নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীর বুকে আমি আজও একা হাটছি.............

ভুংভাং কাছিরাম(৩)

ভুংভাং কাছিরাম(৩) › বিস্তারিত পোস্টঃ

মনে রাখবেন- ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে সম্পূর্ণ নিরাময় হয়ে যায়।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:২০

আজ বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। আমরা কোন বিশেষ কারণ ছাড়া সাধারণত কোন দিবসকে স্মরন রাখে না। আমার ক্ষেত্রেও হয়তো তেমনি ঘটেছে। প্রায় ১১ বছর আগে আমার দাদি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সেই তখন থেকেই ক্যান্সারের প্রতি আমার একটি আলাদা দৃষ্টি ছিল। মাঝে মাঝে ক্যান্সার সম্পর্কে জানার চেষ্ঠা করতাম। আমার দাদির ক্যান্সার একদম শেষ সময়ে এসে ধরা পড়েছিল। যখন আর কিছুই করার ছিল না।

১৬ কোটি লোকের এই দেশ বাংলাদেশ। শহর ও গ্রামে অসংখ্য রোগী ক্যান্সারে ভুগছে। বেশির ভাগ রোগীই চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত কিংবা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছে না, কিংবা শেষপর্যায়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছে। ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসা পেতে হলে আমাদের দেশের জনগণের ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার রোগের প্রতিরোধ এবং রোগ নিরূপণের জন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। তাই আমাদের ক্যান্সার রোগ সম্পর্কে জনগণের ধারণা থাকতে হবে।

সাধারণ মানুষ জানতে চায়-
টিউমার/ক্যান্সার কাকে বলে?
টিউমার/ক্যান্সার কেন হয়?
টিউমার/ক্যান্সারের উপসর্গগুলো কী কী?
টিউমার/ক্যান্সার কিভাবে রোগ নির্ণয় করা যাবে?
ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা আছে কি না?
ক্যান্সার রোগী ভালো হয় কি না?
ক্যান্সার বা টিউমার কাকে বলে?


এই টিউমার বা চাকা দুই প্রকারের-অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধির ফলে শরীরের কোন স্থানে চাকা বা পিন্ডের সৃষ্টি হলে তাকে টিউমার বলা হয়। স্বাভাবিক কোষ বিভাজনের বেলায় কোষের সংখা বৃদ্ধির একটা শৃংখলা থাকে, আকার আকৃতি আদি কোষের মতই থাকে। সব চাইতে বড় কথা, শরীরের প্রয়োজনেই শুধু কোষ বৃদ্ধি হয়ে থাকে। কোন কারণে যদি শরীরের বিনা প্রয়োজনে কোষ বিভাজন শুরু হয়, কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়মের মধ্যে না থাকে এবং আকার-আকৃতি, বৈশিষ্ট্য অস্বাভাবিক ধরনের হয়-এই ধরনের অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধি থেকেই টিউমারের সৃষ্টি।


টিউমারকে প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী দুই ভাগে ভাগ করা হয়-
– আকারে ছোট বা বড় হোক, যে সব টিউমার উৎপত্তিস’লের বাইরে যায় না বা আশে-পাশের অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে আক্রান- করে না তাকে বিনাইন টিউমার বা অক্ষতিকারক টিউমার বলে।
– যে সব টিউমার উৎপত্তিস’লের সীমানা অতিক্রম করে আশে-পাশের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, ঐ এলাকার লিম্ফনোড বা গ্ল্যান্ড, এমনকি রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে শরীরের দূরবর্তী জায়গায় গিয়ে আঘাত হানে, তাদেরকে ম্যালিগন্যাণ্ট বা ক্ষতিকারক টিউমার বলে। শরীরের যে কোন জায়াগার ম্যালিগন্যাণ্ট টিউমারকে ক্যান্সার বলা হয়। সুতরাং সব ক্যান্সারই টিউমার, সব টিউমার ক্যান্সার নয়।

টিউমার বা ক্যান্সার কেন হয়?
অধিকাংশ টিউমার বা ক্যান্সার কেন হয় তা এখনো জানা যায়নি। তবে কিছু কিছু কারণ এর জন্য দায়ী বলে প্রমাণিত হয়েছে।

টিউটমার/ক্যান্সারের কারণগুলো
ক) বংশগত/জেনেটিক
বাবা, মা, খালা এদের মধ্যে থাকলে তাদের সন্তানদের হতে পারে বা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি যেমন- ব্রেস্ট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার।
খ) ধূমপান
বিভিন্ন ধরনের ধরনের ক্যান্সার হয় তার মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সার তাদের অন্যতম।
গ) পান, জর্দা সাদা পাতা, গুল ইত্যাদি ওরাল ক্যান্সার বা জিহ্বার ক্যান্সার করে।
ঘ) বিনাইন টিউমার বা ভালাবোলা টিউমার? অনেক দিন পর্যন্ত শরীরে থাকলে যেকোনো সময় ক্যান্সার হতে পারে। বেশির ভাগ কোলন ক্যান্সার এভাবেই হয়ে থাকে।
ঙ) রেডিয়েশন
কোনো জায়গায় রেডিয়েশন দিলে বা সূর্য রশ্মির ত্বকের ক্যান্সার করে থাকে। যেমন- চেরনোবিল এবং জাপানের নাগাসাকির পারমাণবিক বিস্ফোরণের অনেক বছর পর এখনো সেখানে অনেকেই ক্যান্সার আক্রান্ত হচ্ছে।
চ) পাথর/স্টোন
যেমন কিডনি, পিত্তথলির পাথর ক্যান্সার সৃষ্টি করে।
ছ) ক্রনিক ইনফেকশন
জরায়ুর সার্ভিক্স বা বোনের ক্রমিক ইনফেকশন থেকে জরায়ু ও বোনের ক্যান্সার হয়।
জ) রাসায়নিক বা কেমিক্যাল এজেন্ট
যেমন- এনিলিন ডাই মূত্রথলির ক্যান্সার সৃষ্টি করে।
খাদ্যে ব্যবহৃত ফরমালিন এসিড/পচন রোধ পদার্থ স্টমাক বা পাকস্থলীর ক্যান্সার করে চুলের কলব- স্ক্রিন/ত্বকের ক্যান্সার করে।


৩। ক্যান্সারের উপসর্গগুলো কী কী?

