু করতে পারি কিনা।

সে বললো তুমি পারবে। তোমার বন্ধু রাশেদ এই এলাকার কৃতি সন্তান। সে ইচ্ছে করলে তার সাথে যুক্ত হয়ে সহজেই পারবে। আমার কাঁধে তার শীতল হাত রেখে অভয় দান করলো।

তাহলে বলো আমাকে কি করতে হবে।

আমার জীবনের গল্পটা বলি...

"আমি ছিলাম এই গ্রামের সোবহান মাস্টারের মেয়ে। আমার বাবা মনসাপুর স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের অংক পড়াতেন। গ্রামের কৃতি শিক্ষক ছিলেন। এই গ্রাম এবং এর আশেপাশের যত গ্রাম আছে সোবহান মাস্টার বলতে পাগল ছিল। মা আমার শৈশবেই মারা গেছেন। মা মারা যাওয়ার পর বাবা আমাকে নিয়ে দুর্বিপাকে পড়েন। সকালে উঠে তার পাশে বসে পড়াশুনা করতাম। স্কুলে যাওয়ার সময় এক সাথে স্কুলে যেতাম। মোটামুটি তিনি কোলেপীঠে করে আমাকে মানুষ করেন। স্কুলের পাঠ চুকিয়ে আমি কলেজে ভর্তি হই। ততদিনে কিছুটা বড় হয়ে যাই। তাই বাবা আমাকে একাই ছেড়ে দেন। আমি সাংসারিক টুকিটাকি কাজ সারি। সময়মত কলেজে যাতায়াত করি। গ্রামের চেয়ারম্যানের ছেলে আজগর। আন্ডারমেট্রিক। কয়েকবার চেষ্ঠা করেও মেট্রিক পাশ করতে পারেনি। সে আমার পিছে লাগে। তার নারী লিপ্সার কারণে গ্রামে ইতোমধ্যে অনেক মেয়ে পড়াশুনা বাদ দিয়ে বাড়িতে বসে আছে। আমি আমার মত করে বুক ফুলিয়ে কলেজ যেতাম। আসতাম। সে তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে আমার পিছু অনুসরণ করতো। একদিন সরাসরি প্রেমের প্রস্তাব দেয়। আমি অমত করি। এরপর আর তাকে কখনো আমার পিছে দেখা যায় নি।



আমি উৎকীর্ণ হয়ে তার কথা শুনতে থাকি। এই পর্যায়ে সে লম্বা একটা শ্বাস নেয়।



আমার নামটা বলা হয়নি। সালেহা নামে সবাই চিনতো। বাড়িতে বাবা মণি বলে ডাকতো। কখনো চোখের মণি বলে কখনো নয়নের মণি বলে ডাকতো। কলেজ ছেড়ে একদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম। বাবার এবং আমার পছন্দের বিষয় গণিত নিয়ে। বেশ সাফল্যের সাথে পড়াশুনা শেষ হলো। আমি বাইরে চাকরীর জন্য চেষ্ঠা করতে থাকলাম। বাবা বললো মণি সবাই তো পড়াশুনা করে গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। তুইও কি আর সবার মত চলে যাবি। আমার শরীরটাও ভাল না। তোর বিয়ে দেয়া দরকার। জিজ্ঞেস করলেন, তোর পছন্দের কোন পাত্র থাকলে বল। আমি নত মুখে জানালাম কোন পছন্দের পাত্র নেই। তিনি বললেন, হরিহরপুর কলেজে নতুন এক শিক্ষক এসেছে জাহেদ নামের। ছেলেটা সুদর্শন আর ভদ্র। তুই কি চিনিস? এলাকার কলেজ। তাছাড়া বাড়ির কাছেই। তাই এখানকার শিক্ষদের নারী নক্ষত্র সব জানা হয়ে যায়। আমি হ্যা সূচক মাথা দোলাই। -আমি যদি তার সাথে বিয়ের বন্দোবস্ত করি তুই কি তাতে রাজী থাকবি?

