নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য সমাগত,মিথ্যা বিদূরিত।

শাহমুন নাকীব ফারাবী (১)

আমার পরিচয়,আমি মুসলিম।আমার একমাত্র পরিচয় আমি মুসলিম।আমি মুসলিম ব্যতিত আর কিছুই না।

শাহমুন নাকীব ফারাবী (১) › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন মায়ের “রাক্ষসে” পরিনত হবার বর্ননা..................

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২২

২৮ অক্টোবর ২০০৬ সাল।

পুরাতন পল্টনে নিজস্ব অফিসের সামনে সমাবেশ করছে,জামায়াত ইসলাম!নয়া পল্টনে নিজ অফিসে জড় হয়েছে বিএনপি নেতা
নেতাকর্মীরা।আর বিবি এভিনিউতে লগি বৈঠাসহ জড় হয়েছে আওয়ামী নেতা কর্মীরা।আওয়ামী নেতাকর্মীরা লগি বৈঠা হাতে জিপিও মোড় থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত নানা উস্কানিমূলক স্লোগান দিয়ে মিছিল করতেছিল।পুরান পল্টন এলাকায় খন্ড খন্ড মিছিল করতেছিল জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা।আর এসব কিছুই সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছিল বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলে।মিছিল করতে করতে হঠাৎ পুরানা পল্টনের দিকে ছুটে গেল লগি বৈঠাওয়ালারা।তাদের কারো হাতে ছিল পিস্তল এবং কাঁটারাইফেল।(ভিডিও চিত্রে তার প্রমান আছে) ছুটে এসেই তারা পুরানা পল্টনে অবস্থানরতদের উপর হামলা চালালো।অনেকেই ছুটে পালালেও পাশেই দাঁড়িয়েছিল সাদা পাঞ্জাবি পায়জামা পরা জসিম।সে পালানোর চেষ্ঠা করেনি।যেন আরো বহুমানুষের মত অপেক্ষা করতেছিল,কি ঘটে তা দেখার জন্য!কিন্তু আওয়ামী লগি বৈঠাওয়ালা বাহিনী একযোগে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল।এটি যেন ভিয়েতনামের মাইলাই হত্যাকান্ড।সেদিন টিভিতে সরাসরি সেই হত্যাকান্ড দেখে শিঁউরে উঠেছিল গোটাবিশ্বের মানুষ।টিভি রিপোর্টার আবেগঘন কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলতেছিলেন,“আপনারা দেখতে পাচ্ছেন,পুরানা পল্টন মোড়ে এক ব্যাক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হল।যেন তারা মানুষ নয়,সাপ পিটাচ্ছে”[ভিডিও লিংক]

বিশ্বের ইতিহাসে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকটি।হিটলার,মুসোলিনী,ষ্ট্যালিনরা হত্যা করেছিল লক্ষ লক্ষ মানুষ।এসব নৃশংস হত্যার পরিসংখ্যান হয়তো পাওয়া যাবে না।কিন্তু ২৮ অক্টোবর ঢাকার হত্যাকান্ড দেখলে হিটলার মুসোলিনী এবং ষ্ট্যালিনরাও হয়তো লজ্জাই পেতেন।কারন, তারা লাশের উপর নৃত্যাল্যাস করার মত পাশবিকতা প্রদর্শন করেন নি।

সেদিন যিনি, লগি বৈঠা নিয়ে মানুষ হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন,তিনিও তো একজন মা!একজন মা হয়ে অপর মায়ের বুক খালি করতে তার কি একটিবারও বুক কাঁপেনি।

ছবিতে, হোসাইন মুহাম্মাদ মুজহিদুল ইসলাম।ষ্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিবিএ অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর আর পড়াশুনা শেষ করবার সুযোগ হল না।তার আগেই লগি বৈঠাওয়ালারা ২৮ অক্টোবর তাঁকে সাপের মত পিটিয়ে হত্যা করেছে।মুজাহিদুল ইসলাম নিহত হবার পর,তার আম্মা মাহমুদা মানসুরী মুন্নী বলেছিলেন,“আমি দারুনভাবে গর্বিত।আমার চোখের মনি মুজাহিদ শিশু বয়স থেকেই অনেক শান্ত স্বভাবের ছিল।কথা বলা শেখার পর বলতো,আম্মু আমার ক্ষুধা লেগেছে।কাজের তাগিদে যদি আধা ঘন্টা পরও খাবার দিতাম,তাতেই সই।কোনো কান্নাকাটি চিৎকার অথবা বায়না কখনোই করত না।বিরক্ত কাকে বলে,বাবা-মাকে কষ্ট দেয়া কাকে বলে,হে আল্লাহ!তুমি তো সাক্ষী,এ ছেলের কাছ থেকে কোন দিন পাইনি।২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আমার জীবনের সবচেয়ে বড় দিন,সবচেয়ে বেদনার দিন এবং সবচেয়ে বড় শুকরিয়া আদায়ের দিন।এই দিনে আমার পরম প্রিয় নাড়িছেঁড়া ধন,রক্তের বাঁধন ছিন্ন করে শাহাদাত বরন করলো।আমি দারুনভাবে গর্বিত”।

