নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রতি যুগে একদল সত্যের অনুসারী থাকে। আমি সে দলে আছি।

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া)

সকল মানুষের মধ্যে কিছু কিছু ভুলত্রুটি আছে যা মানুষ নিজে বুঝতে পারে না, সেই ভুলগুলো ধরিয়ে দেয়া এই অধমের দায়িত্ব

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি চুমু, একজোড়া নূপুর, একটি মেকআপ বক্স এবং আমার স্মৃতি কাতর হওয়া।।

১৮ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৮



ছোটকালে ভয়ানক সব স্বপ্ন দেখে আতঁকে উঠতাম। এজন্য নানাভাই একটা তাবিজ দিয়েছিল। তাবিজ দেয়ার পর এ সমস্যা ভালো হয়ে গিয়েছিল। হয়ত তাবিজের কারণে মানুষিক এবং মনস্তাত্বিকভাবে চাঙ্গা হয়েছিলাম। তারপর সে তাবিজ অনেক বছর আগে খুলে রেখিছি। কিন্তু ঢাকা আসার পর থেকে এ সমস্যা আবার দেখা দিল। মা’কে ফোন করলাম টেবিলের ড্রয়ে নানাজানের দেয়া তাবিজটা খুঁজে পাঠিয়ে দিতে।আমার ড্রয়ার খোলে মা একটি মেকআপ বক্স এবং একজোড়া নূপুর পেয়ে অবাক এবং স্মৃতি কাতর হলেন; আমাকে ফোন করে জানালেন আমি এগুলো কোথা থেকে সংগ্রহ করেছি। আমি শুধু বললাম, নানু বাড়ি থেকে আসার সময় এগুলো সাথে করে নিয়ে এসেছি। তিনি ফোন কেটে দিলেন। হয়ত আবার স্মৃতি হাতরিয়ে বেড়াবেন, আমিও বাল্য স্মৃতির গহব্বরে তলিয়ে গেলাম;

