নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দিকভ্রান্ত পথিক

সায়েম মুন

আঙ্গুল-চুষে ওষ্ঠাগত, জীবনের বেহিসেবী, ছিন্নপত্র দোলাচালে, মলিনতর ক্রন্দসী। হিমশীতল হাভাতে, অনাদরে উর্বষী, কাষ্ঠাগত অবিরত, ছন্নছাড়া সন্ন্যাসী।

সায়েম মুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ ললিতা আপুর আয়না

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৪৪







বোশেখের খরতাপে প্রকৃতি উত্তপ্ত। ভ্যাপসা গুমোট ভাবটা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। সারাদিন বিভিন্ন কাজে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে দুপুর দুইটার দিকে বাসায় ফিরলাম। এসেই বাথরুমে শাওয়ারের নিচে মিনিট দশেক বসে থাকলাম। সারা শরীরে কিছুটা শীতলতা বয়ে গেল। বের হয়ে নাকেমুখে কিছুটা খাবার গুজে ক্লান্ত বিধ্বস্ত শরীর টা এলিয়ে দিলাম বিছানায়।



কিছুক্ষণের মধ্যেই চোখে রাজ্যের ঘুম নেমে এলো। আধো ঘুম আধো জাগরণে কানে একটা শব্দ বাজতে লাগলো। ভাবলাম, এই অবেলায় কে আসলো আবার। আব্বু আম্মু অফিসে গেছে। তারা তো এই সময়ে আসার কথা না। হতে পারে ললিতা আপু। কিন্তু ললিতা আপু আসলে তো আগে ফোন করে জানাবে। কোন অতিথি তো আসার কথা না। আবার কেউ কোন বিল নিতে এসেছে কিনা? ইত্যাকার ভাবনায় ছেদ পড়লে শব্দটাও বন্ধ হয়ে গেল। যাক, শেষ পর্যন্ত উঠতে হলো না। কেউ এসে থাকলে ব্যর্থ মনোরথে চলে গেছে। পাশ ফিরে শুয়ে পড়লাম।



আবারও ঠকঠক শব্দটা শুরু হলো। এবার আর থেমে থেমে নয়, একেবারে ছন্দময় শব্দে বাজতে লাগলো। এই ক্লান্ত দুপুরে লো ভলিউমে রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজলে ঘুমটা মন্দ হতো না। কিন্তু শুধুমাত্র ঠকঠক শব্দ কানে লোহাপেটা শব্দের ন্যায় লাগলো। একান্ত বাধ্য হয়ে বিছানা ছাড়তে হলো। মেইন দরজা খুলে এপাশ ওপাশ চাইলাম। কারো টিকিটি পর্যন্ত চোখে পড়লো না। দরজা বন্ধ করার পর শব্দের উৎস সম্বন্ধে সম্যক ধারণা পাওয়া গেল। এতক্ষণ ঘুমঘোরে সঠিক উৎসটা অনুমান করতে না পেরে মেইন দরজাকেই মনে হয়েছিল।



লতিতা আপুর রুমে উঁকি দিয়ে দেখলাম। একটা চড়ুই পাখি তার ড্রেসিং টেবিলের উপর বসে আছে। আয়নার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তার প্রতিবিম্বটাকে দেখছে। আর পিটপিট করে এপাশ ওপাশ চাইছে। তার প্রতিদ্বন্দী ভেবে মল্লযুদ্ধের পর বেশ শ্রান্ত বোধ হচ্ছে তাকে। এই অবুঝ পাখিটিকে বুঝানোর গুরুদায়িত্ব কাঁধে নেয়ার শক্তি ও সামর্থ্য এই মুহূর্তে অবশিষ্ট নেই। যতজোড়ে সম্ভব ডান হাতটা ঝাঁকুনি দিয়ে রাগ প্রকাশ করলাম। আমার রাগের মাহাত্ম্য সে কতটুকু বুঝলো জানিনা। বেশ কয়েক হাত দূরে গিয়ে বারান্দার গ্রিলে বসে পড়লো। অনাকাঙ্খিত এই আক্রমনের জন্য সেই উল্টো রেগে গেছে বোধয়। থাক বাবা অবুঝ পাখি আমি যাই ঘুমাতে। বিকেলে আবার টিউশনী আছে। এই যে ঘুমাতে গেলাম। তুই তোর বাপ দাদা চৌদ্দ গুষ্ঠির সাথে যুদ্ধ কর।



আয়না আবিস্কার হওয়ার প্রথম দিকে মানুষের ক্ষেত্রেও এরকম ঘটনাই নাকি ঘটেছে। সেক্ষেত্রে যুদ্ধ হয়নি। পৃথিবীর বোকা মানুষগুলো প্রথম আয়নার টুকরোটা খুঁজে পেলে, তাদের গোত্রে রীতিমত ঝড় বয়ে যায়। সেই ঝড়ে কেউ নিজের প্রতিচ্ছবিকে দাদা, কেউবা পরদাদা, কেউবা গোত্রের প্রতিষ্ঠাতা বলে ঠাওড়ানো শুরু করে। ভুলোমনা লতিতা আপু প্রায়ই এই গল্পটা করতো। আপু, আয়না ছাড়া পানিতেও তো প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয়। পানি নিয়ে এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি? জিজ্ঞেস করলে, ধূর বোকা! আগে তো পানি ঘোলা ছিল। ঘোলা পানিতে কি আর চেহারা দেখা যায়? খাঁটি সমঝদারের হাসি তার চোখে মুখে। ঐ যে দেখিস নি গাধারা জল ঘোলা করে পানি খায়। থাক বাবা হয়েছে। গল্পকে আর ডালপালা মেলতে না দিয়ে অন্য কাজে মনোনিবেশ করি। এই গল্পের কখনো সমাপ্তি হয়নি। হওয়ারও নয়। ললিতা আপুর থেকে অন্যদের মাঝে বিস্তার ঘটে গল্পের। বিস্তার হতে হতে হয়ত একটু পরিমার্জিত হবে। যেভাবে পরিমার্জিত হতে হতে ললিতা আপুর কাছে পৌঁছেছে। বিয়ের পর ললিতা আপু তো এই ড্রেসিং টেবিলটাই শ্বশুরবাড়ি নিতে চেয়েছিল। পুরনো বলে বাবা তাকে একই মত দেখতে আর একটা ড্রেসিং টেবিল কিনে দেয়ায় সেই যাত্রায় রক্ষা পেয়েছে।