সারাজীবন বাবার বাধ্যগত মেয়ে হয়ে ছিলাম। আর সম্পর্কটা মন্দ নয়। তাই রাজী হয়ে গেলাম। আমাদের বিয়ে হয়ে গেল। আমাদের সংসারটা সুন্দরভাবে চলছিল। জাহেদের শিক্ষকতা এবং আমার শিক্ষকতায় এলাকায় যাতে জ্ঞানের আলো বিকশিত হয় এজন্য আমরা যথেষ্ঠ মনোযোগ দিয়ে শিক্ষকতা করছিলাম। আমার বিয়ের দু'মাসের মাথায় বাবা হঠাৎ করে ওপাড়ে চলে যায়। বাবা চলে যাওয়ার পর আমি অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়ি। হাজার হোক বাবার মত নামী শিক্ষকের ভয়ে বা সম্মানে সুন্দরী হওয়ার পরও এলাকার ছেলেপেলে চোখ তুলে চাওয়ার সাহস পেত না।



বিয়ের পর জানতে পারি বিয়ের আগে চেয়ারম্যানের ছেলে বাবাকে প্রস্তাব দিয়েছিল। বাবা সে কথা আমাকে বলেননি। বাবার সুহৃদ আর এক শিক্ষক মালেক চাচার কাছে এ কথা জানতে পারি। বাবা মারা যাওয়ার পর কলেজে যাতায়াতের সময় আজগরের উৎপাত বেড়ে যায়। মাঝে মাঝে অতিষ্ঠ হয়ে উঠি। এরকম একদিন পায়ের স্যান্ডেল খুলে তার দু'গালে দু'ঘা মেরে দেই। সে লাজ শরমের ভয়ে তখন আর কিছু বলেনি। গালে হাত দিয়ে হনহন করে হেঁটে যায়।



এর সপ্তাহখানেক পরের ঘটনা। আমি তখন পাঁচ মাসের অন্ত:সত্তা। এক মধ্যরাতে চোখে মুখে মুখোশ দিয়ে ঢেকে আজগর তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে হাজির হয়। জাহেদের মুখে ত্যানা প্যাঁচিয়ে ঘরের খাটের সাথে বেঁধে রাখে। আমাকে নিয়ে আসে বাড়ি থেকে বেশ কিছু দূরে। পাশের ঐ খেতটায়। ওটাতে তখন বড় পাটগাছ ছিল।" এই বলে সে থেমে যায়।



এরপর আর তার মুখে কোন শব্দ নেই। তার শীতল দীর্ঘশ্বাসে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠলো। তার ধারে কাছে বসে থাকা আমার জন্য দায় হয়ে যায়।



আমার দু'চোখের কোণা বেয়ে অনবরত অশ্রু ঝরে। এখন কি করা উচিত আমি জানি না। তাকে কি সান্তনা দেয়া যায়। কিংবা তার কাঁধে হাত রেখে অভয় দান। এসব করে আর কি হবে। সেতো এসব কিছুর উর্ধ্বে।

এক সময় নীরবতা ভঙ্গ করার জন্য বলি। তারপর...

তারপর আর কিছু শুনতে চাও!

আমি মনে মনে আজগরের প্রতি বজ্রমুষ্ঠি তুলি। বলি না থাক আর বলতে হবে।

তুমি এখানে না আসলে তো আমার সম্পর্কে নেগেটিভ আলোচনার কথা জানাও হতো না। তাই আমি আমার জীবনের করুণ সত্য গল্পটা বললাম। তুমি তোমার মত করে সবাইকে জানাইও।



তার এই জীবন কাহিনীর ভারে আমার কোন কথাই আর মনে আসে না। আমি যে পুলিশের খাতায় দাগী আসামী। পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি...



আমার ভাবনা তার কন্ঠস্বরে থেমে যায়। সে বলতে থাকে। 'শোনো তুমি যে সমস্যায় পড়েছো এটা তোমার নিজেরই সৃষ্টি। তোমার সন্দেহবাতিকগ্রস্থ মন। তার কথা শুনে আমার মাথা আবারও নত হয়ে যায়। বলে,'তুমি তোমার স্ত্রী'র সাথে যে কাজটা করেছো সেটা তোমার খেয়ালী মনের উদ্ভট ভাবনা। তোমার স্ত্রীর বুকের বামপাশে একটা নখের আঁচড় দেখে মনোকষ্টে ভুগছো। বিয়ের প্রথম রাত থেকে সেই আঁচরটা যেন তোমার মনে গেঁথে আছে।

সে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়, ঠিক না?