বাল্য কালে ছোট খালা আইরিন কে ছোট মা হিসেবে জানতাম। সাত ভাই বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। নানা বাড়িতে সবার আদরের মধ্যমনি ছিলেন। আমার বয়স যখন দশ বছর তার বয়স তখন সতের। খালা দূরে কোথাও গেলে নানা আমাকে তার বডিগার্ড হিসেবে সাথে দিতেন। তখন আমি বয়সে ছোট হয়েও তার অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করতাম। খালা আমাকে বাজান ছাড়া দ্বিতীয় কোন নামে ডাকেনি। খালার সাজ পোষাকে অভিজাত্যের ছোঁয়া ছিল। সাঁজ এবং চুলের খোপাতে ছিল পরিপাটি। খালার একজোড়া নুপূর ছিল। কিন্তু আমি কোন দিন তাকে পড়তে দেখিনি। হয়ত ছোট কালে পড়তেন। তবে দূরে কোথাও বেড়াতে গেলে মেকাআপ পড়তেন এটা আমি দেখিছি। খালার এ অভিজাত্যের কারণে অন্য মেয়েদের নিকট তা ইর্ষাণীয় মনে হত। সে আমলে খালার জন্য অনেক ছেলে পাগল ছিল। আত্মীয় না হয়েও অনেক ছেলে আমাকে আইসক্রিম, চকলেট কিনে দিত। খালাকে এসম্পর্কে কখনও কিছু বলতাম না। এখন বুঝেছি বেচারাদের পঁয়সা জলে গেছে। এই রোমিও বেচারেরা নানা এবং মামাদের ভয়ে বেশী দূর আগাতে পারতেন না। নানা আমলদার মানুষ ছিলেন। পারিবারিক ধর্মীয় অনুশাসনে ছিলেন কঠোর। তিনি আমাদের সাথে গল্প করার সময় একটা কথা প্রায়ই বলতেন, আমার ছয় মেয়ে ছয়টি জান্নাত(বেহেস্ত)। আমি হ্যা করে তাকিয়ে থাকতাম। মেয়ে মানুষ আবার জান্নাত হয় কিভাবে! মামারা একটু ইতর টাইপের ছিলে। তাই মাইর খাওয়ার ভয়ে সব সময় নানাকে এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করত। কিন্তু নানুর সাথে ছিল তাদের ভাল বোঝাপোড়া। এ পরিবারে দু’টি গ্রুপিং দল ছিল। একটাতে ছিল নানু আর দুই মামা, আরেকটাতে ছিল নানা আর খালারা। এগ্রুপিং বেশ উপভোগ্য ছিল। এভাবে দিন চলছে।
ইতিমধ্যে খালাকে বিভিন্ন জায়গা থেকে ছেলেপক্ষ দেখা শুরু করেছে। খালার অন্যান্য বোনদের চৌদ্দ পঁনের বছর বয়সে বিয়ে হয়েছে। খালার একটু দেরী হওয়ার কারণ সবার ছোট এবং আদরে ছিলেন। পাত্রপক্ষ খালাকে দেখতে আসলে আমারা যারা ছোট ছিলাম তাদের খুব আনন্দ হত। বাড়িতে ছোটখাট অনুষ্ঠানের আয়োজন চলত, কিন্তু খালাকে খুব চিন্তিত মনে হত। পাত্রপক্ষ দেখার আগে তাকে খুব সুন্দর করে সাজাত। শাড়ী পড়িয়ে বড় করে ঘোমটা দিয়ে ছেলে এবং তাদের মুরুব্বিরা যে ঘরে বসে থাকত তাদের সামনে নিয়ে যেত। আমরা পিঁছু পিঁছু গেলে বড়রা ধমক দিয়ে সরিয়ে রাখতেন। সেখানে খালার ইন্টারভিউ চলত। সে ইন্টার ভিউ ছিল এরকম;
- আসসালামুআলাইকুম;
- ওআলাইকুমুস সালাম।
মুরুব্বিদের পক্ষ থেকে সালামের জবাব আসত। চেয়ারে বসার সাথে সাথে ঘোমটা পরিহিত খালাকে হবু বর এই ফাকে ভালো করে দেখে নিত, যতটা সম্ভব। এরই মধ্যে ছেলে পক্ষের কোন মুরুব্বি ঘোমটা একটু উপরে উঠানোর জন্য বলত, খালার সাথে নানা বাড়ির যে মুরুব্বি যেতেন খালাকে ঘোমটা সরানোর জন্য অনুরোধ করার পর খালা ঘোমটা একটু সরাতেন, কিন্তু তার মুখ লজ্জায় লাল হয়ে থাকত। তারপর আবার ইন্টারভিউ শুরু হত;

- মা তোমার নাম?
- মোসাম্মদ আইরিন আক্তার।
- মাসাআল্লাহ।
পরিচয় পর্বে মা,বাবা, দাদা,দাদী, নানা, নানী থেকে শুরু করে চৌদ্ধগোষ্ঠী পর্যন্ত পৌছাত। তারপর আসত আসল পরীক্ষা;
- মা ইয়াসিন সূড়া পড়ত।
- ইয়া-সী-ন্। অল্ ক্বর্ আ-নিল্ হাকীম্।ইন্নাকা লামিনাল্ র্মুসালীন্। …..।
খালা দরাজ এবং মধুর কন্ঠে পাঠ করতেন। অর্ধেকের মত পাঠ হলে আরেক মুরুব্বি আদেশ করতেন আয়াতুল কুরশি পাঠ করার জন্য। খালা আয়াতুল কুরসি পাঠ শুরু করতেন;
- আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বিয়্যুম লা তা’খুজুহু সিনাত্যু ওয়ালা নাউম।… …,
এভাবে চলতে চলতে সর্বশেষ ধর্মীয় মাসায়েলা পর্যন্ত পৌছাত।

কয়েকজন পাত্র পক্ষের দেখাদেখির পর খালার বিয়ে ঠিক হয়ে যায়। এ বিয়েতে ছোটদের আনন্দের সীমা ছিল না। পাত্র পক্ষের জায়গা জমি প্রচুর। ছেলের মাছের আড়দারি ব্যবসা আছে। বড় জেলে নৌকা আছে কয়েকটি। অবস্থাপন্ন পরিবার। খালার মনে অচেনা আতঙ্ক এবং চঞ্চলতা ভর করেছে।

