নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রতি যুগে একদল সত্যের অনুসারী থাকে। আমি সে দলে আছি।

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া)

সকল মানুষের মধ্যে কিছু কিছু ভুলত্রুটি আছে যা মানুষ নিজে বুঝতে পারে না, সেই ভুলগুলো ধরিয়ে দেয়া এই অধমের দায়িত্ব

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) › বিস্তারিত পোস্টঃ

জুনায়েদ কিংবা বদরুলের মুখোমুখি একদিন (জীবন থেকে নেয়া)।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:১৭




2012 সালে আমি ভবঘুরের মত ঘুরো বেড়াই। একটা মেয়েলি সমস্যার কারণে পরিবারের সাথে বোঝাপোড়ার বড়ই অভাব চলছিল। বাবা আর বড় ভাইয়ের অত্যাধিক শাসনের কারণে জীবন প্রায় অতিষ্ঠ। এত বড় ছেলের উপর বেশী খবরদারি চালাতে গেলে আর যা হয়। একদিন হুট করে বন্ধুদের পরামর্শে কলেজে হোস্টেলে উঠলাম। কিন্তু সে সময় জোতার ফিতা কেনার টাকা উপার্জন করার যোগ্যতা আমার ছিল না। ছোট ভাইয়ের জমানো টাকা আর মা’র পাঠানো অল্প কিছু টাকা দিয়ে কোন রকম চলছিল। কলেজটা ছিল পৌরসভার মধ্যে। তাই ছোট খাটো টিউশনি করা যায়। একটা টিউশনিটা হুট করেই হয়েছিলো। যে ছেলেটাকে পড়াতাম তার নাম সানজিদ। পুরা নাম সানজিদুল ইসলাম। মানে ইসলামের আলোকিত সূর্য। আমি যখন পড়াতাম তখন সে সেভেনে পড়ে। সচেতন বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। খুব প্রেশারে থাকতাম পড়ানোর সময়। ছয় মাস পড়িয়ে আবার হুট করেই ছেড়ে দিয়েছিলাম।

একদিন সানজিদ বেয়াদবি করে আর আমার মেজাজও খারাপ ছিলো। ফলে, সেদিন স্কেল দিয়ে দুইটা বাড়ি দেই। তার ধবধবে চামড়া আধা ইঞ্চি ফুলে রক্ত বের হবার উপক্রম! এ ধরণের মাইর সে সম্ভবত এই প্রথম খেয়ে ছিল।কিছুক্ষণ পরপর ফোঁলা জায়গায়টাতে হাত বুলাচ্ছে। যদিও এটা দেখে আমি নিজেও অনুতপ্ত ছিলাম। আন্টি কষ্ট পেয়েছিলেন। রেগে আমাকে সেদিন আর নাস্তাই দেননি! আমি বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বলেছিলাম, আন্টি আজ তবে যাই। কোন জবাব দেয়নি।

ব্যাপারটা আমার ভেতর অন্যভাবে কাজ করে। অপমানিতবোধ করি। সেদিনই এসএমএস করে দেই আমি আর আসবো না। আসার 4-5 মাসপর আনকেল-আন্টি অনেক বার ফোন করেছিলেন। আমি ধরিনি।

2016 সালের জুলাই মাসে হঠাৎ করে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসলাম। ফেবুতে গ্রামের বাড়িতে আমার ছবি দেখে ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু ফোন করে বলল, তুই পৌর সভায় আস, অনেক দিন পর দু’জনে একসাথে ঘুরে বেড়াব। আমিও চলে গেলাম পৌর সভায়।আমার বাড়ি ছিল উপজেলা সদর থেকে দূরে একে বারে চরাঞ্চলে মেঘনার কোল ঘেঁষে। আর পৌরসভা ছিল পাশ্ববর্তী থানাতে। সেটি ছিল আমাদের এলাকা থেকে অপেক্ষাকৃত উন্নত।

আজকে অনেক দিন পর সানজিদের সাথে দেখা। তার হাতে সিগারেট আর নাকে-মুখে জাহাজের ধোয়া! আশে পাশে গাঁজার স্টিকের গন্ধে মোহন্বিত। হঠাৎ আমাকে দেখে কি করবে না করবে ভেবে না পেয়ে শেষতক সিগারেট সহ (স্টিক) হাত পকেটে ঢুকিয়ে দিলো! আমি বললাম, বাবা এত ঝুকি নিতে হবে না। পকেটে না ঢুকিয়ে নিচে ফেলে দিলেই হবে, আমি মাইন্ড করবো না!

ছেলেটি বোধহয় লজ্জাই পেলো, দ্বিতীয় কোন বাক্যালাপ না করে মাথা নিচু করে চলে গেলো.....। আর মুখে বিড় বিড় করে কি যেন বলল।

এক দিনের টিউশনী কালীন ঘটনা, আনকেল-আন্টি পড়ানো শেষে আমাকে নিয়ে তাদের বসার রুমে বসলেন। খুব গুরুত্বপূর্ণ মিটিং। আমি প্রথমে ভয় পেয়েই গিয়েছলাম, আমার আচরণ কিংবা পড়ানোয় তারা অসন্তুষ্ট কিনা!

আমার বিস্ময়ের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে আন্টি বললেন; বাবা আমার ছেলে তো বড় হচ্ছে, ওর বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হবে। আমরা ইতিমধ্যেই ওকে বাড়তি খাবার দেয়া শুরু করেছি। তোমার কাজ হলো পড়ানোর পাশাপাশি ওকে এসব ব্যাপারে একটু ধারনা দিবা। যাতে করে আমার ছেলে তার শারিরিক পরিবর্তন দেখে ভয় না পেয়ে যায়.....

কথা গুলো শুনে আমার কান দিয়ে গরম বাতাশ বের হচ্ছিলো....গরম বাতাশ!
আমি ভাবছিলাম আমার সময়ের কথা! কি ভয়াবহ ছিলো সে সময়টা..... আজকের বাবা-মা যে এত সচেতন সেটা ভাবতেই ভালো লাগছিলো!

আজকে অবাক হলাম। এত সচেতন বাবা মায়ের সন্তান কিভাবে আস্তে আস্তে খারাপের দিকে চলে যায়.....। আমাকে ঠেলা দিয়ে পাশে থাকা বন্ধুটি বলল, কি ভাবছিস? কিছু না।
ভাবার কিছু নেই তার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল, হয়ত অল্প কিছু দিনের মধ্যে লীগ কিংবা দলে ‘যুব’ তকমা গায়ে বড় কোন পোষ্টে দেখতে পারবি। বর্তমান রাজনীতিতে এদের মূল্য আছে!

আমি ভাবি অন্য কথা। তাহলে কি আমরা পরবর্তী জুনায়েদ কিংবা বদরুল কে দেখতে পাচ্ছি!!! জুনায়েদ কিংবা বদরুল?


মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১১

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:
যদি সঠিক বিচার থাকতো,তাহলে আর এগুলো জন্মাতো নিত না।

২| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:১৯

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এদের সঠিক বিচার করা সম্ভব না। হয়ত ভবিষ্যতে তাকিয়ে থাকতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.