নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

১৯৭১সালে ৬ই ডিসেম্বর স্বাধীনতাকামী বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেয় ভারত

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০১

১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারত সরকার বাংলাদেশ সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদান করে। এ খবরে বাংলাদেশের জনগণ উল্লসিত হয়। বিভিন্ন রণাঙ্গনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে রাজধানী ঢাকা অভিমুখে এগিয়ে যাওয়া মুক্তিযোদ্ধারা অনুপ্রাণিত হয়। ভারতের শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয় গ্রহণকারী প্রায় এক কোটি বাঙালি নিশ্চিত হয়ে যায়_ ঘরে ফেরার দিনটি সমাগত। বাংলাদেশকে স্বীকৃতির প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয়ের মুখে প্রবাসী নেতৃত্বাধীন সরকার বৈধতা পেয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে মনে রাখা চাই ইন্দিরা গান্ধীর ব্যক্তিগত অবদান। তিনি শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা করেছেন এবং বাংলা এলাকার প্রতি তার ছিল বিশেষ দুর্বলতা ও আকর্ষণ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী লোকসভার অধিবেশনে এ স্বীকৃতি প্রদানের ঘোষণা দেন। তিনি এ সময় আবেগপূর্ণ যে ভাষণ প্রদান করেন, তাতে বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরা হয়। তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের দল আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ অসহযোগ আন্দোলন পরিচালনা করছিলেন। কিন্তু বাঙালিরা পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এর মোকাবেলায় হাজার হাজার তরুণ বাঙালি মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেয়। তারা স্বাধীনতা এবং নিজেদের মতো করে ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য জীবন উৎসর্গ করেন। বাংলাদেশের জনগণের ঐক্য, দৃঢ়তা ও সাহসের খবর বিশ্বের সর্বত্র সংবাদপত্রে প্রকাশ হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের সহানুভূতি ছিল বাংলাদেশের জনগণের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামের প্রতি। কিন্তু আমরা এতদিন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করিনি। আমরা কেবল আবেগ দ্বারা পরিচালিত হইনি, বরং বিদ্যমান ও ভবিষ্যৎ বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশ সরকারের বৈধতা প্রসঙ্গে আমি বলতে পারি যে, গোটা বিশ্ব এখন নিশ্চিত হয়েছে_ এ সরকারের পেছনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সমর্থন রয়েছে, যে ধরনের ঘটনা বিশ্বের অনেক দেশে দেখা যায় না। আমরা জেফারসনের বিখ্যাত উক্তি উল্লেখ করে বলতে পারি_ বাংলাদেশ সরকারের প্রতি জাতির সম্মিলিত সম্মতি রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বলেন, আমি পার্লামেন্টকে আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই যে, বিদ্যমান বাস্তবতায় এবং বাংলাদেশ সরকারের ক্রমাগত অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আমরা আশা করছি, আরও অনেক দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করবে এবং বাংলাদেশ জাতিসমূহের পরিবারের সদস্য হিসেবে গণ্য হবে। ভারতের স্বীকৃতির দিনেই মুক্ত হয় যশোর শহর। সিদ্দিক সালিক 'উইটনেস টু সারেন্ডার' গ্রন্থে লিখেছেন, ৬ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টায় যশোর ক্যান্টনমেন্ট পরিত্যাগ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। শত্রুর আক্রমণ মোকাবেলায় একটি গোলাও ছোড়া হয়নি। পাকিস্তান সেনাবাহিনী এমনকি প্রচুর গোলাগুলির ভাণ্ডারটিও ধ্বংস করেনি। শত্রুপক্ষ যশোর দখলের লড়াইয়ে প্রচুর রক্তক্ষয়ের আশঙ্কা করছিল। এ কারণে তারা পরদিন সকাল ১১টা পর্যন্ত ক্যান্টনমেন্টের দখল নেয়নি। যশোরের পতন হওয়ার দু'দিন পরও পাকিস্তানের ইস্টার্ন কমান্ডের সদর দপ্তর থেকে দাবি করা হচ্ছিল_ সেখানে তুমুল লড়াই চলছে। ভারতের সেনাবাহিনীর সঙ্গে অনেক বিদেশি সাংবাদিক যশোরে প্রবেশ করেন। তারা কেউ কেউ ঢাকাতেও চলে আসেন এবং যশোর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে_ আমাদের এ দাবির জন্য উপহাস-বিদ্রূপ করতে থাকেন। তারা বলেন, ক্যান্টনমেন্টে যে টাইপিস্ট টাইপ করছিল সেও পালানোর সময় টাইপরাইটারের কাগজটি ছিঁড়ে আসার সময় পায়নি।
যশোরে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে ছিলেন নিউইয়র্ক টাইমসের সিডনি শানবার্গ। যশোর মুক্ত হওয়ার পর তার পাঠানো প্রতিবেদনটি ছিল নিম্নরূপ :বাঙালিরা নাচছে বাসের ছাদের ওপর। রাস্তায় তারা স্বাধীনতার স্লোগান দিচ্ছে। তারা পরস্পরকে জড়িয়ে আনন্দ করছে। অন্য দেশ থেকে আসা অতিথিদের সঙ্গে পরম আবেগে করমর্দন করছে। তিনি লেখেন, আজ যশোর মুক্ত হওয়ার দিন। আট মাস ধরে পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক বিবেচনায় কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এ শহরটি গতকাল পর্যন্তও ছিল পশ্চিম পাকিস্তানিদের দখলে, যারা গত বসন্তে এসেছিল বাঙালিদের বিদ্রোহ দমনের জন্য। তিনি লেখেন, বিদেশি সাংবাদিকদের বহন করা একটি জিপ ঝিকরগাছা থেকে যশোরের দিকে এগিয়ে চলেছে, রাস্তার দু'পাশের গ্রামবাসীরা সোৎসাহে স্লোগান তুলছে_ জয় বাংলা। যশোর শহরের পরিস্থিতি আরও প্রাণোচ্ছল ও উৎসবমুখর। ঘরবাড়ির ছাদে উঠছিল সবুজ, লাল ও সোনালি রঙের বাংলাদেশের পতাকা। কিন্তু এত আনন্দধ্বনির মধ্যেও মিশে ছিল শোক আর বেদনা। রাস্তায় সমবেতরা শহরের যুদ্ধপূর্ব লোকসংখ্যার সামান্য অংশই ছিল। যারা এখানে উপস্থিত নেই, তাদের অনেকে শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন এবং হয়তো অচিরেই ফিরে আসবেন। আরেক দল কখনও ফিরবে না। তারা স্বাধীনতার জন্য আত্মাহুতি দিয়েছেন।