আমরা স্কুলে পড়ার সময় আমাদের সংসারটা খুব বেশী টেনেটুনে চলতো। বাসায় মোটে দুইটা বেডরুম ছিল। ডাইনিং ড্রইং মিলে ছোট্ট একটা জায়গা। এক রুমে আব্বু আম্মু। আর এক রুমে দুটো ছোট খাটে আমি আর আপু থাকতাম। এ রুমেই ড্রেসিং টেবিলটা এবং এর পাশে ছোট্ট পড়ার টেবিল নিয়ে আমাদের কতই না দৈনন্দিন গল্প রচিত হত! সকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা ঘন্টাখানেক পড়াশুনা করতাম। আপু বেণী দুলিয়ে, আমি হেরে গলায় অধ্যবসায় চালাতাম। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ললিতা আপুর সাথে প্রায়শই লঙ্কাকান্ড বেঁধে যেত।



অনেক দিন আগের একটা ঘটনা। আমি তখন ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। ঘুম থেকে উঠে দেখি সে পড়ার টেবিলে পড়াশোনায় ব্যস্ত। অন্যান্য দিন সে আগে উঠলেও তার সাজসজ্জাকালীন সময়ে আমি ত্বরিত বিছানা ছেড়ে উঠি। পাছে টেবিলটা না আবার বেদখল হয়ে যায়। কিন্তু আজকে কি এমন ঘটনা ঘটলো যে আমি কুম্ভকর্নের মত ঘুমিয়ে আছি। সেই ফাঁকে টেবিলটা দখল হয়ে গেল। এখন তো বিছানায় বসে পড়তে হবে। বিছানায় পড়তে যাওয়া মানে রাজ্যের ঘুম চলে আসবে। অর্ধ সমাপ্ত পড়াশুনা নিয়ে স্কুলে গেলে স্যারের প্যাদানী খেতে হবে। বিছানা ছেড়ে উঠে আসল রহস্য উদঘাটন করলাম। আজকে সে বডি স্প্রে মাখেনি। আমার গন্ধ আকর্ষী নাসিকা তাই ঘুম ভাঙ্গাতে ব্যর্থ হয়েছে।



আপুটা দেখতে যেমন সুন্দরী পড়াশুনায়ও যথেষ্ঠ পারদর্শী। সে প্রতিদিনের মত দু'বেনী দুলিয়ে পড়ছে। তার বেনী দুলানো দেখে চিড়িয়াখানার বানরের লেজের কথা মনে পড়লো। এখন তার অধ্যাবসায়ে কিভাবে বিঘ্ন ঘটানো যায় তার পথ খুঁজছি! টেবিলে পড়ে থাকা কলমটা নিয়ে তার বাংলা খাতার মধ্যে ঘ্যাচ করে একটা দাগ টেনে দিলাম। কোন কিছু বুঝে উঠার আগে ধপাধপ কয়েক মুষ্ঠি কিল পিঠের মধ্যে পড়লো। এরপর সে চেয়ার টেবিল ছেড়ে আম্মুর রুমে ভোঁ দৌঁড়। আমিও নাছোড়বান্দা। পিছে পিছে ছুটলাম। আব্বু আম্মু প্রাতভ্রমণে বেড়িয়েছে। আম্মু আমার ঢাল স্বরূপ। মায়েরা বোধয় ছোটদের পক্ষেই থাকে। এই মুহূর্তে নিজেকে অসহায় মনে হলো। তারপরও হৃত সম্মান পুনরুদ্ধারের জন্য প্রাণপণ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলো। সে লুকিয়ে আছে আলমিরার পাশে। তার একটা বেণী খপ করে টেনে ধরলাম। তুই আবার আমার চুল ধরেছিস, এই বলে সেও হিংস্র হয়ে উঠলো। বাঘে মহিষে যুদ্ধ বেঁধে গেল। যুদ্ধ এলোপাথাড়ি চলতে চলতে আম্মুর খাটের উপরে শুরু হলো। দু'পক্ষের বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ অপচয়ের পর বিধ্বস্ত। এখন পায়ের নিচে আম্মুর তসবীর পুঁথি গড়াগড়ি খাচ্ছে। শান্তিচুক্তি ছাড়া উপায় নেই। আপু বললো শোন,'আম্মু ফিরে আসলে তসবীর ব্যাপারটা বলিস না যেন। যে করে হোক কাল সকালের মধ্যে আমি গেঁথে দিবো।' যুদ্ধ যেহেতু করেছি দোষী হিসেবে শর্ত মেনে নিতে হলো। আপু তসবীর পুঁথি আর সুঁই সুতো নিয়ে স্কুলে গেল। টিফিন পিরিয়ডে বসে সেটা গেঁথে বাসায় নিয়ে আসলো। নচেৎ এই ঘটনা আম্মুর কানে গেলে কোন প্রকার অনুকম্পা অবশিষ্ট না রেখে পিঠের মধ্যে কয়েক প্রস্থ বেত্রাঘাত পড়তো।





