নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অব্যক্ত ধ্বনি

আল-শাহ্‌রিয়ার

গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ভেতরের কারণগুলো জানতে এবং বিশ্লেষণ করতে চেষ্টা করি এবং সবার সাথে শেয়ার করতে পছন্দ করি। সামাজিক, রাজনৈতিক আর আন্তর্জাতিক বিষয়ে লেখালেখি করতে ভালো লাগে। তাই ব্লগে পদচারনা।

আল-শাহ্‌রিয়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিয়ের পরের প্রেমের গল্প!!

১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:৪৮


বিয়ের অনুষ্ঠানের সকল পর্ব শেষ করে বন্ধু-বান্ধব আর অতিথিদের বিদায় দিয়ে দুরু দুরু মনে বাসর ঘরে ঢুকে সদ্য বিয়ে করা স্ত্রী'র পাশে বসতে যেতেই বৌ আমাকে বলল....
----ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখুন তো কয়টা বাজে??
বাসর রাতে বৌয়ের এমন প্রশ্নে কিছুটা বিচলিত হলাম। বৌয়ের বাড়ি থেকে দেওয়া হাতের ঘড়িটিতে তখন রাত ১২.৩০ মিঃ।

আমি কিছুটা সাহস সঞ্চয় করে বৌয়ের পাশে বসে আস্তে করে বললাম.....
----শোনো আমার এখন বিয়ে করবার কোন ইচ্ছেই ছিলো না। আমার বাবা-মায়ের পছন্দেই তোমাকে বিয়ে করেছি। তবে আমার কারো সাথে কোন সম্পর্ক ও নেই। কিন্তু আমি এই মুহূর্তে বিয়ের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত ছিলাম না। তাই তুমি এখন চাইলেও সহজেই তোমাকে বউ হিসেবে মানতে বা বৌয়ের অধিকার দিতে পারবোনা।

কথা গুলো বলে শেষ করা মাত্রই নতুন বউ আমার শেরওয়ানির কলারটা চেপে ধরে বলল.....
----আমাকে কি খেলার পুতুল মনে হয় নাকি? পছন্দ হয়নি, বিয়ে করতে চাননি এইটা আগে বললেন না? নিজের মায়ের মন রক্ষা করতে আমার সব স্বপ্ন-আশা কে কেন বলিদান দিতে হবে? বিয়ে করবার ইচ্ছে নেই, এটা আমাকে আগে বললেই পারতেন। তাহলে আমি আমার পক্ষ থেকে বিয়ে ভেঙে দিতাম। মায়ের প্রতি ভন্ড ভক্তি শ্রদ্ধা দেখাতে গিয়ে আমার জীবনটা কেন এইভাবে নষ্ট করে দিবেন? আমি তো আপনার কোন ক্ষতি করিনি। এখন আমি যেভাবে বলব সেভাবেই সব কিছু চলবে, বুঝতে পারলেন? বলেই কলার টা ছেড়ে দিলো।
পরে আবার বলল....
----আচ্ছা যা হবার তা তো হয়েই গেছে। দিতে হবে না আপনাকে বউয়ের অধিকার। যান আপাতত নিচে গিয়ে ঘুমান। একদম খাটে ঘুমাতে পারবেন না। বলেই আমার বালিশ পা ফ্লোরে ছুড়ে মারলো।

আমি ও বাধ্য ছেলের মতো ফ্লোরেই শুয়ে পড়লাম। আর মনে মনে ভাবতে লাগলাম, কেমন গুন্ডি মেয়ে রে বাবা। জীবনেও এমন মেয়ে দেখিনি। মনে তো হচ্ছে জীবন পুরাই তেজপাতা করে ছাড়বে। ফ্লোরে ঘুমই আসছেনা। আগে কখনোই ফ্লোরে ঘুমাতে হয়নি। কিন্তু আজকে নিজের অমতে বিয়ে করার কারনেই ফ্লোরে ঘুমাতে হচ্ছে। এর মধ্যে শুরু হয়েছে মশার আন্দোলন। ইসস আর,,,,,,সহ্য হচ্ছেনা। চোখ বন্ধ করে ঘুমের ভান করছি। কখন জানি ঘুমটা লেগে গেছে বুঝতেই পারিনি। হঠাৎই সজাগ হয়ে দেখি আমার শরীরে কম্বল আর পাশে ও মশার কয়েল লাগানো। মনটাতে একটু স্বস্তি পেলাম, গুণ্ডি হলেও মানুষ ভালো। মনে মায়া-দয়া আছে। পরের দিন ঘুম থেকে উঠেই দেখি টেবিলে চা রাখা। চা খেয়ে,ফ্রেশ হয়ে রুমে বসে ফোনে ফেসবুক ব্রাউজ করছিলাম।

তখন ই আদিবা (আমার বৌ) এসে বললো.....
----এই যে সেই কতক্ষন যাবত খাবার নিয়ে সবাই অপেক্ষা করছে আর আপনি ঘরে বসে আছেন কেন? এখনি নিচে চলুন...... বলেই আমার কানের কাছে এসে আস্তে করে বললো-----নাকি খাবার রুমে নিয়ে আসবো?