আমি হ্যা সূচক মাথা নাড়ি।

এই মনোকষ্ট তোমার কোন দিন দূর হবে না। যতদিন পর্যন্ত না তুমি উদার মনের অধিকারী হও।

শোনো তোমার বউ ছোটকালে খুব দূরন্ত ছিল। নিজের বাড়ির সব আম জাম চুরি করে বান্ধবীদের সাথে ভাগ বাটোয়ারা করে খেত। একবার সব বান্ধবীরা মিলে পাশের বাড়ির জাম্বুরা চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে যায়। তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে জাম্বুরা গাছের একটা কাঁটা তার বুকের বামপাশে বিঁধে। এতে করে জায়গাটা ছিলে যায়। সে বাবা-মার ভয়ে বাড়িতে আর সেকথা বলেনি। এক সময় সেই ক্ষতের দাগটা স্থায়ী হয়ে যায়। আর তুমি কিনা!

আমি বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে যাই।

আর শোনো তোমার বউ আত্মহত্যা করেনি। তোমার পিছে কোন পুলিশও ঘুরছে না। গত কিছুদিনের টানা ঘুমের ঔষধের ফল এটা। তোমার বউ এখন তার প্রিয় বান্ধবী শারমিনের বাড়িতে আছে। এখান থেকে নামার আগে সামনে একটা বাগান দেখতে পাবে। ঐ বাগানের গেটে একটা শিশু বসে আছে।

আমি অভিসন্ধিৎসু মনে জিজ্ঞেস করি, শিশুটা কি তোমার?

সে মাথা নাড়ে। ওর নাম আখলাক। নামার আগে ওর কাছ থেকে একগোছা রজনীগন্ধা নিবে। সেটা নিয়ে তোমার বউয়ের কাছে যাবে।



সামনে এগিয়ে গেলে শিশুটির দেখা পাই। একদম দেবশিশুর মত দেখতে। সে হাসিমুখে আমার দিকে রজনীগন্ধার ডাটা এগিয়ে দেয়। আমি তার মাথায় হাত বুলাতে গেলে তার হাসি আরও বেড়ে যায়। এরপর সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে না নামতেই দেখি সকাল হয়ে গেছে। তখন চারিদিক উজ্জ্বল করে একটা লাল সূর্য পশ্চিমাকাশে উঠছে।





ছবিঃ নিজস্ব এ্যালবাম।

মন্তব্য ৫৫ টি রেটিং +১৫/-০

মন্তব্য (৫৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:০৬

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: সুন্দর কথাকাহিনি
ভাললাগা থাকল
শুভেচ্ছা +

২৮ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩২

সায়েম মুন বলেছেন: ধন্যবাদ পরিবেশ বন্ধু। শুভকামনা।

২| ২৮ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:২৯

মাক্স বলেছেন: সালেহার গল্প পড়ে মন আর্দ্র হল।

আর একটা অসংলগ্নতা, নিজের সম্পর্কে নেগেটিভ গল্পটা সালেহা জানত না, কিন্তু গল্পের মুল চরিত্রের স্ত্রীর বুকে নখের দাগ কিভাবে এল সেটা জানত!

১ম প্লাস!

২৮ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৬

সায়েম মুন বলেছেন: কষ্ট করে এত বড় পোস্ট পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ মাক্স।

একটা সুত্র আছে গল্পে। বটগাছ থেকে বা বাড়ি থেকে একশ কদমের বাইরে সে কিছু জানতে পারে না। তার ধারে কাছে গল্পের কথক এসেছে বলে তার সম্পর্কে বা তার জীবনের পরিণতি সম্পর্কে জানতে পেরেছে। গল্পটা বড় বলে হয়ত অংশটা সেরকমভাবে চোখে পড়েনি। :)

