নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি হইলাম মামা :)

তাহসিন মামা

ঘুরে বেড়াতে ভালবাসি। সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাই, সুন্দরের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই।

তাহসিন মামা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঘের ডেরায় -১

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:১৬



সাগর-নদী-জঙ্গলের এক অপূর্ব মিলনভূমি সুন্দরবন। শুনেছিলাম অন্যান্য ন্যাশনাল পার্কের সাথে সুন্দরবনের পার্থক্য নাকি এক জায়গাতেই, সেটা হল তার স্বাভাবিক বন্যতা। জঙ্গলে গেলেই যেমন সারি সারি পশুর দেখা পাওয়া যায় না, পশুর দেখা পাওয়ার জন্য ধৈর্য, পরিস্রম, উপস্থিত বুদ্ধির সাধনা করতে হয়, আর হঠাৎ সেই সাধনার ফল পাওয়া গেলে প্রচণ্ড উত্তেজনার আস্বাদন। সুন্দরবনে পশু দেখার অভিজ্ঞতা ঠিক তেমনই। জীবজন্তু, গাছপালা, কীটপতঙ্গ, পাখপাখালি থেকে শুরু করে জঙ্গলের চারপাশের খাল-নদী মিলিয়ে গোটা বনের পরিবেশ অত্যন্ত অকৃত্তিম। এক দিকে সুন্দর, অন্য দিকে ভয়ঙ্কর। বন্য ভয়াবহতা স্নায়ুর প্রতিটি বিন্দু দিয়ে অনুভব করা যায় এই সুন্দরবনের বাঁকে বাঁকে।

সেই বন্য ভয়াবহতা অনুভব করতেই এবার ‘ভ্রমণ বাংলাদেশ’ এর ছুটে চলা সুন্দরবনে। সফর সঙ্গী মাত্র ৭২ জন। সাথে রয়েছে লঞ্চের ক্রু, বাবুর্চি, গার্ড মিলিয়ে আরও ১৮ জন। সর্বমোট ৯০ জন। মাত্র ১০ জনের জন্য সেঞ্চুরি মিস! আমাদের দলনেতা টুটু ভাই ও এই ট্যুরের অন্যতম পরিকল্পনাকারীদের একজন প্রিন্স ভাই দু’দিন আগেই পোঁছে গেছেন খুলনায়। আগামী ৩ দিনের প্রয়োজনীয় বাজার ও বনে ঢুকার অনুমতি তারা আগেই নিয়ে রাখবেন।

যাত্রা হল শুরুঃ

১২ই জানুয়ারী রাতের বাসে চড়ে আমরা রওনা হলাম খুলনার উদ্দেশে। হিসাব অনুযায়ী খুব সকালেই আমাদের পোঁছে যাওয়ার কথা খুলনাতে। আর খুলনাতে পোঁছেই লঞ্চে উঠে ভোঁ দৌড় সুন্দরবনের দিকে। কিন্তু হায়! ড্রাইভারের ভুলে গাড়িতে গ্যাস না নিয়ে সামনে এগুতে গিয়ে গাড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়া, টিউব পাংচার হয়ে হাবা-হাসমতের মত রাস্তায় বসে থাকা, অতিরিক্ত কুয়াশার কারণে ফেরী চলাচল বন্ধ থাকাসহ বেশ কিছু কারনে আমরা যখন খুলনা লঞ্ছ ঘাটে এসে পোঁছালাম তখন সূর্যি মামা সেদিনের মতো বিদায়ের পাঁয়তারা শুরু করে দিয়েছে। মনে মনে বলে উঠলাম, দেরি নাহি চাহি হায়, তবু দেরি হয়ে যায়, কি করি উপায়। প্রায় ১৮ ঘণ্টার ঢাকা টু খুলনা ‘ জার্নি বাই বাস’ শেষ করে আমরা যখন ‘জার্নি বাই লঞ্চের’ প্রস্তুতি নিতে শুরু করলাম ততোক্ষণে সূর্যি মামা রূপসা নদীকে তার আজকের শেষ চুম্বনটি দিয়ে বিদায় নিয়েছে। সবাইকে যার যার কেবিন বুঝিয়ে দিয়ে আমরা চলে এলাম ডেকে। একটু পরে সবাই ডেকে এলে ছোটও করে সবার পরিচয় পর্ব শেষ করে আমরা আড্ডায় বসে গেলাম। দাবা ও লুডু খেলা চলল বেশ কিছুক্ষণ। রাত ৯ টার দিকে খাবারের জন্য ডাক পড়লো। খাবার সেরে যে যার মতো আড্ডা দিতে লাগলো। রাত বাড়তে থাকলে আস্তে আস্তে সবাই চলে যেতে লাগলো যার যার কেবিনে। ১১ টার মধ্যে পুরো ডেক ফাঁকা হয়ে গেল। আমরাও শুয়ে পরলাম ডেকে পাতা তাঁবুতে।