ললিতা আপু আমার চেয়ে চার বছরের বড়। একাডেমীক্যালিও তাই। পিঠাপিঠি ভাই বোনদের এই যুদ্ধ যুদ্ধ খেলাটা বোধয় অবধারিত। তবে তার সাথে যে শুধু যুদ্ধ বাঁধতো তা নয়। শুধু যুদ্ধটুকু বাদে বাকীটা সময় আমরা হাসি আনন্দে মেতে থাকতাম। সে, সময় অসময়ে অনেক গল্প শোনাতো। প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে টুকিটাকি আবদার মেটাতো। আবার ঝগড়া লাগতেও কোন কারণ লাগতো না।



আর একদিন সকাল বেলার ঘটনা। আমি তখন অষ্টম শ্রেণীতে। ঐদিনও আপু টেবিলে আমি জানালার ধারে আমার খাটে বসে পড়ছি। মনোযোগ সহকারে পড়ার সময় পিঠের মধ্যে কিছু একটা টুপ করে পড়লো। পিছন ফিরে দেখি আপু একটা কাগজের দলা দিয়ে ঢিল ছুড়েছে। দলাটা ছুড়ে ভাল মানুষের মত মাথা দুলিয়ে পড়ছে। আসলে সে পড়ছে না। কারণ হাসির দমকে তার শরীর কাঁপছে। আমিও টুপ করে ছুড়ে মারলাম দলাটা। তার পিঠে গিয়ে লাগলো। একটু পর সেটা আবার আমার পিঠে। এভাবে দলা ছোড়াছুড়ি চলতে থাকলো কিছুক্ষণ। শেষবার আমার পিঠে পড়েছে। এখন আমার পালা। কিন্তু কাগজটা আর ধারেকাছে পাওয়া গেল না। হাতের কাছে একটা পেপার ওয়েট ছিল। ওটাই তুলে নিলাম। এই ভারী বস্তু দিয়ে ঢিল ছোড়া ঠিক হবে না। তাই তার আশেপাশে ঢিল ছুড়ে ভয় দেখানোর চেষ্ঠা করলাম। কিন্তু সেটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে একদম ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় গিয়ে লাগলো। অমনি সেটা কয়েক টুকরো হয়ে মেঝেতে ছড়িয়ে পড়লো। আম্মু বাসায় ছিল। ছুটে আসলো মুহূর্তে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আমরা বাকরুদ্ধ হয়েছিলাম এতক্ষণ। আম্মুর হাতের কিল থাপ্পরে বাক ছুটে গেল। বরাবরের মত আমি ছোট বলে কিছুটা কম জুটলো। এরপর এমন ছুট দিলাম বাসা থেকে। দুপুরের নাওয়া খাওয়া পর্যন্ত ভুলে ছিলাম। বিকেল বেলা কিছুটা পরিণত মনমানসিকতা নিয়ে ফিরে এসেছি যেন।



এই ঘটনার পর আস্তে ধীরে আমরা মারামারিতে সংযমী হয়ে উঠি। পরবর্তীতে বড় ধরনের কোন সংঘাত বাঁধেনি। বিশেষ করে পরে যখন তিন বেড রুমের বাসা হয়ে গেল। ললিতা আপু আর আমার আলাদা রুম হয়ে গেল, পড়ার টেবিল হয়ে গেল।





ভাতঘুমে বিকেল হয়ে গেছে। শরীরটা তেমন ভাল ঠেকছে না। টিউশনীতে যেতে ইচ্ছে করছে না এখন। এই ব্যাপারটাতে আগে কিছুটা উৎসাহ ছিল। মাস শেষে অতিরিক্ত কাঁচা টাকার সংযোগ মনে আনন্দ এনে দিতো। আব্বুর দেয়া সীমিত বরাদ্ধ কাটিয়ে সুন্দর স্বচ্ছল গতিতে জীবন চলছিল। ইদানীং আর আগের মত কোন প্রকার উৎসাহ পাচ্ছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষ বলে মনে ভারিক্কি ভাব এসে গেছে। সামান্য ক'টা টাকার জন্য অন্যের বাসায় গিয়ে দরজার কড়া নাড়া ভাল ঠেকছে না। কিন্তু উপায়ও তো নেই। বাবা মায়ের স্বল্প বেতনের চাকুরী। চারিদিকে সব বিষয় বস্তুর ক্রম মূল্যস্ফীতি। এর সাথে পাল্লা দিতে টিউশনী না করে এই মুহূর্তে কোন উপায়ান্তর দেখছি না। অবশেষে যেতেই হলো।



