নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি হইলাম মামা :)

তাহসিন মামা

ঘুরে বেড়াতে ভালবাসি। সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাই, সুন্দরের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই।

তাহসিন মামা › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘পাহাড়ের ডাকে- ঝর্ণার দেশে’ পর্ব-২

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩০

চিরাচরিত পাহাড়ি ট্র্যাক। একপাশটা পাহাড়ের দেয়াল আর অন্য পাশটা মৃত্যুখাদ। আমরা সাপের মত পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে উঠছি পাহাড় বেয়ে। কখনো বা নামছি। নামার সময় মনে হয় আবার উঠতে হবে আর উপরে উঠার সময় মনে হয় একটু আগেই তো নামলাম । কিছু কিছু জায়গাতে সেই আলগা মাটি। এখন অবশ্য রোদ তেমন একটা লাগছে না। চারদিকে বাঁশ আর বেত গাছে ভরপুর। কিন্তু তারপরও আমরা ঘেমে নেয়ে একাকার। কিছুক্ষণ পরপরই বিশ্রাম নিতে হচ্ছিলো। এরই মাঝে আলগা মাটিতে পা পিছলে একটা আছাড় খেলাম। হাঁটু গেল ছিলে। একটু ধাতস্ত হয়ে আবার হাটা শুরু করলাম। সময় নষ্ট করা যাবে না মোটেই। আমাদের বেশ কয়েকজন অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। প্রায় ৩০ মিনিট হাটার পর দেখলাম সবাই পথের উপর বসে আছে। পানি, খেজুর, গ্লুকোজ খেয়ে আবার চলতে শুরু করলাম। কিছুক্ষন পর আমি আবার পিছিয়ে পড়লাম। পা টা বেশ ভালই ভোগাতে শুরু করলো। আমার সাথে অবশ্য জীবন নামে এক ছোট ভাই ছিল। ওর পাহাড়ে এটা প্রথম ট্রিপ। তাই আমরা দু’জন আস্তে আস্তে হাটা শুরু করলাম। যদিও এই রাস্তাটা আমার চেনা, তারপরও পাহাড়ি রাস্তায় একা একা চলা ঠিক নয়। কোন দূর্ঘটনা ঘটলেও উদ্ধার করার জন্য কাউকে পাওয়া যাবে না। পথ চলা উচিত দল বেঁধে। কিছু কিছু জায়গার ট্র্যাক দেখে শিপ্পির (শিপ্পি বাংলাদেশের তৃতীয় উচ্চতম পাহাড়, উচ্চতা ৩০২৮ফুট) কথা মনে পরে যায়। বিশাল বিশাল এক একটা গাছ। রয়েছে বিস্তীর্ণ বাঁশ ঝাড় আর রয়েছে সেই পুরনো ঝুরঝুরে আলগা মাটি। চলতে চলতে আমাদের সামনের টিমটার সাথে আবার দেখা হয়ে গেল। সবাই কিছু একটা দেখেছে। সামনে গিয়ে দেখি বিশাল এক গয়াল রাস্তা আগলে দাড়িয়ে আছে। দেখেই বুঝলাম এটা জংলী গয়াল নয়। আমাদের দেখেও বেশ শান্ত আছে। এটিকে পাশ কাটিয়ে আমরা সামনে এগুতে শুরু করলাম। ওই যে দূরে বাকলাই আর্মি ক্যাম্প দেখা যাচ্ছে। ক্যাম্পের পাশেই পারা থাকার কথা। রোদ পড়ে এসেছে তাই হাঁটতে তেমন কষ্ট হচ্ছে না। আসেপাশে অনেক গয়াল লক্ষ করলাম। দু’একটা তো আমার পিছুও নিল ! আরও কিছুদূর এগিয়ে একটা বাঁক পেরোতেই চোখের সামনে উদয় হল ছোট্ট কিন্তু চমৎকার একটি ঝর্ণা। পারা যেহেতু খুব কাছে আর সময়ও আমাদের হাতে কিছুটা থাকায় আমরা ৫-৬ জন নেমে পড়লাম ঝর্ণায়। হিম শীতল পানিতে নামার সাথে সাথে দিলাম এক চিৎকার! ওরে বাবা, পানি এতো ঠাণ্ডা কেন? ঠাণ্ডার