নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রতি যুগে একদল সত্যের অনুসারী থাকে। আমি সে দলে আছি।

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া)

সকল মানুষের মধ্যে কিছু কিছু ভুলত্রুটি আছে যা মানুষ নিজে বুঝতে পারে না, সেই ভুলগুলো ধরিয়ে দেয়া এই অধমের দায়িত্ব

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) › বিস্তারিত পোস্টঃ

অ্যাসিড আক্রমণ: জীবন নেওয়া নয়, নষ্ট করা; অতপর অস্পরীরা কাঁদে...

০১ লা জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৪



যদিও আমাদের দেশে এসিড সন্ত্রাস আগের চাইতে তুলনামূলকভাবে অনেক কমে এসেছে কিন্তু এর থেকে এখনও পুরোপুরি মুক্ত হতে পারেনি। সামনের দিকে যে কেউ এর শিকার হবে না তা আমরা নিশ্চিত দিতে বলে দিতে পারি না।
একজন তরুণীকে ঠিক কতটা ‘ভালোবাসলে' তার ‘পিয়ামুখচন্দা' অ্যাসিড মেরে চিরকালের জন্য পুড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করে? মোনা লিসা-কে কতটা ভালোবাসলে, দা ভিঞ্চির চিরন্তন সৃষ্টি নষ্ট করে দেওয়ার ইচ্ছে জাগে?

অ্যাসিড আক্রমণ নিয়ে আমার প্রশ্ন আমাদের কাছে, পুরুষদের কাছে৷ কী চাই আমরা মহিলাদের কাছে, কিভাবে চাই যে, তা না পেলে আমাদের মাথায় খুন চাপে, শয়তান এসে ভর করে?
অন্য মানুষ কিংবা জন্তুকে কষ্ট দেবার, ক্ষেত্রবিশেষে শাস্তি দেবার যতো অমানুষিক, জান্তব প্রক্রিয়া এবং পদ্ধতি থাকতে পারে, মনুষ্য জাতি এতদিনে তার সব ক'টি আবিষ্কার করে ফেলেছে, বলে ধরে নেওয়া যায়৷ কিন্তু যে পরিচিত কিশোরী বা তরুণী প্রতিদিন সপ্রতিভ মুখে পাড়া আলো করে ফুটপাথ ধরে স্কুল, কলেজ কিংবা কাজে যায়; যা-কে আমার-আপনার অনেকদিন ধরেই যেন একটু বেশি ভালো লাগে; যা-কে নিয়ে জীবনে এই প্রথমবার আমার-আপনার মতো ফুটবল-পাগলের মনেও নিঃসঙ্গ, নির্জন দ্বিপ্রহরে কুবো পাখি ডাকে; সেই মেয়েটি শুধু আমার হলো না বলেই...


অ্যাসিড সন্ত্রাস!
ফরিদা
ফরিদার স্বামী ছিলেন ড্রাগ এবং জুয়ায় আসক্ত৷ ঋণের দায়ে একসময় বাড়িটাও বিক্রি করে দেয় নেশাগ্রস্ত লোকটি৷ রেগেমেগে ফরিদা বলেছিলেন, এমন স্বামীর সঙ্গে আর ঘর করবেন না৷ সেই রাতেই হলো সর্বনাশ৷ ঘুমন্ত ফরিদার ওপর অ্যাসিড ঢেলে দরজা বন্ধ করে দিল পাষণ্ড স্বামী৷ যন্ত্রণায় চিৎকার করছিলেন ফরিদা৷ প্রতিবেশীরা এসে দরজা ভেঙে উদ্ধার করে তাঁকে৷

অ্যাসিড আক্রমণ শুধু ঐ মেয়েটির নয়, আমার-আপনার সকলের জীবন বদলে দিচ্ছে, মানুষের প্রকৃতি, তার ভাবনা-চিন্তা, তার চেতনা, তার মধ্যে স্নিগ্ধ, নান্দনিক, মনুষ্যোচিত যা কিছু আছে, তাকে বদলে দিচ্ছে৷ দেখেন না, টেলিভিশনে কোনো
দেখালে আমরা ‘নিরপরাধ' দর্শকরা – কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ভাষায় – জীয়ল গাছের আঠার মতো কষ্ট পাই, মুখ ফিরিয়ে নিই, কিংবা রিমোট টিপে চ্যানেল বদল করি?
কেন করি? বিশেষ করে আমরা পুরুষরা? কিসের ভয় আমাদের? কী থেকে পালানোর চেষ্টা করছি আমরা? বোধহয় এই উপলব্ধি থেকে যে, এ ধরনের ঘটনা ঘটানো তো পাপ বটেই, এমনকি এ ধরনের ঘটনা ঘটতে দেওয়াও পাপ৷ শের শাহ সুরির আমলে গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোডে কোনো চুরিডাকাতি, খুনখারাবি ঘটলেই নিকটস্থ, নিকটতম গাঁয়ের লোকজনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হতো, অপরাধীর নাম ফাঁস করতে কিংবা খেসারত কি জরিমানা দিতে বাধ্য করা হতো৷ একটি মেয়ের উপর অ্যাসিড আক্রমণ সেই ধরনের অপরাধ – আর আমরা সবাই সেই গাঁয়ের লোক, বিশেষ করে আমরা যারা পুরুষ বলে গর্ব বোধ করি৷