শুভকামনা।

২৮ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪০

সায়েম মুন বলেছেন:
আচ্ছা তোমার সম্পর্কে যে সব কল্পকথা শুনি সেটা কি সত্যি? কিছুটা ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম।
কিরকম কল্পকথা। একটু আইডিয়া দাও তো।
এই যেমন এই এলাকায় তোমাকে নিয়ে একটা গল্প প্রচলিত আছে।
না তো আমি সেই গল্পটা সম্পর্কে জানি না! তার চোখে মুখে বিস্ময়।
কিন্তু তুমি আমার সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য জেনে গেছো। সেটা কেমন করে সম্ভব হলো?
'আমার জানার পরিধি খুব সীমিত। যারা এই বটগাছ থেকে একশ কদমের মধ্যে থাকে কেবল তাদের সম্পর্কে ইচ্ছে করলে আমি জানতে পারি। তুমি তাড়াতাড়ি আমার গল্পটা বলো।'

৩| ২৮ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: সন্দেহবাতিকগ্রস্ত ব্যক্তি আমৃত্যু এরকম সন্দেহের যন্ত্রণায় ভোগে। কিছুদিনের জন্য সন্দেহ দূর হলেও আবার সেটা ঘুরে ফিরে আসে।

সালেহার ব্যাপারে এক ধরণের অন্যায় হয়েছে কিন্তু এধরনের ভৌতিক ব্যাপার - মুখোমুখি দুটো চেয়ার রাখা শুনেই তো ভয় লাগে।

যাই হোক মাঝে মাঝে তাহলে গল্পও পড়তে পারবো আপনার এখানেও, ভালোই হলো।
শুভ সন্ধ্যা ।

২৮ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫

সায়েম মুন বলেছেন: তাই নাকি! তাহলে তো নায়করে শায়েস্তা করা উচিত ছিল #:-S

আগে মাঝে মাঝে গল্প দিলেও ইদানীং দেয়া হয় না। এই গপ ফ্লপ খাইলে এই রাস্তা থেকে বিদায় নিতে হবে বোধয়। /:)

কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো।

৪| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ৮:২০

হাসান মাহবুব বলেছেন: কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মনোসামাজিক বিষয় আধিভৌতিক কাহিনীর আদলে তুলে আনায় ভিন্নতা পেয়েছি। ভালো লাগলো গল্পটা।

২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:০৫

সায়েম মুন বলেছেন: চেষ্ঠা করেছি হামা। আপনার ভাললাগাটুকু আমার সম্বল। অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা সব সময়।

৫| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:৪৪

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: +++++++++++++++++


ভাল লাগলো।

২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:০৬

সায়েম মুন বলেছেন: ধন্যবাদ ইরফান। প্লাসের বন্যায় ভেসে গেলাম। :D

অনেক শুভকামনা।

৬| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:০৩

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: হাসান মাহবুব বলেছেন: কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মনোসামাজিক বিষয় আধিভৌতিক কাহিনীর আদলে তুলে আনায় ভিন্নতা পেয়েছি। ভালো লাগলো গল্পটা।

২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:০৭

সায়েম মুন বলেছেন: আপনি আর নতুন করে কিছু বলবেন না। #:-S :P

থ্যাংকস অভি।

৭| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:৪৯

মায়াবী ছায়া বলেছেন: গল্পে ভালো লাগা ।।

২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:৫৭

সায়েম মুন বলেছেন: ধন্যবাদ মায়াবী ছায়া। শুভকামনা এবং শুভরাত্রি।

৮| ২৯ শে জুন, ২০১৩ রাত ১২:৪৪

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: বাহ! কিছুটা ভিন্ন প্রেক্ষাপটে লেখা কেমন যেন একটা বাস্তব অনুভুতি পেলাম। কিছু কিছু জায়গার বর্ননা বেশ গা ছম ছমে লেগেছে.. অনতিদূরে ছাদের দেয়াল ঘেঁষে একটা বটগাছ। কয়েকটা বাদুর বটফল খেতে ব্যস্ত। চাঁদটা এতক্ষণে সান্ধ্যকালীন তপস্যা শেষে চলা শুরু করেছে। হঠাৎ একটা কালো মেঘের সাথে দেখা। তাই চুপসে গিয়ে সংকীর্ণ পথে পৃথিবীর দিকে করুণ চোখে তাকিয়ে। এখন মৃদু আলোটা ঝাপসা হয়ে গেছে। একটা ঝাপসা অবয়ব চোখের সীমানার কিছুটা বাইরে দোদুল্যমান। ..

