নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রতি যুগে একদল সত্যের অনুসারী থাকে। আমি সে দলে আছি।

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া)

সকল মানুষের মধ্যে কিছু কিছু ভুলত্রুটি আছে যা মানুষ নিজে বুঝতে পারে না, সেই ভুলগুলো ধরিয়ে দেয়া এই অধমের দায়িত্ব

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) › বিস্তারিত পোস্টঃ

****গুজবে কান দিবেন না***

২৫ শে মে, ২০১৬ সকাল ১০:১৯



‘হাঁস পা’ খোঁজেন। দেড়শ গ্রাম হলে বিক্রি করা যাবে ‘হাজার কোটি’ টাকা। শুধু ‘পকেট মানিই’ দেবে দুইশ কোটি টাকা। এটা হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত। দেশের যেখানেই থাকুক না কেন সেখানই ‘বায়ার’ যাবে। হেলিকপ্টারে গিয়ে নিয়ে আসা হবে।

সম্ববত 2014 সালের শেষের দিকে দেশের বাড়িতে গিয়ে এরকম একটি আজব প্রাণীর কথা শুনে ছিলাম। তারা একটি প্রাণির কথা বলছিলেন।
প্রাণিটির নাম ‘তক্ষক’, তবে গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নের বালুচর বাজার বাসীর ভাষ্যমতে সেটির নাম ছিল ‘টক্কা’। সেই সময় বালুচর বাজারে এ নিয়ে বেস মুখ রোচক গল্প শুনে ছিলাম। কিন্তু তার বেশীর ভাগই ভুয়া!!

এই ভুয়া গুবব কিন্তু এক দিনে শুরু হয়নি সেই-
সেই ১৬, ১৭ ও ১৮শ সালের পয়সা বা মুদ্রা অনুসন্ধান। পাশাপাশি ছিল সেই ব্রিটিশ নাকি পাকিস্তান আমলের বোটল যেগুলোর তলের নিচের অংশ ভেতরে উপরের দিকে সুড়ঙ্গ। এগুলো নাকি লাখ লাখ টাকা দামের। আর এ দামের কারণে লোভের বশে অনেকে হাজার, লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন এগুলোর খোঁজে। কিন্তু ঠিকমতো লক্ষিত বস্তু খুঁজে না পাওয়ায় অনেকের পথে বসার অবস্থা হয়েছে বলেও শোনা গেছে। পয়সাগুলোর মধ্যে নাকি আকর্ষণ ছিল বিশেষ করে ১৬১৬ সনের, ১৭১৭ সনের ১৮১৮ সনের ইত্যাদি। এর মধ্যে এগুলো আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষায় টিকতেও হয়। পরীক্ষায় না টিকলে সেগুলো চলে না বলেও তথ্য পাওয়া যায়।
এসবের পাশাপাশি আরও ছিল বা এখনও হয়তো আছে, যেমন- থান্ডার বা বজ্রপাতের পাথর, কালো বিড়াল যার সম্পূর্ণ অঙ্গ-দেহাংশ কালো, জমজ কলার ছড়া বা ছড়ি ইত্যাদি। এর পরপরই এসেছে তক্ষক ব্যবসা। যা এখনও চলমান বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

দেখতে গুই সাপের বাচ্চার মতো। গায়ে লাল সিঁদুরের ও সাদা ফোঁটার মতো রয়েছে। আকারে ছোট। তবে ছোট হলেও অনেক বয়সী। এই প্রাণিটি চড়ামূল্যে বিক্রি হয়। তাই অনেকেই এটির সন্ধানে ঘুরে ঘুরে নিঃস্ব হতে বসেছেন। তবু তারা হতাশ নন; খুঁজেই চলছেন। যেখানে সন্ধান পাচ্ছেন, সেখানেই ছুটে যাচ্ছেন।

তাদের মতে, এই প্রাণির দুই ধরনের পা রয়েছে। কোনটার ‘মুরগী পা’ আর কোনটার ‘হাঁস পা’। ‘হাঁস পা’গুলোর দাম খুব বেশি। সর্বনি¤œ সাড়ে ৯ ইঞ্চি লম্বা ও ৫২ গ্রাম ওজনের ‘হাস পা’ চলে। এর কম ওজন বা লম্বায় সাড়ে ৯ ইঞ্চির ছোট হলে চলবে না। ইঞ্চির মাপ ধরা হয় চোখ থেকে লেজের শেষ পর্যন্ত। ‘মুরগি পা’গুলো ২৫৫ গ্রাম ওজন ও সাড়ে ১৫ ইঞ্চি লম্বা হতে হবে। এ ছাড়া একটা আছে ‘বার্মিজ’। ‘বার্মিজটা’ ওজন সাড়ে তিনশ গ্রামের নিচে হলে বিক্রির অনুপযুক্ত।

এটি সরিসৃপ জাতীয় প্রাণি। এরা নিশাচর। গাছের গর্তে বাস করে। বিভিন্ন পোকামাকড়, পাখির ডিম খেয়ে এরা বেঁচে থাকে।
‘সাউথ ইস্ট এশিয়ায় অনেকেই পোষা প্রাণির মতো তক্ষক লালন করে বলে শোনা যায়। তারা মনে করেন, এই প্রাণি বাড়িতে থাকলে তাদের সৌভাগ্য বয়ে আনে। নিঃসন্তানদের সন্তানাদি হয়।’