ছবিতে,হাফেজ গোলাম কিবরিয়া শিপন।ঢাকা কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।তাঁকেও গত ২৮ অক্টোবর আওয়ামী হায়েনারা নির্দয়ভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে।হাফেজ গোলাম কিবরিয়া শিপন এর আম্মা মাহফুজা বেগম মরহুম ছেলের সম্পর্কে স্মৃতিচারন করতে গিয়ে বলেন,“সে শহীদ হবার কিছুদিন আগে এক অসুস্থ ব্যাক্তিকে রক্ত দিযে নিজে দুর্বল হয়ে পড়ে।তারপরও আমি তাকে বললাম,তুমি রক্ত দিলে কিন্তু তোমার শরীর তো দুর্বল।সে বলল,আপনি যেমন আমার আম্মা,আমার জন্য আপনার যেমন কষ্ট লাগে,তারও তো এরকম কষ্ট লাগে।রক্তের কারনে যদি সে বেঁচে যায় তবুও তো ভাল”।আর আমার সেই ছেলেকে তারা এমন নির্দয়ভাবে হত্যা করতে পারলো!

ছবিতে,আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল।তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।২৮ অক্টোবরে সিদ্ধিরগঞ্জ চিটাগাংরোডে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা করে আহত করে।এরপরের দিন ২৯ অক্টোবল তিনি ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহাদাত বরন করেন।আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল এর স্মৃতি চারন করতে গিয়ে তাঁর আম্মা সাইয়্যেদা হাসনা বানু বলেন,“ওর নামটি রেখেছিলাম শহীদ সৌদি বাদশাহ ফয়সলের নামনুসারে।ভাবতেই পারিনি আমার ফয়সলের নামের সাথেও শহীদ শব্দটি যুক্ত হয়ে যাবে।২৮ অক্টোবর সকালবেলা আমাদের এলাকার কয়েকজন বোন বলাবলি করছিল,ফয়সলের আম্মার ছেলেগুলা এ যুগের ছেলেদের থেকে আলাদ,তারা হীরা ও রত্নের চেয়ে মূল্যবান।আর আল্লাহপাক সত্যি সত্যি আমার ফয়সলকে মূল্যবান রত্ন শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন”।

ছবিতে,সাইফুল্লাহ মোহাম্মাদ মাসুম।তিনি সরকারী তিতুমীল কলেজের ইংরেজি ভিাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।২৮ অক্টোবর সোনার ছেলেরা তাঁরও ঝীবন প্রদীপ নিভিয়ে দেয়।সাইফুল্লাহ মোহাম্মাদ মাসুমের শাহাদাতের পর তাঁর আম্মা শামসুন নাহার রুবি বলেছিলেন,“আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম”।

সেই মায়েদের কান্না আজও থামেনি।যদি বিবেকবান হয়ে থাকেন,তবে কান পেতে একটিবার শোনার চেষ্ঠা করেই দেখুন না।আপনি নিজেও তো কারও না কারো পিতা অথবা মাতা!ক্ষমতার মোহ কিভাবে একজন মাকে রাক্ষসে পরিনত করে,২৮ অক্টোবর তারই সাক্ষ্য বহন করছে!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০০

চাঁদগাজী বলেছেন:


মারামরি ঘটনা একদিনে গড়ে উঠেনি, ৩০ বছরের ঘটনা জড়িত; কিছু লেখার আগে ভাববেন, দেখবেন নিউটেনের ২য় সউত্র প্রমাণ করার মত লজিক আপনি জানেন কিনা, না হয়, আপনার লেখার সময় হয়নি।

২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৬

নামহীন পাপী বলেছেন: প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি বিপরীত এবং সমান প্রতিক্রিয়া থাকে ।

৩| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:১২

বিপরীত বাক বলেছেন: জামাত মুফতে ক্ষমতা পেয়েছিল। তারই কিছু পরিশোধ করেছিল।।।
তবে উচিৎ ছিল বিএনপি হাওয়া ভবনের কুত্তাগুলোকে পিটায়া মারে ফেলা।। তাহলে সাধারণ মানুষও অংশগ্রহণ করতো।।

জামাতও কম যায় না।। সাতক্ষীরা য় জামাত যা দেখিয়েছিল না।।

৪| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৫

কমরেড ফারুক ২ বলেছেন: রাক্ষসী ডাইনি।।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.