এর সাথে আবার কিছু সাইকোলোজিক্যাল ব্যাপারও যুক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে গল্পটা আমার বেশ লেগেছে!

২৯ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১১:১০

সায়েম মুন বলেছেন: আপনার ভাললাগা অনুপ্রাণিত করবে। অনেক ধন্যবাদ কাল্পনিক_ভালবাসা। শুভকামনা রইলো।

৯| ২৯ শে জুন, ২০১৩ রাত ১২:৫৫

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

গল্প ভাল লাগল +++++

২৯ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১১:১১

সায়েম মুন বলেছেন: ধন্যবাদ কান্ডারী। শুভকামনা সব সময়।

১০| ২৯ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৪

টুম্পা মনি বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।

অফ টপিকে একটা প্রশ্ন- আপনার প্রফাইলে ''দিকভ্রান্ত পথিক'' কেন লিখা? এ নামে তো আরেকজন ব্লগার আছেন তাই না? নাকি আপনিই তিনি?

২৯ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:৩০

সায়েম মুন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ টুম্পা মনি।

আমি তিনি না। আর উনি অবশ্য *দিকভ্রান্ত পথিক। স্টারটা পথিকের পরেও হতে পারে। #:-S

কেন লিখেছি আমার আগের পোস্টগুলো দেখলে বুঝতে পারতেন। আগে ভ্রমণ পোস্ট বেশী দেয়া হতো। আর আমি দেশের আনাচে কানাচে ঘুরাঘুরি করি বেশী। ব্লগিং এর শুরু থেকে প্রোফাইলের উপরে ঐ লেখাটা আছে। আর পরিবর্তন করা হয়নি। আশা রাখি বুঝতে পেরেছেন। :)

১১| ২৯ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৮

মামুন রশিদ বলেছেন: ভৌতিক কাহিনী মনে করেই পড়েছি, কিন্তু কোন ভয় পাইনি । বরং দারুন একটা ম্যাসেজ পেয়েছি, সন্দেহবাতিকতা নিয়ে ।


সু্ন্দর গল্প, বর্ননার ঢঙ আকর্ষনীয় । বেশ কয়েকটা লেয়ার আছে । সালেহার জন্য মন খারাপ হয়েছে ।

গল্পে প্লাস ।

২৯ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৫

সায়েম মুন বলেছেন: আপনি পড়ার পর শুরুতে কিছুটা পরিবর্তন করেছি। সেটা অবশ্য প্রথম প্যারাতেই কয়েকটা লাইন।

এই সন্দেহের বশে কত শত পরিবারে অশান্তির আগুন জ্বলে। তার একটা প্রকার দেখাতে ভৌতিকতার আশ্রয় নিয়েছি।

আপনার পাঠ এবং মন্তব্যে খুব খুশী হলাম মামুন। শুভকামনা নিরন্তর।

১২| ৩০ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:০৯

সমুদ্র কন্যা বলেছেন: ভাল ভূতের গল্প :)
ভাল লাগল পড়ে।

৩০ শে জুন, ২০১৩ রাত ৮:০০

সায়েম মুন বলেছেন: থ্যাঙ্কস ডটার অব দি সি।
শুভকামনা সব সময়।

১৩| ০১ লা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৫৮

তন্ময় ফেরদৌস বলেছেন: অন্যরকম লাগলো। অনেক দিন পর সায়েম ভাইয়ার লেখা পড়লাম আবার। অনেক ভালো লেগেছে।

++++++

০১ লা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:০৬

সায়েম মুন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ তন্ময়। শুভকামনা নিয়ত।

১৪| ০১ লা জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৩

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
দাগাইলাম! পড়ে মন্তব্য করমু।

০১ লা জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:২৪

সায়েম মুন বলেছেন: হ্যাইও কবি। আপনে কই গেছেন? বহুদিন দেখিনা। দাগাদাগি বাদ্দিয়া বলেন ক্যামনাছেন।

১৫| ০১ লা জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৫১

ময়নামতি বলেছেন: ভাল লাগা গল্প। +++

০১ লা জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:০৫

সায়েম মুন বলেছেন: ধন্যবাদ ময়নামতি। অনেক দিন পর দেখলাম। আশা রাখি ভাল আছেন। শুভকামনা রইলো।