বাসা থেকে বের হওয়ার আগে দেখলাম দুটো চড়ুই। হয়ত সেই আগের চড়ুইটার পরিবার। তার বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে হাজির। নির্বোধের মত যুদ্ধ না করে খুটে খেতে গেলেও অনেক লাভ হতো। এই অবুঝ চড়ুইদের কে বোঝাবে এই কথা। পথে পাবলিক বাসে ঝুলে যাচ্ছি। যেতে যেতে মনে হচ্ছে, আমিও হয়ত এদের মত একটা যুদ্ধ করছি। এত পড়াশুনা করে কি হবে। বড় ভাইদের অনেককেই তো দেখছি। পড়াশুনা শেষে স্বল্প বেতনের চাকুরী। অভাব অনটন লেগেই আছে তাদের সংসারে। অনেকেই এখনো অবিবাহিত আছে। বিয়েই করতে পারছে না। ধূর শালা! জীবনটাই একটা যুদ্ধক্ষেত্র! তৃতীয় বিশ্বের এই দেশে এক তৃতীয় মহাযুদ্ধের সমিল।





রাতে ফিরে খেতে বসেছি। আম্মু বললো, কালকে গ্রামের বাড়িতে যাতো। জিজ্ঞেস করলাম, কেন আম্মু হঠাৎ গ্রামের বাড়িতে?

জানিস না বুঝি, তোর ললিতা আপু সন্তানসম্ভবা। কাল পরশু বাচ্চা হবে।

সেতো জানি, কিন্তু সেটা এত কাছে! আর তুমি, হাসপাতালে না গিয়ে গ্রামে যেতে বলছো যে?

তোর দাদীর শরীর তো খুব ভাল যাচ্ছে না। বয়স অনেক হয়েছে। আল্লাহ বোধয় ললিতার বাচ্চার মুখ দেখানোর জন্য এতদিন বাঁচিয়ে রেখেছেন। তিনি তো এখানে আসতেই চান না। ললিতার বাচ্চা হওয়ার কথা শুনলে এবার নিশ্চয়ই আসবেন।



পরদিন সকালেই গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। বাসে চার ঘন্টার পথ। যেতে যেতে মনে পড়লো, ললিতা আপুর এই বিয়েতে আমার অমত ছিল। বিশেষ করে এত সুন্দর আপুর সাথে দুলাভাইয়ের দাড়ি গোঁফের কারণে সম্পর্কটি মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল। ছোট মানুষের মতামতের কিইবা গুরুত্ব থাকতে পারে! বিয়ে হয়ে গেল। এজন্য অনেক দিন পর্যন্ত আপুর বাসায় যাওয়া হয়নি। পরবর্তীতে দেখা গেল, মানুষটা অনেক ভাল মনের অধিকারী। আপু দুলাভাইকে নিয়ে অনেক সুখী। এরকম সুখী পরিবার খুব কমই চোখে পড়ে। কিন্তু তাদের দু'জনের মাঝে একটা দুঃসহ বেদনা ছিল। বিয়ের বেশ কয়েক বছর হয়ে যাওয়ার পরও তাদের সন্তান হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত বিধাতা তাদের উপর সদয় হয়েছেন।



আম্মুর ফোনে ভাবনায় ছেদ পড়লো। আম্মু মোবাইলে জানালো, তোর আপুর একটা সুন্দর ফুটফুটে মেয়ে বাচ্চা হয়েছে। দাদীকে তাড়াতাড়ি নিয়ে আসার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে লাইন কেটে দিল। একটু পর বিভিন্ন ভাবনায় মনের অজান্তে আমার চোখের কোণ বেয়ে অশ্রু ঝরা শুরু করলো।





গ্রামের বাড়িতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে দুপুর হয়ে গেল। পৌঁছে দেখি বাড়িতে বিশাল জটলা। সবাই আকাশ বাতাস ভারী করে কাঁদছে। কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস পাচ্ছি না। একটা সুসংবাদ বয়ে নিয়ে আসলাম। অথচ এখনকার এই পরিস্থিতিতে সেটা প্রচার করা অমানবিক ব্যাপার মনে হচ্ছে। ছোট চাচ্চুর সাথে এই বাড়িতেই দাদী থাকেন। অন্যান্য চাচা-ফুফুরা বিভিন্ন জায়গায় সেটেলড। আমি আসার কথা শুনে ছোট চাচ্চু ছুটে আসলেন। এসেই আমার গলা জড়িয়ে কান্না শুরু করে হড়বড় করে বলা শুরু করলেন,''সকালে তোর বাবা ফোন করে জানালো ললিতার বাচ্চা হয়েছে। এই খবর শোনার পর মা যেন আনন্দে আত্মহারা। তুই নিতে আসছিস শুনে তার আনন্দ আরও বেড়ে গিয়েছিল। কেমন তাড়াহুড়ো করে ঈদে পাওয়া নতুন শাড়ী বের করলো। কল পাড়ে গোসল করতে দৌঁড়ালো। একটু পড়ে ধূপ করে একটা শব্দ হলো। তোর চাচী ছুটে গিয়ে দেখে মা কল পাড়ে পা পিছলে চিৎ হয়ে পড়ে গেছে। তার চিৎকারে আমিও ছুটে গেলাম। মার মুখ দিয়ে ফেনা ছুটছে। আঙ্গিনায় মাদুর পেতে শোয়াতে না শোয়াতেই শরীরটা নিশ্চল হয়ে গেল।'' এ পর্যন্ত বলার পর তার কান্নার দমক আরও বেড়ে গেল। এরকম শোক সন্তপ্ত কোন মানুষকে সান্তনা দেয়ার ভাষা আমার জানা নেই। আমিও চোখের জল আটকে রাখতে পারলাম না। এক সময় সবাই ধাতস্থ হয়ে লাশের সৎকার কাজে লেগে গেল। যে মানুষটি কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত এই পৃথিবীর একটা অঙ্গ ছিল। সে আজ ঝরে পড়লো। এখন দুর্গন্ধ থেকে রক্ষার জন্য বা অদৃশ্য মঙ্গল কামনার্থে মাটিচাপা দিতে হবে!



