নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কখনো নিজের নাম লুকোই না। আকাইমা শব্দ দিয়ে বানানো ছন্ম নাম আমার পছন্দ নয়। মা-বাবা\'র দেয়া নাম দিয়েই প্রোফাইল খুলেছি।

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন

আমি কেউ না।একদা পথ শিশু ছিলাম। বড় হয়ে এখন পথ মানব হয়েছি। বাবা এক দিন স্বপ্ন দেখানোর সুরে বলেছিলেনঃ দেখিস, এক দিন আমাদেরও....! আমার দেখা হয়নি কিছুই । এখনো অপেক্ষায় আছি কিছু একটা হবো, কিছু একটা দেখবো।

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অধ্যাপক ডঃ মুহাম্মদ হোসেনঃ আমাদের ভিসি স্যার **********************************

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

ঢাকা জেলার দোহার উপজেলা সদরের জয়পাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কোন রকমে টেনেটুনে এসএসসি ও ঢাকার একটি অখ্যাত কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর আমি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ- এ হই এবং সেখান থেকে গ্র্যাজুয়েট ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রী অর্জন করেছি।


সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জন জনপ্রিয় শিক্ষক ছিলেন অধ্যাপক ডঃ মুহাম্মদ হোসেন। তিনি পড়াতেন প্রাণ রসায়ন।আমাদের কোর্সে সম্ভবত ২০০ নম্বরের পড়াশোনা ছিল। অতি কাঠখোট্টা একটি সাবজেক্ট। অথচ এই সাবজেক্ট পড়িয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের মাঝে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন।



(আমাদের ভিসি স্যার অধ্যাপক ডঃ মুহাম্মদ হোসেন। উপাচার্য ( ১৪/১১/১৯৯৬ - ০৪/০২/২০০০) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ)


আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের মূল সময়টাতে উপাচার্য ছিলেন প্রাণ রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ডঃ মুহাম্মদ হোসেন। আমার দেখা শিক্ষকদের মধ্যে তিনি ছিলেন অসাধারণ এক জন মানুষ। এক জন আদর্শ শিক্ষক। এক জন সফল উপাচার্য। এক জন দক্ষ প্রশাসক। সব কিছু ছাপিয়ে তিনি ছিলেন আপাদমস্তক এক জন আদর্শ মানুষ। তিনি আমার সরাসরি শিক্ষক ছিলেন না। আমার বায়োকেমেস্ট্রি ক্লাস নিতে অধ্যাপক ডঃ মাসুদ রেজা স্যার। তবে আমার চূড়ান্ত পরীক্ষায় তিনি ব্যবহারিক পরীক্ষার বহিঃপরীক্ষক ছিলেন।


সেই হিসেবে মৌখিক পরীক্ষার ১০ নম্বরের জন্য তাঁর সাথে মুখোমুখি লড়াইয়ে নামতে হয়েছিল। মৌখিক পরীক্ষায় সৌভাগ্যক্রমে আমাকে যে সব প্রশ্ন করা হয় তার সবগুলোই আমি সৌভাগ্যক্রমে পেরে যাই। বায়োকেমেস্ট্রির মতো জটিল সাবজেক্টে ভিসি স্যার যে আমাকে খুব সহজে উৎরে যেতে দিবেন এটা আমার কল্পনারও অতীত ছিল।
প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি খুবই খুশী হয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ এবার বল্ ফার্স্ট ক্লাশ থাকবে তো? এই প্রশ্নেই আমি ধরা খেয়ে গেলাম। আমার একাডেমিক আমলনামা খুব একটা সুন্দর ছিল না। ফার্স্ট
ক্লাস আমার কাছে ছিলঃ হনুজ্ দিল্লী দুর অস্ত...।

সেই যাই হোক। ১৯৯৬ সালের ৪ঠা নভেম্বর অধ্যাপক ডঃ মুহাম্মদ হোসেন স্যার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্বব্যিালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত হন। উল্লেখ করা যেত পারে যে, তাঁর দায়িত্ব নেয়ার সময় তাঁর পূর্বসূরী উপাচায় ডঃ শাহ মোহাম্মদ ফারুক ক্যাম্পাসে আসেন নাই। সেই প্রথম আগের উপাচার্য মহোয়ের উপস্থিতি ছাড়াই নতুন উপাচার্য দায়িত্ব নেন।
দায়িত্ব নিয়েই তিনি অনেকগুলো কাজ করেন। দীর্ঘদিন পরে বাকসু নির্বাচন দেন। সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াজগত চাঙা হয়ে উঠে। ক্যাম্পাস আবার প্রাণ ফিরে পায়।


ড.মুহাম্মদ হোসেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের মাহমুদাবাদ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মৌলভি এমদাদুল হক আর মা হাজেরা খাতুন। ১৯৫৮ ও ৬০ সালে ফ্যাকাল্টি স্কলারশিপ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বিএসসি ও প্রাণ-রসায়নে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬১ সালে টেক্সাস এঅ্যান্ডএম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট কর্তৃক সেরা প্রবাসী ছাত্রনেতৃত্বের জন্য পুরস্কারে ভূষিত হন।

ড. মুহাম্মদ হোসেন ১৯৬২ সালের ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার তিন মাস পরে প্রাণ-রসায়নের প্রথম শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-রসায়ন বিভাগ ছিল তাঁর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ বিভাগের উন্নয়ন ও বিকাশে তাঁর অবদান ছিল অপরিসীম। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-রসায়ন বিভাগের জনক হিসেবে পরিচয় দিতে তিনি ভালোবাসতেন। ১৯৬৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি একই বিভাগে সহকারী অধ্যাপক, ১৯৭০ সালের ২৭ জুন সহযোগী অধ্যাপক এবং ১৯৭৭ সালের ২১ মে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৯৬ সালের ১৪ নভেম্বর উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেন।


উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে তাঁর অনেক স্বপ্ন ছিল। অধ্যাপক মুহাম্মদ হোসেনের সব চেয়ে বড় পরিচয় ছিল, তিনি এক জন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক। শিক্ষক হিসেবে তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে তুমুল জনপ্রিয় ছিলেন। একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে, একজন সফল শিক্ষাপ্রশাসক হিসেবে, সর্বোপরি একজন সৎ, ধার্মিক ও সাহসী মানুষ হিসেবে তিনি দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। ২০০০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সড়কপথে সীতাকুণ্ডে ফেরার সময় গাড়ি দুর্ঘটনায় তিনি মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারান।


আজ ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪। আমাদের ভিসি স্যারের ২৪ - তম মহা প্রয়াণ দিবস। ক্যাম্পাসের সেই শোকাবহ দিনটিতে অভিভাবকহীন বিশ্বব্যিালয়ে নেমে এসেছিল শোকের কালো ছায়া।


মাননীয় ভিসি স্যার, আমরা আপনার ছাত্র-ছাত্রীরা আপনাকে আজো ভুলিনি। দ্বিতীয় জগতে আপনি অনেক অনেক ভালো থাকুন।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৮

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: উপারে ভালো থাকুক ভিসি স্যার...

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


উনি আপনাদের চট্টগ্রামের গর্ব।

২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৭

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: নিঃসন্দেহে...

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


ভালো থাকবেন সব সময় ।
জীবন হোক আরো সুন্দর।।

৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:৪৫

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: জানলাম।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:২০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


তিনি আপনাদের এলাকার লোক ছিলেন।

৪| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:২৫

সোনাগাজী বলেছেন:



এক গুণী শিক্ষক ছিলেন।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৩১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


মারা যাবার আগের সপ্তাহে আমাকে উনার বাসায় যেতে বলেছিলেন।
সেটা আর হয়নি।

৫| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৫১

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: আপনি দোহারের লোক জানা ছিলো না। এখনতো দেখছি আপনি আমার দেশের মানুষ। ক'দিন আগেই দোহার গিয়েছিলাম। বাবার কবর জিয়ারত করার জন্য। স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা থাকছে। ধন্যবাদ।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


তবে আমি জানতাম।
অনেক আগে আপনার একটি পোস্টে আপনার সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল।
আমি আমেরিকা থাকেন এটা তখন বলেছিলেন।
আমি দোহারের মাটির খুব কাছের মানুষ।
এখনো একা একা ঘুরে বেড়ায় দোহারের মাঠে-ঘাটে।
আমার ভালো লাগে।
পৃথিবীর সেরা জায়গা এটা।

৬| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৩৭

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই এই মহান শিক্ষককে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্র ছাত্রীদের সাথে ইন্টারয়্যাক্ট করতে পারার মতন শিক্ষকের বড় অভাব

আমার বুটেক্স লাইফে আমি এমন দুজন শিক্ষক পেয়েছিলাম একজন মাজেদ স্যার। যিনি আমার লেখালেখিতেও অনেক উৎসাহ প্রদান করেন। আরেকজন দর্পণ স্যার। তার ক্লাসে পড়া বোঝাবার পর, মনে হত বিষয়টা ভীষণ সহজ। তার পড়ানো আমার চাকরি জীবনেও অনেক হেল্প করেছে।

আমি নিজেও এখন পড়ানোর সাথে জড়িত, চেষ্টা করি ছাত্র ছাত্রীদের সাথে যথাসম্ভব বন্ধুসুলভ থাকার।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৪৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

আপনি সম্ভবত শিক্ষকতা করছেন। খুবই মহান পেশা।
যদিও এটাকে মহান হিসাবে ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।

আপনার ক্যাম্পাস তো খুবই ছোট।
যে যাই হোক আপনার সুন্দর জীবন কামনা করি।
ভালো থাকবেন সব সময়।

৭| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি স্যারকে ভুলে যাননি। স্যারও আপনাকে ভুলেনি। অথচ দুজনেরই ভুলে যাওয়া স্বাভাবিক ছিলো। আপনি দীর্ঘদিন প্রবাসী ছিলেন। এমনকি ঢাকা এসেও আপনি দোহার যাননি।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:



পোস্টটা না পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনি না পড়েই মন্তব্য করেছেন।

৮| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:০২

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: আপনার ক্যাম্পাস তো খুবই ছোট।
একদম ভাই। আমি আমার ভার্সিটি জীবনের প্রথম দুই বছর এই হতাশা হতে বের হতে পারি নাই। সারাদিন ঢাবিতে গিয়ে বসে থাকতাম। ঢাবিতে চান্স পেয়েও ভর্তি না হওয়ার আফসোস আমাকে দুই তিন বছর তাড়া করে বেরিয়েছে।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:২২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

আসলেই বিশ্ববিদ্যালয় একটা বিরাট ও ব্যাপক ধারণা ।
বিশ্ববিদ্যালয় হবে সমুদ্রের মতো বিশাল
আমি তো পোস্টে মাদ্রাসার কোন কথা বলি নাই ।
আমি বলেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা।
বিশ্ববিদ্যালয় আর মাদ্রাসা এক নহে ।
একটা হচ্ছে সংকীর্ণ ।
আরেকটা হচ্ছে উদার ও ব্যাপকভাবে বিস্তারিতভাবে প্রসারিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.