বিয়ের আগের দিন উঠানের মাঝে সামিয়ানা টাঙ্গিয়ে প্যান্ডেল করা হয়েছে।বিকেলের সময় মহিলারা কুলায় করে তৈল, সুপারী, কয়েকটি দুর্বাঘাস নিয়ে মেহেদী গাছ থেকে মেহেদি পাতা তুলতে গেছেন।মেহেদী পাতা তোলার সময় মহিলার এক সূরে এক প্রকার গীত গাইলেন। অনেকগুলো হ্যাজাক লাইট এনে বাড়িকে আলোকিত করা হয়েছে। সন্ধ্যায় পর মেহেদী পাতা বেটে মন্ড তৈরী করে বড় থেকে ছোটরা পর্যন্ত বিভিন্ন শৈল্পিক কারুকার্যে হাতকে রাঙ্গিয়েছেন। খালাকে মেহেদী পড়ানোর সময় সেখানে ছোটখাট জটলা বেঁধে গেছে। নানার কৃর্তক মাইক বাজানো নিষিদ্ধ থাকলেও বড় কয়েকজন (জামাইকুল) মিলে মাইক এনে পাশের বাড়িতে টাঙ্গিয়ে ক্যাসেট বাজানো শুরু করেছে। রাত্রে যখন গ্রামের মহিলারা মিলে মাইকে গীত গাওয়া শুরু করল তখন নানাজান কৃর্তক রাগারাগিতে পুরা বাড়ি নিস্তত্ব করে হয়েছিল। এ নিয়ে জামাইকুল গোসসা করেছিলেন । একাধিক গরু এবং গোটা দশেক খাসি জবাই করা হয়েছে। বড় বড় ডেকে (পাতিলে) সব আইটেম রান্না করা হয়েছিল। কনের গোসলের পর সারা বাড়িতে উড়াউড়ি পারাপারিতে (গ্রামের বিয়ের সময় কালি, মাটি, পানি ও কাঁদা দিয়ে এক ধরণের আনন্দ উৎসব) একাকার। সবাই মনে হয় এই জিনিষটার অপেক্ষায় ছিল।

জোহর নামাজের পর বিয়ের চলন (বরযাত্রী) আসল। চারদিকে একটা সাড়া পরেছে জামাই এসেছে জামাই এসেছে। ছোটদের নতুন জামাই দেখার জন্য কিযে কৌতূহল। জামাই বাবাজি পাঞ্জাবী পায়াজামা পরে মুখে রুমাল দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। জামাই আসনে বসলে সেখানে মেয়ে ছেলেদের একটা ঝটলা লেগেছে।শরবত খাওয়ার বোনাস, গলায় মালা দেয়ার বোনাস আরো কত কি! বর পক্ষের ছেলেদের মাঝে কনে পক্ষের মেয়েদের নিয়ে অতিরিক্ত উৎসাহ আর আগ্রহ দেখেছি। মাঝে মাঝে একটু আধটু বেয়াই-বিয়াইন কথা চালাচালি হত। বিয়ের শেষ পর্যায়ে উভয় পক্ষের মুরুব্বিদের মাঝে কাবিনের মোহর নিয়ে ছোট খাট একটা দর কষাকষি হয়েছিল। কাজি যখন ছোট খালার কাছে গেল তিন কবুল উচ্চারণ করার জন্য তখন খালার কিযে কান্না! কোন মতে তিন কবুল বলতে পারছিলেন না। আঠারো বছরের মাতৃকুলের প্রেম এবং পরিবারের প্রিয় মানুষদের থেকে দূরে চলে যাওয়া এই ব্যাথায় হয়ত তার মুখে জড়তা এনে দিয়েছিল।অনেকের অনুনয় বিনয়ে যখন কাজ হচ্ছিল না তখন এক মুরুব্বির ধমকা ধমকিতে কোন মতে কবুল উচ্চারণ করলেন। সাথে সাথে কতগুলো মুখ থেকে সমস্বরে আল-হামদুল্লিাহ্ ধ্বনিত হলো। বিদায় বেলা প্রিয়জন থেকে বিদায় নেয়ার সময় কান্নার রোল উঠল ।আমার গলায় হাত দিয়ে কপালে একটু চুমু আঁকলেন। সেই চুমুর এখনও আমাকে বিমোহিত করে।

