নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য সমাগত,মিথ্যা বিদূরিত।

শাহমুন নাকীব ফারাবী (১)

আমার পরিচয়,আমি মুসলিম।আমার একমাত্র পরিচয় আমি মুসলিম।আমি মুসলিম ব্যতিত আর কিছুই না।

শাহমুন নাকীব ফারাবী (১) › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভূপেন হাজারিকার সে মানুষ, আজকের সমাজে কি একজনও নেই ?

১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০৬

রাত আনুমানিক ১২ টা। গেল সপ্তাহে বাসায় ফেরার জন্য বাসের অপেক্ষা করছি। বাণিজ্যিক এলাকা হবার কারনে মাঝ রাতেও বাস পাওয়া যায়। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম বিধায়, ঠান্ডার আগমনটা একটু হলেও অনূভব করতে চিলাম। বাসগুলো পাশ কাটিয়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা বাতাস শরীরে আঘাত হানতেছে। আর শরীরটা কেঁপে কেঁপে উঠতেছে। ঐ জায়গায় আমি নতুন। এর আগে কখনো সেখানে যাওয়া হয় নি বিধায় চারদিকে অনুসন্ধানি দৃষ্টি নিয়ে তাকাচ্ছিলাম। যেন পরবর্তিতে আসলেও জায়গাটিকে স্মরনে রাখতে পারি। আমার চোখ গিয়ে পড়ল একটি বিল্ডিং এর বারান্দায় শুয়ে থাকা তিনটি মানুষের প্রতি। যার মধ্যে একজন স্বতন্ত্রভাবে আলাদা বিছানা করে ঘুমিয়েছে। আর দুই জন একই বিছানায় শুয়ে পাতলা একটা বেড শীট নিয়ে টানাটানি করছে। একজনের গায়ে বেডশীট জড়ালে আর একজনের পিঠ পর্যন্ত বিডশীট পৌছায় না। আর এভাবেই তাদের টানাটানি চলতেছিল। এক পর্যায়ে তারা দু’জনেই বেডশীট টানাটানিতে ক্ষ্যান্ত দিল। দু’জন পাশাপাশি আষ্টেপৃষ্টে একে অপরকে জড়িয়ে শুয়ে পড়ল যেন বেডশীডটা দু’জনেরই গায়ে থাকে এবং ঠান্ডাটা একটু হলেও কম লাগে।
এখনও সর্বত্র জানান দিয়ে শীতের আগমন না ঘটলেও এসব খেটে খাওয়া মানুষদের জীবনে শীতের উপদ্রব আগে থেকেই শুরু হয়েছে। ফলে তাদের জীবনে রাতটা ভয়ানক হয়ে উঠতেছে(!)


গত মাসে রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিল দিয়ে হেটে হেটে ক্লাসে যাচ্ছিলাম। ফকিরাপুল (ফকিরেরপুল) এলাকায় এসে ডাষ্টবিনের পাশের একটি দৃশ্য দেখে ধমকে দাঁড়ালাম। ডাষ্টবিনে ফেলে দেয়া চিকেন ফ্রাই দুইহাতে জড়িয়ে আপন মনে একজন মধ্যবয়স্ক মানুষ খাচ্ছে। যে খাবার আমাদের অভিজাত শ্রেণীর মানুষরা বড়লোকি করে ফেলে দেয়, তা কিছু মানুষের জন্য হয়ে উঠে চরম আকাঙ্খার। হায়রে শ্রেণী বৈষম্য এবং পুঁজিবাদীদের রাজত্ব! আর ডাষ্টবিন থেকে খাবার খুড়িয়ে খাওয়ার দৃশ্য প্রায়শ কোন না কোন পত্রিকায় ছাপানো হলেও কোন প্রতিকা হয় না! যে লাউ সেই কদুই থেকে যায়(!) একদিন হয়তো দেখা যাবে ডাষ্টবিন থেকে কুড়িয়ে খাওয়া মানুষ গুলো রফিক আজাদের কবিতার সাথে সুর মিলিয়ে বলবে,“ভাত দে হারামজাদা, নইলে মানচিত্র খাবো”।
দেখুন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের সেই বিখ্যাত ছবি এবং আজকের সভ্য সমাজের ডিজিটাল ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি মানুষদের অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়েছে কি?