আমি তো হার্ট এ্যাটাক হতে হতে বেচেঁ গেলাম। আমি তো ভাবছিলাম,বউ বুঝি এবারও কলার ধরেই আমাকে খাবার টেবিলে নিবে। কিন্তু না, বউয়ের স্বর পাল্টে গেছে, তবে কি বউ আমার প্রেমে পড়ে গেল নাকি? কথাটা ভাবতে ভাবতেই বউয়ের দিকে তাকালাম। হা হয়ে তাকিঁয়ে আছি, বউ তো আসলে অনেক সুন্দরী। রাতে তো ভাবে ছিলাম হিটলারনী। এখন দেখি না মায়াময়ী। এইবার যে আমি বউয়ের প্রেমে পড়ে গেলাম। নিজেই নিজেকে বললাম...
—-শেষ পর্যন্ত মনে হয় আমি আমার দজ্জাল বউয়ের প্রেমে পড়ে গিয়েছি।

হঠাৎ একটা শব্দে বাস্তবে ফিরলাম। সামনে তাকিঁয়ে দেখলাম বউ ফ্লোরে পরে চোখ বন্ধ করে আছে। বুঝতে পারলাম, সে হয়ত খুব ব্যথা পেয়েছে। দৌড়ে গিয়ে টেনে তুলতে গেলাম আর তখন সে

আস্তে করে বলল.....
----কেমন স্বামী আপনি? আমি তো একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম।

বললাম...
----আমি আবার কি করলাম।

বৌ বলল....
----আমি মাটিতে পরে আছি কই কোলে করে নিয়ে বিছানায় শোয়াবেন, তা না করে আমার হাত ধরে টানছেন। সাথে সাথেই আমি কোলে করে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলাম।

আমায় শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল....
----ইচ্ছে ছিল এভাবেই ধরে রাখি সারাটা জীবন। কিন্তু আপনি তো আমাকে পছন্দই করেন না। কথা শেষ করেই আদিবা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়লো। আমারও বুকের ভিতরটা দুমড়ে মুচড়ে গেল। আমারো খুব ইচ্ছা হচ্ছিল, কপালে একটা চুমো একেঁ দিয়ে বলি
----পাগলী আমি যে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি গো।

কিন্তু বলতে পারলাম না। কোথায় জানি একটা বাধাঁ পাচ্ছিলাম। এই সুযোগে আদিবা আমাকে ঠেলে বিছানায় ফেলে দিয়ে দৌড়ে পালালো। আমি শুধু তার চলে যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলাম। পরক্ষনেই খেয়াল হলো, ও তো ব্যথা পেয়েছে, তাহলে কিভাবে দৌড়ে সরে গেল? বুঝতে আর বাকি রইলো না, এবারও আমাকে বোকা বানানো হয়েছে।

আদিবার সাথে এভাবে খুনসুটি প্রেম করতে করতেই কেটে গেল দুইটি বছর। এখন কেউ কাউকে ছাড়া এক মুহূর্তও ভাবতেই পারিনা। আমার আদিবা এখন গর্ভবতী। তাই খুব যত্ন নেই তার। আজ বাচ্চা হবার তারিখ দিয়েছে ডাক্তার। আমাকে জরুরী প্রয়োজনে অফিসে যেতে হয়েছে, হঠাৎই বাবার ফোন পেয়ে ছুটে গেলাম হাসপাতালে। গিয়েই শুনলাম ঘর আলো করে এসেছে আমাদের ছোট্ট রাজকন্যা।

কিন্তু.... আমার পাগলিটার কোন সাড়া শব্দ পাচ্ছিনা কেন? ভয়ে আৎকে উঠলাম। অনেকের মুখেই শুনেছি,বাচ্চা জন্ম দিতে গিয়ে অনেক মা মারা যায়। সে ভয়েই বাচ্চা নিতে চাইনি। কিন্তু ওর নাকি বাচ্চা লাগবেই। ওর ইচ্ছে পূরন করতে গিয়েই কি তবে......???

আর ভাবতেই পারছিনা। একটা মিনিট ও নষ্ট না করেই, দৌড়ে গেলাম কেবিনে। গিয়ে দেখি বাচ্চা টা হাত পা নাড়িয়ে খেলছে। কিন্তু আদিবা চোখ বন্ধ করে রাখছে। ওর নিঃশ্বাস আছে কি নাই তা দেখার মতো ধৈর্য আমার ছিলোনা। তাই আদিবাকে জড়িয়ে চিৎকার দিয়ে ফেললাম। সাথে সাথেই কানের কাছে একটু ব্যথা অনুভব করলাম।

পরে দেখি আদিবা আমার কানে আস্তে করে কামড় দিয়ে বলল....
-----কি ভাবেছিলে তোমাকে একা রেখে চলে যাবো? আরে না গো,আমি চলে গেলে,তোমাকে জ্বালাবে টা কে?

আমিও শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে বললাম, অনেক ভালোবাসি আমার পাগলিটাকে কিছুতেই ছেড়ে যেতে দেবো না কখনোই।
(সংগৃহীত ও পরিমার্জিত)

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:২৭

সাকেরা সূচনা বলেছেন: খুব ভালো লাগলো

১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৩:১৬

আল-শাহ্‌রিয়ার বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৭:৫৫

মৌরি হক দোলা বলেছেন: চমৎকার :)

১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:১০

আল-শাহ্‌রিয়ার বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: ‌তোমার কি ম‌নে প‌ড়ে না
চার টাকা ষোল আনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.