বিয়ের পর প্রতি মাসে খালাকে একবার করে নাইওর আনতে যেতাম। এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করতাম, কবে খালাকে নাইওর আনতে যাব। নাইওর আনতে গেলে সেখানে দুই তিন দিন বেড়ানো ছাড়া আসতে দিত না। এভাবে সেই বাড়ির ছেলেদের সাথে একটা সার্কেল বা সম্পর্ক তৈরী হয়েছিল। বিকাল বেলা তাদের সাথে ডান্ডামারী (গাংগুলি) আর মার্বেল খেলতাম। এটা আমার কাছে বিশেষ কিছু ছিল, কারণ নানা বাড়িতে থাকলে এগুলো খেলা যেত না। এক সময় নাওইর আনার হার কমতে থাকল, এক মাস থেকে দুই মাস তারপর তিনমাস এভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকল।

ইতিমধ্যে খালার গর্ভে নতুন অতিথি এসেছে। বড়দের আলোচনায় সেটা অনুমান করতে পেরেছিলাম। আঁতুর ঘরের সময় হইলে খালাকে শেষ বার নাইওর আনতে গিয়ে ছিলাম। তখন খালার মুখ ছিল হাসিমাখা এবং অনাগত সন্তানের আগমনে ভয় ও চাঞ্চল্য দেখেছিলাম। তিনি আমাকে বলেছিলেন, তোর নতুন বোন আসলে সুন্দর একটা নাম রাখবি। আমি সে থেকে নতুন বোন পাওয়ার জন্য উৎসুখ ছিলাম। নতুন একটা নামও ঠিক করে রেখেছিলাম।

আঁতুর ঘরে প্রসবের বেদনা উঠলে অভিজ্ঞ ধাত্রী রহিমার মাকে ডেকে আনলেন। দুই দিন প্রসব বেদনার পর জমের টানাটানির এক পর্যায়ে একটি মৃত পুত্র সন্তান জন্মদান করলেন। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ না কি জানি হয়েছিল। সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে ইহধম ত্যাগ করলেন। শুনেছি সন্তান জন্মদানের সময় কোন মা’ মৃত্যু বরণ করলে নাকি শহীদী মর্যাদা পায়। খোদা তাকে বেহেস্ত নসিব করুক। খালার মৃত্যুর পর আমি নানু বাড়ি থেকে চলে এসেছিলাম। কিন্তু খালা বিয়ের দিন বিদায়ের বেলা যে চুমু আমাকে দিয়েছিল সে চুমু এখনও আমাকে বিমোহিত করে।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১:২৩

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আল্লাহ আপনার খালাম্মাকে জান্নাত দান করুণ।

১৮ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১:২৮

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: আমিন।।।

মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

আমার জন্য দোয়া করবেন

২| ১৮ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১:২৪

জেন রসি বলেছেন: টাচি! আপনার লেখার হাত অনেক সাবলীল। লিখে চলুন।

১৮ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১:৩০

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: ধন্যবাদ।

মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম।

শুভ কামনা জানবেন।

৩| ১৮ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১:৪৯

রাসেল ০০৭ বলেছেন: এ ধরণের লিখা আমি পড়তে খুব ভালোবাসি । চোখ ভিজে গেলো ! আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসিনী করুন !

