নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি হইলাম মামা :)

তাহসিন মামা

ঘুরে বেড়াতে ভালবাসি। সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাই, সুন্দরের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই।

তাহসিন মামা › বিস্তারিত পোস্টঃ

“দ্বীপ দেশে” (পর্ব- ১)

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৫৫

সকাল ১১ টার দিকে মনা ভাই ফোন করে জানালো লঞ্চ ছাড়বে ৩ টায়। পরিমরি করে রেডি হয়ে ব্যাগ গুছিয়ে রওনা হলাম লালবাগের উদেশ্যে। সেখান থেকে তাঁবু, লাইফ জ্যাকেট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে রওনা হলাম সদরঘাটের দিকে। সদরঘাটে গিয়ে সোজা উঠে পরলাম “দ্যা গ্লরি অব শ্রীনগরে”। আস্তে আস্তে রুমা আপা, বযলু ভাই, সোহেল ভাই, হাসিব সুলতান, হাসিবুর রহমান, আরিফুল আজিম, মিতা দি, ওসমান ভাই সহ সবাই হাজির হলেন। ৩ টার লঞ্চ অবশেষে ছাড়ল ৬ টায়। এভাবেই শুরু হয়ে গেল “ ভ্রমণ বাংলাদেশ” এর এবারের ঈদ ট্রিপ “পূর্ণিমার আলোয় চর কুকরী-মুকরী”। B-)

হাসিব কুকরী ও হাসিব মুকরী ঃ এবারের ট্রিপে নতুন মুখ হাসিব সুলতান। আমাদের সাথে হাসিবুর রহমান (ডাক নাম হাসিব)ও আছে। দুই হাসিবকে তো আর এক নামে ডাকা যায় না। কেউ কেউ বলল হাসিব-১ ও হাসিব-২। কিন্তু এগুলো তো পুরনো হয়ে গেছে। কেউ একজন প্রস্তাব করলো ‘হাসিব কুকরী’ ও ‘হাসিব মুকরী’ রাখলে কেমন হয়? কেমন হয় মানে কি? এই নামেই তাদের ডাকা হবে। ফাইনাল! :DB-)

রাতের জম্পেশ আড্ডা মোটামুটি জমে উঠেছে, কেবিন বয় এসে জানালো খাবার রেডি। লঞ্চের খাবার বরাবরই ভাল আর তা যদি স্পেশাল অডার দিয়ে তৈরি হয় তার আসলে কোন তুলনা চলে না।:D খাবার শেষ করে আমরা আড্ডা দিতে দিতেই ঘুমিয়ে পড়লাম।

ভোলা লঞ্চ ঘাটে আমাদের তরী যখন ভিড়ল তখন রাত প্রায় ৪ টা। এতো সকালে বের হওয়ার কোন মানেই হয় না। তাই ভোর পর্যন্ত লঞ্চে কাটিয়ে আমরা ভোলার মাটিতে পা রাখলাম। [img|http://cms.somewhereinblog.net/ciu/image/155547/small/?token_id=6ffca9f81c3ec6a796f33a911f099dda



লঞ্চ ঘাট থেকে আমরা সোজা চলে এলাম সদর বাস স্ট্যান্ডে। টিকেট কেটে তাড়াতাড়ি নাস্তা সেরে বাসে উঠে বসলাম। গন্তব্য চরফ্যাশন। সেখান থেকে কচ্ছপিয়া ঘাট থেকে ট্রলারে করে চর কুকরী-মুকরী।

চর কুকরি-মুকরি বঙ্গপোসাগরের তীর ঘেষে জেগে ওঠা একটি চর। চিরসবুজ গাছ-গাছালিতে ঘেরা, অসংখ্য নাম না জানা পাখি আর কিছু বন্য জীব-জন্তুর অবাধ বিচরণ ভূমি। বেশ অনেকগুলো চর রয়েছে চর কুকরী-মুকরীকে ঘিরে। মূল চরে মানব বসতি থাকলেও আশে-পাশের বেশির ভাগ চরে কোন স্থায়ী জন বসতি নেই।