দ্বিতীয় দিনঃ

দিনের প্রথম সূর্যের রঙিন আভা তখন সবে ছড়িয়েছে দিগন্তে। তাঁবুর ভেতর থেকে শুনতে পাচ্ছি কথাবার্তার আওয়াজ। ঘুম আমারও ভেঙেছে কিন্তু চোখে মুখে তখনও ঘুমের রেশ। কিন্তু কিছু করার নেই। একটু ফ্রেশ হয়েই উঠে বসলাম লঞ্চের সাথে করে আনা ট্রলারে। ট্রলারের গন্তব্য নদীর পাশের ছোটো একটি খাঁড়ি ধরে কিছুদূর এগিয়ে একটি জেটিতে। নাম যার কচিখালি। দু’দফায় ট্রলার আমাদের সকলকে পোঁছে দিল এখানে। সেদিনের মতো শুরু হল আমাদের অ্যাডভেঞ্চার দ্যা সুন্দরবন। দুপাশের গাছপালা পেছনে ফেলে, কিছুদূর গিয়ে মসৃণ ইট বিছানো রাস্তা ছেড়ে পুরো দল যখন ঢুকে গেল বনের একটু ভিতরে তখন এর চারপাশ জুড়ে এক অদ্ভুত নিঃস্তব্ধতা। যেখানে হয়তো রাতভর চলেছে জীবনমরণ খেলা। হয়তো কোন বাঘের অতর্কিত আক্রমনে ছিন্নভিন্ন হয়েছে কোনও হরিণীর নরম শরীর। সেই রোমাঞ্চে ভরা জঙ্গলের একটু সামনে যেতেই চোখে পড়তে পারে নানা পশু পাখির। আর ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকলে? দেখা হয়ে যেতে পারে ‘জঙ্গলের রাজার’ সাথে। না-না টারজান বা মুগলির কথা বলছি না। এনার নাম ‘বাঘবাবাজি’। আমাদের ভাগ্য অবশ্য এতো সুপ্রসন্ন ছিল না। তাই বাঘবাবাজির সাথে দেখা না করেই আমাদের ফিরতে হল লঞ্চে। লুচি, হালুয়া ও বুটের ডালের সাথে গিলা কলিজা দিয়ে সম্পন্ন হল আমাদের সকালের নাস্তা। আমাদের পরবর্তী গন্তব্য জামতলা ও কটকা বীচ। প্রায় ১১ টা নাগাদ আমরা পোঁছে গেলাম জামতলা বীচে যাওয়ার পথে যে ওয়াচ টাওয়ারটি আছে সেখানে। সেখান থেকে সবাই সারি বেঁধে সোজা বীচে। আর পুরো রাস্তা জুড়ে সকলের সন্ধানী চোখ খুঁজে বেড়িয়েছে সেই বনের রাজাকে। সামনে হঠাৎ চিল্লাচিল্লি শুনতে পেলাম। বুকটা ধুক করে উঠলো! বাঘ নাকি?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:৪৬

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: আমি একবার সুন্দরবনে গিয়েছিলাম, লোকজনদের বাঘের কথা জিগেস করতেই বলল: বাঘ কেউ দেখতে পারে না!

এমনকি যাকে বাঘ ধরে সে-ও না! পইছন দিক থেকে এসে বাঘ ঘাড় মটকে ধরে!

তবে যাদের সংগী সাথীকে বাঘে ধরে নিয়ে যায় তাদের পক্ষে বাঘ দেখা সম্ভব হয়!

মাফ চাই ভাই !

২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:৪৭

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: অবশ্য ছগল বেধে উচু গাছে চড়ে কে্উ বাঘের ভিডিও করে!

এরকম কোন ইভেন্ট করলে আওয়াজ দিয়েন মামা !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.