শেষ কথাঃ বাসে ফিরতে ফিরতে মনে হয়, জন্ম এবং মৃত্যু দুটো সময়েই মানুষ ছোট্ট অবুঝ শিশু হয়ে যায়। সে জন্মের সময় হাসতে হাসতে, সবাইকে হাসাতে হাসাতে বের হয় একটা বিস্ময়কর গহবর থেকে। মৃত্যুর সময় হাসতে হাসতে, সবাইকে কাঁদাতে কাঁদাতে সেই নিকষ কালো গহবরে প্রবেশ করে।

কিংবা

মনুষ্য জন্ম হচ্ছে একটা বৃন্ত থেকে ফুল ফোটা। জীবন ভর সৌরভ ছড়ানো। একটা সময় মৃত্যু রুপে ঝরে যাওয়া। পৃথিবীর সব ফুল সবাই দেখে না। এজন্য বোধ করি সবার মনে অতৃপ্তিবোধ রয়েই যায়।



আজকে ফোন করে ললিতা আপু তার সদ্য জন্মানো ফুলের সুন্দর একটা নাম দিতে বলেছে। মনে মনে একটা নাম অনেক আগেই ঠিক করে রেখেছি। সেটাই আওড়াচ্ছি এখন। আর ফুলটা দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি। কখন পৌঁছাবো গন্তব্যে...





ছবিঃ নিজস্ব এ্যালবাম।

মন্তব্য ৬১ টি রেটিং +১৬/-০

মন্তব্য (৬১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৪৯

এক্সপেরিয়া বলেছেন: ভাল লিখেছেন.....

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:২৭

সায়েম মুন বলেছেন: আপনার দম দেখে নির্বাক। থ্যাঙ্কস #:-S

২| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:১৯

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: এক নিম্বাসে পড়লাম মনে হয়,,,,,,, শেষের দিকে এসে মনটা খারাপ হয়ে গেল,,,,,,,,,তারপরও ভাল লেগেছে,,,,,,,ভীষণ ভাল লেগেছে

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:২৯

সায়েম মুন বলেছেন: কষ্ট করে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ কবি। ভাল থাকবেন। শুভকামনা রইলো।

৩| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:২৮

মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব বলেছেন: ভালোই লাগলো। যাকে বলে ঝরঝরে লেখা।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:১৩

সায়েম মুন বলেছেন: ধন্যবাদ সাইফুল। আপনার পাঠে অনেক খুশী হলাম। ভাল থাকুন সব সময়। শুভকামনা রইলো।

৪| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:২৫

এক্সপেরিয়া বলেছেন: কি দম দেখে..?

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:০৪

সায়েম মুন বলেছেন: তা কি আর বলতে 8-|

৫| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:০০

মামুন রশিদ বলেছেন: জন্ম এবং মৃত্যু দুটো সময়েই মানুষ ছোট্ট অবুঝ শিশু হয়ে যায়। সে জন্মের সময় হাসতে হাসতে, সবাইকে হাসাতে হাসাতে বের হয় একটা বিস্ময়কর গহবর থেকে। মৃত্যুর সময় হাসতে হাসতে, সবাইকে কাঁদাতে কাঁদাতে সেই নিকষ কালো গহবরে প্রবেশ করে।


এটাই বাস্তব । গল্প ভাল লেগেছে । জন্ম আর মৃত্যুকে একই সুতোয় বেঁধেছেন । এটা অমোঘ নিয়তি ।

গল্পে ভাললাগা ++

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:০৬

সায়েম মুন বলেছেন: আপনার পাঠ অনেক আনন্দ দিলো। ভাল থাকুন মামুন। আশা করছি আরও অনেক সুন্দর সুন্দর গল্প পাবো আপনার কাছ থেকে।

৬| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:০৬

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ভালই। সবচেয়ে ভাল লেগেছে ব্যাচেলর বড় ভাইদের জন্য আপনার সহানুভূতি। কারণ আমিও তাদের দলে তো।
আপনার গল্পটা পড়ে এই গানটা মনে পড়ে গেলঃ
তোমার হল শুরু আমার হল সারা।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:১০

সায়েম মুন বলেছেন: আপনার মত অনেক বড় ভাই বা ছোট ভাই আছে যাদের অবস্থা দেখে খারাপ লাগে। আশা করছি শীঘ্রই ভাল কিছু একটা করতে পারবেন। গানটা খুব ভাললাগার একটা গান। অনেক শুভকামনা রইলো।

৭| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:০৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: স্মৃতিচারণা এবং জন্ম মৃত্যুবিষয়ক বোধ মিলে বেশ লাগলো গল্পটা।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:১১

সায়েম মুন বলেছেন: আপনার পাঠে খুব ভাল লাগলো। আপনার শেষ গল্পটা দুর্দান্ত হয়েছে। চালিয়ে যান। শুভকামনা রইলো।

৮| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৫৮

মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: গপ ভালা লাগছে

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:১৩

সায়েম মুন বলেছেন: আপনার ভালা লাগায় আনন্দিত। ভাল থাকুন কবি।

৯| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:০৫

ভিয়েনাস বলেছেন: গল্পের শুরুটা পড়ে নস্টালজিক হয়ে পড়লাম। তবে আমাদের রুমে ২টা টেবিল ছিল , একটা জানালার ধারে আরেকটা তার পাশে। জানালার ধারের টেবিল নিয়ে আমরা রীতিমত মারামারি করতাম :-*

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:২১

সায়েম মুন বলেছেন: বাস্তবে আমরাও পিঠাপিঠি ভাইবোন ছিলাম। অনেক মারামারি করতাম। দিনগুলো অনেক সুখের ছিল। হায়রে আমার শৈশব!