অনেক দিন ধরে শরীরের কোনো অংশের চুপচাপ উপদ্রবহীনভাবে ছোট একটি টিউমারের হঠাৎ পরিবর্তন।
চাকা হঠাৎ বড় হচ্ছে, ব্যাখ্যা হচ্ছে, আপনাকে সতর্ক হতে হবে এবং ক্যান্সার কি না নিশ্চিত হতে হবে।
শরীরের ছোট একটি তিল হঠাৎ বড় হচ্ছে, গাঢ় কালো রঙ হচ্ছে, চুলকাচ্ছে কিংবা ব্লিডিং হচ্ছে- সতর্ক হতে হবে।
ক্রনিক কাশি ভালো হচ্ছে না, হচ্ছে ৪ সপ্তাহের বেশি হয়ে গিয়েছে। সতর্ক হোন ফুসফুসের ক্যান্সার হতে পারে।
হঠাৎ করে খাবারের রুচি হচ্ছে না, অল্প খেলেই পেট ভরে যাচ্ছে। ওজন কমে যাচ্ছে, বয়স ৪০ বছরের অধিক সতর্ক হোন পাকস্থলীর ক্যান্সার হতে পারে।
মলদ্বার দিয়ে রক্ত যাচ্ছে, ব্যথা হচ্ছে শরীর দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। কিংবা মলত্যাগের অভ্যাসের হঠাৎ পরিবর্তন হয়েছে, সতর্ক হোন রেকটাম বা ক্লোন ক্যান্সার হতে পারে।
হঠাৎ গলার শব্দ পরিবর্তন হয়েছে, গলায় বা বগলে চাকা সতর্ক হোন এবং চেকআপ করান।
মহিলাদের বয়সের কারণে মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে (মেনুপাস) নতুন করে আবার ব্লিডিং হচ্ছে সতর্ক হোন। জরায়ুর ক্যান্সার হতে পারে।
ব্রেস্টে চাকা, বয়স ৪০ বছর কিংবা তার ওপরে সতর্ক হোন।
হাড়ে ব্যথা, ফুলা, হঠাৎ পড়ে গিয়ে ফ্র্যাকচার হয়েছে সতর্ক হোন।
পোড়া ঘা ভালো হওয়ার পর আবার হয়েছে, শুকাচ্ছে না সতর্ক হোন স্কিনের ক্যান্সার হতে পারে।


৪। রোগ নির্ণয়
উল্লিখিত উপসর্গগুলো দেখা দিলে আপনাকে অবশ্যই জরুরি ভিত্তিতে ক্যান্সার সার্জন বা যেকোনো সার্জনের শরণাপন্ন হতে হবে।
ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষাই রয়েছে- এর মধ্যে সবচেয়ে সঠিক ইনভেস্টিগেশন হলো- বায়োপসি।

৫। রোগের চিকিৎসা
যেকোনো ধরনের টিউমার হলেই এটাকে অপারেশন করতে হবে।
টিউমারটি যদি বিনাইন হয় এবং যদি সম্পূর্ণভাবে ফেলে দেয়া হয় তাহলে ভয় নেই এবং আবার হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
বায়োপসিতে যদি ক্যান্সার ধরা পড়ে তবে সে ক্ষেত্রে সার্জারি হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম চিকিৎসা। সেই সঙ্গে অন্যান্য সহায়ক চিকিৎসাও লাগতে পারে যেমন-
# যন্ত্রের সাহায্যে সেক (রেডিওথেরাপি)
# কেমোথেরাপি
# হরমোনথেরাপি ইত্যাদি।

৬। ক্যান্সার প্রতিরোধ কিভাবে করা যায়।
# বেশি বেশি ফলমূল, শাকসবজি খেতে হবে, কারণ এগুলোতে ক্যান্সার প্রতিরোধ এনজাইম আছে।
ধূমপান/অ্যালকোহল পরিত্যাগ করতে হবে।
মেয়েদের ক্ষেত্রে কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে যেগুলো পরিহার করতে হবে। যেমন-
১। অল্প বয়সে বিয়ে
২। অল্প বয়সে সন্তান ধারণ এবং বেশি সন্তান ধারণ এবং
৩। একাধারে বহু দিন জন্ম নিরোধক বড়ি খাওয়া বন্ধ করতে হবে ইত্যাদি।
৪০ বছর বা অধিক মহিলাদের ব্রেস্ট নিজেদেরই মাঝে মধ্যে পরীক্ষা করতে হবে কোনো টিউমার বা চাকা আছে কি না দেখার জন্য।
পুরুষদের ক্ষেত্রে সারকামসিসান বা মুসলমানি একটি উপকারী চিকিৎসাপদ্ধতি যা পেনিস বা লিঙ্গ ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী পদক্ষেপ।
পুরুষ ও মহিলাদের ক্ষেত্রে বহুগামিতা পরিহার করতে হবে। তা না হলে অওউঝ এবং ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগ হতে পারে।

৭। মনে রাখবেন-
ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে সম্পূর্ণ নিরাময় হয়ে যায়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৪

প্রামানিক বলেছেন: উপকারী পোষ্ট। ধন্যবাদ

২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৪

উচ্ছল বলেছেন: সতর্ক হতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.