১৬| ০১ লা জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৪৭

কালোপরী বলেছেন: হুম

০১ লা জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:০৬

সায়েম মুন বলেছেন: আর একটু বিস্তারিত বলেন। এত সংক্ষেপে ঠিক বুঝা গেল না। #:-S

১৭| ০১ লা জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:২৫

কয়েস সামী বলেছেন: ++++++

০১ লা জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:২৭

সায়েম মুন বলেছেন: সবাই দেখি পরাবাস্তব প্লাস দিয়া যায়। প্লাস ৮ থেকে ৯ হয় না। :(

১৮| ০৩ রা জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:০৩

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: গল্পের গাঁথুনি চমৎকার। ভিন্ন স্বাদ পেলাম। ++++

০৩ রা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:১৯

সায়েম মুন বলেছেন: ধন্যবাদ নাজিম এই বড় গল্পটা পাঠের জন্য কৃতজ্ঞতা। ভিন্নতার কথা শুনে খুব ভাল লাগলো। শুভকামনা সব সময়।

১৯| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৩৫

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
ক্যাম্নে কই কিরাম আছি! তয় আজকাল মনে হয় আমি মানুষ হইছি! আগে গাধা ছিলাম তাই ভালো ছিলাম। একটা কিছু নিয়া ব্যস্ত থাকতাম কিন্তুক আজকাল এতো এতো আকাম লইয়া ব্যস্ত কি কমু! মানুষের পক্ষেই এতো কামকাজ করা সম্ভব! আমি গাধা থাকতাম চাই! 8-|

আপ্নে আছেন কেমন??

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৩৬

সায়েম মুন বলেছেন: গত মাসে আমার গাড়ী এক্সিডেন্ট হয়। দিনাজপুর থেকে ঢাকায় ফিরছিলাম। পেছন থেকে একটা গাড়ী ধাক্কা দেয়। ক্যারিবয় ছিল। সেটার পেছনের গ্লাস ভেঙ্গে গেছে। আমি মাথায় আঘাত পাইছি। মাথা না থাকলে আর কি থাকে বলেন। মাথার ব্যামো এখনো কিছুটা আছে। যদিও ফেটেটেটে যায়নি। শুধু ইন্টারনাল ট্রমা। এখন সুস্থতার দিকে। প্রায় ৯০% সুস্থ এখন। আর কিছুটা আছে। সেটাও আল্লাহ চাইলে কয়েক দিনের ভিতর ঠিক হয়ে যাবে। বলা যায় টোটালী অন্ধকার জগতে ছিলাম। এখন আলোর জগতে ফিরছি। আমার ঘূর্ণিচোখ কবিতা গত কয়েক দিন আগে লেখা। জাস্ট জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণের অনুভূতিটা ফোটানোর চেষ্ঠা করেছি ওটাতে। গত ২০১০ সালেও এই সেইম গাড়ী এক্সিডেন্ট করে। রাস্তা থেকে খাদে পরে উল্টায় যায়। আমার পিছে একটা শয়তান ঘুরতেছে বোধয়। সাথে কিছু আর্শীবাদ থাকায় বেঁচে যাচ্ছি।

আশা রাখি আপনি শীঘ্রই ক্রিয়েটিভ কোন জবে জয়েন করবেন। আপনার জীবন আলোকোজ্জ্বল হোক। আপনার সাথে একদিন দেখা করার ইচ্ছে আছে। সময় করে সেটা হবে আশা রাখি।

২০| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:১৯

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
আরে বলেন কি! আমি জানতামই না। আসলে গতকিছুদিন ব্লগে ফেবুতে কোথাও আসি নাই। তাই কোন খবরা খবর জানি না। আপনি এখন ঢাকায় না ঢাকার বাইরে??

আর সবাই ভালো আছে তো?