থ্যাঙ্কস ভিয়েনাস। সুস্থ ও সুন্দর জীবনা কামনা করছি। :)

১০| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৪৬

রেজোওয়ানা বলেছেন: স্মৃতিকথা?

বেশ লাগছিল পড়তে!
আমার বাবার বাড়িতে ড্রেসিং টেবিলে একটা শালিখ পাখি রোজ এসে খুব অবাক হয় ঘাড় বাকিয়ে তাকিয়ে থাকতো, অনেক দিন আসতো পাখিটা, টানা দু'বছর হবে। এরপর এক সময় দেখি আর আসে না.....

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:২৫

সায়েম মুন বলেছেন: এখানে স্মৃতিকথা সামান্য ঢুকে পড়েছে বৈকি। গল্প লিখতে কত মিথ্যে বলতে হয়। #:-S

শালিক তো চড়ুইয়ের তুলনায় মস্ত বড়। নিশ্চয়ই অনেক মজার একটা বিষয় ছিল। শালিকটা রোজরোজ এসে সেজেগুজে যেত। ব্যাপারটা ভাবলেই হাসি পাচ্ছে...

১১| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:৪৬

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন !

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:২৫

সায়েম মুন বলেছেন: ধন্যবাদ অভি। শুভকামনা নিরন্তর।

১২| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৫৮

অনাহূত বলেছেন: "ললিতা আপুর আয়না" বেশ লেগেছে পড়তে।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:১৭

সায়েম মুন বলেছেন: ধন্যবাদ অনাহূত। শুভবিকেল।

১৩| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:১৮

সকাল রয় বলেছেন:

কষ্ট সহ্য হয়না

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৩

সায়েম মুন বলেছেন: কষ্ট সহ্য না হলেও দিনের পর দিন সহ্য করে যেতে হয়। /:)

১৪| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:২৩

বোকামন বলেছেন:

মনুষ্য জন্ম হচ্ছে একটা বৃন্ত থেকে ফুল ফোটা। জীবন ভর সৌরভ ছড়ানো। একটা সময় মৃত্যু রুপে ঝরে যাওয়া। পৃথিবীর সব ফুল সবাই দেখে না।

উপলব্ধিতে অনেক ভালোলাগা !

[কবি, আপনি গল্পও দারুণ লিখেন]
“+”

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৮

সায়েম মুন বলেছেন: লেখার চেষ্ঠা করি বোকামন। আপনার ভাললাগা জেনে খুব ভাল লাগলো। অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো।

১৫| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৮

দিকভ্রান্ত*পথিক বলেছেন: আপনি যেখানেই হাত দেন সোনা ছড়ায় এটা মানতেই হবে! এতো ভালো কবিতা লিখেন আবার দারুন গল্পও!

অনেক কৃতজ্ঞতা সাথে শুভকামনা ও প্লাস!

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩০

সায়েম মুন বলেছেন: লেখার চেষ্ঠা চালাচ্ছি পথিক। আপনার ভাললাগায় অনেক ভাল লাগলো। শুভকামনা সব সময়।

১৬| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:০৬

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভালো লেগেছে গল্প। বিশেষ করে শুরুতে লেখার গতি দারুণ চঞ্চল ছিল।

প্লাস।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:৩৬

সায়েম মুন বলেছেন: থ্যাঙ্কস প্রোফেসর। আপনার পাঠে মুগ্ধতা। আন্তরিক শুভকামনা রইলো।

১৭| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:১৫

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
স্মৃতিকথা আর গল্প দূর্দান্ত।
আপনার গল্প লেখার হাত ও দারুন।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:৩৭

সায়েম মুন বলেছেন: প্রচেষ্ঠা ভাললাগে জেনে অনেক আনন্দিত। আশা রাখি ভাল আছেন। শুভকামনা নিরন্তর।

১৮| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৪২

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

কবিতায় মুগ্ধ হতাম এখন গল্পে মুগ্ধ হলাম।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:৩৮

সায়েম মুন বলেছেন: আপনার মুগ্ধতা অনুপ্রাণিত করবে। শুভকামনা অনেক।

১৯| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:৫৯

আম্মানসুরা বলেছেন: ভালো লেগেছে।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:০৯

সায়েম মুন বলেছেন: থ্যাংকস আম্মানসুরা। শুভকামনা রইলো।

২০| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:২৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: কিন্তু শুধুমাত্র ঠকঠক শব্দ কানে লোহাপেটা শব্দের ন্যায় লাগলো

-- কিন্তু শুধুমাত্র ঠকঠক শব্দ কানে লোহাপেটা শব্দের মতো লাগলো

" মতো " শব্দটা আপনার গল্পের ভাষার সাথে বেশি সামঞ্জস্য লাগছে আমার কাছে। এরকম আরও দ্দুই একটা লাইন দেখলাম।

