নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I am a Verb

মোহাম্মদ শাহ জালাল সরকার

বাংলাদেশ

মোহাম্মদ শাহ জালাল সরকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

অদক্ষ ও অব্যবস্থাপনায় ভুলে ভরা জন্ম সনদ

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:২৯

তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে বিশ্ব আজ হাতের মুঠোয়। ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তের তথ্য এক নিমিষেই বের করা সম্ভব হচ্ছে। এভাবেই যখন এগিয়ে চলছে বিশ্ব, বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। বিশ্বায়নের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত কিছু পদক্ষেপ এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ন এবং অপরিহার্য পদক্ষেপ হল- জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন। যার ফলশ্র“তিতে বাংলাদেশ সরকার ২০০৪ সালের ০৭ ডিসেম্বর ২৯ নং আইন অর্থাৎ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০০৪ প্রবর্তন করেন। আইনটি ২০০৬ সালের ৩ জুলাই হতে কার্যকর হয়। প্রথম পর্যায়- পাইলট প্রকল্প ও দ্বিতীয় পর্যায় এর কার্যক্রম শেষে এ প্রকল্পটির বর্তমানে তৃতীয় পর্যায়ের কার্যক্রম চলছে, যা জুলাই ২০১২ সালে শুরু হয়েছে এবং জুন ২০১৬ সালে শেষ হবে। প্রকল্পটির আর্থিক সহায়তাকারী সংস্থা ইউনিসেফ-বাংলাদেশ এবং এ প্রকল্পের বিপরীতে মোট বরাদ্দের পরিমান ১৫ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা (সূত্র: জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধ প্রকল্পের ওয়েব সাইট)। বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে- এত বড় বাজেটের এ প্রকল্পের কার্যক্রম কতটা সঠিক, নির্ভুল এবং দক্ষতার সাথে হচ্ছে, তা দেখার কেউ নেই। জন্মসনদ এর উপর ভিত্তি করে পরবর্তী পর্যায়ে একজন নাগরিকের নাগরিকত্ব সনদ, পাসপোর্ট এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র তৈরী হবে। আবার যারা আগে জন্ম নিবন্ধন করেননি, তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, পাসপোর্ট এবং জতীয় পরিচয়পত্রের সাথে মিল রেখে জন্ম নিবন্ধন করা জরুরী। এর ব্যত্যয় ঘটলে জীবনের যেকোন পর্যায়ে বিপত্তির আশংকা থেকেই যায়। এমন একটা গুরুত্বপূর্ন প্রকল্প, যেখান থেকে শুরু হবে মানুষের পরিচয়, এমন একটি প্রকল্প সরকার কাদের দিয়ে বাস্তবায়ন করছে, তা আমার বোধগম্য নয়। তবে ভুক্তভোগী সর্বদাই সাধারন জনগন। অনেক ব্যাক্তিই আছেন, যারা নিজের ছেলের জন্ম সনদটি একবার পড়ে দেখার শিক্ষাগত যোগ্যতা রাখেন না। তাদের ক্ষেত্রেতো এ ভুলগুলো সারা জীবন ভুল হিসাবেই থেকে যাবে। এমন হলেও আশ্চর্য হব না যে, বাবার চেয়ে ছেলের বয়স বেশী বা একটি পরিবারের পাঁচ জন সন্তান থাকলে পাাঁচ জনের জন্মসনদে বাবা -মায়ের নামের বানান পাঁচরকম। যদি তাই হয়, তবে এ জন্মনসদ অনুসরন করে তৈরীকৃত জাতীয় পরিচয় পত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র এবং পাসপোর্টেও একই ভুল থেকে যাবে। আর একবার ভুল হলে তা সংশোধন মানে পদে পদে কতটা ভোগান্তি এবং খরচ (তথাকথিত স্পিড মানি), তা না হয় অব্যক্তই থাকল। জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন আইন-২০০৪ প্রবর্তন বাংলাদেশ সরকারের একটি আধুনিক এবং যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত হলেও সঠিক বাস্তবায়নের অভাবে এর লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য কোনটিই বাস্তবায়ন হচ্ছে না। যতদিন জনপ্রতিনিধি হিসাবে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে ন্যুনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারন করে না দেয়া হয়, ততদিন এ সমস্যা থেকে পরিত্রানের কোন উপায় নেই। জনপ্রতিনিধি হিসাবে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে ন্যুনতম শিক্ষাগত যোগ্যতার নির্ধারনের বিষয়ে সুধী মহলে বার বার দাবী উঠলেও এদেশের নীতি নির্ধারক পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিগনের কাছে তা দোপে টিকেনি। বিষয়টি মার কাছে মামা বাড়ীর গল্প বলার মত। যেসব জনপ্রতিনিধিগন নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে আছেন, অনেক ক্ষেত্রে তারাই অর্ধশিক্ষিত বা অশিক্ষিত। এভাবে চলতে থাকলে জন্ম এবং মৃত্যু নিবন্ধন এর উপকারীতা নয়, জনগনের ভোগান্তি আর বরাদ্দকৃত টাকার অপব্যবহার ছাড়া কিছুই উপহার দিতে পারবে না সরকার। এর কোন সহজ সামধানও নেই। আমরা শিক্ষিত জনপ্রতিনিধি চাইলেও অশিক্ষিত নীতি নির্ধারনী পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের প্রভাবে তা কখনো আলোর মুখ দেখবে না। তবে ইউনিয়ন পর্যায়ে সচিব নিয়োগের ক্ষেত্রে মামা-খালু বা টাকার জোরে নয় নৈতিক এবং সুশিক্ষায় শিক্ষিত লোক যেন নিয়োগ পায়, তার ব্যবস্থা করলে এবং তাদেরকে অর্থ সংশ্লিষ্ট কাজে নয়, গনমুখী দাপ্তরিক কাজে ব্যবহার করলে এ সমস্যা থেকে কিছুটা পরিত্রান পাওয়া যেতে পারে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.