বিঃ দ্রঃ আমার কোন খালা নেই :(

১৮ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:০৭

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: আমিন।।
ধন্যবাদ পাঠ এবং প্রতিক্রিয়ারর জন্য।

প্রত্যেকের একজন করে খালা থাকা উচিৎ, তাহলে মায়ের অনুপস্হিতিতে মায়ের উষ্ণতা অনুভব করা যায়।

পরিশেষে শুভ কামনা জানবেন।

৪| ১৮ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৯

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আপনার খালার জন্য দোয়া করি আল্লাহ তিনাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন।

১৮ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৪:০৪

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: আমিন।।


ধন্যবাদ ভাই, পাঠ ও মন্তব্য করেছেন।

৫| ১৮ ই মে, ২০১৭ রাত ১০:৪৮

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: হুমম। এক সময় আমিও খালা(৩ খালা) অন্তঃপ্রাণ ছিলাম। কিন্তু আজকে এক একজনের সন্তানদের নিয়ে অঘোষিত প্রতিযোগীতার কারণে সেই খালাাদের মধ্যে হৃদ্যতা আর নেই।

১৮ ই মে, ২০১৭ রাত ১১:১৫

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: সময়ের পরিবর্তনে মানুষ নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যায়।

মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

৬| ১৯ শে মে, ২০১৭ রাত ১২:৪০

সুমন কর বলেছেন: লেখাটি পড়ে খুব ভালো লাগল। +।

১৯ শে মে, ২০১৭ রাত ১২:৪৪

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন ভাই,

পাঠ ও মন্তব্য করেছেন।

৭| ১৯ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:৪০

হাফিজ রাহমান বলেছেন: ভাই আমিও হারিয়ে গেলাম দুরন্ত স্মৃতির বালিয়াড়ি প্রান্তরে। বেশ সুন্দর উপস্থাপনায় বাংলার আবহমান কালের বিবাহ উৎসবের দৃশ্যটি তুলে ধরেছেন বলে বেশ প্রীত হলাম। তবে আপনার খালার জন্য বেশ মায়া লাগছে। অকালেই তিনি পাড়ি জমালেন পরপারের পথে। আপনার খালার মত আমারও একজন মমতাময়ী খালা ছিল।
আমি যখন ছোট্ট কিশোর তখন আমার ছোট খালা মারা যান। শামিম তখন ছোট। এক আধটু বুঝতে শিখেছে। আমার খালার স্বপ্ন ছিল শামিমকে হাফেজ করবে। খালা আমাকে খুব আদর করতেন। নানা বাড়িতে ভিখারি এলে ছোট্ট চালের পাত্র হাতে আমাকে পাঠিয়ে দিতেন আর বলতেন যাও ভিখারিকে দিয়ে এসো। তোমাকে দোয়া দিবে। তুমি হাফেজ হবে আলেম হবে। আমি চালের পাত্র হাতে গুড়গুড়িয়ে হেঁটে যেতাম ঝুলি কাঁধে দাঁড়িয়ে থাকা ভিখারীর ধারে। বেচারা ভিক্ষুক আমার হাত থেকে পাত্রটি নিয়ে ঝুলি ফাঁকা করে চাল ঢালতেন আর বিড়বিড় করে কি যেন বলতেন। আমি বুঝতাম না। হয়তো বলতেন আল্লাহ তোমাকে হাফেজ বানাক। আলেম বানাক। আমার মমতাময়ী খালা আজ বেঁচে নেই। খড়স্রোতা আড়িয়ালখা নদীর তীরে শুয়ে আছেন পরমানন্দে। একসময় আমার খালার কবরে হাসনাহেনা ফুল ফুটত। রাতের আঁধারে সৌরভ ছড়াত। আমার মনে হতো এ ফুল জান্নাতী ফুল। জান্নাতী ফুলের সুবাসে আমি মুগ্ধ হতাম। আমার কেন যেন বিশ্বাস হত আমার খালা জান্নাতী। খালাকে আমার যতটুকু মনে পড়ে তিনি একজন হৃদয়বান মানুষ ছিলেন। মন খুলে মানুষকে ভাল বাসতেন। আজ খালা নেই। আছে শুধু তাঁর রেখে যাওয়া স্নেহ মমতা ও ভালবাসা। আল্লাহ ! তুমি আমার এবং শাহাদাত ভাইয়ের খালাকে জান্নাতের সুন্দরতম জায়গাটিতে স্থান দিয়ো।

১৯ শে মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৯

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: ভাই আপনার মত আমি আবেগ প্রবণ হইলাম।

মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.