জব একটা হয়ে যাবে। আমার আরেকটু বেশি শ্রম দিতে হবে আর কী! এর জন্যই আজকাল ব্লগ ফেবুতে নাই।

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৩১

সায়েম মুন বলেছেন: আসলে ব্লগ বা এফবি কোথাও কাউকে বলা হয়নি। এখন ঢাকায় আছি। আর সবাই ভাল আছে। :)

আপনার জবটা হয়ে যাক। একটা উপায় বের না হলে ব্লগ এফবি কিছুটা নীরব থাকুক। সেটাই ভাল হবে আপনার।

২১| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:০১

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
আগামীকাল পল্লবী এসে ফোন দিমু আপনাকে। ভালো সময়ে দেখা কইরা কাম নাই। কালই আসছি।

০৬ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৪৬

সায়েম মুন বলেছেন: আজকে বেশ ব্যস্ততা গেল। মোটামুটি সারাদিনই ব্যস্ত ছিলাম। আটটার দিকে ফিরেছি। আশা রাখি শীঘ্রই দেখা হবে। :)

২২| ০৬ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৬:৩৭

ফারিয়া বলেছেন: গল্পটা কেমন যেনো, একবার এখানে, আবার ছুটে ওখানে, কিন্তু খুব নিশব্দে স্থান বদল হচ্ছিল। আরেকটা কথা, আপনার ছবিগুলো এত প্রান পায় কি করে, ওদের দেখলে দেখেই থাকতে ইচ্ছা হয়। ছবির নিচের গল্পটা পড়তে ইচ্ছে হয়না, তবে পড়ার পর এখন মনে হচ্ছে চারপাশ খুব নিশ্চুপ। অদ্ভুত ভালোলাগা জন্মালো গল্পটিতে!

০৬ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৫২

সায়েম মুন বলেছেন: সময় করে ব্লগসাপেক্ষে বড় গল্পটাতে এত সময় দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ফারিয়া। লেখাটা কিছুটা অস্থির গতির হয়েছে। এটা গল্পের খাতিরেই হয়েছে। আপনার ভাললাগা শুনে বেশ লাগলো।
আমি ছবি তুলি অনেক। পোস্টের বিষয়ের সাথে যায় এরকম একটা ছবি দেয়ার চেষ্ঠা করি। ছবি বিষয়ক কথা শুনে আরও ভাল লাগলো। শুভকামনা সব সময়।

২৩| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৪৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অনেক গোছানো চিন্তাভাবনার একটা লেখা। শব্দগুলো সহজেই মাথায় ঢুকে যায়, এবং ভেতরে গিয়ে খোঁচাতে থাকে। ভাল লেগেছে।

১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:০০

সায়েম মুন বলেছেন: আপনার পাঠ মন্তব্য আমাকে প্রেরণা যোগাবে। অসংখ্য ধন্যবাদ প্রফেসর। শুভকামনা নিরন্তর।

২৪| ১৩ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:৫৩

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
চমৎকার গল্প।
নিজস্ব অ্যালবামের ছবিটাও সুন্দর ||

১৩ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:০৯

সায়েম মুন বলেছেন: সময় করে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ইমরাজ। শুভদুপুর।

২৫| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:০২

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: চমৎকার, অসাধারণ এবং অনন্য। গল্প পড়ে মুগ্ধ হলাম :)

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৪২

সায়েম মুন বলেছেন: আপনার পাঠ এবং মুগ্ধতায় অনেক ভাললাগা। থ্যাঙ্কস মহামহোপাধ্যায়। শুভকামনা রইলো।

২৬| ২৩ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:০৭

রেজোওয়ানা বলেছেন: গল্পটা ভাল লাগছিল পড়তে!


তোমার অনেক গুলো পোস্ট জমে গেছে দেখছি, কোনটাই পড়ি নাই :(

২৫ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৪০

সায়েম মুন বলেছেন: আসলে দিন দিন ব্যস্ততা বেড়ে যাচ্ছে। আমি নিজেও আর আগের মত পোস্ট পড়তে পারি না। গত কয়েক দিন তো এক ট্রেনিং এ ব্যস্ত ছিলাম।

২৭| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৩ ভোর ৫:১৭

অযুত বলেছেন: আমিতো আর সবার মত সুন্দর করে লেখা ব্যাখ্যা করতে পারি না! তাই শুধু ভালা লাগা দিয়ে গেলাম।
++

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৫

সায়েম মুন বলেছেন: আপনার ভাললাগাটুকু আমার প্রেরণা। অনেক দিন লিখিনা। আশা রাখি শীঘ্রই গল্প লিখতে পারবো। শুভকামনা রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.