ফুলের ওপর অ্যাসিড মেরে দেখতে পারেন – ফুল পুড়ে ছাই হয়ে যাবে, এই যা রক্ষা৷ নয়ত ও পোড়ার দাগ কোনোদিন ঘুচবে না – মেয়েটির মুখেও নয়, আপনার মনেও নয়, যদি এই ঘটনার পর আপনার মন বলে কিছু থাকে৷ যে ধর্মের, যে সম্প্রদায়ের মানুষই আপনি হোন না কেন, এবার থেকে আপনার একমাত্র প্রার্থনা হবে: খোদা বলে যেন কিছু না থাকে; থাকলেও তিনি যেন অন্ধ হন, বধির হন; যেন তিনি কিছু দেখে না থাকেন, শুনে না থাকেন৷
কাজেই ঐ মুখপোড়া মেয়েটির জন্য নয়, আমার প্রার্থনা আমার-আপনার মতো পুরুষদের জন্য: খোদা যেন হাশরের দিন পুরুষ না করে পুন:উত্থান না ঘটান।
পরিশেষে এসিড সন্ত্রাস নির্মূল করতে হলে আমাদের সবাইকে এক যোগে কাজ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো সতর্ক নজরদারি করতে হবে। বিচার ব্যবস্থা আরো আধুনিকায়ন করে এর জন্য যুগোপযুগী আইন প্রনয়ন করতে হবে। তাহলে হয়ত চিরতরে এই সন্ত্রাস স্তব্ধ হলেও হতে পারে।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৭

অপ্‌সরা বলেছেন: এই মানুষগুলো মানুষরুপী জানোয়ারও নয়। তাদেরও অধম!

০১ লা জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৯

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: সালাম,
ঠিক কথা বলেছেন।
‘সহমত’

২| ০১ লা জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৩

বৈশাখের আমরণ নিদাঘ বলেছেন: শারীরিক এবং মানসিক ট্রমা, দুটাই সম্ভবত ভয়াবহ। তবে আশার কথা, এখন আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে এসিড সন্ত্রাস। তবে অন্যের কাজের দায়ে আপনি পুনঃরুত্থানের দিনে যদি বিপরীত লিঙ্গ হয়ে জাগ্রত হওয়ার চিন্তা মাথায় লালন করেন, তাহলে কি সেটা একটূ বেশি বেশিই হয়ে গেল না? অন্য ব্যক্তির দোষটা নিজের ঘাড়ে নিয়ে নেবার মানসিকতা থাকলে বাঁচতে পারবেন না। এতকিছুর পরেও জীবন অনেক সুন্দর। এইখানেও দেখুন, এসিড সাইভারদের মুখে কিন্তু হাসি। তাদের এই হাসিটা সুন্দর না?

০২ রা জুন, ২০১৬ সকাল ৯:০২

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: সালাম,
মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ,

৩| ০১ লা জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫০

বাংলা গান শুনুন বলেছেন: তুমি কি পারনা পারনা ওর কথা মেনে নিতে,সে ওতো তোমার মত মানুষ,কেন তআতাকে তোমার মমতামত হবে মেনে নিতে,তারও অধিকার আছে সেও পারে তোমায় ফিরিয়ে দিতে,তবে কেন তাকে এসিড নামের হিরোশিমায় ঠেলে দিলে,মানুষ নামের অমানুষ হয়ে আদিম যুগে যাও চলে.......

০২ রা জুন, ২০১৬ সকাল ৯:০৪

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: সালাম,
....................।‘সহমত’া

৪| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৫৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: পরিশেষে এসিড সন্ত্রাস নির্মূল করতে হলে আমাদের সবাইকে এক যোগে কাজ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো সতর্ক নজরদারি করতে হবে। বিচার ব্যবস্থা আরো আধুনিকায়ন করে এর জন্য যুগোপযুগী আইন প্রনয়ন করতে হবে। তাহলে হয়ত চিরতরে এই সন্ত্রাস স্তব্ধ হলেও হতে পারে। - একমত। আইন শক্ত করার ফলেই এবং তার দ্রুত প্রয়োগের ফলেই এ অপরাধ আজ অনেকটা কমে গেছে।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৫৬

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: এই সন্ত্রাস বর্তমানে বিলুপ্তি প্রায়। তবে, তত্ত্ব ও প্রযুক্তি সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছে নারীরা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.