অধ্যাবসায় > অধ্যবসায়
প্রচেষ্ঠা > প্রচেষ্টা
আরও কয়েক টা আছে।

আপনার গল্পে কিছু শব্দ দেখলাম যা আসলে গল্পের ফ্লো'র সাথে খাপ খাচ্ছিল না এমন লাগছিল। মুষ্টি, নচেৎ, সম্যক এরকম আছে আরও কিছু কিছু শব্দ। একাডেমীক্যালি , টিউশনি এরকম ইংরেজি শব্দ যদি আসতে পারে সেখানে মুষ্টি, নচেৎ, সম্যক এর মতো শব্দের জায়গায় হয়তো নাহলে, হাতের মুঠ এরকম আরেকটু সহজ, অভ্যস্ত শব্দ ব্যবহার করতে পারতেন।

গল্পটা মূলত স্মৃতিচারণমূলক ললিতা আপুকে ঘিরে। তবে গল্পের নাম দেখে ভেবেছিলাম আয়না বিষয়ক কিছু হয়তো আছে ললিতা আপুর জীবনে কিংবা অন্য কিছু।

গল্প মোটামুটি লেগেছে। অনেক বেশি বলে ফেললে দুঃখিত ভাইয়া।
শুভকামনা আপনার জন্য।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:১৫

সায়েম মুন বলেছেন: মতোর চেয়ে ন্যায় শব্দটা আমি বেশী ব্যবহার করি। একটা আসক্তি আছে ন্যায় শব্দতে।
আপনি যে ফ্লো'র কথা বললেন সেটা বুঝতে পেরেছি। পরবর্তীতে গল্প লেখার সময় মনে থাকবে।
টাইপোগুলো কালকে সময় করে ঠিক করে নেব।
গল্পটার প্রথম অংকটা এক বছরেরও বেশী আগে লেখা। ইদানীং কোন গল্প প্লট মাথায় না থাকায় ওটার উপর কাজ করেছি। একটা গান দেখার পর ললিতা নামটা মাথায় আসে। সেই নামটা নিয়েই গল্পের শিরোনামটা দেয়া। শেষ পর্যন্ত নামটা আর পরিবর্তন করা হয়নি।

মোটামুটিতে অনেক খুশী। পরবর্তীতে লিখতে গেলে কিছুটা ভাল করার প্রচেষ্টা থাকবে।
এরকম ডিইল কমেন্ট সংশোধনের পার্ফেক। সো ডোন্ট ওরি। আপনার কমেন্ট ভাল লেগেছে। এজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৫৯

সায়েম মুন বলেছেন: *সংশোধনের জন্য পার্ফেক্ট।

২১| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৫২

জুন বলেছেন: মুন জানো আজ বেশ কিছু দিন হলো তোমার ভাইয়ার অফিসে এক চড়ুই পাখি আটকে আছে। তার এক কলিগ প্রতিদিন যাবার সময় বিস্কিট গুড়ো করে আর পানি দিয়ে যায় প্লেটে। শুনে বললাম বের করে দাও ওকে বল্লো কি ভাবে? সারা অফিস সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশন্ড এয়ার টাইট। বল্লাম ধরে না হয় বল্লো তা সম্ভব নয়। করুন মৃত্যুর প্রতীক্ষায় পাখি। তোমার চড়ুই খোলা বারান্দায় চলে গেছে দেখে ভালোলাগলো মুন।
আয়না আবিস্কারের আগে কিন্ত গ্রীক মিথ চরিত্র অসম্ভব হ্যান্ডসাম নার্সিসাস নদীর পানিতে তার চেহারা দেখে এমন মুগ্ধ হয়েছিল যে সেখান থেকে আর নড়তে পারে নি। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
এত কথার অবতারণা কারন গল্পের শেষটা বড্ড করুন। আমি তোমাকে বেশ কিছুদিন হলো গল্প লেখার জন্য অনুরোধ করেছি মনে আছে কি ?
+

১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:১৮

সায়েম মুন বলেছেন: চড়ুইটার কথা ভেবে খারাপ লাগতেছে আপু। আমি বোধয় পাখি অন্তঃপ্রাণ। জীবনের অনেকটা বছর গ্রামে ছিলাম। অনেক পাখির সাথেই পরিচয়। তাদের প্রতি আলাদা একটা সফটকর্ণার আছে। কালকে পথে দেখলাম একটা শালিকের বাচ্চা বাসা থেকে পড়ে গেছে। ইচ্ছে হচ্ছিল বাচ্চাটাকে গাছে তুলে দেই। কিন্তু রাস্তার পাশে বিশাল এক দেয়াল, গাছও অনেক লম্বা। তাই উপায়হীন!