আমরা যখন চর কুকরী-মুকরীর লঞ্ছ ঘাটে এসে পোঁছালাম তখন প্রায় দেড়টা। ঘাট থেকে প্রায় ১ কিঃমিঃ দূরে ইউনিয়ন পরিষদ। আমাদের থাকার ব্যবস্থা সেখানেই। দূর থেকে ইউনিয়ন পরিষদের বিল্ডিং দেখেই মন ভাল হয়ে গেল। এক দিকে বাঁধানো পুকুর ঘাট, সামনে বিশাল লন, আর পিছনের দিকটায় বিশাল ধান ক্ষেত। আমাদের অনেকেই ব্যাগ রেখেই ঝাঁপিয়ে পড়ল পুকুরে। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়েই আনন্দে নেচে উঠলো গোটা পুকুরের পানি। আমরাও তার সাথে নাচলাম প্রায় ঘণ্টাখানেক। গোসল সেরে একটু বিশ্রাম নিয়ে আমরা চলে এলাম বাজারে। স্থানীয় এক মিষ্টির দোকানে মহিষের দুধ দিয়ে তৈরি মিষ্টি দেখে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লাম। স্থানীয় মানুষের জন্য কয়েকটা মিষ্টি রেখে আমরা এবার হানা দিলাম আখ বিক্রেতার আখড়ায়। নিমিষেই বেশ কয়েকটা আখ সাবার করে আমরা কুকরী-মুকরীর আশপাশটা ঘুরে দেখতে বের হলাম। ততক্ষণে অবশ্য সন্ধ্যা নেমে এসেছে। আমরা গ্রামের মেঠো পথ ধরে হাঁটছি সাথে চলছে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা আর ছিল গান। ‘গ্রাম ছাড়া ওই রাঙ্গামাটির পথ, , , আমার মন ভুলায় রে, , ,’ ‘গ্রামের নওজয়ান, হিন্দু- মুসলমান, মিলিয়া বাউলা গান আর মুর্শিদি গাইতাম, , আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’। প্রায় ঘণ্টা খানেক পর আমরা ফিরে এলাম ইউনিয়ন পরিষদে। ছাদে সবাই গোল হয়ে গান, কৌতুক আর আড্ডার আসর বসিয়ে দিলাম। একেক জন একেকটা কৌতুক বলে আর আমরা হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাই। আকাশে চাঁদ মামাও হাসে আমাদের সাথে। রাত ১০ টার দিকে আমরা খেতে যাই সাগর ভাইয়ের হোটেলে। সাগর ভাইয়ের রান্নার হাত অসাধারণ। আর তাঁর আন্তরিকতা মনে হয় অসাধারনের চাইতেও একটু বেশি। এই অল্প সময়ের মদ্ধে তিনি চিংড়ি মাছের দোপেয়াজা, চিংড়ি মাছের ভর্তা, খইলশা মাছের ফ্রাই, ভুনা ডাল খাইয়ে আমাদের অবাক করে দিলেন। সাগর ভাইকে ধন্যবাদ। ধন্যবাদ অবশ্য আরও একটা মানুষকে দেয়া দরকার। তিনি আমাদের বজলু ভাই। মেন্যুগুলো তারই সিলেক্ট করা। খাবার শেষ করে আমরা কয়েকজন আঁখ খাওয়ায় মনোযোগ দিলাম। আঁখ খেতে খেতে হাটা ধরলাম ইউনিয়ন পরিসদে। গেটে ঢুকতেই কেয়ারটেকার জানালো চেয়ারম্যান সাহেব আমাদের সালাম দিয়েছেন। তিনি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন। আমি, মনা ভাই, ওসমান ভাই গেলাম তাঁর সাথে দেখা করতে। তাঁর সাথে প্রায় ঘণ্টাদেরেক কথা বলে আমরা চলে এলাম ছাদে, যেখানে ইয়া বড় একটা চাঁদ আর কয়েক হাজার তারার সাথে আড্ডা দিচ্ছে আমাদের বাকি সবাই। ধীরে ধীরে রাত বাড়তে থাকে, হাজার বছরের সেই রাত, সবাই একে একে ঢুকতে থাকে যার যার তাঁবুতে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:১৪

অস্পিসাস প্রেইস বলেছেন: ব্লগে স্বাগতম।

২| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫৪

তাহসিন মামা বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.