ঠেলায় কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেল, কিন্তু কোল্ড থেরাপি আমাদের সব ক্লান্তি দূর করে দিল। গোসলের পর আবার হাটাঁ শুরু করলাম। প্রায় ২০ মিনিটের মাথায় আমরা প্রবেশ করলাম বহু প্রতিক্ষিত বাকলাই পারাতে। রাতে নাকলিন দা এর ঘরে থাকার ব্যবস্থা হলো। সোলার প্যানেল আছে তাই আলোর সমস্যা নেই। সন্ধ্যার দিকে রাতের খাবার রান্নার কাজে লেগে পড়লাম সবাই। কেউ কাটলাম পেঁয়াজ, কেউ রসুন, কেউ টমেটো, কেউ মরিচ। সিফাত মুরগী যবেহ করে দিল আর সিয়াম ও নাকলিন দা সেগুলো কাটাকুটি করলো। সঙ্গে নিয়ে আসা ডাল ধুয়ে নিলাম। চাল নিলাম নাকলিন দা এর কাছ থেকে। এর ফাঁকে নুডুলস ও কফি পর্ব সারা হল। কয়েকজন বাইরে বসে আকাশের তারা গোনায় বেস্ত। আকাশে বি-শা-ল বড় একটা চাঁদ। আগামীকাল পূর্ণিমা। চাঁদ দেখতে দেখতে কামাল ভাই এক সময় হঠাৎ বলে বসলো, ‘চাঁদটা পুরা গোল না, একটু টেমা টেমা লাগতেছে’। আমরা সবাই হো হো করে হেসে উঠলাম। আস্তে আস্তে রাত বাড়তে লাগলো। গানের একটা লাইন মনে পরে গেল- নিশি রাত, টেমা (বাঁকা) চাঁদ আকাশে, , ,। এদিকে রুবিনা আপু, ইকা আপু, হেলাল রান্না করতে বসে গেছে। আমিও তাদের সাথে যোগ দিলাম। এক সময় খিচুড়ি ও মুরগীর মাংস রান্না হয়ে গেল। সবাই বসে গেলাম খেতে। অপূর্ব স্বাদ সেই খিচুড়ি-মাংসের। খাওয়া শেষ করে সবাই আস্তে আস্তে শুয়ে পড়ল। আমি আর হেলাল বের হলাম চাঁদের আলোয় বাকলাই পারা ঘুরে দেখতে। ফিরে এসে দেখি সবাই খুব মনোযোগ দিয়ে ঘুমাচ্ছে।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩২

ইকা বলেছেন: জোকের কথা কিছু বললেন না ভাই ??

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৩৫

তাহসিন মামা বলেছেন: এই পর্যন্ত জোঁক তো তেমন একটা ছিল না। অপেক্ষা করেন। জোঁক আসতেছে !

২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৭

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: ভালোই তো লাগছে এখন ব্লগে পড়তে, অথচ ট্র‌্যাক করার সময় মনে হচ্ছিল পাহাড়ের চড়াই উৎরাই দিয়ে চলা এতো কষ্ট ক্যান ?

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৯

তাহসিন মামা বলেছেন: ভাই, দুইটা খেজুর খান, একটু পানি খান, সব ঠিক হয়ে যাবে। :)

৩| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২০

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: Like!

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৫

তাহসিন মামা বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০১

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ফিরে এসে দেখি সবাই খুব মনোযোগ দিয়ে ঘুমাচ্ছে!!!

ভাই মনোযোগ দিয়ে ঘুমানো ব্যাপারটা একটু বুঝায়া বলবেন প্লিজ....

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৪

তাহসিন মামা বলেছেন: বোকা মানুষ ছাড়া এই রসিকতা কে বুঝবে বলেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.