বাংলাদেশ থেকে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত কিছু কিছু দ্বীপাঞ্চলে এই প্রাণি রয়েছে।
উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, ভারত ও বাংলাদেশসহ মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, লাওস, কাম্পুচিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন ও ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ৬০০ প্রজাতির তক্ষকের বাস।

বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে জানা গেছে, পূর্ব এশীয় দেশগুলোতে এই প্রাণি চড়ামূল্যে বিক্রি হয়। তক্ষকের ওষুধি গুণ রয়েছে বলে শোনা যায়। কোনো কোনো দেশে এ দিয়ে ওষুধ তৈরি করে থাকতে পারে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এই প্রাণি বিক্রির ক্ষেত্রে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দর-দাম হয় দুইভাবে।
** একটা থোক।
*** আরেকটা স্ক্যান করে প্রাণির শরীরে থাকা ‘দানা’ হিসেব করে।
তবে বেশির ভাগ বিক্রেতা স্ক্যানের বিপক্ষে। তারা থোক দরদাম করেন।
তক্ষক দিয়ে কী করা হয়- জানতে চাইলে কেউ বলেন, প্রাণিটা পুরো গলিয়ে ক্যান্সারসহ দূরারোগ্য ব্যাধির ওষুধ তৈরি করা হয়। এই প্রাণি কাউকে কামড় দেওয়ার পর তার ঘাঁ শুকিয়ে গেলে ওই ব্যক্তির শরীরে কোনো ধরনের রোগ-জীবাণু থাকবে না। আবার কেউ কেউ বলেন, এটার শরীরে থাকা দানা এক করে ড্রোন তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু কেউ নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি।
এই প্রাণির সন্ধানে ঘোরা মানুষদের সঙ্গে আরেক শ্রেণির মানুষ প্রতারণা করছেন। ঢাকা থেকে গিয়ে প্রতারণার শিকারও হন তারা।

অনেকে অধিক লাভবান হওয়ার জন্য এর পিছনে অনেক টাকা খরচ করেছেন। অনেক সময় একটা দেখিয়ে বাক্সে দেওয়ার সময় আরেকটা দিয়ে দেয়। বাসায় এসে দেখেন যেটা দিয়েছে তা অনেক ছোট।

‘হাঁস পা’য়ের দাম বেশি শুনে কেউ কেউ আবার সার্জারি করে ‘হাঁস পা’ লাগিয়ে নেয়। বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার জিহির নামের এক ব্যক্তি সার্জারিতে পারদর্শী। তিনি বাদুরের ডানা দিয়ে সার্জারি করেন। তাই প্রতারণার জন্য অনেকে তার ধরনা দেন। তবে বায়ারের ক্যামিস্টরাও সতর্ক। তারা এটা ধরে ফেলতে পারেন।
সারা দেশেই এখন এই প্রাণিটি বেচাকেনার সিন্ডিকেট আছে। ঢাকা থেকে যারা কিনতে চান, তারা প্রথমে জেলা শহরের সিন্ডিকেটের কাছে প্রাণির ছবি চান। পরে সদ্য করা ভিডিও। এটা কোনো পত্রিকার উপরে ডেটলাইনের পাশে রেখে করতে হয়। এই ভিডিও বিশ্নেষণ করার পর ঢাকা থেকে লোক যায়।

আপনার কি এখন পর্যন্ত দুই-একটা বিক্রি করতে পেরেছেন- এমন প্রশ্নে অনেকে বলেন, কিনতেও পারিনি, বিক্রিও করতে পারিনি। মূলত এই ব্যবসায় যারা জড়িত তারা কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না। এ কারণেই কেনাবেচা হয় না। এক সময় হয় প্রশাসনের হাতে ধরা পড়ে, না হয় না খেতে পেরে প্রাণিটি মারা যায়।

জানা যায়, এ পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রশাসনের হাতে এই তক্ষকসহ অনেকে ধরা পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রাণিটির মূল্য অনেক।

পরিশেষে এই নিরীহ প্রাণীটি রক্ষায় আমাদের সবার এগিয়ে আসা উচিত এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাচার রোধে আরো কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।



মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: এ রকমের গুজবের কথা আমিও শুনেছিলাম বছর দুই আগে। এটা বিক্রী করে অনেক টাকা পেয়েছেন, এমন কাউকে কি আপনি চেনেন বা দেখেছেন?

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৯

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: বিক্রি করে টাকা ইনকাম করেছে এ ধরণের কাউকে আমি দেখেনি। কিন্তু একজন কে দেখেছি যিনি আট হাজার টাকা দিয়ে ‘হাঁস পা’ কিনেছেন কয়েক কোটি টাকা বিক্রি করবেন, এই লোভে।

আমার মনে হয় বেচারা সেটি বিক্রি করতে পারেন নি। কারণ সে এখন রাস্তায় ফুচকা বিক্রি করে। কোটি টাকার মালিক হলে ফুটপাতে ফুঁচকা বিক্রি করার কথা না।

মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৫

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: সুন্দর ও সচেতনতামূলক একটা পোস্ট দিয়ে ব্লগে আপনার প্রারম্ভটা দারুন হয়েছে !:)

হ্যাপি ব্লগিং!:)

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৫৩

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই,

শুভ কামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.