আমি খুলনাতে বাসায় বসে বিমান যুদ্ধ দেখি আর ছোট একটি ডায়রিতে যৌথ বাহিনী কতদুর এগুলো তা লিখি। একটা বিষয় পরিস্কার হয়ে গেলাম যে বাংলাদেশ নামে একটি রাষ্ট্র পৃথিবীর খেরোখাতায় নাম লেখাতে যাচ্ছে। কি আনন্দ হচ্ছিলো বলে বোঝাতে পারবনা।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:২১

খেলাঘর বলেছেন:


ভারত ঠিক কাজ করেছিল ঠিক সময়ে

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:২৫

শাহ আজিজ বলেছেন: সহমত

২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৩৩

আহলান বলেছেন: সোনার হরফে লেখা ইতিহাস ... রক্তে রাঙানো স্বাধীনতা .... আমরা তার মর্যাদা দিতে পারি নাই, পারছি না ...

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০১

শাহ আজিজ বলেছেন: ৭১ এ আমরা কিন্তু কোন জাতি, গোষ্ঠী, ধর্ম ও বর্ণে বিভক্ত করিনি বাঙ্গালিদের । আমরা এক এবং একক শক্তি ছিলাম । নেতার দৌরাত্তে আমরা এখন আই এস জি গঠনের পথে। আর কত খেলা আর রক্ত দেখতে হবে??

৩| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৩৭

সরদার হারুন বলেছেন: তাইতো ভারতকে আজো বন্ধুই ভাবা হয় ।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০৫

শাহ আজিজ বলেছেন: ইতিহাসে দেখা যায় স্বাধীনতা অর্জনের সাহায্যকারি বন্ধুও শত্রু হয়ে যায় , যুদ্ধ করে। আবারো মিল হয়। আমরা কোন পর্যায়েই নেই।

৪| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০৫

সুফিয়া বলেছেন: এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে ভারতের এই স্বীকৃতি আমাদের বিজয়ের পথ অনেকটা এগিয়ে দিয়েছিল। সে সময় ভারতের এই স্বীকৃতির বড় বেশী প্রয়োজন ছিল।

ধন্যবাদ আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট দেয়ার জন্য।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:১৭

শাহ আজিজ বলেছেন: স্বীকৃতি না দিলে ঢাকা পৌঁছানো এবং আত্মসমর্পণে জটিলতা সৃষ্টি হতো। ভারত এটাই প্রমান করতে চাচ্ছিল সে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র গঠনে সহায়ক শক্তি রুপে কাজ করছে। না হলে তাকে পাকিস্তানের পূর্বাংশ অবৈধ দখলের অপবাদ নিতে হতো। এগুলোই "ইন্দিরা ব্রেন"।।

৫| ১৭ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:০৫

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: শ্রদ্ধেয়!!!


আপনার কি হল???:(:(:(

৬| ১৭ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:২৪

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: স্বাধীনতা যুদ্ধকালে ও পরে ভারতের অবদান অনেক। প্রথম স্বীকৃতি দানকারী দেশ হ ওয়া সত্বেও এই স্বীকৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে পারে নি। দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে দৃষ্টি কটু হস্ত ক্ষেপ স্বাধীন চেতা নাগরিক দের মনে তীব্র অসন্তোষের সৃষ্টি করেছে। ভারতবিদ্বেষী মনোভাবের এভাবেই জন্ম। এটা বাড়ছে।

৭| ২২ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আজিজ ভাই ফিরে আসুন
আমরা আপনার অপেক্ষায়

৮| ২২ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩১

শহীদ আম্মার বলেছেন: অন্তত আপনার কোন আপডেট আমাদের জানান।

৯| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:২৯

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: নতুন পোস্ট দিন

১০| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:৩২

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: মামা আপনাকে ওনেক দিন পরে দেখলুম ।

১১| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৬

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: হ্যালো

১২| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৬

পদ্মপুকুর বলেছেন: বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতিদানকারী দেশ ভারত নয়। ভুটান সর্বপ্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিলো।

১৩| ২০ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৮:৩১

রাফা বলেছেন: কেমন আছেন ব্রাদার , এই কঠিন সময়ে?
শুভ কামনা থাকলো করোনাকালে।

কিছু শেয়ার করুন এই সময়‘কে ঘিরে।
ধন্যবাদ, শা.আজিজ ।

১৪| ২৬ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৬

মাআইপা বলেছেন: দীর্ঘদিন পর আপনাকে লাইনে দেখছি। খুব ভাল লাগলো।

১৫| ২৮ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৩

নৃ মাসুদ রানা বলেছেন: এই প্রথম আপনার লেখা পড়লাম...

১৬| ২৮ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:২৫

বিজন রয় বলেছেন: কেমন আছেন?

৬ বছর হতে চলল নতুন পোস্ট দেননি।

এবার কি দিবেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.