নার্সিসাসের নাম শুনেছি। গল্পটা জানা নেই আপু।

আপনার কথা মনে আছে। এজন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা। আশা করি এরপরও উৎসাহ দিয়ে যাবেন।

এটাতো তেমন ভাল লিখতে পারলাম না। পরবর্তীতে ভাল মানের গল্প লিখতে পারলে আপনার নামে উৎসর্গ করবো। :D

২২| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:০৩

বৃতি বলেছেন: গল্পটা বেশ ভালো লাগলো- পুরনো দিনের স্মৃতি জাগানিয়া কিছু সুন্দর ছবি যেন ।
সদ্য জন্মানো ফুলের জন্য কি নাম ঠিক করে রেখেছেন জানার আগ্রহ ছিল ভাইয়া । আপনার গল্প তেমন পড়া হয়নি, বেশ স্বচ্ছন্দ লিখা আপনার । +++

১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:৩৯

সায়েম মুন বলেছেন: গল্পের শিরোনাম থেকে নামটা বলা যেতে পারে। ধরে নিন আয়না। :) আশা রাখি পরবর্তী গল্পে আপনাকে দেখা যাবে। ভাল থাকুন সব সময়।

২৩| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কবি সুন্দর লিখেছেন। ভাল লেগেছে। গল্পটি আগেই পড়েছি।কমেন্ট ও করেছিলম বাট টাইমিং হয়নাই বুঝতে পেড়েছেন।নেট ক্রাইসিস।

১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:১৪

সায়েম মুন বলেছেন: বুঝেছি কবি। আপনার ব্যস্ততার ফাঁকে একটি কমেন্ট আমাকে উৎসাহ দিবে।

আপনাকে থ্যাঙ্কু দিয়া ছোট করবো না অসংখ্য ধন্যবাদ দিলাম। #:-S

২৪| ২১ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:১১

আরজু পনি বলেছেন:

নিজের কিছু আর গল্পের খাতিরে কিছু মিলে অনেক সুন্দর স্মৃতিকথামুলক গল্প ।

বেণীগুলি চোখের সামনে দুলছে যেন !

২১ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:২০

সায়েম মুন বলেছেন: এই গল্পে নিজের বলতে ০.১ পার্সেন্ট স্মৃতি থাকতে পারে। #:-S
ব্যস্ততার ভিড়ে কষ্ট করে গল্প পাঠের জন্য অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা সব সময়।

২৫| ২১ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:৪২

সমুদ্র কন্যা বলেছেন: ছোটবেলায় আমরা দুই বোন এক টেবিলে পড়তে বসতাম আর পড়ার চেয়ে তখন গল্পই বেশি হতো। বিশেষ করে আমি, কত কথা যে জমে থাকতো আমার পেটে! আপা এমন ভান করতো সব শুনছে, আসলে ও কিছুই শুনতো না, নিজের মত পড়া শেষ করতো। তারপর রাত হলে দেখা যেতো আমার কিছুই পড়া শেষ হয় নি।

জন্ম-মৃত্যু আর স্মৃতিকথা মিলে গল্পটি খুব ভাল লাগল।

২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৩৯

সায়েম মুন বলেছেন: হাহাহা! বক্তা যখন বেজায় ছোট বড়দের তো শুনতেই হবে। তবে সেই শোনা আর না শোনার মধ্যে কোন ফারাক নেই। বড় হয়ে আপনি কম কথা বলা শুরু করেছেন বোধয়। #:-S

থ্যাঙ্কস ডটার অব দি সি।

২৬| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:০৭

শাহরিয়ার রিয়াদ বলেছেন:
ভাইবোনের সম্পর্ক অন্যরকম কিছু একটা। আমরা সময়ের আপেক্ষিকতায় বয়সী হয়ে পড়ি কিন্তু ভাইবোনের সম্পর্কের বয়স বাড়ে না। অবিরাম সুন্দর।

অনেক সুন্দর লেখা।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৪৩

সায়েম মুন বলেছেন: সত্যি তাই। ভাই বোনের স্বর্গীয় সম্পর্ক কখনো পুরনো হওয়ার মত নয়। ধন্যবাদ রিয়াদ। শুভকামনা।

২৭| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৯

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: বাসে ফিরতে ফিরতে মনে হয়, জন্ম এবং মৃত্যু দুটো সময়েই মানুষ ছোট্ট অবুঝ শিশু হয়ে যায়। সে জন্মের সময় হাসতে হাসতে, সবাইকে হাসাতে হাসাতে বের হয় একটা বিস্ময়কর গহবর থেকে। মৃত্যুর সময় হাসতে হাসতে, সবাইকে কাঁদাতে কাঁদাতে সেই নিকষ কালো গহবরে প্রবেশ করে[/sb
- হাল্কা খুনসুটি থেকে কঠিন কথা । ভাল লাগল গল্প । ভাল থাকুন ।।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২৪

সায়েম মুন বলেছেন: ধন্যবাদ মাহমুদ। আপনার পাঠে খুব ভাল লাগলো। শুভকামনা।

২৮| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৮

রিমঝিম বর্ষা বলেছেন:

হ্যালো দোস্ত B-))

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১০

সায়েম মুন বলেছেন: হ্যালো মাইক্রোফোন টেস্টিং।

২৯| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৯

রিমঝিম বর্ষা বলেছেন:

জুন আপা...........চড়ুই-টা কি বের হইছে তোমার জামাই-এর অফিস থেকে?? আপডেট দাও...........জানতে ইচ্ছে করতেছে।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৪

সায়েম মুন বলেছেন: জুন আপু কি আর এই পোস্টে আসবে। ফেবুতে জিজ্ঞেস করো।

৩০| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪০

রিমঝিম বর্ষা বলেছেন:

সামু (সায়েম মুন) দোস্ত.............গল্প পড়তে শুরু করছিলাম। বাট আগায়তেছেনা। পরে পড়ুমনে। B-)

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৯

সায়েম মুন বলেছেন: আমার নাম তো শুধু সামু। এভাবে বললা ক্যানো। :P
পরবর্তীতে স্পিড খেয়ে এসে পড়বা। ক্যামন লাগলো শীঘ্রই জানাবা। :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.