যাদের পরকালীন চিন্তাভাবনা আছে তারা কি রাসূল (সঃ) এর এই হাদীস কোনদিন পড়েননি,‘এক মুসলমান অন্য মুসলমানকে কাপড় দান করলে আল্লাহ তাকে জান্নাতের পোশাক দান করবেন। ক্ষুধার্ত অবস্থায় খাদ্য দান করলে আল্লাহ তাকে জান্নাতের সুস্বাদু ফল দান করবেন। কোনো মুসলমানকে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় পানি পান করালে আল্লাহ তাকে জান্নাতের সিলমোহরকৃত পাত্র থেকে পবিত্র পানি পান করাবেন।’ (আবু দাউদ)

আসুন না নিজেদের বিবেকটাকে জাগ্রত করবার চেষ্ঠা করি। আপনার নিজের সন্তানের জন্য প্রতি বছর নতুন নতুন হরক রকমের শীতের জামা কিনতেছেন। সেখান থেকে তুলনামূলক কম টাকায় হলেও একটি পথ শিশুকে শীতের জামা কিনে বোর চেষ্ঠা করুন। অথবা পুরনো জামা গুলোকে আপনার নিকটবর্তি দুস্থ অসহায় মানুষদের মাঝে বিলিয়ে দিন। আপনি নিজে এগিয়ে আসুন এবং আপনার প্রতিবেশীকে এগিযে আসতে উৎসাহিত করুন। আপনার বাসার বাসী খাবার গুলো নষ্ট হবার আগেই নিকটবর্তি অসহায় কোন পরবিারকে দেয় দেবার চেষ্ঠা করুন।

এ দেশ আমার আপনার এবং আমাদের। আর আমরা একটু চেষ্ঠা করলেই আমাদের দেশের গরীব খেটে খাওয়া মানুষ গুলোও হয়তো ভালো থাকতে পারবে। আসুন না ভূপেন হাজারিকার সেই গানটিকে আর একটিবার হৃদয় দিয়ে উপলবদ্ধি করবার চেষ্ঠা করি।


“মানুষ মানুষের জন্য
জীবন জীবনের জন্য
একটু সহানুভূতি কি
মানুষ পেতে পারে না, ও বন্ধু।।

মানুষ মানুষকে পণ্য করে,
মানুষ মানুষকে জীবিকা করে,
পুরোনো ইতিহাস ফিরে এলে
লজ্জা কি তুমি পাবে না, ও বন্ধু”।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১৫

আহলান বলেছেন: মানুষ আছে মনুষ্যত্ব কমে যাচ্ছে ....

১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১৯

শাহমুন নাকীব ফারাবী (১) বলেছেন: ঠিক তাই।

২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৩

ক খ বলেছেন: আসুন না নিজেদের বিবেকটাকে জাগ্রত করবার চেষ্টা করি।
ধন্যবাদ ভালো লিখেছেন

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪১

শাহমুন নাকীব ফারাবী (১) বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৬

ইসলামের ইলম বলেছেন: কোথায় গেল স্বাধীনতার শ্লোগান দাতা, যারা মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবসা করে??
তারা যদি সত্যিই দেশপ্রেমিক হয়ে থাকে তাহলে, কেন দেশের , মায়ের সেবা করেনা?
অনেক তো শ্লোগান চলে! কোথায় সেই শ্লোগানের সত্যতা?

আসল কথা হলো
আমাদের একটি শ্লোগান বদল করতে হবেঃ
আমরা প্রথমে বাঙ্গালী নয়, প্রথমে মুসলমান, পরে বাঙ্গালী।
এই শ্লোগানের কারনে আজ সবাই দেশ নিয়ে ব্যস্ত, কিন্তু দেশের মানুষকে নিয়ে নয়!!!
কিন্তু মুসলমান হলে সে ইসলাম থেকে শিখে যে, সবার সাথে ভাল ব্যবহার করা এবং নিজের ঘরে যা খাবার পাকায় তা প্রতিবেশীদের দেয়া। (মুসলিম এর ২৬২৫ নাম্বার হাদীস দেখুন।)
অতএব,
প্রথমে আমরা মুসলিম, পরে বাকী যা কিছু ,,,,,

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪১

শাহমুন নাকীব ফারাবী (১) বলেছেন: একমত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.